Bengali Book | Bengali Book Fair | বাঙ্গালির বই ও বইমেলা

Sharing Is Caring:

বাঙ্গালির বই ও বইমেলা | Bengali Book | Bengali Book Fair

“কে জানিত মানুষ অতীতকে বর্তমানে বন্দী করিবে! অতলস্পর্শ কালসমুদ্রের ওপর কেবল এক-একখানি বই দিয়া সাঁকো বাধিয়া দিবে।”
—- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সত্যিই বই ধরে রেখেছে আমাদের অতীতকে। আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতির পরম্পরাকে ভুলতে দেয়নি বই। বইয়ের সূচনা হয়েছিল পুঁথি থেকে। পুঁথি থেকে বই। বই থেকে বইমেলা (Book Fair) —
আমাদের এক অভাবনীয় প্রাপ্তি। ‌

আমাদের দেশে বইমেলার (Book Fair) ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। কিন্তু মেলায় বই বিক্রির ইতিহাস অনেক পুরাতন। উনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে ভারতীয় জনমানসে স্বদেশ চেতনা জাগিয়ে তুলতে প্রবর্তন হয়েছিল চৈত্র বা হিন্দু মেলার। এই মেলায় স্বদেশী শিল্প দ্রব্যের পাশাপাশি প্রথম আলাদা করে বই বিক্রি ও বইয়ের প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছিল।

মনমোহন বসু সম্পাদিত “মধ্যস্থ” পত্রিকার ১২৭৯ বঙ্গাব্দের ২৭শে মাঘ প্রকাশিত সংখ্যায় এই তথ্যের উল্লেখ রয়েছে। মেলায় বই বিক্রির এটাই সম্ভবত সবচেয়ে পুরাতন লিখিত প্রমাণ। সেই সময়ে মেলার উদ্যোক্তাগণ সম্ভবত চেয়েছিলেন মানুষের সাথে সরাসরি বইয়ের যোগাযোগ ঘটিয়ে দিতে। সেই উদ্যোগ অনেকটাই সফল হয়েছে। এখন সময় বদলে গেছে। দিকে দিকে বইমেলার (Book Fair) সূচনা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এখন বইমেলা (Book Fair) হয়। ‌বিশ্বের প্রথম বইমেলা (Book Fair) শুরু হয় জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে বইমেলা (Book Fair) শুরু হয়েছিল পঞ্চদশ শতকে। মুদ্রণ যন্ত্র আবিষ্কারক ইয়োহানেস গুটেনবার্গ থাকতেন ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে সামান্য দূরের মেঞ্জ শহরে। তাঁর আবিষ্কৃত ছাপাখানার যন্ত্র বইয়ের জগতে নিয়ে আসে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। তিনি নিজের ছাপাখানার যন্ত্রাংশ এবং ছাপানো বই বিক্রির জন্য ফ্রাঙ্কফুর্টে আসেন। গুটেনবার্গের দেখাদেখি ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের স্থানীয় কিছু বই বিক্রেতাও তাদের প্রকাশিত বই নিয়ে বসতে থাকে। আর এগুলো কিনতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষও আসতে শুরু করল। সেই আসা-যাওয়া থেকেই জমে উঠতে থাকে ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলা (Book Fair)। বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলা (Book Fair) ঐতিহ্য পেতে শুরু করে। ১৯৪৯ সালে এই মেলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয় ‘জার্মান প্রকাশক সমিতি’। আর ১৯৬৪ সাল থেকে এই মেলা পেয়ে যায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে এই মেলা শুরু হয়। মেলার সময়কাল পাঁচ দিন। মেলার আয়োজক “জার্মান পাবলিশার অ্যান্ড বুক সেলার অ্যাসোসিয়েশন”। প্রতি বছরই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার প্রকাশক, বিক্রেতা, লেখক, পাঠক, দর্শক ও সাংবাদিক সহ বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠে এই মেলা প্রাঙ্গণ। ‘ন্যাশনাল বুকট্টাস্ট’ ১৯৬৯ খ্রীঃ মুম্বাই শহরে যে বই মেলার ব্যবস্থা করে তাই সম্ভবত ভারত অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় গ্রন্থমেলা। এই বুকট্রাষ্টের উদ্যোগে ১৯৭২ সালে দিল্লীতে শুরু হয় প্রথম বিশ্ব বইমেলা (Book Fair)। মাদ্রাজে ১৯৭৪ সালে একই উদ্যোগে বইমেলার উদ্ভব হয়। কলকাতা বইমেলা (Book Fair) শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। ১৯৮৪ সালে আন্তর্জাতিক বইমেলার স্বীকৃতি পায়।

১৯৭৫ সালে কলকাতার চোদ্দোটি প্রকাশক ও পুস্তকবিক্রেতা সংস্থাকে নিয়ে বিমল ধরের উদ্যোগে গঠিত হয় পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড। এই সংস্থা প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল কলকাতায় বার্ষিক বইমেলার (Book Fair) আয়োজন। বিমল ধরের সঙ্গে ছিলেন এম. সি. সরকার অ্যান্ড সনস সংস্থার সুপ্রিয় সরকার, দাশগুপ্ত অ্যান্ড কোম্পানির প্রবীর দাশগুপ্ত, সাংবাদিক অতীন রায়, জিজ্ঞাসা প্রকাশনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশকুমার কুণ্ডা ও সুশীল মুখোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। প্রথমে এই সংস্থার নাম ছিল ‘পাবলিশার্স গিল্ড’। কিন্তু গিল্ড সংবিধান তৈরি হওয়ার পর সংস্থার নাম বদলে রাখা হয় ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড’। সুশীল মুখোপাধ্যায় গিল্ডের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালেই কলকাতা তথ্যকেন্দ্রে গিল্ড ‘ওয়ার্ল্ড অফ পেপার ব্যাকস’ নামে একটি বইসংক্রান্ত প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এরপরই শুরু হয় কলকাতা বইমেলার চিন্তাভাবনা। সর্বভারতীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে কলকাতা বইমেলার (Book Fair) পোশাকি নামকরণ হয় ‘কলিকাতা পুস্তকমেলা’ বা ইংরেজিতে ‘ক্যালকাটা বুক ফেয়ার’। ১৯৭৬ সালে প্রথম কলকাতা বইমেলার (Book Fair) আয়োজন করা হয়।

বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ক যত নিবিড় ও ঘনিষ্টতর হবে, সেই মানুষ তত উন্নত চিত্তের অধিকারী হবে। বিশ্বের সকল জ্ঞানীগুণী, বিজ্ঞানী, দার্শনিক, বিপ্লবী এবং স্মরণীয় ব্যক্তি, প্রত্যেকের জীবনই বইয়ের সঙ্গে ছিল ঘনিষ্ট সম্পর্ক। বিশ্বের ইতিহাসে তাকালে দেখা যায়, বিপ্লবী নেতা চে’গুয়েভারা সবসময় বন্দুকের সাথে পাবলো নেরুদার ‘কান্তো জেনারেল’ বইটি রাখতেন; আলেকজেন্ডার দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বই পড়ে অতিবাহিত করতেন। বইমেলা (Book Fair) বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতির এবং জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে। বইমেলার (Book Fair) মতো এত বড় সাংস্কৃতিক উৎসব আর নেই। কিন্তু এই সাংস্কৃতিক উৎসবে কি পরিমাণ মানুষের উপস্থিতি! বইমেলার (Book Fair) ঢেউ কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে পৌঁছাতে পারেনি। এ জন্য আমাদের রাষ্ট্র ও বৌদ্ধিক সমাজকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বই পাঠের অভ্যাস ও বই সংগ্রহের মন মানসিকতা খুব প্রয়োজন।

বই যদি আপনার পড়ার সময় না থাকে, বাড়িতে সাজিয়ে রাখুন। দেখবেন আপনার সময় না হলেও পরিবারের অন্য সদস্যরা সময় সুযোগে বই পড়ছেন। প্রত্যেক পরিবারে ছোট হলেও একটি লাইব্রেরী থাকুক। আমাদের তরুণ বয়সে স্লোগান ছিল:
‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়ে যায় না’;
‘বই কিনুন এবং অপরকে বই উপহার দিন’।

— এমন স্লোগান এই দেশের প্রত্যন্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সবার কাছে পৌঁছানোর সুযোগ ও সীমাবদ্ধতার কারণে বই একটা দুর্লভ বস্তুতে পরিণত হয়েছে। শীতকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে বইমেলা (Book Fair) অনুষ্ঠিত হয়। বইমেলাকে (Book Fair) যদি বলা হয় প্রচারের মহিমা। তবে প্রচারে প্রসার হয়।

বইমেলা (Book Fair) শেষে পরবর্তী বইমেলায় (Book Fair) প্রকাশনার সংখ্যা বাড়ে। কোয়ান্টিটি বেড়েছে, কোয়ালিটি বাড়েনি। বইমেলা (Book Fair) পরবর্তী সময়ে বইয়ের বিপণন তেমন একটা হয় না। এ বিষয়ে দ্বিমত থাকতে পারে। প্রকাশনা অন্যান্য দেশে সবচেয়ে সম্মানজনক একটা পেশা। প্রকাশনার বিষয় এবং কার্যক্রম অবশ্যই চৌকস ও মেধা সম্পন্ন কাজ। প্রকাশিত বইগুলো পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বাজারজাত করতে হয়, সেই পেশাগত জ্ঞান অর্জন করা জরুরী। অনেক প্রকাশক সেটা জেনে থাকলেও সেই পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের তেমন আগ্রহ নেই। আগ্রহ না থাকার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা যুক্তি খুব জোরালো। সেটা হল বেশিরভাগ প্রকাশকই সাইড বিজনেস বা শখের বশে প্রকাশনা খুলে বসেছেন।

আমাদের দেশে প্রকাশনা তো এখনও শিল্পে রূপান্তরিত হয়নি। সে প্রশ্ন ভিন্ন। এই যে হাজার হাজার গাজানো প্রকাশনা হওয়ার অন্যতম একটা কারণ খুব সহজেই অনুমেয় সেটা হল লেখকের সংখ্যার বৃদ্ধি পেয়েছে। বইমেলায় (Book Fair) তাদের বই বের হতেই হবে। যত্রতত্র একটা বই প্রকাশ হলেই তিনি ‘লেখক’। এত সব বইয়ের মধ্যে কয়জন ‘মানসম্মত লেখক’ আছেন?

আইবুড়ো নামটি ঘুচানোর জন্য যেমন বিয়ে করা দরকার হয়। তেমনি অনেক লেখক নিজেকে লেখক নামটি ফুটিয়ে তোলার জন্য বই প্রকাশ করে। এতে শিল্পের মান খোয়া যাচ্ছে। কাগজের অপচয় হচ্ছে। এতে শিল্পের মান নষ্ট হচ্ছে। পাঠ অনুপযোগী বই পাঠকের হাতে যখন পৌঁছে। পাঠক যখন কোনো বই পড়ে সাহিত্যরসে সমৃদ্ধ হতে না পারবে, পরবর্তীকালে সেই পাঠক বই পাঠের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

আজ অবধি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বা গ্রামে-গঞ্জে সম্প্রসারিত হয়নি এই বইকেন্দ্রিক মেলার উৎসব। বইমেলা (Book Fair) কি কেবল শহুরের মানুষের জন্য? বিশেষ করে রাজধানী এবং শহরতলীর বাইরে কেন আমরা বইমেলাকে (Book Fair) জনপ্রিয় করে তুলতে পারলাম না? প্রতিবছর বইমেলার (Book Fair) সময়ে মিডিয়ার ধুম পড়ে যায় বইমেলা (Book Fair) ঘিরে নানা সংবাদ পরিবেশনে। লেখকরা মিলনমেলার আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন। উচ্চবিত্ত ও সৌখিন লেখকেরা ভিড় জমান। এক মাস ধরে চলে হরেক রকম আলোচনা-আড্ডা, সমালোচনা ও প্রচারের প্রাচুর্য। কিন্তু সত্যিই কি, যতটা প্রচার হয়, ততটা বাঙালির প্রাণের মেলা হয়ে উঠতে পেরেছে আমাদের বইমেলা (Book Fair)? আর যদি না হয়ে থাকে, তবে তার জন্য আমরা কী কী করতে পারি? ‘প্রাণের মেলার আড়ালে’ কোনো অপ্রাণের ঘটনা কি আমাদের খেয়ালের বাইরে ঘটে চলেছে? প্রসঙ্গত এও ভাবা যায়— কীভাবে নতুন-পুরনো বইয়ের গন্ধ-মমতা আর উদার আহ্বান পাঠাতে পারি সারাদেশের সবশ্রেণির মানুষের কাছে?

সরকারি বা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আগের তুলনায় বর্তমানে বই কম কিনছে। দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষার্থী; কিন্তু কমছে বই ক্রয়ের বাজেট। পাবলিক লাইব্রেরির অবস্থা দিন দিন উন্নতির দিকে না ধাবিত হয়ে তার চাকা চলছে পেছনের দিকে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র প্রায় স্থবির হওয়ার পথে। পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সারা বছর ধরতে গেলে উল্লেখযোগ্য হারে বই কিনছে না। গ্রামকেন্দ্রিক পাঠাগার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আজও আমরা গোপনে বয়ে বেড়াচ্ছি। বইমেলা (Book Fair) আমাদের জন্য কী সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে?

বইমেলার (Book Fair) ঋণ আমাদের কিছু কম নয়। শারদীয়া সংখ্যা প্রকাশের হিড়িক থিতিয়ে যাওয়ার কিছু পর আসে বই-উৎসব তথা বইমেলা (Book Fair)। বাংলা ভাষা তথা বাঙালির এতো বড় সাহিত্য উৎসব দ্বিতীয় আর নেই। বিভিন্ন ধরণের পুস্তক, ছোট বড় পত্রপত্রিকা প্রকাশ উপলক্ষে এই পুস্তক মেলার আয়োজন ও উৎসাহ ঘিরে সাহিত্যপ্রেমী মানুষজনের মধ্যে তৈরি হয় গভীর উন্মাদনা। পুস্তক মহোৎসবের এমন মিলনমেলার আকর্ষণে আট থেকে আশি সবার মধ্যে সৃষ্টি হয় এক ধরণের চঞ্চলতা। বিশেষত নবীন লেখক-লেখিকা যারা, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাদের গল্প, কবিতা, অনেকের নতুন গল্পগ্ৰন্থ বা কাব্যগ্ৰন্থ প্রকাশ পায় এই মেলা উপলক্ষে। সেজন্য অখ্যাত তরুণ সাহিত্যিকবৃন্দ সারা বছর ধরে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেন এই মহোৎসব শুরুর মাহেন্দ্রক্ষণটির জন্য। নামী-দামী পত্রপত্রিকার পাশাপাশি বহু ছোট অনামী পত্রপত্রিকা ব‌ইমেলা (Book Fair) উপলক্ষে প্রকাশ করে তাদের বিশেষ সংখ্যা। পিছিয়ে থাকে না ওয়েব ম্যাগাজিনগুলিও, তারা অনেকে এই সময়টাতে মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশে তৎপরতা দেখায়। সব মিলিয়ে সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত সকল স্তরের ব্যক্তিবর্গ অতিমাত্রায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

সাহিত্য মানুষের বিনোদনের সঙ্গী, অবসর যাপনের একান্ত বন্ধু। সদ্‌গ্ৰন্থ মানুষের জীবনকে সঠিক পথে চালিত করতে সহায়তা যুগিয়ে থাকে। বিশ্বের অনেক দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অথবা জনকল্যাণব্রতী কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সৌজন্যে তরুণ প্রজন্ম থেকে লেখক-লেখিকা গড়ে তোলার ব্যবস্থা আছে। একেবারে অদক্ষ, আনাড়ি অথচ উৎসাহী নবীন সাহিত্য সেবীগণ এতে উপকৃত হন। ধীরে ধীরে তাদের সাহিত্য সৃষ্টির নিপুণতা বৃদ্ধি পায়, যার ফলশ্রুতিতে নতুন প্রতিভার সন্ধান যেমন পাওয়া যায় তেমনি দেশের সাহিত্য ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। আমাদের এখানে তেমন কাজটা বর্তমানে পালন করছে বিভিন্ন লিটিল-ম্যাগাজিন সমূহ। বিশেষ করে দিকে দিকে প্রতিষ্ঠিত ওয়েব ম্যাগাজিনগুলির ভূমিকা এখানে প্রচুর কৃতিত্বের দাবি রাখে। অচেনা,‌‌ অখ্যাত, অজ্ঞাতজনের পরিণত-অপরিণত রচনা সমূহ নির্দ্বিধায় প্রকাশ করে চলেছেন, যার কারণে, কাঁচা হাতের কাঁচা লেখাগুলো পাকা হয়ে ওঠার অনুশীলন মঞ্চ পেয়ে ভাবীকালের আঙিনায় নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ লাভ ঘটছে অনেকের। যে-সুযোগটি খ্যাতনামা মুদ্রিত পত্রপত্রিকায় পাওয়ার সৌভাগ্য হয়তো সবাই কখনোই লাভ করতে পারতেন না। এটি খুবই ভালো লক্ষণ।

তবে এই সমস্ত পত্রপত্রিকা সমূহের (প্রিন্টেড কিংবা অনলাইন) উপর অলিখিত একটা গুরু দায়িত্ব বর্তায়, এবং সেটি তাদেরকে সুষ্ঠুভাবে পালন করা দরকার। দেখতে হবে সাহিত্যর শৈলী যাতে আদর্শ চ্যুত না হয়ে সঠিক দিশায় অগ্ৰবর্তী হয়। একাধারে পৃষ্ঠপোষক ও সমালোচক এই দ্বৈত ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করতে হবে যথাযথ নিষ্ঠার সঙ্গে। নিছক আর্থিক লক্ষ্যে না গিয়ে নির্ধারিত নিয়মনীতি মোতাবেক সামাজিক দায়িত্ব পালনের বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে বাস্তবায়ন করুন এমনটাই আশা করব। অন্যথায় অযোগ্যেরা অকারণ যোগ্যতার দাবিদার হয়ে নিজেদের সঠিক মূল্যায়নে ভুল করে বসতে পারেন।

বইয়ের জনপ্রিয়তা প্রচারে ও প্রসারে বইমেলার (Book Fair) গুরুত্ব অপরিসীম। বই চিন্তাশীল মানুষের মধ্যে নতুন আবেদন তৈরি করে তার সৃষ্টির জগতকে প্রসারিত করে। বিকশিত হয় আমাদের মনন-চিন্তন। বিশ্বজুড়েই বইমেলা (Book Fair) এখন উৎসবের রূপ নিয়েছে।। ‌ উৎসব তো আত্ম উপলব্ধি অর্জনের। বিশেষ করে বইমেলার (Book Fair) মতো বৌদ্ধিক উৎসবের। ‌ কারণ বই যে কেবল অতীতের সাথে বর্তমানের সংযোগ ঘটিয়েছে তাই নয়। ‌ বইমেলা (Book Fair) আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ও পরম্পরাকে এক সূত্রে গেঁথে সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গঠনেও অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই বইমেলা (Book Fair) হয়ে উঠেছে মানুষের এক যথার্থ জ্ঞানতীর্থ। ম্যাক্সিম গোর্কির বিখ্যাত সেই উক্তি —- “বই আমাদের পরম বন্ধু, আশার আশ্রয়স্থল।”

সৌম্য ঘোষ | Soumya Ghosh

স্বামী বিবেকানন্দের যোগ ভাবনা | Top Best 4 Yoga by Swami Vivekananda

Bengali Article 2023 | সুভাষচন্দ্রের আত্মজীবনীঃ বিভিন্ন মনীষী প্রসঙ্গ

Bengali Article 2023 | কবিগুরুর মানবতার ভাবরূপ

Bengali Article 2023 | নিছক, কথার কথা নয়

Bengali Article | Short Article | Definite Article | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Article | Shabdodweep Founder | Long Article | International Article | Trending Article

Leave a Comment