New Bengali Poetry 2023 STDNPN13

Sharing Is Caring:

New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন – সূচিপত্র

কর্ণ আজও কেন কাঁদে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

আজও জাহ্নবীতীরে
কর্ণ একা বসি কাঁদে
কেন ওরে ভগবান?
নয় সে সূত পুত্র
নয় রাধা গর্ভজাত
সে যে রাজার সন্তান।
তবে কেন আজও হেথা
কাঁদে তার প্রাণ
বলে দে রে ভগবান।

সমাজ যারে দিল না ঠাঁই
ফেলে দিলো দূরে
বলিল– নাই কিছু নাই।
আজ তার কাছে কি বা প্রয়োজন
কিসের ই বা অভিমান!
বলে দে রে ভগবান।

সেও তো মানুষ আমাদেরই মতো
রক্ত হলো লাল, দেহে আছে যত
বীরপুত্র সে, নয় সে অসহায়
তবে কেন পায় না সে আলোর সন্ধান?
বলে দে রে ভগবান।।

যদি মনে কর – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

যদি মনে কর আর রাখবো না ধরে
সেই ভালো সেই ভালো
আমি তোমাকে করে যাব সন্ধান আমৃত্যু
ফর্সা হোক কিংবা কালো।
যদি মনে কর যাব চলে এখান ছেড়ে
যেও। ক্ষতি নেই তবে
দুয়ার রেখেছি খুলে আপন ভক্তির ক্রোড়ে
আর নাহয় রেখো মনে সর্বদা
আপনার ভেবে।।

একদিন অপরাহ্নে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

একদিন অপরাহ্নবেলায় বসে আছি
একলা একটা ঘরে।।

জ্যৈষ্ঠের ভ্যাপসাটে গরমে অসুস্থ অবস্থায়
হলুদের পর্ব শেষ হয় হয়
নানান রকম ‌আকাশের কলধ্বনি শোনা যায়
বিভিন্ন গাছের শাখায় শাখায়।
দেবদারু আম লিচু কৃষ্ণচূড়ার কাছে
যেন কে করিছে মিনতি অর্ধনারীশ্বর ।
কোঠাবাড়ির ছাদে যেন ঝুলিয়ে রাখা
কোনো পুরোনোকে
যার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো
একটা বিষম ঝড়ের আর্তনাদ।
যার মাথায় ভিজে গেছে ক্রন্দন রতা
কোনো আত্মীয় পরিজন সহ
ঘন্টার পর ঘন্টার মৃত্যু শোক।

সন্ধ্যা নামলো ধীরে
বৃষ্টিভেজা নব কলেবরে
বিকেলের সেই লাজুক হাসি
আমি ততক্ষণে ফেলে এসেছি
ঝড়ের দাপটে শিউলি গাছের ডগায়।

চেয়ে দেখলাম কে যেন আমাকে
করছে বিদ্রুপ
একটা ঘন আলোছায়ায়।
একটা অপোজিট বিড়াল যখন দৌড়ে
পালাতে গিয়ে পড়ে গেল উপুড় হয়ে
করুণ তার চোখ দুটো,ক্ষীণ কন্ঠে
আওয়াজ করলো ‘মিউ’!
মুগ্ধ হলাম দেখে
দৃষ্টিকে করলাম
অভিসম্পাত

বেচারা !

কোথায় যাবে সে
কে তাকে দেবে আশ্রয় এই মুহূর্তে
কপাট খুলে দেবভক্তিতে আঢ়ূড় আমি
তার করুণ পরিণতি দেখে
হৃদয় থেকে হৃদয়ে লালন করলাম
ব্যাক্তি সম্পর্কের বেড়াজাল।।

সব যেন ঝাপসা হয়ে গেল নিমেষে।।

বারমাস্যা – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

সরোজ কি চাস স্বচ্ছ আকাশ
দেখবে‌ সবাই তোকে?
মেঘ যদি না ভরায় খানা
মরবি আপন শোকে ।

শিউলি কি চাস বৃষ্টি বাদল
জল টলমল নদী
শরৎ তবে আসবে কবে
কাঁদবে নিরবধি!?

কাশফুলের কোমল তায়
জানি, শারদীয়া আসছে ওরে
মহিষমর্দিনী শুনি
মহালয়ার ভোরে।।

হেমন্তে পাতাঝরা
আসছে বৃক্ষশাখায়
গোলাভরা ধানে আনন্দ
সকলকে মাতায়।।

চড়ক পুজোর বাজনা বাজিয়ে
বছর বিদায় নেয়
কালো মেয়ের কালো মেঘ
কালবৈশাখী বানায়।।

সাহাড়া – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

পুরাকালে মহাভারতের যুগে
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যখন ন্যায় অন্যায় বিচারে
ধর্ম প্রতিষ্ঠায় বার বার করছিলেন আকুতি,
তাঁর সেই আকুতিতে সাড়া না দিয়ে
অভিমানী দুর্যোধন যখন
হস্তিনাপুরের বুকে আঁকছিলেন সদাই
পাপের পাহাড়, ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ধর্মের স্বপ্ন
সূচার্গ মাটির ভাগও দিতে চাইছিলেন না
পান্ডবদের নায্য অধিকার রক্ষায়
অধর্মের বহ্নিশিখায়
কৃপণতার অন্ধকারে।
হস্তিনাপুর হয়ে উঠলো তখনই নিবিড় পাপের স্টেশন
ঠিক সেই ক্ষণে নিভৃত অবকাশে
ভগবান অপেক্ষা করছিলেন
রহস্যের কিনারা থেকে বের করে আনতে,
চাইছিলেন যুদ্ধ এড়াতে শান্তিদূত হয়ে
প্রকৃত শান্তির বারতায়।

কূট মন্ত্রে মাতুল শকুনি তখনই
বিদ্রুপ করছিলেন শ্রীকৃষ্ণের সাধুতায়
নকল পাশা খেলার ইঙ্গিতে
ধর্মকে চাইছিলেন হার মানাতে
আপনার অসংখ্য বিভীষিকার প্রচন্ড বেগে
ভাগ্নাদের প্রতি আকৃষ্ট আবেশে।।

তখনই হতপ্রায় মহামানব শ্রীকৃষ্ণ
আপন বুদ্ধিবলে
দয়াময় কব্জায়
বাঁধলেন চির ধর্মের
একান্ত সাধুতায় সকল কৌরব পান্ডবদের।

দুর্যোধন নেমেছিলেন নগ্ন অমানবিক অমানুষতায়
জতুগৃহ নির্মাণ করে
পান্ডবদের পুড়িয়ে মারার অভিসন্ধিতে
তখনই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মূল্যবোধের স্বভাবে
বাঁচালেন পান্ডবদের
এক হতভাগ্য ভিখারিনী মাতার পঞ্চ-সন্তানের
দগ্ধ হবার ঘটনায়।
দুর্যোধন হয়েছিলেন ভীষণ আনন্দিত যদিও।

ভেবেছিলেন পান্ডবকূল মৃত।
কিন্তু রাখে হরি মারে কে!?

ইতিহাসের পাতায় চিরচিহ্ন এঁকে দিলো ভ্রাতৃত্বের
চরম অপমান।
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এড়াতে শান্তিদূত হয়ে তবুও
ভগবান অপেক্ষা করতে লাগলেন তারপরও
অনন্তকাল।
অশুভ শক্তি তখনই বজ্রনিনাদে
আসন্ন মৃত্যুর আগে পিপীলিকা যেভাবে
বোঝে না তার মৃত্যুর বারতা
ঠিক সেইভাবে আসন্ন মৃত্যুর
প্রাক্কালে বোঝেনি কৌরবরাও তাদের
অন্তিম পরিণতি ।

সাহাড়া চেয়েছিল বুঝি
কবির হাত ধরে
চেরাপুঞ্জির থেকে
একটুকরো মেঘ ‘ধার’ হিসেবে
বলেছিল –“আমায় বাঁচতে বাঁচাতে দাও।
ক্ষমা করো আপন অস্তিত্বের মধ্যে
সভ্যতার চরম গ্লানি ভুলে
মানবের মুক্তি দিতে”।
আজ। মেদিনীপুরের সাহারায় “নকল” বাজিখানায়
পাপের পাহাড় ছিনিয়ে নিয়েছে অসংখ্য
তাজা তাজা প্রাণ
বিকট বিস্ফোরণের লেনাদেনায়।
শাসক ও বিরুদ্ধবাদীদের চিৎকারেও
থামেনি সেই মৃত্যু-মিছিল।

দাঁড়াও,সভ্যতা দাঁড়াও
এই হিংস্রতার প্রকাশ থেকে
জেগে উঠুক
বাঁচার শেষ আহ্বান ।

বলো– আর যেন হয় না কভু
এই জঘন্য মিথ্যাচার।
আর বেআইনি ব্যাভিচার।।
বাংলার সিংহাসনে পুনঃআরোহণের
অভিপ্রায়ে ।।

ত্যজিব না সত্য ধর্ম – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

প্রীতি নাই মোর তরে কেন হে রাজন?
সংশয়াদীর্ণ কেন সবে ভাবে সারাক্ষণ!
স্নেহ ভালবাসা হতে কেন নির্বাসিত
লোকনিন্দা অট্টহাস্য কেন শক্তিধর এত?
কেন হই পদে পদে সর্বদা লাঞ্ছিত
বন্ধু যারা ধেয়ে আসে কেন করিতে আহত?
আমি কি মূঢ় মানব নাই শক্তি মোর?
ভাগ্য হীনে দাও তবে শাস্তি সুকঠোর।
অন্যায় অধর্ম কার্যে কি হারায়েছি জ্ঞান?
তবে মোর তাই হোক না হোক কল্যাণ।
এই যদি ভাগ্য ফল হয় হে পিতঃ!
প্রার্থনা করি তবে হোক্ তাহা স্ফীত।

জানি, একদিন তব গুনে হইবে সব দূর
নিমেষে যাইবে সরে অতি বহুদূর ।
তাই কভু ত্যজিব না সত্য ন্যায় নীতি
বিনিময়ে ছাড়িব সব পাইবো না ভীতি।
হিতকথা সুধাবাক্য করিব প্রচার
পাপ যেন ধ্বংস হয় মিনতি আমার।
নিবেদন তব পদে করি অনুনয়
দুঃখ শোক যাক ঘুচে এ বিশ্বময়।।

মোহ নাকি মায়া – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

এ মোহ নাকি মায়া
বুঝতে পারিনা পেয়ে স্নিগ্ধ ছায়া
কে মোরে টানিছে কী উদ্দেশ্যে
নির্জন গভীর রাতে মুক্ত কেশপাশে?
সারা অঙ্গে দিতেছে চুম্বন ছড়ায়ে
সুখে দুঃখে শোকে জড়ায়ে জড়ায়ে?
ওগো বিধাতা, বলে দাও কোরো না খেলা
ঘুম ঘোরে থেকো নাকো বলো এইবেলা
চেয়ে আছি মুখপানে তব, নিশিদিন
অকিঞ্চনে করো দয়া, করো মুক্ত – স্বাধীন।।

সে কি মোর মাতা, জননী পূজয়িনী!
যে ক্লান্ত দেহে লয়েছে ক্রোড়ে শুনে ক্রন্দনধ্বনি!!?

সাহিত্যিক সমরেশের স্মরণে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

আজ তুমি নাই, নাই লেখনীর উৎপাত
আছে শুধু ক্ষণিক গৌরব
সারা বাংলা জুড়ে উত্তর দখিন পূরব
হারালো যবে দীপ্ত সৌরভ।
তোমার মহৎ নাম “সমরেশ” করেছে পাগল
লাগেনি শত অশ্বদল
কিংবা ‌লাগেনি হৃদিভান্ড খুলি কোনো জ্যোতি মাল্য
শোভন লোভন কন্ঠবল।
তুমি ছিলে চোখের কোণে মনি হয়ে দাঁড়িয়ে
হে সাহিত্য নন্দন!
তোমার চরণ স্পর্শ করি বুঝেছে এই বাংলা
তুমি মহারাজ, তুমি রাজন।।
তোমার মহিমা বলে চমকিবে এই বাংলার আকাশ
দেখিবে নব প্রভাত।
সেই তুমি আনিয়া নতুন দিশা হলে অন্তর্ধান
আজি অকস্মাৎ!
মৃত্যু তোমাকে কেড়ে নিলেও আমরা স্মরিব
তোমায় চিরকাল
যতদিন রুদ্ধ দুয়ার খুলে জাগিবে না
ভৈরব রবে
বাঙালির অস্তিত্ব হারা আপন গৌরব
রুদ্র রূপে চমকিবে।।

আজিকে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

আজি বৈশাখী দহনে বিশাল জ্বালা প্রাণে
কী জানি কিভাবে পাব উপায়?
চারিদিক অন্ধকার আমার কিছু নাই চাহিবার
শ্যাওলা ধরা পুকুর ধার বন্ধনহীন চারিধার
তবু বাহিরে ভিতরে শ্রাবণধারা নিভৃত আলাপে
ঘুরে ফিরে আসে বাঁকা চোরা ব্যথা কতবার
গতিবিধির স্পষ্ট নিবেদন উচ্ছ্বাসে হয় গোলার মতন।
তখন–
প্রভাত-স্বপন মুখরিত হয়ে ওঠে নিশ্চিন্ত ফেনায়।

আবার বন্ধনহীন মনের মাঝে অবারিত প্রেম সদাই বাজে
দেয়ানেয়া চলে হাসিকান্নার অঝোর ধারায়
অকারণ মনের মাঝে অবারিত সুযোগ বারবার
বাঁশিতে ভৈরবী সুরে রঙ মেখে আবেশে ম’জে
হেলাফেলা সারাবেলা করে খেলা সাহারায়।।

আশা – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

মনে ছিল আশা
কত ভালোবাসা
পাবো প্রাণভরে
লেখা ছিল অক্ষরে অক্ষরে।
সব ভেসে ওঠে আজ
চোখের জলে ভেজা লাজ
প্রেমিকার মা শ্রীমতী বুঝি
জেনেছে আমার নিষ্ঠুর সাজ।
বিশ্বাস করো এ সাজ
আমার নয়। এ নয় আমার কাজ ।

মনে ছিল আশা
তাইতো চেয়েছি প্রকৃত ভালোবাসা
নির্ণয় করবে যে আমার ঘরে
এসেছিল যারা তারা নয় আপন কেউ
অন্ধকারে তারা হেঁটেছে চারিধারে
এদের মধ্যে যে স্নেহ
সে যেন অন্য দেহ।
তারা বাসে না ভালো
চায়না প্রকৃত বাসা।
দিতে চেয়েছে দুঃখ ভরা
দুর্মূল্য আশা।

আমি কি করবো বল
মেটেনি আশা
মনে মনে যথেষ্ট চেষ্টা করবো
ভেবেছি মসৃণ ভালোবাসা
আমাকে সংস্কার মুক্ত করে
আনবে অনন্ত প্রেম ভালোবাসা।।
ধন নয় মান নয়
চেয়েছি কেবল
অনন্ত ভালোবাসা

বিদায় ১৪২৯! – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

জানাই বিদায়। বিদায়

পুরোনো যা কিছু অপরাধ
যাকিছু সংলাপ অন্যায় শত
ভুলে গিয়ে করো মোরে ক্ষমা
আমি যেন হই সবার পদানত
পারি যেন সাধিতে সাথে সাথ
সবাকার মনের মতো

বিদায় নিয়ে স্বয়ং স্বামী হও
শেখাও মোরে অবিরত
শান্ত হে পরাণ যেন সাধিতে পারে
দুর্বিষহ দুঃখ বেদনা যত
সহিতে সকলের সাথে তাহাদের মতো
পুরোনো যা কিছু সব ভুলে
হতে পারি যেন একটা মানুষ —
এই মোর একান্ত কামনা।।

সততা – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

দুর্নীতির এই যাঁতাকলে
সততা যখন হাঁপিয়ে মরে
ভেঙে ফেল কর রে লোপাট
সততার পরিচয় সঙ্গী ক’রে!

তোমার মূল্যবোধের তো অভাব নাই
কেন তবে এই সময় মঠের সানাই?
দূর করো সব মোহ বেড়াজাল
নিজেকে সামলে আকুল করে।

আসবে সবাই আসবে কাছে
নেবে কেড়ে যা কিছু আছে
সাবধানে কথা বলে সংযত করো
সততাকে লুকিয়ে রাখো চুপটি ক’রে।।

ওরা আজ তোমার কাছে
আসতে চায় আপনার ভুলে ধরা প’ড়ে

সমরেশ মজুমদার – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

তোমার জন্য আমি
প্রণমি বারবার
অস্তাচলের ছবি যেন দেখি একবার ।
তোমার সৃষ্টি কালপুরুষ,
সাতকাহন অমর হয়েছে বাঙালি মনে ।

জীবন সন্ধ্যায় পেলাম আলোর দ্যুতি
কোথাও কেউ নেই ধরাতে বিচ্যুতি।
তোমার উপন্যাসের নাম হয়েছে অমর
জেনেছে বাংলার গ্রাম ও শহর।
অন্ধ বাংলা আকাশে তুমি জ্বেলেছো আলো
যুগেযুগান্তরে বিদ্যুতসম যা চকিত ভালো।
টবে লাগানো গাছে তুমি নও নীরবতা
অসংখ্য অলৌকিক ক্ষমতা ছিল হে সাহিত্য পিতা।

তুমি মৃত্যুঞ্জয়ী, তুমি হলে মহামানব
বিশ্বমানের শিক্ষা দানে মেরেছো দানব।
তুমি লও গো প্রণাম। তোমার পূজায়
আমি তোমাকে নিয়ে বাঁচি।
গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা করি হে মহান
বেঁচে যা করেছো তুমি মৃত্যুতেও তাই করে গেলে দান।।

বিচিত্র চলাচল – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

সত্যিই কি আমি অনুতপ্ত
আপন ভুলের কারণে?
হয়েছে কি নিশাবসান?
গর্বের ভাঁড়ার হয়েছে কি শূন্য তখনই
আপন অহংকারে?

বড়ই বিচিত্র জীবন
আর সঞ্চয়ের বাঁধন
উর্বর পাওনা দেয়
বঞ্চিত অভিমানের শ্লেষ।
অতীত হয় বর্তমানের বেদনা
আর স্মৃতির অস্পষ্ট
অথচ স্থায়ী অবসান।
অভিমানী কান্না প্রাণের খেতে
বন্ধ করে দেয় দুয়ার তবুও।

চাবি গোছা দেয় ছুঁড়ে
অভিযোগের ভীড়ে
সাধের আহ্লাদ
মরুভূমিতে আছড়ে মরে তীব্র হতাশায়
তীব্র বেদনায়।
মৃত্যুর ধিক্কারে
যমদূতের যক্ষালয়ে
আনাড়ির আস্তাবলে।
নাড়ীর আবেদন যায় মুছে
হাসির চলচঞ্চল বাতাসে
বাজে নিষাদের সুর।

তত্ত্বকথা হয় মাটি
শোকের আবহে
বিচিত্র এই চলাচলে।।

অধরা – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

কেউ চেনা নয়, কেউ
সবই হয় অচেনা অজানা।
চলেছে যে যার আপন কাজে
নতুন বাসনায়।
কালের যাত্রাপথে কে যেন
এঁকে দেয় বেড়ার গন্ডী যখন
সীমানা দেয় বেঁধে
ঐ আকাশের অদৃশ্য ছায়াপথে
অসংখ্য তারার মাঝে
সৌর লোকের মায়াবী বিস্তার তখনই
ষড়যন্ত্রের মতো
মানে না নিটোল মহিমা।

অচেনা পথ অচেনা মানুষ
কখন হয় জানাশোনা
কে জানে ।
বনের সজীবতা তখনই
জানান দেয় জীবন।
শীতের কাঁপন থরথরিয়ে
কাঁপায় বিশ্বভুবন
নানান সাজে ভরাতে
ফুলে ফলে
দৃশ্যে অদৃশ্যে
রাগ রাগিণীর মন্ত্রবলে
অনুভবে
রূপসাগরের এলোচুলে
অধরাকে ধরবে বলে।।

পড়ে আছি – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

পড়েছি দ্বন্দ্বে, ধন্দে
দুর্দম আর্তনাদে।
হারিয়ে ফেলেছি প্রকাশভঙ্গিমা
লক্ষ্মীছাড়া প্রাণের অন্দর মহলে ।
শরীরের মধ্যে
মনের মধ্যে
অনন্ত অসংখ্য অবুঝ
বেদনা লুকিয়ে আছে
তাই তর্জনী উঠেছে
লম্বা হয়ে আকাশে বাতাসে।

সে ভাবেনি অভিমানের বহ্নিতেজ
কিংবা
অপমানের তাচ্ছিল্যের
স্তূপীকৃত ভালোমন্দের বিচার কতদূর!

তারা চলে গেছে ফিরে
শুধু দিয়ে গেছে অফুরন্ত
অভিশাপের ছড়ানো ছিটানো
গোছা গোছা অণুপরমাণুর
মুক্ত বানী।
যে ব্যাখ্যা মানে না
বোকা বিশ্বাসের পিণ্ডি
যে বোঝে না কূটকচালির
ছবি আঁকা প্রলয় নাচন।

পর্দার পিছনে থেকে যে অহরহ
ফেলে মিথ্যে যথেচ্ছারের অর্থহীন
ব্যভিচারের জাল।
আপনাকে যে প্রকাশ করে
নিতান্তই সুবিধা বাদী
স্বার্থপরের উন্নত
সীমাহীন রূপ মাধুর্য।।

সে আনন্দিত।
আমি পড়ে আছি অকূলে
আপন কীর্তির মাঝে
হতাশায় বেদনায়
অম্লান।।

এই মেয়ে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

এই মেয়ে তোর বাড়ি কোথায়?
— আমার বাড়ি!
শ্বশুর বাড়ি শিবানী পুর
বাপের বাড়ি হরিহরপুর।
আর আমার বাড়ি!
একটা অন্ধকার খিল আঁটা ঘরে
একটা পুরুষ যখন আমার আঢাকা শরীরের সমস্তটাকে
চেটেপুটে খুঁটে খায় দানা
নিচে নরম বিছানা
সেটাই আমার বাড়ি আমার ঠিকানা।

বুঝলাম।
তোর পদবী কী?

— আমার আবার পদবী কী বাবু!
বলতে লজ্জা হয় বড্ড লজ্জা হয়।
যখন ছোটো ছিলাম
ইস্কুল কলেজে পড়েছি যখন
বাবা মায়ের পরিচয়েই পরিচিত ছিলাম।
আর বিয়ের পর আবার অন্যরকম
টিয়া শালিক নয়তো বকমবকম
শ্বশুর শাশুড়ি র ধার দেয়া পরিচয়েই পরিচিত হলাম
পুরুষ বলে তোমরা যা খুশি তাই করবে
তাই কখনো হয়!

বাঃ।
বুঝলাম।
তাই তোর জন্মদিন কবে?

— কেন!
যেদিন বাবরি মসজিদ ভাঙা হলো
ঘরে ঘরে দাঙ্গা হলো
হিন্দু মুসলমান মিলে রক্তের হোলি খেললো সব্বাই

মা তখন অন্তঃসত্ত্বা ছিল
ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে আমায় প্রসব করলো মা।
মা বলে– সে এক ভয়ঙ্কর দিন
সেটাই আমার
জন্মদিন!

তাও বুঝতে পারছি।
তা তোর জাত কী রে?

আমার আবার জাত কী বাবু
মা বাঙালি বাবা গুজরাটি
ঘুরে ঘুরে বাসন মাঝি
মাটি কাটি
পেটে সন্তান জন্মালে
খালাস করি
তখন বুঝি আমি মাতৃজাতি!
আর যখন নরখাদকের দল
আমার শরীর টাকে নিয়ে
বনে জঙ্গলে ফাঁকা জায়গায়
ছিনিমিনি খেলে, ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়
ধর্ষণ করে।
তখন বুঝি আমি
আর কেউ নই
আমি নারী
আমি কামিনী
যার দুয়ারের মাটি নাহলে নাকি
তোমাদের দুগ্গো পুজো
হয় নাগো
আমি সেই জাতি।।

কল তলায় – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

কল তলায় জলের কলটা থেকে জল পড়ছে অনবরত;
একলা একলা, ঝরছে, কেউ বাধা দেবার নেই
কোনও বন্ধু, কোনও প্রিয়জন নেই,
আপন মনে ঝেড়ে ফেলছে তার রাগ অভিমান চাপা কান্না।
তার নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে দায়িত্ব পালন
করে চলেছে সে নিজেই।
তার অবিরাম গভীর আর্তনাদ এঁকে দিচ্ছে এক কঠিন জিজ্ঞাসা।

না আছে তার বন্ধু, আত্মীয় পরিজন।
আমি শুনতে পেয়েও কিছু করার সাহস পাইনি।
যদি কেউ ভেতরে থাকে এই আশঙ্কায়।
অথচ আমি পারতুম। হ্যাঁ আমিই
ঠিক পারতুম তার বন্ধের কিনারা খুঁজে দিতে
যাই হোক, সেই কল তলায় এখন অদ্ভুত নীরবতা
পুরুষদের মধ্যে যেন শীৎকারের অদম্য তাজা কটু গন্ধ নাকে লেগে
কল তলায় এখন কেউ নেই
বিনা কারণে আর জল পড়ে না।

হয়তোবা সে দুঃখ ভুলে একলা থাকার ইচ্ছে টাকে
ধরে রাখতে পেরেছে চিরজীবনের মতো।

আমি কি পারতুম, মনে তো হয় না।

ছন্দের বন্ধনে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

ঘাটে ঘাটে তরী লইলো সুধারস ভরি
আঙিনায় দিকভ্রান্ত তাই বঙ্গ সুন্দরী।

রূপ রসে ডুবে ছুটিছে প্রলয় বেগে
দিগন্ত অসংযত উন্মত্ত আবেগে।

গগনে গগনে দেখি কী অপরূপ শোভা
সমতল ছন্দে কত মনোলোভা!

অসীম গগন আসে যদি কোনও ক্ষণে
যতনে রেখো ধরি তারে সেই ক্ষণে।

কাঁটাতারে বন্ধ দুয়ার যা হয়েছে তাই হবার
কটাক্ষে ফেলি দিলে মরিবেও তুমি দু’বার

কাব্য ঘোর অতি কাননে দেখিবে না ফুল ফুটি
লও গো স্মরণ তার চেয়ে খুঁজে বসতি।

দৈব্যের শাস্তি পাইবে তুমি সবখানে
গান থেমে যাবে ধরিবে না কুসুম বনে।।

যারা বলিছে মোরে এমন চলিবে না
ঘোমটা খুলে দিয়ে কি হয় সাধনা?

ফল ফুল মাঠ ঘাট সবই তো ঠাট বাট
ছি ছি কেন করিতেছ মারো দুই হাত।

বচন যদি ফিরে ফিরে চলে যায়
কী হেতু লেখনীর গূঢ় সমস্যায়?

অমৃত যা উঠে আসে কর তাই পান
জীবন মরনে যাও করে দান।।

আর কহিবো না হে কবি ভাই
যেমন চলছে চলুক দেখুক সবাই।।

সভ্যতা তুমি কি শুনতে পাচ্ছো – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

সভ্যতা কেমন আছো?
কেমন আছে তোমার নাগরিকগণ
রাজ্যে রাজ্যে তালিবানি আইন চলছে।
মানুষ হারাচ্ছে সমাজের দর্পণ

মানবিকতা যেন ভিনদেশী পরজীবী
সংক্রমণ হচ্ছে মানুষের মনের অন্দরে
করোনা এসেও সে সংক্রমণকে রুখতে ব্যর্থ

এ অবস্থায় কেন তুমি চুপ আছো!
তুমি কি ঘুমোচ্ছো!!
হে সভ্যতা–

তুমি কি শুনতে পাচ্ছো?

আমি – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

আমি দুমড়ে মুচড়ে ভক্ষণ করি
অতীত ইতিহাস
জ্বলন্ত চিতায় পুড়িয়ে মারি
জীবনের পরিহাস।
সাগর থেকে শিক্ষা নিই
কীভাবে আবার বাঁচবো
ঢেউয়ের কাছে নতজানু হই
কোথায় কখন নাচবো।
আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি
মানুষ হতে শেখাও
লিখতে লিখতে জানতে পারি
শুকতারাটা দেখাও।
চিতার আগুনে ঝলসে মারে
অক্ষম বন্দনা
মানুষের মতো সহ্য করো
সকল লাঞ্ছনা ।

পারিনি আজও নিজের করে
নতুন বিষয় জানতে
আয়না আমাকে শেখায় কতো
নতুন পথে হাঁটতে।

আমি যেন পরিযায়ী পাখি
উড়তে উড়তে ভাসি
চিন্তা গুলো হাতছানি দেয়
শেখায় নতুন হাসি।
আমি আমার দুঃসহ ব্যথায়
কাতর যখন ভাবি
মরিচঝাঁপি খুলে দেখি সেথায়
গোছা গোছা পড়ে চাবি।।

আমি আমার বেডরুমে শুয়ে
চক্ষু বুজে দেখি
কেউ কোনদিন আপন হয়না
সবটাই শুধু মেকি।
অপমান লাঞ্ছনা সবই তোমার
একান্ত তারা আপন
বাকি সব ধুলোয় মলিন
করলে দিনযাপন।।

কী হবে সেটা কিছুতেই মানতে
যদি না পারি
অক্ষম চালে কিস্তিমাত রাজা মন্ত্রী
জায়গা ছাড়তে নারি।।

হে প্রভু, তোমার কাছে সবখানে যেন
এইটুকু শিক্ষা পাই
সকলের কাছে মানুষ হতে
হাত পাততে নাই।।

আজকে যারা আপন ভেবে তোমায়
দিচ্ছে হাততালি
তারাই নামবে মাঠে ঘাটে পথে
সব করে দেবে দেদার খালি।।

মানুষ যে হতে চায় তাকে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

মানুষ যে হতে চায় তাকে মানুষ হতে দাও।
আমি দীন ভিখারি কেঁদে মরি কোলে তুলে নাও।
আমার সকল ধর্ম সকল কর্ম সবই বৃথা হয়ে যায়
আমি পারিনি আজও মানুষ হতে
মানুষ করে নাও।।
আমারে ছেড়ে দিয়ে কিছু না করো শুধু মানুষ হতে দাও
আমি চাই যে শুধু একটু ভিক্ষা
মানুষ হতে দাও।:
হে আল্লাহ হে ভগবান আর কি তবে চাও
আমি চাইনা ধন রতন কিছু
শুধু মানুষ হতে দাও।।

আমন্ত্রিত – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

আমন্ত্রিত যতজন সদা কোলাহল
কেউ করেনা নাম শুধু ঢালে হলাহল

কেউ করছে কবিতা পাঠ কেউবা দেখছে নারী
কেউ বা ভাবছে যত খুশি ধরো তরবারি

কেউ করে না সাহিত্যের অন্যতম প্রধান
কেউবা ভাবে আপনি মোড়ল কোথায় বিধান !

চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা সবাইকেই বলছি
আমন্ত্রিত সবাই হেথায় কেউ নই কম কিম্বা বেশি ।

মায়া নিয়ে ছায়া নিয়ে যতই সহ্য করি যাতনা
তবুও করবো সাহিত্যের নানান উপাসনা ।

আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে করো কুশল বিনিময়
বটবৃক্ষের মতন থাকো কোরো না নয়ছয়।।

উদাসী মন – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

উদাসী মন কাঁদে কখন
নিঝুম কিনারায়
হায় রে হায়!

মরমে মরণ জাগে শিহরণ
দুঃখ থাকে
হৃদির আঁকেবাঁকে।

প্রত্যাশায় বড় বেশি চায়
যার জন্যে যা আছে বিধান
বিধাতার দান।।

লজ্জা আদর সোহাগ চাদর
স্বপ্ন ছড়ায়
গভীর মায়ায়।।

আজ এই রাত কার কোথা হাত
জীবন মরণ
যায় অনুক্ষণ।

সুখ বিলাস বড় বেশি আশ
মিলনের আশা
অব্যক্ত ভাষা।।

আর নয় নয় এই বুঝি হয়
স্বপ্ন বিলায়
মুক্তির ছোঁয়ায়।।

পরম ভাগ্যে – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

এইক্ষণ পরম ভাগ্যে মেলে
যাকে ভালোবাসি সে যদিও গেছে চলে
তবুও তাকে খুঁজে যেন হেথা পাই
বন্ধু সখা পুত্রসম মেলে যত ঠাঁই
সেই ভাবের মাঝে যদি একবার দেখিবারে তাকে পাই।।

নিজের প্রাণে দিয়ে গেছে সে যত দান
বাতাসে বাতাসে ফেরে যেন তারই আহ্বান।
ধরার মাঝে যদি লাগে হিল্লোল
জেনো সেটা সবই তার নিষ্ঠুর প্রতিদান
নিঃসংশয়ে মোছো যত গ্লানি
বিলাও শান্তির বাণী এ জীবন মাঝে
দাও খুলে যত আচ্ছাদন
পূর্ণ হবে আমার উচ্ছ্বাস, সকলের লাগি
যদি এসে ধরা দাও নিয়ে আপনার স্থান।।

কেন – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

বলতে পারছি না কেন
বল বীর “বলো উন্নত শির”
কেন বলতে পারছিনা
হে” কান্ডারি তুমি হুঁশিয়ার”
কেন এখন চিত্ত আর ভয় শূন্য নয়
কেন শির নয় উচ্চ হিমালয় সম
কেন কর্মজীবন আর মহান হতে পারছে না!

কেন কে বা কারা দায়ী
আমরা কেন কিসের ভয়ে
আজ পঙ্গু হয়ে প্রহর গুনছি!
সময় গুনবো কবে কীভাবে!?

হে আল্লা, হে ভগবান
কবে বাঙালি হবে মানুষ আবার!

হে ঈশ্বর, আমার কলুষ ধুইয়ে
আমাকে মানুষ হতে দাও।।

মাঘী পূর্ণিমা – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

মাঘের শেষ।
পূর্ণিমা এলো ফাল্গুনের ৩ তারিখে
মাঘী পূর্ণিমা নামে
স্মৃতি যদি ঠিক বলে —
দিনটা ছিল বুধবার।

শীত যাব যাব করেও যাচ্ছে না তখনও
তবুও মানুষ আমরা
ত্রস্ত বিশ্বাসে
গরমের ভয় থেকে নিস্তার চেয়ে বিস্মিত।

কুয়াশা ঢেকেছে চারিদিক
শিশিরে ভেজা রাস্তা
দুঃখ সুখের বহ্নিশিখায় ঘনায় প্রাণ
মুকুল আসছে ডালে ডালে
গজায় নতুন কচি পাতা
দেখবো-
যৌবন যেন আসছে ফিরে গাছে গাছে
অজানিত সৌরভে।

অনিমেষ নয়নে কাটবে দিন
মৌমাছিরা ঘুরবে নিজ আনন্দে
ব্যথা হীন অনন্ত প্রশ্রয়ে
রেঙে উঠবে ফাল্গুনি বসন্ত
অরুণ আলোকে পূব দিগন্তে
দেখবো ভোরের ঐকতান।

গাছে গাছে দেখি তখনও শীতের ফুল ফুটে রয়েছে
পুরোহিত চলেছে পুজোর ফানুসে
মাতোয়ারা গৃহস্থ আবেশ
অলক্ষ্যে ম্লান হাসির প্রাঞ্জলতায়।

বসন্ত বোধহয় আর দেরি নেই
এবার বুঝি
মনের মধ্যে ঘুচবে নতুন প্রেমের
অন্তর্জাল।

যবনিকা থেকে শুরু হবে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত
উচ্ছৃঙ্খল যুবক যুবতীদের মধ্যে
বাজবে ঘণ্টা( দখিনা হাওয়ায়)
কেঁপে উঠবে রাতের আকাশ
স্তব্ধ প্রাণের অস্তিত্বের ফাঁকে ফাঁকে!

সুকুমার শিল্পী আঁকবে শরীরের সমস্ত
আদিখ্যেতা মেশানো উজ্জ্বল শিল্প
পৃথিবীতে শুরু হবে নয়া ঐকতান
তবে সেটা কোনও
নবাব বাদশার হুকুমে নয়
প্রকৃতির চঞ্চলতায়
উলঙ্গপ্রায় প্রখর শিশুদের মতো।।

টিয়া বুলবুল, কোকিলরা গেয়ে
উঠবে অন্তরের দীপ্ত আবেগ যখন
দেহে মনে তখনই কানায় কানায়
ভরে উঠবে
হিল্লোল ।।

কাচের চুড়ি – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

দুয়ার গেছে খুলে
শুকনো এলোচুলে
দাঁড়িয়ে তবে কে?

পারমিতা কি এসেছে এবার
আমার নয়নের ভুলে!

ভাঙবে সেতো ভাঙবে
কাঁচের চুড়ি যেমন
আবার নতুন হাতে রাঙবে

দুয়ার বন্ধ করে রাখবে
আঁধারের স্বর্গে।
মেঘ ডাকবে নিজের ঢংয়ে
বাতাস বইবে তিরিতিরি
বৃষ্টি ঝরবে পুকুর ঘাটে রাস্তায়
সে হারিয়ে যাবে স্বপ্ন যেমন
কাঁচের চুড়ি পড়বে খসে
প্রিয়ার আঁচল গলে।।

আশ্রয় – সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

যে দিয়েছিল প্রেম
যে দিয়েছিল হৃদয়ের মাঝে আশ্রয়
সে গিয়েছে ভুলে আজ
নিজের প্রয়োজনে।

আমি এক বাউন্ডুলে পথিক
কিছু না পেয়ে চেয়েছিলাম শুধু
একটুখানি ভিক্ষা।

সে চলে গেল আমাকে ফেলে
বোঝলো—
আশ্রয় এত সহজ নয়।
আশ্রয় পেতে হলে ফেলতে হবে
চোখের জল
বিনা পরিশ্রমে
অভ্রান্ত হৃদয়ে বিশ্বচরাচরে।।

সত্যেন্দ্রনাথ পাইন | Satyendranath Pyne

New Bengali Story 2023 | তুতানের পৃথিবী | গল্পগুচ্ছ

Godhuli | গোধূলি | রম্যরচনা | জয়ন্ত কুমার সরকার | Best 2023

দেবতা ৩৩ কোটি | 33 Crore Gods | প্রবোধ কুমার মৃধা

Chandannagar Jagadhatri | চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার প্রবক্তা কে ??

আমি | মানুষ যে হতে চায় তাকে | আমন্ত্রিত | উদাসী মন | পরম ভাগ্যে | কেন | মাঘী পূর্ণিমা | কাচের চুড়ি | আশ্রয় | ওরে মন উদাসী | উদাসী মন খুঁজে তোমাকে | উদাসী মন কবিতা | মাঘী পূর্ণিমা ১৪২৮ | রঙ বেরঙের কাচের চুড়ি | রিনিঝিনি কাচের চুড়ি | কাচের চুড়ির ছবি | কাচের চুড়ি নিয়ে কবিতা | আমি চাই থাকতে | আমি তোমাকে | আমি আমি | আমি মানুষ | আমি ভালো আছি | আমি কি | তুমি আমি | আমি চাই চাই চাই | আমি তোমার | আমি কোথায় পাব তারে | আমি অপরাধী নই | আমি অসমীয়া | আমি একজন সেলসম্যান | ভালো মানুষ হতে হলে | মানুষ অমর হতে চায় কেন | কিছু মানুষ আছে | আমন্ত্রিত করা | আমন্ত্রিত বানান | আমন্ত্রিত অতিথি | আমন্ত্রিত নিমন্ত্রিত অর্থ | আমন্ত্রণ অর্থ | নিমন্ত্রিত অর্থ কি | আয়োজন শব্দের অর্থ কি | আহুত অর্থ | গাঁজা ইত্যাদির নেশা করা অর্থ | হারের জন্য আমন্ত্রিত | বিচিত্র চলাচল | অধরা | পড়ে আছি | এই মেয়ে | কল তলায় | ছন্দের বন্ধনে | সভ্যতা তুমি কি শুনতে পাচ্ছো | চিত্র-বিচিত্র | বিচিত্র উদ্ভিদজগত | বাংলাদেশের বিচিত্র ফটো আর্কাইভস | বিচিত্র পর্যায়ের রবীন্দ্রসঙ্গীত | পূজা পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য | নাই নাই ভয় গানের ভাবার্থ | মাঘোৎসব গান | রবীন্দ্রনাথের আনন্দের গান | রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রকৃতি পর্যায় | রবীন্দ্রনাথের ধ্রুপদ গান | রবীন্দ্র সংগীতে বিষ্ণুপুর ঘরানার প্রভাব | ভারতের বিচিত্র রেল স্টেশন | ব্যবসায়ী খুনে অভিযুক্ত অধরা | চির অধরা | অধরা নায়িকা | অধরা লিরিক্স| অধরা কবিতা | অধরা নামের মেয়েরা কেমন হয় | অধরা ইংরেজি | অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য | অধরা মাধুরী অর্থ | পড়ে আছি পথের ধারে | অনাদরে স্বামী পড়ে আছি আমি | এই মেয়ে তুই যাবি | এই মেয়ে শোন | মেয়ে তুমি কি দুঃখ চেনো | কল তলায় ঝুড়ি | ছন্দ নিয়ে কিছু সহজ কথা | ছন্দ বন্ধনে | মুক্তক ছন্দ বা মুক্তবন্ধ | বাংলা ছন্দ | পয়ারের মাত্রা বিন্যাস কত | ছন্দের প্রকারভেদ | ছন্দ প্রকরণ | মুক্তক ছন্দ | মুক্তক ছন্দ কাকে বলে | অক্ষরবৃত্ত ছন্দের উদাহরণ | মুক্তক ছন্দের উদাহরণ | কবিতাগুচ্ছ | বাংলা কবিতা | সেরা বাংলা কবিতা | কবিতাসমগ্র | বাংলার লেখক | কবি ও কবিতা | শব্দদ্বীপের কবি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 Collection | Book Fair 2023 | bengali poetry | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 books | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 books pdf | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 on love | bangla kobita | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 collection books | poetry collections for beginners | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 collection online | poetry collection in urdu | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 collection submissions | poetry collection clothing | new poetry | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 2022 | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 in hindi | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | new poems rilke | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali story books for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali story books pdf | bengali story for kids | bengali story reading | short story | short story analysis | short story characteristics | short story competition | short story definition | short story english | short story for kids | short story generator | short story ideas | short story length | long story short | long story short meaning | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | story writing competition india | story competition | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 competition | poetry competitions australia 2022 | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 competitions uk | poetry competitions for students | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 competitions ireland | poetry competition crossword | writing competition | Video – New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bangla article rewriter | article writing | article writing ai | article writing app | article writing book | article writing bot | article writing description | article writing example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | article writing format | article writing gcse | article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Audio – New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 – mp4 | Galpo | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 – mp3 | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 Online | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | New Bengali Poetry 2023 STDNPN13 pdf | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep | Bengali poetry competition 2023 | World Poetry Competition 2023

Leave a Comment