Best Modern Online Bangla Galpo 2023

Sharing Is Caring:

Modern Online Bangla Galpo – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা – সূচিপত্র

অবতরণ – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

অধীরবাবুর চাকরি আর দু-বছর চার মাস বাকি। এখন থেকেই বিভিন্ন অফিসে খোঁজ খবর চলছে, বন্ধুদের কাছে খোঁজ নিচ্ছে। আসলে অবসরের পরে কোন একটা প্রাইভেট কনসার্ন বা সরকারি অফিসে কাজ পেলে সময় কাটবে আবার পয়সাও আসবে। এই মতলবে শুধু কী অধীরবাবু একা ঘোরে! অবসরের কাছাকাছি এমনই অনেকেই অনুসন্ধানের লাইনে। বিজ্ঞাপন দেখা আর বিভিন্ন অফিসে যাতায়াত করে একটা কাজের যোগাড় অর্থাৎ পুনর্বহাল। কিছু চাকরিজীবীর প্রয়োজন আছে সেকথা অস্বীকার করা যায় না। অওনেকে বাড়িতে বসে থাকতে পারবে না এই অজুহাতে চাকরি খোঁজে। আবার কোন কোন চাকরিজীবী অফিসে অপরিহার্য হয়ে পড়েন, অবসরের পর তাঁরা সহজেই পুরনো অফিসে থেকে যান অন্তত পাঁচটা বছর।

সুযশ মণ্ডল অধীর বাবুর সহকর্মী। তাঁরও অধীর বাবুর তিন মাস পরে বিদায় ঘণ্টা বাজবে। ব্যাপারটা নিয়ে তার কোন উদ্বিগ্নতা নেই। ছেলেটি বেকার, মেয়েটিরও পাত্রস্থ করতে পারেননি। স্ত্রীর তো ভাবনায় ভাবনায় রাতের ঘুম প্রায় উধাও। স্বামীর অবসরের দিন যতই এগিয়ে আসে ভাবনার আঁধার যেন তাঁকে ঘিরে ফেলে ক্রমশ। অফিসে কাজের লোক হিসেবে সুযশ বাবুর যথেষ্ট যশ আছে। সহকর্মীরা সব সময় তাঁর সাহায্য পেয়ে কৃতজ্ঞও বটে। আধিকারিক বৃন্দ তাঁর ফাইল আগে ছাড়ে, কোন কিছুতে আটকে গেলে তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করে। সারাটা সময় ফাইলে মুখ গুঁজে কাজ করে চলেছেন। পাশের ধীরেন চাটুজ্যে মাঝে মাঝে সেই সংস্কৃত বাক্যটি শোনায়, – কর্মন্যে ব্যধিকা….. ফলেষু কদাচন। সুযশ বাবু ফাইল থেকে মুখ তুলে শুধু মিচ মিচ করে হাসে। জুনিয়র সহকর্মীরা কাজের ফাঁকে তাঁর কাছে আসে, গল্প করে। জিজ্ঞেস করে আর কতদিন দাদা ? তিনি একদম যেন মুখস্থ বলে দেন, – একবছর এক মাস। কী করবেন দাদা, অবসরের পর ? কিছুই না । সাবলীল ভাবে উত্তর দেন সুযশ। সময় কাটবে কী করে? – সময় কী আমার জন্য বসে থাকবে ভায়া ! ঠিক কাটবে। প্রতি বছর এই অফিস থেকে অনেকেই অবসর নেন। তারা দেখেছি কেমন যেন আতঙ্কে থাকেন যত অবসরের সময় এগিয়ে আসে। এই মানুষটার দেখছি কোন বিকার নেই, পুরোদমে অফিস করে যাচ্ছে। আবার বলে কী না, যেদিন কাজের বেশি চাপ থাকে আর তার বেশির ভাগ বা সম্পূর্ণ করতে পারলে মনটা ভরে যায়, যাকে বলে satisfaction । এইসব ভাবতে ভাবতে সহমর্মী চলে যায় তার টেবিলে।

তার বড়দা সুযশকে বলতো অফিসে অনেকেই বন্ধু হবে, কিন্তু কাজের সময় কেউ পাশে থাকবে না। নিজের কাজ নিজের দায়িত্বে করতে পারলেই নিরাপদ থাকা যায়। কেউ কারোর দায় নেবে না। ঠিক পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাবে। আগের কালে ছিল বিষয় ভিত্তিক ফাইল। তাতে সমস্ত সংশ্লিষ্ট গাইড লাইন, চিঠিপত্র, নোট শিট, তাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মন্তব্য নির্দেশ থাকতো। সেই নির্দেশ অনুযায়ী ড্রাফট তৈরি করবে স্টাফ। এই ভাবেই উত্তর প্রত্যুত্তরও চূড়ান্ত কাজ হত। বর্তমানে সবটাই কম্পিউটার নির্ভর। একালের ছেলেপুলেরা বেশ পোক্ত প্রবীণের দল তাই আজ অকেজো।

কাজের গতি বেড়েছে কিন্তু মাঝখানে বেশ ফাঁক থেকে যাচ্ছে। অবশ্য সেই ব্যাপারটা আজকের তরুণরা বুঝবে না। অফিসের কাজের যে একটা স্বচ্ছ পদ্ধতি ছিল তা যারা করেছে তারাই বুঝতে পারে ‘ফাইল মাহাত্ম্য’। কোন কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফাইলের ‘নোট শিট’ আর ‘ট্যাগ’ দিয়ে আটকে রাখা চিঠি সব কথা বলবে। সুযশ বাবুর মনে পড়ে, চাকরি জীবনের শুরুতে তার লেখা ‘ড্রাফট’ দেখে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক নোট শিটে লিখেছিলেন বড় বড় করে, – A good draft! আজও যেন তিনি সেই লেখাটা দেখতে পান।

……. দেখতে দেখতে সুযশ বাবুর হাতে গোনা দিনগুলো কিভাবে যে শেষ হয়ে গেল, নিজেই বুঝতে পারলে না। সময়ের রেলগাড়ি এইবার তার স্টেশনে এসে থামলো। বিভিন্ন জেলায় কর্মসূত্রে কেটেছে তার। অবসরও তার সেই এক ভিন জেলায়। এক ভদ্রলোকের বাড়ির ‘দেড় তলার’ একটা ঘরে থাকতো। স্বপাকে খাওয়া দাওয়া এবং হেঁটে পাঁচ মিনিটের মধ্যে অফিস। সহকর্মীরা বলতো, – কিভাবে পারেন আপনি এই অফিস সামলে রান্না বাড়ি! রাতে কী খান, ভাত না রুটি! রুটি শুনে সবাই অবাক হয়ে বলতো, – আপনি রুটি গোল করে তৈরি করতে পারেন! সুযশ বাবু বলতেন, – ভাবছেন রুটির আকার ম্যাপের মতন হয়ে যায়! একদম না, গ্রহের মত গোলাকার রুটি, পরখ করতে আমার বাসায় যেতে হবে। শুধু মাছ ভাজাটা একটু অসুবিধা হয় বটে। ভাত গলে যায় না, ঝরঝরে হবে। যখন কুচবিহারে ছিলাম পুরনো মেসে মাঝে মাঝে বন্ধুদের ভাত রেঁধে দিয়ে আসতে হত। সে বেলার খাওয়া ফ্রী। কিছুদিন পরে পরিবার নিয়ে অন্য বাড়িতে তখন থাকতাম ওদের মেসের কাছাকাছি। সেসব গল্প বলতে গেলে ফুরোবে না।

মাঝে মাঝে তার মনে হয়, কী ভাবে তেত্রিশটা বছর চলে গেল জীবন থেকে! মন থেকে ক্রমশ মুছে যাচ্ছে কী স্মৃতির ছবিগুলো! সংসার আর সংসারের মানুষগুলোকে ভালোভাবে দেখার ফুসরত পাওয়া যায়নি, শুধু অফিস আর অফিস। বেচারি স্ত্রীর ঘাড়ে সব কিছু দায়িত্ব দিয়ে তার সামাল দিতে হয়েছিল কাজের নানান ঝক্কি তথা অর্পিত দায়িত্ব। পাশের সহকর্মী সুশান্ত রায় বলতো, – যত কর ভাই, কেউ তোমার এই পরিশ্রম মনে রাখবে না। কথাটা সত্যি, কিন্তু নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে চলা তো যায় না। কেউ মনে রাখে না কী করে বলি! সুযশ বাবু একদিনের কথা ভুলতে পারে না আজও। তখন পোস্টিং কোন এক মহকুমা শহরে। সেদিন অফিসে অনেক মানুষের সঙ্গে এক নিরীহ সাধারণ মানুষ কে দেখে তাঁর অবাক লাগলো। মলিন ধুতি আর জামা গায়ে এবং মাথায় একটা আধ ময়লা গামছা। অনেকক্ষণ ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে। এ ঘরের সামনে একবার তো অন্য ঘরের সামনে। কেউ যেন তার পাত্তা দিচ্ছে না। কী করে সে বাবু দের টেবিলের সামনে যাবে তার কুড় খুঁজে পাচ্ছে না মনে হল। শেষে সুযশ বাবু অফিসের পিয়ন সোমনাথকে দিয়ে নিজের টেবিলের সামনে হাজির করলো। সামনের চেয়ারে বসতে বলায় মানুষটা অস্বস্তিতে কুঁকড়ে গেল। অনেক ক্ষণ বলার পর বসে ঘরের চারদিকে তাকায় ছোটদের মত। সুযশ বাবু বলে, – আপনার এই অফিসে কী দরকার ? বলুন তো দেখি। ঝোলা থাকে এক গুচ্ছ কাগজ দিয়ে বলেন,- জমি জমার কাগজ গুলোন একটু দেখপেন ছার, ঠিক আচে কী না। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে বাবু বলেন, – ঠিক আছে সব, তবে দুবছরের খাজনা বাকি ওটা শোধ করে দেবেন তাড়াতাড়ি। দুহাত কপালে ঠেকিয়ে চলে গেলেন হাসি মুখে। তখন বিকেল চারটা হবে, এই অফিসে এসেছিল বেলা এগারটার সময়।

সপ্তাহ খানেক পরে বেলা বারোটার দিকে সুযশ বাবু দেখেন সেই মানুষটা গামছা মাথায় আবার দরজায় উঁকি মারছে। আফিসঘরের মধ্যে ডাকলে গুটি গুটি টেবিলের সামনে হাজির। কী খবর বলুন। খাজনা পরিশোধের রশিদ দিয়ে বলেন, – কাজ হয়ে গেচে ছার। তবে কষ্ট করে এলেন যে আবার। সুযশ বাবু বলেন। আপনার সঙ্গে দেকা করতে এলুম। আসার আগে আমাদের পাড়ার থানে পোনাম করে বলি, – ঠাকুর ওই ছারের সঙ্গে যেন দেখা হয়। সুযশ বাবু মিনিট খানেক অপলক চেয়ে থাকলেন ওই নিরীহ মানুষটার দিকে। উভয় পক্ষ নির্বাক। রশিদ খানা ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, – প্রত্যেক বছর খাজনা শোধ করে দেবেন না হলে অনেক টাকা একসঙ্গে পরিশোধ করতে কষ্ট হবে, বুঝলেন? মাথা ঝুঁকিয়ে তাঁর উত্তর দিলেন। তারপর আবার দুই হাত জোড় করে কপালে ঠেকিয়ে ধীরে ধীরে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। সুযশ বাবু বেশ কিছুক্ষণ মানুষটার কথা ভাবলেন। কিছুই তো করা হয়নি মানুষটির জন্য। অথচ ভেতরটা কাঁপিয়ে দিয়ে গেলেন।

…… দেখতে দেখতে পাঁচ বছর পার, তিন দশকেরও বেশি কালের ধারাবাহিকতা থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন। এখন সম্পূর্ণ এক আটপৌরে জীবনের মধ্যে তাঁর অবস্থান। মাটির সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষ তার ভালো লাগতো সেই ছোটবেলা থেকে। জীবনের প্রথম আড়াই দশক সে ছিল মাটির কাছাকাছি। তারপর তিন দশকের উড়ান। মানসিকতা যদিও মাটির দিকে নিবদ্ধ, তাই আপ্রাণ চেষ্টা ছিল মাটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষের জীবন আরো বেশি করে বোঝার প্রচেষ্টা । সে কাজে সে কতটা সফল অথবা বিফল তা সে নিজেই জানে না। উড়ান থেকে ফিরে এসে তাই উড়ানের দুঃখ সুখ মান অপমান নিয়ত সংগ্রাম, তথাকথিত উচ্চ আসনে আসীন মানুষের মানসিকতা ঘৃণা অনুভূতিহীন আচরণ অবশ্য সীমিত ব্যতিক্রম ছাড়া, ভুলে গেলেন।

এখনকার যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে মানসিকতার সঙ্গে নিয়ত দ্বন্দ্ব। মূল্যবোধের শূন্যতা, নীতি হীনতা, সোজা পথের অভাব, পাশবিক শক্তির বাড় বাড়ন্ত, সর্বোপরি সমাজ ব্যবস্থায় এক ঘূর্ণির মধ্যে তিনি তলিয়ে যাচ্ছেন। এখন তাঁর মনে হয়, সে এক অচেনা গ্রহের জীব। তবু তাঁর বাঁচতে হয় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে, অনিয়মের স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, কুকথা আর অশ্লীলতার বাতাবরণে যেন বিধি বৈপরীত্যের দয়ায়। অনাকাঙ্ক্ষিত শুকিয়ে যাওয়া সমাজ চেতনার মধ্যে সে যেন এক অচেতন জীব!

কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা | Krishna Kishore Middya

Fathers Day History | পিতৃ দিবসের ইতিহাস ও বাঙালি আবেগ | 2023

Emblem of Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতীকের অর্থ | নক্‌শা ও তাৎপর্য | 2023

Advantages & Disadvantages of Tattoo | ট্যাটুর উপকারিতা এবং অপকারিতা | Bengali Article 2023

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Modern Online Bangla Galpo | Top Bangla Golpo Online Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | Bangla Golpo Online Reading pdf | Famous Story – Modern Online Bangla Galpo | Pdf Modern Online Bangla Galpo | Modern Online Bangla Galpo App | Full Bangla Golpo Online Reading | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English |Bangla Golpo Online Reading Ebook | Full Bangla Galpo online | Modern Online Bangla Galpo 2023 | New Bengali Web Story – Episode | Golpo Dot Com Series | Modern Online Bangla Galpo Video | Story – Modern Online Bangla Galpo | New Bengali Web Story Audio | New Bengali Web Story Video | Modern Online Bangla Galpo Netflix | Audio Story – Modern Online Bangla Galpo | Video Story – Modern Online Bangla Galpo | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Trending Bangla Golpo Online Reading | Recent story Modern Online Bangla Galpo | Top Story Modern Online Bangla Galpo | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2023 | Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Modern Online Bangla Galpo Download | Bangla Golpo Online Reading mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | Modern Online Bangla Galpo mp4 | Modern Online Bangla Galpo Library | New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Bengali Story – audio | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Story Collection – Modern Online Bangla Galpo

Leave a Comment