New Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

Sharing Is Caring:
BENGALI POETRY
Bengali Poetry

প্রথম মহিমা প্রাণ [Bengali Poetry]

অবাক জলের রহস্য ডুবে আছে চোখের গভীরে
অসম্ভব এক ছায়া সকাল ঘিরে আছে রোদের বৈভব,
জীবন ও মানুষ আরও যারা থমকে গোনে লেখনী প্রহর
যত ছিল সংলাপ অপরূপ তাকিয়ে মায়াবী আকাশে।

ছোঁয়া ছুঁই হাতে হাত পরস্পর বাঁধে লাজুক গোলাপ ঘ্রাণ
অফুরান সময়ের ভেতর কেমন শূন্যতায় অমৃত গল্প কথা,
কাদা মাটি মানুষের অবয়ব জানে সৃষ্টি সময় প্রতীক্ষায়
যা হয় হোক তবু এসো অনাশ্রিত জীবনের যতটুকু সুখ,
তা নিয়েই হোক আলোর উদযাপন শরীরে ভাস্কর লিপি
নির্মল আলোয় ভেসে গেছে অন্তরের অমল ক্ষত।

সকল মায়া শরীরে কখন মোহময় চাওয়া মাতৃ সম্মোহন
উদাসীন সময়ে দুটো চোখে তরঙ্গ নির্বিকল্প ছল ছল,
মাটি আর ফসলে শরীর বোঝে না সুধাময় স্মৃতি শব্দ সুখ
এতো বার চোখাচোখি অসীম লজ্জায় নিমগ্ন দেহ মন,
মানুষের অজ্ঞাত অনুরাগে প্রতীক্ষায় সকল কথা সংহিতা
জন্ম বোঝে না তার পিতৃ পদবী বাঁচে আলো ছায়ায়
ঘাস ফুল পাখিদের মতো হিরণ্য সময়ে প্রথম মহিমা প্রাণ।

নশ্বরতা [Bengali Poetry]

মানুষ রয়েছে মানুষের মতো
তাড়া করে ছদ্মবেশ ভয়ার্ত অনুসরণ,
রাত ঘুম শেষ দেখা মৃত্যুপুরী অনির্দিষ্ট প্রহর
ভাঙা পাঁজরের আড়ালে লুকিয়ে বিনম্র মিনতি,
ভুলে গেছে কোথায় জীবন দান ছোট ছোট হাসি কথা
বিদীর্ণ বুকের উষ্ণতায় হারিয়েছে পারাণী রাতের বিশ্রাম।

রাতের জোনাকি হয়তো জানে
নিঃস্ব হাহাকার বড়ো অনুশোচনায়,
শ্মশান দেশে হারিয়েছে আত্মার নম্র প্রার্থনা
কান্নার চোখে জমে রক্ত কণা প্রেয়সী পাষাণ বুকে,
মৃত্যু মুখে বসে আছে আমার প্রতিমা আলো অভিমুখে
ফেলে গেছে আজন্ম আত্মায় ঋণ রেখে গেছে দাম্পত্য চুম্বন।

কে ফেলে গেছে নশ্বর মহিমা কবে
আজন্ম জীবনের ঋণভার মৃত্যু কাল জানে,
জানেনা অনন্ত গোধূলি জুড়ে আমারও প্রচ্ছায়া বাঁচে
দ্বিধাহীন সময়ে পৃথিবী বলয়ে আমি তো রৈখিক বিন্দু এক,
কিছু কথা রক্তাক্ত পায়ে কিছু কথা ভাসে আনন্দ কান্নায় বিহ্বল
বাস্তুহারা স্রোতে শূন্যতায় নীল নক্ষত্র জানে একা অপার নশ্বরতা।

আবহ [Bengali Poetry]

দু’হাত পেতে দাঁড়িয়েছি এখন বড় আড়ষ্ট সময়
সাম্রাজ্যের সাধনায় প্রতি রাতে ভেসে যায় অরব ভবিষ্যৎ,
চেনা মানুষের গায়ে ভাসে অচেনা শবের ছায়া
অনুদানের আবহে ফিরে আসে স্বাভাবিক ভিক্ষান্ন,
ক্যামেরার মুখে খুলে পড়ে যত মধুমতী আলাপন
সকল মায়েরা তাদের নির্যাসে বাঁচে অতিষ্ঠ জীবনে।

অগণ্য ক্ষুধার্ত পেটের সংখ্যার চাইতে চাই ব্যালটের হিসেব
চেনা ছন্দে উড়ে বেড়ায় স্মিত হাসি মুখর সকল জন্ম জয়ন্তী,
পথ শ্রান্ত শরীর বোঝে নির্লজ্জ বাঁধনে বন্ধ্যা ধুলার ধরণী
নিত্য প্রাণের হিম্মত বেঁচে থাকে জীবন মরণ প্রতিধ্বনি মানুষের,
করিতকর্মা মন্দির উৎসব খেলায় মাটি গর্ভ জ্বলে পুড়ে খাক।

অবশেষে জানে সে বন্ধ্যা যন্ত্রগণক চপল নানান প্রহর
শেষ ঘণ্টায় লজ্জাহীন সান্ধ্য-প্রস্তুতি ঘিরে ধরে সকল রাজ্য পাট,
বাবা মা সন্তান সন্ততি বোঝে অশনি আবাহনী শংসিত অপলাপ
আবারও জঙ্গলে বাঘ বোঝালো জীবনের আড়ষ্ট ভাষা,
বাঘিনী এখন অকাল শব সাধনায় ঘেরাটোপে নিজস্ব আবহে।

নির্বেদ সাধনা [Bengali Poetry]

প্রাচীন শরীরগুলো জানে গিলে খায় অবক্ষয়
আসন্ন সময়ে দিনে রাতে খোলা রাস্তায় শিক্ষার সচল পোট্রের্ট
প্রাসাদ শীর্ষে ইচ্ছে রোশনাই কপালে বিষ তিলকের উল্কি
সকল ভাণ্ডার মেতেছে সদানন্দে জাগে ত্রিভুবন
ক্ষমাহীন বর্জিত সকল অতীত জ্যোতির ছায়া
অসীম ক্ষমতায় লজ্জানত সকল সাধনা ব্রত
কঠিন গোপনীয়তায় বদলে যায় জীবনের প্রতিচ্ছবি

চিরস্থায়ী আত্মার বন্দোবস্ত জানে ভাতের কথকতা
ওত পেতে বসে আছে রাজপুত্র নিরাপত্তা বলয়ে
অবিশ্বাস্য প্রতিজ্ঞায় কপালে ফলেছে রঙ ছুট আলো
তন্ত্র কথায় কিলবিল করে ওঠে অস্পৃশ্য বশংবদ
অভ্যাস বশত লাশ ঘরে খোঁজে নিরামিষাশী মাংসল আহার
জিভ চেরা রঙিন সাপেদের নির্বিষ সাধু-সন্ত বৈরাগী ভাব
রাজপথ আগলে প্রাণের মানুষ জানে প্রিয় জন্ম দেশ

বুকে ধরে আছি কিছু উজ্জ্বলতা উচ্ছল ব্রত আলো পথে
কে বাজায় ডম্বরু বর্জিত কথারা ভাসে জানে মরণ প্রহরে
আত্মার সমীপে বন্ধক নিজস্ব অর্জন সকল অরূপ রতন
কিছু অপমান কিছু প্রতারণা অন্তর জুড়ে নির্বেদ সাধনা

মানুষের জন্ম বিধি [Bengali Poetry]

কতবার ভাঙা গড়া কেমন সে বিশ্ব জীবন জুড়ে
রাখি বন্ধনের সময় তো শুধু মানব বন্ধন নয়
প্রেমাতুর বুকের উষ্ণতায় জুড়ে বসে রক্ত সম্পর্ক
সে হোক বৈশাখী জন্ম কিংবা বাইশে শ্রাবণ নিয়তি
কখনো হাতে রক্ত পলাশ আনন্দময় উৎসব কথা
সেই তো স্মরণ কাল অশ্রু মোচনে নক্ষত্র পতন

বিষাদ সময়ে মৌন শ্বাসের সকাল সন্ধ্যা
বুকের ভেতর ঘরে বাইরে অতীত আলোর স্বপ্ন রেখা
বাজ বৃষ্টি ঝড়ে ভেঙে মৃত গাছ শরীর তবুও পাখি গান
ভেসে আসে কোথা থেকে সে চেনা সুর ভাঙে স্তব্ধতা

কোন আচ্ছন্নতা নেই বিশ্ব জুড়ে এখনো আলোর ঈশ্বর
ঘেরাটোপে যে যার দেশে ভেবে নেয় আলাদা পৃথিবী কথা
বীভৎসতা এখনো প্রাচীন প্রথা ভাঙে জনপদ প্রত্ন ঘর
প্রকৃতি ভেঙেছে সভ্যতার লোভ অযান্ত্রিক বিশ্বকর্মা
বাঁধন ছেঁড়া সময়ে খাঁচা ভাঙো বর্ণবাদী নির্মল অর্পণে
স্বদেশেই আছি বিষণ্ণ দ্রোহ কালে আবারও জন্মান্তর
কতটা নিরাপদে বাঁচে অবাধ্য সময়ে মানুষের জন্ম বিধি

তরঙ্গ [Bengali Poetry]

ভাঙা জানালায় চোখ রেখে জাগে ভেতর ঘরের স্বপ্ন
আজকাল বুকের ভেতর প্রতিশব্দ বোঝে অর্পণ কাল
জীবনও বোঝে হয়তো বা মৃত্যু জানে আশ্চর্য বাঁধনে
ক্ষমাহীন কখন দেহান্তর ভেজাবে বর্ষা বিষাদ ধ্বনি
শরীরে উষ্ণ হাতের ছোঁয়া ভাসালো জল প্রপাত।

যক্ষপুরীর যন্ত্রণা ছুঁয়ে কাঁটা গুল্ম ভ্রুক্ষেপহীন
তবুও রক্তকরবী কেঁদেছিল কাঁদছে কোথাও
গাছে পাতায় তখন আশ্চর্য বৃষ্টি ঝরেছিল
ভাঙা সে অট্টালিকা ছুঁয়ে আছে কালো মেঘ
অজস্র বাঁধনে শিকড়ে তখন রক্ত হৃদয় খোঁজা।

চেনা শুকনো নদী খুঁজেছিল যৌবন উদ্বেল ঢেউ
শরীরে শরীর উষ্ণতায় বেজেছিল জল তরঙ্গ
হায় রাধা কাল কাঁপা ঠোঁট উতরোল কাঁচুলি বলয়
আবিশ্ব পুরুষ সকলই মজেছে কি কৃষ্ণ মঙ্গলে
আস্তিক বৃষ্টি ভেজালো মাটি ঘাস প্রকৃতি শরীর
নাস্তিক বাতাসে বেজে উঠলো পরম সুরে জল তরঙ্গ।

আত্মার অক্ষরে [Bengali Poetry]

আলো প্রহরের লাবণ্য খোঁজে শেষের কবিতা
কৃষ্ণ গহ্বরের রশ্মি মেখেছে হিম সময়ের উৎস
যতটা জড়িয়ে গৌরি পট জ্যোতির্লিঙ্গ দেহে
পাথুরে জঠর চিরকাল ছিঁড়ে ফেলে
অবলীলায় জন্ম শিকড় তুলে রাখে বাল্মিকী
এপারে ওপারে সকল প্রকোষ্ঠে যৌবন দূত
সকল আদুল শরীর চেনে প্রজাপতি পরাগ রঙ।

রাতের তারারা জানে সকল শরীর ছুঁয়ে
অজস্র আলোর ভেতর সাদামাটা মানুষের নির্ঘুম সুখ
কালোর ভেতর তালুবন্দি সুগন্ধি গন্ধরাজ
চতুর্দিকে ছড়ানো হৃদয় বাগান তরকারি সবুজ
সকল পুরুষ মেয়ে ছায়া আঁকিবুঁকি পৃথিবী সূর্য চাঁদে
সপ্তমুখ খুলে দেখে প্রতারিত চন্দ্রকলা অন্তর বলয়ে।

আমারও চেনা অক্ষর শব্দমালা জড়িয়ে আঁচল মায়ায়
শৈশব হীন মগ্ন প্রকৃতি জানে নিভাঁজ শরীরের কান্না
বৈশাখী শব্দের অঙ্কুর জানে আত্মার অক্ষরে অস্ফুট ধ্বনি।

চন্দ্রিমা [Bengali Poetry]

দোলের চাঁদে রঙ লেগেছে রাতে কৃষ্ণচূড়া সোহাগ
কাঁপছিল কি কোকিল স্বরে পরাগ ওড়া বাতাস,
কথার ভেতর বর্ণমালায় প্রেমের আখর আলো
অভিসারে হলুদ বসন্ত রাধাময় শরীরে আগুন মাখো।

অসময় তবু রঙ মাখে মনে বনে পারিজাত পরিমলে
অফুরান কথা ফিরে ফিরে আসে মধু মাখা সঙ্গীতে,
প্রতি ঘরের উঠোনে কে কার চরণে রাখে ফুলের অঞ্জলি
বর্ষ শেষের অন্তর কথা মুক্তি স্নানে চলে রঙের অভিসারে।

আমার পলাশ রাঙা চোখের দেখা বাউলের পথ
তোমার শিমুল রঙের হাসি মাখালো ঠোঁট বাঁশির সুরে,
রঙ ঢেলেছি সুখের ঘরের চেনা উঠোন জুড়ে
হেসে উঠলো দূর্বা তখন গোলাপি রঙের ভোরে।

শ্রীখোল রঙ্গে মজেছে নগর কীর্তন তোলে রসিক বোল
আহা ! শ্রীরাধা সিঁথি রাঙা দোলে কপালে রক্ত প্রবাল,
কালবেলা জানে ঋতু স্রোত শেষ বসন্তে বিরহে কানু
চিত চোর জানে বন কুটিরে চন্দ্রিমা অনন্ত প্রতিভাসে।

জাগরণ [Bengali Poetry]

দু’হাতে ছড়িয়েছি আমার স্বরলিপি
অবরুদ্ধ যন্ত্রণায় এখনও অক্ষরে রক্ত দাগ
কোথাও অন্তর্বেদনা ভাসে মুক্ত বলয়ে
সবার বুকের ভেতরে বাঁচে আত্ম কথন।

কিছু হৃদয়ের শব্দেরা বর্ণ খুঁজে ফেরে
কিছু অক্ষরের শরীরে আত্ম জন্ম দাগ
প্রশান্ত বাতাসে ভেসে গেছে বসুধা
মগ্ন বর্ণমালায় খোঁজে প্রাণের সংহিতা।

নিষ্ফলা সময়ও জানে আহা শব্দ কাঙাল
স্বভূমি জানে নির্লজ্জ ব্যবসা খোঁজে শব্দ বণিক
আমার বুকের রক্ত ফুল অন্য ভাষা সুখে
অজস্র পাষাণ শরীর ভেজে অক্ষর কান্নায়।

ভাষারা অনাথ শিশু খোঁজে কুঁড়ে ঘর শীতল পাটি
আঁচল পেতেছে উবুড় হৃদয় নকশিকাঁথার কথা
কিছুই হারায়নি বলে প্রতিদিন ভোরের আকাশ
সকল ভাষা ঘরে অক্ষর আত্মার আশ্চর্য জাগরণ।

আত্মক্ষয় [Bengali Poetry]

আদিম কালের জলছবি রোদ মাখে আলো ছায়া রঙ
মৌন সময় ভাঙে ঘেরাটোপ অন্তরঙ্গ হাতের ছোঁয়ায়
সিঁদুর ছুঁয়ে চন্দন কপাল ঢাকা রুদ্ধ সময় ডাকে
অপেক্ষা বোঝে বিনিদ্র চোখ জানে যন্ত্রণার রাত
মহাবোধি জানে বিষণ্ণতায় শুকিয়ে কাঠ গরম ভাত।

প্রবাসী আকাশ জানে মুক্তি ভাসে পাখির ডানায়
রহস্যময়ী বোনে সোনালী কুয়াশা জাল নিপুণ কৌশলে
কখনো সখনো ধর্মতলা ডোরিনা ক্রসিং গঙ্গা ডেকে আনে
বিবর্ণ দুপুর জানতো রাস্তায় লুটোবে দিগন্তের রঙ
বৃদ্ধা মা ফেরায়নি কখনো ছেলের স্বপ্ন আলো ডাক।

অপেক্ষায় থেকেছে অচেনা জীবাশ্ম উষ্ণ ভালোবাসায়
মাটির শরীরে কী গভীর পবিত্রতা ছুঁয়ে থাকে
জড়িয়ে স্মৃতির অক্ষত অনুভব শরীর শিরায় ধমনিতে
প্রত্যয়ী স্বরে জীবন বাঁধা অপ্রাপ্তির সকল হিসেবে
শরীরগুলো ভেঙে কখন যেন ভরে উঠলো বিস্তীর্ণ পট
নিষ্ঠুর রঙ বদলে আশ্লেষে আত্মক্ষয়ে একাকী জন্মকাল।

অনুরাগ [Bengali Poetry]

রাত জানে কৃষ্ণ সময় সকল কুঞ্জবনে
রাধা ভাবে জীবন জড়িয়ে আত্ম বলয়
পাপ তাপ বোঝে না তেমন বাউল ভাটিয়ালি
মনোহর বাঁশি জানে শ্রীখোল খঞ্জনী
হৃদয় জুড়ে টান প্রিয় জীবাত্মার
সকল জন্ম সুখ বাঁধে অষ্টমী ভোর।

ঘুমঘোর ভেঙেছে ভেজা রাতের চাঁদ
ঝুপড়ি ঘর ভাসে ঝুমুর গানের মায়ায়
হিম সময়ে অসহায় আশ্রয় হীন অজস্র মানুষ
বিহুগানের সুর থমকে জানে বোবা বাঁশি
সুরের আয়ু খোঁজে এখনো কুঞ্জ বাসর
রাতের জোছনা পথে একাকী বেপথু ঈশ্বর
ঘন নীলে মাধব রাধা আঁচলে শিশু চোখের জল।

শূন্য আলোর চাঁদ মায়া মন্দির মসজিদ ঘরে উঠোনে
শালিক চড়ুই জানে সুখী সংসার প্রিয়া পরবাস
তবুও জড়িয়ে অনতিদূর বহু বর্ষ আলোক
বর্ষা জানে বীজে বাঁচে ভবিষ্যতের আত্মা অঙ্কুর
সকল প্রেমে প্রিয়া মুখ স্নায়ু শিরা ভ্রূণে
রাধা মায়া মাখে পারিজাত ফুলের সুবাস
কুঞ্জ পথে মঞ্জরি মাখে অভিমান কৃষ্ণ অনুরাগে।

দু’চোখে শরীর পোড়া জল [Bengali Poetry]

অবিনশ্বর মহাকাল জানে জীবন আর মুক্তি
ঘিরে আছে অপূর্ণ প্রেমালাপ মগ্ন অবসাদ,
পাখি ফুল গাছেদের অলৌকিক প্রার্থনা আজও
জীবন মরণ পাশাপাশি মধ্যে ব্যাকুল চরাচর,
মুক্তি খোঁজে সমুদ্র শালিক গাংচিল আকাশ মহিমায়
মোহনার ভাঙা সেতু শরীর ছুঁয়েছে জন্ম সাঁকো,
মরা স্রোত গা ভেজায় আত্মমগ্ন চাতক পরিহাস
নদী নারী উচ্ছলতা জানে এ সময়ের নীল নির্মমতা।

বালিয়াড়ি চেনে না সমুদ্র চেনে ফণি মনসা ঝোপ
কতকাল টেনেছে শরীর কামটের দাঁত,
কালো কাঠ ছড়িয়ে শ্মশান চিতা সম্পর্ক পরম্পরা
নিভু নিভু গ্রহ নক্ষত্র জানে হৃদয় জোড়া,
এসময় ঘিরে আছে পাষাণ প্রাচীর
তবুও কি সুখে জোনাকি নাচে প্রেম রোষে,
প্রতি রাত ভাষালোকে কাঁপে জলজ বাতাস
ছদ্মবেশ হীন সময়ে এ কেমন আত্মার বিবশ বিশ্রাম।

নারীর শরীরে বেড়ে ওঠে সকল আত্মার পরিচয়
উৎস মুখে জারিত গল্পে কেন হবে মন্দ স্রোতা সুর,
চিরন্তন আত্ম কৃতি জানে দু’ চোখে শরীর পোড়া জল।

নম্র ব্রততী [Bengali Poetry]

প্রাণের জন্য জলের জন্য ঘিরে থাকে ভয়
অনাবিষ্কৃত দরজার আড়ালে গুহা ঘর নশ্বর কাল,
দিগন্তে ক্লান্ত শরীরে উষ্ণ বুকের হাহাকার জানে মরণ প্রহর
কেউ কী শুনতে পাচ্ছো গুহার গুহ্য কথা অসবর্ণ খবর !
ভেজা মানুষের পোশাক বদল বুঝেছে গ্রাম শহর
দেবতা জানে কৃষক মজুরের গরম ভাতের গন্ধ মায়ের আঁচল
বরাভয় হাতে কতটা কাঁপায় পাপ ও পাপীর অরূপ প্রার্থনা।

সবার ভেতরে জেগে ওঠে কঙ্কাল মানুষের অতীত শরীরে
অনন্ত মুহূর্তে জলে ভিজে গেছে মাজারের চাদর
ঈশ্বর জাগে একান্তে প্রত্ন ঘরে অসীম বেদনায়
ভেজা চিতা ভস্মের আধারেও বিষোদগার আগুন সমীপে
ঘুমিয়ে নেই মুখোশ মারণ ঘাতক এ কেমন দুনিয়াদারি !

জল দাও জ্বলনের প্রতি মুখে কঙ্কাল ভস্মের আগে
কেন কাঁদে চরাচর বাঁয়ে ডাঁয়ে ক্ষমা অসহ্য বুকের হাপর
পাপ পুণ্যির সম্মিলন জানে কুশলী অরব আরাধনা
অচেনা মানুষের হাত ভুল স্বর্গ রচনার বিশ্বাস খোঁজে
রক্তিম সকাল খোঁজে ধ্বস্ত নীল নির্মাণ আর গোধূলির নম্র ব্রততী।

পথে পথে জীবন্ত পোর্ট্রেট [Bengali Poetry]

আগামী সময়ের পথ জানে মানবিক ভালোবাসা
মুখোশের আড়ালে থাকেনা কখনো ফুলেদের মুখ
চোখের আলোয় জেগে থাকে সমূহ অন্ধকার
অজস্র রক্ত চিহ্ন এঁকেছে পায়ের ছাপ দুঃসহ নীল রাতে ।

যন্ত্রণায় পায়ে পায়ে হাঁটে প্রতিদিন প্রবাসী ঈশ্বর
রাত ভোর হলেই আবার সূর্যোদয়ের পথে,
সপ্তাশ্ব তেজের পথে অবক্ষয়ের কালো ছায়া ভাসে
সুভদ্র বচন আনন্দ কলরব থমকে মিথ্যাচারে,
নদী জানে গাছ জানে অসহায় হেমন্তের ভোর জানে
সরল পাখিদের কলতান বোঝে জীবন আবহমান ।

এখনও মধ্যরাতে মগ্ন রোষে ধ্যানে ঋতু সংকেত
পোড়া মাঠের খিধে ঘুমোচ্ছে ঠান্ডায় অক্ষর পালক,
রাজপথ জনপদ দেখে চাঁদের চাঁদোয়া শূন্য বুকে
মিট মিট গ্রহ জানে থমকে থাকে নক্ষত্র পলক,
রিক্ততার ভয়ে মাঠে ফসলে বীজে অঙ্কুরে কলরব
অজস্র অক্ষর ছবি পথে পথে জীবন্ত পোর্ট্রেট।

আগুন ছোঁয়া সুখ [Bengali Poetry]

কোন স্মরণীয় পথ ধরে কেমন বাঁচে অরণী
ইচ্ছে আতস কাঁচের ভেতর
দাঁড়িয়ে আগুন বরণী।

অনেক উঁচু সীমানা হীন জীবন জুড়ে হৃদ্যতা
খোলা শরীর উষ্ণ কথা
স্বর্গ জানে বদ্ধতা।

রাত জোনাকির নাচন দেখে স্পর্শ সুখের চুম্বনে
শোকাহত ফুলের গন্ধে
চলছি সহ মরণে।

নোঙ্গর তুলেছি ভরা জোয়ারে নৌকা জানে
জলের ঢেউ নাচায় শরীর
জীবন জোয়ার উজানে।

শঙ্খ চিলের কান্না ভেজায় ডানার নোনা জলে
রাতের ভেতর শীত বসন
দৃষ্টি ঢাকেনি কাজলে।

চেনা সবুজ লতা গুল্ম সাজছে বকুল মুকুলে
প্রসন্নতা চোখে মুখে
জোয়ার টানে দিস খুলে
আগুন ছোঁয়া সুখ বাঁচে ঝুপড়ি চাতর দু’কুলে।

অন্তর্বোধ [Bengali Poetry]

পোড়া বনাঞ্চল হারিয়েছে জন্ম অস্তিত্ব বোধ
পড়ে আছে মানুষ তলায় বন্য হলুদ ঘাস,
পূবালী হাওয়ায় ভাসে সবুজ পাতার আলো
এখনো বুনো পাখিদের গানে মুখর বাতাস,
বিল সারস ফিঙে গাংচিল চাতক ভিক্ষুণী
রজঃস্বলা হরিণী জানে সে বড় মন্দ ভাগিনী।

বকুল গাছের আড়ালে পাপিয়ার মায়া ডাক
কোকিলও জানে অসময়ে গানের অধিকার,
আমাদের মুখে দুঃখ ভেতরে বানাই সুখ কথা
পাষাণ ঘরে লুকিয়েছি মুখ কেবলই অন্ধকার,
এখনও আত্মার মতো বৃষ্টি ভেজায় জীবন
কখন লুকিয়েছি মুখ প্রার্থনায় অমৃতের ঘরে।

কেউ কেউ জানে হয়তো পৃথিবীর অসুখ
অতল সমুদ্র জানে নীল বৃত্তে আগুন বলয়,
যে ভাবেই হোক খুলেছে মুক্তো গর্ভ ঝিনুক
অতল স্রোতে অগ্নিমুখে রক্ত প্রবালের উৎসব,
মাটিতে জাগে আর্তি ভিন্ন কথা ভিন্ন স্বর বোধ
কত ভাষায় জেগেছে প্রার্থনা নম্র অন্তর্বোধ।

বিকাশ চন্দ | Bikash Chanda

New Bengali Article 2023 | স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন

New Bengali Article 2023 | শ্রমের শোষণ

New Bengali Article 2023 | বাংলায় শিল্পে বিনিয়োগ সামান্যই

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

bee bengali poetry | bengali poetry about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer bengali poetry | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdodweep Founder

Leave a Comment