Table of Contents
আ মরি বাংলা ভাষা (স্বাতন্ত্র্যে সমুজ্জ্বল) – প্রবোধ কুমার মৃধা | Bengali Language Interesting Facts
ভাষা কি?
মানুষের বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ভাব প্রকাশের বহুজনবোধ্য অর্থবোধক ধ্বনি-সমষ্টিকে ভাষা নামে অভিহিত করা হয়।
ভাষার ধর্ম
ভাষা মানুষ জন্মসূত্রে লাভ করে,এবং তা তার শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়ার মতোই স্বাভাৱিক প্রক্রিয়া । শিশুমনের বৃদ্ধির সাথে সাথে তার ভাষা অর্জনের সক্ষমতা বর্ধিত হতে থাকে। এই সক্ষমতা লাভের পথে কখনোই সজ্ঞান প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয় না। ভাষা ভাবের বাহন। দেশ-কাল-স্থান ভেদে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর ভিন্নতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাষার বৈচিত্র্য সর্বজন বিদিত। তবে ভাষা কেবল মানুষের চিন্তা বা অভিব্যক্তির বাহন শুধু নয়, ভাষা চিন্তা বা ভাবের জন্মদাতৃও।মঞ্চ অবলম্বন না পেলে লতা যেমন পল্লবিত হতে পারে না; মানুষের ভাব-ভাবনাগুলো তেমন ভাষা অবলম্বন ব্যতীত বিচরণের ক্ষেত্র হারায়। ভাষা-ই মানুষের অভিব্যক্তি প্রকাশের সর্বোৎকৃষ্ট ও প্রধান মাধ্যম। ভাব চলাচলের পথ হলো ভাষা। মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী। তাই তার ভাব প্রকাশের ভাষাকে অর্থবহ শব্দে রূপ দিতে সমর্থ হয়েছে। মনুষ্যেতর জীবজন্তু বা পশুপক্ষী তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশের উপযোগী রব বা আওয়াজের মাধ্যমে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। দুর্বোধ্য হলেও সেই ইঙ্গিতবহ আওয়াজ বা রবকে নিঃসন্দেহে তাদের ভাষা-ই বলা চলে।
সমগ্ৰ বিশ্ব জুড়ে বহু দেশ অবস্থিত। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বহু জাতির বাস। ভূখণ্ড ভেদে, জাতি ভেদে ভাষার ভেদও ভিন্ন ভিন্ন। বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় ৭১১১টি ভাষায় কথা বলা হয়। ভাষার এই সংখ্যা প্রতিনিয়তই পরিবর্তনশীল, কারণ পৃথিবীতে যেমন নতুন নতুন জাতি-গোষ্ঠী আবিষ্কৃত হচ্ছে, তেমন ভাষাও সৃষ্টি হচ্ছে। আবার প্রচলিত অনেক ভাষার বিলুপ্তি ঘটছে। বিশ্বে প্রায় ৪০% ভাষা এখন বিপন্ন ভাষা। দেখা যাচ্ছে, প্রায় ২৮৯৫ প্রকার ভাষা পৃথিবী থেকে অবলুপ্তির পথে, তার মধ্যে অনেক ভাষাই ইতিমধ্যে হারিয়ে গিয়েছে। সমীক্ষা বলছে, সারা বিশ্বে প্রায় অর্ধেকের বেশি জনসংখ্যা মাত্র ২৩ টি ভাষাকে তাদের কথা বলার ভাষা হিসেবে ব্যবহার করে ।
মাতৃভাষার স্বরূপ [Bengali Language Interesting Facts]
মাতৃভাষা মায়ের ভাষা অর্থাৎ জাতক গৃহ পরিবেশ তথা সামাজিক পরিবেশ থেকে যে ভাষাটি সাবলীলভাবে অনায়াসে শিখে ফেলে এবং কোন রকম শিক্ষা-দীক্ষা বা তালিম ব্যতিরেকে চিন্তা ভাবনার বিনিময় ঘটাতে সক্ষম হয় তাকে মাতৃ ভাষা বলে। মাতৃভাষা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সুচিন্তিত অভিমতটি প্রণিধানযোগ্য, ”আমাদের মধ্যে যাহা কিছু অমর এবং আমাদেরকে যাহা কিছু অমর করিবে সেই সকল মহাশক্তিকে ধারণ করিবার, পোষণ করিবার এবং প্রকাশ করিবার এবং সর্বত্র প্রচার করিবার একমাত্র উপায় যে মাতৃভাষা।” বিকল্প যত ভাষা-ই সে আয়ত্ব করুক না কেন, মাতৃভাষার উপর দক্ষতা লাভ তার সহজাত। মাতৃভাষা কাঁদা-হাসার ভাষা, স্বপ্ন দেখার ভাষা। আমরা বাঙালি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা; মাতৃদুগ্ধ সম। আমাদের প্রাণের ভাষা, গানের ভাষা, আমাদের গর্বের ভাষা।
বাংলা ভাষা উদ্ভবের ইতিহাস [Bengali Language Interesting Facts]
খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা গোত্রের মধ্যে বাংলা ভাষার সন্ধান মেলে বলে কোন কোন ভাষা পণ্ডিতের অনুমান। সংস্কৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি, প্রচলিত এই ধারণা চলে আসলেও অধিকাংশ ভাষাবিদের দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলা ভাষা এসেছে মাগধী প্রাকৃত এবং পালির মতো ইন্দো আর্য ভাষা থেকে। বাংলা ভাষা বিকাশের ইতিহাস অতি প্রাচীন, ১৩০০ বছরেরও পুরনো। চর্যাপদই হলো এই ভাষার আদি নিদর্শন। আর সেই সূত্রে প্রথম পদকার বা কবি কাহ্নপা-কে বাংলা ভাষার জনক রূপে ধরা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা চলে, ১৭৪৩ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগীজ ভাষায় প্রথম বাংলা ব্যাকরণ প্রকাশ পেয়েছিল, লেখক ছিলেন, মানোএল দা আসসুম্পা সাঁউ। ‘এ গ্ৰামার অব দি বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ’ নামে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশ পেয়েছিল পূর্ণাঙ্গ একটি বাংলা ব্যাকরণ, ১৭৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। প্রণেতা ছিলেন নাথানিয়োল ব্রাসি হ্যালহেড। ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়ম কেরি এবং ১৮২৬ খ্রিষ্টাব্দে রামমোহন রায় উভয়েই ইংরেজি ভাষায় দুটি উল্লেখযোগ্য বাংলা ভাষা বিষয়ক ব্যাকরণ রচনা করেছিলেন। তবে ১৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ নামে রামমোহন রায় রচিত গ্ৰন্থটিই বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম বাংলা ব্যাকরণ।
বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম। যেখানে বিশ্ব ভাষা তালিকায় মাতৃভাষা রূপে বাংলা ভাষার অবস্থান পঞ্চম। সারা বিশ্বে বাংলা ভাষাভাষী জনসংখ্যা ৩০কোটিরও অধিক। এর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশে ২৬ কোটিরও বেশি এবং ৪ কোটিরও বেশি বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বাস করেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ভারতে প্রচলিত মোট ভাষার সংখ্যা কমবেশি প্রায় ১৬৫২। তবে সংবিধান স্বীকৃত সরকারি ভাষার সংখ্যা ২২, তার মধ্যে বাংলা ভাষার স্থান ২য়, হিন্দির ঠিক পরেই। নিখিল-বিশ্ব ভাষা-ভিড়ের তালিকায় ১ থেকে ১০ এর মধ্যে ঠাঁই করে নিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা স্বতন্ত্র কিছু বৈশিষ্ট্যের দাবি রাখে। যেমন,
১। শব্দভাণ্ডার [Bengali Language Interesting Facts]
যে কোন ভাষার মুখ্য সম্পদ হলো তার শব্দভান্ডার। যে ভাষার ভাণ্ডার শব্দ সম্ভারে যত সমৃদ্ধ, সে ভাষা ততই শক্তিশালী ও উন্নত। শব্দ শক্তির প্রধান উৎস দুটি। (ক) ধাতুতে বা শব্দে প্রত্যয় যোগে নতুন নতুন শব্দ গঠন (খ) অপর ভাষা থেকে শব্দ গ্ৰহণ ।
প্রাচীন ভাষার মধ্যে সংস্কৃত ও গ্ৰীক ভাষা নতুন শব্দ সৃষ্টিতে ছিল অনন্য ক্ষমতার অধিকারী ।আধুনিক ভাষা সমূহের মধ্যে ইংরেজি অপর ভাষার শব্দ গ্ৰহণে অপরাজেয়। এক্ষেত্রে উভয় উৎস থেকে নতুন শব্দ সঞ্চয়ে নব্য ভারতীয় আর্য ভাষার মধ্যে বাংলা যথেষ্ট মুনশিয়ানার স্বাক্ষর রেখেছে। বৃদ্ধি করেছে তার শব্দভাণ্ডারের শক্তি। মৌলিক ও আগন্তুক এই দু’ প্রকার শব্দ দ্বারা বাংলা শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ।
২। লিখিত ও কথ্য পৃথক দুই রূপ [Bengali Language Interesting Facts]
দেশি কিংবা বিদেশি, সব ভাষাতেই কথ্য ও লিখিত রূপের মধ্যে কমবেশি পার্থক্য থাকেই। তবে বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে ব্যাপারটি উল্লেখযোগ্যভাবে বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যে ভরা।
- কথ্য ভাষা মুখের ভাষা, লেখ্য ভাষা কেতাবি ভাষা।
- কথ্য ভাষা শ্রুতি নির্ভর, লেখ্য ভাষা দৃষ্টি নির্ভর।
- কথ্য ভাষায় ব্যাকরণের কড়াকড়ি নেই, লেখ্য ভাষা ব্যাকরণের নিগড়ে আবদ্ধ।
- কথ্য ভাষা বিমূর্ত, লেখ্য ভাষা মূর্ত।
কথ্য ভাষা ও লেখ্য ভাষার মধ্যে আরো বহু প্রকার বৈসাদৃশ্য বর্তমান, তবে তার বর্ণনা দীর্ঘায়িত করা এক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক।
৩। লেখ্য ভাষার দুই রূপ, সাধু ও চলিত [Bengali Language Interesting Facts]
- সাধু ও চলিত ভাষার মধ্যে পার্থক্য মূলত সর্বনাম ও ক্রিয়াপদে।
- বাংলা লেখ্য গদ্যের অপেক্ষাকৃত প্রাচীন রূপ হলো সাধুভাষা; আর নবীন বা বর্তমান বহুল প্রচলিত রূপটি হলো চলিত।
- সাধুভাষায় তৎসম শব্দের আধিক্য, পক্ষান্তরে চলিত ভাষায় তদ্ভব, অর্ধ-তৎসম, দেশি ও বিদেশি শব্দের প্রয়োগ অধিক।
- চলিত ভাষায় আঞ্চলিকতার প্রভাব থাকে বেশি, সাধু ভাষার চাল অতি গম্ভীর।
উদাহরণ: সাধুরীতি –’ওপারে গিয়াই মোটর গাড়িতে চড়িব বলিয়া আহারান্তে সাজসজ্জা করিয়া প্রস্তুত হইয়া বসিয়া আছি। গিয়া শুনিলাম ব্রহ্মপুত্রে বন্যা আসিয়াছে বলিয়া এখনো ঘাটে মোটর নামাইতে পারে নাই।’
চলিত রীতি: ‘ওপারে গিয়েই মোটর গাড়িতে চড়ব বলে খেয়ে দেয়ে সেজে গুজে গুছিয়ে বসে আছি –গিয়ে শুনি ব্রহ্মপুত্রে বান এসেছে বলে এখনো ঘাটে মোটর নামাতে পারেনি।’
৪। বাংলা ব্যাকরণ স্ত্রীলিঙ্গ মুক্ত
দেশি-বিদেশি সব ভাষার ব্যাকরণে পুং লিঙ্গ, স্ত্রী লিঙ্গ, ক্লীব লিঙ্গ ইত্যাদি লিঙ্গ ভেদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে।বাংলা ভাষার ব্যাকরণেই কেবল স্ত্রী লিঙ্গ নেই; আছে কিছু স্ত্রীবাচক শব্দ। অর্থাৎ বাংলা ব্যাকরণে স্ত্রীলিঙ্গ না থাকলেও বাংলা ভাষার অভিধানে আছে। সাধারণত কয়েকটি প্রত্যয় যোগে বাংলায় স্ত্রীলিঙ্গ বাচক পদ নিষ্পন্ন হয়ে থাকে। যেমন,
- ই এবং ঈ প্রত্যয় যোগে। দাদা – দিদি, বেটা – বেটি, অভাগা – অভাগী, বোষ্টম – বোষ্টমী ইত্যাদি।
- নি এবং নী প্রত্যয় যোগে। গয়লা – গয়লানি, চাকর – চাকরানি, চৌধুরী - চৌধুরানী ইত্যাদি।
- অনেক সময় স্ত্রীবাচক শব্দ যোগ করে বাংলা স্ত্রীলিঙ্গ নির্দেশ করা হয়। যেমন, মাদি ঘোড়া, মাদি কুকুর, মেয়ে মাস্টার, মেয়ে ডাক্তার ইত্যাদি।
৫। বাগ্ধারা ও প্রবাদ-প্রবচন [Bengali Language Interesting Facts]
সুবিন্যস্ত শ্মশ্রু মন্ডিত মুখমণ্ডল যেমন পুরুষের পৌরুষ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির সহায়ক; তেমন বাংলা ভাষার বাক্য গঠনে বাগ্ধারা, প্রবাদ-প্রবচন রূপ শব্দগুচ্ছ বা বাক্যাংশগুলি বাক্যের শ্রুতিমধুরতা ও অর্থসৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্ৰহণ করে। প্রায় সকল ভাষাতে বাগ্ধারা, প্রবাদ-প্রবচন আছে, তবে বাংলা ভাষায় এই সমস্ত অলংকার সদৃশ উপাদানগুলির প্রাচুর্য ও প্রয়োগ বাংলা বাক্য বিন্যাসকে এক উচ্চ আঙ্গিকে উন্নীত করেছে।
- বাগ্ধারা: বাচন ভঙ্গি বা কথা বলার ধরণ। যখন যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছ দ্বারা সাধারণ অর্থ ছাপিয়ে বিশেষ অর্থের দ্যোতনা সৃষ্টি করে তখন তাকে বাগ্ধারা বলে। বিশিষ্ট অর্থ সমন্বিত হওয়ার কারণে বাগ্ধারা বাক্যকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে। বাগ্ধারার নমুনা: অকাল কুষ্মাণ্ড, আকাশ কুসুম, গোবর গণেশ,বিড়াল তপস্বী ইত্যাদি।
প্রবাদ-প্রবচনের মধ্যে বাঙালির জীবন ধর্ম,সংস্কৃতি,আচার-বিশ্বাস ও রসবোধের পরিচয় মেলে।
- প্রবাদ: মানব সমাজের যুগ যুগ ধরে সঞ্চিত অভিজ্ঞতালব্ধ জীবন সত্যের স্মারক স্বরূপ জনপ্রিয় সংক্ষিপ্ত উক্তিকে প্রবাদ বলে। প্রবাদ লোকসমাজের বা কালের সৃষ্টি। নমুনা: অভাবে স্বভাব নষ্ট।অর্থই অনর্থের মূল,ইত্যাদি।
- প্রবচন: বিদগ্ধ মণীষী, প্রজ্ঞাবান, মননশীল বা সৃজনশীল ব্যক্তিবর্গের অভিজ্ঞতা প্রসূত ব্যক্তিগত সৃষ্টি হলো প্রবচন। নমুনা: ‘চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী।’ – কাশীরাম দাস।
বাগ্ধারা বা প্রবাদ-প্রবচন ভাষার অলংকার স্বরূপ। ইংরেজিতে যেমন, Beat around the bush, no pain no gain, call in a day, honesty is the best policy, etc.
৬। চিহ্ন(mark)
বাংলা ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ ১০টি যতিচিহ্ন আছে। যেমন, দাঁড়ি (।), কমা (,), জিজ্ঞাসা চিহ্ন (?), ইত্যাদি ইত্যাদি। সব ভাষাতেই আছে। তবে এতো সংখ্যক দেখা যায় না। এছাড়া আছে শব্দ ‘চিহ্ন’, যার গুরুত্ব কোন অংশে লঘু নয়। বিশেষ করে বাংলা প্রবাদে এই সংকেত চিহ্নের ব্যবহার অতি মাত্রায় পরিলক্ষিত হয়। যেমন, ‘সাপের হাঁচি বেদে চেনে।’ ‘চেনা বামুনের পৈতে লাগে না।’ বাক্য দুটিতে ‘হাঁচি’ এবং ‘পৈতে’ শব্দ দুটি ‘চিহ্ন’ বা প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
৭। শব্দদ্বৈতের ব্যবহার
শব্দদ্বৈতের রমরমা বাংলা ভাষায় যত বেশি অন্য কোন আর্য ভাষায় ততটা দেখা যায় না। বিধি ও বৈচিত্র্যের দিক দিয়েও বাংলা শব্দদ্বৈত স্বাতন্ত্র্যের দাবিদার। একই শব্দকে দুই বা তাহার বেশিবার পুনরাবৃত্তির (repetition) দ্বারা দীর্ঘকালবর্তিতা, ব্যাপকতা বা প্রগাঢ়ত্ব প্রকাশ করা হয়ে থাকে। যেমন, বারে বারে, মানুষে মানুষে, তলে তলে, ভয়ে ভয়ে ইত্যাদি। ভয়ে ভয়ে আছি। অর্থাৎ ভয় বার বার হচ্ছ। এখানে ভয়ের বিস্তৃতি বা ব্যাপকতা বোঝানো হয়েছে।
৮। ধ্বনাত্মক শব্দ [Bengali Language Interesting Facts]
শব্দ উচ্চারণে অর্থের সাথে সাথে বাহ্য একটা ধ্বনি ঝংকৃত হতে থাকলে তাকে ধ্বনাত্মক শব্দ বলে। যেমন, কটকট, ঝনঝন ভোঁভোঁ, কড়কড় ইত্যাদি অজস্র। বাংলা ভাষায় বিশেষ একটা বিশেষত্ব লক্ষ্য করা যায়। যে সমস্ত অনুভূতি শ্রুতিগ্ৰাহ্য নয়, সেগুলিকে ও আমরা ব্যবহার করে থাকি। ধ্বনাত্মক শব্দ সমূহের শ্রেণি আলাদা। এদের প্রকৃতিও আলাদা। তাই এদেরকে অর্থ সমৃদ্ধ শব্দ না বলে ধ্বনি বলা উচিত। অভিধান বহির্ভূত এই সকল ধ্বনি সমূহ বাংলা ভাষাকে সরস, সুবোধ্য ও শ্রুতিমধুর রূপ দান করেছে। ধ্বনির অনুকরণে ধ্বনির ব্যবহার ইংরেজি ভাষাতেও বর্তমান। যেমন, ding-dong ইত্যাদি। তবে বাংলা ভাষার তুলনায় তা যৎসামান্যই বলা চলে। বাংলা ধ্বনাত্মক শব্দ ভাব বা ক্রিয়া বোঝাতে প্রয়োগ হয়ে থাকে। ‘কট’ একটি শব্দ মাত্র, কিন্তু ‘কটকট’ বলতে বেদনার স্পন্দন বা ক্রিয়া নির্দেশ করে।
৯। ইঙ্গিত বাক্য [Bengali Language Interesting Facts]
কথ্য হোক বা লিখিত হোক, ভাষা নিয়ে বিচার বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, কেবল মাত্র ভাষা উচ্চারণের দ্বারা ভাব প্রকাশ সকল সময় সম্ভব নয়। আমাদের কথার সঙ্গে থাকে সুর, থাকে হাত-মুখের ভঙ্গি; এভাবেই কাজ চলে। কম-বেশি কিছুটা অর্থ, কিছুটা ইঙ্গিতের উপর বিষয়টি নির্ভর করে। অর্থবিশিষ্ট শব্দের দ্বারা যে সব কথা বোধগম্য হয় না বা অর্থ গ্ৰহণে বিলম্ব ঘটে, সে জন্য ভাষা বহুবিধ ইঙ্গিত বাক্যের আশ্রয় নিয়ে থাকে। তবে এই ইঙ্গিত বাক্যগুলি অভিধান বা ব্যাকরণে অপাংক্তেয়। তারা বাইরে বাস করে, কিন্তু কার্যকালে এদের প্রয়োজন অপরিহার্য। বাংলা ভাষায় এই ইঙ্গিত বাক্যের ব্যবহার যত বেশি, এমন আর কেন ভাষায় আছে বলে জানা যায় না। ধ্বনির এরূপ অনুকরণমূলক শব্দ অন্য ভাষাতে আছে, তবে বাংলার বিশেষত্ব এটাই যে,এই ধ্বনিগুলি সর্বত্র বাস্তব ধ্বনির অনুকরণ নয়, সময় সময় ধ্বনির কল্পনামাত্র। যেমন, মাথা টিপটিপ করছে, দপদপ করছে, কনকন করছে ইত্যাদি শব্দে মাথার বেদনা বোধকে কাল্পনিক ধ্বনির ভাষায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। এই ধ্বনিগুলিকে বিকল্প ভাষায় বোঝাতে গেলে বিশদ ব্যাখ্যা দরকার; তাতেও এর অনির্বচনীয়তাটুকু অন্তরে অনুভবগম্য হয় না। বাংলা ভাষায় এই ধ্বনিমূলক অনুকার শব্দ সমূহ প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। ভাষাতে এই শব্দগুলি জোড় শব্দ, কারণ জোড় নাহলে ভাবের বা ক্রিয়ার ব্যাপকত্ব বোঝানো দুরূহ হয়ে পড়ে। যেমন, ‘সাঁ’ করে বলতে ক্ষণিকতা প্রকাশ পায়, কিন্তু ‘সাঁসাঁ’ করে বলতে প্রকাশ পায় বিষয়টির ব্যাপকতা।
ইংরেজি ভাষাতেও জোড় শব্দ আছে। যেমন, nick-nack, riff-raff ইত্যাদি।
বাংলায় যেমন টুংটাং, ইংরেজিতে ding-dong, ঠংঠং, ding-a-dong ইত্যাদি।
১০। সুভাষণ রীতি [Bengali Language Interesting Facts]
প্রচলিত প্রথা বা পরম্পরাগত কুসংস্কার যাই বলি না কেন, অমঙ্গলসূচক বা অকল্যাণকর কোন কোন শব্দ পরিহার করে কল্যাণকর ইতিবাচক শব্দের সাহায্যে একই অর্থ প্রকাশ করা হয়। বাক্যের মধ্যে অমঙ্গলবাচক শব্দের স্থলে মঙ্গলসূচক শব্দ প্রয়োগের এই রীতিকে ভাষাতত্ত্বে সুভাষণ রীতি বলে। ভালো বিশেষণ দ্বারা মন্দকে সুভাষিত করা হয়। এই রীতি অতি প্রাচীনকাল থেকে লোক সমাজে ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। সুভাষণ রীতি প্রায় সব ভাষাতেই আছে,তবে বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে এই রীতির প্রয়োগ ও প্রসার বিশেষ ঐতিহ্যবাহী।
উদাহরণ: মারা যাওয়া > সংস্কৃতে পঞ্চত্বপ্রাপ্তি > বাংলায় স্বর্গলাভ বা পরলোকগমন।
যদি তিনি মারা যান > যদি তাঁর ভালোমন্দ কিছু ঘটে যায়। চাল ফুরিয়েছে > চাল বাড়ন্ত।
কখনও কখনও বিপরীতার্থক শব্দযোগে ইতিবাচক অর্থ প্রকাশ করা হয়। যেমন, এখন তাহলে যাই > এখন তাহলে আসি।
১১। শ্রুতিমধুর ভাষা [Bengali Language Interesting Facts]
পৃথিবীতে প্রচলিত হাজার হাজার ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষা সুমধুর বা শ্রুতিমধুর ভাষার শংসাপত্র লাভ করেছে। এ অভিধা প্রদান আমাদের নয়। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে ‘ইউনেস্কো’ প্রেরিত একদল ভাষাবিজ্ঞানী দীর্ঘ গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রুতিমধুর ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন আমাদের মাতৃভাষা ‘বাংলা’-কে। এই তালিকায় যথাক্রমে ২য় ও ৩য় স্থানে আছে স্প্যানিস ও ডাচ্ ভাষা। এখনও পর্যন্ত বাংলা ভাষা সেই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। আপামর বাঙালি তথা বাংলা ভাষাভাষী জনগণের কাছে বিষয়টি অত্যন্ত গর্বের যে, বাংলা ভাষা-ই বিশ্বের সব থেকে শ্রুতিমধুর ভাষা। সম্ভবত বাংলা ভাষা হলো এমন একটা ভাষা, যার প্রতিটা ব্যঞ্জন বর্ণের সাথে স্বর বর্ণের উচ্চারণ মিশে প্রতিটা পদকে সুমধুর করে তুলেছে।
বাক্যের পদ বিন্যাস, তার শব্দ চয়ন, ছন্দ-অলংকার, কাব্যিক সুষমা, সব মিলিয়ে বাংলা ভাষা হৃদয়-মন আকৃষ্ট করতে অতুলনীয়। শব্দ চয়ন ও ছন্দের লালিত্যে সৃষ্টি করা যায় সংগীত ও নৃত্যের নান্দনিক মূর্ছনা। যেমন,
”কেতকীকেশরে কেশপাশ করো সুরভি,
ক্ষীণ কটিতটে গাঁথি লয়ে পরো করবী,
কদম্বরেণু বিছাইয়া দাও শয়নে,
অঞ্জন আঁকো নয়নে।
তালে তালে দুটি কঙ্কণ কণকনিয়া
ভবনশিখীরে নাচাও গণিয়া গণিয়া
স্মিত বিকশিত বয়নে,
কদম্বরেণু বিছাইয়া ফুলশয়নে।”
–- রবীন্দ্রনাথ।
মানব হৃদয়ের সর্বক্ষণের সকল অবস্থার ভাব-ভাবনার উপযোগী ভাষা যুগিয়ে বিপুল সাহিত্য সৃষ্টির মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে যে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন তার জন্য রবীন্দ্রনাথের কাছে আমরা চির ঋণী। বাংলার বিশিষ্ট সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধতম জন্ম বার্ষিকীতে সগর্বে ঘোষণা করেছিলেন, ‘বাংলা পৃথিবীর সবথেকে শ্রুতিমধুর ভাষা।’
বাংলা ভাষার খ্যাতি
(ক) জাতীয় স্তরে [Bengali Language Interesting Facts]
- বহু ভাষাভাষী ও বহু সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের বাস আমাদের ভারতবর্ষে। ভারতের জাতীয়স্তরের ভাষা সমূহের মধ্যে বাংলা ভাষার স্থান ২য়। ভারতের জাতীয় সংগীত এই বাংলা ভাষায় রচিত। রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’ শিরোনামের পাঁচ স্তবকের কবিতা, যেটি ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে। এবং ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের এক সভায় প্রথম গীত হয়েছিল। সংগীতটিকে ভারতের জাতীয় সংগীত রূপে গ্ৰহণ করার প্রস্তাব প্রথম দিয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র বোস। স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ২৪শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের এক অধিবেশনে ‘জনগণমন অধিনায়ক’ সংগীতটিকে ভারতের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্ৰহণ করার কথা সরকারিভাবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে পাঁচ স্তবকের ১ম স্তবকটি আমাদের জাতীয় সংগীত রূপে দেশে-বিদেশে যথাযোগ্য মর্যাদাসহ সম্মানিত হয়ে আসছে। বাংলা ভাষার এ-এক অনন্য গৌরব।
- পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ত্রিপুরার উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশে, অসম প্রভৃতি রাজ্যের সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে ব্যবহার করা হয়।
- কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সরকারি ভাষা হিন্দি-ইংরেজি হলে ও বাংলা ভাষা সেখানকার একক সর্বাধিক কথ্য ভাষা।এই ভাষায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ (২৮.৪৯) অধিবাসী কথা বলে।
(খ) আন্তর্জাতিক স্তরে [Bengali Language Interesting Facts]
- ভারতীয় উপমহাদেশে তথা এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার ‘নোবেল’ লাভ করেছিলেন দার্শনিক কবি রবীন্দ্রনাথ, ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে তাঁর ‘গীতাঞ্জলি’ নামক কাব্য গ্ৰন্থটির জন্য। যেটি মূলত লেখা হয়েছিল বাংলা ভাষায়। পরে অবশ্য বিশ্বের বহু ভাষায় অনুদিত হয়েছিল। তাই তো বাংলার আর এক কবি বাংলা ভাষার মহিমা প্রকাশ প্রসঙ্গে গেয়েছিলেন, ‘বাজিয়ে রবি তোমার বীণে, আনল মালা জগৎ জিনে …।’ রবীন্দ্রনাথের ‘নোবেল’ জয় শুধু বাংলা ভাষাকে নয়, সমগ্ৰ বাঙালি জাতিকে বিশ্বের দরবারে গৌরবান্বিত করেছে।
- মাতৃভাষা একটা জাতির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয় বহন করে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রতিষ্ঠার উৎস লুকিয়ে আছে মাতৃভাষা বাংলাকে ভিন ভাষা জল্লাদদের কবল থেকে মুক্ত করে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে বাঙালি তরুণদের আত্মবলিদানকে স্মরণীয় করে রাখার মধ্যে । মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে শিলচর ও ঢাকায় আন্দোলনরত বহু তরুণের প্রাণ যায়। অবশেষে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারি বহু প্রাণ ও বহু রক্তের বিনিময়ে বাংলার দামাল ছেলেরা ছিনিয়ে আনে মাতৃভাষার অধিকার। প্রতিষ্ঠা পায় মাতৃভাষা বাংলা। বাঙালি তরুণদের আত্মবলিদানের মহান আদর্শকে প্রতিষ্ঠা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ‘ইউনেস্কো’ ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ‘রূপে ঘোষণা করে। দিনটি ‘অমর একুশে’ নামেও খ্যাত।
- বাংলাদেশ সরকার বাংলা ভাষাকে তাদের জাতীয় তথা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিয়েছে। জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা…’ বাংলা ভাষায় রচিত।
- আফ্রিকান দেশ ‘সিয়েরা লিওন ‘২০০২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা ভাষাকে দেশের ২য় রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রদান করেছে।
- বাংলা ভাষা অস্ট্রেলিয়ার সংসদ স্বীকৃত ভাষা। সেখানকার ৪২৯ টি ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষার অবস্থান ২৪তম। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের আদম শুমারি অনুযায়ী ৭০ হাজার ১১৫ জন বাংলা ভাষাভাষী মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বাস করে।
- প্রায় প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষার চর্চা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান বহির্বিশ্বের ৪টি মহাদেশ জুড়ে ৩০টি দেশের ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ চালু আছে ।এই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা ও চর্চা হয়।
উপসংহার
পরিশেষে এ কথা বলে শেষ করব যে, আত্মবিকাশের ভাষা মাতৃভাষা বাংলাকে সযত্নে গৌণ করে দিয়ে আর্থিক বিকাশের ভাষা শিক্ষার মোহে অধিকাংশ শিক্ষিত বাবা-মায়ের মধ্যে ভাবী প্রজন্মকে ইংরেজি শিক্ষায় কেতা-দুরস্ত করে তুলবার প্রবণতা বাড়ছে। তাতে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংকট সৃষ্টির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। বহির্বিশ্বে বাড়ছে বাংলা ভাষার চর্চা আর আমরা বাঙালিরা অনেকে আমাদের মাতৃভাষাকে কালের গর্ভে নিমজ্জিত করতে দু’বার ভেবে দেখছি না। বাংলা না শেখা, বাংলায় কথা বলতে না পারা বিষয়টিকে অত্যন্ত গৌরবের মনে করে এক শ্রেণির অভিভাবক আত্মশ্লাঘায় মগ্ন। সময় এসেছে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে গঠনমূলক চিন্তা -ভাবনা করার, নইলে শেষের সেদিন যথেষ্ট অনুশোচনার হতে পারে !
তথ্য সংগ্ৰহ
১। বাংলা শব্দতত্ত্ব – রবীন্দ্রনাথ
২। ভাষার ইতিবৃত্ত – সুকুমার সেন
৩। গুগল
প্রবোধ কুমার মৃধা | Probodh Kumar Mridha
100 questions and answers about Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর
Prem Sadhanar Nayika | প্রেম সাধনার নায়িকা : নানা আঙ্গিকে | New Article 2023
Shankhakshetra Puridham and Madala Panji | শঙ্খক্ষেত্র পুরীধাম ও মাদলা পাঁজির রাজবৃত্তান্ত
Pancha Byanjan | পঞ্চব্যঞ্জন | জয়ন্ত কুমার সরকার | রম্যরচনা | 2023
amazing facts in bengali | interesting facts about india in bengali | importance of bengali language | bengali culture facts | unique bengali words | fun facts about bengal | bengali trivia | 10 Interesting Facts About The Bengali Language | Six Interesting Facts About The Bengali Language | Interesting Facts About the Bengali Language | Sabuj Basinda | facts about bengali culture | importance of bengali language in bengali | information about bengali language | facts about bengali girl | High Challenger | bengali facts with answer | importance of bengali language | bengali culture and tradition | Bengali language Facts for Kids | bengali-language – Interesting Facts | Bengali language factsheet | 80 Interesting Facts About West Bengal