Best Online Bangla Golper Boi 2023 | Probodh Kumar Mridha

Sharing Is Caring:

কত অজানারে! – প্রবোধ কুমার মৃধা [Online Bangla Golper Boi]

রবিবার আর ছুটির দিন ছাড়া সোম থেকে শনি, সকালে ওঠা থেকে অফিসে বেরিয়ে যাওয়া অবধি প্রতিটা কাজ‌ই চলে ঘড়ি ধরা সময়ের ছকে। আজ কয়েক মুহূর্ত বিলম্ব হলো। ঠিক বার হ‌ওয়ার মুখে বাচ্চা মেয়েটা ‘পাপা পাপা ‘ করে পিছন থেকে ডেকে বাপকে থামিয়ে দিয়ে ছোট ছোট পায়ে এসে বাবার গলা জড়িয়ে ধরল। সাধারণত সব দিন এমনটা ঘটে না। বেশির ভাগ দিন এত সকালে মেয়ে ঘুম থেকে ওঠে না। মঞ্জরি আজ অনেকটা আগে ভাগে উঠে পড়েছে। ছুটতে ছুটতে প্লাটফর্মে পৌঁছেও ধরতে পারল না; চোখের সামনে দিয়ে ৯-২০ ট্রেনটা বেরিয়ে গেল। একটু হতাশ হয়ে স্থির দাঁড়িয়ে র‌ইলো অর্ক। অগত্যা পরের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। এই ট্রেনটা ধরতে পারলে ভালো হতো, কী আর করা যাবে!

প্লাটফর্ম অনেকটা ফাঁকা ।প্লাটফর্মের এমন ফাঁকা অবস্থা শেষ কবে দেখেছে মনে পড়ে না অর্কের।ধীরে ধীরে কাছাকাছি একটা স্টীলের জোড়া চেয়ারে গিয়ে বসল সে। পকেট থেকে ফোনটা বের করে দু’মিনিট চোখ রাখল তাতে। মন বসাতে পারল না। উদ্দেশ্যহীনভাবে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে একেবারে কাছেই দেখল বসার আসনের পিছনের দিকটাতে নিরিবিলি একধারে জনা পাঁচেক বিশ-বাইশের যুবক শেডের ছাওয়ায় পরস্পরের গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে আছে। খুব নিচু গলায় নিজেদের মধ্যে গল্প করছিল তারা। তাদের পরনের পোশাক-পরিচ্ছদ ছিল অতি সাধারণ এবং মলিন।প্রত্যেকের চেহারায় বয়সোচিত জৌলুসের অভাব স্পষ্ট। কি মনে করে অর্ক তাদের কথাবার্তার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করল।একটু ভালো করে নিরীক্ষণ করে অর্ক আচমকা অবাক হয়ে গেল। পাঁচজন‌ই অন্ধ। জন্মান্ধ বলেই ধারণা হলো তার। বিস্মিত অর্ক চিন্তা করতে লাগল,এরা পরস্পর একত্রিত হলো কীভাবে? কার ও তো বোধকরি সাহায্যকারী নেই। এদের সবাই আপ-ডাউন বিভিন্ন ট্রেনে গান গেয়ে অথবা ‘বাবা-মা, ভাই-দাদা’ বলে বলে ভিক্ষে করে। ভিক্ষের উপকরণ প্রত্যেকের কাছেই আছে। কিন্তু কিভাবে এই অন্ধ ভিক্ষুকদল একত্র মিলিত হলো, কিছুতেই মাথায় ঢোকাতে পারল না অর্ক।অথচ তাদের কথাবার্তা এবং সাবলীল আলাপ প্রতি আলাপ থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে, এদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও পরিচয় বহু দিনের। এদের আছে এক আলাদা জগৎ। সে জগতে তারা তাদের নিজস্ব স্বাভাবিক একটা ছন্দ এবং গতিবিধি নিয়ে জীবনের প্রাত্যহিকের ক্রিয়াকলাপ সম্পন্ন করে থাকে, অর্ক তা আজ কিছুটা ধারণা করতে পারল। এই সমস্ত অনাত্মীয়, অপরিচিত মানুষগুলোর জীবনে যেমন দুঃখ-দারিদ্র বাসা বেঁধে আছে, তার মাঝে আবার হাসি-গান, টুকরো টুকরো আনন্দ ও বিরাজ করে, যা একান্তভাবে তাদের নিতান্ত নিজস্ব নিয়মের গণ্ডিতে আবদ্ধ আপন।

নিজেদের প্রয়োজনের ব্যস্ততায় অন্ধ বা দেবাঙ্গদের জীবন যাত্রার কোন হদিশ অর্কেরা রাখে না। রাখার অবসর বা কৌতূহল কোনটাই নেই। হয়তো বা মন-মেজাজের কোন এক মুহূর্তের সহানুভূতির আবেগে দু-একটা টাকা, দু-এক সময়, দু-একজন ভিক্ষাজীবীর ঝুলিতে প্রদান করে মানব ধর্মের কর্তব্য পালনের তাৎক্ষণিক তৃপ্তি লাভ করে। অর্ক এবার মনোযোগ দিল তাদের নিজেদের মধ্যে চলা গল্প গুজবের প্রতি। অন্ধ যুবক ক’জন পরস্পরের মধ্যে দৈনন্দিন এই ভিক্ষাবৃত্তির কথা এবং সাংসারিক অভাব অনটন, সুখ-দুঃখের বিষয়ে কথা বলছিল। অনেক দূর দূরান্তে পৃথক পৃথক এলাকায় তাদের‌ বাড়ি। কারও বাড়ি স্টেশন থেকে কাছে নয়। সবাই তারা খুব‌ই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাড়ির লোক বা পাড়ার লোকজনের সহায়তায় তারা স্টেশনে পৌঁছায়। সারাদিন ভিক্ষার পর সন্ধ্যায় বাসায় ফেরে।তাদের মধ্যে তিনজন বিবাহিত। শীত-গ্ৰীষ্ম-বর্ষায় এভাবেই ট্রেনের এক কামরা থেকে আর এক কামরায় ওঠানামা করে ভিক্ষার্জনের খুব একটা ব্যত্যয় ঘটে না। মাঝে মাঝে অফিস টাইমের আপ-ডাউন ভিড় ট্রেনগুলিতে চলা ফেরায় অনেকটা ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। উপার্জন সবার সবদিন সমান হয় না, বেশি কম আছে। এই পাঁচ যুবকের মধ্যে দু’জনের গানের গলা ভালো, বিভিন্ন ধরণের গান গেয়ে তারা একটু বেশি উপার্জন করে।

একজনের নাম মহম্মদ। সে আসত অনেক দূর থেকে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্ৰামাঞ্চলে ছিল তার বাড়ি। ঝড় বাদলের দিনে সব দিন সে বাড়িতে ফিরতে পারত না। বর্তমানে লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশনের কাছাকাছি শ্বশুর বাড়িতে ছেলে-বৌ নিয়ে পৃথকভাবে বাস করে। কথাবার্তায় এবং ব্যবহারে খুব‌ই আন্তরিক। আর একজন দয়াল।কথায় কথায় বেশ মজা করে আর এভাবেই সে দুঃসহ জীবনে টিকে থাকার রসদ সংগ্ৰহ করে।তার মা নেই। দ্বিতীয়বার বিয়ে করে বাবার আলাদা সংসার। দয়াল থাকে তার এক নিঃসন্তান জ্ঞাতি কাকার সংসারে। প্রাত্যহিক আয়ের প্রায় সবটাই দিয়ে দেয় তাদের, শুধু নিজের দুপুরের হোটেল খরচ আর বিড়ি-দেশলাই বাবদ কিছু কিছু টাকা নিজের কাছে রেখে দেয়। পরনের জামা-কাপড় যা কিছু লাগে তার বেশির ভাগটাই দোকানে দোকানে ভিক্ষে করে ব্যবস্থা করে নেয়। পরিচিত দোকানদারগণ বছরে এক-আধ বার এক সেট করে জামা-প্যান্ট দিতে কার্পণ্য করেন না। অনেক সময় তা উদ্বৃত্ত হয় আর বাড়ির লোকজন বা গরীব আত্মীয় স্বজনের মধ্যে বিলি করে দেওয়া হয়।

শরীফ বলে ছেলেটা তেমন বন্ধুবৎসল নয়। কথাবার্তা রসকষহীন, মেজাজ বেশ খানিকটা খিটখিটে। তার আবার দুই বিবি। গ্ৰামের বাড়িতে থাকে একজন, আর দ্বিতীয় পক্ষেরটিকে নিয়ে সে থাকে বারুইপুর সংলগ্ন সুবুদ্ধিপুর বস্তি এলাকায় এক ভাড়া করা টালির ঘরে। সংসারের বেশির ভাগ খরচ-খরচা মেটে পরিচারিকা বৌয়ের উপার্জনের দৌলতে। মোহন সাঁপুই নামের ছেলেটির অবস্থা তুলনামূলকভাবে কিছুটা ভালো বলা চলে। ভাই-দাদাদের সংসারে থাকে সে।মা বেঁচে আছে, তার সমস্ত রকম ঝক্কি-ঝামেলা মা-ই সামলে থাকে।মোহনের আবার ক্রনিক হাঁপানির রোগ আছে, মরশুম অনুপাতে শরীরের অবস্থা সমান থাকে না ।রোগটা যখন বাড়ে তখন আর কাজে বের হতে পারে না। সারা বছরের ডাক্তার খরচটা ভিক্ষের উপায়েই হয়ে যায়।যতদিন মা বেঁচে, ততদিন একপ্রকার নিশ্চিন্তি, তারপর যে কি হবে সে ভাবনা সে ভাগ্যের উপর ছেড়ে রেখেছে।

তাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম বয়সি ছেলেটার অবস্থা খুব‌ই করুণ। সে তার দুঃখ-দুর্দশার বিবরণ করুণ কণ্ঠে সমব্যথী বন্ধুদের কাছে বর্ণনা করছিল। তার মা-বাবা কেউ নেই। এক জ্ঞাতি ভাইয়ের বারান্দার এক ধারে পড়ে থাকে। ভাইয়ের বৌ তার উপর নানাভাবে অত্যাচার চালায়; পেটপুরে খেতে দেয় না। অথচ সে প্রতিদিন ১০০–১৫০ টাকা ভাইয়ের হাতে তুলে দেয়।সাহায্যকারীর অভাবে অনেক দিন বাসায় ফিরতে পারে না, প্লাটফর্মে পড়ে রাত কাটায়।তেমন একটা মেয়ে পেলে তার এই একাকীত্বের দুঃসহ দুঃখটা কিছুটা লাঘব হতেপারে বলে অন্ধ বন্ধুদের কাছে কাতর আবেদন রাখছিল সে।জানা গেল তার নাম বিশু।

ইতিমধ্যে আপ-ট্রেনের ঘোষণা হতেই অর্কের সম্বিত ফিরে এল। সে এতক্ষণ তদগত চিত্তে দূর থেকে দেখা নিত্যদিনের এই সমস্ত অসহায় সহযাত্রীদের অজানা জীবন কাহিনী শুনছিল আর মনে মনে অনেক কথাই তার অন্তরকে ভাবিত করে তুলছিল। ট্রেনের ঘোষণা হতে দেখল, অন্ধদের মধ্যে দুজন উঠে দাঁড়িয়েছে; বাকিরা তখনও বসে। আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়াল অর্কও। কিছুটা যেন অন্যমনস্কভাবে পায়ে পায়ে সামনের দিকে আগাতে লাগল সে। প্লাটফর্ম লোকে ভরে গিয়েছে।

মিথ্যের রূপকার – প্রবোধ কুমার মৃধা [Online Bangla Golper Boi]

মিথ্যে কথাকে কতটা শৈল্পিক সুষমায় উন্নীত করা সম্ভব তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জয়ন্তবাবু।সত্যের ভাঁজে ভাঁজে মিথ্যার ভেজাল ব্যবহার করাই তাঁর স্বভাবসিদ্ধ বৈশিষ্ট্য। বাজার থেকে আলু-পেঁয়াজ-তেল-মশলা একসাথে কিনে বাড়ির কাছাকাছি এসে পেঁয়াজের পলিথিনটা পৃথক হাতে নিয়ে ব্যাগে ছড়িয়ে পড়া পেঁয়াজগুলো তাতে ভরে সমস্ত বাজারটাই গৃহিণীর হাতে ধরিয়ে দিলেন। অসম্ভব ধর্মপ্রাণা ,সূচিবায়ুগ্ৰস্থ ধর্মপত্নী মায়াদেবী স্বামীকে জিজ্ঞেস করলেন,’পেঁয়াজগুলো অন্য বাজারের সঙ্গে মেশাওনি তো?’

‘মাথা খারাপ, নেড়া ক’বার বেল তলায় যায় ? এখনি তো আলু শুঁকে পেঁয়াজের গন্ধ পেলে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে।’
‘কথার ছিরি শোন না।’‌ বলে গৃহিণী রান্নাঘরে ঢুকে গেলেন।
‘বাঁচা গেল!’ কার মুখ দেখে যে আজ উঠেছিলেন ‌জয়ন্তবাবু, মনে মনে ইষ্ট দেবতার উদ্দেশ্যে মাথা নোয়ালেন।

জয়ন্তবাবুরা দুই ভাই। বড়জন অনন্ত, ছোট জয়ন্ত। দাদা অনন্তবাবু উচ্চ শিক্ষিত। অধ্যাপক হিসেবে সুনামের সাথে কর্মজীবন শেষ করে অবসর জীবন যাপন করছেন। ছোট ভাই জয়ন্ত পোষ্টালে কর্মরত। মিশুকে প্রকৃতির ,লম্বা শ্যামবর্ণ দোহারা চেহারা।বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ব্যবহারে যথেষ্ট আন্তরিক, মুখমিষ্ট স্বভাবের। মিছে কথা তাঁর মুখস্থ; এমন সাবলীল অনায়াস ভঙ্গীতে তা পরিবেশন করতে পারেন নতুন সঙ্গীর পক্ষে সন্দেহ বা অবিশ্বাস করা ভীষণ কঠিন।কিছু দিন জয়ন্ত বাবুর সঙ্গে মেলা মেশা না করলে তাঁর সত্য-মিথ্যার কারিকুরি‌ বিষয়ে নিঃসংশয় হ‌ওয়া মুশকিল।

বাড়ির গৃহিণী তাঁকে সব সময় সন্দেহের চোখে দেখেন ; তবে ধর্মপত্নী রূপে কেবল মাত্র পরকালে পাতকের হাত থেকে রেহাই পেতে স্বামীকে বিশ্বাস তাঁকে করতেই হয়।ভীষণ ধর্মভীরু, ঠাকুর দেবতায় নিবেদিত প্রাণ, দেব-দ্বিজে অগাধ ভক্তি । কী জানি পূর্বজন্মে কোন পাপের পরিণতিতে এজন্মে কুষ্ঠ রোগগ্রস্ত স্বামী তাঁর কপালে জুটেছে। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ এজন্মে সতী সাবিত্রীর মতো পতিসেবার পরাকাষ্ঠা দেখাতে এবং পূর্ব জন্মের পাপ স্খলনের আশায় স্বামীকে‌ ভক্তি শ্রদ্ধা করা তাঁর নারী জন্মের ব্রত রূপে মেনে নিয়ে নিষ্ঠাভরে তা অনুশীলন করে চলেছেন।

কিশোর বয়সে জয়ন্ত বাবু কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হন।বহু জায়গায় বহুদিন ধরে চিকিৎসা করিয়ে ও একেবারে রোগমুক্ত হতে পারেননি।মূলত সে সময়ে কুষ্ঠরোগের তেমন চিকিৎসা ছিল না; দ্বিতীয়তঃ সামাজিক লজ্জার ভয়ে ব্যাপারটি বহুদিন যাবৎ সাধ্যমতো গোপন রাখার চেষ্টা করে বিলম্ব করে ফেলেছেন।তার উপর ফুটবল খেলার নেশা এবং দলগত রাজনীতির আকর্ষণে সদ্য আক্রান্ত ব্যাধিটির ভবিতব্য সম্পর্কে যথেষ্ট উপেক্ষা দেখিয়েছেন। বর্তমানে রোগটি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না গেলে ও ডান পায়ের তিনটি আঙুল বেঁকে বসে গিয়েছে এবং একটির গোঁড়ায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে রক্তরস ঝরে।

মিথ্যের কারিগর জয়ন্ত বাবুর পত্নীভাগ্য ঈর্যণীয়।একেবারে সেকালের পতিব্রতা রমণীর সমস্ত গুণ‌ই মায়াদেবীর চরিত্রে বর্তমান; উপরন্তু স্বামীর এই মহাব্যাধিটির কারণে স্বামীর প্রতি সেবা যত্নের মাত্রা অনেক বেড়ে গিয়েছে।বর্তমান সমাজকে যেন ব্যঙ্গ করে তাঁর পতি পরায়ণতার নজিরকে এক উচ্চ মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন। অশিক্ষিতা সরলা রমণীর সেই দুর্বলতা টুকুর সুযোগ কাজে লাগিয়ে মিথ্যার জাল বুনে মনে মনে ‌খুশি অনুভব করেন জয়ন্ত বাবু; তবে স্ত্রীর নজরদারি বৈশিষ্ট্যটিকে ভয় করেন যথেষ্ট।বেচাল দেখলে মুখের নিঃশ্বাসের ঘ্রাণ পরখ করে দেখতে ছাড়েন না মায়াদেবী। অত‌এব বাইরে এদিক ওদিক করলে ও ঘরে জয়ন্ত বাবু স্ত্রীকে ভীষণ সমীহ করেন।ধর্ম পরায়ণা স্ত্রীর সরলতার গল্প বন্ধু বান্ধবদের কাছে গল্পের ছলে উল্লেখ করে আত্মপ্রসাদ লাভ করেন।দিদিদের মুখ থেকে পত্নীর প্রশংসা শুনে অন্তরে অন্তরে গর্ববোধ করেন বড়ো।

জয়ন্ত বাবুর বংশ মর্যাদার গরিমাবোধ টনটনে। মেকি সম্মান বোধের ফোবিয়াবশতঃ জীবন যাত্রার অনেক অপরিহার্য কর্ম থেকে বিরত থাকেন, যার সুফলগুলি অন্যেরা ভোগ করেন।গাছের ফল, বাগানের বাড়তি সবজি বাইরে বিক্রি করাটাকে বংশের সম্মান হানির কারণ হিসেবে গণ্য করেন।অথচ স্ত্রী মায়াদেবী এসবের বিরোধী। একমাত্র পুত্র ও মাকে সমর্থন যোগায়।স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে বিষয়গুলির সদ্ব্যবহার করে থাকেন, পরে অবশ্য স্বামীর গোচরে প্রসঙ্গ গুলি উত্থাপন করে মৌন-সম্মতির ছাড়পত্র পেয়ে যান।

বাজার থেকে মাছ-চিংড়ি বা অন্য দ্রব্য সামগ্ৰী কম মাত্রায় ক্রয় করতে জয়ন্ত বাবুর লজ্জায় মাথা কাটা যায় ; ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সামগ্ৰী ক্রয় করে বাড়ি ফিরে স্ত্রীর বিরাগ ভাজন হবে জেনে ঝামেলা এড়াতে সাময়িক পাড়ার দিকে বেরিয়ে যান।

জয়ন্ত বাবু যথেষ্ট বুদ্ধি রাখেন। সাংসারিক কলা কৌশল এবং সামাজিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার আদব কায়দা অনেকটা রপ্ত তাঁর।দাম্পত্যজীবনে তিনি সুখী মানুষ, উভয়ের মধ্যে বোঝাপড়া মন্দ নয়; যেটুকু ফাঁক-ফোঁকর,মন -গড়া মিথ্যে দিয়ে সুন্দরভাবে ম্যানেজ করে থাকেন। লোকের মুখের কথা দিয়ে লোককে রহস্যের ছলে বিঁধতে অসম্ভব পটু।

পরিচয়ের ঘনিষ্ঠতা বুঝে পরিচিতের নিকট থেকে কিছু সুযোগ সুবিধা আদায়ের ক্ষেত্রে বিনয়ের অবতার তিনি।এক্ষেত্রে তাঁর রাজনীতি করার পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রমাণ পাওয়া যায়।তাঁর নাছোড়বান্দা আবেদন নিবেদনের হাত এড়ানো খুব সহজ সাধ্য নয়।তবে সর্বোপরি মিথ্যের বেসাতি করা মানুষটির মধ্যে একটা মননশীল দরদি মনের পরিচয় মেলে, যার কারণে অতি সহজে তিনি মানুষকে কাছে টানতে পারেন এবং অনেক সময় নিজের সংসারের প্রয়োজন উপেক্ষা করে অন্যের আপদে বিপদে সঙ্গী হতে পারেন। লজ্জাশূন্য আকর্ষণীয় মিষ্ট ব্যবহারের জন্য ইচ্ছা থাকলে ও তাঁর সাহচর্য এড়িয়ে থাকা শক্ত।

প্রবোধ কুমার মৃধা | Probodh Kumar Mridha

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Is it possible to remove tattoo | ট্যাটু রিমুভ কি সম্ভব? | 2023

Fathers Day History | পিতৃ দিবসের ইতিহাস ও বাঙালি আবেগ | 2023

Best Tattoo Machine 2023 | ট্যাটু মেশিনের ক্রমবিকাশ | প্রবন্ধ ২০২৩

Online Bangla Golper Boi 2023 | Online Bangla Golper Boi Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Full Online Bangla Golper Boi | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | World’s Best Online Bangla Golper Boi | Online Bangla Golper Boi pdf download | Online Bangla Golper Boi Apps | Natun Online Bangla Golper Boi | Online Bangla Golper Boi Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English | Full Bangla Galpo online | New Live Bengali Story | New Bengali Web Story – Episode | Golpo Dot Com Series | Horror Adult Story Video | Horror Live Bengali Story | New Bengali Web Story Audio | New Bengali Web Story Video | Online Bangla Golper Boi Netflix | Online Bangla Golper Boi – mp3 | Audio Online Bangla Golper Boi | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Online Bangla Golper Boi Ebook | Trending Online Bangla Golper Boi | Top Live Bengali Story | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2023 | Shabdodweep Online Bangla Golper Boi | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Golpo Dot Com Download | Online Bangla Golper Boi – audio guide | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Bengali Story – audio | Online Bangla Golper Boi Translation | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer

Leave a Comment