Dwiragaman | দ্বিরাগমন | পুনম মায়মুনী | 2023

Sharing Is Caring:
BENGALI STORY

পুনম মায়মুনী – সূচিপত্র [Bengali Story]

দ্বিরাগমন | Dwiragaman

আজ ক’দিন ধরেই বেলা আর শুভ্রর মাঝে প্রাণখোলা কথা নেই, কেমন ছাড়া ছাড়া! দু’জনার, বললে অবশ্য ভুল হবে বরং বেলা ইদানিং শুভ্রকে এড়িয়ে চলছে। শুভ্রর কথার প্রত্যুত্তরে হ্যাঁ-হুম, বলেই কাঁটিয়ে দিচ্ছে। শুভ্র যথেষ্ট চেষ্টা করেছে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে। কিন্তু বেলার অতিরিক্ত কিছু ব্যবহার শুভ্রের আত্মসম্মানে বিঁধছে, কাঁটার মতো আবার ভীষণ পীড়াও দিচ্ছে নিজের অপারগতার জন্য!

কিন্তু সেজন্য তো সে দায়ী নয়? বেলার বাবাতো সব জেনেশুনে অত্যন্ত আগ্রহ করেই তাঁকে মেয়ের জামাই করেছেন। বেলার আর দু’টো বোন জামাইদের মতো তাঁর গাড়ি, বাড়ি, অর্থ নেই ঠিকই কিন্তু বেলার প্রতি তাঁর সম্মান ও ভালোবাসার কোন কমতি নেই। সর্বস্ব দিয়ে সুখী করতে চেয়েছে সে। হয়তো বেলার অনেক চাওয়া, পাওয়া বা ইচ্ছাগুলো সে পূরণ করতে পারেনি।

তবে বেলাও মুখ ফুটে কোনদিন কিছু চায়নি। শুভ্রর অক্ষমতাকে কখনো আঘাত করেনি । কারণ বেলা খুব ভালো করেই জানে, এ আঘাত শুভ্রের জন্য কতটা বেদনাদায়ক! এই না পারার অক্ষমতার জন্য কখনোবা শুভ্র বেলার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলে, বেলা তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বুকে মাথা গুঁজে বলেছে, আমার ওসব কিছুই চাই না গো, শুধু ভালোবাসার মূল্য দিও। তোমার বুকে সারাজীবন যেন এমনি করেই সেই বিশ্বাসে, নিঃশ্বাস নিতে পারি।

কিন্তু আজ বেলার একি হলো? এখন তাঁর জীবনটাকে নাকি খুব পানসে মনে হয়, এই একঘেয়েমি জীবন তাঁকে অসহ্য করে তুলছে! কি যেন বলতে চেয়েও বলতে পারছে না বেলা। শুভ্র খেয়াল করেছে, ওর বোনদের সাথে ফোনে কথা বলার পরপরই বেলা দু’একদিন কেমন একটা নীরব, অন্যমনস্ক হয়ে থাকে। শুভ্র এর কারণ কোনদিনই জানতে চায় নি। ভেবেই নিয়েছে, বোনদের চাকচিক্য বিলাসবহুল কথাবার্তা শুনে স্বভাবত বেলার মনে একটু দাগ কাটে, আর নিজের জীবনের সাথে হয়তোবা মিলিয়ে নেয় । চাওয়া পাওয়ার হিসাবের খাতায় মাইনাসের সংখ্যাটা বেশী হওয়ায়, সেই কষ্টটা মুছতে কিছুটা সময় লাগে বৈকি। লোভ, লালসা, বাসনা এগুলোতো মানুষেরই জাগে। বেলার এই চাওয়াটাকে কখনো তিরস্কার করেনি শুভ্র বরং বেলার এই শূন্যস্থানটি অপূরণের জন্য তাঁর বুকের পাঁজরগুলো নীরবে, নিভৃতে কতো যে কেঁদেছে!

এবার বোধহয় বেলার ক্ষতটা অনেক গভীর! তাইতো আজও ওর আচরণগুলো স্বাভাবিক করতে পারছে না। অল্পতেই রেগে যাচ্ছে শুভ্রের উপর, মাঝে মাঝে এটা ওটা ছুঁড়ে ফেলছে একটা চাপা অভিমানে। এই পরিস্থিতিগুলো শুভ্রকে যেন অসুস্থ করে তুলছে! এখন তাঁর কি করা উচিৎ নাকি বেলার বাবার সাথে কথা বলবে? কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। আজ যেন বেলা নিজেকে কিছুতেই স্থির রাখতে পারছে না । বেলকনিতে দাঁড়িয়ে শুভ্রের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। শুভ্র এলেই সে চলে যাবে, এ সংসার ছেড়ে। তবে সে বাবার বাড়ি যাবে না, যাবে বড় বোনের বাসায়। বাবার উপর আজকাল ভীষণ অভিমান বেলার!

বাবা ছিলেন একজন অধ্যাপক আর শুভ্র ছিল তাঁর প্রিয় ছাত্র। শুভ্রের মেধা, আচারব্যবহার এগুলো বাবাকে খুব আকৃষ্ট করতো। বেলার একটু আপত্তি থাকলেও বাবা শুনেনি। বড় দু’বোন নিজেদের পছন্দমত বিয়ে করায় বাবা ছিলেন কিছুটা অসন্তুষ্ট । তাই স্থির করেছিলেন বেলাকে তাঁর পছন্দের ছেলের সাথেই বিয়ে দিবে। ছেলে হিসেবে শুভ্রই উত্তম বাবার কাছে। ভাবতেই রাগ হয় বেলার, ‘মেধা ধুয়ে কি আমি পানি খাব? প্রতিমাসে টাকা গুনে গুনে হিসাব করে চলা, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শুভ্রের ভালোবাসার চিড়া ভেজানো কথায় সে আর শুনবে না। শুধু ভালোবাসা দিয়ে মানুষের জীবন চলে না, মানুষকে সুখী করতে পারে না। আমি আর কিছুতেই পারবো না এগুলো মেনে নিয়ে, শুভ্রের সাথে একই ছাদে বাস করতে’। এরই মধ্যে চাকরীর জন্য কয়েকটা ইন্টার্ভিউও দিয়েছে বেলা, আর চাকরীটা হয়ে গেলে একটা লেডিস হোস্টেলে গিয়ে উঠবে। এমন সময় কলিং বেলটা বেজে উঠে। বেলা দৌড়ে দরজাটা খুলে দেয়। শুভ্রের শান্ত চাহনি। বেলার মুখে দৃষ্টি পড়তেই বুঝতে বাকি রইলো না, বেলা খুব কেঁদেছে! চোখ দু’টো লাল আর ফোলা ফোলা। শুভ্র কিছু একটা বলার আগেই বেলা জানিয়ে দিল,

— তোমার অপেক্ষায়ই ছিলাম, আমি বড়াপুর বাসায় যাচ্ছি।

— এখনি?

— হ্যাঁ, তোমার কোনো আপত্তি?

— না, ঠিক আছে যাও তোমার কোনো কিছুই যে আমার আপত্তিকর নয় সেটা তুমি খুব ভালো করেই জান বেলা? তোমার চাওয়াগুলো যে আমার কাছে খুব মূল্যবান!

বেলা কথা না বাড়িয়ে সুটকেসটা হাতে নিয়ে হন্ হন্ করে বেড়িয়ে গেল। শুভ্র তখনো জানে না, বেলার কেন এই চলে যাওয়া? আবার কবে আসবে, নাকি ফিরবে না! এক অজানা কষ্টে চোখ দু’টো ঝাপসা হয়ে উঠে। পথে যেতে যেতে, শুভ্রের জন্য বেলার সারা শরীরে কি এক কোমল ভালোবাসায় শিহরণ বইতে থাকে; ‘আমি কি ভুল করছি?’ নিজেকে আবার সামলে নিয়ে মনটাকে শক্ত করে, ‘না, না কোনমতেই দুর্বল হলে চলবে না! তাঁকে যে পারতেই হবে, এমন জীবন সে আর চায় না!’ বড়বোনের বাসার গেটের ভিতরে ঢুকতেই, বাড়ির সামনে দেশী বিদেশী নানান রঙের সুশোভিত ফুলের বাগান, ফোয়ারায় জল বৃষ্টির মত ঝরছে। গাড়ি বারান্দায় নিউ মডেলের দামি গাড়ি দাঁড়ানো। বাড়ির চাকচিক্যে বেলার মনটাকে আরো ছোট করে দেয়! ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসে বেলা।

রাতের বেলায়, অনেক রাত অব্দি বেলা ও তাঁর বোনের ছেলেমেয়ে সুমন, টুম্পা সবাই বসে গল্প করছে। হঠাৎ, কলিং বেলের শব্দ। একনাগাড় বেজেই চলেছে…। বেলা একটু আতঙ্কিত হয়ে,

— এত রাতে কে এভাবে…

— খালমনি বাবা এসেছে। এমন করেই বাবা বেল টিপে । ভয়ের কিছু নেই!

— ও আচ্ছা..

বেলার কথা শেষ হতে না হতেই একটা বিকট আওয়াজ! মনে হচ্ছে কেউ কাঁচের জিনিষ ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছে। বেলা কিছু না ভেবেই দৌড়ে যায় নিচে। এসেই টুম্পার বাবার রূপ দেখে তো অবাক, একি দেখছে সে! মদ খেয়ে একেবারে টাল্ হয়ে টেবিলের উপর রাখা খাবার, শোপিজ সব এলোপাথাড়ি ছুঁড়ে ছুঁড়ে মারছে। বড়াপু বাঁধা দিতে গেলে অমনি গালে ঠাসঠাস করে চড় কষিয়ে দিল , কেন দরজা খুলতে এত দেরী হলো? আবার সজোরে একটা লাথি মারে, বড়াপু ধরাম করে মাটিতে পড়ে যায়! বেলা সামনাসামনি কোনদিন এমন নেশাখোর , মাতাল লোক দেখেনি। ভীষণ ভয় পেয়ে যায়, সেখানেই কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে! অথচ পর মুহূর্তেই বড়াপু মাটি থেকে উঠে, কেমন নির্ভয়ে স্বামীকে ধরে ধরে শোবার ঘরে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। কিন্তু বেলা কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছে না ; ‘বড়াপু কি করে ঐ মাতাল লোকটার সাথে একই খাটে ঘুমাবে?’ বেলা সারারাত বিছানায় শুয়ে, এপাশ ওপাশ করেছে কিছুতেই চোখের দু’টো পাতা এক করতে পারেনি!

সকালবেলায় নাস্তার টেবিলে এসে বেলা স্তম্ভিত! বড়াপুরা সবাই একসাথে বসে নাস্তা করছে, সাথে গল্পগুজব হাসি ঠাট্টাও চলছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, কাল রাতে এ বাড়িতে এতোবড় একটা নোংরা ঘটনা ঘটেছে। খুবই আশ্চর্য লাগছে বেলার! ‘স্বামীর হাতে চড়, লাথি খেয়েও কি করে একটা মেয়ে এতোটা স্থির থাকতে পারে, মেনে নিতে পারে! এটাই বুঝি ওদের কাছে স্বাভাবিক? এই ঐশ্বর্য নিয়ে বড়াপুর এত অহংকার! ছিঃ, চাইনা এমন গাড়ি, বাড়ি, বিলাসিতা, যেখানে আমার সম্মান এতো তুচ্ছ!’ খুব অস্বস্তি লাগছে বেলার এই পরিবেশে, এক মুহূর্ত থাকতে মন চাইছে না! চায়ের শেষ চুমুকটা দিয়ে উঠে দাঁড়ায় বেলা,

— বড়াপু আমি বাবার বাসায় যাচ্ছি। বোনকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে, হনহন করে বেড়িয়ে পড়ে বেলা ।

একটা বিষণ্ণতা নিয়ে বেলা বাবার বাসায় এসে, ড্রইংরুমে পা রাখতেই নজরে পড়ে ; মেজবোন মিলা মায়ের পাশে বসে আঁচলে চোখ মুছছে। বেলা জানতে চাইলে, মিলা হু, হু করে কেঁদে উঠে,

— আমার বুঝি এবার সত্যিই সংসারটা ভাঙলোরে বেলা! আমি ওর কাছে আর ফিরে যাব না।

বেলা অবাক হয়ে,

— কেন? কালই তো আমায় ফোনে বললে, তোমরা খুব সুখী রীমুর বাবা তোমায় খুব ভালোবাসে! প্রায়ই বিদেশ থেকে নামীদামী গিফট্ এনে দেয়। এখন আবার তোমাদের মাঝে কিসের ফাটল ধরলো?

— ভালোবাসে না ছাই! আমাকে খুশী রাখার জন্যই ঐ নামীদামী উপহার। রীমুর বাবা একটা চরিত্রহীন! আমার ভালোবাসা, বিশ্বাসকে ভেঙেচুরে একেবারে গুড়িয়ে দিয়েছে!

— তোমার বোঝার ভুলও তো হতে পারে?

— না, আমি সব প্রমাণ পেয়েছি। রাত জেগে মেয়েদের সাথে চ্যাটিং করে। আমি পাত্তা দেয়নি, ভেবেছি আজকালতো এগুলো ডালভাত! কিন্তু এটা যে, এতদূর গড়াবে কখনো বুঝিনি। এখন দেখছি, বিদেশে গেলে ঐ গার্লফ্রেন্ডদের ও সংগে করে নিয়ে যায়। এবারও থাইল্যান্ডে একজনকে নিয়ে গেছে।

বেলা সব কথা শুনে যেন স্তব্ধ হয়ে গেলো! স্বামী রাত জেগে অশ্লীলতায় মগ্ন থাকে আর স্ত্রী সেটা মেনে নিচ্ছে। বেলার মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করতে থাকে। সত্যি সম্মান আর ভালোবাসাহীন সম্পর্কগুলো, কতো মূল্যহীন! খুব ভোরে, কারো কথার আওয়াজে বেলার ঘুম ভেঙে যায়। ওপাশে ফিরেই দেখে, সুটকেস হাতে মিলা দাঁড়িয়ে। বেলা উৎসুক হয়ে জিগ্যেস করে,

— কোথায় যাচ্ছো বুবু?

মিলা খুব আনন্দের সাথে উত্তর দেয়,

— রীমুর বাবা আজই আসছ থাইল্যান্ড থেকে। কাল রাতে ফোনে, ঐ ঘটনাগুলো নিয়ে ওর সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমার কাছে মাফ চেয়ে কান ধরে বলেছে, সে আর কোনদিনও এমন কাজ করবে না। বেলার আরেকটু সান্নিধ্যে এসে,

— আরেকটা সারপ্রাইজ আছে বেলা? আমার ডায়মন্ড খুব পছন্দ, সেজন্য রীমুর বাবা পাঁচলাখ টাকা দিয়ে আমার জন্য একটা ডায়মন্ড সেট কিনেছে , এবারের বৈশাখের উপহার; কালইতো পহেলা বৈশাখ তাই বাসায় ফিরে যাচ্ছি।

বৈশাখের কথাটা শুনামাত্রই, শুভ্রকে মনে পড়ে যায় বেলার। দু’জন, দু’জনকে কথা দিয়েছিল; ‘যে প্রান্তেই থাকি না কেন, পহেলা বৈশাখ আমরা একসাথে পালন করবো’। আজ বেলার ভীষণ অনুতপ্ত হচ্ছে, শুভ্রের জন্য। চিৎকার করে কাঁদছে ইচ্ছা করছে! এভাবে শুভ্রকে আঘাত করে চলে আসাটা মস্তবড় অপরাধ করেছে সে। শুভ্র ঠিকই বলতো যার যার সুখের পাত্র সে তাঁর মতো করেই পূর্ণ করে কেউ ঐশ্বর্য দিয়ে, কেউ জ্ঞানে, কেউবা জনে। তবে এগুলো ঠুনকো, কচুপাতার জলের মতো। যেকোনো সময় পাত্র খালি করে ফসকে যেতে পারে। কিন্তু ভালোবাসায় পূর্ণ সুখের পাত্রটি কখনোই ফুরোয় না, অবিনশ্বর!

‘হ্যাঁ,হ্যাঁ সত্যিই তাই, আমার সুখের পাত্র যে আমার ভালোবাসা শুধুই তুমি, আমার শুভ্র’!

বালিশে মুখ গুজে ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকে বেলা। দিনশেষে সন্ধ্যার প্রদীপগুলো একে একে জ্বলে উঠছে। বেলা বাবা, মায়ের ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়,

— বাবা, আমি আমার বাসায় যাচ্ছি ।

একটু অবাক হয়ে মা বলল,

— এই না তুই বললি বেশ কিছুদিন আমার কাছে থাকবি?

বেলা একটু নরম স্বরে বলল ,

— কাল যে পহেলা বৈশাখ। শুভ্রের পছন্দের খাবার যে আমায় রান্না করতে হবে মা, তা না হলে ও খুব কষ্ট পাবে!

মেয়ের কথা শুনে বাবা বেলার মাথায় একটা হাত রাখে,

— আমি সব শুনেছি মা, তুই কেন বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিস? শুভ্র আমায় সব বলেছে।

বেলা লজ্জারাঙা মুখে বাবাকে জড়িয়ে ধরে,

— আমায় তুমি ক্ষমা করো বাবা? শুভ্রের সাথে আমি তোমাকেও কষ্ট দিয়েছি, অপমান করেছি।

— না রে মা, তোর কোনো দোষ নেই, ভুল থেকেই মানুষের শিক্ষা হয়। আর এ শিক্ষা থেকেই মানুষ খুঁজে পায় তাঁর আসল মানুষের ঠিকানা।

বেলা নিচু গলায় উত্তর দেয়,

— সেই ঠিকানা আমি পেয়েছি বাবা, আমায় তোমরা আশীর্বাদ করো?

বেলা নীরবে বেড়িয়ে যায়। বাসায় এসে, বেলা দরজার কাছে কলিং বেলটা টিপতে যাবে তখনি চোখে পড়লো, দরজাটা একটু ফাঁকা করে খোলা…। ভিতরে হালকা আলো জ্বলছে। বেলা দরজাটা সরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই, কানে ভেসে এলো মৃদু কণ্ঠে একটা গানের কলি,

“আবার এসো ফিরে তুমি আমার ভাঙা ঘরে
মনে রাখলাম, আমি থাকলাম এই মনের জানালা ধরে…
তুমি আসবেই জানি আসবেই
এই আঁধার যাবেই চলে…”

বেলা সেখানেই নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে, কখন যে মনের অজান্তে চোখ দু’টো ভিজে গেছে। হঠাৎ খেয়াল হলো শুভ্র তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে। একটা মিষ্টি ফুলের গন্ধ! বেলা ওপাশে ফিরে তাকায়, টেবিলের উপর একগুচ্ছ বেলি ফুলের মালা আর একটা শাড়ির প্যাকেট। বেলা শুভ্রের চোখে চোখ রাখে। একটা স্নিগ্ধ মায়াময় মুচকি হেসে শুভ্র মাথা নাড়ে,

— হুম, তোমার জন্য কাল যে আমাদের পহেলা বৈশাখ !

বেলা মাথাটা নিচু করে,

— হুম, তাইতো তোমার কাছে চলে এসেছি!

শুভ্র বেলাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে। বেলার চোখের জলে শুভ্রের বুকটা ভিজে যায়। শুভ্র বেলার চিবুকটা তুলে ধরে। বেলা তখনো অপরাধীর মতো অঝোরে কাঁদতে থাকে। শুভ্র তাঁর ভালোবাসার ছোঁয়ায় বেলার চোখ দু’টো মুছতে মুছতে,

— আর কখনো আমায় ছেড়ে যাবে না তো বেলা?

—- না, আর কখনোই না! আমাদের দু’জনার সুখের ঠিকানা যে একই পাত্রে। এ ভালোবাসার পাত্র ছেড়ে তুমি, আমি,

আমরা কোথায় যাবো? শুভ্র বেলাকে আরও নিবিড় করে বুকে টেনে নেয়।

পুনম মায়মুনী | Punom Mymoni

New Bengali Story | দরজা | শুভাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়

New Bengali Story | কুহেলী দাশগুপ্ত | Kuheli Dasgupta

New Bengali Story 2023| লোকের কথা | মনসুর আলি

New Bengali Novel 2023 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৮) | উপন্যাস

dwiragaman meaning | dwiragaman ritual | dwiragaman ritual in bengali | dwiragaman 2023 | New dwiragaman series | dwiragaman movie | dwiragaman reviews | dwiragaman story | dwiragaman serial | dwiragaman bengali story | dwiragaman film | dwiragaman bengali film | dwiragaman | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder | dwiragaman muhurat | dwiragaman images | dwiragaman wikipedia | dwiragaman video

Leave a Comment