New Bengali Famous Story – প্রবোধ কুমার মৃধা – সূচিপত্র
বিষণ্ণ বিদায় (পর্ব ১) – প্রবোধ কুমার মৃধা
খোকা,
এই কাগজখানা যখন তুই হাতে পাবি তখন আমি অনেক দূরে চলে যাব।এটি তোর ব্যাগের মধ্যে রেখে গেলাম; না হলে গায়েব হয়ে যেতে পারে। আমাকে খোঁজাখুঁজি করিস নে,বার যখন হয়ে পড়েছি আর ফিরব না ।নতুন করে লাঞ্ছনা গঞ্জনার মুখোমুখি আর হতে চাই না।
সংসারে অশান্তির কারণে তোকে কোনদিন কিছু জানাইনি।নীরবে মুখ বুজে সব নির্যাতন সহ্য করে এসেছি। এখন অবস্থাটা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে। বৌমার ভাই-ভাজের সঙ্গে তার বাবা মায়ের তেমন বনিবনা হচ্ছে না, তারা বছরের অধিকাংশ সময়টা মেয়ের বাড়িতে কাটাতে চায়। বৌমার তাতে সম্মতি এবং আগ্ৰহ খুবই; এই মর্মে তাদের পরামর্শে আমাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখার ব্যবস্থা করবে খুব শীঘ্র।
সংসারের জন্য প্রাণপাত করেছি। এই সংসার ছাড়ার কথা কোনোদিন চিন্তায় আনতে পারিনি। দাদুভাইরা আসার পর সংসারের মায়ায় আরো জড়িয়ে গেছি। কত কিছু ছেড়ে, কতটা ত্যাগ স্বীকার করে বার হয়ে এসেছি তা একমাত্র ঈশ্বর জানেন। তুই সব সময় অফিসের কাজে ব্যস্ত, তাই বিশ্বাস করে আমার দায়িত্ব বৌমার উপর ছেড়ে নিশ্চিন্ত থেকেছিস, কোনোদিন সেভাবে কোন খোঁজখবর রাখতে পারিসনি। কিন্তু বৌমা খুব স্বার্থপর।
কী ছেড়ে গেলাম, কতটা ছেড়ে গেলাম, তোকে বোঝাতে পারব না। চোখের জল কোন সময়ের জন্য শুকাচ্ছে না,তবে ক’টা দিন পার হয়ে গেলে অনেকটা সামলে উঠতে পারবো; তুই চিন্তা করিস নে। সবাই ভালো থাকিস।
–- তোর মা
প্রতিদিন সকাল সাতটার মধ্যে উঠে পড়ে গার্গী। তার বহু আগে বিছানা ছাড়েন আনন্দময়ী,গার্গীর শাশুড়ি। তেমন কোন গৃহকর্ম থাকে না,তবু এটি তাঁর বারো মাসের অভ্যাস। বাথরুম থেকে বেরিয়ে গার্গী রান্নাঘরে ঢোকার মুখে দেখল শাশুড়ির ঘরের দরজা বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগানো, ভিতরে অন্ধকার ।এমনটা তো কোনদিন হয় না। ঘরের দরজা শীতকাল ছাড়া বরাবরই ভোর থেকে খোলা থাকে, ভিতরে আলো জ্বলে। গার্গী দরজা খুলে ভিতরে উঁকি দিল। ঘর ফাঁকা, ভিতরে কেউ নেই। কলতলা, রান্নাঘর ঘুরে কোথাও শাশুড়িকে দেখতে পেল না সে। কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে শেষে স্বামীকে জাগিয়ে তুলল।ছেলে মেয়ে দুজন অকাতরে ঘুমিয়ে ।আধো ঘুম চোখে ব্যাপারটি শুনে মুহূর্তে বিছানা ছেড়ে ঘরের বাইরে এল শেখর। মায়ের ঘর, বাস্তুর চারদিক, ছাদ, সর্বত্র সন্ধান করল, কোথাও মাকে পাওয়া গেল না। তাদের নতুন পল্লীর সব ঘরের সবাই তখনও ওঠেনি। আনন্দময়ী যে যে বাড়িতে যাতায়াত করতেন সেই সমস্ত জায়গায় গিয়ে জানা গেল, সেখানেও যাননি। অবাক কাণ্ড! মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে একটা মানুষ হাওয়া হয়ে গেল! কোন রকম সম্ভাব্য ধারণা মাথায় আনতে পারল না শেখর। ঘরে ফিরে এসে স্ত্রীর কাছে কিছু জানতে চাইল সে। গত রাতে মা কি খেয়েছিলেন, মায়ের শরীর সারাদিন কেমন ছিল, কোনখানে যাওয়ার কথা বলেছিলেন কি না, ইত্যাদি ইত্যাদি। এভাবে বহু প্রশ্ন করে মায়ের গতদিনের অবস্থান সম্পর্কে অবগত হতে চাইল শেখর। তারপর গার্গীকে ফোনটা এনে দিতে বলল।
— কোথায় ফোন করবে?
— দেখি, বাসন্তীর ওখানে গেল কি না।
বাসন্তী শেখরের একমাত্র বোন। ডায়মন্ডহারবারে তার শ্বশুর বাড়ি ।অনেক সময় একা একা সেখানে গিয়েছেন আনন্দময়ী।
…. না! বাসন্তীর ওখানে যাননি মা। খবর নিল মামার বাড়িতে। সেখানেও না।
কী খবর গার্গী জানতে চাইল স্বামীর কাছে ।উত্তরে শেখর জানাল,
–- বাসন্তীর ওখানে বা মামাদের ওখানে কোথাও যাননি মা।
বড়ো দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল শেখর, দিশেহারা অবস্থা তার।আশে পাশের বাড়ির থেকে বয়স্ক কয়েকজন ততক্ষণে চলে এসেছেন। শেখর যেন কিছুটা স্বস্তিবোধ করল। এ অবস্থায় অভিজ্ঞ মানুষ জনের সুপরামর্শ খুবই জরুরি। আগত ব্যক্তিগণ সবাই তাকে অবিলম্বে থানাতে ডায়েরি করার কথা বললেন। শেখরও ঠিক এই কথাটাই চিন্তা করছিল। এছাড়া অন্য কোন পন্থা সে আপাতত দেখছিল না।
কাগজ কলমের প্রয়োজনে শেখর উঠে ঘরের মধ্যে গেল। কিন্তু ব্যাগটি পাওয়া যাচ্ছিল না, হঠাৎ মনে পড়ল, গতকাল অফিস থেকে ফিরে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে মায়ের ঘরে ব্যাগটি রেখেছিল সে। মায়ের ঘরে গিয়ে দেখল যেখানেই রেখেছিল সেখানেই আছে বস্তুটি। ব্যাগটি নিয়ে বারান্দায় এসে খুলে কাগজ কলম বের করতে গিয়ে পাওয়া গেল একটা ভাঁজ করা কাগজ। এখানে এমনভাবে কোন কাগজ তো শেখর রাখেনি! কৌতূহল বশে সেটি খুলে দেখল পাতা ভর্তি লেখা। মুহূর্তে চিনতে পারল মায়ের হাতের অপটু অক্ষরগুলিকে।এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলল বেশ খানিকটা, তারপর পড়া অসমাপ্ত রেখে কাগজটি হাতে ধরে হতভম্বের মতো শূন্যে চেয়ে বসে রইলো। কয়েকটা মুহূর্ত। চোখ থেকে জল গড়িয়ে এল। বিস্মিত সবাই জানতে চাইল, কী হলো! একটু ধাতস্থ হয়ে শেখর মায়ের লেখা চিঠিটির প্রথম কয়েক ছত্র সবাইকে পড়ে শোনাল।সকলেই নিশ্চিত হতে পারল যে,আনন্দময়ী বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।
চিঠির অবশিষ্ট অংশটুকু শেখর আর পাঠ করল না। এবং তা ইচ্ছা করেই। পড়শির বিপদে যে ক’জন সহানুভূতিও সৌজন্যবশত এসেছিলেন, তাঁরা অনেক দুঃখ প্রকাশ করে সান্ত্বনা দিয়ে উঠে পড়লেন। তবুও একটা ডায়েরি করে রাখা দরকার বলে অভিমত প্রকাশ করলেন প্রায় সকলেই। ছেলেমেয়ে দুজন উঠে পড়েছিল।গার্গী তাদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। শেখর উঠে আবার মায়ের ঘরে গেল।একা একা চিঠিখানা বার কয়েক পড়ল। চোখে জল আর নেই। বুকের মধ্যে একটা অব্যক্ত হাহাকার থেকে থেকে মনটাকে বিষণ্ণতার অন্ধকারে নিমজ্জিত করছিল। তার আত্মীয়জন এবং একান্ত আপন জনের অমানবিক আচরণের কারণে মা আজ গৃহছাড়া। হতাশা, রাগ, ক্রোধ, সব মিলিয়ে তার মনের মধ্যে একটা ঝড় বইছিল। ছেলে মেয়ের সামনে কোন রকম হঠকারিতা না দেখিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করল সে। এক সময় থানার প্রসঙ্গ টেনে পরিচিত অন্তরঙ্গ বন্ধু বান্ধবের সাথে পরামর্শ করার উদ্দেশ্যে ব্যস্তভাবে বেরিয়ে গেল শেখর।
বিষণ্ণ বিদায় (পর্ব ২) – প্রবোধ কুমার মৃধা
সকাল থেকে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের আগমন ঘটতে থাকল। পাড়ার লোকজন তো দল দল আসছে, ফিরে যাচ্ছে ।একা গার্গীর পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ল। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গার্গীর মা সৌজন্য বশতঃ জামাইকে সমবেদনা জানাতে এসেছেন। গার্গীর বাবার শরীর খারাপ থাকার কারণে আসতে পারেননি। শেখরের দুই মামা ও দুই মামি একটু বেলার দিকে এসে পৌঁছলেন। মা-য়ের বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হওয়ার খবর পেয়ে শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে সকালে চলে এসেছে বাসন্তী। অফিসে জরুরি প্রয়োজন থাকায় দেবাংশু আসতে পারেনি; তবে অফিস ঘুরে সন্ধ্যার পর আসবে বলে জানা গেল। আত্মীয় আর পাড়া প্রতিবেশীরা সবাই নিজেদের মধ্যে নানান কথার আলোচনা সমলোচনা করতে থাকল। তাদের মুখে হাজারো প্রশ্ন। বেশির ভাগ জনে নিজেরা প্রশ্ন করছে আবার নিজেরাই তৎক্ষণাৎ উত্তর দিয়ে দিচ্ছে ।আনন্দময়ীর বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কারণ নিয়ে এক এক জনের এক এক রকম অভিমত। শাশুড়ি-বৌমার মধ্যে খুব যে একটা সোহগ-সৌহার্দ্য ছিল না, তা কমবেশি সকলেই অবগত ছিল। কিন্তু ব্যাপারটা যে এতদূর গড়াবে এবং এমন চরম পরিণতি ঘটবে এতটা কেউ অনুমান করেনি।
পাশের বাড়ির ন’গিন্নি গার্গীকে জিজ্ঞেস করল – হ্যাঁ বৌমা, তোমরা কোন আভাস – ইঙ্গিত পাওনি?
-– না খুড়িমা, ঠিক এমন চিন্তাটা আমাদের ভাবনায় আসেনি কোনদিন। উত্তর দেয় গার্গী।
–- আমরা তো ভাবিনি, মেজদি এমনভাবে চলে যাবে।
–আমরাও কি ভেবেছি? কার সংসারে না টুকটাক ঠোকাঠুকি হয়?তাই বলে ছেলে-বৌ, নাতি-পুতি ফেলে রেখে চলে যেতে হবে, এটা কোন কথা হলো! একটু ঝাঁঝভরে কথাগুলো গড়গড় করে বলে ফেলে সবার মুখের দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে রইল বড়বাবু নৃপেন ঘোষালের মা।
বাসন্তী সবার সাথে বেশ কিছুক্ষণ বসেছিল, কোন কথা বলার মতো মনের অবস্থা ছিল না তার; মাঝে মাঝে দু’চোখ বেয়ে জলের ধারা নামছিল। অভুক্ত শাশুড়ির জন্য একসময় উঠে রান্নাঘরে চলে গেল। গার্গী সেখানে রান্নার আয়োজনে ব্যস্ত। দুই মামি তাকে সাহায্য করছিল। সপ্তর্ষি ও সুজাতা আজকের পরিস্থিতি লক্ষ্য করে কিছুটা হলেও হকচকিয়ে গিয়েছে।আসলে আজ সমস্ত বাড়িটার স্বাভাবিক ছন্দটা কেটে গিয়েছে। শেখর সেই যে থানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেল এখনও পর্যন্ত বাড়িতে ফিরে আসেনি। তার অফিস, ছেলে মেয়ের স্কুলে যাওয়া, সব আজ বন্ধ। মাকে দিদির বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ঘন্টা খানেক পরে গার্গীর ভাই ঘরে ফিরে গেল। বাবার শরীর খারাপের কারণে গার্গী থাকার জন্য জোরাজুরি করল না; তাছাড়া এ-অবস্থায় আত্মীয়তা পালনের প্রশ্নই নেই। পরিচিত আত্মীয়-স্বজন যেমন স্বেচ্ছায় আসছে তেমন সৌজন্য সহানুভূতি জানিয়ে ফিরে যাচ্ছে, কারও কিছু মনে করার বা আপ্যায়নের ভালো-মন্দ বিচার করার সময় এটা নয়। সবাই একটা দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে।
শেখরের দুই মামা বারান্দায় চেয়ারে বসে নিজেদের মধ্যে কথা বলাবলি করছিলেন। সবাই তাঁরা অপেক্ষা করে আছেন শেখরের জন্য। সে না ফেরা পর্যন্ত পরবর্তী করণীয় কিছুই ঠিক করা যাচ্ছে না; সব যেন কেমন গোলমাল হয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মলিন মুখে ঘরে ফিরে এল শেখর। বাড়িতে প্রচুর লোকজনের সমাগম। দুই মামাকে দেখে শেখর তাদের কাছে গিয়ে বসল। মেজো মামা তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞেস করল –কোন ব্যবস্থা করা গেল শেখর?
–- ব্যবস্থা বলতে মামা, …থানায় একটা প্রাথমিক ডায়েরি করে রাখলাম। আমার কয়েকজন পরিচিত এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাহায্যে কয়েকটি অনুসন্ধান সংস্থায় ইনফরমেশন পাঠিয়েছি। মায়ের ছবি দিয়ে এবার দু’একটা সংবাদপত্রের নিরুদ্দেশ কলমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
–- বেতার মারফত অনুসন্ধানের একটা ব্যবস্থা করলে বোধহয় ভালো হতো।
–- হ্যাঁ মামা, সে ব্যবস্থাও করার ইচ্ছা আছে। কাল-পরশু অফিসে না গেলে কিছু করতে পারছি না। আমাদের স্টাফের একজনের এক আত্মীয় রেডিও অফিসে কাজ করে।
শেখরের ছোট মামা কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন – দিদি একা একা কোথাও যেতে তেমন সাহস করতনা। কী এমন হলো যে, এই রকম একটা দুঃসাহসিক ঝুঁকি অনায়াসে নিয়ে ফেলল! ভাবতে অবাক লাগে! মামার কথাগুলো শেখর নীরবে শুনে গেল। গ্ৰহণযোগ্য কোন ব্যাখ্যা শেখরও দিতে পারল না সংসারে শাশুড়ি-বৌ বা অপরাপর সদস্য যারা থাকে তাদের মধ্যে অনেক সময় মান-অভিমান বা মনোমালিন্যের কারণ ঘটে থাকে কমবেশি সব সংসারে। কিন্তু সংসার ছাড়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত গ্ৰহণের কারণ সামান্য হতে পারে না। মায়ের চিঠির প্রেক্ষিতে শেখর তা অনেকটা উপলব্ধি করতে পেরেছে; তবে তা বিশ্লেষণ করে কাউকে বোঝানো বোধকরি ঠিক হবে না। মেজো মামা শেখরের কাছে জানতে চাইলেন – তোর মা না কি চিঠি লিখে রেখে গেছে, কী লিখেছে তাতে?
যতই নিকট বা দূর সম্পর্কের আত্মীয় হোক না কেন, মায়ের চিঠিখানা দেখানো বা তার বিষয়বস্তু সমস্ত সর্বসমক্ষে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সাংসারিক তথা সামাজিক মান-মর্যাদার প্রশ্ন জড়িয়ে আছে বলে শেখরের ধারণা। সে মামাকে বলে – মায়ের চিঠিতে তেমন কিছু নেই মামা ।মূল বক্তব্য হলো, সংসারের বোঝা হয়ে থাকতে নারাজ, তাই চলে গেছেন। অকারণ তাঁকে যেন খোঁজাখুঁজি করা না হয়। …এই জাতীয় সব বক্তব্য।
–- মানুষ মারা গেলে সে যে আর কখনোই ফিরে আসবে না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু বেঁচে আছে অথচ তার কোন সংবাদ বা সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না; ব্যাপারটা খুবই বেদনাদায়ক! নানাভাবে অনুসন্ধান করার চেষ্টা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই খোকা, ছটফট করারও কিছু নেই।
সান্ত্বনার ছলে মেজো মামা কথাগুলো আউড়ে চলেন। তারপর শেখরকে উদ্দেশ্য করে বলেন – বাড়িতে লোকজন তো আছে। দু’একজন আসতেও পারে।তোর মামিকে গোটা-দুই ব্যাগ দিতে বলতো, বাজার থেকে একবার ঘুরে আসি।
মেজো মামা বরাবরই বেশ করিতকর্মা মানুষ, যে বৈশিষ্ট্যের জন্য শেখর মামাকে খুবই পছন্দ করে। সে নিজে রান্নাঘর থেকে দুটো ব্যাগ নিয়ে এসে কিছু টাকা সমেত মামার হাতে ধরিয়ে দিল।
সন্ধ্যার পর মামা-মামিরা সবাই বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। সারা দিনের শেষে দাদাকে একান্তে পেল বাসন্তী। জানতে চাইল মায়ের কথা।
–- দাদা, মা তোমাকে কোনদিন কিছু জানিয়েছিল?
দু’মিনিট চুপ থেকে শেখর বলল – ন! বাড়ি ত্যাগ করে যাওয়ার মতো কোন কারণ আমাকে জানায়নি; তবে মায়ের চিঠি পড়ে কারণটা জানতে পারলাম।
–- চিঠিতে নিশ্চয়ই বৌদির প্রসঙ্গ আছে? আর তার বাবা মায়ের ভূমিকার কথা?
–- তুই এতকিছু জেনেও আমার কাছে তো কিছু বলিস নি? মা এবং গার্গীর পারস্পরিক সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না তা প্রথম থেকেই জানতাম। কিন্তু এত বছর পর সেই সম্পর্কের মধ্যে গোপনে এতটা অবনতি ঘটেছে এবং তাতে আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ইন্ধন যুগিয়ে আসছেন,আদৌ বুঝতে পারিনি। সামনা-সামনি গার্গীর ব্যবহারে কোন অসঙ্গতি লক্ষ্য করিনি আর মা আমাকে কোনদিন কিছু বিন্দুমাত্র জানাননি! আক্ষেপ ফুটে ওঠে শেখরের গলায়। নিজেকে অপরাধী মনে করে সে।। দাদার কথার প্রেক্ষিতে বাসন্তী জানায় – গত মাসে মা আমাদের ওখানে গিয়ে খুব কান্নাকাটি করেছিল; তবে কোন কথা তোমাকে জানাতে নিষেধ করে।
পাখি উড়ে যাওয়ার পর খাঁচার সুরক্ষা নিয়ে ভাবনা করে মানুষ। মায়ের অভাব অভিযোগ সম্পর্কে উদাসীন এবং এড়িয়ে থাকার অপরাধবোধ এখন কুরে কুরে খাচ্ছে শেখরকে। সেই দুঃখ-যন্ত্রণাটা সহোদরা বাসন্তীর সঙ্গে শেয়ার করতে পারায় অনেকটা স্বস্তিবোধ হলো তার। ভিতরে ভিতরে এতটা ধ্বস নিয়ে সংসারটা যে দাঁড়িয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবতে গিয়ে শেখর সঠিক কোন দিশা খুঁজে পায় না। এখন সমস্ত কিছুর মধ্যে ধৈর্য ধারণ করাটাই যে মূল চাবিকাঠি তা কিন্তু শেখর গভীরভাবে উপলব্ধি করত পারছে। কান্না থামছে না বাসন্তীর। শেখর তাকে বোঝাবার চেষ্টা করে, সান্ত্বনা দেয়। মা যে বেঁচে আছেন সে কথা বলে নানা উপায়ে মায়ের সন্ধান করার প্রতিশ্রুতি দেয় সে। ভাই-বোনের কথার মাঝে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে দেবাংশু। বাসন্তী উঠে গিয়ে সমাদরে তাকে মায়ের ঘরে নিয়ে যায়; ছেলে-মেয়ের খোঁজখবর নিতে শেখরও উঠে পড়ে।
প্রবোধ কুমার মৃধা | Probodh Kumar Mridha
Why 15th August chosen as Independence Day? | Probodh Kumar Mridha
Goddess Dakshina Chandi 2023 | Barid Baran Gupta | Best Article
Best Bangla Golpo Reading 2023 | তৃতীয় পক্ষ | Nasir Waden
Galpo Holeo Sotyi | কোনো এক গ্রাম্য বধূ | Debraj Krishnananda Bhattacharya | Best 2023
New Bengali Famous Story 2023 | Top Online Bangla Golpo Reading | New Online Bangla Golpo Reading | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep New Bengali Famous Story | Shabdodweep Writer | Best Bangla Galpo Online pdf | World’s Famous Online Bangla Golpo Reading | Pdf New Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story Reading | Full Best Bangla Galpo Online | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Online Bangla Golpo Reading | Best Online Bangla Golpo Reading Ebook | Full Online Bangla Golpo Reading | New Live Online Bangla Golpo Reading | New Bengali Web Story – Episode | Golpo Dot Com Series | Horror Web Story in Bengali Video | Horror Live Online Bangla Golpo Reading | New Bengali Web Story Audio | New Web Story in Bengali Video | New Bengali Famous Story Netflix | Audio New Bengali Famous Story | Video Best Bangla Galpo Online | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Trending New Bengali Famous Story | Recent Online Bangla Golpo Reading | Top Live Bengali Story | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2023 | Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Bengali Famous Story | Best Online Bangla Golpo Reading in pdf | New Bengali Famous Story Download | Best Bangla Galpo Online mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | New Bengali Famous Story mp4 | Online Bangla Golpo Reading Library | Online Bangla Golpo Reading Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Online Bangla Golpo Reading – audio | Best Bangla Galpo Online – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Collection Bangla Golpo Online Reading