Best Bangla Golpo Collection 2023 | Bipasha Chakraborty

Sharing Is Caring:

স্মৃতি বড়ো বেদনার – বিপাশা চক্রবর্তী [Best Bangla Golpo Collection]

একদিন ডলি সকালে বন্ধুদের সাথে কিতকিত খেলতে খেলতে শুনতে পেল বিকেলে কেউ খেলতে আসবে না।দাদু আসবে সবাই দাদুর গল্প শুনতে যাবে। সেই দাদু নাকি মজার মজার গল্প বলে আর সবাই হেঁসে উল্টাবাজি খায়। ডলি জিজ্ঞাসা করল কোথায় আসবেরে আমিও যাবো তার গল্প শুনতে। তখন বন্ধুরা বলল দত্তপুকুর পাড়ে আড্ডা বসবে। থাম সেখানে গেলে বড়ো মেয়েরাও থাকবে। নানারকম মজার মজার কথা হবে ইয়ার্কি হবে। তোর বাবা- মা বড়োদের কথার মাঝে গেছিস শুনলে বকবে। তোকে যেতে হবে না আমরা যাবো। বলে ছেলেমেয়েরা ছুটে ঘর চলে গেল। ডলিরা দুই ভাইবোনে লুকিয়ে দাদুকে দেখতে যাবে বলে প্ল‍্যান করল। তারা দাদু সম্পর্কে আলোচনা শুরু করে দিল। ডলির ভাই বলল নিশ্চয়ই দাদুর মস্ত বড়ো পাকা দাড়ি আছে। ডলি বলল দাদু মানেই তো ঐরকম কিছু একটা হবে। হয়তো লোকটার অনেক বয়স। ঝুঁকে ঝুঁকে চলে বোধ হয়। যেন একটা থুত্থুরে বুড়ো বলে মনে হয়। এইসব আলোচনা চলতে চলতে ডলির ভাই বাবাই দাদুর একটা ছবি এঁকে ফেলে। ধীরে ধীরে দুপুর পেরিয়ে বিকেলবেলা এলো। ডলির বাবা অফিস থেকে তখনও ফেরেনি। বিকেলে একঘণ্টা ধরে ডলি ও তার ভাইকে গানবাজনার রেওয়াজ করতে হতো। এটাই ছিল তাদের বাবার কড়া নির্দেশ। বাবার নির্দেশ অমান্য করার ক্ষমতা দুই ভাইবোনের কারোর ছিল না। তাদের বাবা ভীষণ বকত সময়ের কাজ সময়ে না করার জন্য। কিন্তু দাদুকেও তো তাদের দেখতে যেতে ইচ্ছে করছে। মাকে কোনোরকমে রাজি করে দুই ভাইবোনে ঘুরতে বেড়াল। যেখানে বাড়ির পিছন দিয়ে গেলেই দাদুর সন্ধান মিলবে সেইখানে তাদের যেতে হলো ঘুরপথে। তারপর পৌঁছেতে তো দুই ভাইবোনের চক্ষু চড়ক গাছ। একি দাদু কোথায়? এতো সেই লোকটা। বন্ধুদের সাথে চুরি করে কুল খেতে গিয়ে যার কাছে ধরা পড়ে তাড়া খেয়েছিলাম। চল চল পালিয়ে চল দেখতে পেলে আবার বকবে। বলে ডলি পালিয়ে আসতে যাবে আর তখনই সব বন্ধুরা বড়োদের মাঝে বসে কথা শুনছে দেখে তার ভাইকে বলে চল ঘর যাবো চল এ দাদু সে দাদু নয়। বলে তারা চলে যাবে এমন সময় লোকটা ডলির ভাইয়ের হাতটা চেপে ধরে বলছে এই শোন কেরে তোরা? বাড়ি কোথায়? আমাকে তোদের বাড়ি নিয়ে যাবি? যাবো। ছাড়ো বাবা এসে যাবে। দেখতে না পেলে বকবে। বলে হাত ছাড়িয়ে একছুটে দুই ভাইবোনে ঘরে চলে এলো।

দুদিন পর এক বিকেলে সেই দাদু মানে লোকটি এলো পুরী ভ্রমণের কার্ড নিয়ে তাদের বাড়ি। দুই ভাইবোন তাকে দেখে লুকোতে যাবে এমন সময় ধরে নিল তাদেরকে। ছাড়ো দাদু ছাড়ো বলে চিল চিৎকার শুরু করে দিল। তখন তার জাড়তুতো ছোটো বোন ছুটে এলো দাদু এসেছে দাদু এসেছে বলে। সবাইকে দাদু বলতে দেখে ডলির মাতো বকা দিয়ে বলল কাকু হবে কাকু বলে ডাকো। তখন লোকটা বলল ঠিক আছে বৌদি ওরা যদি দাদু বলে মজা পায় তাহলে বলুক না। একথা শুনে ডলির ভাই বাবাই চিৎকার করে বলে উঠল কাকু বলব না। দাদু না বলে নাম ধরে দাদা বলব। আর সেই থেকে সেই লোকটা দাদুর বদলে দা হয়ে গেল। দিন আসা যাওয়ার ফলে সকলের মধ‍্যে একটা ভালোবাসা গড়ে উঠল। কিন্তু তার মধ‍্যেও ডলিকে লোকটা ভীষণ অপছন্দ করত গায়ের রঙ কালো ছিল বলে। সে বাবাই আর আর ডলির জাড়তুতো ছোটো বনের সাথে কথা বলতে ভীষণ ভালোবাসতো। লোকটার বয়স তখন তেইশ বছর। বন্ধুর মতো মিশে যেতো সবার সাথে। কথায় কথায় ডলি শুনতে পেতো কালো রঙকে সে ঘৃণা করে। তাই ডলি তার কাছ থেকে কিছুটা হলেও দূরে থাকার চেষ্টা করত। ডলি পরে পরে জানতে পেরেছিল তার জেঠুর ছোটো মেয়েকে ভালোবাসত বলেই তাদের বাড়িতে তার আসা যাওয়া। তখন তো মোবাইল বা টেলিফোনের চল গ্রামের বুকে ছিল না। তাই চিঠিপত্রের মাধ্যমে প্রেমালাপ শাসন সব চলতো। তো চিঠিপত্রের মাধ্যম হিসাবে ব‍্যবহার করত ডলিকে। আর ডলি যদি পারব না বলত তাহলে সে আর তাদের বাড়ি আসবে না বলে ভয় দেখাতো। কেন না সে জানত ডলি আর বাবাই তাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। আর ডলির বাবা মাও তাকে ভীষণ ভালোবাসে।

হঠাৎ একদিন কীভাবে তাদের গোপন প্রেমের কথা জানাজানি হয়ে গেল। ভূগোল ক্লাস নিতে এসে ম‍্যাডাম ডলির জেঠুর ছোটো মেয়েকে দেখতে না পেয়ে উঁচু ক্লাসের দাদাদেরকে ফলো করতে বলল। ডলি ও তার বোন এক সাথে ক্লাস এইটে পড়ত। তারা এসে খবর দিল সে দোকানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। সাথে সাথে ডলির জেঠুকে স্কুল থেকে খবর দেওয়া হলো আপনার মেয়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নির্জনে গল্প করছে ব‍্যবস্থা নিন কিছু। তারপর ডলির জেঠু ও জেঠিমা এসে টানতে টানতে ঘরকে নিয়ে গেল। মারের পর মার শুরু হলো। পা ফেটে রক্ত বেরোতে শুরু করল। ডলির বোনের ঘর থেকে বেরোনো বন্ধ হয়ে গেল। তখনকার দিনের শাসন ছিল মারাত্মক। পা ফেটে রক্ত না বেরোনো পর্যন্ত মারের পর মার চলত। এমনকি প্রেমিকের সম্পর্কে অন্য মেয়েকে নিয়ে কানে কুমন্ত্রণা দিতেও ছাড়তো না বাবা মা। ফলে ডলিকে নিয়ে নানারকমের অপবাদ দেওয়া শুরু করল তারা তার মেয়ের কাছে এবং তার সাথে সাথে ডলির সাথে মিশতে দেওয়াও বন্ধ করে দিল তারা। শুরু হলো দুই পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল। এভাবে চলতে চলতে ডলির ভাই বাবাইয়ের শুভ উপনয়নের দিন ধার্য করা হলো। উপনয়নে পরিবারের সবাইকে এবং আত্মীয়স্বজনকেও বলতে হবে তাই যখন ডলির বাবা মা গেল সবাইকে বলতে তারা সবাই জানিয়ে দিল যেতে পারি এক সর্তে রতন এবং রতনের বাড়ির কাউকে নেমন্ত্রণ করা চলবে না তবেই আমরা যাবো নইলে না। তাতেই রাজি হতে হলো ডলির পরিবারকে। রতনকে সব ঘটনা জানানোর পর সে শুনে নিজেই বলল আমি কলকাতা চলে যাবো উপনয়নের সময় থাকব না এখানে। আপনারা আপনাদের উপনয়নের কাজ শুরু করুন আমাকে নিয়ে ভাববেন না। বাবাই শুনেই কাঁদতে থাকে। রতনেরও চোখে জল। সে তাকে বোঝাতে থাকে। তারপর সে চলে যায়। এমনই হিংসা বা রাগ ডলির পরিবারের উপর ভাই-ভাগারীদের যে কি বলব সব রান্না করা খাবারের উপর কাঁচা সুপারিকে কেটে কখন লুকিয়ে মিশিয়ে দিয়েছিল তা ডলির পরিবারের কেউ দেখেনি। যার ফলে খাবার পরিবেশন করার সময় কেউ কোনো তরকারি খেতে পারেনি। সব তরকারি ভাত তেতো হয়ে গিয়েছিল। তাই খাবারের জায়গা ছেড়ে সকলে থুথু করে ফেলে রেখে উঠে চলে গিয়েছিল। শুধু চলে গেল যে তাও নয়। ডলির বাবাকে ডেকে সকল নেমন্ত্রিত লোকজন চরম অসম্মান করতে লাগল। আর তাই দেখে ভাই ভাগারীদের কি আনন্দ। তবে উপনয়নের কাজ ঠিকভাবে হলেও অসম্মানের ফলে ডলির বাবা-মা অনেক কষ্টে উপনয়নের সমস্ত খাবার চোখের জল ফেলতে ফেলতে পুকুরের জলে ভাসিয়ে দিল।

ডলির বাবা-মা বুঝল তাদের ভাই-ভাগারী, আত্মীয়-স্বজন কোনোদিনও তাদের ভালোবাসেনি আর তাদের ভালো চায় না। এক সপ্তাহ পর রতন ফিরে এল গ্রামে। তারপর উপহার স্বরূপ অঙ্কনের খাতা ও জলতুলির রং ও পেনসিল এনে বাবাইয়ের হাতে দিল। এমনভাবেই তার আসা-যাওয়া চলতে লাগল। বাবাইও খুব নিষ্ঠা সহকারের সাথে একবছর ধরে উপনয়নের সকল নিয়ম নিষ্ঠা সহকারে পালন করতে লাগল। ঠিক একবছর পূর্ণ হতে যাবে তার একমাস আগে বাবাইয়ের মামস্ হলো গ্রামের ভালো নামকরা ডাক্তার চিকিৎসা করতে লাগল। তখন ছিল জানুয়ারি মাস। মামস্ প্রায় ভালো হয়ে আসছে ফোলাও কমে গেছে সামান্য। ছয়দিনের দিন সে তার দিদি ও বাবার কাছে বসে সন্ধ্যাবেলা আলিফ লায়লা দেখছিল। হঠাৎ কি মনে হলো শরীর থেকে কম্বল সরিয়ে দিয়ে খালি গায়ে বেরিয়ে গেল পটি করতে কিন্তু পটি হলোনা বাথরুম সেরে নিজে টিউবওয়েল পাম্প করে জল খেল। সবাই বারবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করল যাতে জল না খায়। একপ্রকার জোর করেই দু’ঘট জল পান করে এসে তার দিদিকে বলল ‘দিদি তুই সর’ বেশ শেষ ঐ কথাটুকুই ছিল তার জীবনের শেষ কথা। আর কোনো কথাই সে বলতে পারল না অঘোরে ঘুম চলে এল।সবাই ডাকছে বাবাই ওঠ বাবাই ওঠ। তার দিদি কাঁদতে কাঁদতে ডাকছে ভাই একবার ওঠ আমাকে সরিয়ে দিয়ে কোথাও যাস না। আমি তোকে ছেড়ে কখনও থাকতে পারব না। কত আকুলি বিকুলি করে মা কাঁদতে রইল। যে পিসি পিসেমশায়কে এত ভালোবাসত তারা কেউ একবারের জন্য দেখতে এলো না।

রতন তাড়াতাড়ি তিন কিলোমিটার পেরিয়ে গাড়ি আনতে গেল। গাড়িও চলে এলো। ডেকাড্রন ইন্জেকশন দেওয়া হলো তবুও জ্ঞান ফিরল না। সাথে সাথে গাড়ি করে তার বাবা-মা ও পাশের বাড়ির এক কাকা সদর হাসপাতালে নিয়ে ছুটল। কিন্তু কিছু লাভ হলো না। বাবার কোলে দেহ আর মায়ের কোলে মাথা রেখে চিরজীবনের মতো ঘুমিয়ে পড়ল আর জাগল না কোনোদিন। চলে যাওয়ার সময় সবাইকে ঘুমাচ্ছন্ন অবস্থায় জাগিয়ে দিয়ে চলে গেল। আর ফিরল না সে কোনোদিন। মৃত দেহ বাড়িতে নিয়ে সবাই যখন ফিরল তার দিদি তাকে দেখেই বারেবারেই জ্ঞান হারাতে রইল। ঘরে শোকের ছাওয়া নেমে এলো।স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা মহাশয়াগণ খবর পেয়ে সকলেই ছুটে এলেন। গোটা গ্রাম ভেঙে পড়ল। মামারা এসে ভাগ্নিকে বারবার অজ্ঞান হয়ে যেতে দেখে তাদের সাথে নিয়ে চলে গেল। কিছুদিন তাদের কাছে রেখে পৌঁছে দিয়ে গেল তার বাবা-মায়ের কাছে। ডলি সবসময় তার ভাইকে খুঁজে বেড়াতো। ভাই ভাই করে এখানে ওখানে ছুটে ছুটে গিয়ে ডাকত। সাড়া পেতো না কাঁদতে কাঁদতে এসে আবার অজ্ঞান হয়ে যেতো। এই দেখে রতন তাকে আর কোনো সময় একা ছাড়তো না। ডলির বাবা-মা রতনের হাত ধরে মেয়েকে সময় দেওয়ার অনুরোধ জানাল। ডলির সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়ে উঠল রতন। মেয়ের বয়স যখন আঠারো পার হলো তার বাবা-মা রতনের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিল। ডলি কিন্তু আজও তার ভাইকে ভুলতে পারে নি। আজও সে চোখের জলে ভাইয়ের ফটোর কাছে রাখী বাঁধে। তার বয়স অনেক হলেও আজও সে তার ভাইকে ভুলতে পারেনি।।

বিপাশা চক্রবর্তী | Bipasha Chakraborty

Vivekananda and Kabiguru | বিবেকানন্দ ও রবীন্দ্রনাথ | Best Article 2023

Why 15th August chosen as Independence Day? | Probodh Kumar Mridha

Why do newborn baby cry after birth? | Probodh Kumar Mridha

Goddess Dakshina Chandi 2023 | Barid Baran Gupta | Best Article

Read Best Bangla Golpo Collection | New Read Online Bengali Story | Best Bangla Golpo Collection Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Best New Bengali Web Story 2023 | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | Best Bangla Golpo Collection in India | World’s Best Bangla Golpo Collection Blogs | New Bengali Web Story in Online | Online Best Bangla Golpo Collection | Full Read Online Bangla Golpo | New Bengali Web Story Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English | Live Bengali Story pdf | Full Bangla Golpo Read Online | New Best Bangla Golpo Collection | Best Bangla Golpo Collection – Episode | Golpo Dot Com Series | Horror Adult Story Video | Horror Live Bengali Story | Bangla Golpo Read Online Audio | Bangla Golpo Read Online Video | Best Bangla Golpo Collection Netflix | Full Bangla Galpo Read | Best Bangla Golpo Collection Download | Shabdodweep Competition | Bangla Golpo Read Online Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Trend Best Bangla Golpo Collection | Recent Best Bangla Golpo Collection | Top Live Bengali Story | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Bangla Golpo Read Online 2023 | Shabdodweep Bangla Golpo Read Online | New Bangla Golpo Read Online | Best Bangla Golpo Collection in pdf | Golpo Dot Com Download | Bengali Famous Story – audio | Horror Adult Story | Read Best Bangla Golpo Collection | Live Best Bangla Golpo Collection – video | New Bengali Web Story APK | New Bengali Web Story Download | Live Bengali Story mp3 | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Best Bangla Golpo Collection – audio | Top Best Bangla Golpo Collection | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bangla Golpo Read Online | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bangla Golpo Read Online | Shabdodweep Writer

Leave a Comment