Read Online Travel Stories | Best Bhraman Kahini

Sharing Is Caring:

দুয়ারে ডুয়ার্স – শর্মিষ্ঠা ঘোষ

বাবাইদের কলেজে দুর্গাপুজোর ছুটি থাকে না তবে দেওয়ালির সময় দিন সাতেকের একটা ছুটি পায়। কাজেই আমাদের পুজোর সময়কার ঘোরাঘুরি ওই সময় টার্গেট করেই করতে হয়। প্রথম দিন ওকে বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকে পিক আপ করে শিলিগুড়িতে রাত্রিবাস ওর ঠামির কাছে। পরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়া গেল মাদারিহাট এর উদ্দেশ্যে। এবার যাব জলদাপাড়া।

আগে থেকেই ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্টের ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের আন্ডারে অরণ্য ট্যুরিজম প্রপার্টির তিনখানা ঘর বুক করা ছিল। এর আগেও দুবার জলদাপাড়া গেছি কিন্তু কোন বারই ঠিকঠাক ঘুরতে পারিনি। আর শেষবার গেছি ন বছর আগে। সাথে ভাই মা ভাইয়ের ফ্যামিলি ছিল। আমরা লাটাগুড়ি থেকে বিন্দু হয়ে ফিরবো এ রকমই কথা ছিল। কিন্তু বিন্দু যাওয়ার পথে আমাদের দুটো গাড়ির একটা গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। সেটা ওই পুজোর সময় সারানোর মেকানিক পাওয়া যায় না। সারাদিন নষ্ট হয়ে যায় আমাদের পথে বসে। আমরা যখন বিন্দু থেকে ফিরে আসি জলদাপাড়ায় রাত আটটা বেজে যায় এবং আগে থেকে বুক করে রাখা হোটেলে আমরা নির্ধারিত সময়ে না ঢোকায় অন্য লোককে ঘর দিয়ে দেয়। যে ঘর আমাদের দিল সেটা পছন্দ হয় না ফলে মন খারাপ করে আমরা পরের দিন কিছুই না দেখে ফিরে চলে আসি। কাজেই এবার ঠিক করেই রেখেছিলাম থাকা এবং খাওয়ার সুবন্দোবস্ত করে তবেই যাব।

ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্মেন্টের প্রপার্টি বুক করতে একটু বেগ পেতে হয়। অনলাইন বুকিং হলেও চাহিদা বেশি থাকায় সব সময় যে পাবেনই এরকম গ্যারান্টি দেওয়া যায় না। আরেকটা অসুবিধা হচ্ছে যদি কোন কারণে আপনি না যেতে পারেন অ্যাডভান্স বুকিং এর পয়সাও ফেরত পাবেন না। এই কারণে আমি করোনার সময় হলং বাংলা বুক করে রেখেও যেতে পারিনি এবং আমার প্রচুর টাকা লস হয়েছে। আর তারপর তো সম্প্রতি হলং বাংলা পুড়েই গেল। আর কখনোই থাকা হবে না আমার সেই রোমান্টিক বাংলাতে। যাই হোক সকালবেলা বাড়ি থেকে রওনা দিলাম চা বিস্কিট খেয়ে। পথে ধুপগুড়ির আগে ঝাজাঙ্গী ধাবায় রুটি তড়কা লাড্ডু ইত্যাদি খেয়ে জলযোগ হলো। ঝাজাঙ্গী ধাবার তড়কা বেশ রিচ এবং বললে আলাদা করে ঘি দিয়ে দেয় ওপরে। সবার পেটে সহ্য নাও হতে পারে।

ঝাজাঙ্গী থেকে বেরিয়ে আমরা জিপিএস অন করে গ্রাম দেখতে দেখতে এক সময় পৌঁছে গেলাম অরণ্য ট্যুরিজম প্রপার্টিতে। অরণ্যতে ঢোকার মুখে যে কাঠের ব্রিজটা ছিল সেটা ভেঙে গেছে। দুর্বল ব্রিজ। যে কারণে গাড়ি পার করা গেল না। ব্রিজের এপারেই গাড়ি রাখতে হল। রিসেপশন থেকে বলল রাতে থানায় গাড়ি রেখে আসতে। তা না হলে হাতি টাতি রাতে হামলা করে গাড়ির ক্ষতি করতে পারে। যাই হোক দিনেরবেলা গাড়ি ব্রিজের উপরেই রাখা হলো। বারোটার সময় ঘর দেবে। আমরা একটু আর্লি ঢুকে গেছিলাম। রিসেপশনে একটু ওয়েট করলাম। কাগজপত্র রেডি করতে করতে ঘর রেডি। আমাদের তিনটে ঘর ছিল। একটা কটেজ একটা উডেন ব্লক একটা ব্রিক ব্লক। সবগুলোরই পজিশন খুব সুন্দর। প্রসঙ্গত বলে রাখি পাহাড় এবং ডুয়ার্স বেড়াতে গেলে ফার্স্ট প্রেফারেন্স অবশ্যই সরকারি বাংলাগুলোকে দেবেন কারণ এগুলো বেস্ট পজিশনে হয়। খাওয়া-দাওয়া এবং রুম সার্ভিস অধিকাংশ সময়ই ভালো হয়।

কটেজ পছন্দ করলো আমার দুই মেয়ে। ওরা নাকি একলা থাকবে রাতে। কটেজগুলোর কিছু নদীর ধারে কিছু বনের ধারে। ওদের কটেজ নদীর ধারে। অবশ্যই ইলেকট্রিক তার দিয়ে ঘেরা গোটা কম্পাউন্ড। যাতে হাতি বা অন্য কোন জংলি জানোয়ার ঢুকে না পড়তে পারে। কটেজের নদীর দিকের দেয়াল সম্পূর্ণ কাচের স্লাইডিং ডোর। সামনে বারান্দা তাতে চেয়ার টেবিল পাতা। ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত ভালো। রুম সার্ভিস লন্ড্রি ইন্টারকম সব আছে। সবচেয়ে বড় কথা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। নদীর দিকের কটেজগুলো পাখির নামে। একটা আছে ট্রিহাউজ। সেটার নাম ময়ূর। আর বনের দিকের কটেজগুলো ফুলের নামে। আমাদের ভাগেরটার নাম কোয়েল। তিন নাম্বার কটেজ। আমি আর মা ছিলাম উডেন ব্লকে। এই ব্লকটি সবচেয়ে প্রাচীন। সাথে অ্যান্টি রুম। বিশাল ওয়াশরুম। এখানেও ফ্যাসিলিটিজ দুর্দান্ত। সামনে ব‍্যালকনি। ব্রিকব্লক ছিল পাশেই। উডেন ব্লকের সাথে কানেক্টেড। অপেক্ষাকৃত নতুন এবং বনের দিকে মুখ করা তাদের ব্যালকনিগুলো। কম্পাউন্ড লাগোয়া গাছগুলোতে বাঁদরের হুটোপুটি। তারা ডাল ধরে দোল খাচ্ছে। কম্পাউন্ডের ভেতরে নেমে আসছে। পোগাই তো ওদের দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ডাকাডাকি শুরু করল। ওর ডাক শুনে দু একটা নেমেও এল।

বাচ্চাদের একটা খেলার পার্ক আছে এটাচ্ড। ব্রিক ব্লকের পাশেই। বাচ্চাদের দোলনা সি-স স্লাইড এসব আছে। দুপুরে ওদের নিজস্ব রেস্তোরাঁয় খেতে গেলাম। বাইরের খাবার নট অ্যালাউড। ওদের খাবার কোয়ালিটি খুবই ভালো। অর্ডার দিয়ে দশ মিনিট বসেই খাবার পাওয়া যায়। আমাদের আগে থেকেই জঙ্গলে সাফারি রাইড বুক করা ছিল। সাড়ে তিনটার স্লট। স্নান করে খেতে না খেতেই পৌনে তিনটে হয়ে গেল। বাংলো থেকে বেরিয়ে ডান হাতে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অফিস আছে। সেখানে টিকেট দেওয়া হয় সফরের। অনলাইন বুকিং ছিল। তার ডকুমেন্ট প্রডিউস করতে হয়। আমি আগে থেকে জানতাম না ফলে হার্ড কপি নিয়ে যাইনি। আপনারা পারলে হার্ড কপিটা বের করে নেবেন। সেখানে গিয়ে একটা ফর্ম ফিল আপ করতে হয়। সেই ফর্ম ফিল আপ করে টিকেট কালেক্ট করতে হয়। এখানে একটা ব্যাপার আগে থেকে বলে রাখি। অনলাইন বুকিং এ আপনি যা দিচ্ছেন সেটা হচ্ছে বনের ভেতর এন্ট্রি ফি টুকু। টিকিট কাউন্টারে গেলে আপনাকে গাইড এবং গাড়ির ভাড়া আলাদা করে দিতে হবে। গার্ড ৩৫০ টাকা করে এবং গাড়ির ভাড়া সাথে রোড ট্যাক্স এক্সট্রা। একেকটা গাড়িতে ৬ জন করে নেওয়া হয়। আপনি শেয়ারে যেতে পারেন অথবা গোটা গাড়ি বুক করতে পারেন। টিকেট নিয়ে এসে ব্রিজ পেরিয়ে গাড়ি অপেক্ষা করে সাফারির। সেখানে নাম্বার দেখে আপনি গাইডের সাথে রওনা দেবেন।

অরণ‍্য ট্যুরিজম প্রপার্টি থেকে ৮ কিলোমিটার মতো গেলে বাঁ হাতে জলদাপাড়া যে অভয়ারণ্য সেটা শুরু হচ্ছে। সেখানে গেটে আপনি আইডেন্টিটি কার্ড এবং বুকিং এর ডিটেলস দেখিয়ে এন্ট্রি পাবেন। গাইড সব করে দেবে। কার সাফারি কিংবা হাতি সাফারি যাই করুন একটা জিনিস মাথায় রাখবেন সবচেয়ে ভালো সময় ভোরবেলা এবং সন্ধেবেলা। কারণ এই সময় জীবজন্তুরা জল খেতে বের হয় বা নুন চাটতে আসে। ফলে ওয়াচ টাওয়ারগুলো থেকে তাদের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা এই সময় সবচেয়ে বেশি। আমাদের যেহেতু সাড়ে তিনটা থেকে শুরু হয়েছিল আমরা পথে অগুন্তি ময়ূর বাইসন এমনকি হরিণও দেখলাম।

Duare Dooars

হলং-এ গিয়ে দেখি সল্ট পিটে এক গন্ডার দাঁড়িয়ে আছে। এর কদিন আগেই গরুমারা সাফারি করে এসেছি। সেখানেও গন্ডার দেখেছি। তবে অনেকটা দূর থেকে। এবার এত কাছ থেকে প্রথম গন্ডার দেখা। সে দিব্যি হেলেদুলে নুন চাটছে। তার চারপাশে ময়ূরের ওড়াউড়ি। মাঝখানে সরু এক চিলতে একটা নদী। বোরোলি মাছ দেখা যায়। ঝকঝকে জল। নদীর এপারে অবশ্যই ইলেকট্রিক তার দিয়ে ঘেরা। এটা পেরিয়ে যাওয়া মানা। আমরা প্রায় পাঁচ মিনিট ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে ছবি ছাবা তুলে রওনা দিলাম নেক্সট ওয়াচ টাওয়ারের দিকে। এখানে গিয়ে দেখি দূর থেকে এক গন্ডার রাস্তা পেরোচ্ছে। সে বনের একদিক থেকে আরেক দিকে চলে গেল।

সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা গেলাম হলং বিটে মেচ নাচ দেখতে। একটা প্রাইমারি স্কুল। সেখানে নাচের আসর সামনে। একটু প্যান্ডেল খাটানো। স্কুলের বেঞ্চি পেতে দেওয়া আছে দর্শকদের জন্য। পাশে চা মোমো এসব বিক্রি হচ্ছে। পাঁচখানা নাচ দেখালো তারা। ব্যাকগ্রাউন্ড বর্ণনা করে দিলেন একজন। নিজেরাই গান গাইছে এবং নাচছে। উপভোগ করতে করতে সন্ধে নেমে গেল। লাইট জ্বলছিল আগে থেকেই। পাশেই নদী। সরু রাস্তা। যদিও আলো লাগানো আছে। মোবাইলের টর্চ জেলে সেই রাস্তা পেরিয়ে সে গাড়িতে উঠে এবার ফেরার পথ। গাইড বলে দিয়েছিল অন্ধকারে লেপার্ডের চোখ জ্বলে। এক জায়গায় গিয়ে গাইড গাড়ি থামিয়ে দিতে বলল। ড্রাইভার গাড়ির হেডলাইট এদিক ওদিক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খুঁজতে লাগল। সে জঙ্গলে গা ঢেকে খালি মাথাটুকু বের করে আমাদের দিকেই তাকিয়ে বসে আছে। কয়েক সেকেন্ড সে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইল তারপরে ঝোপ থেকে বেরিয়ে লাফ দিয়ে চলে গেল অন্ধকারের দিকে। আমাদের বিশাল কপাল। না হলে এভাবে চিতা সচরাচর দেখা যায় না। অরণ্য ট্যুরিজম প্রপার্টিতে ফিরে এসে আমরা চলে গেলাম ওদের নিজস্ব যে কাচের একটি রেস্তোরাঁ আছে নীচে, সেখানে। সেখানে দুর্দান্ত চা কফি চিকেন ড্রাই ফ্রাই খেলাম। পাশেই তাদের স‍্যুভেনির কাউন্টার আছে। ডুয়ার্সের দিকে প্রথম গেলে অবশ্যই বাড়ির জন্য কিছু কালেক্ট করতে পারেন। তবে আমরা এতবার গেছি আর এত কালেকশন করেছি যে নতুন করে নেবার আমাদের আর কিছু নেই। তাহলে সেখানে পয়সা বাঁচল বলতে পারেন।

রাত নটার মধ্যে ওদের ডাইনিং এ দুর্দান্ত একটা ডিনার সেরে অনেক রাত অবধি আড্ডা মেরে শোয়া হলো। তখন প্রায় রাত ১১:৩০টা – বারোটা হবে। হঠাৎ বাবাই ফোন করল। ওদের দরজার বাইরে কিছু একটা ধুপ করে পড়েছে। কটেজে ওরা দুই বোন শুয়েছে। যার একটা দেয়াল সম্পূর্ণ কাচের স্লাইডিং ডোর। আমি ওর বাবাকে ডেকে নিয়ে রওনা দিলাম ওদের কটেজের দিকে। কিছু দেখতে পেলাম না। হয়তো বাঁদর লাফালাফি করেছে গাছে। কিন্তু বুঝতেই পারলাম ভয়েও রাতে আর ঘুমোতে পারবে না। ওর বুনাই অবশ্য নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে। সে কিছুই জানে না এসব। ওর বাবা ওই ঘরেই থেকে গেল সোফার উপর। রাতে বেশ কয়েকবার কুকুর ডাকাডাকি করল। গার্ড সার্চলাইট নিয়ে এদিক-ওদিক ফেলল। আশেপাশে বুনো জন্তু-জানোয়ার যাতায়াত করলে কুকুর ওরকম চিৎকার করে। গোটা ক্যাম্পাসের চারদিকে ইলেকট্রিক তার দিয়ে ঘেরা সুতরাং ভয়ের কিছু নেই। আমি বেশ কয়েকবার উঠে কাচের জানালার পর্দা সরিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম। অন্ধকারে সেরকম কিছু বুঝতে পারলাম না। বেশ কবার এরকম হবার পর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।

পরদিন ভোর সাড়ে চারটায় ওঠা। হাতি সাফারি আছে ভোরবেলা। আমি ভুল করে জলদাপাড়া রেঞ্জে বুক না করে সাফারি বুক করে ফেলেছি কোদাল বস্তি রেঞ্জে। যেটা অরণ্য টুরিস্ট লজ থেকে প্রায় কুড়ি বাইশ কিলোমিটার দূরে। আগের দিন টিকিট কনফার্ম করতে গিয়ে এই ভুল ধরা পড়ল। ওখান থেকে কোদাল বস্তি বিট অফিসে ফোন করে দেওয়া হল। বলে রাখলাম আমরা সকালে গিয়ে টিকিট নেব। কারণ আমরা তখন রওনা দিয়ে পৌঁছনোর আগেই অফিস বন্ধ হয়ে যাবে। সন্ধ্যাবেলা গাড়ি নিয়ে গিয়ে আমরা অবশ্য রাস্তা দেখে এসেছিলাম। পুরো জঙ্গলের মধ‍্যে ঘুটঘুটে অন্ধকার রাস্তা। ভয় পাবার মতই।

পরদিন ভোর পাঁচটার মধ্যে রওনা আবার রওনা দেওয়া গেল। অনলাইন বুকিং-এর কাগজপত্র দেখিয়ে ওখান থেকে গাইড নিয়ে তাকে আমাদের গাড়িতে চাপিয়ে চলে এলাম হাতি সাফারির জায়গায়। যে আমাদের সাফারি করাবে তার নাম ডায়না। বাচ্চা হাতি। ছটফটে দুরন্ত। ডায়নার পিঠে করে আমরা যখন বেরোলাম সাফারিতে তখন সূর্যদেব উঠছেন সদ্য কুয়াশার জাল সরিয়ে। ঘাস জঙ্গল শিশির ভেজা। ডায়না আমাদের নিয়ে চলা শুরু করল। একই সাথে সে ঘাস খেতে লাগলো। বাঁশ আবার তার খুব প্রিয়। যেখানে যেখানে বাঁশ পায় সেখানেই দাঁড়িয়ে যায় খাবার জন্য। বুনো কুল আর ফুল ভর্তি কাঁটা ঝোপ। তার মধ্য দিয়ে ডায়না নিয়ে চলল। গাছের পাতা থেকে ঝপ করে একবার পিঁপড়ের বাসা বাবাইদের গায়ে পড়ল। সেসব ঝেড়ে ঝুরে কয়েকটা পিঁপড়ের কামড় খেয়ে বেচারি একটু কাহিল হয়ে পড়ল। একটু দূর এগোতেই বেশ কয়েকটা বাইসন ঘুম ভাঙ্গা চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইল। ঝোপের মধ্যে গন্ডার বাচ্চা সহ প্রায় গোটা ছয় দেখতে পেলাম। হগ ডিয়ার দেখলাম একটা। অগুন্তি ময়ূর গাছের ডালে। এইসব দেখে আমাদের হাতি সাফারি শেষ হলো। ডায়নাকে আমার দুই মেয়ে আদর করে দুটো নোট দিল। যেটা ও শুঁড়ে করে নিয়ে ওর মাহুদের হাতে তুলে দিল। ওখান থেকে ফেরার পথে তোর্সা নদী। ব্রিজের পাশ দিয়ে নীচে কালি মন্দির এবং শ্মশান। আমরা নেমে নদীর ধারে খানিক দাঁড়ালাম। তারপর ফিরে এসে ব্রেকফাস্ট। মা রেডি হয়েই ছিল। যথারীতি দুর্দান্ত ব্রেকফাস্ট শেষে অরণ‍্যকে টা টা করে আমরা রওনা হলাম। এবারে দুদিনের দুটো সাফারিতেই আমাদের ঝুলি পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আগের সব দুঃখ ভুলে গেছি। আবার কখনো যাওয়া হলে নিশ্চয়ই এখানেই থাকবো।

কোচ রাজার রাজপাটে – শর্মিষ্ঠা ঘোষ

উত্তরের সমতলের সবচেয়ে আলোচিত জনপদ সম্ভবত কোচবিহার। হেরিটেজ টাউন। কোচ জাতির জনপদ। প্রাচীনত‍্ব আভিজাত্য গল্প মিথ ইতিহাস সবকিছু নিয়ে সে আপন স্বাতন্ত্র্যে জাজ্বল্যমান। আগাপাশতলা উত্তরের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও কোচবিহারের সাথে আমার চাক্ষুষ পরিচয় ছিল না। আমার ছাত্র জীবনে বাবা একবার কোচবিহারে বদলি নিয়ে গিয়েছিল কিছুদিনের জন্য। পারিবারিক অসুবিধার কারণে খুব সামান্য কিছুদিন থেকেই ফেরত আসে। ফলে আমাদেরও যাওয়া হয়নি আর। আবার আমার বরের ছোটবেলার একাংশ কেটেছে এই কোচবিহারে। ওর বাবার বদলির চাকরির কারণে পাঁচ বছর ওরা এখানে দু দফায় ছিল। ওর কাছে অনেক গল্প শুনি। এখানকার বন্ধুদের কথা ও এখনো বলে। সেই পাটাকুরা প্রাইমারি সুনীতি একাডেমী মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ হাইস্কুল জেনকিন্স স্কুল আনন্দ চন্দ্র কলেজ আগর দীঘি শুনে শুনে মনে মনে ছবি আঁকা।

এখানকার বহু ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পরিচয় হয়েছিল নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে এমএ পড়তে গিয়ে। এবিএন শীল কলেজের বহু প্রফেসর উত্তর বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আসতেন। ওদিকে আবার কোচবিহার মানে রাজার শহর। কোচবিহারের রাজকন্যা গায়ত্রী দেবী অদ্ভুত ক‍্যারিশমা নিয়ে ১৩ থেকে ৯৩ সবার হার্টথ্রব। ফলে কোচবিহারকে চিনে ওঠার একটা তাগিদ বড় অনুভব করেছি। কিন্তু সুযোগ হচ্ছিল না। হঠাৎ সুযোগ মিলে গেল। “উত্তরের হাওয়া”য় কবিতা পড়ার ডাক এল। কোচবিহার ঘোরার এই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করা যায় না। আমার বাড়ি থেকে কোচবিহার গাড়িতে প্রায় আট ঘন্টার রাস্তা। বাচ্চা নিয়ে একটানা এতটা জার্নি করার চেয়ে ঠিক হলো শিলিগুড়িতে রাত্রি যাপন হবে। শিলিগুড়ি আবার আমার শ্বশুরালয়ও বটে। সেইমতো আগের দিন সকাল সকাল শিলিগুড়ি পৌঁছে গেলাম। সারাদিন এবং সেদিন রাত শিলিগুড়িতে কাটিয়ে পরদিন চা খেয়ে রওনা দেওয়া গেল। শিলিগুড়ি থেকে সড়ক পথে সাড়ে তিন ঘন্টা লাগার কথা। বায়ুপথ রেলপথ বা সড়কপথে আপনি শিলিগুড়ি থেকে কোচবিহার যেতে পারেন। সড়ক পথে গেলে একটা রাস্তা হচ্ছে আপনার ফুলবাড়ি দিয়ে আরেকটা রাস্তা সেবক দিয়ে দীর্ঘ পথে যায়। শুধু যদি কোচবিহার ভ্রমণ আপনার টার্গেট হয় তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করব ফুলবাড়ি দিয়ে যেতে। এদিক দিয়ে আপনার ১৩৮ বা ৩৯ কিলোমিটার মতো রাস্তা। জলপাইগুড়ি ময়নাগুড়ি ফালাকাটা ইত্যাদি পেরোতে বেরোতে পথে দেখা হবে দু’ ধারে খাপচা খাপচা চায়ের বাগান বা চাষের ক্ষেত। রাস্তার ধারে জায়গায় জায়গায় অনেকটা জমি জুড়ে প্রাচীর দিয়ে ভবিষ্যতে কোন শিল্প গড়ে উঠবে মনে হল। তাছাড়া পথে পাবেন কোক পেপসির কারখানা একটি ক্যান্সার হসপিটাল চা ফ্যাক্টরি এসব। রাস্তায় দেখা হয় তিস্তা তোর্সা কালজানি জলঢাকা নদী দের সাথে। রাস্তার দুপাশে শিমুল আর রুদ্র পলাশ। শীতের শেষে আলু বস্তা বন্দি করে রাখা কথা। নটা বাজতেই পেটে ছুঁচো দৌড়াদৌড়ি শুরু করল। কিন্তু রাস্তার ধারের দোকান পাট তখনও বন্ধ। অবশেষে ঝাঝাঙ্গি ধাবায় খাবার মিলল। ক্ষীরটা অসাধারণ ছিল। তাছাড়া কিনলাম পঞ্চাশ টাকা পিস লাড্ডু আর প‍্যাড়া বাড়ির জন্য। ফের চলা। পথে পলাশ দেখে থামা আর ফটো সেশান।

কোচবিহার আমার আর পোগোর কাছে ভ্রমণ আর ওর বাবার স্মৃতি পর্যটন। ও হাঁকপাঁক করছিলো ওর ছোটবেলার শহর দেখার জন্য যেখানে দু দফায় পাঁচ বছর কাটিয়েছে পোগোর দাদুর চাকরিসূত্রে। উনি স্টেট ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। কোচবিহার। ক্লাস সেভেনের পর ছেড়ে চলে গেছে। সেই কোচ রাজার বাড়ি, মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ বয়েজ স্কুল যেখানে পড়ত, যেই স্কুল ছেড়ে চলে আসার আগে হেডমাস্টারমশাই বাড়িতে ডেকে চারখানা মিষ্টি খাইয়ে ছিলেন সেই ক্লাসঘর সেই কমন রুম যেখানে একটা রেডিও ছিল আর টিচারদের মধ্যে কখনো গন্ডগোল লাগলে এবং কৌতূহলী ছাত্ররা কমনরুমে উঁকিঝুঁকি মারলে ফুল ভল্যুমে যেই রেডিও চালিয়ে দেওয়া হত, সেই ঢ্যাঙা ছেলেটির কথা শুনলাম ক্লাস পালিয়ে সিনেমা দেখায় যাকে স্যার কেলিয়েছিলেন, সেই আপেল খেয়ে বোঁটা ছুঁড়তে গিয়ে স্যারের সামনে পড়া আর স্যারকে “ইচ্ছে করে ছুঁড়িনি” বলার পর স্যারের আপেলের বদলে পেয়ারা খাবার উপদেশ কারণ একটা পেয়ারা দুটো আপেলের সমান, সেই মদনমোহন মন্দির আর তার উল্টোদিকের দীঘি যেখানে ছোটবেলায় ও সাঁতার শিখেছে, সেই পুরনো সিনেমা হল, পাড়া, রাসচক্র, নাটমন্দির, হিরন্যকশিপু বধের মূর্তি, চওড়া রাস্তাঘাট, জেনকিন্স স্কুল যেখানে আমার দেওর পড়ত, সেই শ্রীকৃষ্ণ সুইটস যেখানে সিঙারা মিষ্টি খেত ওরা সব দেখলাম ধারা বিবরণী সহ। পোগো এই প্রথম দেখল ওর বাবার ছোটবেলা।

Coochbehar Palace

কোচবিহার পৌঁছে আমরা প্রথমেই গেলাম কোচবিহার প্যালেস দর্শনে। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ১৮৮৭ সালে এই প্যালেস তৈরি করেন। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ শ্রীমতি সুনীতি দেবীকে বিয়ে করেছিলেন যিনি ছিলেন ব্রহ্মা সংস্কারক কেশবচন্দ্র সেনের কন্যা । এই সুনীতি দেবীর নামেই কোচবিহারের বিখ্যাত মেয়েদের স্কুল, সুনীতি একাডেমি। মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ-এর নামে আছে ছেলেদের স্কুল। যেখানে ছাত্র ছিল আমার বর। নৃপেন্দ্রনারায়ণ-এর পর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজরাজেন্দ্রনারায়ণ তার স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি ১৯১৩ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে মারা যান। তিনি বিয়ে করেন নি। তার ভাই জিতেন্দ্রনারায়ণ তার স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি শ্রীমতী ইন্দিরা দেবীকে বিয়ে করেন, যিনি ছিলেন বরোদার গায়কোয়াড়ের মেয়ে। জিতেন্দ্রনারায়ণ ১৯২১ সালে মারা যান এবং তার নাবালক পুত্র জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ তার স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি ছিলেন কোচবিহারের শেষ মহারাজা। ইংরেজ আমলে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ইংরেজদের হয়ে লড়াই করেছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে কোচবিহারের শাসন ক্ষমতা অর্পণ করেন ভারত সরকারের হাতে। জিতেন্দ্রনারায়ণ-এর কন্যা গায়ত্রী দেবী। যিনি জয়পুরের মহারাজা সোয়াই মান সিংহকে বিয়ে করেন। রাজনীতিতে যোগ দেন, ভারতের প্রথম লোকসভার মহিলা নির্বাচিত সদস্য হয়ে কংগ্রেস বিরোধী বলে জরুরী অবস্থার সময় ছয়মাস জেল খাটেন। জেলে থাকাকালীন বন্দীদের নারকীয় অবস্থা দেখে বন্দীদের অবস্থার উন্নয়ন এর জন্য আন্দোলন করেন। অত্যন্ত বর্ণময় চরিত্র। কোচবিহারের রাজবাড়ি বর্তমানে মিউজিয়াম। সেখানে নারায়ণ রাজবংশের বহু স্মৃতি চিহ্ন চিঠিপত্র দলিল দস্তাবেজ অস্ত্র শস্ত্র আসবাবপত্র সীল মোহর ইত্যাদি সংরক্ষিত আছে। পঁচিশ টাকা করে টিকিট কেটে ঢুকতে হয়। প‍্যালেসের ভেতর ছবি তোলা বারণ। সাতটি ঘর বা গ‍্যালারি বর্তমানে খোলা। বাকি অংশে রেনোভেশান চলছে। আমরা যখন প্যালেস দেখতে ঢুকেছি। প্যালেসের সামনের বিস্তৃত বাগানের মোরাম বাঁধানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একজন পর্যটক আরেকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল এটা রাজবাড়ী নয় জমিদার বাড়ি। তাই শুনে আমার বর রীতিমতো রেগে উঠলো। প্রথমত এখনো পর্যন্ত টিকে থাকা প্যালেস গুলোর মধ্যে গ্ল্যামারে বা আয়তনে কোচবিহারের রাজবাড়ি কোন অংশে কম নয়। দ্বিতীয়তঃ ইতিহাস সাক্ষী পূর্বতন কামরূপ বর্তমানে কামতা রাজ্যের কোচ রাজার বংশ এই নারায়ণ বংশ। এমন নয় যে ইংরেজরা এদের জমিদারি দিয়েছিল।

কোচবিহারের অন্যান্য দ্রষ্টব‍্যের মধ‍্যে সাগরদীঘি, মদনমোহন মন্দির, বাণেশ্বর শিব মন্দির এগুলো উল্লেখযোগ্য। সবগুলোই রাজাদের কারো না কারো হাতে তৈরী। যারা রাতে থাকবেন রাজবাড়ির কাছাকাছি অনেক হোটেল আছে। সাথে রেস্টুরেন্ট শপিং মল। চওড়া রাস্তা। শান্ত জনজীবন। ভালোই লাগে ভাবতে একদা কামরূপ নামে পরিচিত পাল সেন বংশ মোগলদের পর কোচ রাজাদের রাজধানীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ইতিহাস। আমরা এর পর গেলাম এবিএন শীল কলেজ। সেখানে চলছিল লিটল ম‍্যাগাজিন মেলা। মেলা থেকে বেরোতে বেরোতে চারটে বাজলো প্রায়। এরপর আমরা রওনা দিলাম দিনহাটার উদ্দেশ্যে। প্রসঙ্গত দিনহাটা এখান থেকে মাত্র আধঘন্টার রাস্তা। এর কাছেই আছে কোচ রাজাদের প্রাচীন রাজ‍্যপাটের নিদর্শন। সব মিলে হাতে দিন দুয়েক হলেই আপনি ছুঁয়ে আসতে পারবেন একটুকরো ইতিহাস।

শর্মিষ্ঠা ঘোষ | Sharmistha Ghosh

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Advantages & Disadvantages of Tattoo | ট্যাটুর উপকারিতা এবং অপকারিতা | Bengali Article 2023

Is it possible to remove tattoo | ট্যাটু রিমুভ কি সম্ভব? | 2023

Emblem of Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতীকের অর্থ | নক্‌শা ও তাৎপর্য | 2023

Shabdodweep Web Magazine | Read Online Travel Stories | Sharmistha Ghosh

In today’s fast-paced world, one of the best ways to explore new destinations and experience different cultures is by reading online travel stories. These stories not only transport you to distant tourist places but also offer insights into the lives of travellers, their adventures, and the beauty they encounter along the way. If you are a travel enthusiast or someone passionate about learning from the experiences of others, reading travel stories online can be an enriching experience.

One of the best platforms for exploring such travel stories is Shabdodweep Web Magazine, a hub that publishes fascinating Bhraman Kahini (travel stories) in Bengali literature. With a wide range of content on travel experiences, these stories are written by travel story writers like Sharmistha Ghosh, who has contributed several poetic pieces on the subject.

Why Should You Read Online Travel Stories?

Travel stories offer more than just a glimpse into tourist places; they bring you the culture, history, and personal experiences of the places. By reading travel stories online, you can:

  1. Experience a Place Before Visiting
    Reading a travel story often feels like walking alongside the writer. It gives you a sense of the place—its landscapes, people, food, and unique culture. Whether it’s a bustling city or a serene mountain retreat, online travel stories offer vivid descriptions that help you mentally prepare for your future travels.
  2. Learn About Different Cultures
    Travel stories often reveal the cultural aspects of a place. Whether it’s a celebration, tradition, or lifestyle, travel writers delve deep into the nuances of life in different regions. By reading these stories, you not only gain a broader understanding of the world but also develop respect and appreciation for diverse cultures.
  3. Inspire Your Own Travels
    Many readers find themselves inspired to visit the places described in travel stories. Through the engaging narratives, readers discover new destinations and uncover hidden gems that may not be found in typical tourist guides. Shabdodweep Web Magazine’s collection of Bhraman Kahini can give you fresh ideas for your next adventure.
  4. Engage with the Travel Community
    Online travel stories also allow you to connect with like-minded individuals who share your interest in exploration. Comments, discussions, and the sharing of personal experiences make travel storytelling a communal activity where both writers and readers form connections.

Why Shabdodweep Web Magazine is Your Go-To Platform for Travel Stories

Shabdodweep Web Magazine stands out as a valuable resource for readers looking to indulge in high-quality Bengali travel stories. The magazine publishes a wide range of Bhraman Kahini, sharing personal travel experiences, anecdotes, and insights into various tourist places, while showcasing the beauty of Bengali literature.

Some of the notable contributions come from Sharmistha Ghosh, a prolific travel story writer known for her content on travel. Her works are a blend of personal reflection and poetic descriptions, making her stories a captivating read for anyone interested in travel and culture. Her contributions to Shabdodweep Web Magazine are rich in imagery and deep in meaning, offering readers not just a travel experience, but an emotional journey.

Featured Travel Experiences in Bengali Literature

If you are a fan of Bengali literature, Shabdodweep Web Magazine offers a unique blend of Bhraman Kahini written in Bengali, immersing readers in the language and literary tradition of Bengal while narrating travel experiences. Whether it’s an exploration of a quaint village in India or a vibrant city abroad, the magazine’s content makes you feel as though you’re experiencing the journey firsthand.

A Platform for Aspiring Travel Writers

Are you an aspiring travel story writer? Shabdodweep Web Magazine provides a platform for emerging writers to share their stories. The magazine encourages individuals to express their travel experiences and helps preserve the rich literary traditions of Bengali travel literature.

Frequently Asked Questions (FAQ)

Q1: Why should I read travel stories on Shabdodweep Web Magazine?

Shabdodweep Web Magazine offers a unique collection of Bhraman Kahini written by established and emerging writers, including Sharmistha Ghosh. The magazine provides rich, culturally immersive travel experiences that not only introduce you to tourist places but also delve into local traditions, cuisine, and life in various destinations. It’s a perfect blend of Bengali literature and travel storytelling.

Q2: Can I submit my own travel stories to Shabdodweep Web Magazine?

Yes! Shabdodweep Web Magazine welcomes aspiring travel story writers to share their unique travel experiences. Whether it’s a personal anecdote or a poetic reflection, the magazine offers a platform to publish stories that inspire others and enrich the Bengali literary world.

Q3: What makes Bhraman Kahini unique compared to other travel stories?

Bhraman Kahini, or travel stories in Bengali literature, are known for their emotional depth and cultural insight. They not only describe the journey to different tourist places but also focus on the connections between the traveller and the place. These stories are steeped in local customs, folklore, and a strong sense of place, offering readers a richer experience than typical travel narratives.

Q4: Are the travel stories in Shabdodweep Web Magazine written in Bengali or English?

While Shabdodweep Web Magazine primarily focuses on Bengali literature, including Bhraman Kahini, it also features stories in English. This allows a wider audience to enjoy the content while appreciating the beauty of Bengali literary tradition.

Conclusion

Reading online travel stories is one of the best ways to fuel your wanderlust and learn more about different places and cultures. With platforms like Shabdodweep Web Magazine, you get to enjoy an immersive travel experience that combines poetic expression with real-life adventures. Whether you are looking for inspiration for your next trip or simply want to escape into a world of new stories, travel narratives on Shabdodweep Web Magazine will undoubtedly captivate your imagination.

So, why wait? Visit Shabdodweep Web Magazine today and start reading these captivating travel stories by Sharmistha Ghosh and many other talented writers. Embark on a literary journey that will inspire and transform your perception of travel and culture.


Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio

Leave a Comment