Param Gyan O Sadhan Tathya | পরমজ্ঞান ও সাধন তত্ত্ব | New Article 2023

Sharing Is Caring:

পরমজ্ঞান ও সাধন তত্ত্ব – সৌম্য ঘোষ [Param Gyan O Sadhan Tathya]

বাংলা কবিতা নানা পর্ব ও ইতিহাসের অনেক গভীর রহস্যময় উপত্যকা পেরিয়ে এসেছে। এভাবে আধুনিকতার পর্ব পেরিয়ে এখন উত্তরাধুনিকতার ধূসর জগতে হাঁটছে। বাংলা কবিতার প্রাচীন ও মধ্যযুগ যে কত সমৃদ্ধ ছিল, কত বৈভবে সমুজ্জ্বল ছিল, এখন সে বিষয় কেউ আলোচনা তেমন একটা করেন না। কারণ মানুষ তার বর্তমান কর্ম নিয়ে ব্যস্ত এবং অনেক আত্মতুষ্ট। এই আত্মকেন্দ্রিকতার কারণে ক্রমাগত আমরা শুধু ইতিহাসই নয়, আমাদের নৃতাত্ত্বিক পটভূমি ও দার্শনিক ভাব সম্পদ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে বাংলা ভাষা-সাহিত্যের নির্ধারিত পাঠ্য সীমার বাইরে, বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ও মধ্যযুগ নিয়ে তখনকার সাহিত্য প্রতিভার আলোচনা নেই। বর্তমান সময়ে সংবাদপত্র ও স্যাটেলাইট মিডিয়ার যুগে স্থূল বিনোদন বাণিজ্য নিয়ে মিডিয়ার মাতামাতি হয়, কিন্তু আমাদের অতীত গর্ব, উত্তরাধিকার ও পূর্ব পুরুষদের গৌরব গাঁথা ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয় তুলে ধরে অনুষ্ঠান হয় না। আসলে কি আমরা আমাদের নিজেদেরও যথার্থ মূল্যায়ন করতে পারছি?

আমরা যখন উত্তরাধুনিক সাহিত্য, কবিতা ও নন্দনতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করি; তখন অনেকটা অবচেতনে উপনিবেশিক প্ররোচনার শিকার হই। অর্থাৎ অস্তিত্বের আবিষ্কার ও মূল্যায়ন নিজের মতো করতে পারছি না। এখন একদিকে আমরা বাংলা কবিতার ত্রিশের দশকের (বিংশ শতকের) প্রধান কবিদের শেকড়হীন ঘোষণা করছি, অন্যদিকে যে উত্তরাধুনিকতাকে গ্রহণ করছি-তাও পশ্চিমা তাত্ত্বিকদের ব্যাখ্যাকে ভিত্তি ধরে, এ কারণে তত্ত্বীয় ভাবে আমরা আরেকটি নতুন উপনিবেশবাদী তত্ত্বের অনুগামী হচ্ছি কী না তা ভাবা দরকার। পোস্ট মডার্ন বা উত্তরাধুনিকতার যে দার্শনিক বাণী তার মূলবার্তা তা বহু আগেই প্রাচ্যে বিকশিত হয়েছে, আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপিত তা পাশ্চাত্যের বাজার হয়ে নতুন পণ্য হয়েছে। যদিও উত্তরাধুনিকতা যে অকৃত্রিম নিজস্বতার বৈশিষ্ট্য উপস্থাপন করে, স্থান-কাল, মূল্যবোধ ও মানব আস্থার স্বতঃস্ফূর্ত জাগরণকে মহিমান্বিত মনে করে, তার দার্শনিক ও নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য প্রাচ্যের সাহিত্য, কবিতা ও ভাব সম্পদে নিহিত রয়েছে। উত্তরাধুনিক কবিতা প্রাচ্যের প্রকৃতি, আত্মা ও জীবন সাধনার আনন্দ ও যুক্তির উদ্বোধনে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। ইউরোপের মানুষ তার বিশ্বাসের কাছে প্রতারিত হয়েছে, তাই তাদের আত্মার ঐশ্বর্য সংকোচিত হয়েছে, আর প্রাচ্য নিরন্তর ত্যাগের মহিমায় সর্বমানবিক বাণীকে ধারণ করে আছে। সে কারণেই বাংলা কবিতায় যখন উত্তরাধুনিকতার নতুন সংশ্লেষণ ঘটছে, তখন বাংলা কবিতার অতীত ধারাবাহিকতাকে একটি বিবেচনায় মূল্যায়ন করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। বাংলা কবিতার ইতিহাসে প্রাচীন ও মধ্যযুগের কবিরা ছিলেন জীবন সাধনার প্রাজ্ঞপুরুষ; কিন্তু আজকের সাহিত্য নিরন্তর সাধনার স্থান টেনে নিয়েছে মিডিয়ার বাহন, যেখানে কেবল আত্মপ্রচারই সরব। সাহিত্য মহাজীবন থেকে ক্লীবতায় অবতরণ। আজকের উত্তরাধুনিক কবিতা যেদিন মহাজীবনকে আপন অস্তিত্বের মধ্য দিয়ে পরম মহাবিশ্ববোধে উত্তীর্ণ করবে তখনই তা সার্থক হয়ে উঠবে।

Param Gyan O Sadhan Tathya

যদি বাংলা সাহিত্যের মহৎ কবিদের সৃষ্টিকে সামনে নিয়ে আসা হয়, তাহলে বাংলা ভাষার প্রাচীন ও মধ্যযুগের কবিদের নাম বাদ দেওয়া যায় না। বিশেষ করে উত্তরাধুনিক কবিতার যে দেশজ ভাব সম্পদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে আধুনিক যুগের কবিতার লক্ষ্য ছিল পাশ্চাত্য অনুসরণ। যদিও চেতনার মাঝে প্রতিফলন ছিল নিজস্বতার। যে লোকজ্ঞান ও মানবিক মহত্বের মূল সূত্রের কথা বলা হয়, তা প্রাচীন ও মধ্যযুগের কবিতায়ই সবচেয়ে বেশি ঐশ্বর্যবান হয়ে আছে। আধুনিক কবিতার যে সূচনা ঘটে মাইকেল মধুসূদন দত্তের হাতে; তারও কাব্য বিষয় উত্তরাধুনিক কবিতার বিষয়ের বাইরে নয় তিনিও ফিরে এসেছেন স্বভূমিতে।

প্রথমত বাংলা ভাষার মূল কাব্য প্রবণতার সব কবিই আজকের ভাষায় উত্তরাধুনিক। বাংলা কবিতার প্রাচীন যুগ সৃষ্টি করেছেন যে সিদ্ধাচার্য কবিগণ তাদের পদে তখনকার সমাজ ইতিহাসই নয়, জীবন সাধনা ও মানব মুক্তির নানা প্রসঙ্গ রূপকের মাধ্যমে উত্থাপিত হয়েছে। চর্যাপদের আদি কবি শবরপাদের একটি বিখ্যাত পদ এখানে তুলে ধরছি—-

“উষ্ণা উষ্ণা পাবত তহিঁ বসই সবরী বালী।
মোরাঙ্গ পীচ্ছ পরিহাণ সবরী গীবত গুঞ্জরী মালী
উমত সবরো পাগল সবরো মা কর গুলী গুহারী।
তোহেরী ণিঅ ঘরিণী নামে সহজ সুন্দরী
নানা তরুবর মৌলিল রে লাগেলী ডালী।
একেলী সবরী এ বণ হিন্ডই কর্মকুন্ডল বজ্রধারী
তি অ ধাউ খাট পড়িলা সবরো মহাসুহে সেজি ছাইলী।
সবরো ভূঅঙ্গণইরামণি দারী পেম্ম। রাতি পোহাইলী।
হিঅ তাঁবোলা মহাসূহে কাপুর খাই।
সুণ নৈরামণি কণ্ঠে লইআ মহাসূহে রাতি পোহাই
গুরুআক ধণুআ বিন্ধ ণি অ মণে বাণে।
একে সর সন্ধানে বিন্ধহ বিন্ধহ পরম ণিবাণে
উমত সবরো গরুআ রোসে।
গিরিবর সিহর সন্ধি পইসন্তে সবরো লোড়িব কইসে”

চর্যাপদের আদিকবি শবর পা’র (৬৮০-৭৬০ খৃীঃ) এটি একটি সাধন সঙ্গীত। চর্যায় সে কালের সমাজ বাস্তবতা ফুটে উঠলেও এর অন্তর্নিহিত লক্ষ্য হচ্ছে পরম সত্যে পৌঁছানো। এক্ষেত্রে বৌদ্ধ ধর্মের মহাযান সাধন পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে।

শবর পা’র চর্যাটির অন্তর্নিহিত ভাব হচ্ছে: ‘এই দেহ সুমেরু পর্বত, মস্তিষ্ক তার শিখর। সেখানে বাস করে শবরী। শবরের সহজ সুন্দরী গৃহিণী, নৈরাত্মাদেবী। নৈরাত্মাভাব বিকল্পরূপ ময়ূর পুচ্ছ এবং গুহ্যমন্ত্ররূপ গুঞ্জার মালা ধারণ করে আছে। বিষয়ানন্দে মত্ত শবর যেন তাকে চিনতে কোন প্রকার ভুল না করে। একমাত্র তার সঙ্গেই শবরের মিলন হওয়া উচিত।

দেহ সুমেরুতে নানা অবিদ্যারূপ তরু বিষয়ানন্দে মুকুলিত হয়েছে, তার পঞ্চ স্কন্দাত্মক শাখা-প্রশাখা আকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু এরই মধ্যে জ্ঞান-মুদ্রাদি রূপ কুন্ডল কানে পরে নৈরাত্মা শবরী একাকিনী ঘুরে বেড়ায়। শবরীর আহবানে শবর কায়বাকচিত্তরূপ ত্রিধাতুর খাট পেতে তার ওপর মহামুখরূপ শয্যা বিছাল এবং সম্ভোগচক্রে মিলিত হ’ল শবরীর সঙ্গে। সে হৃদয়রূপ তাম্বূল মহাসুখরূপ কর্পূরের সঙ্গে খায় অর্থাৎ চিত্তকে অচিত্ততায় লীন করে শবরী-নৈরাত্মাকে কণ্ঠে ধারণ করে মহামুখে রজনী-যাপন করে। গুরুবাক্যকে ধনু এবং নিজ মনকে বাণ করে নির্বাণকে বিদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ গুরুবাক্য অনুসারে চিত্তের সাধন দ্বারা নির্বাণ লাভ সম্ভব হয়েছে।

সহজানন্দ পানে প্রমত্ত শবর মস্তকে অবস্থিত মহামুখ চক্রে এমনভবে প্রবিষ্ট হয়েছে যে, তাকে তার বিষয় ক্লেশদুষ্ট জীবনে খুঁজে পাওয়া যাবে না। চর্যাগানের যে দ্বৈত অর্থ রয়েছে, তা সকলেই স্বীকার করেন। চর্যাকারগণ এই দ্বৈত অর্থের কোন অর্থটি মুখ্য হিসাবে চর্যাগান রচনা করেন, সে বিষয়টিকে প্রয়াশই এড়িয়ে যাওয়া হয়, যদিও চর্যাকারদের চর্যাগান রচনার মূল প্রেরণা ছিল তাদের পরমজ্ঞান চেতনা।

Sadhan Tathya

সমালোচকদের অনেকেই চর্যাগানের সমাজ বাস্তবতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন কিন্তু চর্যাগান উচ্চাঙ্গের সাহিত্য বিবেচিত হতো না যদি না তাদের সাধন তত্ত্বের জ্ঞান থাকতো। জ্ঞান ও চিন্তায় তা গভীর মনোরাজ্যে বিচরণ করেছেন। চর্যায় সামাজিক অর্থের আড়ালে ধর্মতত্ত্ব ও সাধন-তত্ত্বের উচ্চস্তরে তারা আরোহণ করেছেন। চর্যার আলোচকরা সবাই বিংশ শতকের চিন্তা ও জ্ঞানের মানুষ সে কারণে চর্যার ধর্মমতের চেয়ে সমাজ ও জীবন যন্ত্রণাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। চর্যাকারগণ যদি উচ্চাঙ্গের সাধন না করতেন তাহলে তাদের গানে সন্ধ্যা ভাষার আবরণে দ্বৈত অর্থ পাওয়া যেত না। চর্যাকারদের জ্ঞান ও মনীষার মূল্যায়ন করলেই তাদের সৃষ্টির তাৎপর্য বোঝা যাবে। বাংলা কবিতার এই মৌলিক শক্তি ও পরম জ্ঞাপনের ধারা পরবর্তী বাংলা কবিতার আলোচনায় গুরুত্ব না পাওয়ায় ক্রমাগত অনুল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছে। বাংলা কবিতার মূল ভাবচেতনা থেকে পরবর্তী বাংলা কবিতার মূল্যায়ন ক্রমাগত একপেশে হয়ে পড়েছে এবং এভাবে বাংলা কবিতার মূলজ্ঞান চেতনা থেকে পরবর্তীকালের কবিরা বিচ্যুত হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত আধুনিককালে বাংলা কবিতার চর্চাও আলোচনার জ্ঞানগত উৎস এই মৌলিক ভাবমন্ডল থেকে বিচ্যুত হয়ে পশ্চিমা অনুকরণ ও পশ্চিমাভাব জগতে প্রবিষ্ট হয়। কবিরা পরবর্তীকালে নিজেদের রচনায় তা আধুনিকতা ও নিজেদেরকে আধুনিক কবি হিসাবে প্রতিষ্ঠার জন্য নিজস্বতাকে উপেক্ষা করতে শুরু করেন।

সাহিত্যে এই আত্মবিস্মৃতি থেকে বাংলা কবিতা উদ্ধারের প্রথম চেষ্টা শুরু হয়, গত শতাব্দীর শেষ দশকে। যখন তরুণ কবি প্রজন্ম পশ্চিমকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন এবং কবিতাকে কেবল বর্ণনা সৌন্দর্যে আবরিত না করে; নিজস্বতা ও লৌকিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে জীবন-অভিজ্ঞতাকে দার্শনিক তাৎপর্যে রূপায়নের প্রচেষ্টায় রত হন।

এই ভাষা ধারার কেন্দ্রে রয়েছে ধর্মীয় জ্ঞানতত্ত্বে পরম ভাবনা। সুফী, বৈষ্ণব ও বাউল তত্ত্ব ও ধারার সৃষ্টি হয় এভাবেই। শ্রীচৈতন্যদেবের সময় এসব তত্ত্বের সংশ্রব ও সংশ্লেষ আরো গভীর হয়ে ওঠে। এই ধর্মতাত্ত্বিক জীবন ও দার্শনিক প্রেক্ষাপট যে ভাবমন্ডল তৈরি করেছে তার অখন্ড পরম ক্ষেত্রটি হচ্ছে ‘প্রেম’। প্রাচ্যের সারবস্তু যদি হয় প্রেম, সেই প্রেমের বহুমাত্রিক সংশ্লেষের জ্ঞানমার্গ রচিত হয়েছে বাংলা কবি ও সাধকের রচনা ও জীবন সাধনার। আধুনিক যুগ ও আধুনিক চেতনার মধ্যে যে কলোনিয়াল মানসিকতা তৈরি হয়েছে দু’শ বছরে তার বিষফলই বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যকে পেছনে ঠেলে দিয়েছে।

সৌম্য ঘোষ | Soumya Ghosh

Natun Bangla Kabita 2023 | তালাল উদ্দিন | Top New Poetry

Sunglass and our friendship | সানগ্লাসেই সৃষ্টি আমাদের বন্ধুত্ব | Bangla Galpo 2023

Love and nature | প্রেম ও প্রকৃতি | Bengali Article 2023

Do not let the towel sink | গামছাটা ডুবতে দিও না | Bangla Galpo 2023

পরমজ্ঞান ও সাধন তত্ত্ব | বাংলা প্রবন্ধ | বাংলার লেখক | প্রবন্ধ ও প্রাবন্ধিক | সেরা প্রবন্ধ | শব্দদ্বীপ | শব্দদ্বীপের লেখক | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন | চর্যাপদের সাহিত্য মূল্য আলোচনা কর | চর্যাপদের পদ | চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব | দেবলোকের অমৃতসন্ধানে | ভারতের সংবিধান | তন্ত্র ও তার দেবদেবী | বৌদ্ধ তন্ত্র-০৬ | সদগুরু ও সাধন-তত্ত্ব | জগদ্ধাত্রী তত্ত্ব | গৌতম বুদ্ধ ও বৌদ্ধ ধর্ম | স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা | সাধন তত্ত্ব – আমার কথা | তন্ত্র-সাধনা-১৬ | কুলকুন্ডলিনী তত্ত্ব | সাধক কাকে বলে | সাধনা কিভাবে করতে হয় | সাধনার শেষ স্তর কোনটি | মানব দেহ তত্ত্ব | জন্মতত্ত্ব | সাধনা অর্থ | দেহ তত্ত্বের নিগূঢ় বাণী | বাউল তত্ত্ব ভাবনার উৎপত্তি | চৈতন্যচরিতামৃত | চর্যাগীতির সাধন তত্ত্ব | বৈষ্ণব পদাবলী | ভগবান শ্রীকৃষ্ণ | বৌদ্ধ তন্ত্রসাধন – ধর্ম্মতত্ত্ব

Param Gyan O Sadhan Tathya | Param Gyan O Sadhan Tathya 2023 | Bengali Article – Param Gyan O Sadhan Tathya | New Article – Param Gyan O Sadhan Tathya | Param Gyan O Sadhan Tathya in pdf | Trend topic – Param Gyan O Sadhan Tathya | Recent article – Param Gyan O Sadhan Tathya | Updated article – Param Gyan O Sadhan Tathya | Full article – Param Gyan O Sadhan Tathya | Param Gyan O Sadhan Tathya in Bengali pdf | Param Gyan O Sadhan Tathya in English | Param Gyan O Sadhan Tathya pdf download | Shabdodweep Article -Param Gyan O Sadhan Tathya | Shabdodweep Founder | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Story | Shabdodweep Writer

Leave a Comment