Best Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

Sharing Is Caring:
BENGALI POETRY
Bengali Poetry

শস্যের চিত্রপটে [Bengali Poetry]

দিনান্তে স্বস্তি কাল আসবে জানে সে আত্মদর্শী পথিক
সকল গচ্ছিত প্রত্ন ঘরে আলো ফেলে চন্দ্র কলা
মাটির ঘরে বাঁচে অনিবার্য নিয়তি আর প্রাণের অঙ্কুর
ঋজু সন্ন্যাসী জ্যোতি ফলেছে গাছে ফুলে সংসারে
প্রেম লেগেছে বাতাসে নিঃশ্বাসে প্রভেদ হীন
মেঘ কালো দিন নেই তবুও বিভ্রান্ত জনপদ
সান্ধ্য প্রহরে আকাশগঙ্গায় হেসেছে বিপত্তারণ চাঁদ

অতল স্পর্শ মায়া কাজল ভিজেছে একাকী
করতলে অর্ঘ্য ছিল কি হিংস্র আঁধার ঘেরা
অতল দিঘির ঘাটের শ্যাওলায় স্পন্দহীন জল ছায়া
বিশুদ্ধ স্বরে ভাসে ডাক পাখিদের ঘরে ফেরার
প্রাণের টানে কোথাও বাজে চেনা ছন্দের নূপুর
এক হৃদয়ে সকল হৃদয় জাগে আলোর বিভায়

স্রোতোময় বাতাস গোধূলি সময় সীমায় নির্লিপ্ত একা
ঝুমকোলতা কৃষ্ণচূড়ার গায়ে নামে মৃতগর্ভা অন্ধকার
দোসর আমার চতুর্পাশে এক ধমনীর জন্মের উত্তাপ
নির্বিবাদী জ্যোৎস্নায় স্পন্দন দ্বিচারিতা হীন সময়
পুরুষ্টু শস্যের চিত্রপটে শরীর জুড়ে শূন্য মায়াতরু

সৃজন রেখা ডাকে [Bengali Poetry]

হাজারো প্রেমময় বন্ধন রাত শেষে প্রজাপতি ওড়া
প্রিয় রঙ স্বপ্নেরা ভাঙে আয়নার মতো টুকরো
চাঁদের গায়ে প্রভেদ হীন নরম আলোর শেষ অলংকরণ
সব কটি আত্মার মানুষ কোন সুরে বাঁধে জীবন

প্রিয় সব হাসি মুখ জানে পেছনে বেদানা বকুল শিউলি
শাপলা শালুকের পাতায় প্রথম রোদে সকল ফুলের স্পন্দন
জীবনে জীবন মেলে নতুন হৃদয় জুড়ে উষ্ণ শ্বাসের টান
সময় ডেকেছে শরীর বরণে শরীরী উত্তাপ হাসিময়

জন্মের সময় জানেনা কোন সীমা দেশভাগের জন্য ঠিক
গৃহস্থ উঠোনে পিতৃ পিতামহ অপেক্ষায় বহুকাল নৈরাশ্যের
ঈশ্বর জানেনা শরীরী ভাষায় বাঁচে তর্পণ কাল
সকল আয়ুর সবুজে বাঁচে হিরণ্ময় বারোমাস

চেনা মুখের অন্তরে সুখ অতল নদীর ঢেউ ভাঙে চর
সোনার বরণ সকাল ডেকেছে নূপুর সুরে নিঃশব্দ চলন
পুরনো ঘরের উঠোনে তেমনি আলোর ভালোবাসা ঘর
অমল সৃজন রেখা ডাকে অমল আনন্দ বেলায়।

আয়ু আর সেতু [Bengali Poetry]

আয়ু রঙ খুঁজে ছিল রাতের উজান বেলা
আনাড়ি সময় জানে জ্যোতি হীন চোখের জল
কেউ জানে না কোনো ও রঙ মাখেনি অন্তর্লীন মায়া
একাকী আটকে সকল চোখে ফসফরাস শোক

কে জানে কোথায় পোড়ায় আগুন কোমল স্বভাব
শরীরের কোন অংশে আছে জন্ম চিহ্ন
বিসর্জনের নির্মোহ অস্থি ছাই
শস্যের বিলাপ জানে আমার কাতরতা
জীবন্মৃত সময়ে বেঁধেছে বিলাপ কালের কথা
প্রতিদিনই পুনর্জন্ম জানে ব্রহ্মসকাল

যে যার মুঠোতে ভরেছে নিজের সিদ্ধি কাল
তবুও পরস্পর বাঁধা গোপন সুতোয়
শত্রু মিত্র আপন জন বাঁধা
জন্ম দাগ জুড়ে জুড়ে কেমন সেতু বন্ধন
ধারে কাছে সকল গাছে শরীরের শ্বাসে
কিছু অক্ষর ঝরে পড়ে আলোর বিশ্বাসে
অরূপ সময়ে হাতে দিয়ে গেছে অন্বিষ্ট শব্দ সকল
আয়ু আর সেতু বাঁধনের চিঠি ও চেতনা সংলাপ

আত্মরতি [Bengali Poetry]

অন্তহীন সময়ে খুঁজেছি আলোর বুক
ফিরে দেখা নেই সুখ নেই দুঃখ কেবলই যন্ত্রণা
অসম্ভব এক অন্ধকার ঘিরে কৃষ্ণা চতুর্দশী ছায়া
অসহ্য বীভৎসতা আড়ালে রেখেছিল কাপালিক চোখ
উদ্বাহু সময়ে খোলা চুলে হাওয়ায় জাগে ত্রিনেত্রা কালী
ভেদ রেখা বোঝেনি ক্ষুধার্ত শরীর দু’বাহু মায়ের
রক্ত শরীরে ফুটে উঠছে আত্ম রাগে নতুন শিশু
সুন্দর সময় খুঁজে ছিল শূন্যের হাতে চৈতন্য সংরাগ

ঘাস মাটি জলের শব্দে অলৌকিক শস্যের শরীর
বোধন কালের হিংসায় ভাসে শিব দুর্গা কালান্তরে
সকল আবহে নির্ভার স্ফুলিঙ্গ পোড়াচ্ছে শরীর
অকস্মাৎ নির্মাণ কালের মহাশূন্যে চূর্ণ আলোর চিৎকার
এখন কল্পতরু রুগ্ন কালে অভিভূত ইন্দ্রিয় ঘুমে
স্বধর্ম ভুলেছে পথ প্রতিদিন জাগে বোধন কাল
তবুও জেগে আছে শেকড় বাকড়ে অক্ষয় বটের ঈশ্বর
অমৃত কলস ছুঁয়ে রাজা রানী বসে নিভৃতে আত্মরতি

শব্দজীবী [Bengali Poetry]

কামনার উৎস পথ ভুলে যেতে চাইনি তবু ভুল হয়
বিহ্বল সে মোহন রাতের বিভ্রম ঝিঁঝিঁ ডাক জোনাকি,
প্রতিদিনই আসে নিঃশব্দে হঠাৎই ডানে বামে দীর্ঘশ্বাস
জড়িয়ে শরীরী আচ্ছাদন কখনো চেনা প্রেমের উষ্ণতা,
বেঁধেছে মৌন সম্ভ্রম অনিবার্য নিয়তি চোখের ইশারায়
মাথার উপর একান্ত চাঁদ ঝুলে থাকে পুনর্জন্ম রাতের ছাদে,
হঠাৎ স্বপ্ন দেখা ঘুমহীন আত্মজা জানে শৈশব স্মৃতি
উদয়ন সময়ে বয়স কাল বোঝে বাহু বন্ধে জড়িয়ে উষ্ণতা।

শব্দ অক্ষরে বিলাস দিব্যি সনাতন শ্রীবৃদ্ধি আলাপন
অরণ্য ভেতর উপবন অজানা ফুলের সহবাস ক্রমাগত,
কখনো নৈর্ঋত ঈশান কালের হাওয়া আলোময় মায়া
পৃথিবীর ক্যানভাসে শরক্ষেপ প্রেম প্রণয়ে আমন্ত্রণ,
অনন্য সৃজনে উচ্চকিত আনন্দ সংলাপ অপরূপ
ঘরময় জড়িয়ে আছে শেকড়ে সংসারে সকল দেহ লতা,
না চেনা তবুও আত্মজন বনবালা আঁচলে সলাজ সুষমা
মাতৃ বর্ণ রূপে জীবন যাপন বোঝেনি বুভুক্ষু শব্দজীবী।

দুধ ধানী হেমন্ত শীষ [Bengali Poetry]

রাঙা জবা জানে কি আদৌ
জলের ভেতর জলের জন্ম রক্ত ছায়া
সকল সত্যি মন্দ রস কথা
মনের ভেতর প্রাণের শরীর আত্মকায়া

গাছ পাতা ফুলে পরাগ রেণু
বৈরাগী বাঁধা একাকী রক্ত বর্ণ সন্ধ্যায়
সকল গোপন আত্ম রোপণ
হৃদয়ে অক্ষরে যাপন কোন মহাবিদ্যায়

মাটি বীজ অঙ্কুরে শস্য জানে
জলের ভেতর জলের শরীর সত্যি জাগে
দুধ ধানী হেমন্ত শীষ জানে
দুঃখ হরা নবান্ন পরব— ডাকে অনুরাগে।

ডাক পত্রপুট [Bengali Poetry]

দীর্ঘায়ু জড়িয়ে এখনো প্রবীণ জীবন
ডাকঘরে ডাক পত্র
আহা ! আজীবন অনন্ত যৌবন প্রভা
জেগে আছো বিশ্ব বিশ্রুত
তুমি হে রাজন !

জন্মকাল জেনে ছিল দেবতার ছায়া
টরে টক্কা সময়ে পোস্ট কার্ড শরীরে অক্ষর সুখ
স্বাধীনতা আসেনি— ছোট চিঠি এসেছিল ;
শ্রী চরণেষু মা বাবা, প্রণাম জেনো।
আমার কাজ পাকা— ইতি, রতন । ১লা এপ্রিল ১৮৬১….

সীমান্তের সাহসী সেনার চিঠি
বহুবার এসেছিল শিরোনাম জয়হিন্দ
সানন্দ সংবাদ ভেজা বকুলের গন্ধ
গ্রামের সদ্য যুবতী বউ আঁচলের আড়ালে
হাতে পেয়ে বুকে লুকিয়েছে প্রণয় পরশে
মাখন রঙা পোস্ট কার্ড লেখার ওম মাখে।

ভারবহ সুখ দুখ বোঝে কাগজ কুসুম
চিহ্ন হীন চুম্বন ছবি আঁকা জানে যন্ত্র গণক
মেঘের দুয়ার চেনে পায়রার ঠিকানা
সকল ইন্দ্রিয় সুখ জড়িয়ে শরীরে ডাক পত্রপুট।

নিবিড় শ্বাসে আলোর হাওয়া [Bengali Poetry]

শরীর জুড়ে বৃক্ষ পিতার শিকড় চিহ্ন অস্থির সময়ে
দীর্ঘশ্বাসে কেঁপে ওঠে হাড়মজ্জা অন্তিম বিলাপ,
মনোময় সকল সন্তাপ ঘিরে আছে আত্মার মতো
অন্তরঙ্গ সময়ের সকল ঘনিষ্ঠ অবয়ব চুপচাপ,
নিভৃতে বেড়ে ওঠে দেখে গেছে আড়ালের ক্ষত
মাটি জলের স্পর্শে কতটা টানে রক্তের মায়া স্রোত।

গ্রীষ্মের ঘামের মতো মাটি ভেজা বৃষ্টি অনাহুত
ভয়ানক সময়ের চোখ নিবিষ্ট দৃষ্টি খোঁজে মণিরত্ন,
আমার অসহ্য যন্ত্রণার স্পন্দন তোমার বিনত বুকে
রোদে বদলে গেছে সবুজ গাছের পাতার ছায়া রঙ,
হাতে হাত রাখলে ঝুপ ঝুপ বৃষ্টির সুর অনন্ত আরাম
নেশা হীন তবু টালমাটাল ডেকেছে অনাদৃত বিশ্রাম।

আকাল সময়ের উষ্ণতা এখনো বোঝে জন্ম আদর
অবাক কথারা মুঠো ভর্তি নড়ে চড়ে উত্তাপে,
খেলাঘর খুঁজে ফেরে দুদ্দাড় ছোটে হাভাত মুখের সারি
প্রসন্ন হাসির আড়ালে লুকানো মুস্কিল অযুত যন্ত্রণা,
বৃক্ষমাতার শেকড়ে বাকড়ে কোজাগরী রাতের দুধ ধানি শিষ
অজস্র গাছে মানুষে কী নিবিড় শ্বাসে আলোর হাওয়া।

আনন্দ পাঠ [Bengali Poetry]

চায়ের কাপে চুবিয়ে দিচ্ছিলেন
পোড়া সিগারেটের ছাই সহবত এক চিমটে লজ্জা
থমকে থাকা হাত সড়গড় এগিয়ে গেল
বিরোধী হাওয়ার গ্রাস জড়িয়ে নিল শীত বস্ত্র
শূন্য ঘরে পরস্পর দীর্ঘ শ্বাস ফুঁড়ে যায় অন্তর
পাষাণ হৃদয়ের ক্ষত কাহিনীর আগুনে জল
আদি শ্লোক বাতানুকূল ঘরে স্নেহে গলে জল
পৌরুষ সময় লালন কাহিনী শোনায়
জন্ম বিকল মনুষ্যত্ব হয়ে ওঠে তৃণভোজী রাজপুত্র

শীত ঘুম পারবে আগুন উষ্ণতায় ক’টা বিষণ্ণ মুখ
বন্ধু তত্ত্বের ভেতর পাশ ফিরে বিষধর শরীর
ছেঁড়া শীত বস্ত্রের সম্পর্ক বোঝে গ্রাম শহর
পোড়া অক্ষরের শরীরে শব্দ বোধের রিপু কাল
এফোঁড় ওফোঁড় বাঁধন সুতোর ব্যতিক্রমী উৎসব
উঠোনে দুয়ারে আরো আধুনিক হৃদয় মাপার যন্ত্র
ঘুণাক্ষরেও কেউই টের পায়নি পতিতা রক্তের দাম
অভিমানী মাটি খুবলে কোঁচড় ভর্তি করে ভাস্কর
অসম্পূর্ণ হৃদয় উগরে দেয় সে এক বিচ্ছিন্ন আনন্দ পাঠ

অন্তঃছায়ায় প্রণয় উৎস [Bengali Poetry]

প্রাণের কান্না বোঝে নিশুতি-রাতের একা কোজাগরী
তবুও ভারি চোখে ভেসেছে উচ্ছ্বাস ভালোবাসায়
নিদেন পক্ষে একটাই জীবন বাজী ধরে বসে আছি
ভূবন জোড়া সম্প্রীতি টানে কোন সে পাতাল চক্র
জাত গোত্র ছিঁড়ে খেয়েছে সকল দুঃসময়
অরূপ রূপের নক্ষত্র বিলাস ছেঁড়ে রাত্রির ছায়াপথ
নিষ্পলক প্রতি দ্যুতি মাখে চোখে মুখ ঢাকা আঙ্গিকে

রাতের শেষে জড়িয়ে বাঁচে সত্যি মনের মানুষ
রক্ত ছড়িয়ে জড়িয়ে বাঁচি শ্বেতকরবীর জ্বালায়
অদৃশ্য শূন্যতায় উদ্যত কোথাও কি দানব দানবী
প্রাণের দোসর জড়িয়ে জানে হৃদয়ের ভার যত
স্মৃতিনাশা সময়ে ভেসেছে আত্মার মানব মানবী
বুকের ভেতর গুমরে আছে কষ্ট কাঁটা পাথর

অহরহ হৃদয় বাসর জড়িয়ে পুরুষ পাথর কেমন
প্রাণের ভাষা তৃষ্ণা কাতর ভাঙা অমৃত কলস
বিপন্নতায় জেগে ওঠে ছিন্ন করে প্রত্ন ইতিহাস
সাম গান ঢালে কান্নার কনকাঞ্জলি অকৃত্রিম
নগ্ন দেহে অন্তঃছায়ায় প্রণয় উৎস ছয়লাপ বসন্ত রঙ

অনন্ত নক্ষত্র ফুল ফোটে [Bengali Poetry]

রক্তপাতের কাল ছুঁয়ে আছে কপালে জন্ম চুম্বন
দখলদারি বৈভব খেলায় আশ্চর্য স্বপ্ন বোনা
অদ্ভুত গ্রহ নক্ষত্র দেবতা জড়িয়ে আছে বুকের অসুখ
উদ্ধত বিলাসী জলসায় বিপন্ন বিপ্লব সময়
ধ্বস্ত রমণী রমণের মতো জড়িয়ে প্রলোভন নৃশংসতায়

হাজারো যন্ত্রণা বেড়ে ওঠে জল মাটি হাওয়ায়
ঘরে ঘরে অবসন্ন কালের বিষণ্ণতা দু’ঠোঁটে কাঁপছে
কালো ওড়নায় ঢেকে আছে অমৃত জন্ম কথা
মৃত শরীর জুড়ে কাক রঙ ছাই পালকের নির্ভার ওড়াউড়ি
মনের ভেতর পোড়ে আত্মার প্রাচীন লাশ কুঠুরি

মাটির ঘরে দেয়ালে বহু চূর্ণ কথামালার দর্পণ
বৃষ্টির মতো বিরূপ সহস্র মুখে ধিক্কার বাধক দোষের
উঠোনে দাঁড়িয়ে মুখোশ আড়াল ক্লান্ত দৃশ্যায়নে
বেমালুম ভুলে গেছে সুশাসন সময়ের নীতিমালা

জল ছবি কথা রঙ আবাহনী কথার স্তুতিময় স্বরলিপি
প্রতীকী আত্মা ঘিরে রাখে রক্ত গোলাপ পাঁপড়ি
আকাশ নীলের সীমানা ছুঁয়েছে গোধূলি বুকের সময়
অক্ষর ঘরের চোখে মুখে শিক্ষার ইস্তাহার
সনির্বন্ধ আলোয় অনন্ত নক্ষত্র ফুল ফোটে

ঘুম গ্যারেজের বাসিন্দা [Bengali Poetry]

রাজা তখন ঘুম ভবনে মগ্ন স্বপ্নের এলবামে
যে যার ব্যস্ত প্রাকৃতিক পরবাসে জীবীকার শব্দে
ইচ্ছে ঘুম চটকে গেলে শুকিয়ে কাঠ সুরম্য বাগান
হঠাৎ জেগে উঠলে সমস্ত ক্যানভাসে জলছবি মৃত্যু গোনে
রাজার টাইম টেবিলে চোখ রেখে ওঠা বসা করা চাই
ভাষারও অদল বদল সাবেকি বৃত্তে তাঁর সিংহাসন
কি অদ্ভুত সময় শীত ঘুম ভেঙে গেলে বিষকল্প ক্রোধ
রাজাদেশে পাড়া সুদ্ধ গুটিয়ে আনে নির্ঘুম রাত গারদে
পালাবার পথ আটকে দেখো ‘ আমি তোমাদের লোক….
উৎসবে ছয়লাপ রাজপথে স্বপ্ন চিহ্ন আঁকে

রাধাচূড়া কৃষ্ণচূড়া পরস্পর ভাসে প্রেম পরাগের রেণু
পাখিরাও পরস্পর পুরুষ নারী ডানা ছুঁয়ে ঝাপসা চোখে
ঠোঁটে পালকে বুকে রতি স্বপ্নে ঝরে পড়ে এক একটা পালক
গাছের নগ্ন শরীর চেনে না ফাটা বাকলের বিপন্নতা
ধারে কাছে জ্বলে উঠতো কাঁচা আগুনের বয়স
ছা’পোষা বিধু কানাই রসুল জানে গ্রীলের নক্সা বোনা
চোখের সামনে নেচে উঠতো স্বাতী নক্ষত্রের ঝাঁক
এমন ক্ষিদের আবহ সঙ্গীত বড় কর্কশে বাজে পঞ্চস্বর
শরীর ছেঁড়ে রাজ রোষ কেবল জানে ঘুম গ্যারেজের বাসিন্দা

শব্দ সরস্বতী আর লাল পেড়ে শাড়ি [Bengali Poetry]

পিতৃ পুরুষেরা স্নানাহার শেষে জন্মান্তরে একান্ন পীঠে
মহাবিশ্বের কতনা পালক পিতা আল্লা ঈশ্বর বুদ্ধ যীশু
জবা সঙ্কাশ ভোরে সূর্য প্রণাম আযান জানে পরমায়ু
প্রার্থনা ঘরে ছড়িয়ে অচেনা পাখিদের পুণ্যি পালক
মানুষের শৈশবে বাইরের মতো ঘরেও পরজন্ম নেই
কতো না স্নেহ চুম্বন মনে পড়ে না জানে ব্রাহ্ম মুহূর্ত
শরীর থেকে শরীর বদলে অবাক প্রসন্ন প্রত্যুষ
হিসেব মেলা ভার কত মানুষের অপচয় কোথায় সাজাবে
যতটুকু কুড়িয়ে সঞ্চয় তাও একান্ত শূন্যতায় ক্ষতির চিহ্ন আঁকে

বাজী ধরে বসে আছে আশ্চর্য বাঁধনে প্রণয়িনী
শাসাচ্ছে রাতের নগরপাল গলায় দেবী সূত্র উত্তরীয়
কানে কানে বীজ মন্ত্র ত্যাগের কথা কামিনী কাঞ্চন গল্প
শরীরে কোনো কলঙ্ক নেই রক্ত মাংস মজ্জায় গোত্রে
কলঙ্ক ছড়াতে ব্যস্ত নিষাদ স্বৈরিণী পদ্মগোখরো সাপ
সুষনি শাকের নয়ানজুলির দু’ধারে জীবনের ঘরবাড়ি
এই দেখো না উন্মুক্ত দু’হাত অন্তরে বুকের মহা শূন্যতা
চেনা নদীর দুপাশে নকশিকাঁথা হিরণ্ময় ঘরবাড়ি শরীর
উঠোনে প্রতিস্পর্ধী শব্দ জন্ম জঠর ভাঙে আগুন অক্ষর
রক্তাক্ত গোড়ালি জানে শব্দ সরস্বতী আর লালপেড়ে শাড়ি

নিষেধ কালে ঋতুর সংলাপ [Bengali Poetry]

জোয়ার ধোয়া সেই বালুচর ভেসে গেছে বাসনার ঘর
অনারোগ্য জীবন্ত অসুর ঘিরে আছে দুঃখের প্রশস্তি
কে জানে মুখবন্ধ খামে রেখে যাবে শব্দের মানুষ
আমার আত্মীয়তা ছিল জল জীবন জমি শস্য সঙ্গমে
ঝড়ো পোকা উড়ছে জানে আগুনের অন্তর্ঘাত
মানুষ কতটা বোঝে পৃথিবীর অষ্টপ্রহর সনাতন সংকীর্তন

আমাদের চতুর্দিকে অচেনা সুড়ঙ্গপথ জানে প্রাণ পুরুষ
পৃথিবীও গ্রহ ফেরে দোলে শূন্যের গোলক অখণ্ড একা
আমাদের শ্বাস টুকু যতক্ষণ প্রহরে প্রহর অবিরাম
চেনা মাঠে সাজিয়েছি নম্র সবুজ শস্য পরিবার
তোমার শরীরেও ঝিঙে ফুলের হলুদরঙ মায়াময়
হলুদ রাঙা হাতে কাঁসার থালায় ভাতের উষ্ণ বিস্ময়

কেউ বলেনি সময়ের অভিশাপ আষাঢ় পয়লা জানে
ঘন নীল জলের ভেতর প্রাণ আর শ্যাওলা রঙের দেহ
থাকুক না উৎসব অপেক্ষায় উল্লাস যুঁই বেলা মৌটুসী ঠোঁট
হাজারো বঞ্চনা জানে হাড়মজ্জা অন্তিম আবাস
দুরন্ত শিরা উপশিরা নিঃসাড়ে ঘিরে খুশির অভ্যাস
বর্ণহীন দেয়ালে নিষেধ কালের ঋতুর সংলাপ

আমার বুকের প্রতিবিম্ব [Bengali Poetry]

সমস্ত বাসনায় ভাসে প্রসন্নতা আশ্চর্য হৃদয়ে
প্রেম আর প্রকৃতির মাটি ঘাস ফুলেদের সম্মিলন
সুন্দর চোখের পাতায় কুয়াশা চূর্ণ দেখে দূর্বাদল শ্যাম
হিরণ্ময় বসন্ত স্থপতি স্বপ্ন ছোঁয়া কচি পাতা ডালে

অবারিত রুদ্ধ যন্ত্রণা হু হু বাতাসে উছলে ওঠে ঝড়
ইন্দ্রিয় সকল জমাট রক্তে শরীর জানে ঠোঁটের উচ্চারণ
প্রতি রাত বিষণ্ণতা ফালা ফালা করে দেয় অজানা করাত
সকল দুঃস্বপ্নের পদ্মমণি আগলে রাখে শরীরী সুগন্ধ
অক্ষর হীন সময়েও পাতাল ঘর ভেঙে জাগে শিশু কলতান

কাছে পিঠে ঝড় ভাঙা পাখিদের তখন কি বিচিত্র উল্লাস
অজস্র পাথর স্তূপে শব্দময় গুচ্ছ গোলাপের ভবঘুরে হাসি
দুঃস্বপ্নের ছায়া মুখ ঢেকে দোমড়ানো প্রচ্ছদ দেখে উন্নয়ন
বিলুপ্ত অন্ন বস্ত্র বাসভূমি ঘিরেছে স্বৈর জীবন কাল
সাজানো বিষপাত্রে স্পন্দহীন খেলা নীল ছায়ায়
টের পেলাম নিঃস্ব কালে আমার বুকের প্রতিবিম্ব

প্রাচীন ছায়া [Bengali Poetry]

অনেক দিন হয়ে গেলো বসতি পঞ্চাশ বছর
এক একটি জামার ভেতর অনাবৃত শরীর
শরীরী বাতিঘর জুড়ে অনাবৃত আলো
মাটির ঘর তুলসী উঠোন জন্মাবধি নিত্য সহচর
দীর্ঘ সম্পর্কের শুরু থেকে শেষ একই স্বপ্নের গভীর
অলীক বরাভয় পাপতাপ ছুঁয়ে মৃত আত্মার শোক

তেমন ভাষা যুৎসই ছিল না ছিল শুধু চুম্বন
তবুও তো প্রেম পরম্পরায় স্বামী সংসার দীর্ণ দীর্ঘশ্বাস
গাছের গহনে ভূমি কন্যা ভ্রমর আদরে নিধুবন
মুখ ছবি ছিল জঠর জাতকও জানে নিশ্চিত আবাস

এখন আবার বুকের ভেতর চাপ কেন অন্য আভরণ
মধুকুঞ্জ কি কেবলই অরণ্য বিলাস রাধিকার
কত বার শোকের চিহ্ন ভিজিয়েছে যত গোপন আস্তরণ
সবুজ গাছের শরীরে একই জন্ম বাকল পুরুষে প্রণয়ে

মাটির মোহে গাছে পাতায় ঈশ্বর আলোয় জাগে গৃহস্থ ভাষা
কোন কথা নেই তবুও হৃদয়ে ধ্বনিময় কথকতা
আশ্চর্য বেঁচে থাকা আমাদের পরম্পরা প্রাচীন ছায়ায়

হবিষ্যি [Bengali Poetry]

চিরকাল জেনেছি মৃত্যুর অবয়ব বন্ধ চোখ
কোনও বিকার মারাত্মক তেমন অশনিসংকেত নেই
হৃদয়ের ভেতর চুপচাপ ঘুমিয়েছে স্পন্দন
আজন্মকাল কুয়াশায় ঝিমুচ্ছে কঙ্কাল আর রাজা-রানি
প্রতিবাদের রঙ ছিলনা তবু সাজো সাজো পাতাল ঘর
এই শূন্য রঙ কী চিনে ফেলেছেন হে মহাত্মা

যেখানে যত বকুল গাছ সেখানে বসন্ত বারো মাস
কোকিল কোকিলার ডাক আবহমান
যে মানুষটি চিরকালের জন্য ঘুমোল
তার পঞ্চেন্দ্রিয় নিঃশব্দ সেও শুনেছিল কি
চিরকাল বসন্ত সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাত্রি
আর সেই মানুষটি ঠিক বসে আছে
চিরকাল বসে থাকে বকুল চাতালে পুষ্প বৃষ্টির জন্য

বকুল গাছ সইতে পারে না বিরহ বেদনা
বর্ষায় সারা শরীর ভিজেছে মন্দাকিনী জলছবি
সমস্ত মানুষের আড়ালে চুপিচুপি বসে আছে প্রিয় প্রসন্ন মুখ
এই মাত্র ঝলসে গেছে তারই সঞ্জাত বংশ গৌরব
তা হলে এসো বকুল সই প্রতিদিন একসাথে হবিষ্যি খাই

জারজ জন্মান্তর [Bengali Poetry]

দেয়াল ছুঁয়ে দেখি আঙুলে জলের আগুন
ভেজা ফুলেদের গায়ে আত্মরতি সুখ
চিরকাল কালো মেঘ চেরে জীবন আর আতঙ্ক
রক্ত দোহন বোঝে আমাদের সুকুমার আত্মগত প্রাণ

মরণের সাথে জ্বলনের আলোর স্তব্ধ অন্ধকার
ক্ষুধিত সময় গিলেছে বারংবার জন্ম আখর
এভাবেই ডায়ে বাঁয়ে শুয়ে আছে আমার কঙ্কাল
কারণ জাত গোত্র অরণ্য নগর বিনীত অহংকাল

ব্রজবুলি আর সাম গীতি জানে অচেনা বৃহন্নলা
কেমন অঙ্গ গোপন ঘরে কীরূপ জানাতেই হবে
গণ জাদুকর জেনেছে পোঁতা হবে বিষবৃক্ষ বীজ
চরম লজ্জায় হাত রেখে দেখা চাই উষ্ণ শোণিত পাতা

অদৃশ্য সব কাম্য পৌরুষ জানে নীলকন্ঠ ক্রোধ
বুকের রক্তে দুধে জলে নিভৃতে জাগে মাতৃত্বের ঘ্রাণ
হিসেবের কাগজে কালি কলমে হায় বিষণ্ণ রোমন্থন
আকাশে আলোর নীলে ঘিরে থাকে জারজ জন্মান্তর

বিকাশ চন্দ | Bikash Chanda

Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ ২০২২ | তালাল উদ্দিন

Bengali Story 2023 | পরিচারিকা পাপিয়া | প্রবোধ কুমার মৃধা

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

Top Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ | বিকাশ চন্দ

bee bengali poetry | bengali poetry about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer bengali poetry | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdodweep Founder

Leave a Comment