Best Online Upanyas in Bengali | খুঁজে ফিরি বিশল্যকরণী

Sharing Is Caring:

খুঁজে ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব-২২) – জয়নাল আবেদিন

সন্ধ্যার পরেই সত্যেন বাবু স্ত্রী এবং নাতনিকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেন। রাত্রি নটা পাঁচে ট্রেন। সৌজন্য দেখাতে রাস্তা পর্যন্ত এগিয়ে দিলে শঙ্খ। একটা ট্যাক্সি ধরে সকলে উঠে চলে যাবার পর, কেমন একটা স্বস্তি বোধ হলো ওর। দোকান থেকে একটা সিগারেট নিয়ে অগ্নিসংযোগ করে বেশ তৃপ্তির একটা টান দিতে তাতে। এমন একটা নেশা দ্রব্য মনটাকে বেশ ধরা তাজা করে দেয়।

রাতের খাবার খেয়ে ছেলেদের নিয়ে শুয়ে পড়লো শঙ্খ। ছেলে দুজন ঘুমিয়ে পড়লেও ওর চোখে ঘুম আসছে না। পরশু সকালের ট্রেনে দুই ছেলেকে বোর্ডিংয়ে রেখে আসতে হবে। ভর্তি সংক্রান্ত কাজ মিটিয়ে টাকা পয়সা জমা দিয়ে আর কলকাতা আসবেনা। সোজা চলে যেতে হবে কোচবিহারের সীমান্তের ব্যারাকে। এ মাসে একটা বদলির অর্ডার আসতে পারে ক’জনার। আবার নতুন কোন ঠিকানায় যেতে হবে আগাম জানা যাচ্ছে না। শরীর মন কেমন একটা অবসন্নতায় ভুগতে থাকে এ সময়। সংসার জীবনে চাই- চাই করতে- করতে কেমন একটা পিচ্ছিল পথে হাঁটতে শুরু করেছিল প্রথম থেকেই। বাস্তব জীবনকে সুখী করতে স্বোপার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে, এমন ভাবনা কোনকালেই ছিল না তার মধ্যে। দাদাদের উপর জুলুম করেই ভবানীপুরের বাড়ি খানা পেয়েছে এককভাবে। এমন একখানা জমি সহ তৈরি বাড়ি পাওয়া বিরাট লাভজনক। একটু নতুনত্ব আনার জন্য খরচের সমস্ত টাকাটাই শ্বশুরবাড়ির থেকে আনতে হয়েছে স্বাতীকে। মানসিকভাবে বিরোধটা ছিল এখানেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে।

স্বাতী বলতো – বারবার কেন টাকা চাইতে যাব আমি ? আমি এভাবে চাইতে পারবো না। তোমার দরকার তুমি চাও।
শঙ্খ বললে – এতে তোমার আমার ভাবছো কেন? আর ভবিষ্যতে তো ওই সম্পত্তির মালিক আমরাই হবো। তখন কি আমরা ওখানে গিয়ে বাস করব ? বিক্রি করে টাকাটাই তো নেব।
স্বাতী বলতো – অনেক দূর ভেবে রেখেছো তাহলে? যার জায়গা জমি সে অন্য কাউকেও তো লিখে দিতে পারে ? সে স্বাধীনতা তার আছে তো ? তুমি পাওয়ার জন্য ভেবে রাখছো কেন ?
শঙ্খ বললে – আমি না ভাবলেও মেয়ে হিসেবেই সম্পত্তির ভবিষ্যৎ মালিক তুমি হবে। এটা তো কোনো বেআইনি কথা নয়।
স্বাতী কেমন ঝাঁঝিয়ে বলেছিল, – সেজন্যই বারবার টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটে রেখেছো নির্লজ্জের মতো। আত্মীয় বাড়িতে হাত পাততে কষ্ট হয় না তোমার ? একজন পুরুষ হয়ে কি করে এতটা নিচে নামতে পারো ?
শঙ্খ এবার বিস্ময়ে বললে, – ভাষা সংযত করো। সংসারটা আমার একার নয়। ভবিষ্যতের কথা দুজনেরই ভাবা দরকার। ছেলে- মেয়ের কথা তোমারও ভাবনায় থাকা উচিত।

— ঠিকই তো ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ গড়তে আমি নিরীহ বাপের কাছে হাত পেতে টাকা আনবো, আর তুমি তা দিয়ে ইমারত গড়বে। তার থেকে তুমি চুড়ি পরে ঘরে থাকো। আমি বাইরে বেরোই স্বাতীর শ্লেষাত্মক কথা।
এভাবেই স্মৃতি পটে ভাসতে থাকা ছবির সঙ্গে অবচেতন মনটা কখন ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল।

সকাল থেকেই একটু ব্যস্ত হয়ে পড়ল শঙ্খ। চা-জল খাবার খেয়ে ছেলেদের নিয়ে বাজারে বের হলো। প্রয়োজনীয় জামা-প্যান্ট, গেঞ্জি, জুতো-মোজা আরো কিছু কিছু ওদের দরকারি জিনিস কিনে নিলে। ভরা বাজারে কেনা কাটায় বেশ কিছুটা সময় চলে গেল। তৈরি করা জিনিস সামগ্রী কেনার তালিকা দেখেই কেনা শেষ হয়েছে ।বাড়ি ফেরার পথে একটু মাংস নিয়ে সকলে বাড়ি ফিরলে। চান খাওয়া স্বার্থে একটু বেলা হল দুপুর গড়িয়েছে কিছু আগেই বিছানায় বীজ পাতলো বাপ ছেলে। সন্ধ্যাটা তাদের বেশ আলসে ভাবেই কাটলো সকলের। চা খাওয়া। ব্যাগ গোছগাছ করা। কাল সকাল সাড়ে সাতটায় ট্রেন। শিলিগুড়ি পৌঁছাতে সেই সন্ধ্যে ।এত বড় বাড়ি টাকে একা রেখে চলে যেতে হবে। দেখার কেউ নেই। কেমন অসহায় একটা চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়। হঠাৎই মনে হলো রথীনদার কথা। সঙ্গে সঙ্গে ছেলেদের ঘরে রেখে বেরিয়ে পড়লো। হাঁটতে- হাঁটতে রথীনদার দোকান।

শঙ্খ বললে – একটু কথা ছিল দাদা।
রথীন দা বললে – আয় ভেতরে আয়। বল কি বলতে চাস ?
শঙ্খ বললে – বাড়িতে তো কেউ থাকছে না এখন । তাই ভাবছি দুটো ঘর ভাড়া দেব। আমার একটা থাকবে। একদিকে রক্ষণাবেক্ষণ হবে। আবার ভাড়াটাও পাবো।
রথীনদা বললে – মন্দ নয় । তাই কর।
শঙ্খ বললে – আমি দরজায় লিখে রাখছি। দুটো ঘর ভাড়া দেয়া হবে। যোগাযোগ রথীনদার দোকান। তুমি কথা বলবে, ঠিক হলে আমাকে ফোনে জানাবে। আমি একদিনের জন্য হলেও ঠিক চলে আসবো।

সঠিক সময়েই হাওড়া থেকে ট্রেন ধরল শঙ্খ সেটা দুটোকে নিয়ে। সকালে টিফিন। দুপুরের খাবার। ট্রেনেই বরাদ্দ ছিলো। ট্রেন চলেছে বেশ দ্রুত গতিতে। শুভ্র-অভ্র খুনসুটিতে মেতে। মনের কোনে ডানা ঝাপটায় স্মৃতি। সাজানো-গোছানো বাড়িটা ফাঁকা রেখে চলে যেতে হচ্ছে। জীবনটা কেমন এলোমেলো হয়ে গেলো। স্বাতী কেন যে কোন কনসিডার করতে পারলো না। বড় অবাক লাগে। ভীষণ জেদি মেয়ে। সংসার জীবনে এত জেদি হওয়া কিন্তু ভালো নয়। কোন মেয়ের জন্য। পুরুষ কিছুটা অগোছালো হতেই পারে। সংসারের বাঁধন সব পুরুষের মধ্যে থাকে না। কিন্তু একজন নারীর প্রকৃতি- গুছিয়ে সংসার- জীবন, সন্তান-সন্ততি, লালন-পালন এটাই সহজাত। নারী একটা সংসারের সৌন্দর্য। সবকিছুর সমন্বয় রক্ষাকারী। স্বাতীর মধ্যে তো সমস্ত গুণই ছিলো।বড় নির্লোভ ছিল তার জীবনটা। চাহিদা নিজের জন্য কিছুই ছিলো না। স্বার্থপরতা সহ্য করতে পারতো না কোনদিন আর এখান থেকেই কেমন পাল্টে যাচ্ছিলো মনে হয় তার জীবন সংগ্রাম। উজ্জ্বল মানসিকতা। চাপা একটা ক্ষোভ আস্তে আস্তে বাসা বাধছিল তার অন্তরে। শঙ্খ হয়তো বা অনুভব করতো ঘটনার প্রারম্ভিকতা। তবে তেমন আমল দিতো না। তার চরিত্রগত অভ্যাস অনুযায়ী নিজের ইচ্ছাকে পরিপূর্ণ করাই তার একমাত্র সাধনা ছিলো। জীবনে তার দাদাদের সঙ্গে কোন আপোষ করতে পারেনি। নিজের ইচ্ছা পূরণ আলোয়- অন্ধকারে যেভাবেই হোক করে চলতো। জীবনের লক্ষ্যমাত্রা সঠিকভাবে কোনদিন নির্বাচন করেনি, করতে পারেনি। বস্তুবাদী ভোগের লালসায় বাস্তবকে কেমন অস্বীকার করে চলতো। তাই জীবনে বাস্তব-অবাস্তবের দ্বন্দ্বে জীবনটা কেমন একটা অন্ধকার ছায়া ফেলতে চলেছে। মহীরুহ হতে গিয়েও শাখা-প্রশাখা আজ কেমন ঝিমিয়ে পড়েছে।

গাছপালা ছাড়িয়ে দ্রুত গতিতে ট্রেন এগিয়ে চলেছে। চোখটা কেমন জুড়ে আসছিল। সকালের খাবার খেয়ে শুভ্র-অভ্র বেশ খুশি খুশি ভাব। হঠাৎ শুভ্রর প্রশ্ন করল বাবাকে, – মা কি কোনদিন আর আসবেনা আমাদের কাছে? কেন বাবা, মায়ের কি হয়েছে গো ?
শঙ্খ কেমন কেঁপে উঠলে প্রশ্ন শুনে, বললে – কেন? এভাবে জিজ্ঞেস করছ কেন? যে কোন সময় চলে আসবে।
অভ্র বললে- সেই কবে থেকেই একই কথা শুনছি! মা ঠিক চলে আসবে। কবে আসবে শুনতে চাইছি।
শঙ্খ একটু মৃদু শাসনের ভঙ্গিতে বললে, – তোমরা পড়াশোনায় থাকো। বাড়ির কথা ভাবতে হবে না। মা তাড়াতাড়ি চলে আসবে। এমন হলে তোমাদের কাছে ঘুরতেও আসতে পারে।

এমন কথায় দুই ভাই মনে হল একটু খুশি হয়েছে। কিছুটা সামাল দিতে পেরে শঙ্খ একটু স্বস্তি পেলো। কিন্তু ঘটনার বেড়াজালে- বনে গিয়েও এখন আর মনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শঙ্খ। এমন এক অভিশপ্ত জীবন সে তো কখনোই কামনা করেনি। তার ভাবনায় সে কোনদিন কোন অন্ধকার পথে হাঁটেনি। তাহলে নিজের জীবনটা কেন অন্ধকার হয়ে আসছে। আর শেষ পরিণতি টই বা কি হতে চলেছে। একদিকে শ্বশুরমশাই মেয়েকে ফিরে না পেলে কেস কাবারি করলে, কি সমস্যা হবে ভাবতে পারছে না। আবার কেস কাবারির সমস্যায় চাকরিতে কোন ঝামেলা হতে পারে কিনা সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। কলকাতার আলো ঝলমলে বাড়িতে লোক- প্রাণীর অভাবে অন্ধকার ভূতের বাড়ি হয়ে যাবে। ত্রিশঙ্কু এক কালো আবরণে শঙ্খকে ঘিরে ধরেছে। মাঝে মাঝে দম বন্ধ অবস্থা হচ্ছে তার।

সন্ধ্যা মুখো শিলিগুড়ি পৌঁছালো সকলে। তাড়াতাড়ি স্টেশন থেকে বাইরে এসে একটা গাড়ি ধরে ছেলেদের হোস্টেলে পৌঁছল। অফিস জানালে, কাল সকালে এসে এ্যাডমিশন করে দেবেন।
— আজকে অফিসিয়াল কাজটা হয়ে গেলে খুব ভালো হতো। কাল সকালেই আমাকে অফিস জয়েন করতে হবে। শঙ্খ একটু অনুনয়ের সঙ্গে বললো।
— আজ আর কেউ নেই স্যার। টাকা পয়সার ব্যাপার তো, কে দায়িত্ব নেবে। ভদ্রলোক বললেন।

শঙ্খ বললে – সকাল মানে তো সেই দশটা সাড়ে দশটা।
— মোটামুটি ঐরকমই। আপনি আসুন না। প্রথমেই আপনারটা ব্যবস্থা করে দেব। ভদ্রলোক আশ্বাস দিলেন।

অগত্যা বাইরে এসে কাছাকাছি একটা হোটেলে রাত্রিবাসের জন্য ব্যবস্থা করলে শঙ্খ। বাইরে থেকেই চা খেয়ে রুমে ঢুকলো। জামা-কাপড় ছেড়ে একটু তিতু হয়ে বিছানায় বসে একটা সিগারেট ধরালো। আগামীকালের কাজের ছবিটা মনে মনে ছক করে নিলে। সকাল সকাল উঠে রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট। স্কুলে পৌঁছাতে হবে। স্কুলের কাজ সেরে কাগজপত্র ছেলেদের কাছে রেখে বের হতে হতে প্রায় দুপুর। স্কুল থেকে বের হয়ে সোজা বাস টার্মিনাস। দুপুরে খাবার খেয়ে কোচবিহারের বাসে চেপে বসা। হঠাৎ কেমন যেন একটা দীর্ঘশ্বাস পড়লো শঙ্খের।

জয়নাল আবেদিন | Joynal Abedin

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Emblem of Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতীকের অর্থ | নক্‌শা ও তাৎপর্য | 2023

Rabindranath Tagore’s love for art and literature

Porokia Prem Ekaal Sekaal | পরকীয়া প্রেম (একাল সেকাল) | 2023

Online upanyas in bengali pdf | Online upanyas in bengali pdf download | Free online upanyas in bengali | Best online upanyas in bengali | bengali story books pdf free download | bangla pdf book download | bengali books online free | Buy Bengali Upanyas Books | Online Upanyas in Bengali | Bangla Upanyas Online | Bangla Upanyas Online 2023 | New Online Upanyas in Bengali | Bangla Upanyas Online Read | Read Bangla Upanyas Online | Bangla Upanyas Online pdf | Download Bangla Upanyas Online | Bangla Upanyas Online Series

Shabdodweep | Sabuj Basinda | High Challenger | Shabdodweep – Bangla Upanyas Online | Bangla Upanyas Online – Joynal Abedin | Bangla Upanyas Online Show | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Novel Writer | New Bengali Novel | Online Upanyas in Bengali in PDF | Free Novel Download | Top Bengali Novel | Famous Bengali Writer | Best Selling Bengali Story | Pratilipi Story | StoryMirror Story | Bangla Upanyas Online Book | Sabuj Basinda Website | Top Bengali Writer | High Challenger Motivational Blog | Full Story in Bengali | Bengali Story Reader | New Bengali Story 2023 | Bangla Galpo | Natun Bangla Galpo

Natun Bangla Galpo 2023 | Story Writing Competition | Online Upanyas in Bengali 2024| Writing Competiton 2023 | Shabdodweep Online Upanyas in Bengali | Full Web Stories | Bangla Galper Series | Online Upanyas in Bengali in Netflix Bangla | Download Online Upanyas in Bengali | Bengali Story in USA | Online Upanyas in Bengali in Bangladesh | Indian Bengali Story | Google Online Upanyas in Bengali | Sera Bangla Galpo | 18+ Online Bangla Novel Reading | Adult English Story | Adult Bengali Story

Adult Bangla Galpo | Bangla Upanyas 2023 | Natun Bangla Upanyas | Shabdodweep Upanyas | Shabdodweep New Novel | Attractive Online Upanyas in Bengali | Attractive Bengali Story | Shabdodweep Forum | Shabdodweep Story Collection | Bengali Web Novel APK | Bengali Web Novel Website | Bengali Literature | Online Upanyas in Bengali in Audio Platform

Leave a Comment