Inspector | ইন্সপেক্টর | New Bengali Story 2023

Sharing Is Caring:
Inspector

ইন্সপেক্টর – শওকত নূর [Inspector]

পরিদর্শনে যাবার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই পরিদর্শক সাহেব স্কুলটি সম্পর্কে নানা কথা শুনে আসছিলেন। বিশেষ করে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের উশৃঙ্খল আচরণের কথা। বিষয়টি তাকে কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছিল। অবশেষে তিনি স্কুলটিতে সংবাদ পাঠালেন যে তিনি পরবর্তী বৃহস্পতিবার সেটি পরিদর্শনে যাচ্ছেন।

একেবারে প্রত্যন্ত গাঁয়ের স্কুল। ছাত্রছাত্রীরা পিছিয়ে পড়া ধরনের হবে, তা-ই স্বাভাবিক। স্কুলে লেখাপড়া করলেও গাঁয়ের নিরক্ষর মানুষদের জীবন যাত্রার নানাবিধ পশ্চাৎমুখী বিষয়াদিই সিংহভাগ ছাত্রছাত্রীর ওপর প্রভাব বিস্তার করে আছে। অবশ্য বাংলা ‘পরিদর্শক’ শব্দটির চেয়ে ইংরেজি ইন্সপেক্টর শব্দটি তাদের মধ্যে বিশেষ প্রচলিত, কৌতূহলোদ্দীপক ও উৎসাহব্যঞ্জক। বলা বাহুল্য, শহরাঞ্চলেও উল্লিখিত শব্দঘটিত বিষয়টি প্রায় অনুরূপ। বাংলার তুলনায় ইংরেজি শব্দটিই যেন সহজ, প্রাঞ্জল ।

অথচ আলোচ্য স্কুলে ইন্সপেক্টর সাহেবের আগমন উপলক্ষে গয়রহ সেই সহজ-প্রাঞ্জল গণ্য হওয়া শব্দটিরই নানা বেহাল দশা দাঁড়াল। অপারগতা ও তাচ্ছিল্য, উভয়ের সংমিশ্রণে ছাত্রছাত্রী ও স্বাক্ষর -নিরক্ষর উভয় প্রকার অভিভাবক মহলে ইন্সপেক্টর শব্দটি বহুল বিকৃত উচ্চারণের ঝড় তুলে বসল। কেউ বলতে লাগল, ইস্কুলে মেসপেট্টার সাপ আসতাছে, কেউ বলছিল, নেসপেট্টার সাফ আসতাছে, বয়স্ক রসিক গোছের কেউবা ছাত্রছাত্রীদের ডেকে বলতে লাগল, এই পোলাপান, লেইজ আলা মাস্টার বলে আইতাছে তগোর ইস্কুলেহ, ইয়া বড় ল্যাঞ্জারে, মাস্টারের কী ল্যাঞ্জার ল্যাঞ্জা প্রভৃতি।

লোক-মারফত ইন্সপেক্টর সাহেব এসব খবরও নিয়মিত পাচ্ছিলেন। যাই হোক, তিনি নির্ধারিত দিনে পরিদর্শনে যাবার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে লাগলেন। পরিদর্শনের দুদিন আগে স্কুলের প্রধান-শিক্ষক সাহেব তার সাথে দেখা করতে গেলে তাকে দিয়ে তিনি স্কুলের প্রধান সমস্যাগুলো কাগজে কলমে লিখিয়ে নিলেন। প্রধান-শিক্ষক সাহেবের লিখিত ভাষ্য অনুসারে সমস্যাগুলো হলো : ছাত্রছাত্রীর তুলনায় স্কুলঘরের পরিসর ছোট, আশেপাশের পরিবেশ নোংরা, খেলাধুলার সাজসরঞ্জাম অপ্রতুল, ছাত্রছাত্রীরা বেয়াদব – শিক্ষকদের গণ্যমান্য করে না প্রভৃতি। মুখে আমতা আমতা করে শিক্ষকদের ভালো যোগ্যতা না থাকাকেও ছাত্রছাত্রীদের গোলমালের কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেন। জবাবে পরিদর্শক সাহেব তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ছাত্রছাত্রীরা আপনাকে ভয় পায় তো? গণ্যমান্য করে?

জি স্যার, জি স্যার, তা খুবই করে।

আপনাকে গণ্যমান্য করে, অথচ শিক্ষকদের গণ্যমান্য করে না, কেমন দাঁড়ায় ব্যাপারটা?

স্যার, ওই যে বললাম, শিক্ষকরা যোগ্যতায় খুব একটা চৌকশ না, তাই–

আচ্ছা, ঠিক আছে, দেখা যাবে। দাঁতে দাঁত চাপলেন পরিদর্শক সাহেব।

পরের বৃহস্পতিবার যথারীতি স্কুল পরিদর্শনে এলেন পরিদর্শক সাহেব। প্রধান-শিক্ষক সাহেবকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখলেন সব। গোটা স্কুলটি যেন এখন সীমাহীন নীরবতায় ডুবে আছে। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর মাথা নিচু। কেউ টু শব্দটি পর্যন্ত করছে না। এমন শান্ত ভদ্র ছাত্রছাত্রী যেন জগতে আর নেই। পরিদর্শক সাহেব প্রধান-শিক্ষক সাহেবের কক্ষে যতক্ষণ বসলেন, তিনি খেয়াল করলেন, শিক্ষকরা কী চমৎকারভাবে ক্লাস নিচ্ছেন। সর্বত্র পিনপতন নীরবতা। বিন্দুমাত্র হৈ-হুল্লোড়ের আভাস এলো না কোনও শ্রেণীকক্ষ থেকে। পাঠদান, পাঠ গ্রহণের অনুপম এক পরিবেশ বিরাজ করছে।

পরিদর্শন কাজ শেষে মোটরসাইকেলে চেপে বিদায় নিলেন পরিদর্শক সাহেব। মনে বেশ কিছু খটকা তার রয়েই গেল। চিন্তিত মনে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তিনি। কিছুদূর পথ অতিক্রম করে এসে তিনি মোটর সাইকেল এর বাঁক ঘুরিয়ে তার এক পুরনো ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে উঠলেন। সেখানে হালকা আপ্যায়ন ও খানিক বিশ্রামের ফাঁকে বন্ধুর সাথে কিছুক্ষণ আলাপচারিতায় লিপ্ত হলেন।

আধো ঘন্টা পর বন্ধুর বাড়ি থেকে ছদ্মবেশে বেরিয়ে স্কুলটির পাশ দিয়ে হাঁটতে লাগলেন পরিদর্শক সাহেব। পরনে পুরনো জীর্ণ লুঙ্গি, গায়ে হাফহাতা ময়লা গেঞ্জি, গলায় গামছা ঝোলানো, হাতে কাস্তে। এরই মধ্যে স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। ছাত্রছাত্রীরা এলোপাথাড়ি ছুটছে। তিনি লক্ষ্য করলেন কী একটা বিশেষ হই-হট্টগোল লেগেছে স্কুল ও তার আশপাশের পরিসর জুড়ে! চেঁচামেচিতে যেন কান ফেটে যাবে। স্কুল ছুটিতে হই-হট্টগোল, চেঁচামেচি থাকেই, কিন্তু এ চেঁচামেচিতে ভিন্ন কিছু আছে। সবার মুখে মুখে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে একই তাচ্ছিল্য সুর: আইছিল মেসপেট্টার সাপ ! লেইজআলা মাস্টার! ইয়া বড় ল্যাঞ্জা গো! কী ল্যাঞ্জার ল্যাঞ্জা!

ছোটরা কণ্ঠগুলোকে এমন করছিল যেন তারা ছাত্রজীবনের বয়সটা বহুদূর পেছনে ফেলে এসেছে। অনেকে সম্মিলিত কণ্ঠে শ্লোক হাঁকছিল –

লেইজআলা মাস্টার

ছুঁইড়া মারো ডাস্টার।

ও-ই লেইজআলা মাস-টার

মারো ছুঁইড়া ডাস্টার!

চারপাশের পথগুলোতে ছাত্ররা যেমন শব্দগুলো উচ্চারণ করছিল, তেমনি করছিল অভিভাবকরা, পান খাওয়া মুখে হেসে হেসে তাদের সাথে তাল মেলাচ্ছিলেন দু-একজন শিক্ষকও। পরিদর্শক সাহেবের চেহারাছবি নিয়েও হচ্ছিল নানা ব্যঙ্গ-কথন। পরিদর্শক সাহেব অচেনা অজ্ঞাত ব্যক্তির ন্যায় মাথা নিচু হেঁটে ছেড়ে গেলেন জায়গাটি।

সপ্তাহ খানেক পর পরিদর্শক সাহেব প্রধান-শিক্ষক সাহেবকে এক চিঠি পাঠালেন এই মর্মে যে তিনি একজন নতুন শিক্ষকের দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য তাকে তার স্কুলে ক্লাস গ্রহণের জন্য পাঠাচ্ছেন। তাকে যেন ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। উল্লিখিত শিক্ষক তার নিজের চেনাজানা কেউ নয়, ওপরের চাপে বাধ্য হয়ে দু তিন দিনের জন্য তাকে ক্লাস নিতে পাঠাচ্ছেন। তিনি বা ওপর মহল যে তাকে ক্লাস নেয়ার উদ্দেশ্যে সেখানে পাঠাচ্ছেন, প্রধান-শিক্ষক সাহেব যেন সে বিষয়টি শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ সকল মহলে সম্পূর্ণ গোপন রাখেন।

পরের সপ্তাহে স্কুলটিতে যথারীতি আধুনিক বেশভূষার নবাগত এক নবীন শিক্ষকের আবির্ভাব হলো। শিক্ষক প্রথমেই প্রধান-শিক্ষক সাহেবের সাথে দেখা করে নিজের পরিচয় দিলেন। প্রধান-শিক্ষক সাহেব তাকে শীতল অভ্যর্থনায় গ্রহণ করে খানিক বাদে ক্লাসে ক্লাসে নিয়ে গিয়ে দায়সারা গোছের পরিচয় করিয়ে দিলেন।

নতুন শিক্ষক পড়ানোর উদ্দেশ্যে একে একে বেশ কটি ক্লাসে গিয়ে লক্ষ্য করলেন, সেগুলো এত বেশি গোলমেলে যে গ্রাম্য হাটবাজারও বুঝি সে গোলমালের কাছে হেরে যাবে। তার উপস্থিতি সেই নজিরবিহীন গণ্ডগোলে সামান্যতম প্রভাবও ফেলছিল না। তিনি এক ক্লাস থেকে বেরিয়ে আরেক ক্লাসে যেতেই পেছন পেছন প্রধান শিক্ষক সাহেব সেই ক্লাসে হুড়মুড় ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের কৌতুকপূর্ণ মুখাবয়বে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তিনি কেমন পড়িয়ে গেলেন। প্রধান-শিক্ষক সাহেবের মুখাবয়বের দিকে লক্ষ্যপাত করে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী এক বাক্যে চেঁচিয়ে বলে যাচ্ছিল, ভালো না স্যার! ভালো পড়ায় না মোটেও।

ওনাকে কেমন শিক্ষক মনে হলো?

উনি ভালো শিক্ষক না, স্যার! কী পড়ায় বুঝা যায় না!

সত্যি বলছো সকলে?

জি-ই, ছ্যা-ড়! তিন সত্যি!

অকে, অকে, বসো সকলে, বসো।

জি-ই ছ্যা-ড়!

প্রধান-শিক্ষক সাহেব ছাত্রছাত্রীদের মন্তব্যের সাথে রহস্যময় মাথা নেড়ে নেড়ে বিড়বিড় করে উচ্চারণ করছিলেন, শিক্ষকতায় যোগ্যতা একটা ব্যা-পা-র! থাকা চা-ই তা –!

নবাগত শিক্ষক এবার সর্বশেষ ক্লাসটিতে এসে দাঁড়িয়েছেন। স্কুলের সবচেয়ে বড় ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস এটি। এটিতে এসেই তিনি খেয়াল করলেন ছাত্রছাত্রীরা যেমন খুশি তেমন আচরণ করছে। তিনি ঐকান্তিক উপস্থাপনায় অনেক করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেন। কিন্তু নিষ্ফল। কে শোনে কার কথা? তার প্রতি ন্যুনতম মনোযোগও তারা কেউ দিচ্ছে না। কেউ হাত পা নাড়াচ্ছে, কেউ গা মাথা চুলকাচ্ছে, কেউ হাত ধরাধরি করছে, একে অপরকে ঠেলা দিচ্ছে, কেউ বা কাগজ দিয়ে উড়োজাহাজ বানিয়ে ওড়াবার চেষ্টা করছে ।

কিছুক্ষণ চুপচাপ লক্ষ্য করার পর শিক্ষক জোরেশোরে বলে উঠলেন, প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আমি তোমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, প্লিজ, এদিকে মনোযোগ দাও, সবাই শোনো আমার কথা। আমি গুরুত্বপূর্ণ কিছু পড়াতে এসেছি তোমাদের,নিশ্চয়ই আমি ভালো পড়াব। আগে আমার পরিচয়টা দিই।

শোনো—–

কেউ কোন ভ্রুক্ষেপ করল না। শিক্ষক নিজের নাম পরিচয় নিয়মতান্ত্রিক ঘোষণা করলেন। তারা তেমনই রইল। এবার শিক্ষক ব্যাগ হাতড়ে কতগুলো রঙিন ছবি বার করলেন। নানা প্রকারের ফুলের ছবি। ছবিগুলোসহ বোর্ড বরাবর উঁচিয়ে বললেন, এই যে দেখো সবাই। আর তখনই একদল ছাত্রছাত্রী পেছন থেকে হো হো করে হেসে উঠল। তারা বলল, ফুল! হাঃ হাঃ হাঃ! ফয় রস্যুকারে ফু, ল, ফুল! এ আবার পড়ানোর কী হলো?

এবার শিক্ষক ব্যাগ থেকে একটা নরকঙ্কালের ছবি বার করে বোর্ডে আটকালেন। আর সাথে সাথে সারা ক্লাস জুড়ে প্রচণ্ড অট্টহাসির রোল পড়ে গেল। শিক্ষকের মনে হতে লাগল তিনি যেন কোন ভূতের আস্তানায় এসে পড়েছেন। আরও কিছুক্ষণ তিনি তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালালেন। কিন্তু নিষ্ফল। তার মনে হতে লাগল নিজ হাতে আঁকা নরকঙ্কালের ছবিটা যেন কার্যকারিতায় লাফিং গ্যাসকে অতিক্রম করে গেছে।

শিক্ষক এবার শান্ত ধীর চিত্তে বোর্ড পেছনে রেখে টেবিল সামনে স্থির হয়ে দাঁড়ালেন। পুরো ক্লাসটি নজর করে দেখলেন। মাথা নিচু করলেন তিনি। মাথা থেকে হ্যাটটি নামিয়ে সন্তর্পণে টেবিলের ওপর রাখলেন। ওপরে তাকালেন। অট্টহাসিগুলো যেন দ্বিগুণ হলো। এবারে তিনি নাকের নিচ থেকে আলগা গোঁফটি একটানে খুলে ফেললেন। হাসি একইভাবে চলল। এরপর তিনি থুতনিতে টান দিয়ে ফ্রেঞ্চকাট আলগা দাড়িটি খুলে ফেললেন। পকেট থেকে চশমাটি নিয়ে দ্রুত পরে ফেললেন চোখে।

এখন নিস্তব্ধতা। তামাম ক্লাসটি যেন সিনেমা পর্দায় হঠাৎ আটকে যাওয়া নির্বাক স্থিরচিত্র হয়ে গেছে। শিক্ষক পুরো ক্লাসে দৃষ্টি ঘোরালেন। প্রতিটি মাথা নিচু। এক দুজন যারা সাহস করে মাথা তোলার চেষ্টা করল, তাদের চোখে ভয়ার্ত চাউনি। তারা পরম বিস্ময় ভয়ে দেখছে তাদের সামনে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন, তিনি আর কেউ নন, সেদিনের পরিদর্শনে আসা সেই পরিদর্শক। সেই বিশেষ চেহারা ছবি, থুতনির গোল কালো দাগ, গলায় ঝোলানো আইডিতে নাম পদবী লেখা। ত্বরিত মাথা নামিয়ে তারা ফিসফিস করে ইন্সপেক্টর শব্দটি উচ্চারণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। পরিদর্শক সাহেব লক্ষ্য করলেন ভয়ে সবাই কাঁপছে। তিনি গলাখাঁকারিতে বললেন, প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ,কী হলো তোমাদের? হঠাৎ এভাবে নীরব হয়ে গেলে সবাই! মাথা তোলো তোমরা।

কেউ কেউ মাথা তুলে তাকালেও তাৎক্ষণিক দৃষ্টি নামিয়ে ফেলল।পরিদর্শক সাহেব একটু জোরেশোরে বললেন, এত ভয়ের কী আছে? সেই একই তো মানুষ আমি, যে একটু আগে তোমাদের চুপ রাখতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে আসছিলাম। তোমরা ভ্রুক্ষেপ করোনি। সেই মানুষ, সেই হাত পা মন মস্তিষ্ক। এখন কী এমন ঘটল এমন ভয় করছো আমাকে? ভয় পাচ্ছ, নাকি অন্য কোনও হেতু?

স্যার, ভয়! একজন ছাত্র সাহস করে দাঁড়িয়ে বলল।

অন্যদের কী? সবার কি একই কারণ?

জি স্যার। সমবেত কাঁপা কণ্ঠে কজন বলল।

না না,ভয়ের কিছু নেই। এই আমি আর কিছুক্ষণ আগের আমিতে মৌলিক কোন পার্থক্যই নেই। যা কিছু পার্থক্য তা গৌণ মামুলি বেশভূষায়। কিন্তু একই উদ্দেশ্য দুই আমিতে। তা হচ্ছে তোমাদের পড়াতে চাওয়া। নাকি তোমাদের কাছে বিশেষ কোন পার্থক্য আছে বলে তোমরা গণ্য কর?

জি স্যার, আছে। একজন বলল।

কী তা?

স্যার, আপনি ইন্সপেক্টর!

তার মানে আমি যখন ইন্সপেক্টর, তখন তোমরা আমাকে ভয় ও সম্মান করো, আর যখন আমি সাধারণ শিক্ষক, তখন ভয় সম্মান কোনটিই তোমাদের তরফ থেকে নেই । ঠিক বলেছি কি না?

জি স্যার, না স্যার –। আমতাআমতা করল কজন।

আসলে কিসে ভয় পাও তোমরা ? মানুষের শক্তি, ক্ষমতা,পদ পদবীকে- নাকি তার নীতি, নৈতিকতা, জ্ঞানগরিমা ,আদর্শ- যোগ্যতাকেও?

কেউ কোন কথা বলল না। পরিদর্শক সাহেব বলে চললেন, যিনি জ্ঞান দেবেন তার শক্তি, ক্ষমতা কতদূর কী, তারচে’ তার জ্ঞানগরিমা কতদূর কী সেটির বিবেচনাই কি মুখ্য নয়? আর সেই জ্ঞান গ্রহণের জন্য যে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিবেশ প্রয়োজন তা তৈরিতে ন্যূনতম আগ্রহ, সদিচ্ছা তোমাদের নেই। সত্যিকার অর্থে মানুষকে বশের জন্য জ্ঞানই প্রধান হাতিয়ার। কারণ, জ্ঞানগরিমা বলেই মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব। অন্য জীবের ওপর জ্ঞান-হিতোপদেশ কার্যকর হয় না বলেই তাদের বশে প্রয়োজন পড়ে শক্তি, কৌশল, ক্ষমতার। আর মানুষের শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যই হচ্ছে অন্য জীব থেকে নিজেদের পৃথক করা। এক্ষেত্রে ঐকান্তিক ইচ্ছা প্রচেষ্টাই মুল চাবিকাঠি। যেকোনো মূল্যে অস্তিত্বে তা জাগাতে হবে।

এটুকু বলে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেন ইন্সপেক্টর সাহেব। পেছনে তখন পিনপতন নীরবতা। হেঁটে মাঠ পেরোবার ফাঁকে তিনি ভাবলেন, স্কুলটিতে খুব শীঘ্রই তিনি আবার পরিদর্শনে আসবেন। কারণ, তিনি পরিদর্শক।

শওকত নূর | Shawkat Noor

Living next to tiger | বাঘের পাশে বাস করা | 2023

Mahagai | মহাগাই – শওকত নূর | 2023

The legend of Jagannath | জগন্নাথের কিংবদন্তি

নির্যাতিতা রহিমারা | Bengali Article 2023

ইন্সপেক্টর | ইন্সপেক্টর এর বাংলা অর্থ | সাব ইন্সপেক্টর | ইন্সপেক্টর কি | পুলিশ ইন্সপেক্টর গ্রেড | ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ | ইন্সপেক্টর রনি | সাব-ইন্সপেক্টর পুলিশ সার্জেন্ট | সাব ইন্সপেক্টর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি | স্কুল ইন্সপেক্টর | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২২ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২২ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

Inspector Definition & Meaning | Inspector | Detective Inspector salary | Police inspector meaning | Sub Inspector Recruitment 2023 | Video suite inspector | Pro-Inspector | Post Inspector | App Inspector | The Inspector window | inspector police | inspector salary | inspector exam | inspector general of police | inspector meaning in hindi | inspector synonym | inspector job | inspector movie | Page Inspector | Commerce Inspector | DMARC Inspector | Text Inspector | 3454 Inspector Jobs And Vacancies | Node Inspector | CCL Recruitment 2023 | Income Tax Recruitment 2023 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment