Political Consciousness of Marquez | মার্কেসের রাজনৈতিক চেতনা | Article 2023

Sharing Is Caring:
Political Consciousness of Marquez
Image Credit – Wikipedia

মার্কেসের রাজনৈতিক চেতনা – সৌম্য ঘোষ [Political Consciousness of Marquez]

গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস (Gabriel Garcia Marquez) ছিলেন আপাদমস্তক একজন রাজনীতি-সচেতন ও রাজনৈতিক লেখক। তাঁর এমন কোনো লেখা নেই যেখানে রাজনীতি নেই। “নিঃসঙ্গতার একশো বছর” থেকে শুরু করে “জেনারেল তার গোলকধাঁধা” পর্যন্ত সর্বত্র ছড়িয়ে আছে প্রচ্ছন্ন ও প্রকাশ্য রাজনীতি। তাঁর কাছে রাজনীতি মানে সাধারণ মানুষের কল্যাণ, নিজের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতনতা।

মার্কেস নিজে কখনো সক্রিয় রাজনীতিতে নামেননি। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা করেছেন। দৈশিক ও বৈশ্বিক উভয় স্তরেই। ডান-বাম নির্বিশেষে অনেক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিলো তাঁর। তাঁর বন্ধুর তালিকার একদিকে ছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো, অন্যদিকে বিল ক্লিনটন। এজন্য তাঁর বিরুদ্ধে হঠকারিতার অভিযোগ আনা হয়। এ নিয়ে পেরুর ঔপন্যাসিক মারিও ভার্গাস ইয়োসার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে, এমনকি ১৯৭৬ সালে মেহিকোর এক থিয়েটারে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। ফলশ্রুতিতে পুরো লাতিন আমেরিকান সমাজ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে।

মার্কেসের বন্ধুত্ব যেমন ছিলো অগণন, তেমনি শত্রু-সমালোচকেরও অভাব ছিলো না। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কেন কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রোর শাসনকে সমর্থন করেছেন, এমনকি যখন সেখানে ভিন্ন-মতাবলম্বী সাহিত্যিকদের আটক করে জেলে আটক করা হচ্ছে। এজন্য তাঁকে তোপের মুখে পড়তে হয়। এ প্রসঙ্গে মার্কেসের বক্তব্য হলো, কাস্ত্রোর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব পুরোপুরি কিউবান নেতার সাহিত্যপ্রীতি কেন্দ্রিক এবং তাঁদের বন্ধুত্ব রাজনৈতিক নয়।

মার্কেস সবসময় রাজনীতি নিয়ে চিন্তা করেছেন এবং কথাসাহিত্যে একে মিশিয়েছেন অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে। তাঁর লেখা যাতে রাজনৈতিক প্যামফ্লেটে পরিণত না হয় সেদিকে ছিলো তাঁর সজাগ দৃষ্টি। প্রতিটি গল্প উপন্যাসকে শিল্পোত্তীর্ণ করাই ছিলো তাঁর লক্ষ্য এবং সে কাজে তিনি সফলও হয়েছেন। তিনি কেবল লেখার জন্য লিখে যাননি। তাঁর কাছে লেখা ছিলো সমাজ পরিবর্তনের কৌশল। এদিক থেকে তিনি মার্ক্সবাদী। তাঁর লেখার একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা ছিলো এবং তিনি তা কখনোই গোপন রাখেননি।

আশির দশক থেকেই বিশ্ব পাঠকের নজর কাড়তে শুরু করেন মার্কেস। তখন থেকে শুরু করে ৮৭ বছর বয়সে মেহিকো সিটির বাসগৃহে তাঁর মৃত্যু অবধি অনেকেই তাঁর একশো বছরের নিঃসঙ্গতা, কূলপতির শরৎকাল এবং কলেরার সময়ে প্রেমসহ মাস্টারপিসগুলো নিয়ে অনেক প্রশংসাসূচক আলোচনা করেছেন। তাঁর রচিত আধুনিক ক্লাসিকগুলো অনেকের মধ্যে এই বিশ্বাস এনে দিয়েছে যে, তিনি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক।

লাতিন আমেরিকার শিল্পী, গীতিকার ও লেখকগণ ষাট ও সত্তরের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক পটভূমিতে গুরুত্ব সহকারে নিজেদের উপস্থিতি জাহির করছিলেন। তাঁর সমসাময়িক লেখক যেমন মারিও ভার্গাস ইয়োসা, পাবলো নেরুদা, কার্লোস ফুয়েন্তেস, ভিক্তর হারা, ইসাবেল আইয়েন্দে এবং আরো অনেকের মতো এই গুম্ফধারী কলম্বিয়ান নিজেকে ঠেলে দিয়েছিলেন একটি সংঘাতমুখর, অস্থিতিশীল এবং ক্রমশঃ সহিংস অঞ্চলের রাজনীতির মধ্যে। যখন চিলির হারার মতো কয়েকজন সাহসিকতা ও স্পষ্টবাদিতার জন্য নির্যাতিত ও খুন হয়েছিলেন, তখন তিনি চুপ করে থাকতে পারেননি।

মার্কেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো তিনি গেরিলাদের সঙ্গে গোপন আঁতাত রাখতেন এবং তাদের নানাভাবে ইন্ধন যোগাতেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এক পর্যায়ে বামপন্থী গেরিলা দলের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে সেনাবাহিনী তদন্ত করছে এই ভয়ে তিনি তাঁর নিজের দেশ কলম্বিয়া ছেড়ে চলে যান। পরে অবশ্য তাঁকে গেরিলাপক্ষ ও বোগোতা সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করার জন্য দেশে আসার আহ্বান জানানো হয়েছিলো।

BENGALI ARTICLE

মার্কেস মেধাবী লেখক ছিলেন বটে, কিন্তু তিনি নিজেও কখনো ভাবতে পারেননি যে, তাঁর লেখা পাঠককুলের কাছে এতোটা গ্রহণযোগ্য হবে। তাঁর নিজের দেশেও তিনি প্রথমদিকে তেমন সাড়া পাননি। জীবনের শেষদিকে যখন স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার দরুণ জনসমক্ষে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন, তখনই কেবল তিনি কলম্বিয়ার সবচেয়ে নন্দিত ও আকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি হয়ে যান। সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা ও গল্প লেখালেখির শুরুটা সাদামাটা হলেও খ্যাতি ও রাজনৈতিক প্রভাবের দৌলতে তাঁর আদুরে নাম তৈরি হয় গাবো। এটা তিনি প্রত্যাশাও করেননি, উপভোগও করেননি।

মার্কেসের মাথায় ছিলো রাজনীতি, কলমে ছিলো বারুদ। তাঁর অক্ষরগুলো বিস্ফোরিত হয় পাঠকের মস্তিষ্কে। ১৯৮৮ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না যে সাহিত্যকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও লেখায় আদর্শগত অবস্থান প্রতিফলিত হয় এবং তা পাঠককে প্রভাবিত করে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি লাতিন আমেরিকায় আমার বইয়ের রাজনৈতিক প্রভাব আছে কারণ এখানে লাতিন আমেরিকান আত্মপরিচয়ের একটি ব্যাপার থাকে; এগুলো এখানকার লোকজনকে তাদের নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে আরো সচেতন করে তোলে।’

অনেক লাতিন আমেরিকান শিল্পীর মতো, গার্সিয়া মার্কেস ছিলেন প্রচণ্ড সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী। উত্তর আমেরিকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গোলমেলে অবস্থার প্রতি অনাস্থা ছিল তাঁর, ফলে তিনি এর কঠোর সমালোচনা করেছেন। সে সময়ে অবস্থা এমন ছিলো যে এ অঞ্চলটা হয়ে গিয়েছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চাদাঙ্গন। তদুপরি, মার্কিনীরা মনে করতো (মনরো-মতবাদের ওপর ভর করে) এখানকার সব বিষয়ে নাক গলানোর আইনি অধিকার তাদের আছে এবং এ অধিকার খোদ ঈশ্বরই তাদের দিয়েছেন। তিনি এটা মেনে নিতে পারেননি। মার্কেস ধনবাদী ব্যবস্থায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ প্রক্রিয়ার বিরোধী ছিলেন। তিনি সেই সমস্ত লাতিন আমেরিকান নেতা ও উচ্চবর্গীয় লোকদেরও তুলোধুনো করেছেন যারা গ্রামের লোকদের শ্রমঘাম ও মালিকানাহীন ভূমির দৌলতে নিজেদের গায়ে চর্বি জমিয়েছেন ও ধনী হয়েছেন।

তাঁর প্রিয় লিখন শৈলি (যদিও এটা তাঁর একমাত্র লিখনশৈলি নয়) যাদু বাস্তবতাকে কাজে লাগিয়ে মার্কেস বিশ্বসাহিত্যে যাদু দেখিয়েছেন। তিনিই একমাত্র ও শেষ লেখক নন যিনি পরাবাস্তব ও বাস্তব পৃথিবীকে মিশিয়ে এক নিখুঁত শিল্পকর্ম রচনা করেছেন, কিন্তু প্রশ্নাতীতভাবে তিনি এর সর্বোত্তম ব্যবহারকারী। প্রত্যেক মানুষের ভেতরে থাকে বাস্তব-অবাস্তব লৌকিক-অলৌকিকে গড়া এক নিজস্ব পৃথিবী। সেই পৃথিবীর সঙ্গে যখন মার্কেসের গল্পের পৃথিবী মিলে যায়, তখন পাঠক পুলকিত বোধ করেন। আর এভাবেই মার্কেস ধীরে ধীরে ঢুকে যান পাঠকের মনোলোকে।

মার্কেসের গল্পকাহিনীর প্রায়োন্মাদ কিম্বদন্তীয় চরিত্রগুলো এসেছে তাঁর শ্রুতিঅভিজ্ঞতা থেকে। এগুলো শৈশবে তিনি তাঁর দিদিমার কাছ থেকে শুনে থাকবেন। তাঁর গল্পে যে সীমান্তশহর, বনজঙ্গল, দুর্নীতিবাজ জোতদারির বর্ণনা পাওয়া যায়, তা একেবারে খাঁটি লাতিন আমেরিকান । তিনি তাঁর দাদুকে দেখেছেন সামরিক বাহিনীর লোক হিসাবে কাজ করতে, শুনেছেন রাজনীতি নিয়ে আলাপ করতে। মার্কেসের চারিত্রিক ও মনস্তাত্ত্বিক গঠনে তারও ব্যাপক প্রভাব ছিলো।

মার্কেস রীতিমত মানুষ হাসানোর ব্যাপারে ওস্তাদ। তাঁর লেখায় থাকে সূক্ষ্ম হাস্যরস। তাঁর উপন্যাসগুলো যে এতো জনপ্রিয় তার অন্যতম কারণ সেন্স অব হিউমার। তিনি সাধারণ মানুষের সাধারণ কথা লিখতে চেয়েছেন সাধারণ ভাষায়। তাঁর উপন্যাসগুলো যে এতো সিরিয়াস আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ও উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে তা দেখে মনে হয় তিনি নিজেও বিস্মিত। তিনি কৌতুক করেন বাস্তবকে নিয়ে। তিনি নিজে বলেছেন, তাঁর লেখায় এমন কোনো লাইন খুঁজে পাওয়া যাবে না যার কোনো বাস্তবভিত্তি নেই।

তাঁর বর্ণিত চরিত্রসমূহ ও দৃশ্যাবলী লাতিন আমেরিকার সমস্ত সৌন্দর্য ও কদর্যতা নিয়ে হাজির হয়েছে। স্বৈরশাসক, প্রেমিক, চাষী, অভিজাততন্ত্রী, বুনো মধ্যভূমি ও ঊষর সমুদ্র উপকূলে সংগ্রামরত মানুষ সবকিছু মার্কেসের সাহিত্যে উপস্থিত। ফলে সবাই তাঁকে কাছে টেনে নিয়েছে, তাঁর লেখার সঙ্গে একাত্ম হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, এ-সবকিছু লাতিন আমেরিকার লোকদেরকে তাদের নিজেদের সংস্কৃতি ও মহাদেশকে বুঝতে সাহায্য করেছে।

মার্কেস তাঁর উপন্যাসে পল্লী দারিদ্রের ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন। তাঁর লেখা থেকে আমরা সামরিক বাহিনীর লোকদের নৃশংসতা ও গৃহযুদ্ধের অন্ত:সার শূন্যতা সম্পর্কেও জানতে পারি। মার্কেস রাজনৈতিক ফায়দাবাজির বিরোধী ছিলেন। যখনই রাজনীতিবিদদের নোংরামি দেখেছেন, তখনই ফুঁসে উঠেছেন। বেপরোয়াভাবে তিনি একজন রাজনৈতিক লেখক, কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত। মার্কেস বিজ্ঞ ছিলেন এই অর্থে যে, তিনি তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। প্রচুর চাপ সত্ত্বেও, তিনি কখনো সক্রিয় রাজনীতিতে নামেননি।

সম্ভবতঃ ইংরেজি ভাষায় ডিকেন্স যেমন, গার্সিয়া মার্কেসও তেমনি একজন চৌকশ কাহিনীকার যাঁর গল্পের মূলে আছে তাঁর নিজের অথবা পরিবারের লোকজনদের অভিজ্ঞতানলব্ধ সত্যের নির্যাস। আদতে তিনি নিজেকে সবসময় একজন সাংবাদিক বিবেচনা করতেন। কখনো কখনো, যেমনটা দেখা যায় নিউজ অব কিডন্যাপিং নামক চমৎকার বইটিতে, তিনি বাস্তব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দেন। তাঁর তুলিতে চিত্রিত হয় আশির দশকে কলম্বিয়ার গণ্ডগোল, যখন নিষ্ঠুর ড্রাগ ব্যবসায়ীরা শাসনক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশের দুর্নীতিবাজ ও আপোষকামী নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে অবতীর্ণ।

মার্কেস একজন স্বাপ্নিক ছিলেন। যখন তিনি নিজের দেশে আগন্তুক বনে গিয়েছিলেন, তখনও অবাস্তবায়নযোগ্য স্বর্গরাজ্যের খোঁজে সারা বিশ্ব চষে বেড়িয়েছেন। তাঁর লেখায় প্রতিফলিত হয়েছে নিষ্পাপতা ও জীবনের প্রতি ভালোবাসা, যদিও জীবনে থাকে নানা প্রতিকূলতা ও অনিবার্য হতাশা। তাঁর কাছে, স্বপ্নরাজ্য তাত্ত্বিকভাবে অর্জন করা সম্ভবপর, যদিও মানুষের দুর্বলতার জন্য তা বাস্তবে অর্জন সম্ভব নয়। কেউ কর্নেলের কাছে চিঠি লেখে না বইতে দেখা যায়, যদিও রোগক্লিষ্ট কেন্দ্রীয় চরিত্রটির সঙ্গে সকলেই বেঈমানি করে, তথাপি তিনি শেষ পর্যন্ত এই বাক্যটি উচ্চারণ করতে সমর্থ হন : ‘সৃষ্টির সবচেয়ে ভালো বস্তুটি হলো জীবন’। মার্কেস এই জীবনকে ভালোবেসেছিলেন। জীবনগল্পের সফল কথক তিনি।

কৃতজ্ঞতা:

(1) বিবিসি অনলাইনে সম্প্রতি প্রকাশিত Wyre Davies-এর ‘Gabriel Garcia Marquez: Guide to Surreal and Real Latin America’
(2) Gabriel Garcia Marquez Biography
(3) Gabriel Garcia Marquez, Nobel Prize–winning explorer of myth and reality
(4) “Marcondo” original archive

সৌম্য ঘোষ | Soumya Ghosh

Sesh Parinati | শেষ পরিণতি | বিনায়ক ঘোষ | 2023

The Jagannath God in Puri | পুরুষ-প্রকৃতি এবং জগন্নাথ

Mother’s Day History Information | মাতৃদিবসের উৎপত্তি, তাৎপর্য ও বাঙালি প্রতিক্রিয়া | 2023

Briddhashram Story | বৃদ্ধাশ্রম – বিপাশা চক্রবর্তী | 2023

writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bangla article rewriter | bengali article writing format | bengali article writing ai | bengali article writing app | article writing book | bengali article writing bot | bengali article writing description | article writing example | bengali article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | article writing igcse | article writing in english | bengali article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | bengali article writing pdf | bengali article writing practice | Bengali article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Bengali Article Writer | Short Bengali Article | Long Bengali Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Gabriel Garcia Marquez | gabriel garcía márquez biografía | what is gabriel garcía márquez known for | what is gabriel garcia marquez writing style | gabriel garcía márquez nobel prize | gabriel garcía márquez literary theme | gabriel garcía márquez wife | gabriel garcía márquez family | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Founder | Political Consciousness of Marquez – new article | Political Consciousness of Marquez – pdf | Political Consciousness of Marquez – pdf article | new article – Political Consciousness of Marquez | pdf article – Political Consciousness of Marquez | New video – Political Consciousness of Marquez | Trending topic – Political Consciousness of Marquez | Topic 2023 – Political Consciousness of Marquez | article 2023 – Political Consciousness of Marquez | full article – Political Consciousness of Marquez | pdf download – Political Consciousness of Marquez | new journal – Political Consciousness of Marquez | trend video – Political Consciousness of Marquez | viral topic – Political Consciousness of Marquez | viral pdf – Political Consciousness of Marquez | Political Consciousness of Marquez – pdf reading

Leave a Comment