The Flower of Teak Tree – Malay Sarkar
সেগুনফুল – মলয় সরকার
সেগুন গাছটা ছোট ছোট সাদা ফুলে ভরে উঠেছে। হাল্কা গন্ধে চারিদিক ম’ম’ করছে।তার সাথে ভরা জ্যোৎস্নায় চারিদিক ফটফট করছে। সাদা দুধের বন্যায় যেন চারদিক থৈ থৈ করে ভেসে যাচ্ছে।এর মধ্যে কিঙ্কর গাছটাকে জড়িয়ে ধরে হাপুস নয়নে কেঁদে যাচ্ছে নিঃশব্দে। যদিও সম্পূর্ণ বেমানান – এমন জ্যোৎস্নাভরা রাতে মানুষ হয় কবি হয়ে পড়ে, নয় তো পাগল হয়ে যায়। কবিরা আবার এমনই রাতে তাজমহল দেখার কথা, তার সৌন্দর্যের কথা বলেছেন। কিঙ্কর আজ সে সবের থেকে অনেক দূরে- ওসব ভাববার আজ তার কাছে কোন অবসর নেই।
বছর কুড়ি হল।যেদিন একটি ছোট সবুজ কচি প্রাণ পৃথিবীর আলো দেখার সাথে সাথেই তীব্র চিৎকারে সারা পৃথিবীকে জানিয়েছিল যে, দেখ আমি এসেছি, সেদিনই একটা বয়স্ক মানুষ কোথা থেকে একটা ছোট্ট সবুজ সেগুনের চারাকে ঘরের বাগানের কোনটিতে এনে পুঁতেছিলেন।
কিঙ্করকে বলেছিলেন, দেখ বাবা, নাতনীর কবে বিয়ে হবে-তখন আমি থাকব কি না কে জানে, আমার যৌতুকটা এখনই দিয়ে গেলাম।
বাবা বলেছিলেন, আজ থেকে অন্ততঃ কুড়ি-পঁচিশ বছর পরে যদি নাতনীর বিয়ে হয় , তখন গাছটার যা দাম হবে তাতে নাতনীর কিছু গয়না-পত্রের দাম হয়ে যাবে। সেই থেকে রয়ে গেছে গাছটা।শুধু রয়ে যাওয়া নয়, বাড়ির লোকের আদর-যত্নে বেশ ডাগর ডোগরটি হয়ে উঠেছে।
খুব সাদাসিধে ছিলেন কিঙ্করের বাবা। বড়লোক তো ছিলেন না তবে হিসেবী ছিলেন মানুষটা। আর ঐ, দূরদর্শিতা ছিল খুব। সময়ে, অসময়ের কথা চিন্তা করে সাবধান থাকতে বলতেন। বলতেন ,আগুন লাগলে কেউ কুয়ো খোঁড়ে না রে বাপ, আগে থাকতে খুঁড়ে রাখতে হয় – তবে আগুন লাগলে কাজে দেবে। নাতনী অন্ত প্রাণ ছিল মানুষটার। ফর্সা কাঁচা সোনার মত রঙ বলে নাতনীর নাম রেখেছিলেন সোনালী। আবার, রসিক মানুষ- সেগুন গাছটিকে দেখিয়ে বলতেন আমার দুই নাতনী, একটি সোনালী তো আর একটির নাম দিলাম শ্যামলী।সেই থেকে গাছটিকে আর কেউ গাছ বলত না -তার সম্বন্ধে কথা হলে ‘শ্যামলী ‘বলেই কথা বলত বাড়ীর লোক।সেও যেন পরিবারের একজন হয়ে গিয়েছিল। কোন পুজো-আচ্চা কি বিশেষ কোন খাওয়াদাওয়া হলে বাড়ীতে, শ্যামলীকেও নিবেদন করা হত। একটু বড় হতে নাতনীকে শিখিয়েছিলেন , এটিও তোমার একটি বোন-গাছ বোন। দুজনেই আমার বাড়ীর দুই নাতনী।
প্রকৃতপক্ষে এটি একটি উপলক্ষ মাত্র। কিঙ্করের বাপ আসলে একজন প্রকৃতি-প্রেমিক আর গাছ ভক্ত মানুষ।দিনরাত টুক টুক করে এখানে গাছের চারা লাগাচ্ছেন, ওখানে আগাছা তুলছেন , কোথাও পুরানো ডাল কি পাতা ছাঁটছেন কি কোন গাছের বীজ সংগ্রহ করছেন। এই নিয়েই দিন কেটে যেত। তাঁকে বিভূতিভূষণের ‘আরণ্যক’ এর লবটুলিয়া নাড়াবইহারের যুগল প্রসাদের আর এক সংস্করণ বলা যেতে পারে। প্রতিবেশীরা অবশ্য লুকিয়ে ভদ্রলোককে ‘গাছপাগলা বুড়ো’ বলত। সে কথা তিনি গায়েই মাখতেন না। তিনি বলতেন, দেখিস, আমি মরে গিয়ে পরের জন্মে এখানেই গাছ হয়ে থাকব আর সবাইকে দেখব।
সোনালী আর শ্যামলী বেড়ে উঠতে লাগল দুই যমজ বোনের মত। সেগুন গাছটি যখন ভরা বর্ষায় নধর নধর বড় বড় সবুজ চিকণ পাতার ডালা নিয়ে হাতীর কানের মত দোলাতে থাকত তার দিকে তাকিয়ে মন ভরে উঠত কিঙ্করের। বৌকে ডেকে বলত, দেখে যাও গো সোনার মা, তোমার ছোট মেয়ে কি বলছে।
সে আদর করে এসে বাগানে গাছের গায়ে হাত বুলিয়ে দিত। লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক সময় তার গুঁড়িতে চুমু খেয়ে ভালবাসা জানাত। শ্যামলীও গরুর মত, তার বড় বড় পাতা দুলিয়ে জানান দিত, ভালবাসার প্রত্যুত্তর দিত।
মাঝে কে একজন এসে বলেছিল, তোমার গাছখানা কিঙ্করদা, দারুণ হচ্ছে। শুনে কিঙ্কর ফোঁস করে উঠেছিল, খবর্দার, ওর দিকে নজর দিবি না।ও আমার ছোট মেয়ে।
পরদিনই নজর কাটাবার আর যাতে কু-লোকের নজর না লাগে তার জন্য, মা কালীর থান থেকে পুজো করা সুতো এনে গাছের গুঁড়িতে বেঁধে দিয়েছিল। সত্যিই কিঙ্করের বাবা নাতনীর বিয়ে দেখে যেতে পারেন নি। সোনালীর যখন বছর দশেক বয়স, মাত্র সাতদিনের জ্বরে সকলের মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন। যাবার সময় বলছিলেন, কিঙ্কর রে, তোর মা ডাকছে আমাকে। অনেকদিন একলা আছে তো ,আর পারছে না। আমি যাই। তুই, দুই নাতনী রইল, ওদের দেখিস। হাউ হাউ করে শিশুর মত কেঁদে উঠেছিল কিঙ্কর। কিঙ্কর দেখেছিল, শ্যামলী কদিন কোন পাতা নাড়ে নি, কোন উচ্ছলতা ছিল না ওর মধ্যে। বাড়ীর সবার সাথে তাল মিলিয়ে ও কটা দিন কেমন যেন নিঝুম হয়ে চুপ করে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল। বাবার দেহটা শ্মশানে দাহ করে এসে কিঙ্কর আগে ছুটে এসে শ্যামলীকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল, ওরে তোর দাদু চলে গেল । তোকে কি আমি বাবার মত যত্ন করতে পারব। বাবা তোকে ঠিক সময়ে জল , খাবার দিত।এখন তোকে বাবার মত কে দেখবে।আমি কি পারব। বলে শ্যামলীর সরু দেহটাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে সে কি কান্না।
কিঙ্কর জানে, শ্যামলী সব বোঝে, সব জানে – সব দেখে, শুধু বোবা মেয়ের মত কথা বলতে পারে না। তাই কিঙ্করেরও, প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়ে থাকলে বাবা -মায়ের যেমন তার উপর টান বেশী হয়, শ্যামলীর উপরও যেন একটু বেশী টান। এই নিয়ে মেয়ের সাথে মাঝে মাঝে ছদ্ম রাগ অভিমান চলত। সোনালী বলত, হ্যাঁ শ্যামলীই তোমার সব্। আমি যেন কেউ না।
কিঙ্কর আবার মেয়ের মান ভাঙ্গাতে বসত, না রে মা। ও তো কথা বলতে পারে না, তাই ইশারায় বোঝায়।তাই ওকে একটু বেশী বুঝতে হয়, নাহলে ওর আবার রাগ- অভিমান হবে।তুই তো কথা বলতে পারিস।তুই আমার কতটা প্রাণের আদরের তা কি বুঝিস? মেয়ের রাগ ভেঙ্গে যেত। বাবাকে জড়িয়ে ধরে আদর করত। সোনালীর মা বলত, মেয়েকে আদর করলেই হবে, মেয়ের বিয়ে দিতে হবে সেটা মাথায় রেখো। দেখতে দেখতে বারো বছর হল। আর কটা দিন- মেয়ে ছেলের বাড় তো। এখন থেকেই তৈরি হও।
— সে সব হবে বৈকি। বলে যেন আসন্ন বিচ্ছেদের দুঃখে কিঙ্কর একটু উদাস হয়ে পড়ত।
সোনালী কাছের স্কুলে পড়ে। বেশী দূরে যেতে হয়নি গ্রামের কাছেই স্কুল।আরও কয়েকটা মেয়ে যায়, একসঙ্গেই যাওয়া আসা করে। কিঙ্কর ইচ্ছে করেই মেয়েকে মেয়ে- স্কুলে দিয়েছিল। তবে স্কুলটা ভালই – পড়াশোনাও ভালই হয়। সোনালীও এক মেয়ে হলে কি হবে, বাপ-মায়ের আদরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা কোনোদিনই হয়নি। সে বরাবরই পড়াশোনায় ভাল, বেশ সিরিয়াস। মাষ্টার মশাইরা তো কিঙ্করের কাছে বলেন, ভাগ্য করে মেয়ে পেয়েছিলে হে। সোনালী নিশ্চয় আমাদের স্কুলের মান রাখবে। আমরা তো ওর উপর খুব আশা রাখি। তুমি আবার যেন দশ বারো ক্লাস পাশ হলেই সবাইয়ের মত বিয়ের পিঁড়ি তে বসিয়ে দিও না। ওকে পড়িও, দেখো ও, তোমার শুধু নয় আমাদেরও মুখ উজ্জ্বল করবে।
কিঙ্কর হেসে বলে, না না, ও তো আপনাদেরই মেয়ে।আমি আর কতটুকু করতে পারি।ওর যতটুকু ভাল তার কৃতিত্ব তো আপনাদেরই। আপনারা যা বলবেন, তাই হবে।
বিয়ে দিলেই তো মেয়ে কে পর করে দূরে ছেড়ে দিতে হবে। কিঙ্করের বাপের মন তাতে সায় দেয় না । ওর মা কে মুখে বিয়ের কথায় সায় দেয় বটে তবে মাষ্টার মশাইদের কথায় মনে একটু জোর পায়। অহেতুক, বাড়ি গিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে আদর করতে আরম্ভ করে। সে আশ্চর্য হয়- তবে বাবার এই পাগলামিতে আজকাল একটু অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
দেখতে দেখতে উঁচু ক্লাসে উঠেছে মেয়ে। একাই সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়, মাষ্টারদের কাছে পড়তে যায়। হাঁ করে পিছন থেকে তাকিয়ে থাকে কিংকর আর তার বৌ।ভাবে সেদিনের ছোট্ট সোনালী আজ কেমন বড়টি হয়েছে। চোখে জল এসে যায় দুজনের।নিঃশব্দে চোখ মোছে দুজনে। অদৃশ্য দেবতার উদ্দেশ্যে প্রণাম আর মিনতি জানায়, তোমরা দেখো আমার মেয়েকে, ভাল রেখো ঠাকুর।সব সময়ই চিন্তা হয় মেয়ের জন্যে, ও বাইরে গেলেই।
মেয়ে বলে, এত চিন্তা কর কেন? সবাই তো যাচ্ছে। এর পর স্কুল হয়ে গেলে তো কলেজ যেতে দূরে যেতেই হবে। তখন কি করবে তোমরা। কিঙ্কর বলে, তোর জন্যে বাড়ী ছেড়ে আমরাও কলেজের কাছে বাড়ী নেব। একসঙ্গে থাকব আমরা। মেয়ে হেসে বলে, পাগল সব।
সেদিন অল্প মেঘ করে ছিল আকাশে। মা বলল, থাক না সোনা। আজ যেতে হবে না । যদি বৃষ্টি আসে।সোনালী বলল, না মা , আজ খুব ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে। তাছাড়া আজ ক্লাস করে স্যারের ওখানে টিউশন সেরে বাড়ী ফিরব।সামনে পরীক্ষা, স্যর দু একটা বিষয় ভাল করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্যে আমাদের কয়েক জনকে ডেকেছেন।
— কি জানি বাবা। যাই হোক, দেরী করিস না। তাড়াতাড়ি ফিরিস। জানিস তো তোর বাবা আজকাল কত চিন্তা করে।
— না না দেরী হবে না ।
সাইকেল নিয়ে চলে যায় সোনালী। সন্ধ্যা হয়ে এল। মেঘটা ঝাঁপিয়ে এসেছে যেন। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। হয়ত এখনই বৃষ্টি আসবে। একটু পরেই ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে আরম্ভ করল। কিঙ্কর ঘরে ছিল না। এসেই আগে জিজ্ঞাসা করল, সোনা কোথায়, ফেরেনি এখনও?
— না, বলেছিল টিউশনি সেরে ফিরবে। কিন্তু এত দেরী করা তো উচিত নয়। স্যারেরও তো তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া উচিত।
নানা চিন্তায় ঘর আর বার করতে থাকে দুজনে। সোনা ছাতা নিয়ে গেছে? জিজ্ঞাসা করে কিঙ্কর।
— সে তো আমি জোর করে হাতে গুঁজে দিয়েছি। কিন্তু ছাতা নিয়ে তো এই বৃষ্টি আর হাওয়াতে তো সাইকেল চালানো যায় না।
বৃষ্টির জোর বাড়ে আর রাত বাড়ে। সঙ্গে তাল মিলিয়ে চিন্তার পাহাড় একটু একটু করে বাড়তে থাকে। কিঙ্কর তাকিয়ে দেখে আধো আলো আধো অন্ধকারে শ্যামলী প্রচণ্ড অশান্ত হয়ে উঠেছে। তাকে যেন আটকে রাখা দায়। হাওয়ার সঙ্গে সে যেন বাঁধা মত্ত হাতীর মত দাপাচ্ছে। কিছু কি বলতে চায় সে।এত দাপাদাপি কেন করছে আজ, অন্য দিনের থেকে যেন কিছু বেশীই। শ্যামলীর দিকে তাকিয়ে কিঙ্করের মেয়ের জন্য চিন্তাটা যেন বাঁধ ভেঙ্গে পড়ল। আর থাকা যায় না। সে বৌকে বলল, তুমি থাক, আমি একবার ছাতা আর টর্চটা নিয়ে একটু এগিয়ে দেখে আসি কোথায় আটকে পড়েছে মেয়েটা। কি মনে করে সোনালীর মা বলে, চল আমিও যাই। তুমি একা কোথায় কি পড়ে-টড়ে যাবে কে জানে।
রাস্তায় পড়ে একটা বড় পুকুর -লোকে বলে মরা বিল। কেন কে জানে – মরা বিল নামটা কে বা কেন দিয়েছিল। নামে ‘মরা বিল’, তবে জল ভালই। তার পাশে বেশ খানিকটা ঝোপ ঝাড়। হঠাৎ ঝোপের পাশে সোনালীর সাইকেলটা উলটে পড়ে থাকতে দেখে ভূত দেখার মত চমকে ওঠে কিঙ্কর। তাহলে কি মেয়েটা কোনোরকমে সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছে-পড়ে আছে পাশেই! আহা বৃষ্টিতে এতক্ষণ ভিজেছে, উঠতে পারেনি হয়ত।
নাঃ ঝোপের পাশে তো নেই। তবে? ছিটকে পড়লে তো পাশেই পড়বে, কতদূর আর যাবে।মনটা কু গাইতে লাগল দুজনেরই। বৃষ্টি হয়ে চলেছে সমানেই। চিৎকার করে উঠল দুজনেই মেয়ের নাম ধরে। কোনো সাড়া নেই। তবে কি পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে! আরো জোরে ডাকতে লাগল। অন্ধকার রাত্রিতে ফাঁকা মাঠে বৃষ্টির মধ্যে অসহায় মা বাবার আর্ত চিৎকারে কেউ সাড়া দিল না, শুধু ফাঁকা মাঠ অসহায় প্রতিধ্বনি তুলল। টর্চের আলো এই অন্ধকার পরিস্থিতিতে পথ হারাতে লাগল বারবার। সেও যেন চিন্তিত।খালি চোখে কিছু দেখা যায় না , কোন দিকে যাবে বুঝতে পারে না দুজনে । হঠাৎ বিদ্যুতের আলোতে দেখে মাঠের আলের উপর সোনালীর ওড়না আর এক পাটি চটি। সম্ভাব্য আশঙ্কায় আঁতকে উঠে গুংরে ওঠে দুজনেই।
ছেঁড়া খোঁড়া জামা কাপড়ে অর্ধ উলঙ্গ রক্তাক্ত কচি নিষ্পাপ ফুলের মত দেহটাকে এনে সেই রাত্রেই হাসপাতালে দিয়েছিল তারা। পুলিশ এসেছিল।তিনদিন অচৈতন্য অবস্থায় কাটিয়ে, এই নোংরা পৃথিবী যে তার বাসযোগ্য নয়, এই বার্তা দিয়ে সোনালী ফিরে গিয়েছিল তার সোনার স্বর্গে , যেখান থেকে সে এসেছিল। কেটে গেছে আরও চার-পাঁচটা বছর। দিন চলে গেছে নিজের নিয়ম মত।কিঙ্করের শূন্য ঘরে, হা হা করা বাগানে সকালের প্রভাতী রোদ আর বিকেলের পড়ন্ত লালিমা আসে আর যায় নিজের নিয়মে।আমের গাছে বসন্ত বৌরী আর দোয়েল আপনমনে শিস দিয়ে যায় । কিছুই যেন আর ছুঁয়ে যায় না মনকে।
সেদিন সকাল থেকেই দুজনেরই মনটা খুব খারাপ – আজ সোনালীর জন্মদিন। মেয়েটা বেঁচে থাকলে আজ কুড়ি পূর্ণ হত। মেয়ের ছবির সামনে গিয়ে দাঁড়ায় কিঙ্কর। হু হু করে ওঠে মনটা। স্নান খাওয়ার দিকে আর মন লাগে না। বার বারই শ্যামলীর দিকে তাকায়। আজ শ্যামলীও যেন কেমন উদাস, এলোমেলো হাওয়ায়, চলে যাওয়া দিদির শোকে কেমন যেন আনমনা।ঠিক বুঝতে পারে কিঙ্কর।অনেক উঁচু হয়েছে।সোনালীরও অনেক বড় হবার ইচ্ছা ছিল। মাঝে মাঝে যখন খুব মন কেমন করে শ্যামলীর তলায় গিয়ে দাঁড়ায়, মনের সব কথা বলে। মনটা একটু হাল্কা হয়।
গাছটা বড় হয়েছে বেশ। ওরও তো পূর্ণ যৌবন। হঠাৎ অজানা আশঙ্কায় বুকটা কেঁপে ওঠে।ওকেও কেউ —। শত্রুর তো অভাব নেই।দিনরাত চিন্তায় থাকে কিঙ্কর।
সেদিন পূর্ণিমা, ভরা জ্যোৎস্না। চারিদিকে যেন সাদা দুধের বন্যা বইছে। হঠাৎ কিঙ্করের সোনালীর কথা খুব মনে এল। এ রকম পূর্ণিমা দেখতে সে খুব ভাল বাসত। আকাশে পূর্ণ চাঁদ দেখলে মা বাবা দুজনকেই হিড় হিড় করে টানতে টানতে বাইরে আনত। কিঙ্করের আজ সেই কথা মনে হতেই, শ্যামলীর কাছে দৌড়ে গেল আর তাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠল।
শ্যামলীর তখন সর্ব অঙ্গ সাদা বড় বড় থোকা থোকা ফুলে ঢাকা। সে তার জ্যোৎস্না ভেজা সুগন্ধ ছড়িয়ে আর পাতার বাতাস দিয়ে কিঙ্করকে সান্ত্বনা দিয়ে যেন বলতে লাগল, দুঃখ কোরো না। আমি তো আছি।
মলয় সরকার | Malay Sarkar
Ramkrishna Mission Durga Puja Belur Math | Best Article 2023
Amar Pujo Special | Best Story 2023 | আমার পুজো স্পেশাল
Everyday Problems for Elderly | Best Article 2023
Education and Politics Notes | Best Article 2023
The Flower of Teak Tree | Top Bangla Golpo Online Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | Bangla Golpo Online Reading pdf | Famous Story – The Flower of Teak Tree | Pdf The Flower of Teak Tree | The Flower of Teak Tree Story App | Full Bangla Golpo Online Reading | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English |Bangla Golpo Online Reading Ebook | Full Bangla Galpo online | The Flower of Teak Tree 2023 | New Bengali Web Story – Episode | Golpo Dot Com Series | The Flower of Teak Tree Video | Story – The Flower of Teak Tree | New Bengali Web Story Audio | New Bengali Web Story Video | The Flower of Teak Tree Netflix | Audio Story – The Flower of Teak Tree | Video Story – The Flower of Teak Tree | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Trending Bangla Golpo Online Reading | Recent story The Flower of Teak Tree | Top Story The Flower of Teak Tree | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2023 | Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | The Flower of Teak Tree Download | Bangla Golpo Online Reading mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | The Flower of Teak Tree mp4 | The Flower of Teak Tree Story Library | New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Bengali Story – audio | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Story Collection – The Flower of Teak Tree