Andaman Cellular Jail | আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল | 2023

Sharing Is Caring:
Andaman Cellular Jail

আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল | Andaman Cellular Jail

আন্দামানে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ পোর্ট ব্লেয়ারের সেলুলার জেল [Andaman Cellular Jail] যেখানে দীর্ঘ প্রায় ৯৪ বৎসর যাবৎ ইংরেজের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী ভারতবাসীদের বিচারের নামে প্রহসন করে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। ভারতমাতার অসংখ্য সন্তানকে ফাঁসির যূপকাষ্ঠে প্রাণ বলিদান দিতে হয়েছিল অথবা ইংরেজদের তিল তিল করে পাশবিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে। কয়েদী উপনিবেশ স্থাপন করার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমুদ্র পরিবেষ্টিত দ্বীপ থেকে দুর্ধর্ষ অপরাধীরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে।

প্রথম দফায় ১৭৮৯ সালে কয়েদী উপনিবেশ গড়ে তুলে নাম দেওয়া হয় লর্ড কর্নওয়ালিসের নামে পোর্ট কর্নওয়ালিস। প্রথম দুই বৎসর এখানে কয়েদী উপনিবেশ রাখার পরে সেই উপনিবেশকে স্থানান্তরিত করা হয় উত্তর আন্দামানের নর্থ-ইস্ট ‘হারবারে’। অসংখ্য কয়েদির মৃত্যু জনিত প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সেই উপনিবেশকেও ১৭৯৬ সালে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। ৬১ বৎসর পরে আঠারোশো সাতান্ন সালে সমগ্র ভারত ব্যাপী সিপাহী বিদ্রোহের ফলে জরুরি ভিত্তিতে ইংরেজি শাসকেরা বাধ্য হয় দ্বিতীয় দফায় আন্দামানে কয়েদী উপনিবেশ স্থাপন করতে এবং পুরাতন পোর্ট কর্নওয়ালিস অঞ্চলকে (বর্তমানে যা পোর্ট ব্লেয়ার নামে পরিচিত) উপযুক্ত স্থান বলে বিবেচিত করে।

৬২ বৎসর পূর্বে প্রথম কয়েদী উপনিবেশ গড়ার স্থান নির্বাচনের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লেঃ টি, এইচ, কোলব্রুক এবং লেঃ আর্চিবল্ড ব্লেয়ারকে সার্ভে (survey) করার জন্য পাঠান। লেঃ আর্চিবল্ড ব্লেয়ারের নামানুসারে পরবর্তীকালে পোর্ট কর্নওয়ালিস নামের পরিবর্তে পোর্ট ব্লেয়ার নাম চালু হয়। দ্বিতীয় দফাতে শুধু যে দুর্ধর্ষ অপরাধীদের পাঠানো হতো তাই নয় তার সাথে সিপাহী বিদ্রোহের সাথে যুক্ত সৈনিক এবং অন্যান্য দেশদ্রোহী ও ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহীদের এখানে নির্বাসনে পাঠানো হতো। প্রথম দফার মত প্রথমদিকে চাত্থাম দ্বীপে কয়েদী উপনিবেশ গড়ে তোলার পরে জল কষ্টের জন্য রস আইল্যান্ড দ্বীপে কয়েদী উপনিবেশ স্থানান্তরিত করা হয়। ১৮৫৮ সালের ১০ই মার্চ দুশ জন সিপাহীকে দ্বীপান্তর নির্বাসন দিয়ে যে দ্বীপান্তর পর্ব শুরু হয়ে কয়েদীর জীবন শুরু হয়েছিল তা শেষ হয়েছিল ১৯৪২ সালের ২৩শে মার্চ যেদিন জাপানিরা পোর্ট ব্লেয়ার অধিগ্রহণ করে সেলুলার জেলের দরজা খুলে দিয়ে সমস্ত বন্দীদের মুক্ত করে দিয়েছিল। ইতিমধ্যে ১৯৩৮ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শেষ দলটি আন্দামানের সমুদ্রতটকে ‘আলবিদা’ জানিয়ে মূল ভারত ভূমিতে ফিরে আসেন।

এরপরে আমরা আলোচনা করব আন্দামানে কয়েদি উপনিবেশ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা এবং তার পশ্চাৎপটের ঘটনাবলী। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে ইউরোপ থেকে আগত বেশ কয়েকটি জাহাজ আন্দামানের নিকটবর্তী অঞ্চলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সমুদ্রে ভেঙে পড়ার পরে জাহাজের নাবিক ও কর্মীরা দ্বীপগুলিতে আশ্রয় নেওয়ার পরে আদিম নেগ্রিটো জনজাতিদের দ্বারা তীর বিদ্ধ হয়ে মারা যায় অথবা তাদেরকে হত্যা করা হয়। এছাড়াও এই অঞ্চলে জলদস্যুদের উপদ্রবের মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন দেশের যাতায়াতকারী জাহাজগুলির নাবিক ও কর্মীদের আশ্রয় ও নিরাপত্তা দানের উদ্দেশ্যে আন্দামান দ্বীপ সমূহের কোন এক সুবিধাজনক স্থানে একটি পোতাশ্রয় বা ‘হারবার’ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। দ্বিতীয়ত দুর্ধর্ষ অপরাধীদের জন্য এক দুর্ভেদ্য কয়েদী উপনিবেশ স্থাপন করা যাতে তারা কোনোভাবেই পালিয়ে যেতে না পারে। দুই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ১৭৮৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দ্বীপপুঞ্জে স্থান নির্বাচনের জন্য লেফটেন্যান্ট টি, এইচ, কোলব্রুক এবং লেফটেন্যান্ট আর্চিবল্ড ব্লেয়ারকে পাঠান এবং তারা চাত্থাম দ্বীপে উপনিবেশ স্থাপন করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। লর্ড কর্নওয়ালিসের সময়ে স্থাপিত এই পোতাশ্রয়ের নাম হয় পোর্ট কর্নওয়ালিস। সাত বৎসর পোর্ট কর্নওয়ালিস এবং উত্তরের নর্থ-ইস্ট হারবারে উপনিবেশ থাকাকালীন অসংখ্য কয়েদির মৃত্যুর ফলে উপনিবেশ বন্ধ করা হয়। এর প্রায় ৬২ বৎসর পরে দ্বিতীয়বার পুনরায় উপনিবেশ স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ব্রিটিশ সরকার নিযুক্ত এক কমিটি পুরাতন পোর্ট কর্নওয়ালিসে উপনিবেশ স্থাপন করার পক্ষে মত প্রকাশ করার পরে ১৮৫৮ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি উপনিবেশ স্থাপন করা হয়। প্রথমবার উপনিবেশ স্থাপন করার পরে এবং পোতাশ্রয় নির্মাণ করার ফলে জাহাজগুলি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল। দ্বিতীয়বার উপনিবেশ স্থাপনের পরে ডাক্তার জে, পি ওয়াকার উপনিবেশের প্রথম সুপারিন্টেনডেন্ট হন এবং তাঁকেই আধুনিক আন্দামানের জনক বলে অভিহিত করা হয়। তাঁর সময়ে পোর্ট কর্নওয়ালিস নামের পরিবর্তে পোর্ট ব্লেয়ার নামকরণ করা হয়। কিন্তু চাত্থাম দ্বীপে জলকষ্ট শুরু হওয়ায় কয়েদি উপনিবেশকে পোর্ট ব্লেয়ারের সন্নিকটে রস আইল্যান্ড দ্বীপে স্থানান্তরিত করা হয়।

১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পরে বিদ্রোহী সিপাহীদের এবং দুর্ধর্ষ আসামিদের শাস্তিদানের উদ্দেশ্যে সমুদ্রবেষ্টিত নির্জন দ্বীপে দ্বীপান্তরিত করা হতো। দ্বীপান্তরিত বন্দিরা দু’ভাগে বিভক্ত ছিল। একদল ছিল মেয়াদী দ্বীপান্তরিত যারা মেয়াদের পর বেঁচে থাকলে স্বদেশে ফেরত যেতে পারত। দ্বিতীয় দলে ছিল যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরিত বন্দি। যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরিত ব্যক্তিরা মেয়াদ শেষে (২৫ বৎসর বছর পরে) মূল ভূখণ্ডে ফিরে আসতে পারত অথবা সেখানেই বিভিন্ন কর্মে নিযুক্ত হতো অথবা স্বাধীন পেশা অবলম্বন করে জীবনের অবশিষ্ট দিনগুলি অতিবাহিত করতো।

১৮৫৮ সালের পরে শত শত বিদ্রোহী সিপাহীদের নিয়ে এসে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাদেরকে দিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে বসবাসের উপযোগী করা হয়। সেই সময়ের আন্দামান ছিল ঘন জঙ্গলে পূর্ণ এবং সারা বৎসর ধরে বৃষ্টিপাত হওয়ার দরুন মশা ও অন্যান্য কীট পতঙ্গ, সরীসৃপের আবাসস্থল। সমুদ্রের খাঁড়িগুলি ছিল কুমীরের আবাসস্থল। মূল ভূখণ্ডে আত্মীয়-পরিজন থেকে বিভাজিত হয়ে নিজেদের জাত, ধর্ম বিসর্জন দিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অমানুষিক কায়িক পরিশ্রমে বীতশ্রদ্ধ হয়ে বন্দী বিদ্রোহীরা ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে ভাবলেন আন্দামান থেকে ক্রমাগত উত্তর দিকে পথ চলা শুরু করলে তারা হয়তো বা ব্রম্ভদেশে পৌঁছে যাবেন এবং সেখানে তারা ব্রম্ভদেশের রাজার নিকট সৈনিক হিসেবে কাজ করবেন। কিন্তু তাদের ধারণা ছিল না যে আন্দামান সমুদ্রবেষ্টিত এলাকা। রস আইল্যান্ড থেকে সাঁতার দিয়ে সমুদ্র পার হয়ে বিপরীত দিকের গভীর জঙ্গলে এক মাস ধরে হাঁটার সময়ে আদিম জনজাতিদের হাতে তীর বিদ্ধ হয়ে কিছু সিপাহী প্রাণ হারায় এবং অবশিষ্টেরা ইংরেজের অনুসন্ধান দলের হাতে ধরা পড়ে। যারা ধরা পড়েছিল তাদেরকে বন্দী উপনিবেশে ফেরত এনে গাছের ডালে দড়ি টাঙ্গিয়ে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়। এইভাবে স্বাধীনতাকামী সিপাহীদের মুক্তির স্বপ্ন শেষ হয়ে জীবনদীপ নির্বাপিত হয়। প্রথম বৎসরে যে বন্দীরা এসেছিল তার মধ্যে ১৯১ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় এবং ১৭৫ জন বন্দী যারা পালিয়ে গিয়েছিল তাদের মধ্যে কিছু বন্দী আদিম জনজাতির শরাঘাতে মারা যায় এবং অবশিষ্টরা হয় সমুদ্রে ডুবে মারা যায় অথবা ফাঁসিকাষ্ঠে প্রাণ দেয়। বন্দীদের দিয়ে গভীর জঙ্গল কেটে উপনিবেশ স্থাপনের উপযোগী করা হয়। 

Andaman Jail

ইংরেজ প্রশাসন ১৮৯৭ সালের Reformatory schools Act, 1897 আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ১৫ থেকে ১৭ বৎসরের পাঁচজন কিশোরকে এখানে কারারুদ্ধ করে। সর্বনিম্ন বয়সী বন্দী হরিপদ ভট্টাচার্যের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বৎসর। যে সকল বন্দীদের আচরণ জেল [Andaman Cellular Jail] কর্তৃপক্ষের মতে সন্তোষজনক ছিল তাদের চিঠিপত্র লেখার ও পাওয়ার অধিকার থাকতো, তবে বন্দীদের যে চিঠি গুলি কারা অভ্যন্তর থেকে বাইরে যেত বা বাইরে থেকে আসতো সেগুলি জেল [Andaman Cellular Jail] কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা করতেন। তদানীন্তন ভারতবাসী এমনকি আজও সবার কাছে দ্বীপান্তর ও কালাপানির জীবন কাহিনী এক বিবর্ণ জীবনের দিনলিপি। সিপাহী মহাবিদ্রোহের সিপাহীদের দ্বীপান্তরের পরেই বৃহত্তর ভারতবর্ষে সংগঠিত অন্যান্য বিদ্রোহীদের দ্বীপান্তরের পালা শুরু হয়।

ওয়াহেবি বিদ্রোহ – উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে আঠারোশো সাতান্ন সালের কিছু পরেই ওয়াহেবি সম্প্রদায়ের বিদ্রোহ উল্লেখযোগ্য। ভারতের ব্রিটিশ সরকার ওয়াহেবি বিদ্রোহীদের আন্দামানে দ্বীপান্তরিত করে এবং ওয়াহেবিরা আন্দামানের কয়েদী উপনিবেশের দুঃস্বপ্নময় জীবনে প্রবেশ করে। ওয়াহেবি বিদ্রোহী এবং আফ্রিদি পাঠান কয়েদী শের আলি খান একজন ব্রিটিশ অফিসার কর্তৃক দ্বীপান্তরে দণ্ডিত হয়ে আন্দামানে আসেন। এই শের আলি খান ওয়াহেদি বন্দীদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড মেয়ো ১৮৭২ সালে যখন আন্দামানের চাত্থাম দ্বীপের বিপরীতে ব্যাম্বুফ্ল্যাটের জনবসতি থেকে কিছুটা দূরে মাউন্ট হ্যারিয়েট পাহাড়ের পাদদেশে হোপটাউন জেটিতে এসেছিলেন তখন কাছাকাছি লুকিয়ে থাকা শের আলি খান নিরাপত্তা কর্মীদের বেষ্টনীর মধ্যেই লর্ড মেয়োকে ছুরিকাঘাতে আহত করেন এবং সেখানেই তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন। উপনিবেশ কর্তৃপক্ষের লোকজন অনেক চেষ্টায় পলাতক শের আলিকে নিকটবর্তী জঙ্গল থেকে ধরে আনে এবং তাকে রস আইল্যান্ডের ফাঁসির মঞ্চে ফাঁসি দেওয়া হয়।

মহারাষ্ট্র বিদ্রোহ

বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে মহারাষ্ট্রে ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবের সূচনা করেন। তার বহু অনুগামীকে ব্রিটিশ সরকার আন্দামানে দ্বীপান্তরিত করে। পরবর্তীকালে স্বাধীনতা সংগ্রামী বিনায়ক দামোদর সাভারকর বিপ্লবের উত্তরসূরি নেতা হিসেবে বিদ্রোহকে এগিয়ে নিয়ে যান। ব্রিটিশ কর্তৃক বীর সাভারকার ও তার কিছু সহযোগীকে আন্দামানে দ্বীপান্তরিত করা হয়।

মনিপুরী বিদ্রোহ

১৮৯১ সালে মনিপুরী বিদ্রোহে বহু ব্রিটিশ অফিসার মণিপুরীদের হাতে প্রকাশ্যে নিহত হন। বিদ্রোহ দমনের পরে বিচারে ব্রিটিশ অফিসারদের হত্যার দায়ে অনেক মনিপুরী বিদ্রোহীর মৃত্যুদণ্ড হয় এবং বহু বিদ্রোহীকে দ্বীপান্তরিত করে আন্দামানে কয়েদী উপনিবেশে নিয়ে আসা হয়।

গদ্দার বিদ্রোহ

প্রতিষ্ঠিত পাঞ্জাবীরা কানাডা, আমেরিকা, চীন ও জাপান থেকে যে বিদ্রোহের সূচনা করেন সেই বিদ্রোহের নাম গদ্দার বিদ্রোহ। বিদ্রোহ দমন করার জন্য ব্রিটিশ বহু গদ্দার বিদ্রোহীকে গ্রেফতার করে এবং প্রথম লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করে আন্দামানে দ্বীপান্তরিত করে।

রুম্পা কৃষক বিদ্রোহ

১৮৭৮-৭৯ সালে দক্ষিণ ভারতের গোদাবরী জেলার কৃষকরা ব্রিটিশ বিরোধী বিদ্রোহের সূচনা করেন এবং তার ফলে কৃষকেরা নিজেদের শাসন ব্যবস্থা চালু করেন। এই বিদ্রোহ ব্রিটিশরা দমনমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বহু কৃষককে শাস্তি স্বরূপ দ্বীপান্তরিত করে। এরপরে ১৯২৪ সালে দ্বিতীয় রুম্পা কৃষক বিদ্রোহ হয় সিতারামা রাজ্জুর নেতৃত্বে। পশ্চিম গোদাবরী জেলা ও বিশাখাপত্তনম জেলায় বিদ্রোহ প্রবলভাবে বিস্তৃত হয়ে ওঠে। ১৯২৪ সালে সিতারামা রাজ্জু ও তার বেশ কিছু অনুগামী ব্রিটিশের সাথে বীরত্ব সহকারে লড়াই করে শহীদের মর্যাদা লাভ করেন। বহু কৃষক যোদ্ধা গ্রেফতার হন এবং বিচারে তাদেরকে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরে দণ্ডিত করে ব্রিটিশ সরকার আন্দামানে নিয়ে আসেন।

বার্মা কৃষক বিদ্রোহ

এই বিদ্রোহ থারাওয়াদি কৃষক বিদ্রোহ নামে পরিচিত। ১৯২৮ সালে ডাক্তার সয়া সেনের নেতৃত্বে General council of Burmese Association ব্রিটিশের সঙ্গে সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করে। ১৯৩০ সালে ডিসেম্বর মাসে ডাক্তার সয়া সেন সমগ্র ব্রম্ভদেশে বিদ্রোহের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে ডাক্তার সয়া সেন ব্রিটিশ কর্তৃক বন্দি হন এবং ব্রিটিশরা তাকে ফাঁসি দেয়। এরপরে বহু সংগ্রামী কৃষককে ব্রিটিশরা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়ে আন্দামানে পাঠিয়ে দেয়।

মোটা বিদ্রোহ

দক্ষিণ ভারতের মালাবার উপকূলে মোপলা জনজাতিরা খিলাফত আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রকাশ্যে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। মোপলাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি চাড়া দিয়ে ওঠার পরে তাকে হাতিয়ার করে ব্রিটিশরা তাদেরকে দণ্ডিত করে শর্তসাপেক্ষে আন্দামানে দ্বীপান্তরিত করে। সবার শেষে আন্দামানে দণ্ডিত হয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা সেলুলার জেলে [Andaman Cellular Jail] আসেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কতজন এখানে এসেছিলেন তাদের সংখ্যা বাদ দিলে সিপাহী বিদ্রোহ ও ব্রিটিশ বিরোধী অন্যান্য বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী কতজন আন্দামানে এসেছিলেন তার কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। কিন্তু বন্দির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যায়। যার জন্য কয়েদী উপনিবেশ স্থাপনের পরে যেখানে ১৮৫৭ সালে কয়েদীর সংখ্যা ছিল ৭৭৩ জন পরবর্তী চার দশকের মধ্যে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ১৬১০৬ জন। অর্থাৎ বিচারের নামে প্রহসন করে যত সংখ্যক বিদ্রোহী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দ্বীপান্তরিত করা যায় ততই ব্রিটিশের পক্ষে মঙ্গল।

এ্যাবারডিনের যুদ্ধের পরে ব্রিটিশরা কয়েদী উপনিবেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করে পোর্ট ব্লেয়ারের দুই প্রান্তে দুটি কামান বসায় যাতে পুনরায় আদিম জনজাতির আক্রমণ প্রতিহত করা যায়। অবশ্য এর পিছনে আরও একটি কারণ ছিল যে কয়েদীরা বিদ্রোহ করে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে তাদেরকে যাতে সহজেই কামান চালিয়ে দমন করা যায়। এছাড়াও উপনিবেশে যাতে ব্রিটিশরা ভালো ভাবে বসবাস করতে পারে তার জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ এবং ইংরেজ শাসকদের বাংলো ও বাসস্থান নির্মাণ, সৈন্যদের ব্যারাক, সরকারী বাসভবন, চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল দ্রুতগতিতে নির্মাণ করে। ভাইপার দ্বীপে ফাঁসির মঞ্চ এবং চাত্থাম দ্বীপে একটি আধুনিক কাঠ চেরাই কল নির্মাণ করে। এছাড়াও আদিম জনজাতির মানুষদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের প্রয়াসে জঙ্গল সন্নিহিত বিভিন্ন স্থানে কুটির নির্মাণ করে প্রধানত গেট আন্দামানিজদের জন্য এবং বিভিন্ন কল্যাণ মূলক কার্যক্রম পরিচালিত করে।

পূর্বেই উল্লেখ করেছি দ্বিতীয় দফায় কয়েদী উপনিবেশ চাত্থাম দ্বীপ থেকে জলকষ্টের জন্য রস আইল্যান্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম জেলখানা ও ফাঁসির মঞ্চ স্থাপিত হয়েছিল ভাইপার দ্বীপে। ভাইপার দ্বীপের নিচু এলাকা গুলি মাটি ভরাট দিয়ে সমতল করে তার উপরে ইটের দেওয়াল ও কংক্রিটের ছাদ নির্মাণ করে চারটি ছোট জেলখানা এবং একটি বড় জেলখানা তৈরি করা হয়। দ্বীপের সর্বোচ্চ অংশে লাল রং করা ফাঁসির মঞ্চ করা হয়েছিল যাতে ফাঁসির সময় দূর থেকে সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। বিদ্রোহী সিপাহিদের অসীম সাহস ও লড়াকু মানসিকতাকে বশে আনার জন্য জেলখানাতে বন্দীদের পায়ে শিকল পরানো থাকতো যাতে তারা পালিয়ে যেতে না পারে। এই শিকলের আওয়াজ বহুদূর থেকে শোনা যেত। সর্বক্ষণ পায়ে শিকল পরিয়ে রাখার জন্য তাদের পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হতো। এই অবস্থাতেও তাদের কঠোর কায়িক পরিশ্রম করানো হতো এবং যে বন্দী সেই অবস্থায় কায়িক পরিশ্রম করতে অস্বীকার করতে তাদের নির্মম ভাবে বেত্রাঘাত করা হতো অথবা অন্যান্যভাবে শাস্তি দেওয়া হতো। এছাড়াও বিনাচিকিৎসায় তাদের পায়ের ক্ষত স্থান বিষাক্ত হয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়তো অথবা মৃত্যুমুখে পতিত হত।

দীর্ঘ চল্লিশ বৎসরে বন্দীর সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়াতে, চিকিৎসার পরিকাঠামো না থাকাতে এবং পুরুষ ও মহিলা বন্দীদের একত্রে রাখা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বন্দীদের থাকার প্রতিবিধানের নিমিত্তে ১৮৯০ সালে তিন সদস্যের এক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যবস্থা উপনিবেশ কর্তৃপক্ষ অবলম্বন করে। সুপারিশ অনুযায়ী (১) মহিলা বন্দীদের পোর্ট ব্লেয়ারের এ্যাবারডিন এলাকার কাছাকাছি সাউথ পয়েন্ট এলাকাতে টিনের ছাউনি দেওয়া একটি গৃহে বন্দী করে রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল। (২) হ্যাডোতে একটি পৃথক জেলখানা স্থাপন করা হয়েছিল (৩) প্রথম ছয় মাস বন্দীদের রস আইল্যান্ডের নিকটস্থ পোর্ট ব্লেয়ারে রাখার জন্য সেলুলার জেল নামে একটি নূতন জেলখানা স্থাপনের বিশেষ প্রয়োজন অনুভূত হয়। (৪) বন্দীদের তত্ত্বাবধান করার জন্য এই সেলুলার জেলে একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ কারাধ্যক্ষ নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্রিটিশ সরকার কয়েদি উপনিবেশের অধীক্ষকে ৬০০ কক্ষ বিশিষ্ট সেলুলার জেল নির্মাণের প্রয়োজনীয় স্থান নির্বাচন এবং কারাকক্ষ নির্মাণের পরিকাঠামো তৈরির আদেশ দেন। দক্ষিণ ভারতের কান্নানোর জেলের সেলের মাপ অনুযায়ী সেলুলার জেলের কক্ষগুলি সাড়ে তেরো ফুট লম্বা ও সাড়ে সাত ফুট চওড়া করা হবে বলে স্থির করা হয়। উচ্চতা ১৫ ফুট এবং বাতাস চলাচলের জন্য মেঝে থেকে ৯ ফুট উঁচুতে এক ফুট চওড়া ও তিন ফুট লম্বা মাপ বিশিষ্ট গবাক্ষ থাকবে। প্রত্যেকটি সেলের সামনে লোহার গরাদের দরজায় একটি ‘বোল্ট’ কয়েক ইঞ্চি দূরে দেয়ালের মধ্যে এক গর্তের ভিতরে ঢুকিয়ে তালা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে যাতে বন্দীরা গরাদের ফাঁক দিয়ে কোনভাবে তালার নাগাল না পায়। কারা কক্ষগুলির সামনের দিকে চার ফুট চওড়া একটি বারান্দা থাকবে। সেলুলার জেলে বন্দীদের জন্য ৬৯৬ কক্ষ বিশিষ্ট সাতটি ডানা বা উইং থাকবে এবং এই ডানাগুলি এক কেন্দ্রস্থলে মিলিত হয়ে একটি সেন্ট্রাল টাওয়ারের সাথে যুক্ত থাকবে। তিন তলা বিশিষ্ট সাতটি উইং বা ডানাগুলি যেখানে মিলিত হয়েছে সেখানে একজন রক্ষী সেন্ট্রাল টাওয়ারের প্রতি তলার থেকে সাতটি উইংকে কড়া নজরদারিতে রাখবে। সাতটি উইংয়ের জন্য রাত্রে একজন করে মোট ২১ জন ওয়ার্ডেন তিন ঘন্টা অন্তর পালা করে পাহারাতে নিযুক্ত থাকবে। জেলখানার মূল ফটকের সামনে একজন সশস্ত্র প্রহরী এবং অপর একজন সশস্ত্র রক্ষী সেন্ট্রাল টাওয়ারের সর্বোচ্চ তলায় এবং তৃতীয় জন সশস্ত্র রক্ষী জেলখানার মূল প্রবেশদ্বারের ছাদে থাকবে যাতে সমগ্র জেলখানাটিকে কড়া নজরদারিতে রাখা যায়।

কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দুটি স্থান নির্বাচিত হয়েছিল সেলুলার জেল স্থাপনের জন্য। প্রথমটি পাহাড়গাঁও ও প্রথেরাপুরের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত যার আয়তন দৈর্ঘ্যে ১৩৫০ ফুট এবং প্রস্থে ৩৩০ ফুট। দ্বিতীয় স্থানটি হল পোর্ট ব্লেয়ারের আটলান্টা পয়েন্ট, যার দৈর্ঘ্য ৭৯০ ফুট এবং প্রস্থ ২৩১ ফুট। এই স্থানটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭৫ ফুট উঁচুতে। উপনিবেশের অধীক্ষক দুটি স্থান পরিদর্শন করে দ্বিতীয় স্থানে সেলুলার জেল স্থাপনের পক্ষে মত প্রকাশ করেন। উপনিবেশের দ্বিতীয় অধীক্ষক কর্নেল এন, এস, হর্সফোর্ড তার মত ব্যক্ত করেছিলেন যে ভূমিকম্প প্রতিরোধে তিনতলাবিশিষ্ট জেলখানার থেকে দ্বিতল বিশিষ্ট কারাকক্ষ উপযোগী। দুজন অধীক্ষকের প্রতিবেদন পাওয়ার পর কমিটির অন্যতম সদস্য ইন্সপেক্টর জেনারেল অব প্রিজন্স, ডাক্ আলফ্রেড সোয়েন লেথব্রিজ তার মতামত ব্যক্ত করে বলেছিলেন – সেলুলার জেলের স্থান নির্বাচনের ব্যাপারে আটলান্টা পয়েন্টের অবস্থান সঠিক। কমপক্ষে ৬০০ কক্ষ বিশিষ্ট বন্দীনিবাস হবে এবং এক ব্লকের বন্দী অন্য বন্দীদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে। বন্দীদের দৈনন্দিন কাজকর্ম কড়া নজরদারির মধ্যে প্রত্যেক ব্লকের সামনের মুক্ত এলাকাতে হবে। মূল প্রবেশদ্বারের থেকে সামান্য ভিতরে একটি রান্নার জায়গা থাকবে যেখানে সমস্ত বন্দীদের খাবার প্রস্তুত হবে। জেলের ভিতরে একটি ছোট আকারের হাসপাতাল থাকবে।‍ জটিল ও মুমূর্ষু রোগীদের জেলখানার বাইরে হ্যাডো হাসপাতালে চিকিৎসা হবে। জেলখানার মুখ্য দেয়ালের উচ্চতা কমপক্ষে ১৫ ফুট করা দরকার। মূল প্রবেশদ্বার এ্যাবারডিন জেটীর কাছাকাছি থাকবে।

উপনিবেশের দ্বিতীয় অধীক্ষক কর্নেল হর্সফোর্ড এবং ডঃ লেথব্রিজের পরামর্শ ও সুপারিশ মেনে ব্রিটিশ সরকার ১৮৯৩ সালে সেলুলার জেল স্থাপনের নির্মাণ কার্যের নির্দেশ দেন। ১৮৯৬ সালে নির্মাণকার্য শুরু হয়ে পরের দশ বৎসরে অর্থাৎ ১৯০৬ সালে এর নির্মাণকার্য শেষ হয়। সেই সময়ে মোট ৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৪২ টাকা ব্যয় করে সাত ডানাওয়ালা ত্রিতল বিশিষ্ট এই জেলখানা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে মাত্র ৩৬ বৎসর পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান কর্তৃক আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দখল করার পরে জেলখানার দুটি ডানাকে ভেঙে সেখানে জাপানি সৈন্যদের থাকার ব্যারাক তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৯৫৬ সালের পরে আন্দামান প্রশাসন আরও দু’টি ডানাকে ভেঙে সেখানে পন্ডিত গোবিন্দ বল্লভ পন্থের নামানুসারে একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেন। বর্তমানে সেলুলার জেলের অবশিষ্ট তিনটি ডানার কয়েদী কক্ষগুলি অবশিষ্ট আছে। সাতটি উইংয়ে কিন্তু কারাকক্ষের সংখ্যা সমান ছিল না। একটি উইংয়ে সর্বাধিক কারাকক্ষ ছিল ১৫০ এবং সর্বনিম্ন ৬০টি। জেলখানার মূল প্রবেশদ্বারের ডান দিকে মুক্ত পরিসরে বন্দীদের ফাঁসি দেওয়ার তিনটি মঞ্চ ছিল। প্রত্যেক উইংয়ের সামনের প্রাঙ্গণে ১৫ফুট x ১.৫ ফুট মাপের চৌবাচ্চাতে জেলের বাইরের একটি বড় চৌবাচ্চা থেকে জল এনে ভর্তি করা থাকত বন্দীদের ব্যবহারের জন্য। বড় চৌবাচ্চাটি পাম্পের সাহায্যে সমুদ্রের জলে ভর্তি করে রাখা হতো। প্রতি ছয়জন বন্দীর জন্য একটি করে পায়খানা ছিল যেখানে মলত্যাগের জন্য পাঁচ মিনিট সময় বরাদ্দ ছিল। ফাঁসির মঞ্চের কাছে দুটি পৃথক রান্নাঘর ছিল হিন্দু ও মুসলমানদের জন্য।

আন্দামানে যেয়ে যেভাবে এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পেরেছি সেগুলি পাঠকের কাছে উপস্থাপনা করলাম।

তথ্যসূত্র

1. Cellular Jail- The Indian Bastille by S.P.P.K.Naidu

2. The Cellular Jail – The National Memorial by G.S.Pandey

3. Cellular Jail- Cells beyond cells by Priten Roy and Swapnesh Choudhury

4. আন্দামানের সেলুলার জেল – শ্রী রতন চন্দ্র কর

দেবী প্রসাদ ত্রিপাঠী | Debi Prasad Tripathy

History of Bengali Poetry | কবিতা কি ও কেন এবং তার ইতিহাস

Tebhaga Movement | বাংলায় “তেভাগা আন্দোলন” এবং সলিল চৌধুরীর গণসঙ্গী

Traditional Seth Family Durga Puja | চন্দননগরের ঐতিহ্যবাহী হরিহর শেঠ পরিবারের দুর্গাপূজা

New Bengali Article 2023 | কবিতার অন্তরাত্মা

সেলুলার জেল | সেলুলার জেলের বন্দিদের তালিকা | আন্দামানে মুসলিম জনসংখ্যা | আন্দামান বাঙালি | আন্দামান দ্বীপের রহস্য | কালাপানি কি | পোর্ট ব্লেয়ার কোন দ্বীপে অবস্থিত | বাংলাদেশ থেকে আন্দামান | আন্দামানের কালাপানি সেলুলার | কুখ্যাত সেলুলার জেলের কথা | পোর্ট ব্লেয়ার | আন্দামান ও নিকোবর রহস্য | কালাপানির লৌহকপাট | সাভারকার ও গান্ধী | আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের জাপানিদের দখল | আন্দামানে ২০ টাকার নোটের দ্বীপে | আন্দামানের আদিবাসীদের স্বাধীনতা যুদ্ধ | আন্দামানের শীর্ষস্থানীয় পর্যটন | নির্বাসিতের আত্মকথা | বাংলা প্রবন্ধ | বাংলার লেখক | প্রবন্ধ ও প্রাবন্ধিক | সেরা প্রবন্ধ ২০২২ | শব্দদ্বীপ | শব্দদ্বীপের লেখক | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

Andaman Cellular Jail | andaman cellular jail inside | andaman cellular jail prisoners list | andaman nicobar jail | andaman nicobar jail name | andaman cellular jail freedom fighters | what is kala pani punishment | Cellular Jail in Port Blair | Bengali Poetry | Bangla kobita | Andaman Cellular Jail Prisoners List | Andaman Cellular Jail Video | Andaman Cellular Jail Documentation | Andaman Cellular Jail Article | Andaman Cellular Jail PDF | Andaman Cellular Jail News | Andaman Cellular Jail photo | Andaman Cellular Jail punishment | Andaman Cellular Jail ticket | Andaman Cellular Jail timings | Andaman Cellular Jail fighters | Andaman Cellular Jail light | Andaman Cellular Jail history | Andaman Cellular Jail list | trending article Andaman Cellular Jail | Andaman Cellular Jail security | Andaman Cellular Jail guard | Andaman Cellular Jail food | Andaman Cellular Jail story | Poetry Collection | Book Fair 2022 | Bengali Poem | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Poet | Story | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Article 2022 | Port Blair | | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment