জয়নাল আবেদিন – সূচিপত্র [Bengali Story]
সংবাদদাতা – জয়নাল আবেদিন [Natun Bangla Galpo 2023]
বৈশাখ মাস প্রায় শেষ হতে চললো। এখনো বৃষ্টির দেখা নেই। কদিন হলো ভীষণ গরম পড়েছে।দিনে রাত্রে ঘুমানো দায়। গরমের দিন বলেই দুপুরে মাদুর, বালিশ নিয়ে বাড়ির সামনের বাগানে বিছানা পেতে শুয়ে থাকি।রোজ যে ঘুমাই, তা নয়। বেশিরভাগ দিনই একটু লেখালেখি করি। বাগানটা দারুণ ছায়া। জামরুল গাছের তলায় বিছানা পাতলাম। সাথে লেখার ডাইরি-কলম ছিলো। গল্পের একটা প্লট সকাল থেকেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। কলম নিয়ে বসে গেলাম,আরম্ভটা বেশ সুন্দর লাগছে।
হঠাৎ জামরুল গাছে একটা কাক এসে বসলো। কাকটা আমার চেনা। চেনা মানে,রোজ ই প্রায় সকালে আমাদের বাড়িতে এঁটো কাঁটা খেতে আসে আর কি।
চোখাচোখি হতেই কাকটা কেমন হেসে ফেললো।
— কি লিখেছো গো খোকাবাবু ?
— এই তো একটা গল্প লিখছি।
— তুমি আবার গল্প – কবিতা লেখো নাকি ? তা বেশ বেশ, তোমার মতো অনেক কে দেখেছি গল্প- কবিতা সব লেখে।
— তুমি গল্প-কবিতা পড়ো না কি ?
— দুর বাবু, আমি পড়বো কি করে। আমি কি লেখাপড়া জানি।লোকে বসে বসে লেখে দেখি তাই।তা তুমি কি রকম গল্প লেখো ?
— তেমন কিছু না, মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে একটু লিখি আরকি।
— আমি যদি লেখাপড়া জানতুম না, আমি ও গল্প লিখতুম। আমার কাছে অনেক বড় বড় গল্প আছে। অনেক মানুষ কে দেখছি না।
— তোমার গল্প আমাকে বলো, আমি লিখি।
— দেখো খোকা বাবু, তুমি অনেক কিছুই লেখো। মানুষের সুখ-দুঃখ, কিন্তু তোমার অনেক চেনা মানুষের খবর রাখোনি।তারা কি রকম মানুষ তাই তুমি জানো না।
— কি রকম ? চেনা মানুষের কথা মানে আমার বাড়ির কাছাকাছির মানুষ জন,পরান জেঠুর কথা বলতে চাইছো?
কাকটা, কক -কক -কক করে একটু হেসে নিলো।
— হ্যাঁগো, হ্যাঁ ওই যে -পরান মন্ডল ওই লোকটাকে চেনো? তুমি ঠিক চেনো না।
ভীষণ প্যাঁচালে। একজনের কথা অন্যজনকে লাগানোর ওস্তাদ। এর সঙ্গে ওর মামলা, ওর সঙ্গে তার মামলা। উনি শুধু সারাদিন সকলকে বুদ্ধি দিয়ে চলেছে। এদিকে আসামি তরফ কে বলছে তুমি এইটা করো। আবার ফরিয়াদি তরফ কে বলছে, তুমি ওইটা করো সব জব্দ হয়ে যাবে। কি চরিত্র বাবু, না জানলে তুমি বুঝতেই পারবে না।
আর একজনের কথা বলছি ছোট মিত্তির বাবু। চেনো লোকটাকে?
— হ্যাঁ হ্যাঁ- চিনবো না আবার ওনাকে ।
— শোনো, উনি একটি কৃপণের ধাড়ী।
টাকার বান্ডিল রোদে শুকায়। তুমি তো ওর পাশের বাড়ির লোক বিপদে দু টাকা ধার চাও, বলবে আমার কাছে নেই গো বাবু। যদি বল একটা ভালো জমি বিক্রি আছে নেবে? তাহলে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাবে । উল্টে তখন থেকে তোমাকেই পীড়াপীড়ি করবে। যাতে তাড়াতাড়ি দলিল-দস্তাবেজ হয়ে যায়। ঐতো অতো সম্পত্তি, তবু সব সময় মুখ শুকনো হয়ে আছে। মনে সুখ শান্তি নেই। তুমি দেখবে বলে রাখলুম। কত সম্পত্তি তো-সব ছেলেরা উড়োবে। একটুও থাকবে না। আর একজনের কথা বলি শোনো, ওই যে বাটুল তরফদার গো- লোকটাকে চেনো ?
— হ্যাঁ চিনি তো, সত্যিই খুব ভালো লোক- খুব ধার্মিক ।
— বকধার্মিক! বাবা ,আমি ওকে চিনি না?
তুমি একটা কথা চিন্তা করো, আমিতো কাক। আমাকে এর বাড়ির তার বাড়ির এঁটো কুড়িয়ে খেতে হয়। ওই লোকটা আমাদের দেখলেই বেরো, দূর হ -দূর হ এইসব গালাগালি করবে। লোকটা কিন্তু সারাক্ষণ নামাবলী গায়ে দিয়ে ঘরে। ঘরে পূজা পাঠ করে। কিন্তু বাবু, তার ফাঁকেই যা খিস্তি পাড়তে পারে। না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবে না।
তোমাকে যদি তোমাদের আশেপাশের সব বাড়ির খবরা- খবর বলি আশ্চর্য হয়ে যাবে। চিন্তাই করতে পারবে না।
সে যাহোক তোমাদের ওই কলোনি পাড়ার খবর রাখো?
— তাতো জানি না! কি হয়েছে?
— মা মাসি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে সব তোমাদের ওই মানুষেরা।
— মানে একথা বলছো কেনো ?
— বলছি কি আর সাধে, রেগে যেও না।
ও পাড়ার ছেলেরা পাড়াটাকে তো প্রেমের বৃন্দাবন করে ফেলেছে। এ-বাড়ির মেয়ের সঙ্গেও বাড়ির ছেলের। এর বোনের সঙ্গে তার ভাইয়ের। অমুকের মায়ের সঙ্গে তমুকের বাবার। সে এক কেচ্ছা কান্ড। বলতে গেলে রাত শেষ হয়ে যাবে।
— তা তুমি এত খবর রাখো কি করে?
— আমি তো অনেকের বাড়ি যাই। মানে অনেকের হাঁড়ির খবর বলে দিতে পারি। তা যাকগে খোকাবাবু আজ চলি। কাল-পরশু আবার এসে বাকি গল্প তোমাকে শোনাবো। আমার গিন্নী আবার অপেক্ষা করে বসে আছে আমার জন্য। কোলে ছোট ছেলে তো। আমি গেলে তবেই সে খেতে আসবে। কাকটা উড়ে গেল।
আমি চুপচাপ বসে বসে ভাবছিলাম। এত কাছাকাছি থেকেও এই মানুষগুলোর সম্পর্কে জানতাম না।
পরপর চার দিন অপেক্ষা করলাম। কাক টা এলো না।
সেদিন এলো মুখটা ভীষণ শুকনো শুকনো। যেন কিছু একটা হয়েছে।
— কি ব্যাপার এতদিন পর হঠাৎ?
না গো খোকাবাবু আসতে পারিনি, মনটা ভীষণ খারাপ।
— কেন গো, কি হয়েছে?
— সে এক সাংঘাতিক ব্যাপার বাবু!
— কি রকম? কি এমন হয়েছে?
— বলতেও লজ্জা বাবু! আসলে আমি যে বাচ্চাগুলোকে লালন পালন করছিলাম নিজের বলে। সেগুলো আমার বাচ্চা নয়। কোকিলের। নিজে না খেয়ে বাচ্চাদের খাইয়েছি। অথচ একজন ও আমার বাচ্চা নয়!
— তুমি ভুল করছ, তোমার বাসায় এসব হতে পারে না?
— তুমি না বিশ্বাস করলেও আমি বিশ্বাস করি খোকাবাবু। আমি সব বুঝতে পেরেছি। আমাকে কি তুমি ওই উত্তর পাড়ার লোক ভেবেছো? আমার গিন্নী আসলে নষ্ট। ওকে নিয়ে আর চলবে না। ও থাকুক ওর বাচ্চা নিয়ে। আমি চলি। কাকটা চোখের জল মুছে উড়ে গেল ।
সিঁদুরে মেঘ – জয়নাল আবেদিন [Natun Bangla Galpo 2023]
অনেকগুলো ভাই বোনের সংসারে নিতান্ত অবহেলায় দিন কাটছিলো সাবিনার। পরনের জামাকাপড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করবে তার উপকরণ ও সব সময় পেতো না। পেটের খোরাকটা বেশিরভাগ সময়ে পুরোপুরি জুটতো না। তাতে কোন দুঃখ থাকতো না ওর। ময়লা ছেঁড়া পোশাকের মধ্যে থেকে ওর যৌবন উঁকি মারতো। পুরুষের চাউনিতে ও মাঝে মাঝে টের পেয়ে লজ্জাবোধ করত তাতে। পাশাপাশি সমবয়স্ক অন্য মেয়েদের দেখে ওর ভালো লাগতো। তাদের পোশাক প্রসাধনী দেখে মনটা ভারী হয়ে আসতো-আমাকে একটা ভালো জামা কিনে দাও না ? অনেক সংযমের বাঁধ ভেঙে ওর বাপকে বলেছিল কথাটা।
— এনে দেব রে মা, টাকা পেলেই আনবো। ছল ছল চোখে, মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কেমন ভীতির সুরেই বললে মোরশেদ।
— অনেকদিন থেকেই তো বলতেছ। কিছু ক্ষোভ ঝরায় সাবিনা।
— বুঝি রে মা, পেরে উঠি না। অপরাধীর মতো কুঁকড়ে যায় মোরশেদ।
সামান্য একজন দিনমজুরের জীবনে পেটের খোরাক জোটাতে প্রাণ জেরবার। ভালো কাপড় -ভালো জামা কার না মন চায়। কিন্তু চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গতি থাকে না। সাত ছেলে মেয়ে ও দুই স্বামী-স্ত্রী মিলে নয় জনের সংসার। দুবেলা আঠারো পাতের জোগাড় প্রতিদিন সম্ভব হয় না।
রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ। তাতেও লাইন লাগে এখন। মিস্ত্রি গুলোর চোদ্দ পুরুষ উদ্ধার করেও স্বস্তি পায় না মোরশেদ।
“শালারা এখন মেয়ে জোগাড়ে ছাড়া কাজ করতে পারে না, আরে বাবা- ছেলেরা যেখানে কাজ পায় না। তাদের বাদ দিয়ে মেয়ে নিয়ে কাজ ! যতসব নোংরামো, ছ্যাঁচড়াপনা। আর মেয়েগুলোও বেহদ্দ। চোখের শরম বলে কিছু নেই। মর মর সব, শ্লা দুনিয়া ফেনা হয়ে যাক। “মনে মনে গজরায় মোরশেদ।
সেদিন কাজ না পেয়ে অশান্তিতেই বাড়ি ফিরলো সকাল সকাল। দুপুরে উনুনে হাঁড়ি চড়ার উপায়ান্তর নেই। বউ মরিয়ম শুকনো মুখেই ঘরবার করতে থাকে।
— কিগো ফিরে এলে ? কাজ হয়নি ?
— নারে , কাজ বড় মন্দা। এখন কাজের থেকে লোক বেশি।
— কি হবে ,এরকম করে ?
— ভাবতে পারিনি রে ! এ আমার পাপের প্রায়শ্চিত্তি।
— সাবিনা, রাজু, ওদের মনির সঙ্গে বলরামপুরে বাজি কারখানায় কাজে যাবে বলতেছিলো কাল থেকে।
— কে বলেছে যেতে ? মেয়েরা বাইরে পা দেওয়া মানে…
— তাহলে কি ঘরে শুয়ে থেকে, না খেয়ে মরবে ? একপ্রকার ক্ষিপ্ত হয়েই বলে মরিয়ম।
কথাগুলো ঘরের মধ্যে থেকে সবই শুনছিলো সাবিনা। এবার সে আস্তে আস্তে বাপ -মায়ের সামনে এসে দাঁড়ায়। কেমন যেন চমকে ওঠে মোরশেদ। চোখেমুখে কেমন এক অস্বাভাবিকতা সাবিনার। অসহায় বাপের সাহায্যের জন্যই সে কিছু করতে চায়। সে যদি ছেলে হতো তাহলে তাকে এই বয়সে কাজ করতেই হতো। কিন্তু মনের ভাষা মুখের ভাষায় সমন্বয় ঘটাতে পারলো না সে।
— আমি কাজে যাবো বাপ। স্বরটা কেমন তীক্ষ্ণ সাবিনার।
— না , মা। তোমাকে কাজে যেতে হবে না।
— খেতে পরতে ঠিকমতো দিতে পারবে না। কাজ করবো না। তবে কি শুধু শুকনো হবো। ফোঁস করে ওঠে সাবিনা।
মোরশেদ এ কোন সাবিনা কে দেখছে। বোবা হয়ে যায় তার মুখ। দীর্ঘ জীবনে আজ তার অসহায় চোখ দুটো ঝরনার ধারা বহায়, মরিয়াম আচলে চোখ মোছে। মোরশেদ মেয়ের চোখে- মুখে বিদ্রোহী ভাব খোঁজে। নিজের চোখ -কান কে সে নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। একথা সাবিনা বলতে পারে না।
— মরিয়াম, এভাবে মেয়েকে আগুনে ঠেলে দিও না। আকুল আকুতি মোরশেদের।
— পেটের জ্বালা নেভাতে সব সহ্য করতে হবে। মরিয়াম মোরশেদের আকুতির অর্থ বোঝার চেষ্টা করলো না ।
জোড়াতালির সংসারেও দুটো শিবির তৈরি হয়। মোরশেদ বাইরের জগৎটা ভালো করে চেনে। ঘরের মেয়েরা কাজের জন্য বাইরে বের হলে তারা আর ঘরের মেয়ে হয়ে থাকতে পারবেনা। ভাগাড়ের শেয়াল গুলো খুবলে খুবলে খেয়ে ফেলবে। এ যাবত সে যতো কাজে যাওয়া মেয়ে দেখেছে পরে পরে সকলেই কেমন বেপরোয়া। হাসাহাসি, গায়ে পড়ে ঢলাঢলি তাদের কোনো কুন্ঠা নেই।
মরিয়াম বাইরের জগৎ বোঝে না। অভাবের সংসারে দুটো পয়সা আসবে, ছেলেমেয়েদের পেট পুরে দুটো খেতে দেবে এটাই তার প্রধান চাহিদা। কাজ করে খাবে, চুরি তো করছে না। গরিবের ঘরে কাজ করে খেলে মানে বাধবে না।
দিন যায়। রাত যায়। পৃথিবীর বয়স বাড়ে। মরিয়ামের সংসার এখন কিছুটা আলোর মুখ দেখেছে। সাবিনা, ভাই বোনের দুজনার সপ্তাহের টাকা মায়ের হাতে তুলে দেয়। সন্ধ্যা মুখো বাড়ি ফিরে হাত- মুখের বারুদের রূপালী রঙের প্রলেপ তোলে, গন্ধ সাবান মেখে। মুখে স্নো মাখে, মাথায় ঠান্ডা তেল ঘষে, এসব নাকি ওর উপরি রোজগারের টাকায় কেনা। ওদের কাজে হিসেব কষে যে বাবু, সে ওকে খুব ভালোবাসে-পাঁচ-সাতশো কাজ রোজই বেশি লিখে দেয়। রাতে বিছানায় শুয়ে সাবিনা গুনগুনিয়ে গান গায়, ভাবে আরো কিছুদিন আগে যদি সে কাজে বের হতো- হাতে কতো পয়সা এসে যেতো। এবার কিছু কিছু জমিয়ে সে একটা কানের জিনিস কিনবে, কানে একটা কিছু না থাকলে মানায় না।
মরিয়াম মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে-তুই যদি আমার ছেলে হতিস আমার ভাবনা থাকতো না। সন্ধ্যার আগে রোজ চলে আসবি, দুর গায়ের রাস্তা দেরি হওয়া ভালো নয়। কিন্তু মাঝে মাঝে দেরি হয়ে যায় সাবিনার। বাবুর চাপিয়ে দেওয়া কাজকে ফেলে আসতে পারেনা, সকলে চলে গেলেও ও কাজ শেষ করেই আসে। ও বলে- যে আমাকে দেখে তার কথা তো রাখতেই হবে, তুমি বলো মা।
মরিয়াম সকাল-সকাল ছেলে মেয়েকে খাবার করে দেয়, দুপুরের খাবার বেঁধে দেয় টিফিন বাক্সে।
মোরশেদ বোবা চোখে তাকায় মেয়ের দিকে, দিনে দিনে পার্থক্য লক্ষ্য করে মেয়ের। শরীরের রক্ত হিম হয়ে আছে তার। সে যেন এক নখদন্ত- হীন সিংহ মাত্র। চেষ্টা করেও গর্জে উঠতে পারে না। কত অসহায় সে এখন। মেহনত করেও সংসার চালাতে পারে না, সারা সপ্তাহ কাজ জুটলেও সেই পয়সায় সকলের মুখের ভাত জোটে না। লাগাম তার হাত থেকে ছেড়ে গেছে টেনে ধরার ক্ষমতা আর পাচ্ছে না।
দিনে দিনে সাবিনার পরিবর্তন হতে থাকে। পোশাকে- আশাকে এখন বেশ ছিমছাম। পিছনের দিনের না পাওয়ার সাধ পুরোপুরি মিটিয়ে নিতে চলেছে সে, মাঝেমধ্যেই ভালো ভালো কাপড় কিনে আনে । সেদিন একটু রাতেই ফিরেছিল বাড়িতে, ভাইকে পাঠিয়ে দিয়েছিল অন্য সঙ্গীদের সাথে। কোথায় গেছে, দেরি হবে কেন ভাইকে কিছু বলেনি।
— তোর এত দেরি কেন রে সাবিনা ? ঘরে ঢুকতেই মরিয়াম জিজ্ঞেস করে।
— বই দেখতে গিয়েছিলুম। সাবিনা নির্ভয়ে উত্তর দিয়ে হাতের প্যাকেট খানা বিছানায় রাখে।
— কার সঙ্গে গেছিলি ? কি ওতে ? একটু যেন ঝাঁঝালো মরিয়াম।
— বাবুদের বউ, ওনার দুটো কুটুম্ব ছিলো-আমাকে যেতে বললে তাই গেলুম। ওটা বাবুদের বউ কিনে দিয়েছে সালোয়ার, কামিজ। কুটুমরা কিনলো বলে আমাকেও দিলে, বলে-এটা তুই পরবি ,তোকে ভালো মানাবে।
মোরশেদ বাড়ি ফিরলে দেখে মরিয়াম চুপ করে যায় ও প্রসঙ্গ যাতে আর না হয়।
স্বামীর কানে গেলে কথাগুলো, আস্ত রাখবে না আর।
এভাবেই চলছিলো দিনগুলো। বাপের আপত্তি সত্ত্বেও কাজে যাওয়া মেয়ে, মাঝেমধ্যে দেরিতে ফেরা, কেনাকাটা করা ,মুখে- হাতে মাখার জিনিস কেনা। এগুলো নাকি সপ্তাহের টাকা দেবার পর, সে উপরি রোজগারের টাকা থেকে কেনে। সেটাই বা কতো টাকা, হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে গিয়েও চুপ করে যেতে হয় মরিয়ামকে। স্বামীর কানে যাতে না পৌঁছয় কথাটা, শুধু সেজন্যই।
ক’দিন শরীর খারাপ থাকার জন্য সাবিনা কাজে যায় না। ওর ভাই একা বলে সেও যেতে চায় না। চিন্তা বাড়ে মরিয়ামের, সংসারে চাপ- না মেয়ের শরীর, কোনটাকে সামাল দেবে। মেয়ে কাজে যায়নি কদিন, মোরশেদ না বললেও বুঝে নিয়েছে। মনে মনে সে একটু আশ্বস্ত হয়। চেষ্টা করে একটু বেশি পয়সার কাজের, তাহলে আর মেয়েকে কাজে বের হতে দেবে না। ছুটির পর সে নানান ঠিকেদারের সঙ্গে দেখা করে, উপায় একটা বের করবেই। সেদিন রাতে একরাশ খুশি নিয়ে বাড়ি ফিরলো মোরশেদ। বাড়িটা কেমন যেন থমথমে মনে হলো মুহূর্তে, এমন কোন দিন তার হয়নি তো।
মরিয়ামকে ডেকে বলল – জানিস মরি – অনেক কটা দিন চেষ্টা চরিত্তির করে একটা ভালো ঠিকেদারের কাছে কাজ পেয়েছি, ভালো পয়সা দেবে। বুঝলি, তুই আর সাবিনাকে কাজে যেতে দিস নি। সোমত্ত হচ্ছে, বেফাঁস কিছু হলে আর মুখ দেখাতে পারবি না।
হঠাৎ ঝর ঝরিয়ে কেঁদে ওঠে মরিয়াম।
— কি হয়েছে রে ? কাঁদিস কেন ? বুকটা ব্যথায় যেন টনটনিয়ে ওঠে মোরশেদের।
— সব্বোনাশ হয়েছে গো, আমাদের সব্বোনাশ হয়েছে। পোড়ার মুখি কাল ঘটিয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়ে মরিয়াম।
মোরশেদ এক বিশাল ঢেউয়ের ধাক্কায় কোথায় যেন আছড়ে পড়ে। আচ্ছা অন্ধকারে সে দেখে একটা মানুষকে কতগুলো শেয়ালে টানাটানি করছে।
জয়নাল আবেদিন | Joynal Abedin
মানব কল্যাণে রামকৃষ্ণ মিশন | Ramakrishna Mission | 2023
Andaman Cellular Jail | আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল | 2023
নির্যাতিতা রহিমারা | Bengali Article 2023
Chandannagar Jagadhatri | চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার প্রবক্তা কে ??
সংবাদদাতা | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২৩ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন | নিজস্ব সংবাদদাতা সৌজন্যে | সাংবাদিক | বিশেষ সংবাদদাতা | নিজস্ব সংবাদদাতা | বিশেষ সংবাদদাতা টিকা | সাংবাদিক ও রিপোর্টার পার্থক্য | বাংলার প্রথম ফিল্ড জার্নালিস্ট নামে কে পরিচিত | স্টাফ রিপোর্টার কাকে বলে | সাংবাদিক হওয়ার যোগ্যতা | সংবাদদাতা অর্থ | সংবাদদাতা বা সাংবাদিক ইংরেজি | কলকাতা সংবাদদাতা | পিপলস সংবাদদাতা | জেলা সংবাদদাতা | মফস্বল সাংবাদিক | সিঁদুরে মেঘ | ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ | শিক্ষায় সিঁদুরে মেঘ | ক্রস ভোটে সিঁদুরে মেঘ | সিঁদুরে মৌটুসি | সিঁদুরের কৌটার ছবি | সিঁদুর এর ইংরেজী | সিঁদুর দানের নিয়ম | সিঁদুরের উৎপত্তি কিভাবে হলো | সিঁদুরের উপকারিতা | সিঁদুরের দাম | নাকে সিঁদুর পড়লে কি হয়
Shabdoweep Founder | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Poetry | Natun Bangla Galpo 2023 | Natun Bangla Galpo 2023 book | Natun Bangla Galpo 2023 pdf book | Writer – Natun Bangla Galpo 2023 | Top Writer – Natun Bangla Galpo 2023 | Top poet – Natun Bangla Galpo 2023 | Poet list – Natun Bangla Galpo 2023 | Top poetry – Natun Bangla Galpo 2023 | Best seller – Natun Bangla Galpo 2023 | Full pdf book – Natun Bangla Galpo 2023 | Free download pdf – Natun Bangla Galpo 2023 | Audio book – Natun Bangla Galpo 2023 | Video book – Bangla Kabita 2023 | Video poetry – Bangla Kabita 2023 | Audio poetry – Natun Bangla Galpo | New Poetry book | Shabdodweep poetry book | Shabdodweep International Web Magazine | International Bengali poetry | Bengali Poetry publisher | Shabdodweep Publisher | Shabdodweep Publisher 2023 | Shabdodweep Video Publisher | Shabdodweep Audio Book | Shabdodweep Video Book | Shabdodweep Mp3 poetry | Audio Poetry mp3 | Audio Poetry wmv | Video poetry mp4 | Natun Bangla Galpo 2023 video series | Natun Bangla Galpo 2023 – web series | Natun Bangla Galpo 2023 – Latest version | Natun Bangla Galpo 2023 pdf book | web video – Natun Bangla Galpo 2023 | web reader – Natun Bangla Galpo 2023 | pdf reader – Natun Bangla Galpo 2023 | pdf publisher – Natun Bangla Galpo 2023 | Best web series – Natun Bangla Galpo 2023 | new pdf book – Natun Bangla Galpo 2023 | New story book – Natun Bangla Galpo 2023