High Trend Bangla Kobita | Shabdodweep Bengali Poetry

Sharing Is Caring:

High Trend Bangla Kobita – Suvasri Roy

যমুনাদি – শুভশ্রী রায়

আঁচলে ক্লান্তি বেঁধে
সাড়ে নটা পার হ’য়ে বাড়ি ফিরত যমুনাদি,
পরপর অনেককে পড়িয়ে বাড়ি এসে রান্নার এটা ওটা,
সস্তার চটির তলায় ভেঙে-ভেঙে যেত নিজের ঘর বাঁধার স্বপ্ন
প্রতি দিন আরো দূরে যৌবনের স্বাভাবিক ডাক…

বাড়িতে ও বাইরে সব সময় হাসিমুখে
শাড়ি গায়ে জড়ানো,
পুরনো ফ্রেমের চশমায় জীবনের ফ্রেমে
যমুনাদি এখনো ঝকঝক করে,
তেত্তিরিশ বছর দেখা হয়নি
আগামী তেত্তিরিশেও হবে না,
তবু প্রাথমিক ব্যাকরণ বই, ইতিহাসের বই,
সরল অঙ্ক ঘিরে ঘিরে সত্য থেকে বাস্তব হয়
হাজার হাজার যমুনাদি, আজও।

মায়া বন্ধন – শুভশ্রী রায়

যে সব আকর্ষণের পোশাকি নাম ভালোবাসা
তাদের ভেতর ঢুকে যাই, দেখি
কোথাও না কোথাও আঁকড়ে ধরে বাঁচার একটা কাহিনী আছেই
আর অবিশ্বাস, ছদ্ম অনুভূতি, কপটতা
এবং অনেকখানি মায়া

হ্যাঁ মায়া,
অফুরন্ত আজীবনের মায়া,
নিজের ঘরটুকু আর দশবিশটা গয়না, চওড়া খাট
এমন কী নিজের ছায়াটির জন্যও মায়া অনন্ত
ভালোবাসা একই সঙ্গে ছল কপট অবিশ্বাস আর মায়ার আশ্চর্য আল্পনা এঁকে
হৃদয়কে ভরাট করে,
দিনগুলোকে কখনো ধূসর কখনো উজ্জ্বল বর্ণে সাজায়,
আমরাও সমৃদ্ধ হই, কখনো বা নিঃস্ব;
ভালোবাসার মায়া বন্ধনে বাঁধা পড়ি,
হাজার এক বিভিন্ন ধ্বনিতে আমাদের হৃদয়কে
সতত বাজায় ভালোবাসা।

ফুটপাথে – শুভশ্রী রায়

ফুটপাথও লালন করতে জানে
এমন প্রশিক্ষণ যে যতটুকু হামাগুড়ি সব ফুটপাথে
টলমল করে যারা হাঁটে রাস্তায় নামে না তারাও,
যদিও পরিচিতির সনদ নেই তবু
সূর্য যথেষ্টর বেশি আদর করে ফেলে;

সোহাগে, অপুষ্টিতে, আবর্জনায় ভরে ওঠে ফুটপাথ সংসার
ছুরির ফলার মতো চকচকে রাগ নিয়ে
লুকনো ক্ষিদে সমেত রাষ্ট্রকে অভিশাপ দিতে দিতে
অর্বাচীন হাঁড়ি উপচে পড়ে মোটা দানার অন্নে,
ভাতের গন্ধে বেঁচে থাকার আশ্বাস
কখনো কখনো নিজে চুরি হয়ে গিয়েও
মা বাছাদের জন্য ঠোঙায় করে অমৃত নিয়ে আসে;
কান ঘেঁষে পালিয়ে যায় উন্নয়নের গ্রাফ।

বিরহ – শুভশ্রী রায়

স্বপ্নেরা অসত্য নয়,
বিভ্রান্ত অস্তিত্বের লেখা কাহিনী,
তেমন তীব্র হলে ঘোর অমাবস্যাতেও চাঁদের সন্ধান পেয়ে যাবে,
কখনো কখনো সব ঠিকঠাক;
ভুলের আশ্চর্য পাখায় যাপনের উড়ান অন্য সময়…

প্রকৃতি জানে প্রেম,
সে বিরহ অনুভব করে
চাঁদকেও একেক সময় অশ্রুতে ধুয়ে নিতে হয়,
পুরনো দিনের কাহিনীকে হৃদয়ের স্পন্দন বাজায়;
ভালোবাসার গল্প অসম্পূর্ণ হয়েও বইতে থাকে,
জ্যোৎস্নাপ্রবাহ তাকে ছুঁয়ে দিলে
অমর বিরহ আকাশের রুপালি পর্দায় ধারাবাহিক।

অসুখ – শুভশ্রী রায়

দিনগুলো কষ্ট করে শ্বাস কেড়ে নেয়,
রাতগুলো বিনা ঘুমে অসহনীয় ভারি,
অসুখ করেছে আমার
আর এই সংসার জেদ করে রোজ
আরো আরো এঁটে বসে যাচ্ছে বুকের খাঁচায়,
আমি নিশ্বাস নিলে সে নেবে
নাহলে অভিমান করে থমথমে মুখ নিয়ে
পরবর্তী হেডলাইনের শোক সমেত
ঢুকে পড়ে চোখের ভেতর

অসুখ কাছে এসেছে আমার,
হে জগৎ, আরোগ্য দাও,
আরো কটা দিন যেমনতেমন করে বাঁচি,
ব্যর্থতার সংজ্ঞা হয়ে ঝুলে থাকি
অদৃশ্য কোনো প্রশ্নচিহ্ন থেকে

হে জগৎ, মৃত্যুর সঙ্গে লুকোচুরি এখনো
চলুক কিছু দিন,
আরো কিছু দিন রক্তকে কামনায় ক্রোধে টকটকে উষ্ণ রেখো
তারপরে দু’ চোখের পর্দায় যবনিকা টেনে দিও যত্ন করে।

তুমুল – শুভশ্রী রায়

বিপরীত টানে শরীর তপ্ত
শিরায় শিরায় আগুন রপ্ত,
ভালোবাসতে আদিম ছন্দে হয়নি ভুল।

সব শুকিয়ে যাওয়ার পর
হৃদয়ে অটল গভীর গড়
চির প্রাকৃতিক ঘোর অনুসারী কামনা-ফুল!

ঈর্ষা শত চোখের ভেতরে,
খুবলে খেতে চায় ইতরে
শিকারির মতন খর নজর বড়ই স্থূল।

তুমুল তপ্ত প্রণয় সারাংশ
প্রণয়ী হিয়া না মানে ধ্বংস,
ব্যাধ সামাজিক জিভে যথারীতি শূল।

পৃথিবীর শেষ মিথ্যা – শুভশ্রী রায়

তিনি বললেন- আজ নিজের মিথ্যাগুলো নিয়ে কিছু বলব,
শুনতে কে না দাঁড়িয়ে গেল,
এক জন, আধ জন, বাদ জন
এবং সবাই।

তিনি বললেন- অনেক মিথ্যা বলেছি সারা জীবন,
দরকারে ও বিনা দরকারে,
শখে, অভ্যাসে, আনন্দে
এমন কী সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার আনন্দ পাওয়ার জন্যও বলেছি,
বলেই গিয়েছি।
এখন বলছি- আর কখনো মিথ্যা বলব না
সেই সঙ্গে আন্তরিক ভাবে
আমি চাই, এটাই হো’ক পৃথিবীর শেষ মিথ্যা!

তাঁর পায়ের ওপর দিয়ে হেঁটে চলে গেল দশ দশটা যথার্থ পিঁপড়ে।

অনাবিল এক ভোরে – শুভশ্রী রায়

প্লাস্টিক সভ্যতারও নিজস্ব মধুভোর থাকে
এখনো দশবিশটা পাখি বেশ মিষ্টি কিচিরমিচির করে-
প্রকৃতি আড়মোড়া ভাঙে।

খবরের কাগজে এখনো শহরের চোখ পড়েনি,
এই তো কয়েকটা মুহূর্তমাত্র
অনাবিল আশীর্বাদের মতো পবিত্র,
খুন ও বলাৎকার, সংসদে মতলব হাসিলের চিৎকার
মাথায় ঢুকে পড়ার আগে
ভোরকে নিবন্ধ করা হোক চোখের পাতায়।

ভোরের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে নিবেদন
রাতের গল্প ইতিমধ্যেই পুরনো হতে শুরু করেছে
এবার সে ফিকে হতে হতে পণ্যসর্বস্ব জীবনশৈলির ভেতর ঢুকে যাবে,
পাড়ায় পাড়ায় চায়ের দোকানে ঢুকে
চা খাবে জীবন,
এ দিক ও দিক করতে করতে
এসেই পড়েছে সে, সাফাইওয়ালা
নাগরিক জঞ্জাল পরিষ্কার করছে,
কফির কাপে নতুন তারিখটাকে গুলে পান করব আমি;
কলম থামাই।

একটি স্বীকারোক্তি – শুভশ্রী রায়

পাপ বলতে যা বোঝায়
সে রকম কিছু
এ জীবনে করেছি বলে মনে হয় না।

তবে ছেলেদের দিকে তাকাতাম
কৈশোর থেকেই, সমস্ত যৌবন জুড়ে
এমন কী সাবধানী মাঝবয়সেও পুরুষের ওপর
সন্তর্পণে দৃষ্টি ফেলি
আর হ্যাঁ কখনো কখনো ভালোবাসার চিঠিও লিখেছি,
হাতে হাতে দিয়েছি সেগুলোর বেশিরভাগই,
কিন্তু দ্বিধালজ্জা মেশানো দুএকখানি ব্যর্থ চিঠি
এখনো হৃদয়ের প্রাণময় তাকে পড়ে আছে।

আমি মানবী বরাবর – আছি এবং থাকব হুজুর,
অতি সামান্য রক্তমাংসের মানবী
কখনো কামে উত্তপ্ত হয়েছি
কখনো ভালোবাসায় উথালপাতাল,
আমার ছড়ানো ছিটানো জীবনের ওপর দিয়ে
আপাত নির্বিকার ভাব নিয়ে
গমগম করে হেঁটে গেছে এক কমরেড;
ভালোবাসা অনেক ভেতরে না পৌঁছলে এত নিরাসক্তির অভিনয় কেউ করতে পারে না।

এই আমার স্বীকারোক্তি।
এখন আমাকে একটাই শাস্তি দিন,
এরকমই উষ্ণ থাকি যেন আবেগে শেষ শ্বাসের শাসন অবধি,
প্রতিটি আগামী জন্মে যেন পুরুষকে এভাবেই মানবীসুলভ ভালোবাসতে পারি।

জলের অভিমান – শুভশ্রী রায়

জলেরও অভিমান থাকে
সেই অভিমান দেখার মতন,
জলের কাছে গিয়ে তার অভিমান অনুভব করি।

জল ডাকে- আরো কাছে এস,
ভয় পাই, সে যদি আমাকে চিরতরে টেনে নেয়!
বিপজ্জনক কিনারায় যাই না
তবে লক্ষ্য করি তার চিকচিক ঝিকমিক,
শুনি তার অপরূপ কলকল,
সেই ধ্বনি আমাকে ভাবনায় ডুবিয়ে দেয়,
হেরে যায় পৃথিবীর সব শব্দ কলকল ছাড়া;
নিজেকে নিবেদন করি তার কাছে।

অভিমান ভেঙে জল খিলখিল হেসে ওঠে,
জলজ হাসিটুকু চোখেমুখে নিই
নিজের ছায়াজন্মকে নতুন করে ভালো লাগে।

নির্লিপ্তি’র ভবন – শুভশ্রী রায়

এত জোর দিয়ে সমানে কে কড়া নাড়ে?
যেই হও না হও, অসময়ে এসেছ তুমি,
ফিরে যাও ফিরে
কাছে বা দূরে যেখানেই তোমার ঘর হো’ক
নিয়ে এসেছ ভালোবাসা অথবা অসময়ে শোক
ফিরে যাও যদি বা ছিঁড়ে যাচ্ছ নিজস্ব বিষাদের ভারে।

আমরা অসময়ে খুলি না দরজা সব ভুলে
কত ভুল গ্রহীতা ঢুকে পড়ে দ্বার খুলে দিলে,
অতিথি কে বা যেমন
আমাদের নেই আকর্ষণ,
মহা ভ্রম সৃষ্টি হবে সে যদি আমাদের জেনে নেয়;
অনেক যত্ন দিয়ে গড়েছি নির্লিপ্তির ভবন তিলে তিলে,
বিচ্ছিন্নতার নগরে।

পরীক্ষাতীত – শুভশ্রী রায়

থমথমে হলঘর, বড় বড় দরজা
প্রত্যেক সোমবার পরীক্ষা,
শ্রেণীকক্ষ ভয়ে ঠাসা,
শাসনের চোটে হাওয়া ভয়ে ভয়ে এ দিক ও দিক করে;
অঙ্ক পরীক্ষা থাকলে শূন্য থেকে ঝোলে সম্পূর্ণ অস্তিত্ব।

এই পরীক্ষা দিতে হ’বে, দিতেই হয়
বারবার দিতে হবে, বছরে বছরে,
অভ্যস্ত হয়ে নাও- প্রথমে ভয় পেতে
তারপরে ভয়ের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে।
জীবনভর পরীক্ষা দেবে তুমি,
অদৃশ্য পরীক্ষক অদ্ভুত অদ্ভুত সব খাতায়
তোমাকে দিয়ে দৃশ্যমান উত্তর লেখাবে।

কৈশোর থেকে তুমি ভয় ও পরীক্ষার মুখোমুখি হ’তে শিখে নাও,
ভয়ের ওপর ভেসে থাকা ইস্কুলই ক্রমে ক্রমে
তোমাকে সব ভয় হাওয়ায় ভাসিয়ে দিতে শিখিয়ে দেবে।

পুরুষ সংকট – শুভশ্রী রায়

যে পুরুষটি উদার, যার মন অনেক বড়,
তার সঙ্গে আজ অবধি দেখা হ’ল না আমার।
যে সব পুরুষের সঙ্গে এই মুহূর্ত অবধি দেখা হয়েছে
তাদের কেউ উদার নয়,
বড় করে কিছু দেখতে পায় না
অথচ পুরুষ হওয়ার জন্য অহংকার যথেষ্ট।

অতএব আমি সিদ্ধান্তে এসেছি-
যে পুরুষটির সঙ্গে দেখা হয়নি সেই উদার
এবং তার সঙ্গে দেখা না হওয়াই ভালো;
কে জানে মুখোমুখি হ’লে দেখা যাবে হয়তো
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সেও সংকীর্ণ একটি মানুষ।

আক্ষেপ আছে বই কী!
বিরাট হৃদয়ের কোনো পুরুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হয়নি কখনো,
জীবনের এই মোড়ে, ওই বাঁকে লম্বা-বেঁটে, শিক্ষিত-অশিক্ষিত অনুদার পুরুষই দেখেছি শুধু;
হায়!
আমি খালিখালি ছোটো মনের পুরুষদের নিয়েই
কয়েকটা এবড়োখেবড়ো লাইন লিখে রেখে গেলাম।

ঠিক অচেনা – শুভশ্রী রায়

কেউ কেউ ঠিকানা ভুলে যায় বারবার
রাস্তার নাম, বাড়ির সংখ্যা জট পাকিয়ে
তাদের বিভ্রান্ত মাথায় ঝুপসি ধাঁধার গাছ হয়ে যায়
আর ঠিকানা যাকে হারিয়ে ফেলে,
তেমন কত মানুষও আছে আজব দুনিয়ায়,
শত কেন হাজার চেষ্টাতেও স্থায়ী আবাস
সরে সরে যায়….

এক জীবন গোলকধাঁধা আরামবর্জিত,
কেউ ঠিকানা খোঁজে অবিরত
আর কারো কারো খোঁজে
ঠিকানা ঘুরে মরে পথেঘাটে এবং শ্মশানে….
মেলে শেষ অবধি অন্য মালিক।

তৃষ্ণাহর – শুভশ্রী রায়

কে জানে কোথায় তৃষ্ণার জল আছে আমার?
কোন নদী, কোন পুকুর, কোন কুয়ো, কোন মরূদ্যান,
গম্ভীর কোনো কুয়ো
অথবা সাদামাটা অনেক দেখা একটা কল-
কোথা থেকে জল পান করলে
আমার এ অসহ্য তৃষ্ণা মিটে যাবে, জানি না!

এখানে ওখানে জল দেখি, জল ছুঁই,
তাও গলা শুকিয়ে আসে,
জল খাই এত তবু পায়ের শিরায় টান ধরে যখনতখন
এমন কী রাস্তা পেরোতে গিয়েও কখনো কখনো অসহ্য কষ্ট…

যে জল পান করি তা কী আমার জন্য নয়?
নাকি শুধুই এইচ-টু-ও তৃষ্ণা হরণ করার ক্ষমতাবিহীন!
আমার তো অনেক, অনেক মায়াজল চাই মাটির বুকের ক্ষরণ;
কোথায় পাই সে আশ্চর্য জল,
কোনখানে মিলবে অমৃতের উত্তম সেই জল?

আগুন লেখা মেয়ে – শুভশ্রী রায়

যে সব মেয়ের কোনো প্রেমিক থাকে না
যে সব মেয়ের গায়ের রং আবহমান চাপা
জিভে ধার আছে যে সব মেয়ের,
শ্লীলতাহানি করে কোনোরকমে ভেগে যাওয়া
পুরুষটিকে রাস্তায় দেখে
মুখে থুতু ছিটিয়ে দেয় যে সব মেয়ে
সেই সব মেয়ে, হ্যাঁ সেই সব মেয়েও
সব জেনে-বুঝে না জানা এই পৃথিবীর সৃষ্টি;

সেই সব মানবীর কবিতা পুরোটা গনগনে ক্রোধ
তা নয়, মায়াও থাকে অনেকটা,
চোখর জলও থাকে বই কি
তবে তাদের লেখায় যদি একটু আগুন থাকেই
সে আগুনের আয়োজন কী আপনারাই করেননি
অনেক, অনেক বছর ধরে?

আগুন লেখা মেয়েরাই শুধু
সব জ্বালানোর দায়ে দোষী হ’বে কেন?

সৌর অস্থি – শুভশ্রী রায়

আমার হাড়ে হাড়ে সূর্য উঠুক
দিন রুটিন হয়ে ওঠে আকাশে,
কাল রক্তে আমার সূর্য মিশুক
আমার রক্তের রং ফ্যাকাশে।

আমার চোখের মণি সূর্য ধরুক
রোজ জ্বলে পুড়ে আকাশ ধরে,
অস্ত থেকে এক দিনও নেই ছুটি
খেলা করুক আমার প্রতি ঘরে।

সূর্য দুষ্টু করুক আমার ভেতর
দাঁত বসাক আমার ঠোঁটে গভীর,
তাপ লাগুক জ্বলুনি হোক ভীষণ
না থাকুক বিচ্ছিরি ভাবগম্ভীর।

মাথার চুলে সূর্য হাসুক আগামী
এলোমেলো করতে থাকুক পুরো
আপাদমস্তক ঢুকে পড়ুক অসহ্য,
চূড়ান্ত উচ্চতায় যাক সুখের চূড়ো।

দিন খারাপ – শুভশ্রী রায়

একেকটা দিন কেমন যেন
আকাশ বড়ই নিরুত্তাপ,
সারাটা রাত যেমন ছিল
দিনেও আলোর মনখারাপ।

এসব বেলাতেই সন্ধে হাজির
একেবারে সংজ্ঞা মতো দিনে,
কোথার থেকে কার থেকে
আনব আমরা আলো কিনে?

এ হেন দিন তারিখ শুধু
রুটিন সকাল নামেই শুরু,
কষ্ট পেয়ে দেখছি খবর
কাগজটারও কুঁচকে ভুরু!

এমন দিন নতুন তারিখে
দিনে অনড় বিষাদ ধরে হাত,
কফির তেতোয় বিষণ্ণতা মিশে,
উদ্দীপনাতেও লেগেছে শাপ।

জলে বেদনা – শুভশ্রী রায়

জলে কিছু ভাসে অন্য রকম,
নিজেকে ভাসাতে এসে কেউ
মায়ার চোরা স্রোতে আটকে
ফিরে গেছে কোলাহলময় অস্তিত্বের
কাছে, জলের কাছে সর্বস্ব সমর্পণ
তার নিয়তিতে নেই সম্ভবত।

অশ্রুর লবণ নদীতে ছেড়ে চলে সে গেছে
জলে ভাসে অসফল হৃদয়ের বিষণ্ণ হলুদ
স্রোতের মুঠোয় আবেগ তার, মানুষটি
কোনও প্রাণে বেঁচে নেবে সাধ্যমতো।

হৃদযন্ত্রটি তার কুড়োবে ঝরাপাতা রঙা
হলুদ আরো, তারপর ফের সে আসবে কী
জলের কাছে কোনও দিন, বিষাদ ভাসাতে?

জলজ হৃদয় তার বেদনায় উথালপাতাল,
ঢেউ থেকে ঢেউয়ে ছড়ায় ব্যক্তিগত হলুদ।

নিজের মৃত্যু বিষয়ক – শুভশ্রী রায়

এ সব কথা আমরা এড়িয়ে যাই অনেক কৌশলে
কিন্তু মৃত্যু তো নিজেকে স্থগিত রাখে শুধু
কখনোই আমাদের এড়িয়ে যায় না।

এই মুহূর্তে নিজের মৃত্যুর কথা একটু ভাবা যাক।
সম্ভবত এই সাদামাটা ফ্ল্যাটেই মারা যাব
এবং পাশের পেঁয়াজের গুদাম থেকে অসহ্য গন্ধ ঢুকবে তখনো
নিচ থেকে ভেসে আসবে বিশ্রী খিস্তিখেউর,
রাস্তার কলে কেউ কারোর বাপান্ত শেষ করে মা ধরে টানাটানি
শুরু করবে;
এখানে জীবনকেই কেউ সম্মান করে না,
তো মৃত্যুকে!

অন্তিম সাজসজ্জা আমার আয়ত্তে নয় নিঃসন্দেহে তবে
নিজের দেহের ওপর আমি ফুলটুল চাই না,
একটা পরিষ্কার পোষাক পরে শ্মশানযাত্রা হ’বে,
যে সব মেঝে যে সব দেওয়াল এতগুলো বছর আমার কথা শুনেছে ধৈর্য ধরে,
তাদের জন্য অনেক আদর রেখে যাব।

অগুরু জ্বালাবে না কেউ, উৎকট গন্ধ
তাচ্ছিল্য ও বিরক্তি থাকলেও শুধু
কেউ একজন যেন শেষবার হাতে একটা কলম ছুঁইয়ে দেয়!

ছায়ামুক্তি – শুভশ্রী রায়

সময় চরম গুটিয়ে এলে
শরীর ছেড়ে ছায়া আলোর উঠোনে নেমে পড়ে,
দেহ কোনও না কোনও অন্ত্যেষ্টির অপেক্ষায় আর
ছায়া পারলৌকিক কাজের প্রত্যাশা ছেড়ে
মুক্তিযাপন করে, আগেপিছে সমস্ত ছায়া
মহানন্দে পরস্পরের গায়ে আলো ছিটিয়ে
নিজেদের জ্বালা কমায় যত পারে।

দেহ পুড়ে যায়,
মুক্ক ও অন্তহীন ছায়া ঘোরে ফেরে;
পৃথিবী ও সময়ের জালে কখনও চোখে পড়লে
প্রেত নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।

দ্বিতীয় নারী – শুভশ্রী রায়

তুমি বিনা শর্তে ভালোবাসতে পারো
প্রথাকথিত স্বীকৃতি সংসারে অন্য কারো!

মন্ত্রসঙ্গিনী পাবে সিঁদুরছাপ, নোয়া
সাতপাকে চক্রে তোমার কপালে বদদুয়া

সহধর্মিণী বিধিমতে সবটুকু পাবে,
বৈবাহিক ছবির বাইরে তুমি থেকে যাবে।

সব জেনে বুঝেই ভালোবাসো, জানি
না প্রশস্তি, না নিন্দা, এই সত্য শুধু কাহিনী।

লাল ডাকবাক্স – শুভশ্রী রায়

এক সময়ে অপরিহার্য ছিল,
সেই সঙ্গে সাংসারিক খবরের ভান্ডার
কুশল-মঙ্গল-শোকবার্তা ধরে রাখত গর্ভে
এখন সর্বাঙ্গে উপেক্ষা;
বছরে কটা চিঠি ফেলা হয় হাতে গোনা যাবে,
প্রযুক্তি তাকে মরিচায় মুড়ে দিয়েছে।

অতীতের প্রতীক অতীত হয়ে যাওয়ার আগে,
এস তার অজানা অন্ধকার ভেতরে চিঠি হয়ে ঢুকে যাই।

সনিশা’র উদ্দেশ্যে – শুভশ্রী রায়

সনিশা মারাঠে, নাসিক শহরে কী ছিমছাম বাড়ী!
তোমার সঙ্গে নিজের জীবন বদল করতে পারি?

সনিশা, তোমার পোষাক ঝকঝকে, দেখার মতো!
পাশেই ঘোরাফেরা করে পুরুষেরা সদা-সম্মত।

আমি তুচ্ছ, কারুর হৃদয়ে তুলি না গো আলোড়ন
তুমি টানটান সুন্দরী, কেড়েছ শত পুরুষেরই মন!

বাংলো তোমার আধুনিক, সারাবার রাখো ক্ষমতা,
আমার ফ্ল্যাটকে কোনও রকমে ধরে রেখেছে মমতা।

তুমি দু’ পা এগোলে অপূর্ব আঙুরের ক্ষেত গড়ানো,
ঘিঞ্জি উত্তর কলকাতায় আমার শেকড়বাকড় ছড়ানো।

তবু মুখবইয়ে তুমি আর আমি ভার্চুয়াল কাছাকাছি,
বাস্তবে কত না বিপরীত তোমার আমার বাঁচাবাঁচি!

সনিশা মারাঠে, আমার মতন বেঁচে দেখবে নাকি?
আমিও না হয়, দু’ তিন দিন তুমি হয়ে বেঁচে থাকি!

তোমার সঙ্গে নিজের জীবন বিনিময় করতে চাই,
সম্ভব না, ক’টা পংক্তিতে শখ মিটিয়ে নিচ্ছি তাই।

অপরিহার্য – শুভশ্রী রায়

আমার প্রতিটি সকাল একটা করে তেতো, কালো কফির অপরিহার্য কাপ নিয়ে আসে
আর আনে খবরের কাগজ নিতে না পারার অপারগতা
তার ওপর চড়াও হয় চড়াই পাখীদের কিচিরমিচির;
ওদের আলো-সঙ্গত আমার মধ্যে সঞ্চারিত হয়,
ব্যাখ্যা বহির্ভূত আনন্দের স্রোত সকালের ভেতর থেকে বইতে শুরু করে…
ডিভাইসের ভেতর থেকে
শাফকাত আমানত আলি অপূর্ব গেয়ে ওঠেন,
বৈষ্ণবজন তো তেনে কহিয়ে যো পীড় পরাই জানে রে….
সকাল আশীর্বাদী সুরে ডুবে যায়।

উপাসনা – শুভশ্রী রায়

তুমি যেন কে! এই পৃথিবীর কেউ?
নাকি ঠিকানায় সীমাবদ্ধ যেমনতেমন প্রাণ এক টুকরো?
অন্ধকার তরল আর প্রশ্ন ঘনীভূত হয়ে আসে
ভোর ডাকে, জানাতে চায়-
এই আকাশ ও বাতাসের সঙ্গে সম্পর্ক তোমার, চালাকিবর্জিত নরম আলো বন্ধু…
এত কিছুর সঙ্গে তোমার আত্মিক যোগ;
কিছুতেই তুমি তুচ্ছ এক নাগরিক নও
নও দুটো ঘর সহ কণা ফ্ল্যাটের বাসিন্দা মাত্র ,
পরিচয় তোমার আরো উদার ,
পরিপূর্ণতা মহাজগতের ভেতরে।

এমন ভোর পাঠিয়ে জগৎ তোমাকে ছুঁতে চায়
তুমি কেন জগৎকে ছুঁতে চাও না?
তার ডাকে সাড়া দাও,
তার স্তুতি রচনা করো সাদা কাগজে,
ভোর পাঠিয়েছে মহাজগৎ
অন্তত একখানি কবিতা তাকে দাও নত হয়ে।

শ্রাবণ – শুভশ্রী রায়

কোথায় পেলে তুমি আমাকে, শ্রাবণ?
আমি সাধারণত বৃষ্টির তলায় ভয়ে ভয়ে থাকি,
বিশ্রী কিন্তু পরিচিত কিছু হবে,
ফুসফুস ঢেকে যাতে পারে, অসোয়াস্তি অনেক
ওষুধের দাম বেশি, সেই সঙ্গে নিজেই নিজেকে দেখা ও শোনা!

সেই ভয় সঙ্গী নয় যখন থাকি
ছিরিছাঁদহীন ছাদের তলায় কোনো মতে শুকনো,
বাইরে বৃষ্টি পড়ে অনাদৃত অবাঞ্ছিত,
শহরের খোপে খোপে দুশ্চিন্তা জমে তাকে নিয়ে
কোনও রকমে বৃষ্টির কথা শুকনো কলমে লিখি
তার পরে মেঘের পাশে যেতে মৃদু ইচ্ছে করে,
বলতে পারি সত্যিটা, ভেজে না তো মন।

আশ্রয় – শুভশ্রী রায়

রোদের মধ্যে দিয়ে মিছিল আসছে,
হইহই বাজারে এসে একটু বিশ্রামের মতো কিছু,
দেব দেব কমরেড পরাক্রমী মৌসুমী হাওয়ার পাশাপাশি সামনে ছিলেন;
সবার মতো তাঁরাও ক্লান্ত,
আমি তো রোদে পুড়ে আরো শ্যাম-ধরণ।

হাতছানি দিচ্ছে দীর্ঘকায় কমরেডের ছোট ছায়া,
কাউকে কিছু বুঝতে দিলাম না;
এর ওর মাঝখান দিয়ে সোজা ও কৌশলী হেঁটে গিয়ে
দাঁড়িয়ে পড়লাম সেই ছায়ায়…
আহহ্ স্বস্তি!

টেক্সট – শুভশ্রী রায়

যে রকম এই যুগ সেরকম না হ’লে কী করে হবে?
সংক্ষিপ্ত বানান, কম সময়ে রক্ষা পাওয়া এই ভবে,

টেক্সট করো, অন্তত পড়ো যদি টাইপ মনে হয় দায়
দেখবে ক্রমশ বুঝে যাবে কে তোমাকে কতটুকু চায়;

হৃদয়ের যে দরজা যখনতখন খোলে না অনায়াসে
তারই ফাঁক দিয়ে গলে দুয়েকটা বার্তা তো আসে!

সমস্ত দুনিয়া হৃদয়হীন নয়, আসলে ব্যস্ত নিরুপায়,
ফাঁকে ফাঁকে যোগাযোগ, এ ওকে টেক্সট করে যায়।

পীড়া এবং – শুভশ্রী রায়

ফিরে যাচ্ছি, যাচ্ছি নাকি কোথাও ফিরে?
মনে হ’চ্ছে! টানও তো পড়ছে জোরে-ধীরে
হাল্কা ইঙ্গিত আসে, আলোর সাগরের তীরে;
আসলে খুব দূরে নয়, এসেছি সেখান থেকেই
তবে পথ খুব সূক্ষ্ম, আমার ভালো মনেও নেই,
প্রাপ্য অফুরন্ত, ক্লেদ পেরিয়ে পৌঁছে যাব যেই।

শুভশ্রী রায় | Suvasri Roy

Bharatpur Patachitra | ভরতপুরের পটচিত্র | 2023

Living next to tiger | বাঘের পাশে বাস করা | 2023

Andaman Cellular Jail | আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল | 2023

মানব কল্যাণে রামকৃষ্ণ মিশন | Ramakrishna Mission | 2023

Shabdodweep Web Magazine | High Challenger | Shabdodweep Founder | Sabuj Basinda | Bengali Poetry | Bangla kobita | High Trend Bangla Kobita 2024 | Poetry Collection | Book Fair 2024 | bengali poetry | bengali poetry books | High Trend Bangla Kobita pdf | Bengali Poem Lines for Caption | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | High Trend Bangla Kobita Ebook | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2023 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | Bengali Poem Lines for Caption in pdf | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry

indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | Best Bengali Poetry Folder | Best Bengali Poetry Folder 2023 | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2023 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | Bengali Poem Lines for Caption crossword | writing competition | writing competition malaysia | Bengali Poem Lines for Caption in mp3 | writing competition hong kong | writing competition game | Best Bengali Poetry Folder pdf | Trending High Trend Bangla Kobita | High Trend Bangla Kobita – video | Shabdodweep Writer

bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | English Literature | High Trend Bangla Kobita examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | High Trend Bangla Kobita Ranking | positive Best Bangla Kobita Collection

Bengali Poem Lines for Caption about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | freedom poem | sad poetry about life | Natun Bangla Kabita 2023 | Kobita Bangla Lyrics 2023 book | New High Trend Bangla Kobita | Writer – High Trend Bangla Kobita | Top Writer – Natun Bangla Kabita 2023 | Top poet – Natun Bangla Kabita 2023 | Poet list – Kobita Bangla Lyrics 2023 | Archive – High Trend Bangla Kobita | Bangla Full Kobita | Online Full Kobita Bangla 2023 | Full Bangla Kobita PDF | New Bangla Kabita Collection | Shabdodweep Online Poetry Story

Poetry Video Collection | Audio Poetry Collection | Bangla Kobitar Collection in mp3 | Bangla Kobitar collection in pdf | Indian Bengali poetry store | Bangla Kobita Archive | All best bengali poetry | Indian High Trend Bangla Kobita | Best Poems of Modern Bengali Poets | Best Collection of Bengali Poetry in pdf | Bengali Poetry Libray in pdf | Autograph of Bengali Poetry | India’s Best Bengali Writer | Shabdodweep Full Bengali Poetry Book | Bengali Poetry Book in Google Bookstore | Google Bengali Poetry Book | Shabdodweep World Web Magazine | Shabdodweep International Magazine | Top Poems of Modern Bengali Poets | Bangla Kobita in Live | Live collection Bengali Poetry | Bengali Poetry Recitation Studio | Sabuj Basinda Studio for Bengali Poetry | Bangla Kobita Sankalan 2023 | Shabdodweep Kabita Sankalan

New Bengali Poetry Memory | History of Bengali Poetry | History of Bangla Kobita | Documentary film of Bengali Poetry | Youtube Poetry Video | Best Bangla Kobitar Live Video | Live Video Shabdodweep | Bengali to English Poetry | English to Bengali Poetry | Bengali Literature | Full Bengali Life of Poetry | Bangla Kobita Ghar | Online Live Bangla Kobita | New Bengali Poetry House | Full Bengali Poetry Collections PDF | Library of Bangla Kobita | Bengali Poetry and Story | Bengali Poetry Writing Competition | World Record of Bengali Poetry Writing | Peaceful Poetry | Online High Trend Bangla Kobita Selection | High Trend Bangla Kobita translation in english | High Trend Bangla Kobita | High Trend Bangla Kobita for instagram | romantic bengali poem lines | bengali short poem lyrics | bengali kobita caption for fb dp

Leave a Comment