মলয় দাস (পরিযায়ী) – সূচিপত্র [Bengali Story]
লাইফ সার্টিফিকেট – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
বুক পকেটে পেন, লাইফ সার্টিফিকেট আর ব্যাঙ্কের পাশবুকটা নিয়ে ব্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেড়োতেই ঘটে গেলো ঘটনাটা। প্রায় এক সপ্তাহ বাদে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মনে পড়লো সেদিনের কথা, বুক পকেটের নীচে যে আর একটা লাইফ সার্টিফিকেটের অ্যাপ্লিকেশন লেটার ধুকপুক করে চলছিল তারও যে সার্ভিসিং করা দরকার তার প্রয়োজন বোধ করিনি কখনো, তাই ঈশ্বর হাসপাতালের সার্ভিসিং সেন্টারে পাঠিয়ে দিলো ফিট সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য।বুক পকেটটা পৃথিবীর এক আশ্চর্য ব্যাঙ্ক যেখানে সেভিংস, ফিক্সড ডিপোজিট, রেকারিং, এম আই এস অনেক কিছু রাখা যায় শুধু বুক পকেটের নীচে থাকা ব্লাড ব্যাঙ্কের লাইফ সার্টিফিকেটটা মাঝে মাঝে সার্ভিসিং করিয়ে নিতে হয় মনে করে।।
হাতে একটা পিন ফোটার ব্যথা হতেই চোখ আর মন তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে এলো জীবন বাবুর।
মেঘলা মন – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা হয়ে আছে মাঝে মাঝে ঝিরঝিরে বৃষ্টি।।মেঘলা আকাশের ছোঁয়াচে রোগ সংক্রমিত করলো অনুপমের মনের আকাশ।।না আজ আর অফিস নয় কিন্তু ঘরে বসে থাকতেও ভালো লাগলো না।।ঝিরঝিরে বৃষ্টি ভেজা কালো আকাশের নীচে কালো রাস্তা ধরে হাঁটতে বড়ো ভালো লাগে অনুপমের,অনুপম ছাতা মাথায় হাঁটতে শুরু করলো আজ সে যুধিষ্ঠির পিছন পিছন আসা স্মৃতিগুলো পঞ্চ পান্ডবের মতো এক এক করে ছেড়ে যায়।।অনুপম হেঁটে চলে……..।।
দেনা-পাওনা – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
লক ডাউনের পর পরিযায়ী প্রলয় আর বিশাখা এ-রাজ্য ও-রাজ্য ঘুরতে ঘুরতে ফিরে আসে নিজের গ্রামে।।বিয়ের পর বছর বাইশের বিশাখা মাত্র দুমাস আগেই প্রথম স্বামীর সাথে গিয়েছিল ভিন রাজ্যে, গ্রামে ফেরার দুমাসের মধ্যেই অজানা রোগে স্বামীর মৃত্যৃ তাকে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়,বাপের বাড়িতে আশ্রয় পেলেও পিতৃ-মাতৃহীন বোনকে দাদারা বলে দিয়েছিল কাজ করে নিজের পেট চালাতে হবে। এমতাবস্থায় পঞ্চায়েত সদস্যা তাকে বললেন,তুমি এখানে জব কার্ড ও বিপিএল কার্ড বানাও খেয়ে পড়ে বেঁচে যাবে। বিপিএল ও জব কার্ডের জন্য এক এক করে বেশ কয়েকজনের কাছে বিশাখাকে তার বাইশ বছরের যৌবনকে ঘুষ দিতে হয়।।কয়েক মাস বাদে বিশাখার এইচ আইভি পজিটিভ ধরা পড়তেই ঈশ্বরের দাঁড়িপাল্লায় স্বামী থেকে যৌবনের ঘুষ নেওয়া লোভ লালসার বাইশ বছরের যৌবনের দেনা -পাওনার হিসাব বরাবর হয়।।
রবীন্দ্র স্মরণে কিছু কথা – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
রঙিন পৃথিবী থেকে ফ্লাশ ব্যাকে চলে যাই সাদা-কালো অতীতের কিশোর বেলায় মনে পরে সেইসময়ের কথা, মনে পরে জন্মস্থানের কথা মনে পরে সেইসব রবীন্দ্রজয়ন্তীর কথা। আমাদের বাড়িতে রবীন্দ্রজয়ন্তী হতো প্রত্যেক বছর, আমরা যে যা পারতাম পারফর্ম করতাম। সেই সঙ্গে নাটক ছিলো অন্যতম আকর্ষণ আমাদের কাছে।তখন মর্নিং স্কুল, স্কুল শেষে আমরা চলে আসতাম রিহার্সাল করতে সেবার রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান শেষে আমাদের নাটক দেখে ভালো লাগায় অন্য গ্রামে নাটক মঞ্চস্থ করার আমন্ত্রণ জানায়। রোমাঞ্চিত আমরা যথারীতি নির্দিষ্ট দিনে সেই গ্রামে নাটক করছি, নাটকের নাম আর এখন মনে নেই, সেই নাটকের এক দৃশ্য ছিলো এক হাবিলদার খৈনি খেতে খেতে মঞ্চে এসে একটা কথা বলবে তার এই একটাই দৃশ্য ছিলো তো হয়েছে কি মঞ্চে তখন আমি ও আরেক চরিত্র অভিনয় করছি এমন সময় হাবিলদার এলো খৈনি ডলতে ডলতে মুখে দিল খৈনি তারপর ও মাথা ঘুরে পরে গেল উইংগসে। আমরা দুজন আর ডায়ালগ কি বলবো ভয় হবে কী কিশোর মনে তখন হাসির ধুম, হাসি চাপতে পারছি না, দুজনের সে কি হাসি। কোনরকমে নাটক শেষ করলাম কিন্তু এদিকে হাবিলদার মশাই তখনো গ্রীনরুমে শুয়ে। কি হয়েছে কি হয়েছে আমরা ব্যতিব্যস্ত, মাথা ঘুরছে তা হঠাৎ মাথা ঘুরছে কেন। উত্তর শুনে আমরা থ। নাটকে অরিজিনালিটি আনতে হাবিলদার সত্যিকারের খৈনি কোথা থেকে জোগাড় করে খেয়ে নিয়েছেন।
যাক কথায় আছে না যার শেষ ভালো তো সব ভালো সবাই প্রশংসা করলো দারুণ নাটক হয়েছে। নাটক শেষে একজন ভদ্রলোক আমায় বললেন আমার সাথে একজন দেখা করবেন তিনি বাইরে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন, গেলাম আধো অন্ধকারে একমুখ দাঁড়ি নিয়ে গায়ে একটা পাতলা চাদরে ঢেকে এক জন্য ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন আমি যেতেই আমার হাত ধরে নিয়ে এলেন পার্কের বেঞ্চে। কেমন যেন মনে হলো শান্তিনিকেতনের ছাতিম তলায় বসে আর সুন্দর এক সুগন্ধ আর প্রশান্তিতে ভরে গেল মন।বসলাম, বললাম, কী জন্য ডেকেছেন আমায়। সামান্য নিস্তব্ধতার পর বললেন তুমি বেশ নাটক করো কিন্তু আজ চেয়ারে বসে তোমার নাটকের অভিনয় পুরোটা দেখলাম বেশ ভালো লাগলো মনে হলো তোমার সাথে একবার দেখা করি একটু গল্প করি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প,কবিতা পড়ো তো?বললাম হ্যাঁ পড়ি। বললেন, কোন গল্প কোন কবিতা তোমার সবচেয়ের পছন্দ আমি বললাম স্কুল ছুটি থাকলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা পড়ি শুনি আর গল্প তো গোগ্রাসে পড়ি যেমন “কাবুলিওয়ালা”, “পোষ্টমাস্টার”, “খোকা বাবুর প্রত্যাবর্তন” আর কবিতা তো প্রচুর “পুরাতন ভৃত্য”ও”দেবতার গ্রাস” আমার সবচেয়ে প্রিয় দুটি কবিতা আর “কাবুলিওয়ালা “খুব ভালো লেগেছে, রহমত আর মিনির মধ্যে যে সম্পর্কের ব্যথা বেদনার কথা সত্যিই একসময় মর্মস্পর্শী লাগে, জানেন রবি ঠাকুরের “গৃহদাহ” নাটক আর স্কুলের লাইব্রেরী থেকে এনে “চোখের বালি “পড়ে ফেলেছি।আচ্ছা তোমার তো তাঁকে ভালো লাগে যদি তিনি এখন তোমার সামনে এসে দাঁড়ান তবে কী করবে? কবিগুরুকে একটা প্রণাম করে বলবো তুমি তো ঠাকুর সাহিত্যের দেবতা একটু আশীর্বাদ দিও জীবনে যেন একটু আধটু সাহিত্যচর্চা করতে পারি। কেমন এক সম্মোহনের মতো তাঁর সাথে সারা রাত গল্প করতে করতে কেটে গেলো। যাবার বেলায় তিনি আমায় একটি কাগজে মোড়া জিনিস দিয়ে বললেন এটা তোমাকে দেওয়া আমার সামান্য উপহার আজকে নাটক ভালো লাগার জন্য এবং তোমার সাথে এতক্ষণ সময় কাটিয়ে আনন্দ পেলাম তার জন্য। সকালবেলা ঘুম ভাঙতেই দেখি পড়ার টেবিলে একটি প্যাকেট, খুলতেই বেড়িয়ে এলো “সঞ্চয়িতা” প্রথম পাতায় লেখা স্নেহের মলয়, তোমাকে আমার উপহার ও আশীর্বাদ ইতি রবীন্দ্রনাথ।
দুই পৃথিবী – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
পরিমল বসে থাকতে থাকতেই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল,অন্ধকার ক্রমশ আবছা হতে সে দেখতে পেল অনেক বন্ধু আত্মীয় চেনা অচেনা কিছু অদ্ভুত জীব,মানুষের মতো দেখতে কিন্তু ঠিক মানুষের আকৃতির নয়,কেমন এক অবয়বহীন চেহারা যা বোঝানো পরিমলের পক্ষে সম্ভব নয়।আরে পরিমল না!পরিমল কবে এলি, কী হয়েছিল, তোর তো তেমন বয়সও হয়নি, স্ট্রোক না অ্যাক্সিডেন্ট?যাক এসেই যখন পরেছিস কোন চিন্তা নেই আমরা আছি কোন ভয় নেই আনন্দে কেটে যাবে, এ এক মৃত্যুহীন জীবনের দেশ।শুনতে শুনতে কেমন এক শিহরণ এলো শরীরে,গা গুলিয়ে উঠতে লাগলো পরিমলের। তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব থেকে কেমন সুইচ ওভার করে মনটা অন্য পরিবেশে আসতে লাগলো। হালকা মৃদু স্বরে শুনতে পাচ্ছে সে,এযাত্রায় খুব বেঁচে গেল ভাগ্যিস সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে এসে সময় মতো ট্রিটমেন্টটা পেলো,ভালো ডাক্তারের কাছে পরেছিল,ডক্টর পাল যথেষ্ট অভিজ্ঞ নামী ডাক্তার।এই আলোচনার কথাগুলো ক্ষীণ স্বরে পরিমলের কানে আসতে মনে হলো রুমি আর ওর বোন রুমার গলার মতো মনে হচ্ছে, তাহলে কী সে হাসপাতালে ভর্তি তার কী কিছু হয়েছিল মনে করার চেষ্টা করতে লাগলো পরিমল।আবার সেই অন্ধকারের আবছা অদ্ভুত অবয়বের জীবগুলোর কথা মনে পরতেই পরিমলের মধ্যে গোঙানির আওয়াজ শুরু হলে নার্স বলল স্যার মনে হয় পেশেন্টের জ্ঞান ফিরছে ।।
পাত্র-পাত্রীর কলম – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
বন্ধুর জন্য কর্ম নিপুণা, সুদর্শনা, শিক্ষিতা অলরাউন্ডার পাত্রী দেখতে পৌঁছোলাম বিকেল পাঁচটায়।গরমের দুপুর, এখনো সূর্যাস্তের কিছুটা সময় বাকি সেই ফাঁকে বাগান ঘেরা শান্তিকুঞ্জের গ্রাম্য বাড়ির সৌন্দর্য ঘুরে ঘুরে উপভোগ করার পর কণে দেখা ঘরে চা মিস্টি পর্ব শেষ হতেই মেয়ের কাকিমা মেয়েকে চার পাঁচজন যুবকের কাছে মেয়ের ভবিষ্যৎ রেখে পর্দার ওপাশে বিলীন হলেন হয়তো গুপ্ত কোন স্পাইয়ের নজরদারিতে। সামান্য পরিচয় পর্ব সেরে ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে চোখা চোখা প্রশ্ন-উত্তর পর্ব শেষ হতেই আমার মধ্যে সেই ফিচলেমো বুদ্ধিটা পাগলের সেতু নাড়ানোর মতো নড়তে লাগলো।আমি পাত্রীকে সরাসরি প্রশ্ন করে বললাম ধরে নিন এটাই শেষ প্রশ্ন এর সঠিক উত্তর আপনাকে পরবর্তী জীবনের পথ চলার পথে কিছুটা এগিয়ে দিতে পারে,পাত্রী উত্তরে বললেন,করুন প্রশ্ন দেখি ক্রোড়পতি না দাদাগিরির উপযুক্ত আমি, আমিও নিজেকে যাচাই করে দেখেনি। বললাম আপনার জন্য গুগলি, সব কিছু আলোচনা হলো কিন্তু এখনো পাত্রকে তার পরিচয় দেওয়া হয়নি আপনি বলুন, পাত্র কে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর আপনাকে বিজয়ের খুব কাছে নিয়ে যেতে পারে, পাত্রী সরাসরি আমার দিকে আঙুল তুলে বললেন কেন, আপনি! অনেক সময় কনফিডেন্ট উত্তর ভুল হয়ে যায়, এই কনফিডেন্ট থাকলে লক কিয়া যায়, না উত্তর পাল্টাবেন? না লক কর দিজিয়ে। জানেন তো এই জন্যই আমার মেয়ে আমাকে বলেছিল বাবা তুমি যেওনা মেয়ে দেখতে।। হা হা হা…।
নববর্ষের পর – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
নবীন প্রত্যেক বছরের মতো এবছরের নতুন ক্যালেন্ডারের মাসগুলো উল্টেপাল্টে দেখে পুরনো বহু দিনের অভ্যাসের মতো,কোন কোন মাসে কী কী বার ছুটি পড়েছে, কবে মহালয়া, কবে পুজো শুরু, গরমের ছুটি কতো তারিখ থেকে কতো তারিখ, প্রত্যেক বারের মতো বলে, যাঃ কতোগুলো ছুটি মার গেলো রবিবার পড়ে গেছে কিন্তু পরক্ষণেই ভাবে ছুটি তো আর মার যায়না রবিবারের ছুটি অন্য ছুটিতে অ্যাডজাস্ট হয়।। এরপরেই যখন জানুয়ারি মাসের নির্দিষ্ট একটি তারিখের দিকে চোখ পরে তখনই তার মনটা বিষন্ন হয়ে উঠে, গত দুবছর ধরে এই তারিখটা অ্যালার্জির মতো মনের গভীরে বাসা বেঁধে আছে।। বড়দিন শেষ হয় এক একটা পেরেকে ফোটা যন্ত্রণা নিয়ে, ডিসেম্বরের শেষ রাত আলোকসজ্জায় সেজে উঠে, নববর্ষের আনন্দের আকাশ ভারাক্রান্ত হতে থাকে ক্রমশ নবীনের।।প্রত্যেক বছরের শুরুতেই নবীন সারাবছরের রেজুলেশন করতো কীভাবে নতুন বছরটা কাটাবে,দুবছর আগের জানুয়ারি তার সমস্ত রেজুলেশনকে নির্মম হতাশার অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছিল সেই ডিপ্রেশন থেকে আর বের হতে পারেনি, নবীনও জানেনা কবে ডিপ্রেশনের মেঘ কেটে জীবনের আকাশে নতুন ভোর ঝলমলে হবে ।।আর মাত্র কয়েকটা দিন দূরে নববর্ষের জানুয়ারির সেই দিনটি আসতে যেদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি নেমেছিলো মনের গহন আকাশ চিরে।। নবীন ঠিক করলো এবছর আর প্রতিবছরের মতো ডিসেম্বর নয় জানুয়ারিতে জঙ্গলমহল ঘুরতে যাবে নিজের একাকীত্ব জঙ্গলের নির্জনতার মধ্যে মিশিয়ে বেঁচে থাকার অক্সিজেন নিয়ে আসবে।।ইস্পাতের টিকিট কেটে ট্রেনে বসে পড়লো, বেলপাহাড়ীর জঙ্গলে একটা হোমস্টে বুক করে রেখেছে ওখানেই চারটে দিন নির্জন নিভৃতবাস পঞ্চ পান্ডবের মতো।। চারটে দিন শুধু জঙ্গল আর জঙ্গলের মধ্যেই নববর্ষকে নতুন করে অনুভব করলো,সারাদিন নতুন নতুন গাছপালার সঙ্গে পরিচয় চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে প্রাকৃতিক প্রবাহমান ঝর্ণার সৌন্দর্য, সূর্যাস্তের ভিউ পয়েন্টে দিবাকরকে হারিয়ে যেতে দেখে লেকের জলে তারপর ধীরে ধীরে গভীর জঙ্গলের ভিতর নববর্ষে জঙ্গলমহল সেজে উঠে অসংখ্য তারা ও পূর্ণিমার চাঁদের জ্যোৎস্নায়, নবীনও হারিয়ে যায় রূপসী জঙ্গলমহলের নগ্ন সৌন্দর্যে।।পাশের দুটো ঘরে দুটো ফ্যামিলি চেক ইন করেছে নবীন যেদিন এসেছে সেদিন বিকেলে,রাতে ডিনার টেবিলে পরিচয় হলো কলকাতার অনিবার্ণ বাবু ও তার মিসেস ও মেয়ে রুমা এবং অনিবার্ণ বাবুর বন্ধুর পরিবারের সাথে, দুজনেই ব্যাঙ্কে একই ব্রাঞ্চে।।এই হোমস্টেতে পাঁচটা ঘর তাই বেশি লোক নেই তাই প্রতিদিন ওনাদের সাথে ডিনার টেবিলেই দেখা হতো দুই পরিবারের ঘোরার গল্প কানে আসতো সেদিন হটাৎ অনিবার্ণ বাবু বললেন,কোথায় কোথায় ঘুরলেন নবীন বাবু?বললাম বাবু বলবেন না আমি আপনাদের থেকে অনেক ছোটো নাম ধরেই ডাকলে খুশি হবো।।এই দেখলাম আশেপাশের সব কিছু আর আমি ঠিক ঘুরতে আসিনি নিরিবিলেতে একা কিছুটা সময় নিজের জন্য নিজের মতো করে থাকতে এসেছি, কিন্তু মনে মনে বললাম, আমি ঠিক ঘুরতে আসিনি ভুলতে এসেছি সভ্যতার নগ্ন রাজনীতি আর বিশ্বাসঘাতকতার গল্প।।পরদিন রুমা আমার ঘরে ওর বাবার সাথে এলো বললো,কালকে ফিরে যাবো বাবারা টায়ার্ড আজ রেস্ট নেবে সবাই হোমস্টেতেই পিকনিক মুডে আজ কাটাবে আমার লেক ভিউ পয়েন্ট থেকে সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হয়নি আমাকে একটু আজ নিয়ে যাবেন আমাদের গাড়িতেই যাবো দেখে চলে আসবো।।পরদিন বিকেলে বেড়িয়ে ঠিক সাড়ে তিনটেয় পৌঁছে গেলাম ভিউ পয়েন্টে নতুন করে সূর্যাস্ত হলো আজ সূর্যের সমস্ত রঙ দিয়ে যেন রুমাকে রঙিন করেছিল মনে হচ্ছিলো আজ ভরা পূর্ণিমার জ্যোৎস্না সূর্যাস্তের পরেই লেকের জলের ওপারের ঘন জঙ্গলের অন্ধকার থেকে ছড়িয়ে পড়বে চারিদিকে।।জানি না রুমা কীভাবে অনুভব করেছিল আমাকে,বললো,যা খুঁজতে এখানে এসেছিলেন খুঁজে পেয়েছেন।।আমি বললাম,আপনি বুঝলেন কী করে আমি কি জন্য এসেছি! দেখুন আমি কিন্তু সাইকোলজি নিয়ে অর্নাস করেছি, আপনাকে আমি প্রথম দিন থেকেই অবজারভেশন করেছি একা কেনো এসেছেন নিশ্চয় কোনো বেদনা লুকিয়ে আছে আপনার মধ্যে।।রুমা ফোন নম্বর দিয়ে বলেছিলো যোগাযোগ রাখবেন আর আজকের জন্য ধন্যবাদ ।। প্রথমে রুমাকে প্রাণ চঞ্চল উচ্ছ্বল মেয়ে বলে মনে হলেও আজ বুঝলাম ওর মধ্যে প্রবল ব্যাক্তিত্বের এক নিবিড় অরণ্যের গভীরতা আছে।। এরপর গল্প কোন দিকে টার্ণ নিলো নবীনের সাথে রুমার কোন সম্পর্ক গড়ে উঠলো কিনা নবীনের জীবনে আসলে কী ঘটেছিল নতুন বছরে নবীনের জীবনে নববর্ষের আলোকমালায় সাজলো কিনা জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে “নববর্ষের পর ” উপন্যাস।।
স্বপ্ন সৌধ্য – মলয় দাস (পরিযায়ী) [Bengali Story]
অনিমেষের স্বপ্ন পূর্ণ হলো অবশেষে, পঁচিশ তলা অট্টালিকায় থাকার স্বপ্ন , পঁচিশ তলার উচ্চতার মতো উঁচু তলায় অবাধ যাতায়াতের স্বপ্ন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের স্বপ্নে যে মাধবীলতার সৌরভে সুরভিত থাকার কথা ছিলো এখন তাতে শুধু মদিরা আর ধোঁয়ায় ধূসরিত ॥ উচ্চবিত্ত পরিবারের বাবা -মার একমাত্র সন্তান অনিমেষ, পড়াশুনায় তুখোড় ক্লাসের পরীক্ষায় কোনদিন প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়নি । মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এর পর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট পড়ার জন্য আমেরিকা উড়ে গিয়েছিল, কথা দিয়ে গিয়েছিল মাধবীকে ভবিষ্যতের সুরভী দিয়ে স্বপ্ন সৌধ্য গড়ার স্বপ্ন দেখার ॥ তারপর শুধু আকাশে ধোঁয়া আর ধোঁয়া যে পথ চলে গেছে …..॥ প্রথম বছর রেজাল্ট খুব খারাপ হলো, পরের বছর আরও! স্কলারশিপ পাওয়া ছাত্রর জন্য বাড়ি থেকে টাকা পাঠানো বন্ধ হলো, পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হলো, মাধবীলতার ফুলে ডরোথির পোকা ধরলো একটু একটু করে , শুকিয়ে গেলো মাধবীলতার বাগান ॥ মদ, চরস, হেরোইন আর ডরোথির নেশায় ভারতবর্ষ অস্তমিত হয় টেমসের জলে ॥ কর্পদকশূণ্য স্কলারের আশ্রয় হলো বিলেতের জেল, এদিকে একদিন লন্ডনের কাগজে বেরোলো বিখ্যাত ব্যবসায়ীর মৃত্যু ও তার স্ত্রীর আত্মহত্যা চৌধুরি সাম্রাজ্যের পতনের খবর ॥ দীর্ঘ কারাবাস কাটিয়ে অনিমেষকে ফেরত পাঠানো হলো ভারতে । বৃক্ষের পাতা ঝরে ও শুষ্ক হয় দুবার এক বসন্তে আর এক মৃত্যূর পর এ অনিমেষের মৃত্যু হয়েছিল অনেকদিন আগেই , অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায় আশ্রয় নেয় চৌধুরি সাম্রাজ্য কিনে নেওয়া মাধবীলতার রিয়েল এস্টেটের দারোয়ানের চাকরিতে ॥এখন সে বিশাল অট্টালিকায় থাকে, উচ্চবিত্তদের স্যালুট দেয় বকশিশ পায় তার স্বপ্ন পূরণের গল্পে আর কোন মাধবীলতার সৌরভ শোভায় সজ্জিত হয় না কোন ডরোথির আত্মত্যাগের ছলনার কথা লেখা থাকে না ॥
মলয় দাস (পরিযায়ী) | Malay Das
New Bengali Article 2023 | আধুনিক কবিতা ও অনুবাদ কবিতা
New Bengali Article 2023 | লেখক বনাম সাহিত্যিক
New Bengali Article 2023 | কবিতা – কী, কেন এবং পাঠকের দায়িত্ব
Bengali Article 2023 | জীবানন্দ মহাশয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
গীতাঞ্জলি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২৩ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন | বাঙালি সংস্কৃতির মননে রবি ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে এই ৫টি জিনিস | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেন বিখ্যাত | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবার নাম কি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু কত সালে | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ও বংশ পরিচয় | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার কাব্য সৌন্দর্য | গীতাঞ্জলি এর কবিতাসমূহ | গীতাঞ্জলি কাকে উৎসর্গ করা হয় | গীতাঞ্জলি কাব্য | গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদক কে | গীতাঞ্জলি কেন বিখ্যাত? | গীতাঞ্জলির বিখ্যাত কবিতা | গীতাঞ্জলি ১ | গীতাঞ্জলি গান | গীতাঞ্জলি গান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথের সাথে দেখা | স্মরণে রবি ঠাকুর | স্মরণে কবিগুরু | স্মরণে রবীন্দ্রনাথ | রবীন্দ্র স্মরণে কিছু কথা
bengali story new | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali story books for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali story books pdf | bengali story for kids | bengali story reading | short story | short story analysis | short story characteristics | short story competition | short bengali story definition | short story english | short story for kids | short bengali story generator | bengali story 2023 | short story ideas | short story length | long story short | long story short meaning | long bengali story | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2022 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | poetry competition crossword | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | bengali story writing | bengali story dictation | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali story news| article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder