Top Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

Sharing Is Caring:
BENGALI POETRY
Bengali Poetry

অনাদৃত হৃদয় [Bengali Poetry]

ব্যথাগুলো জগন্ময় ভিন্ন দুঃখের গল্প
মায়ায় ছায়ায় জড়িয়ে অবাক অন্ধকার
তুমিও নিরুৎসুক স্নিগ্ধ চন্দন ছায়ায়
কোন খেলাঘরে গৃহান্তরে জ্বলছে আলো
অন্ধ সময় জানে জ্যোৎস্না হবে আকাশ তলে
অনুত্তীর্ণ বেদনা কাল ডাকেনি সংসারে
জন্ম কথায় কোথাও ব্যথা কি মনস্তাপে
কেউ বলেনি কোন কথা জীবনের সন্তাপে

বীণাপাণি বৃষ্টিতে নয় বেজেছিল রমণীয় শরীরে
প্রীতিময় আত্মার কথা জানে আপন পুরুষ
সকল অবরোহণ কাল ডাকে প্রজন্ম উচ্চারণে
মানুষ পন্থী সকল সমারোহ বলে পদ্ধতির গল্প
আমি বুঝি কালো চুলে চাঁদের আলো চন্দ্রমুখী কথা
ভেসে যাচ্ছি তোর উদ্দেশ্যে মুখের কাছে
বুঝিনি তেমন বুকের ভেতর অরব আলোর কথা
তৃতীয় বিশ্বে এখন নীল রাত জড়িয়ে অনাদৃত হৃদয়

স্বজন হত্যা [Bengali Poetry]

মৃত মানুষের কণ্ঠ স্বর শোনেনি কেউ
আগুন ফুলের পরাগ জ্বলছে অনুক্ষণ
শূন্য শরীরের অবগাহন জানে
আসলে কেউ পুড়িয়ে দিচ্ছে বুক
ঘরে বাইরে কেবল ছায়া মুখ হিংস্র স্তাবক
চেনা শিশু মুখ জানে শুকনো বুকের আত্মা জানে
সাধন তন্ত্রের ঈশ্বর বকুল ফুলের গন্ধ জানে
বকুল অমাবস্যার আত্মা জানে আমের মুকুল
বাতাসে ছড়িয়েছে আমার অস্তিত্বের মতো আরও
প্রচ্ছন্ন আশ্রয় খোঁজে তখনও মননে রক্ত ক্ষরণ

বিচ্ছিন্ন যুগের গল্প জানিনা সমাজ সম্মত কথা
মৃণালিনী রূপ দেখা অরূপ সে আত্মার হৃদ কমল
সব দেখেছি মনে তো নেই চোখের ভুলের ক্ষমা

অস্থি কলস একাকী ভেসে যায় অমৃত উৎসবে
সাজানো সময় ছিঁড়ে ফেলছে সাজানো যুগের কসরত
চোখের সামনে প্রত্ন সংহিতা পোড়ে স্বজন হত্যার মতো

বুকের অক্ষরে [Bengali Poetry]

এখন জমেছে কথকতার মরশুমি প্রহর
কী ধূম লেগেছে প্রতিবাদী অক্ষর ঘরে ঘুমের আকাল
অজস্র মানুষ গুম মেরে বসে আছে বিবেক বাসনায়
কত না ধর্মাধর্ম ভুল-ভুলাইয়া অরূপ রতন
একটা দৃঢ় হাতের আঙুলের কলমের অক্ষর টান
পিছু ফিরে দেখে ছিল নিষ্প্রভ দিব্য জ্যোতির অক্ষর
আশ্চর্য কাঠামোয় মাথা তুলে উন্মাদ হিংসার বন্দনা
সকালে স্তব্ধ গায়ত্রী উচ্চারণ নির্বাক আলো মন্দিরে

খর দহন কালে নীল চোখ বদ্ধ সকল উপাসনা ঘর
হৃদয় ফুঁড়ে অকালে অক্ষরে রক্ত বিচ্ছুরণ
কবিতা প্রণয় ম্লান শাসকের বিনীত ধারাভাষ্যে
আত্মার আলোক বৃত্তে উপাস্য সকল শব্দ পাথর
ঠুলি বাঁধা স্তাবকের চোখ মোহ রাত্রি ঘিরে আছে তাই
নারী পুরুষ যুবা ও যুবতি দাঁড়িয়ে আলোর চরাচরে
ঈশ্বর ঈশ্বরী ও বেঁধে ছিল কোঁচড়ে ক্ষুধার্ত সকল প্রহর
ছন্দ ছেঁড়া মাত্রা খোঁড়া কথা আগলে আছি বুকের অক্ষরে

বুলডোজারের দাঁত [Bengali Poetry]

মেঘ জানে জলজ আগুন ছেঁড়ে নীরন্ধ্র রাতের আকাশ
ক্ষুধার আর্তি প্রতি ঘরে থমকে দেখে কঠিন দীর্ঘ শ্বাস
প্রতিদিন পরিত্যক্ত রাত প্রশ্ন ছোঁড়ে জীবন কি পেলে
রাত রানী ফুলেদের চারিত্রিক সুগন্ধে ভিজে ওঠে চোখ
অলৌকিক নিমেষ কালে দেশান্তরী অক্ষম দৃষ্টিপাত
নিজের ভেতর লাট খায় প্রিয়দর্শী অজস্র জন্মের স্মৃতি
দেশ আমার গণতন্ত্র আমার বেদ বৈরাগ্য আমার
তবুও এ কেমন সমাহিত কাল খোঁজে চতুর্দিকে ক্ষমা

মধ্য রাতের পথিকেরা আসে ফিরে যায় শূন্য আকাশে
ধারালো খড়্গ দেখেনি নিঃস্ব আলোর চাঁদের ছিন্ন কলঙ্ক
কোথায় রয়েছে সংসারী চেনা কথা প্রতিদিন অক্ষত
আশ্চর্য কৌতুক বোঝে উজ্জ্বল সোনালি মাকড়সা ফাঁদ
সমস্ত সেবা নিকেতনের বদল বোঝে না ভারী কান্না
এখানে অতৃপ্ত পিপাসা থমকে দাঁড়িয়ে দেখে নির্জন বিলাস
আশ্চর্য শরীরের রন্ধ্রে কোথাও অজন্তা ইলোরার অনুষঙ্গ
মায়া কাল তুলে আনে কুশলী শাসক বুলডোজারের দাঁতে

প্রায়শ্চিত্ত [Bengali Poetry]

হাসি মুখ দেখতে দেখতে ক্লান্ত বোঝেন কি চিত্রশিল্পী
বোঝেনি দেবদাসী চালক চিত্রকল্প বিষণ্ণ উর্বশী
ছড়িয়ে আছে সুরম্য চেহারায় মধ্যবিত্ত রক্তের দাম
মানুষের শরীর বৃত্তে অমৃত ভাণ্ডার জানে জাদু বিজ্ঞান
জানে বসুমতী মায়া ঘর অপার অভিমান ডাকে
জড়িয়ে আছি পালক মায়ায় উষ্ণ মহিমায়
চলমান প্রতিশ্রুতি চিরন্তনী মহাপ্রস্থান পথে
তবুও বীভৎসতা ছিঁড়ে খায় নাগরিক ভব্যতা

বাঁধন কথা সকালের বদল দুপুরে আবারও অনড় রাত্রি
শরীর থেকে মুছে গেছে সেই সব কলঙ্কিত উদ্দাম নাচ
সকলের চোখের আড়ালে চলে যায় খয়রাতি সুখী অলিন্দে
থুতু ছিটিয়ে যায় শঙ্কিত চোখের অক্ষত সংশয়
কত দাস দাসী কত প্রশান্ত হাসি প্রিয় মুখোশ আর মুখ
যা কিছু আড়াল ছিল সাজানো হাসি মুখে উড়ান অবিরাম
বোঝে না কেন ঝরা পাতায় উড়ে যাবে সবুজ অভিমান
পর্দানশীন উদাসী আলাপ বোঝে আমার প্রায়শ্চিত্তের নাম

প্রতিশ্রুতি রঙ [Bengali Poetry]

এ বড়ো দুঃসময় কেমন সক্ষমতা জাপটে ধরে
কেবলই যত ক্ষয় রোগ ঘরে বাইরে প্রতি কোণে
অজস্র বেনিয়মে রক্তক্ষরণ মুখোমুখি স্তব্ধতায়
পুতুল খেলার অভ্যাস সেই মেয়ে বেলা বায়না
জানেনা ভালোবাসা অযথা রক্তের প্লাজমা বিভাজন
টুকরো টুকরো আরও সহস্র টুকরো জীবন জোড়া
কে কতটা ছিঁড়তে পারে নিজের ধমনী ধিক্কার
নির্দ্বিধায় ছুঁড়ে ফেলে প্রতিদিন স্তব্ধ সকালে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে

সহস্র কাতর প্রার্থনা জীবনের ধাপে ধাপে নিষ্ফলা মায়া
তবুও ছন্দোবদ্ধ গানের সাহসে কত প্রাণ বাঁচে সুরে
অসুর সময় কেড়ে নেয় সকল স্বাধীকার শুকনো অঙ্গীকার
রাতের গ্রামের জোনাকি আলোর সুখ গিলে খায়
শহুরে শাসন কপটতায় পোড়ে যৌবন অনবরত
পাড়াময় অকাল শূন্যতা ঘিরে আছে চরাচর
মাথা কেনা বেচার খেয়ালে দর কষাকষি টাকার ওড়াউড়ি
রক্ত ঘামে আধখাবলা দেয়ালে মুছে গেছে প্রতিশ্রুতি রঙ

বুনো পাপেদের শব [Bengali Poetry]

মধ্য রাতের পথিক মহাশূন্যের আকাশ
নিঃস্ব আলোর চাঁদ চেনে কলঙ্কিত খড়গের ধার
কোথায় রয়েছে সংসারী যাত্রী অনন্তের পথে
অমলিন চেনা কথা প্রতিদিন ছায়া মৃত্যু টানে
আশ্চর্য কৌতুক বোঝে মানুষের ফুটপাত জীবন
সকল প্রার্থিত স্বপ্নগুলো সোনালি মাকড়সা ফাঁদ
সমস্ত সেবা সদন ছুঁয়ে আছে ঈশ্বরের পথ
অতৃপ্ত তৃষ্ণায় বুকের যন্ত্রণা বোঝে না নির্জন বিলাস

নীরন্ধ্র অন্ধকারে মাটি ছুঁয়ে ফালাফালা বিদ্যুৎ প্রাণ
তবুও অজস্র কঠিন দীর্ঘ শ্বাস লজ্জানত দগ্ধ অবকাশ
এক একটা পরিত্যক্ত রাত প্রশ্ন তোলে প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি
রাতের মহলে রানীদের চারিত্রিক সুগন্ধে আগুন জ্বালে
পুতুল পুতুল শরীরে কেউ বোনে রক্ত বীজ উর্বশী রাতে
সারা রাত্রি ঝরে যায় ফোঁটা ফোঁটা মধ্যবিত্ত রক্ত
তৃণ হীন প্রান্তরে কালো মুখের সে এক উল্লাস উদ্দাম
হা হা উৎসবের সারা রাত্রি বোনে বুনো পাপেদের শব

নিষিদ্ধ দরজা [Bengali Poetry]

পুরনো ক্ষত মুখে সকল কথায় পাংশুল থাবা
মহাশূন্যের বাহবা কুড়োয় ভয় ভয় হাততালি
প্রতিদিন জ্বলে এখনো শ্মশানের চিতা
দুরারোগ্য সময়েও গুমরে ওঠে পড়ন্ত বিকেল
লালন সময় ছুঁয়ে যায় বুকের রক্ত গোলাপ

বন্ধ ঘরের চাবি খুলতে গেলেই
নড়ে চড়ে ওঠে অনড় হাতকড়া
চোখ বাঁধা বিচারের দাঁড়ি পাল্লা দোল খায়
ঝুলে যায় বাঁয়ে কিংবা ডায়ে শাসকের ভারে
প্রতিবাদ থেমে নেই হাজারো লাঠি ত্রিশূলের ফলায়
সব কথা মুখে মুখে অসম্ভব বিষণ্ণ উচ্চতায়

এখন কতটা লেনাদেনা কেমন রসদ কেনা বেচা
নিরন্ন মানুষের কথা মিশে গেছে নিরন্তর
আর কত মৃত্যু খোঁজে উন্নত শাসকের ঝলক
অসহ্য আত্মার শব উড়ে যায় হিসেব হীন
রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুয়ে অভিন্ন হৃদয়
হাতড়ে বেড়াচ্ছে কখন খোলে নিষিদ্ধ দরজা

স্বাক্ষর [Bengali Poetry]

ইতিহাস জানে হরিপদ গোলাম হোসেন অন্য পুতুল
বাঁকা শিরদাঁড়া ভেঙে কেমন শরীরে রক্ত ক্ষরণ
কেমন করে কেঁচো হতে হতে মাটির গোপন আশ্রয়ে
ঝিমোতে ঝিমোতে বেঁচে থাকা অস্পষ্ট অন্য মুখেরা
অনুযোগ হীন কিছু রক্তাক্ত শরীর এদিক ওদিক
ঘাস মাটি জল অরণ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে মুণ্ডু
অন্ধকার সময় হলেই হিম রাত জাগে উষ্ণ আঁচলে
প্রতিবাদ হীন হিস হিস শব্দে ঘিরে থাকে সরীসৃপ

প্রতিবাদী শব বাহক নুয়ে থাকে শরীরে বাঁচে
শূন্যে দু’হাত ছড়িয়ে ধুলো পথে প্রামাণ্য প্রতিবাদে
নিরন্ন সুখ দুঃখ পোড়ে ভেজে খেলুক রোদ বৃষ্টি
যুযুধান শরীরের ধমনী ছিঁড়ে ছিটকে আসে
অদৃশ্য কৌশল দিব্যি চলমান ঘিরে আছে চরাচর
কে কাকে জাপটে ধরে বেঁচে থাকে শিকড়ে শরীরে
শুকনো কণ্ঠনালি ছিঁড়ে নিয়ে যায় চির প্রতিবাদী স্বর
তবুও প্রমাণ চাই গুমরে ওঠে কান্না রক্ত পাঁজরের স্বাক্ষর

কথা ফসল [Bengali Poetry]

যে জীবনের শুরু গর্ভিণী জননী জানে কষ্ট মনোময়
কী করে বোঝাই গর্ভাদৃত নীল যমুনায় ভেসে গেছে শ্যাম
ধর্মতলায় ভেসে গেছে ধর্ম কথা রাত দিন শিক্ষা সেতু
কোটি কোটি টাকা লুটিয়ে পড়ার ছবি আত্মার পাদদেশে
কল্লোলিনী শরীরে বৃষ্টি নূপুরে মেতেছে হেরিটেজ মহড়া
মুখ ঢাকা সময়ে মুখোশ বদল ঘাসে নয় ভাসে ফুল কায়া
ক’জন জানে আশ্চর্য মরণ কাল কবে শুরু ঘরে ফেরা পালা
অচেনা থাবারা এসে পাঁজর ছেঁড়ে কালের যাত্রী জানে

পথে ঘাটে বাস্তুভূমি প্রতিভাত প্রতিদিন পোড়ে কুশলতা
অচেনা দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বুকে জড়ো হাত
সাতমহলা প্রাসাদের গল্পে বেসুরো কিংবদন্তি কথা
দশদিক সজাগ জেনেও প্রতিদিন শুনি বুক ভাঙা শব্দ
প্রতিদিন বাহারি গাড়ি সংবাদে তফাৎ নেই দেয়ালে পাঁজরে
শ্বাসে বাতাসে ঘিরে ধরে প্রতিদিন কত শত সম্ভ্রান্ত চোখ
পথে ঘাটে মাথা কেনা বেচার খেয়ালে মুছে গেছে প্রতিশ্রুতি রঙ
আসলে কোথায় সীমান্ত রেখা ডাকে শপথ কথা ফসল

সহিষ্ণু শাবক ও নিরন্ন ঈশ্বর প্রকৃতি [Bengali Poetry]

বাঁধন কথায় বদলে যায় অনড় রাতের সংলাপ
অবলা শরীর নিরীক্ষণ করে অচলা বসন্ত
ঝলসে দিচ্ছে কলঙ্কিত সেই সব নাচের আগুন
ভস্মের আধার ঘিরে আশ্চর্য সোনার প্রাচুর্য
বোকা বাক্সের প্রাণী সব অস্থির চোখে বাঁধে মন্থর মুহূর্ত
আড়ালে অগুনতি চোখে অশ্রু আর ধ্বংসের জ্যোতি
আমরাতো জেগে আছি আজন্ম ঋণে অবিনশ্বর
সংস্রব হীন জন্মান্তর ডেকে আনে জন্ম কাতরতা

সকলেই শরীর আগলে বাঁচে কেউ কেউ বীর্যবান
চরাচর ছুঁয়ে অখণ্ড সাম্রাজ্য সাহসী সংলাপ ভাসে
কপালে তিলক স্পর্শ অখণ্ড সুখের মুদ্রায়
অক্ষত জন্মগুলি বড় হয় দেখে কিছু নির্বাক মানুষ
গলদঘর্ম গণদেবতার গলায় প্রশস্তি মাদুলি
মহাশূন্যে কেবলই নক্ষত্র কাল চন্দ্রকলা খেলে
শূকরের ন্য সুড়ঙ্গ ক্রমাগত গিলে খায় গার্হস্থ জীবন
নিঃশব্দে নিশ্চুপ ঘুমায় সহিষ্ণু শাবক ও নিরন্ন ঈশ্বর

আনন্দ স্টেডিয়াম [Bengali Poetry]

চোখের আড়ালে থাকে ঝাঁঝরা বুকের ছায়া
হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে অনুদান খেলা
সুখী মানুষের নৃত্য ভঙ্গিমা দিনগত ছায়া
কেউ কেউ থুতু ছিটিয়ে চলে যায় নরকের পথে
কেউ কেউ খোঁজে অমর্ত্য পুরুষের জীবন কথা
পাড়া পড়শি জেগে শঙ্কিত চোখের তারায়
শাসকের সেবারত দাস দাসী গল্প সাতকাহন
প্রশান্ত হাসি মাখা প্রিয় মুখোশের ছবি

হঠাৎই বেজেছে বেতালা বোল খোলে করতালে
সাজানো হাসিমুখে শূন্যে উড়ান অবিরাম
আহা বোঝো না কেন সময়ে বিজলি চমক
ঝরাপাতা উড়ে যাবে সবুজ আরামে
চমকে উঠে শুনি পর্দানশীন উদাসী আলাপ
লুকোছাপা নেই খেলে যাচ্ছেন রাজা রানী
চিরায়ত খেলায় গড়িয়ে যাচ্ছে কালিমাখা দমদার বল
মন্ত্রী মহামাত্য ব্যস্ত আলেয়ায় মত্ত আনন্দ স্টেডিয়াম

অনন্ত ছায়া [Bengali Poetry]

বুঝিনি তো বুকের ভেতর অরব আলোর কথা
বেপরোয়া যন্ত্রণা ছুঁয়ে গেছে শস্যের বিছানা
আশ্চর্য পাতাগুলো বুঝে গেছে বিনিদ্র খিদের কথা
প্রীতিময় আত্মার কথা জানে সকল প্রাণের মানুষ
ছেঁড়া শাড়ির দায় নেই ঢাকনা খোলা গোপন কিছু
অজস্র কান্নায় আনমনে কালঘুমে সৌজন্য সুখ
বংশলতায় জড়িয়ে আছি সোনালী ফলের প্রত্যাশায়
দু’হাতে চেপে আছি কণ্ঠ নালী ঊর্ধ্ব মুখে আলো শিহরণ

কালো চুলে কেউ অপেক্ষায় রাতে চন্দ্রমুখী কথা
ভেসে যাচ্ছি প্রতিদিন নিশ্চিত উদ্দেশ্যে ঈশ্বর ছোঁয়া
অবর্ণনীয় শরীরের প্রতি কোষে তখন রক্ত প্রবাহ
অজস্র নীল পাতায় চকচকে লাল ছোপ
বুঝিনি তো বুকের ভেতর অরব জন্মের অঙ্কুর কথা
এমন যাপন কালে অস্থির বেঁচে থাকা কী অমৃতময়
সকল গরিমা কাল ছুঁয়ে আছে ঝলসানো শব্দমালা
তবুও জীবন চক্রে ঝুলে আছে সহস্র মুখ অনন্ত ছায়ায়

দল বৃত্ত [Bengali Poetry]

পদ্ম দু’টির নম্র আলোয়
পাপড়ি খুলেছে উষ্ণ হৃদয় গর্ভ কেশর
সঞ্চিত যত বন্দিত কথা গান
প্রজাপতি প্রাণ কত পরাগ রেণু ঢালো
উজ্জীবিত পুরুষ পাগল নীল ছায়া তার
সবুজ বাসরে উৎস খোঁজে জন্মের দিন
উদ্ধতস্বভাব স্তব্ধ একাকী স্তবের কালে
আত্মার সেতু হয়ে ঝুলে আছি জীবন্ত মানুষ

বৈরাগী সময়ে ডেকেছে চূর্ণ অভিমানে
সকল ঐতিহ্য বাঁচে শিরায় শিরায় ধমনীর টানে
বহুকাল বেঁচে থাকে অশরীরী জীবন কথা
হীনতম সময়ে পথে ঘাটে হাটখোলা অমূল্য যৌবন
অভাবনীয় প্রণিপাত অঞ্জলিতে বদ্ধ দুটো হাত
সংবেদন বিদ্বজ্জন মনীষী নিরাপদে ছত্রছায়ায়
শুধুই অপরাধ বোধ বোঝে প্রকৃতি চন্দ্রকলা
নক্ষত্র সংসারী দল বৃত্তে আপনি নম্র পক্ষপাতী

অরণ্য স্থপতি [Bengali Poetry]

অজানা জিঘাংসায় খসে পড়ে
চেনা পাখিদের সপ্রতিভ সুন্দর পালক
অপার শূন্যতায় বাতাসের মগ্ন খেলা ঘর
খসে পড়ছিল খাঁচা ঘর নিষ্ঠুর শিকল
বোঝে কী বুকের শূন্যতা অনন্ত প্রেম কথা
রমণীয় শরীরে বৃষ্টিতে ভেজে দেখে নম্র দৃষ্টিতে
শূন্যতাই খুঁজে নেয় পথের প্রান্ত জীবন
শব্দহীন কিছু প্রতিবাদী কথায় জন্মের ইতিহাস

চাতক চোখও ছিল অসহায় অনাবৃষ্টি দিনে
আর কত আয়ুকাল ক্ষীণ অসহায় চুম্বনে
ভাঙনের শব্দ বোঝে না পাঁজরের স্থপতি অক্ষর
চতুর্দিকে ছড়িয়ে আছে ক্রমাগত নীল বিষ
অক্ষত আগাছায় জড়িয়ে আছে শরীর অগুনতি
বাঁয়ে ডায়ে কত কথা কারিগর মানুষের প্রয়োজন
বদল আর বদলার কী ভীষণ ম্যাজিক সংলাপ
শুধু গাছেদের মতো জীবন গড়ে জানে অরণ্য স্থপতি

যাপন উৎসব [Bengali Poetry]

হাসি মুখ শোণিত আভায় লীন
মানুষ ভোলেনি হাহাকার
কাগজ কালিমায় অক্ষরের ভুল
শব্দ ঘরের দরজা খোলেনি কেউ
অসময়ে চাবি হারানোর খেসারত
কেবল দেখে কালো রাত
একাকী গল্প শোনায় আলোর ছাদ
বিষণ্ণ সময়ে নিঃসঙ্গ নিশীথ অপরাধ

সমান্তরাল পাপ আর পবিত্রতা কখনো
শরীর হীনতায় মেলেনা অহংকার এখনো
মধ্যরাত ছিবড়ে ফেলে রাখে
কালো সময় বুনে রাখে জাল
একাকী ভাসে না নারী আর্তনাদ
আকাশ জুড়ে তখনও আলোর পরি
গলি থেকে আশ্চর্য পথে তবু যাপন উৎসব

স্বয়ংসিদ্ধা ব্রত [Bengali Poetry]

প্রাণের ভেতর ঘাড় গুঁজে দিচ্ছে
নিজস্ব কথা গান মানুষ শালিক সব
সোনালি সকালে খুব হইচই
প্রতি উঠোনে রক্তবীজ রেখে গেছে মায়াতরু
রক্ত মাটি জলে শেকড়ে জন্ম বীজ
মরে গেছে বহুকাল পিতৃ পিতামহ
স্বয়ংসিদ্ধা রাতের কী ভীষণ শূন্যতার দায়
মুছে ফেলেছে যা কিছু স্বচ্ছতা নিষেধ সম্বল

মায়ের চোখের আয়নায় আশ্চর্য জলছবি
কক্ষ হীন শতাব্দী কাল অধুনা সভ্যতা
ঘিরে আছে অনাবিল ব্যর্থ আত্মা
কেউ শোনেনি বাতাসে বিলীন কান্না
চিরকালই অমৃত জননী ধুয়ে ফেলেছেন
অস্বচ্ছ রাতের শরীরী দৃশ্যের বিধান
ঈশান পৌরুষ কেবল শোনালো সভ্যতার দোহাই
আয়না জুড়ে কেবল কুয়াশা স্বয়ংসিদ্ধা ব্রত

আশ্চর্য অপলাপ [Bengali Poetry]

রাস্তায় ছড়ানো অক্ষরে রক্ত ছুঁয়ে আছে
বালখিল্য অজস্র উচ্চারণে
অসাধ্য অঙ্গীকার ডানা ছেঁড়া পাখি
লাট খাচ্ছে শরীর শূন্যতায়
কৌশল কতটা ফেক জানে
দেয়ালে ঠোক্কর খেয়ে ফেরে শব্দাবলী
ফিরে যায় চরাচরে জাপটে নোনা বাতাস
লজ্জা বস্ত্র ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে দগদগে শরীর

প্রান্তিক মাটি ছুঁয়ে নেচে ওঠে সুখ
অজস্র মুখের সারি নবীন উচ্ছলতা
অনেক অন্ধকার চোখ খোঁজে আলোর পরিত্রাণ
অবসন্ন পায়ের তলায় মাটি কেঁপে ওঠে
আশাহত চোখে পাক খায় আলো কণা
মিশে যাচ্ছে অজস্র মিথ্যাচার ঝরা পালকে
অচেনা একঝাঁক মানুষের আশ্চর্য উড়ান
কালের যাত্রাপথে উড়ে যাচ্ছে আশ্চর্য অপলাপ

শস্যের অঘ্রাণ [Bengali Poetry]

অমীমাংসিত আজও সকল প্রতিবাদী স্বর
কী অদ্ভুত টুকরো টুকরো
কসাইখানার হিসেব রাখেন
কোমরের স্বভাব অজৈব সমরেখা
অদ্ভুত বদলে যাচ্ছিল দৃশ্যপট
হারানো সংসার খোঁজে
নিস্পন্দিত অর্ঘ্য মনস্কাম
নিভৃতে ধিক্কার দেয় আত্মার উপহাস

আত্ম সুখের মগ্নতা জানেন অন্তর্যামী
ভূমার ইচ্ছে কথায় জলে পাতায়
দিব্যি খসে পড়ে পরস্পর কথার উপমা
কৃষক কৃষক-বৌর শ্রম রক্ত ঘাম
কোন দিন মেলাবে হিসেব আরক্তিম
লোহিত সূর্য ভাঙাবে পার্থিব ঘুম
গোলাপি মরশুমে ধুয়ে যাক বধ্যভূমি
দুধের বান ডেকে ছিল শস্যের অঘ্রাণ

অরণ্য উৎসব [Bengali Poetry]

জন্মগত মেঘের ভেতর বৃষ্টিজাত কণা
কখনো ধুয়ে যায়নি
নিভৃত ক্ষরণে রক্তের আলপনা
বিগত সময় জানে না কেমন জন্মকাল
কোথাও জমেছে আলো জ্বলা কথা ঘর
কেবলই সৃষ্টির অন্ধকারে একা
আত্মার ঘ্রাণে ভেসেছিল চাঁদ মুখ
নিভৃতে বুকের ভেতর বাঁচে
আমাদের সনাতন সুখ

কতদূরে গেলে মেলে চেনা পথ
কতদূরে মেলে হাত উষ্ণ শপথ
নীল আকাশ থমকেছে ঘরে
কী ভীষণ বীভৎস পর্দায়
পবিত্র নগ্নতা খুলে ফেলে রুদ্ধদ্বার
অন্তরাত্মা বোঝে না তেমন সুভদ্র সহবত
কবিতার শব্দ বোনা নদী জানে
নিরবলম্ব অক্ষর আলো জানে
পাতার জীবনী শক্তিতে বাঁচে অরণ্য উৎসব

আলোর সংকেত [Bengali Poetry]

অন্ধকার জানে আঁধার অক্ষ বলয়ের দেবী
একান্ত উঠোন পেরোলে ডাকে আলো জন্ম ঘর
সমস্ত স্রোতে উজান উজ্জ্বল চরাচর
লালন সুর ভাসে শূন্যে বাউল ঘরে
চোখা চোখি অমাবস্যায় চাঁদের স্বয়ম্বর

বেথলেহেমের নক্ষত্র পথে আলো সন্তরণ
খুঁজেছিল আলোর পথিক
অসাড় সময় খুঁজে ছিল জগৎ জীবন
সপ্তর্ষিমণ্ডলের সজীবন হাসি
হা হা বাতাসে আলো রঙে হাওয়ায়
আমারও জন্ম ঘরে ছিলো আলোর স্বদেশ
মায়ের পায়ের ধূলায়
চৈতন্যময় ধুলো ঘরে
বেড়ে ওঠে মাটির কথা অক্ষর বুনেছে গান

কৃষ্ণা চতুর্দশী প্রদীপের আলোয় জাগে চিন্ময়ী মুখ
দুটো চোখের তারায় উছলে ওঠে আলোর সংকেত।

বিকাশ চন্দ | Bikash Chanda

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

New Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

Loukik Debota Masan Thakur | লৌকিক দেবতা মাশান ঠাকুর | 2022

Porokia Prem Ekaal Sekaal | পরকীয়া প্রেম (একাল সেকাল) | 2023

bee bengali poetry | bengali poetry about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer bengali poetry | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdodweep Founder

Leave a Comment