The Holy Basil Lighting | Best Bengali Article 2023

Sharing Is Caring:

তুলসী তলায় কে বা প্রদীপ জ্বালাবে গো! – রূপশঙ্কর আচার্য্য

আমি দেখতে পাচ্ছি আমার দেহটা কয়েকজন নিয়ে এসে বাড়ীর সামনে রাখলো, কথা ছিল এই দেহ আর বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে কি হবে?নিয়ে গেলে আরো বাড়ীর পরিস্থিতি খারাপ হবে, তাই মর্গ থেকে সোজা শ্মশানে নিয়ে যাওয়ায় ভালো হবে। আমার তখন এই কথা শুনে মনে ভারী কষ্ট হল, আরে বাড়ী কি যাবো না বাড়ীতে সবাই আছে, অবশেষে সব কাজ শেষ হলে বাড়ীই ফিরে যায় সবাই। আমি দেখলাম অবশেষে বাড়ীতেই নিয়ে গেল।

যেই আমার দেহটা পৌঁছানো হলো, থমথমে পরিবেশ, আমার মনে কত প্রশ্ন, যখন বড় রাস্তা থেকে ছোট রাস্তার ভেতরে অন্তিম শয়নে গাড়িটা ঢুকছিল তখন চারিদিকে কিছু লোকের সমাগমে আমার মনে সন্দেহ হলো দুদিন বাদে ফিরছি বলে সবাই অপেক্ষা করছিল নাকি,আবার ভাবছি ফিরতে পারিনি অথচ একটা বাড়ীতে খবরও দিতে পারিনি,তাই চিন্তা করছিল সবাই। যাইহোক সকলকে গিয়ে বলব যে এই কারণে খবর দিতে পারিনি তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পারবে।আমাকে সবাই ভালো বাসে প্রথমে রাগ করলেও পরে কিছু বলবে না। কিন্তু যখন বাড়ীর উঠানে আমাকে সবাই রাখলো তখন আমার মনে হল আরে আমি তো নিজে পড়াতে গিয়েছিলাম তো, সুস্থ একজন মানুষ আমি ফেরার সময় এইভাবে এলাম কেন? আমাকে দেখে সকলে কেন এই রকম করছে?

আমার মনে পড়ছে আমি যখন বাড়ী ফিরছি তখন রাত হয়ে গেছে ভালোই,তখন ১১টার কাছাকাছি, তাই তাড়াতাড়ি ছমছমে রাস্তাকে এড়িয়ে আমি বড় রাস্তা ধরে আসছি প্রতিদিনের মত ।কে যেন হঠাৎ সাইকেল নিয়ে পড়ে যেতে দেখে খেয়াল না করে আমরা কয়েকজন এগিয়ে গেছি সেই মুহূর্তে দশ চাকা এসে গেছে সামনেই, অন্যরা সামলাতে পারলেও আমি পারলাম না, মাথার উপর ভট করে — কিন্তু কোনো অসুবিধা হলে চেপে রাখা রোগটা আজও আমাকে ছাড়েনি, তাই আজও কাউকে কিছু বলতে পারছি না। আমি শুয়ে আছি, মাথায়, বুকে সেলাই করা, যেন মনে করিয়ে দিল ছোট বেলায় মা ও দিদি রা আমাদের ভাই বোনকে শীতের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কাঁথা সেলাই করছে কাপড়ের পাড় থেকে সুতো বের করে।

আমার গায়ে সাদা কাপড় জড়ানো, যেন মনে হচ্ছে কোনো শান্তি দৌড়ে যোগ দিয়েছি, ভারত জননী ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুদিনে শান্তি দৌড় হত,আজ যেন তাই মনে হচ্ছিল আমার। আমার গভীর নিদ্রার মধ্যেও যেন পাতলা ও ফিকে হয়ে যাচ্ছে নিদ্রা কোনো একটা শব্দে, আমি ধড়ফড় করে উঠে পড়ে দেখি সবাই ব্যস্ত আজ,এর আগে এত ব্যস্ত আমার আত্মীয় ও প্রতিবেশী কে দেখিনি, দেখিনি আমার মাকে এত ব্যস্ত হতে আজ সে একটুও ক্লান্ত হয়নি, মা যে একটু কাজ করলেই হাঁপিয়ে যেত,বয়স হয়েছে,কিন্তু আজ তো একটুও হাঁপাচ্ছে না,ধারাবাহিক ভাবে চিৎকার করে যাচ্ছে। আমি জোরে জোরে চিৎকার করে বলছি ,কাঁদছ কেন?আমি তো তোমার কাছেই আছি, মা, বা অন্য কেউ শুনছেই না, তারা তো জানে আমার গলা খারাপ হয়ে যায় এত চিৎকার করলে।কিন্তু না কেউ আমার কথা শুনতে পেল না যেন সব মুক-বধির, কালা হয়ে গেছে , কিছুক্ষণ পর সবাই প্রতিযোগিতা শুরু করলো চিৎকার ও কান্নার,কান্না এমন বিষয় বা অনুভূতি যে আমিও নিজেকে না ঠিক রেখে ওদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিছুক্ষণ কাঁদলাম।

আমি যেতে চাইছি না কিন্তু যেতেই হবে,এভাবে যেতে আমার ভয় লাগত,কষ্ট হত আজ সেই ভয়-কষ্ট কে আলিঙ্গন করে যেতে হবে তাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে কাজটা যাতে সুসম্পন্ন হয় তার জন্য সহমত হলাম, দাদা, দিদি, ভাই, ভাগ্নে-ভাগ্নি, এদেরকে ছাপিয়ে ভাইপোর মুখের দিকে তাকিয়ে প্রচুর কাঁদতে শুরু করলাম এবং সময় নষ্ট না করে চোখ মুছলাম। আকাশে বাতাসে তুলসী পাতা উড়ছে, উড়তে উড়তে দুই চোখে পড়ল, চললাম না ফেরার অনুভূতির অনুসন্ধানে, মা ফিরব সময় হলে আর বলার ইচ্ছা থাকলেও পারবো না।

সেদিনের আবিষ্কারের কথা যেদিন আমি থাকবো না— প্রশ্ন রইলো একটাই—

” শ্মশানেতে কত লোক হবে?”

হৃদয়েতেই একটাই প্রশ্ন জাগে বারে বারে, শ্মশানেতে কত লোক হবে?

সত্যিই কী ভালোবাসার কারণে অন্তিম সময়ে শ্মশানেতে ভিড় জমাবে না মৃতদেহ পোড়ানোর নেশায় অনেকেই মাদক দ্রব্য সেবন ও চানাচুর মুড়ি খাওয়ার জন্য একত্রিত হয়ে ভিড় জমাবে। বারে বারে একটাই প্রশ্ন হৃদয়কে কুড়ে কুড়ে খায় …
“শ্মশানেতে কত লোক হবে?”

কত লোক স্বাভাবিক কান্না নিয়ে শেষ বিদায় জানাতে আসবে। কত লোক অন্তিম সময়ের শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃতদেহের দিকে তাকিয়ে ভ্যালভ্যাল করে চোখের জল ফেলবে। সেই চোখের জলে পথ পিচ্ছল হয়ে যাবে;… নাকি বিদায় হয়েছে, পৃথিবী ছেড়েছে ,পরলোক গমন করেছে, অতি ভালোই হয়েছে। সেই আনন্দে নৃত্য করতে করতে দাহক্রিয়া সম্পন্ন করবে। তাই বারে বারে একটাই প্রশ্ন জাগে, হৃদয়েতে বারে বারে একটাই প্রশ্ন জাগে, শ্মশানেতে কত লোক হবে?

কত লোক ভিড় জমিয়ে আমাকে মানপত্র দিয়ে যাবে যে আমি সত্যিই সামান্য দৈহিক গঠনে দেখতে মানুষ কিনা? তাই বারবার প্রশ্ন জাগে শশ্মানে কত লোক হবে? হৃদয়েতে একটাই প্রশ্ন জাগে বারে বারে — “শ্মশানেতে কত লোক হবে”?

অবশেষে সেই শ্মশানেতে পৌঁছালো সকলে। ধীরে ধীরে চিতা সাজানো শুরু হল, মুখাগ্নির সময় হিন্দু মতে মন্ত্রপাঠসহ সব কর্ম করে মুখাগ্নি হওয়ার মুহূর্তে মনে পড়লো —
“চিতা” আর চিন্তা” এদের ঝগড়ার কথা।এদের মধ্যে কে বড়ো?”চিতা” বলছে “চিতা” নাকি বড়ো কারণ সে মৃত দেহ দহন ঘটিয়ে সব জীবানু ধ্বংস করে পরিবেশ শুদ্ধ করে কিন্তু”চিন্তা”বলছে “চিতা” তুমি তো মৃত অর্থাৎ নির্জীব কে দগ্ধ কর কিন্তু আমি অর্থাৎ”চিন্তা”জীবিত মানুষ কে প্রতিক্ষণে দংশন করে দগ্ধ করে শেষ করে দেয় তাহলে কে বড়ো “চিন্তা”নয় কি??

এটা মনে পড়তেই আমি বুঝলাম যে আমাকে প্রথমে “চিন্তা”দগ্ধ করলো এবং পরে”চিতা”দগ্ধ করবে। মুখাগ্নি হতেই “চিতা” তার ঝগড়া করে থাকার ফলে (চিন্তার সঙ্গে) রাগ আর সামলাতে না পেরে আমাকে দাও দাও করে —
ধোঁয়া হতে হতে ভাবছি —
আমি গান ধরেছি কিন্তু কোকিলা সুরে হলেও আজ কেউ শুনবে না,তখন গান ধরলে বলতো ষাঁড়ের মত চিৎকার করিস না বা বলতো কাকের মতো কা কা করিস না,কিন্তু কেউ শুনতে না পেলেও আমি গাইছি গান,

ফিরবে না সে তো ফিরবে না কোনোদিন
সে যে না ফেরার দেশে।

রূপশঙ্কর আচার্য্য | Rupsankar Acharya

New Bengali Novel 2023 | অকপটে অগ্রজকে (পর্ব ৬) | অতনু দাশ গুপ্ত

100 questions and answers about Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর

Pralambasura badha besha of Jagannath | প্রলম্বাসুর বধ বেশ | অভিজিৎ পাল

Prem Sadhanar Nayika | প্রেম সাধনার নায়িকা : নানা আঙ্গিকে | New Article 2023

The Holy Basil Lighting | New Article 2023 | The Holy Basil Lighting Benefits | The Holy Basil Lighting pdf | Sabuj Basinda | Holy Basil | Tulsi Plant Leaves | Benefits of The Holy Basil Lighting | The Holy Basil Lighting Festival | Shabdodweep Article | Article Writing | Trend – The Holy Basil Lighting | Full article – The Holy Basil Lighting | Uses of The Holy Basil Lighting | Tulsi Plant Benefits | Pdf The Holy Basil Lighting | Video The Holy Basil Lighting |

তুলসী গাছের ছবি | তুলসী পাতা তোলার নিয়ম | তুলসী মঞ্চের ডিজাইন | কোন দিন তুলসী গাছে জল দিতে নেই | তুলসী পূজার নিয়ম | তুলসী গাছের উপকারিতা | তুলসী গাছ লাগানোর পদ্ধতি | কীভাবে করবেন তুলসীপুজো | বাড়িতে তুলসী মঞ্চ | তুলসীর প্রণাম মন্ত্র | তুলসী তলায় প্রদীপ হাতে | তুলসী তলায় সন্ধ্যা বেলা | একটি তুলসী গাছের কাহিনী | তুলসী দেবীর প্রণাম মন্ত্র | সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর মন্ত্র | তুলসী তলায় সন্ধ্যাবেলায় প্রদীপ | সন্ধ্যায় বাড়িতে প্রদীপ | সন্ধ্যা প্রদীপ | কোন পুজোয় কোন প্রদীপ | আকাশ প্রদীপ কি | আমার নিভে যাওয়া প্রদীপ | কেন ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয় | শান্তির প্রদীপ | প্রদীপ জ্বালানোর মন্ত্র | তুলসী তলায় কে | প্রদীপ জ্বালাবে | বাংলা প্রবন্ধ | বাংলার লেখক | প্রবন্ধ ও প্রাবন্ধিক | সেরা প্রবন্ধ | শব্দদ্বীপ | শব্দদ্বীপের লেখক | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

Leave a Comment