Read Online Travel Stories | Best Bhraman Kahini

Sharing Is Caring:

কোচ রাজার রাজপাটে – শর্মিষ্ঠা ঘোষ

উত্তরের সমতলের সবচেয়ে আলোচিত জনপদ সম্ভবত কোচবিহার। হেরিটেজ টাউন। কোচ জাতির জনপদ। প্রাচীনত‍্ব আভিজাত্য গল্প মিথ ইতিহাস সবকিছু নিয়ে সে আপন স্বাতন্ত্র্যে জাজ্বল্যমান। আগাপাশতলা উত্তরের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও কোচবিহারের সাথে আমার চাক্ষুষ পরিচয় ছিল না। আমার ছাত্র জীবনে বাবা একবার কোচবিহারে বদলি নিয়ে গিয়েছিল কিছুদিনের জন্য। পারিবারিক অসুবিধার কারণে খুব সামান্য কিছুদিন থেকেই ফেরত আসে। ফলে আমাদেরও যাওয়া হয়নি আর। আবার আমার বরের ছোটবেলার একাংশ কেটেছে এই কোচবিহারে। ওর বাবার বদলির চাকরির কারণে পাঁচ বছর ওরা এখানে দু দফায় ছিল। ওর কাছে অনেক গল্প শুনি। এখানকার বন্ধুদের কথা ও এখনো বলে। সেই পাটাকুরা প্রাইমারি সুনীতি একাডেমী মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ হাইস্কুল জেনকিন্স স্কুল আনন্দ চন্দ্র কলেজ আগর দীঘি শুনে শুনে মনে মনে ছবি আঁকা।

এখানকার বহু ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পরিচয় হয়েছিল নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে এমএ পড়তে গিয়ে। এবিএন শীল কলেজের বহু প্রফেসর উত্তর বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আসতেন। ওদিকে আবার কোচবিহার মানে রাজার শহর। কোচবিহারের রাজকন্যা গায়ত্রী দেবী অদ্ভুত ক‍্যারিশমা নিয়ে ১৩ থেকে ৯৩ সবার হার্টথ্রব। ফলে কোচবিহারকে চিনে ওঠার একটা তাগিদ বড় অনুভব করেছি। কিন্তু সুযোগ হচ্ছিল না। হঠাৎ সুযোগ মিলে গেল। “উত্তরের হাওয়া”য় কবিতা পড়ার ডাক এল। কোচবিহার ঘোরার এই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করা যায় না। আমার বাড়ি থেকে কোচবিহার গাড়িতে প্রায় আট ঘন্টার রাস্তা। বাচ্চা নিয়ে একটানা এতটা জার্নি করার চেয়ে ঠিক হলো শিলিগুড়িতে রাত্রি যাপন হবে। শিলিগুড়ি আবার আমার শ্বশুরালয়ও বটে। সেইমতো আগের দিন সকাল সকাল শিলিগুড়ি পৌঁছে গেলাম। সারাদিন এবং সেদিন রাত শিলিগুড়িতে কাটিয়ে পরদিন চা খেয়ে রওনা দেওয়া গেল। শিলিগুড়ি থেকে সড়ক পথে সাড়ে তিন ঘন্টা লাগার কথা। বায়ুপথ রেলপথ বা সড়কপথে আপনি শিলিগুড়ি থেকে কোচবিহার যেতে পারেন। সড়ক পথে গেলে একটা রাস্তা হচ্ছে আপনার ফুলবাড়ি দিয়ে আরেকটা রাস্তা সেবক দিয়ে দীর্ঘ পথে যায়। শুধু যদি কোচবিহার ভ্রমণ আপনার টার্গেট হয় তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করব ফুলবাড়ি দিয়ে যেতে। এদিক দিয়ে আপনার ১৩৮ বা ৩৯ কিলোমিটার মতো রাস্তা। জলপাইগুড়ি ময়নাগুড়ি ফালাকাটা ইত্যাদি পেরোতে বেরোতে পথে দেখা হবে দু’ ধারে খাপচা খাপচা চায়ের বাগান বা চাষের ক্ষেত। রাস্তার ধারে জায়গায় জায়গায় অনেকটা জমি জুড়ে প্রাচীর দিয়ে ভবিষ্যতে কোন শিল্প গড়ে উঠবে মনে হল। তাছাড়া পথে পাবেন কোক পেপসির কারখানা একটি ক্যান্সার হসপিটাল চা ফ্যাক্টরি এসব। রাস্তায় দেখা হয় তিস্তা তোর্সা কালজানি জলঢাকা নদী দের সাথে। রাস্তার দুপাশে শিমুল আর রুদ্র পলাশ। শীতের শেষে আলু বস্তা বন্দি করে রাখা কথা। নটা বাজতেই পেটে ছুঁচো দৌড়াদৌড়ি শুরু করল। কিন্তু রাস্তার ধারের দোকান পাট তখনও বন্ধ। অবশেষে ঝাঝাঙ্গি ধাবায় খাবার মিলল। ক্ষীরটা অসাধারণ ছিল। তাছাড়া কিনলাম পঞ্চাশ টাকা পিস লাড্ডু আর প‍্যাড়া বাড়ির জন্য। ফের চলা। পথে পলাশ দেখে থামা আর ফটো সেশান।

কোচবিহার আমার আর পোগোর কাছে ভ্রমণ আর ওর বাবার স্মৃতি পর্যটন। ও হাঁকপাঁক করছিলো ওর ছোটবেলার শহর দেখার জন্য যেখানে দু দফায় পাঁচ বছর কাটিয়েছে পোগোর দাদুর চাকরিসূত্রে। উনি স্টেট ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। কোচবিহার। ক্লাস সেভেনের পর ছেড়ে চলে গেছে। সেই কোচ রাজার বাড়ি, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ বয়েজ স্কুল যেখানে পড়ত, যেই স্কুল ছেড়ে চলে আসার আগে হেডমাস্টারমশাই বাড়িতে ডেকে চারখানা মিষ্টি খাইয়ে ছিলেন সেই ক্লাসঘর সেই কমন রুম যেখানে একটা রেডিও ছিল আর টিচারদের মধ্যে কখনো গন্ডগোল লাগলে এবং কৌতূহলী ছাত্ররা কমনরুমে উঁকিঝুঁকি মারলে ফুল ভল্যুমে যেই রেডিও চালিয়ে দেওয়া হত, সেই ঢ্যাঙা ছেলেটির কথা শুনলাম ক্লাস পালিয়ে সিনেমা দেখায় যাকে স্যার কেলিয়েছিলেন, সেই আপেল খেয়ে বোঁটা ছুঁড়তে গিয়ে স্যারের সামনে পড়া আর স্যারকে “ইচ্ছে করে ছুঁড়িনি” বলার পর স্যারের আপেলের বদলে পেয়ারা খাবার উপদেশ কারণ একটা পেয়ারা দুটো আপেলের সমান, সেই মদনমোহন মন্দির আর তার উল্টোদিকের দীঘি যেখানে ছোটবেলায় ও সাঁতার শিখেছে, সেই পুরনো সিনেমা হল, পাড়া, রাসচক্র, নাটমন্দির, হিরন্যকশিপু বধের মূর্তি, চওড়া রাস্তাঘাট, জেনকিন্স স্কুল যেখানে আমার দেওর পড়ত, সেই শ্রীকৃষ্ণ সুইটস যেখানে সিঙারা মিষ্টি খেত ওরা সব দেখলাম ধারা বিবরণী সহ। পোগো এই প্রথম দেখল ওর বাবার ছোটবেলা।

Coochbehar Palace

কোচবিহার পৌঁছে আমরা প্রথমেই গেলাম কোচবিহার প্যালেস দর্শনে। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ১৮৮৭ সালে এই প্যালেস তৈরি করেন। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ শ্রীমতি সুনীতি দেবীকে বিয়ে করেছিলেন যিনি ছিলেন ব্রহ্মা সংস্কারক কেশবচন্দ্র সেনের কন্যা । এই সুনীতি দেবীর নামেই কোচবিহারের বিখ্যাত মেয়েদের স্কুল, সুনীতি একাডেমি। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ-এর নামে আছে ছেলেদের স্কুল। যেখানে ছাত্র ছিল আমার বর। নৃপেন্দ্রনারায়ণ-এর পর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজরাজেন্দ্রনারায়ণ তার স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি ১৯১৩ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে মারা যান। তিনি বিয়ে করেন নি। তার ভাই জিতেন্দ্রনারায়ণ তার স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি শ্রীমতী ইন্দিরা দেবীকে বিয়ে করেন, যিনি ছিলেন বরোদার গায়কোয়াড়ের মেয়ে। জিতেন্দ্রনারায়ণ ১৯২১ সালে মারা যান এবং তার নাবালক পুত্র জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ তার স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি ছিলেন কোচবিহারের শেষ মহারাজা। ইংরেজ আমলে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ইংরেজদের হয়ে লড়াই করেছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে কোচবিহারের শাসন ক্ষমতা অর্পণ করেন ভারত সরকারের হাতে। জিতেন্দ্রনারায়ণ-এর কন্যা গায়ত্রী দেবী। যিনি জয়পুরের মহারাজা সোয়াই মান সিংহকে বিয়ে করেন। রাজনীতিতে যোগ দেন, ভারতের প্রথম লোকসভার মহিলা নির্বাচিত সদস্য হয়ে কংগ্রেস বিরোধী বলে জরুরী অবস্থার সময় ছয়মাস জেল খাটেন। জেলে থাকাকালীন বন্দীদের নারকীয় অবস্থা দেখে বন্দীদের অবস্থার উন্নয়ন এর জন্য আন্দোলন করেন। অত্যন্ত বর্ণময় চরিত্র। কোচবিহারের রাজবাড়ি বর্তমানে মিউজিয়াম। সেখানে নারায়ণ রাজবংশের বহু স্মৃতি চিহ্ন চিঠিপত্র দলিল দস্তাবেজ অস্ত্র শস্ত্র আসবাবপত্র সীল মোহর ইত্যাদি সংরক্ষিত আছে। পঁচিশ টাকা করে টিকিট কেটে ঢুকতে হয়। প‍্যালেসের ভেতর ছবি তোলা বারণ। সাতটি ঘর বা গ‍্যালারি বর্তমানে খোলা। বাকি অংশে রেনোভেশান চলছে। আমরা যখন প্যালেস দেখতে ঢুকেছি। প্যালেসের সামনের বিস্তৃত বাগানের মোরাম বাঁধানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একজন পর্যটক আরেকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল এটা রাজবাড়ী নয় জমিদার বাড়ি। তাই শুনে আমার বর রীতিমতো রেগে উঠলো। প্রথমত এখনো পর্যন্ত টিকে থাকা প্যালেস গুলোর মধ্যে গ্ল্যামারে বা আয়তনে কোচবিহারের রাজবাড়ি কোন অংশে কম নয়। দ্বিতীয়তঃ ইতিহাস সাক্ষী পূর্বতন কামরূপ বর্তমানে কামতা রাজ্যের কোচ রাজার বংশ এই নারায়ণ বংশ। এমন নয় যে ইংরেজরা এদের জমিদারি দিয়েছিল।

কোচবিহারের অন্যান্য দ্রষ্টব‍্যের মধ‍্যে সাগরদীঘি, মদনমোহন মন্দির, বাণেশ্বর শিব মন্দির এগুলো উল্লেখযোগ্য। সবগুলোই রাজাদের কারো না কারো হাতে তৈরী। যারা রাতে থাকবেন রাজবাড়ির কাছাকাছি অনেক হোটেল আছে। সাথে রেস্টুরেন্ট শপিং মল। চওড়া রাস্তা। শান্ত জনজীবন। ভালোই লাগে ভাবতে একদা কামরূপ নামে পরিচিত পাল সেন বংশ মোগলদের পর কোচ রাজাদের রাজধানীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ইতিহাস। আমরা এর পর গেলাম এবিএন শীল কলেজ। সেখানে চলছিল লিটল ম‍্যাগাজিন মেলা। মেলা থেকে বেরোতে বেরোতে চারটে বাজলো প্রায়। এরপর আমরা রওনা দিলাম দিনহাটার উদ্দেশ্যে। প্রসঙ্গত দিনহাটা এখান থেকে মাত্র আধঘন্টার রাস্তা। এর কাছেই আছে কোচ রাজাদের প্রাচীন রাজ‍্যপাটের নিদর্শন। সব মিলে হাতে দিন দুয়েক হলেই আপনি ছুঁয়ে আসতে পারবেন একটুকরো ইতিহাস।

শর্মিষ্ঠা ঘোষ | Sharmistha Ghosh

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Advantages & Disadvantages of Tattoo | ট্যাটুর উপকারিতা এবং অপকারিতা | Bengali Article 2023

Is it possible to remove tattoo | ট্যাটু রিমুভ কি সম্ভব? | 2023

Emblem of Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতীকের অর্থ | নক্‌শা ও তাৎপর্য | 2023

Read online travel stories india | Read online travel stories in english | Read online travel stories pdf | Read online travel stories free | short story about travel | travel stories with friends | my travel story | famous short stories about travel | Short bengali story | Bengali story pdf | pratilipi bengali story | Short Stories for Children | English Stories for Kids | Moral Stories for Kids | story in english | story hindi | story book | story for kids | short story | short story in english | short story for kids | bangla golpo pdf | Bangla golpo pdf | Bangla golpo story

bangla romantic golpo | choto golpo bangla | bengali story | Sunday suspense golpo | sunday suspense mp3 download | suspense story in hindi | suspense story in english 200 words | Suspense story in english | suspense story in english 300 words | Suspense story examples | suspense story in english 100 words | suspense story writing | very short suspense stories for students | Read Online Travel Stories | Top Bangla Golpo Online Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep Read Online Bengali Story

Shabdodweep Writer | Bangla Golpo Online Reading pdf | Famous Story – Read Online Travel Stories | Pdf Read Online Travel Stories | Read Online Travel Stories App | Full Bangla Golpo Online Reading | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English |Bangla Golpo Online Reading Ebook | Full Bangla Galpo online | Read Online Travel Stories 2024 | New Bengali Web Story – Episode | Golpo Dot Com Series | Read Online Travel Stories Video | Read Online Travel Stories Collection

Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Trending Bangla Golpo Online Reading | Recent story Read Online Travel Stories | Top Story Read Online Travel Stories | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2023 | Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Modern Online Bangla Galpo Download | Bangla Golpo Online Reading mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | Modern Online Bangla Galpo mp4 | Modern Online Bangla Galpo Library

New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Bengali Story – audio | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Story Collection – Modern Online Bangla Galpo | Read Online Travel Stories – Vlog

Leave a Comment