জয়ন্ত কুমার সরকার – সূচিপত্র [Bengali Story]
জীবনের জলছবির রঙীন কোলাজ – জয়ন্ত কুমার সরকার [2023 New Bengali Story]
ক‘দিন ধরেই চলছে মন খারাপের বেসুরো আলাপ, মতের মিল হচ্ছে না, গৃহিণী কিছুতেই ছেলেকে ছাড়তে চায় না, ভিন রাজ্যে পড়তে গিয়ে যদি কোন বিপদ হয়! আমি বোঝাই ওকে, বাইরে তো যেতেই হবে। অচেনার ভয়ে ঘরে বসে থাকলে চলে না। মেয়েরাও এখন দূর-দূরান্তে যাচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা, ইন্টারনেট এত সুযোগ করে দিয়েছে,দূর আর দূরে নেই। হাত বাড়ালেই সেলফোন, এ.টি.এম., ভিডিও কল, সঙ্গে এ.টি.এম., পে.টি.এম., ফোন পে, গুগল পে আরও কত কি, চাইলেই অনলাইন ডেলিভারি,আরও কত কি ঘরে বসেই পাওয়া যায়। তাই ছাড় ওকে, বাইরের পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাওয়াতে দাও, বাস্তবের মুখোমুখি হতে, সব পরিস্থিতি সামলাতে শিখুক। শেষে নিমরাজি হলেও মনের আশঙ্কা যায় না! কাজী নজরুলের সংকল্প কবিতার প্রতিটা লাইন অজানা কে জানার দৃঢ় সংকল্প অচেনার আনন্দ পেতে হলে সাহসী হতেই হবে। ঝুঁকি তো নিতেই হয়। ঝুঁকি না নিলে কোন কিছু লাভ করা যায় না। এই শাশ্বত বাণী জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে মনে রেখে চলতে হয় আমাদের। জীবনে চলার পথ বরাবর মসৃণ হয় না কারোরই। চড়াই-উৎরাই নানান ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। কত অচেনা মানুষের সঙ্গে পথ চলতে হয়, অজানা জায়গায় যেতেও হয়। অচেনার ভয়ে হাত-গুটিয়ে নিলে থমকে দাঁড়ায় জীবনপ্রবাহ। সব অচেনাই একসময় চেনা হয়ে যায়। জীবনে কত নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় মানুষকে। অজানা ঘটনা অপেক্ষা করে, বিপদ হতে পারে জেনেও এগিয়ে যেতে হয়। অজানাকে ভয় পাওয়া মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি । কিন্তু ভয় পেয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লে চলবে না, ভয়কে জয় করাই জীবনের ধর্ম। হঠকারিতা ভাল নয়, তবে ঝুঁকি নিতে হবে, এগিয়ে চলার জন্য। জীবনের প্রতিমুহূর্তে কিছু না কিছু অজানাকে জয় করছি আমরা। জড়-স্থবির জীবন কে-ই বা চাই। অচেনার ভয়কে জয় করতে না পারলে গার্হস্থ্য জীবনে প্রবেশ করতেই পারবেন না। অচেনা ভয়ে স্থবির হয়ে থাকা জীবনের জন্য মোটেও সুখকর নয়।
ধৈর্য হারালে সুফল পাওয়া যায় না। মেওয়া পেতে হলে সবুর করতে হয়, তাই, অগ্র-পশ্চাৎ ভেবে কাজ করার কথা বলেন বিদ্বজনেরা, কাজ করার আগে ভাল -খারাপের সম্ভাবনা বুঝে কাজ করার পরামর্শ দেন তাঁরা। তাই ভেবে কাজ করতে হয়, কাজ করার পরে ভেবে লাভ হয় না। এই কারণেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করা আর অধ্যবসায় চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন গুণীজন। এখন মানুষের ধৈর্য নেই,সহনশীলতা নেই, হাতে সময় নেই, ছুটছে সকলে, ছেলেমেয়েরা ছুটছে,বাবা-মা ছোটাচ্ছেন ওদের, ভাল রেজাল্ট আর কেরিয়ারের পিছনে। আমরাই সবুর করতে পারিনা, ওদের ধৈর্য ধরতে বলি কি করে! মেওয়া মানে আতাই হোক বা মিষ্ট কিছু, আসলে ভাল ফল পেতে সবুর করতেই হয়, কিন্তু নিজেরাই অধৈর্য হয়ে পড়ি, হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে ভুল করি, ক্ষতির মুখোমুখি হই। ভেবে দেখি না, রেগে যাওয়া সময়ের এক মুহূর্তের ধৈর্য, পরের হাজার মুহূর্তের অনুশোচনা থেকে রক্ষা করে। ছোট থেকে বড় হতে হয়,লাফ দিয়ে একদিনে বড় হওয়ার যায় কি ! সবুর তো করতেই হবে! কি অসীম ধৈর্য, কি কঠোর অধ্যবসায় আমাদের মহারাজের। সবুর করেছিলেন বলেই না ফিরে আসতে পেরেছিলেন সসম্মানে, নিজের জায়গায়। পুরাণে শবরীর প্রতীক্ষার কথা মনে আসে, সবুর করেছিলেন বলেই আরাধ্য শ্রীরামচন্দ্রের দেখা পেয়েছিলেন ! ধৈর্য আর অধ্যবসায়ের সুফল লাভের এরকম হাজার ঘটনা জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনের পরতে পরতে। ভারতীয় সংস্কৃতির পরম্পরা বজায় রাখতে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার কথাই বলে গিয়েছেন মনীষীগণ।
পৃথিবীটা ক্রমশ: জটিল থেকে আরো জটিল হয়ে উঠছে । মানুষ মূল্যবোধ নীতি নৈতিকতা ভুলে স্বার্থসর্বস্ব যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে যাওয়ার শপথ মনে নেই, কারণ মনের ঔদার্য নেই, সময় নেই, ধৈর্য নেই৷ সংসারের সুখ-দুঃখের দোটানায় মধ্যবিত্ত মানুষের ভাল থাকা না থাকা, কুশল সংবাদ জানতে চাওয়া সময় বিশেষে বিড়ম্বনার কারণ হয় । প্রতিবেশীকে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করতেও হয়, কিছু বলব মনে করলেও বলা আর হয়ে ওঠে না । সংসার জীবনের নানান জটিল পরিস্থিতি বেশীর ভাগ মানুষকে এমন ব্যস্ত করে রাখছে যে প্রতিবেশী, আত্মীয় পরিজনদের সাথে সামান্য কুশল আদান প্রদানের সময়টুকুও হাতে থাকে না । তাই কেমন আছেন প্রশ্নের একটা সাদা মাটা দায়সারা উত্তর হয় — এই আছি আর কি, কিংবা এই চলে যাচ্ছে …ইত্যাদি। আবার প্রশ্নকর্তারও শোনবার ধৈর্য নেই৷ কখনও আবার উল্টোটাও ঘটে । হয়তো শরীর সুস্থ নেই, মেজাজ খিঁচড়ে আছে, সেই সময়, ‘কেমন আছেন’ জিজ্ঞাসা করলে, ‘ভাল আছি’ বলে পাশ কাটাতে হয় আবার, ভাল নেই বললে বিড়ম্বনা বাড়ে, তিনি ফের প্রশ্ন করতে পারেন- কেন ভাল নেই …. কি হয়েছে …. কিম্বা ধরুন, আমি বলতে প্রস্তুত, কিন্তু প্রশ্নকর্তা অতশত শুনতে আগ্রহী নয়,তাই মনে হয় উপযাজক হয়ে কেন বিশদ ব্যাখ্যায় যাব ! তাই “ভাল আছি”বলে পার পেয়ে যাওয়াই শ্রেয় । আবার কিছু বলব বলেও অনেক সময় বলা হয় না । ভাল আছি বলে এড়িয়ে গেলেও সত্যিই আমরা গড়পড়তা বাঙালীর সমস্যাদীর্ণ রোজনামচায় ভাল আছি কি ? ভাল থাকার বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ কোথায় ! এখন আমরা নিজের সমস্যা আর কারোর সাথে ভাগ করি না, কারণ আমার প্রতিবেশীরা হিংসুটে, সেরকম বন্ধু কেউ নেই । ভোগবাদী বিশ্বায়নের যুগে আত্মকেন্দ্রিক মানুষ বন্ধুহীন, স্বার্থপর । এই মানুষ তাই কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না, মিলেমিশে থাকার অভ্যাসটাই নষ্ট করে ফেলেছি আমরা,তাই সন্তান বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দায়িত্ব এড়াই, এমনকি তাঁদের শেষ সম্বল দিয়ে তৈরি বাড়ী থেকে তাঁদেরকে বের করে দিতেও পিছপা হই না, আদালতে যেতে বাধ্য করি অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে ।
”রাগ করে বাপের বাড়ি চলে এলাম বলে তুমিও চুপ থেকে গেলে,একটা ফোনও তো করতে পারতে, এত নিষ্ঠুর কি করে হও তুমি!” পূর্ণাঙ্গিনীর এ ধরণের অনুযোগের উত্তর কি হয়; করনীয় কি, প্রায় সকল বিবাহিত পুরুষই জানেন । অভিমান হল ভালোবাসার একটি মিষ্টি মধুর অঙ্গ, যা একান্ত আপনজনের উপরেই করা যায় । অভিমানে লুকিয়ে থাকে সুপ্ত ভালবাসা, প্রাপ্তির আশা, ক্ষণিকের অবহেলার অনুযোগ। অভিমানে রাগ হয় কৃত্রিম আর খানিকটা অভিনয়; মুখ ভার করে আড়চোখে তাকানো আসলে একরাশ লুকোনো ভালবাসার প্রকাশ; অভিমানে ঠোঁট ফুলে, চোখ ছলছল করে, বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না। বৈষ্ণব পদাবলীতে কৃষ্ণপ্রেমে মাতোয়ারা শ্রীরাধা কুঞ্জ সাজিয়ে পথ চেয়ে বসে রইলেন, কিন্তু কৃষ্ণ এলেন না । রুষ্ট হয়ে শ্রীরাধা মান করলেন। শেষে শ্রীরাধিকার পদযুগল বন্দনায় শ্রীকৃষ্ণ ‘দেহিপদপল্লবমুদারম্’; মানভঞ্জনের চিরন্তন এই ছবি আমাদের আবেগমথিত করে। দৈনন্দিন সংসারযাত্রা মসৃণ রাখতে গৃহিণীর মান ভাঙানো, জেদ ছেড়ে মানিয়ে নেওয়া, ভালোলাগা, ভালবাসার অটুট বন্ধন সংসার সচল রাখে, মানুষ নতুন করে বাঁচার শপথ গ্রহণ করে। সব সম্পর্কের মাঝেই কখনো কখনো অভিমানের কালো মেঘ জমা হয়, আবার মেঘ দূরীভূত হলে উজ্জ্বল মুখের হাসিই সব কিছু ভুলিয়ে দেয়। ভালবাসা দিয়েই অভিমান ভোলানো যায় ; অভিমান আছে বলেই প্রেমের স্বাদ এত মধুর। ভারতীয় সনাতন ভাবধারায় পুষ্ট আমাদের জীবনপ্রবাহ গতিমান থাকে, যুগ যুগ ধরে এই ভালবাসাকে পাথেয় করে পরস্পরের প্রতি অনুরাগই স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসা, পিতা-মাতা-সন্তানের অপত্য স্নেহ, ভাইবোনের অকৃত্রিম বন্ধন, মানুষে মানুষে বন্ধুত্ব বাঁচিয়ে রাখে, সংসার সচল থাকে।
বিদ্যাসাগর মহাশয়ের গল্পে অদ্ভুত এক আতিথেয়তার কথা জানতে পারি। আরব দেশের মানুষ অত্যন্ত অতিথি পরায়ণ ছিলেন। একদা এক মুর সেনাপতি পথক্লান্ত হয়ে অজ্ঞতাবশত রাত্রিকালে তাদের শত্রু আরব সেনাপতির শিবিরে আশ্রয় পান। আশ্রয়দাতা আরব সেনাপতি অত্যন্ত যত্ন সহকারে অতিথি আপ্যায়ন করেন। মুর সেনাপতির সঙ্গে আলাপকালে জানতে পারেন যে, ঐ মুর সেনাপতিই তার পিতার হত্যাকারী। পিতৃহন্তার কথা জানার পরেও আরব সেনাপতি অতিথি বাৎসল্যের কারণে তার সেবায় বিন্দুমাত্র ত্রুটি রাখেননি, কিন্তু পিতৃহন্তা জেনেও অতিথির ক্ষতি তিনি করবেন না, তার বিদায় পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করবেন তাকে জানিয়ে দেন। পরদিন প্রত্যুষে বিদায়কালে আরব সেনাপতি মূর সেনাপতিকে একটি ভাল ঘোড়া দেন ও বলেন,‘‘আপনি রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আপনাকে অনুসরণ করব,ধরা পড়লে পিতৃহন্তার কারণে আপনাকে আমি হত্যা করব।” যদিও মূর সেনাপতি ধরা পড়েননি। আগের দিনে অতিথি আপ্যায়নে হরেক আয়োজনে ব্যস্ত হত যৌথ পরিবারের সকলে। অনাত্মীয় অতিথি হলেও আতিথেয়তায় কার্পণ্য করতেন না বাড়ীর কর্তা। এখন দিন পাল্টেছে। সবাই নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। তাই, অতিথি আপ্যায়ন আর আগের মত হয় না আটপৌরে বাঙালীর। এখন বাড়ীতে অতিথি এলে, “আসুন-বসুন, চা খান”,খুব বেশী হলে পাড়ার রেষ্টুরেন্টের খাবার এনে বাড়ীর সুন্দর প্লেটে সাজিয়ে দেওয়া, ব্যস! অতিথির আদর আপ্যায়নের কোন পরিবার কত যত্নশীল তা দিয়ে পরিবারের আভিজাত্য প্রকাশ পায়। নামকরা হোটেলে তাই সুন্দরী সদা হাস্যময়ী রিশেপশনিষ্ট। হোটেল কর্তৃপক্ষ কত বেশী অতিথিদের সুবিধা দিতে পারেন তার ঢালাও বিজ্ঞাপনে বাজার মাত করেন। অতিথি যদি আপ্যায়নের খাতিরে গৃহকর্তার একান্ত পারিবারিক বিষয়ে না ঢোকেন, রান্নার প্রশংসা করেন, পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাহলে গৃহকর্তাও খুশী হন, আতিথেয়তারও মান বাড়ে।
কোন কোন কথা, কোন কোন সুর কথনও ভোলা যায় না, মনের গভীরে অবচেতন স্মৃতিতে অমলিন থেকে যায় জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত । যেমন ভুলতে পারে নি আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু সুরেশ। সুরেশের সংসারের অনেক কথাই আমি জানতাম। মাঝে মাঝে বলত, জানিস মা খুব কষ্ট করে সংসারের জন্য, বাড়িতে সংসারের সমস্ত কাজ ওর মা একা হাতে করতেন। কাজের লোক রাখার কথা চিন্তাতেই আনার কথা নয়। সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। সামান্য সরকারী কাজ ওর বাবার! একা রোজগার, ছ‘জনের সংসার। কাজ করতে করতেই সুরেশের মা গুনগুন করে গাইতেন পুরানো দিনের নানা গান। মায়ের গলা শুনতে শুনতেই মুখস্থ হয়ে যেত গানের প্রথম কলিগুলো। তপু ওর সবচেয়ে ছোট ভাই, কোলের ছেলে বলে মায়ের পিছু পিছু ঘুরত আর মায়ের সাথেই গুনগুন করে গাইত- “তুমি নির্মল কর মঙ্গল করে, মলিন মর্ম মুছায়ে, তব পুণ্য-কিরণ দিয়ে যাক মোর, মোহ কালিমা ঘুচায়ে….”। কবি রজনীকান্তের সুরে পান্নালাল ভট্টাচার্যর কণ্ঠে গানের কথাগুলোর কি গভীর ব্যঞ্জনা, কি আবেগ, সর্বশক্তিমানের কাছে নিজেকে সমর্পণের কি গভীর আকুতি, সংসারের মোহ থেকে মুক্তি আর কালিমা মুছিয়ে দেওয়ার কি করুণ আর্তি গানের প্রতিটি লাইনে, প্রতিটি ছন্দে। তপুর ওই আধো আধো উচ্চারণে, কচি গলায় গানের কথাগুলো আজও আমার বুকে বাজে। তখন অভাবের সংসারে ছেলের আবদার পূরণ করতে না পারার ব্যথাটা যেন মায়ের গানের মধ্য দিয়ে কান্নার আকারে ঝরে পড়ত। সুরেশ প্রায় বলত, জানিস, আমার বুকটা ফেটে যায়, বাবার কষ্ট, মায়ের দিনান্ত পরিশ্রম, কিছু তো করতে পারতাম না তখন, ভাবতাম, বড় হয়ে ভাইটার সব আবদার পূর্ণ করব। কিন্তু নাঃ! সাধটা অপূর্ণই থেকে গেল। শ্রাবণের এক বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় অঘটনটা ঘটে গেল । সেদিন দুপুরের পর থেকে শুরু হল মেঘের ডাক, কড়কড় শব্দে বাজ পড়া শুরু হল। অঘোর ধারা বরিষণ। অবিশ্রান্ত বর্ষণে পাশের পুকুরটা ভাইকে কেড়ে নিয়েছিল মায়ের কোল শূন্য করে। অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে কেটে গেছে জীবনের অনেকগুলো অধ্যায়। সুরেশের মা চলে গেছেন কয়েকবছর হল। সুরেশ এখনও মাঝে মাঝেই বলে, রেডিওতে গানটা শুনলে এখনও বুকে বাজে ওর মায়ের গানের সেই আর্তি, সেই আকুতি, ভাইয়ের সেই নিষ্পাপ মুখ আর মায়ের করুণ চোখ।
অনেক সময় নানান সাংসারিক কারণে মনের কথা খোলসা করে না বলতে পারার জন্য কত কিছু অঘটন ঘটে যায়। কিছু বলব বলে ভেবেছিলাম, কিন্তু পরিস্থিতি পালটে যাওয়ায় আর বলাই হোল না ৷ এরকম না বলা কথার অব্যক্ত বেদনা নিয়ে দিন কাটাই আমরা অনেকেই। এমন কিছু কথা থাকে যা সবাইকে তো নয়ই, নিজের স্ত্রীকেও বলা যায় না, ভাবি ঠিক মতো না বুঝে উল্টো মানে করতে পারে, তাই থাক! এরকম ভাবেই কোন প্রেমিক প্রেমিকাকে, বন্ধু আর এক বন্ধুকে, একান্ত আপনকেও বলতে পারে না – না বলা কথাগুলো। আমরা অনেকেই মনে মনে অনেক কথা বলি। পারিপার্শ্বিক ঘটনায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাই না। কিন্তু মনে মনে আমরা প্রতিবাদ করি, ধিক্কার জানাই। এটাও ঠিক, নিজের দাবী আদায় করতে হলে চুপ থাকা চলে না । মিতভাষীরা মনের ভিতরে অনেক কথা বলেন, বাইরে কম। কিছু মানুষ খুব বেশি কথা বলেন, আগপাশতলা না ভেবে ননস্টপ বলেই চলেন। এরা ভাবেন, পৃথিবীর কোন বিষয়ই তার অজানা নয়, সব বিষয়েই তিনি পণ্ডিত। এরকম বাচাল মানুষ গলার জোরে অন্যকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। এমন মানুষকে আদতে সকলে অপছন্দই করেন। মিতভাষী যাঁরা, তাঁরা ভাবেন, এত কথা বলার তো দরকার নেই, আমার কথাগুলো হয়তো সবাই জানেন, বলে বোকামী করব না তো! ঠিক এরকম চরিত্রের মানুষ সুরেশ, আমার বন্ধু সুরেশ ঠিক সময়ে মনের কথা বলতে পারল না বলে অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গেল ওর প্রেমিকা অনন্যার, অব্যক্ত বেদনা নিয়ে ছলছল চোখে চেয়ে রইল সে সুরেশের মুখ চেয়ে। প্রেম জীবনে একবারই আসে, ভালবাসা যায় শুধু একজনকেই। চারহাতে এক হোল না, দুটি মনেই ব্যথার পাহাড় জমে রইল। জীবনের মানেটাই যেন পাল্টে গেল সুরেশের, হয়তো অনন্যারও! শুধু ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে থাকতে থাকতে ফসকে গেল জীবনের অনেক সুযোগ, তাই সাহসী হতে হয়। ওরা দ্বিধার জন্য জীবনের অনেক প্রয়োজনীয় কথা সময় মতো বলতেই পারেন না, সেজন্য পস্তাতেও হয় ! সময়ের অভাবে আমার অনেক কথা বলাই হোল না……. অপেক্ষায় রইলাম,কিছু বলব বলে।
জয়ন্ত কুমার সরকার | Jayanta Kumar Sarkar
Andaman Cellular Jail | আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল | 2023
মানব কল্যাণে রামকৃষ্ণ মিশন | Ramakrishna Mission | 2023
Bengali Article 2023 | জীবানন্দ মহাশয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
পতিতাবৃত্তি ও চন্দননগর | Bengali Article 2023
bengali story new | indian poems about death | 2023 new bengali story | 2023 new bengali story books for child pdf | 2023 new bengali story books for adults | 2023 new bengali story books | bengali story books for child | 2023 new bengali story books pdf | 2023 new bengali story for kids | 2023 new bengali story reading | short story | short story analysis | short story characteristics | short story competition | short 2023 new bengali story definition | short story english | short story for kids | short 2023 new bengali story generator | bengali story 2023 | short 2023 new bengali story ideas | short story length | long story short | long story short meaning | long bengali story | long 2023 new bengali story | long 2023 new bengali story instagram | 2023 new bengali story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2022 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | poetry competition crossword | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | bengali story writing | bengali story dictation | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali story news| article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | 2023 new Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder | Shabdodweep Bengali Writer | Shabdodweep Bengali Story | Updated 2023 new Bengali Story | update 2023 new Bengali Story | 2023 new Bengali Story – top list | 2023 new Bengali Story – best story | 2023 new Bengali Story – top story | Best seller – 2023 new Bengali Story | Best seller 2023 – 2023 new Bengali Story | 2023 new Bengali Story – Best book