Bengali Poetry Analysis | Best Shabdodweep Bangla Kobita

Sharing Is Caring:

Bengali Poetry Analysis – Rajkumar Byadh

আত্মচেতনা – রাজকুমার ব্যাধ

মানুষই যখন দেবতা
মানুষই যখন দানব
মানুষের পৃথিবীতে
দেবতা ও দানবে সংগ্রাম
অর্থাৎ মানুষে মানুষে রক্তক্ষয়!

উৎসব মানুষের
মৃত্যুর মিছিল মানুষের
অগাধ প্রেম মানুষের।

বজ্রের দেবতা ব’লে চিনেছি যাকে
এ সবই মানুষের বোধশক্তির ভাষা
আমাদের বোধের মধ্যে জমে থাকে
অলীক কথা অলীক কল্পনা
যে গুছিয়ে লিখতে বা বলতে পারে
সেই জন হয়ে যায় মহাপন্ডিত বা মহান দার্শনিক।

মানুষই মানুষের পুজো করে
মানুষই মানুষের সম্মান রক্ষা করে
মানুষই মানুষের পাশে থাকা
এ হল বিবেক দেবতার মহিমা অপার।

শ্রদ্ধা ভক্তি প্রণাম ধৈর্য শান্ত কান্তি
এবং প্রিয় ভালোবাসা
আদর চুম্বন অপরূপাচরণ
আছে প্রতিটি মানুষের মধ্যে
অধিক কম কিংবা অধিক বেশি।

মানুষই মানুষকে আজীবন অমর করে রাখে
যদি তুমি মানুষকে না ভালোবাসো
ভালোবাসা তোমার কাছে মৃত
যদি দেবতাকে পুজো না দাও
দেবতা তোমার কাছে অমৃত
অর্থাৎ তোমার কাছে মৃত।

কেউ আপন হোক বা না হোক – রাজকুমার ব্যাধ

বিছানায় শুয়ে তোমাকে বলা যায়
এই বৃষ্টির রাতে আজকের মতো
তেমনি বুক ঠেলে উঠুক আনন্দ অনেকক্ষণ

এর থেকে বেশি বলবার কিছু নেই যে।
ক্লান্ত জীবন
এখন আর আগের মতো
কিছু ভাববার সময় নেই;
অবশ্য তোমার স্পর্শের সুন্দর স্বাক্ষরে
উৎসুক উত্তপ্ত।

চুম্বন! চুম্বন!
কী অপরূপ রসযুক্ত ঠোঁট
প্রকৃতির সৃজন।
ভেবে দেখি
এখনও
ভাববার বিষয় এখানেই শেষ নেই;
স্পর্শ যেন সুখ
অদৃশ্য আবেগ
সন্ধি চিনিয়ে দেয়
চিহ্নের ভিতরে চিহ্ন
জায়গা খুঁজে নেয় এভাবেই –

চার দেওয়ালের মাঝে তাকিয়ে দেখি
সেই-ই তো আমি একা – একা আমি
আমার আকাশে থাকা জ’মে থাকা মেঘ বুঝি;
এই বৃষ্টিতে রূপান্তরিত নিতান্ত কাতরতার হাহাকার –
কখনও কেউ কোনদিন জিজ্ঞেস করেনি
‘তুমি কি ভালোবাসো?’
শব্দরা যখন ম্লান হয়ে আসে
কোনো শ্রীমুখের কথা
ভাবছি, নিজের মতো ক’রে
তুলনা হয় না তোমার।

রক্ত মাংসে গড়া মানুষ তো
মন বেঁচে থাকলেই কথা ভাববেই
কেউ আপন হোক বা না হোক
ভাবনার কাছে আপন তুমি
কী মধুর – কী সুন্দর
এই কথা আমার থেকে
কে বা অত দরদ দিয়ে ভাববে – বুঝবে –

তবুও ভাবি আমি একা?
না । আমি একা নই
ভাবনায় আছ তুমি মিশে
একা নই আমি তাই।
যতক্ষণ মন বেঁচে থাকবে
জানব তুমি কাছে-পাশেই আছ ।

মানুষের কথা – রাজকুমার ব্যাধ

জল থেকেই উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের জন্ম
মানুষ প্রথমে কোন্ ভাষায় কথা বলত কেউ জানে না
তখন কোথায় পুরাণ কোরআন বাইবেল
মানুষ তখনও সভ্য হতে পারেনি
কেউ কেউ বাঘ ভেড়ার ছাল পোষাক হিসাবে ব্যবহার করত
কেউ কেউ নগ্ন অবস্থায় থাকত
ঘর কীভাবে বানাতে হয় এ বোধগম্যও ছিল না
হয়তো বা পক্ষীদের দেখে এক দল মানুষ
প্রথম বনের লতা পাতা দিয়ে ঘর বানাতে শিখল
তখনও মানুষের বাক্য স্পষ্ট নয়
যখন মানুষ কথা বলতে শিখল
চেতনার বিকাশ ঘটতে লাগল
মানুষ পোড়া মাংস খাওয়ার আগে
কাঁচা মাংসই খেত
মানুষ বন্যকুটির বানাতে শিখলেও
রান্না করে খেতে শিখিনি
কীভাবে রান্না করে খেতে হয় এটাই তো জানত না
যারা বন্যকুটির বানাতে পারত না
তারা গাছতলায় থাকত
পুরুষগুলো শিকারে গেলে
নারীগুলো কচি কাঁচা
শিশুদের নিয়ে বাসায় থাকত
মাটির পাত্র প্রথমে বালক বালিকা শুরু করে খেলাচ্ছলে
টেরা বাঁকা যেন তেন
কোনো কোনো মহিলারা
বালক বালিকাদের সঙ্গ দিয়েছে
রোদে পড়ে থাকা বা ছায়াতে পড়ে থাকা
কাঁচা মাটির পাত্র ধীরে ধীরে শুকিয়ে শক্ত হয়
তখনও মানুষ মাটির পাত্রের ব্যবহার জানত না
কে ভগবান কে ঈশ্বর কে গড্ কে আল্লা
এসব কথা মগজে ঢোকেনি অশিক্ষিত সবাই ছিল
দাবানল হলে সকলে প্রাণের ভয়ে পালাত
তখনও মানুষ আগুনের ব্যবহার জানত না
আবার কোনো এক সময় পূর্ব পরিচিত জায়গাতে এলে
তারা তাদের মাটির পাত্র দেখতে পেয়ে খুবই খুশি
তারা বুঝতে পারে দাবানলে পুড়ে শক্ত হয়েছে
অতএব তারা টিপে টিপে দেখতো সহজে ভাঙে না
বর্ষা এলে সেই সব পাত্রে জল জমে থাকত
তৃষিত পাখিরা পাত্রে থাকা জল পান করত
তাই দেখে মহিলারা তাতে করে
জল পান করতে শিখল
তারপর ধীরে ধীরে আগুনের ব্যবহার
আয়ত্ত করে
নারী জাতি সর্ব প্রথম চাষবাস করতে শুরু করে
পুরুষগুলো যখন শিকার করতে যেত
নারীরা বাচ্চাদের নিয়ে গাছতলায় থাকত
তারা দেখতো গাছ থেকে ফল পড়ে
পাখিরাও ফল ঠোঁটে করে নিয়ে যায়
ঠোঁট থেকে পড়ে যায় নরম মাটির ‘পরে তা থেকে তারা দেখত কিছুদিন পরে চারা গাছ বের হয়
বড় হয়
এভাবেই মানুষ কথা চাষাবাদ করতে শিখেছিল
সহসা কোনো এক সময় উচ্চারণ প্রকাশ পায়

একটি বাস্তবিক ছবি – রাজকুমার ব্যাধ

রাজচক্রান্তের উপমা
অনুশাসন
বেকারত্বদের মাড়িয়ে চলা
কূটবচন।

সামনে সংগ্রাম দখলের
আঁধার কথা
গোপন পর্দা ছিঁড়ে যায়
পায় তারা ফিরে ক্ষমতা।

হৃদয়ে স্বস্তি নেই
শাসিয়ে রাখা
প্রমাণ কত টিভিতে
তবু নীরব থাকা।

ভালো না কেউ
রহস্য সব নয় ফাঁকা
পাহাড় প্রমাণ তথ্য
সব থাকলো ঢাকা।

কাদের কথায় ওঠো বসো
খুব হুঁশিয়ার
হায়রে নগদ কিছু পেলে
সব শর্ত ভেঙে চুরমার।

লোভের পায়ে বেড়ি
কে পড়াবে
ডাঙায় বাঘ জলে কুমির
ভয় তো থাকবে।

নিরীহ মানুষ বড়ই ভীতু
এ দেশে যারা রাজ করেছে
তাদেরই বংশ পরম্পরা
আসন ঘিরে বসেছে।

যে ব্যক্তি জনপ্রিয়তা হয়ে ওঠে
বিনা স্বার্থে দশের উপকারে
কৌশলে তার জীবনগতি
থামিয়ে দেয় চাতুরী ক’রে।

অদ্ভুত দুনিয়ার জনতা
একতায় থাকে না
কেউ কারোর কথায়
দরদ রাখে না।

প্রেমাঞ্জলি – রাজকুমার ব্যাধ

চোখ পড়েই যদি, তোমার দিক, বলো
কিইবা করার আছে, হ্যালো –
দিতে পারো অনাবিল আপন আনন্দ ভালোবাসা। আজ
আমাকে বোলো না গোপন সত্তা খুঁজে নাহি পায়; নেই লাজ
সান্নিধ্যে ডাকার মতো খুলে রেখো বুকের আগল। হে জান
ভালোবাসা মনে আছে বলেই চেয়েছে মন আলোর উত্তাপ ঘ্রাণ
পারিব না এ কথা বলিও না। দৃষ্টি আছে, নজর পড়বেই
মনকে মাতিয়ে রাখি রঙিন কোমল স্বভাব অনুভূতিতেই।

আমাদের শরীর পুরোনো হলেও ভালোবাসা টাটকা থাকে
ভুলে থাকি বিষম আঘাত রাখি না মনেও বেদনাকে
মোহন জীবনে। সব ভুলে প্রেমালাপে মুগ্ধ থাকি
ভ্রমরের গীতালিতে আমাদের অতীত ফিরে দেখি।

শহীদদের মতো হৃদয় থাকে স্বচ্ছ
পবিত্র বিনম্র প্রেম নয় কোনো তুচ্ছ
তোমার কাছেই সাথী হে শান্তির বারি আছে
তোমাতে রয় না কথার খেলাপ – শুধু মন প্রেম যাচে।

ভাবের মহিমা – রাজকুমার ব্যাধ

তোমার উপমা তুমি নিজে
নিজেকে চেনার চেষ্টা কর অভিনব
তুমি চির চঞ্চল তাই হয়েছ নিষ্ফল
রবির চন্দ্রলেখা প্রাণ প্রিয় বল্লভ

বিহঙ্গের মধুর কূজনে বিভোল হও
মনের কথা সুধীর হয়ে সমীরণে কও
যে ফুল ফুটেছে আজকের নিঝুম রাতে
মরণ নিকট যমরূপে দাঁড়িয়ে মালি প্রভাতে
নিশ্বাস বিশ্বাস উৎসব উদ্ভাসিত উল্লাস
চির দিনের নয় । অন্তর নীড় কাঁপিয়ে যায় বাতাস
আত্মা এমনই একটি জ্বলন্ত দীপ
দিনেও জ্বলে রাতেও জ্বলে
বৃষ্টিতেও জ্বলে ঝড়েও জ্বলে
তাকে ভিজাতে পারে না কোনো জলে

কল্পকথা ওড়ালে পাখির সমান
এখানেও আছে রাগ অভিমান
গাহিলে প্রাণ ফিরে পাবে সুতান
আজও বিলুপ্ত হয়নি প্রেমের মান

ভাবলে আসবেই ভাবের মহিমা
সেখানেই তো তছনছ হয় বিভেদসীমা

ধিক্কার – রাজকুমার ব্যাধ

গরীবের মেয়ে তুমি রাখবে গরীবের মান
এখন দেখি দিতে চাও নারীর ইজ্জতের দাম
উল্টো পুরাণে স্পর্ধা বাড়ে দিনে দিনে তোমার
অবিচার দেখে হিড়ম্বা পুতনা তারাও মানে হার
মা বলে সম্বোধন মনে ভাবা যারে
নারী চরিত্র হয়ে নারীকেই দেখো তুমি ধিক্কারে
কারো কাছে পিসি কারো কাছে দিদা
কারো কাছে মা কোন্ লালসায় হলে তুমি ফিদা
এ কোন্ পরিবর্তনের ছবি দেখি
খাল কেটে কুমির এনেছি একী
দিন যত যায় বেকারত্ব শুধু বাড়ে
অনুন্নতের ছবি শুধুই নজর কাড়ে
পূর্ব সরকারের উন্নয়ন ঢাকতে পারেনি
আমাদের মাথা পিছু ঋণ কমাতে পারেনি
নিশ্চয়ই দুর্মতি মুখ ক্ষতির কারণ
কবে জাগে শুয়োর গরু খাদক জীবন
তোমাদের মতন আমারও চিন্তা হয় নিশ্চিত
পরিণাম ভালো নয় মানুষ অবাক বিস্মিত

গল্প – রাজকুমার ব্যাধ

কথায় কথায়
কলকাতায় কফি হাউসে
রেখে এসেছি সেই সব স্মৃতিকথা
স্বপ্নগুলো গল্প হয়ে
বয়ে গেছে কাগজ দিকে
আমাদের হারানো দিনের স্মৃতি হয়নি ফিকে
সাহিত্য সমাজ পূর্ণতা সৃষ্টি করে
শব্দফুল কুড়িয়ে কুড়িয়ে
কাগজ হৃদয় শব্দমালায় সেজে ওঠে
শকুন শৃগাল চিরকাল
মাংস খুবলে খুবলে খেতে অভ্যস্ত
সারিবদ্ধ মিছিল দেখতে ভালোই লাগে
আন্দোলনের দিনগুলোর কথা
তোমারা শোনো ভালো লাগবে
পুরোনো কথা নতুন হয়ে এলে
ভাবি, হারিয়ে যায়নি কিছুই

তারপর – রাজকুমার ব্যাধ

মানুষে ভেবেছিল তার মুখ্যমন্ত্রী পদ দরকার
সে আনবে পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়ন
এই-ই ভেবে আনন্দ ভাবে এনেছিল তাকে
কে জানত তার মনে ছিল জিলিপির প্যাচ
ওই কোন্ জন শোনাল ‘ওটা তো, ধড়িবাজ কি এমন?’

যা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সব মেনে নেওয়া যায় না
খাম খেয়ালি উপদেশ
প্রজন্মদের ভবিষ্যৎ ধূলিসাৎ
জানি না বন্ধুরা কী আশায় মনোনীত কর তাকে
ওই কোন্ জনের আত্মা বলে উঠল
‘হতচ্ছাড়াকে কি সরাবে না এখনও ?’

শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী
সবার অলক্ষ্যে ক্রন্দন করে
তাদের চোখের জলে বুঝি
ফুলের বাগান ভিজিয়ে নেয়
রাজনীতির ইতিহাসে সে এক
অভিশপ্ত মুখ্যমন্ত্রী
ওই কোন্ জন চিৎকার করে উঠল
‘ওকে তাড়াও নইলে পিছিয়ে পড়বে!’

তোমারা যারা বুড়ো হয়ে গেলে
শ্রম দিয়ে পেলে না কিছুই
ছাইবনে ঢেলেছ ঘি
পূর্বজনেরাই ভালো ছিল
ওই কোন্ জন হাঁকল
‘তোমাদের প্রজন্ম শেষ
আগত প্রজন্মদের বাঁচাও
বিশ্বাসঘাতকিনীর কবল থেকে।’

খুনি – রাজকুমার ব্যাধ

মানুষের খুনি মানুষ
আর্তনাদ গভীর
অস্ত্রের ঝন্ ঝন্ শব্দ। চোখ মেলে তাকালে
চেনা মুখের অট্টহাসি
দেখা যায় পর্দাটা সরালে
খুনির নজরে পড়লে টুঁটি ধরে চেপে।

সাক্ষী থাকে চুপ; সাক্ষী দেবার থেকে
অতি প্রিয় জীবন তার।

বাতাসে ভাসে রক্তের বিদঘুটে গন্ধ
খুনি ভদ্র সেজে এসে বলল, এ অনাচার সহ্য হয় না
আইনের বাঁকে অপরাধী থাকে ফাঁকে
যদি আইন থাকত আইনের পথে
খুনিরা সাজা ঠিকই পেত
আইনের নামাবলি কক্ষনো ভরাডুবি হয়ে থাকত না।

চতুর্দিকে হিংস্রতার দৃশ্যপট
পরিবর্তনে সমস্যার খুঁটিনাটি আমূল পাল্টাতে পারেনি
সিংহাসনের লোভে রানী নিজেই যদি হয় গদ্দার
আর তার ডাকে ছুটে যাওয়া লোকের কাছে
সু-শিক্ষা নেবার থাকে না কিছুই।

এবং এখানে এখন – রাজকুমার ব্যাধ

আমার কবিতা কথার পংক্তিগুলো
আন্দোলনরত
শোষকবাহিনীর বিরুদ্ধে
প্রতিনিয়ত
প্রতিধ্বনি
সাক্ষ্য বহন করে
কবিতা কথার পংক্তিগুলো –

বিষয়
ভেবে দেখার জন্য বোধ কাজ করে
দরদ দিয়ে দেখি
প্রতিনিয়ত কবিতা কথা
মনে হয় পথ দেখায় –

কুটিল
জটিল
থাকে না;
সংগ্রাম ছাড়া
জীবন
বাঁচার সফলতা পায় না
অলীক কল্পকথা
আলোকিত হয় এভাবেই –

প্রকৃতি রুষ্ট – রাজকুমার ব্যাধ

কোথায় গেল
কাল বৈশাখী ঝড় বৃষ্টি?
ভাবছি কতই কথা
একি অনাসৃষ্টি !
আবাদের জমি চারিদিকে শুকনো –
ওই সাদা বক আসে যায় দেখি রুগ্ন!
খালে বিলে নেই জল টলটল –
বুনোহাঁস সাগরে বুঝি করে কোলাহল;
মানুষের অনাচারে প্রকৃতি রুষ্ট;
প্রকৃতির মন নেই তাই তুষ্ট।
সোনার বাংলা থেকে
হারিয়ে গেছে বন্যা,
কোথায় গেল বৃষ্টি যে
সে মেঘের প্রিয় কন্যা;
বৈশাখ গেল জ্যৈষ্ঠ গেল
এলো আষাঢ় –
হায়রে বৃষ্টি নেইকো দেখা
শুধু তোমার।

ওগো পদ্ম তাকাও এবার
দেখি রূপ ও ভঙ্গি তোমার
প্রেমিক ছাড়া মধু সঞ্চয়
বিষয় এমন বড়ই লজ্জিত

যাওয়া আসা

অনুভূতি – রাজকুমার ব্যাধ

একলা আমি বসে আছি
প্রিয় নদীর পারে,
মনের কথা মনে ভাবি
তোমার অভিসারে।
তোমার
গুণের কথা শুনেছি,
রূপ
না দেখে ভালোবেসেছি,
তোমায় আপন মনে করি –
কল্পছবি আঁকি বারেবারে।

জীবনের পরম বন্ধু তুমি
একবার আসিও কাছে –
সকল কথা বলার মাঝে
একটি কথা বলার আছে।
সকল অপরাধ
ক্ষমিয়ো প্রভু,
লজ্জা আমায় আর
দিও না কভু;
পরিহাসে ভরা জীবন নিয়ে –
কেমনে দাঁড়াবো তোমার দ্বারে।

আমাদের কোন কথা শেষ নেই – রাজকুমার ব্যাধ

তোমার কথা মনের
বুঝি শেষ হয় না
তোমার দৃষ্টি থেকে স্মৃতিচিহ্ন
হারিয়ে কোথাও যায় না
তোমার বুকের আকর্ষণ থেকে
ঢেউ দেশান্তরে যায় না
তোমার পথে চলা পায়ে পায়ে
স্বপ্ন বীজ ফুরিয়ে যায় না।

আমরা চোখ মেললে
ফুল বাতাসের শরীরে
সুঘ্রাণ মাখিয়ে দেয়
আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার কাছে
জটিল কোন রহস্য
বাস্তবিক থাকে না ঢাকা ।

আমাদের আকাঙ্ক্ষিত আশা
প্রতিটি প্রশ্বাসে বেঁচে থাকে
আমাদের দুর্লভ জীবনে
তুমি নিশ্চয়ই টের পাও
আমাদের স্বপ্নকে
সাজিয়ে দিচ্ছে সময়।

আচরণ – রাজকুমার ব্যাধ

যদি তার জন্যে বাঁচার রসদ হারিয়ে যায়
তার মসনদে থাকা না থাকা দুই-ই সমান
ক্ষমতার বলে আরও কিছুদিন
টিকে থাকা সম্ভব তার
সেই থাকার কোনো গুরুত্ব হয় না
যে রাজ্যে সন্তান সম প্রজার মুখে হাসি নেই
নিজের সুখে আত্মসুখী হবেই সে
বিড়াল ইঁদুর দেখে নিষ্ঠাবান হয়েছে কবে
যার মনের কোণে কুটিল বিষ
কিংবা মিছরি ছুরি
সরলতা কখনোই সাদামাটা নয় তার

বোকার হদ্দগুলো মানুষ চিনলো না এখনও
কেমন সুখে আছো বন্ধুরা
ঘরে ঘরে ডিগ্রিধারী কর্মবিহীনে
মানসিক রোগের শিকার হয় – হয় বুঝি
ওই কোন্ জন গেয়ে চলে সঙ্গীত
জটিল কুটিল দেব ও দেবীর শাসনে
আচরণ সেজে উঠেছে অশোভনে

সঙ্গী যৌবন – রাজকুমার ব্যাধ

দেখাও তুমি স্বপ্নের ছবি নির্জন নির্জনতার ;
দেহগিরি গুহার ভেতরে আলোর স্বাদ চমৎকার।

স্বচ্ছতা ছুটছে ধবল অমল যৌবন দুর্বার গতিতে –
দেখাও তুমি স্বপ্নের ছবি শোভন শোভিতে।

আনন্দ আরো ব্যস্ত ভাব অনিন্দ্যসুন্দর বোধের আভায়
টের পায় ! ওগো কৌতূহল বাড়ে মধ্যরাতের মায়ায় ।

পুষ্ট ঠোঁটের চুম্বনে উঠুক জেগে যুদ্ধক্ষেত্র নতুন আঙ্গিকে,
ধূলায় গড়িয়ে পড়েও ভালো লাগার রঙ তো হয় না ফিকে!

স্বপ্নের কাঁধে ভর দিয়ে গাও গান সুন্দরে –
পড়েছি ধরা, ভুলিয়ে রাখো যে তোমার নজরে।

চুলের ঝালরে জড়িয়ে রেখেছ মনের আরাম –
মাখামাখি মনোভাব সময়ের কাছে থাকে বদনাম।

চির-জনমের সুখ সঁপে দেয় মন মিলন-বেলায় ,
ব্যক্ত করে না জীবন তখন বেদনার কোনো কথাই!

তোমার বুকের অঙ্গন জুড়ে খেলা করে জন্মের স্বাদ;
তুমিও সঁপেছ নিজেকে তাই করোনি কোনো প্রতিবাদ।

যত চাওয়া তত পাওয়া তবু কি হয় – আছে তার শেষ –
দেখালে আবেগ আদরে মোহন রূপের রাজ্য অশেষ।

এখান থেকে জন্ম নেয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব কত শিব
এ হেন পরম ভাবনায় জুড়িয়ে গেল প্রাণ অতীব।

প্রকৃত ভালোবাসার মাঝে জেগে থাকে অনন্ত সত্য –
ভালোবাসাহীন ভাবনায় ভাষায় থাকে না জৌলুষতম অর্থ ।

প্রকৃতি বড়ই অদ্ভুত সে শুধু নিজেরই শাসনে বদলায়;
ধীরে ধীরে নদী এমনি করে এসে মিশে যায় মোহনায়।

বাস্তবিক – রাজকুমার ব্যাধ

যারা চিহ্নিত নয় তারা স্থির
যারা চিন্তায় ব্যাকুল
ফিরে যাওয়া মানুষকে
ফিরিয়ে আনতে চায় জন দরদী মন

যারা সব গিয়েছে চলে
তাদেরকে লোভ দেখিয়ে
ফিরানো যায় না
আর যাদের ভাঁড়ারে টান পড়ে
অচেনা মুখ চেনা হয়ে আসে
জন সাধারণের মগজ ধোলায়ের জন্য

কিছু সংখ্যক মানুষের মন
অনুভূতিতে নাড়া দেয়
নিজেদের কারো দুঃখ নিজেদের মধ্যেই
সমাধান করা চমৎকার
ভাঙা গড়ার খেলায় মত্ত
হাতে গোণা কিছু লোক
এলাকা ভিত্তিক
সুবিধাবাদীরা সুবিধাগুলো
লুঠ করেই নেয়
যেখানেই যাও নিশ্চয়তা
পাওয়া দারুণ সংশয়ে থাকে

এভাবে কি জীবন কাটবে – রাজকুমার ব্যাধ

সারাদিন মন ভ’রে অন্যদিকে অনিবার্য –
শ্রেণীবদ্ধভাব খুঁটিনাটি চিন্তাতে বিষয় বিন্যস্ত হয়ে;
এভাবে কী জীবন কাটবে? এভাবে কী কাটবে?

ইচ্ছার শব্দ মর্ম-ছেঁড়া এই সব রীতিনীতি
ক্রমশঃ জটিল কুটিল দেখি
সরলতা নির্ণয় করা
বোঝা যায় – বড় দায় – তারপর –

রাত্রির গায়ে হাত বুলিয়ে দেখি –
বৃষ্টিতে নদী লুকিয়ে ভিজছে বেশ
গদ্যের ভাষা তখনো অনুজ্জ্বল;

বাতাস গঙ্গা স্নান ক’রে পাড়া-গাঁয়ে আসে , আর –
শব্দ অনিন্দ্যসুন্দর হয়ে বসে আছে বোধকক্ষে ।

এখনও দেখিনি যাকে
কেউ না জানুক মন জানে
চোখ খোঁজে তাকে –

প্রেমের আলো জ্বেলে দেখেছি তোমাকে
অন্ধকার জানে রাত্রির জঠরে
জেগে থাকে সব ইচ্ছা।

যত্রতত্র – রাজকুমার ব্যাধ

‘মাছ না পেয়ে ছিপে কামড়’
আবোল তাবোল বলতে বলতে হয়ে যাচ্ছ বকাটে
আজও বিশাল – রকম কর ভুল
পরিবার তন্ত্র করার আশায়
উন্মুখ হয়ে তোমার মন!

চোখ থেকে যে হিংস্র দৃষ্টি আনলে বয়ে; এবং
মনের গায়ে মাখিয়ে রাখলে জ্বালা –
সত্যি তুমি চক্ষুশূল হতে না চাও
প্রগতিশীল চিন্তার আশ্রয়ে থাকো দিবস – যামী।

তোমাকে অফুরন্ত আমিত্বে পেয়েছে
অনভিজ্ঞের মতো জটলা সৃষ্টি করে
তুমিই অস্বস্তির চরম সীমায়
সর্বনাশার আমিত্ব বোধ তোমাকে
দূরত্ব করেছে বুঝতেই পারনি তুমি।

রবীন্দ্রনাথ! রবীন্দ্রনাথ! – রাজকুমার ব্যাধ

রবীন্দ্রনাথের রেখে যাওয়া সম্পদ
আমি সব পড়িনি।
তবুও রবীন্দ্রনাথ
আমার হৃদয় জুড়ে
ভাবের ঘরে বসে যেন সে
বুঝি ; আমাকে করিনি অনাথ।
‘গীতাঞ্জলি’ পড়েছি, পড়ি এখনও
বুঝেছি কতটুকুই বা
‘চোখের বালি’ পড়ার সুযোগ পেয়েছি একবার;
‘ছুটি’ গল্পটা খুবই ভাল লাগে
‘অমল ও দইওয়ালা’ পড়েছি অনেকবার।
‘জনগণমন – অধিনায়ক জয় হে’
গলা ছেড়ে বলে উঠি
রবীন্দ্রনাথ! রবীন্দ্রনাথ!
যখনই মন হয়েছে উতলা
তোমার গান শ্রবণ করি
তোমার গানের কথা
অসাধারণ অসাধারণ
তুমি রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকবে
আরও হাজার বছর
তোমার দুর্লভ সঙ্গীত
সৃষ্টির জন্যে।

সাধারণ সনেট – রাজকুমার ব্যাধ

হৃদয় শোভিতে
ভ্রমে যায় কত ম্লান;
মধুর গীতে
খুশি ভরা মুগ্ধ প্রাণ;
নেই কোনো অভিমান।

নেই শব্দ স্তব্ধ
নেই কোনো পরিহাস
বোধোদয় শব্দ
উদ্দাম কি সাবাস;
চিন্তিত মনোদাস।

ফাগুন হাওয়া –
চুপি চুপি আসে ওই;
পথ যে চাওয়া
প্রাণকথা কাকে কই;
ভাবিয়া নাকাল হই।

আনন্দের দিনে
অনুতাপ থাকি ভুলে;
নব কথা মনে
স্বপ্ন সাজানো যে ফুলে;
দেবতা বুঝি ব্যাকুলে।

চাঁদের সে আলো
কুয়াশায় যাচ্ছে যে ভিজে;
মন তো ভাবলো
অদ্ভুত ! প্রকৃতি যে
কথা বোধে গাঁথি যে।

কলতানে নদী
বয়ে চলে সাগরে –
রূপ নিরবধি
নদীর প্রেম অন্তরে ;
মেশে সাগর শরীরে ।

ফিরে যে চাওয়া
ভেঙে যায় বারেবার,
জলের ছায়া
বাতাসে চমৎকার
দেখি কম্পিত বাহার।

বাবলার ডালে

বুড়ো পেচক বসিয়া;
রাত পোহালে
ধূসর পক্ষ রাখিয়া;
বাসায় গেল ফিরিয়া।

ধর্মষণ্ড চলে
দেখে বুঝে চলো বেশ
থাকবে কুশলে; –
মনে রেখো আবেশ;
এভাবেই বেলা শেষ।

১০

ভাবিও শোভনে
দোষ মনে; রক্তে নয়; –
মানব জীবনে
দোষী সাধু হয়
চতুরম্ ধোঁকাময়!

১১

ব্যবহার ভদ্র
ভিতরে অশুভ শক্তি;
আছে কত ছিদ্র
দেখাবে কত যে যুক্তি;
সবি নয় অযুক্তি।

ছায়া – রাজকুমার ব্যাধ

ছায়া থামাতে পারব না কোনদিন
মনের গহনে আক্ষেপ কত
অরূপাশা হাঁটিয়ে নিয়ে বেড়ায়
শুধু চুপ থাকতে দেয় না চিন্তা

দুঃখ জীবনে আসে যায়
কতই স্বপ্নগাছ শুকিয়ে যায় ধীরে
একলা একা কাতর অনুভব
মেঘপাহাড় সরিয়ে ম্লান চন্দ্রিমা!

আঘাত পেয়েও ভালবাসা
আবেগমাখা আশা উচ্চ
মগজে কিলবিল পোকার নাচনে
অরূপকথা চমক দিচ্ছে কেবল।

নতুন কোনও স্বপ্নের সাংকেতিক কথায়
প্রিয়মন গেয়েছে ভাল লাগা সংগীত।

আগে যৌবন পরে ভাগবত গীতা – রাজকুমার ব্যাধ

আগে যৌবন পরে ভাগবত গীতা
যে শক্তি এসেছে যৌবনে –
যদিও বোধশব্দ বড়ই গভীর
থাকো সজাগ কেবল কথ্যবাঁধনে।

সময়ের গতি বাতাসের গতি
আর মনের গতি নিক্তির কাঁটার মত;
সকল ধর্মের সারমর্ম এখানেই
বাক্য সরল ব্যাখ্যার নেই অন্ত।

সে ধনের মুখের বাণী এসেছিল যৌবনে
যৌবন ব্যতীত ধর্ম কর্ম অসম্পূর্ণ –
যৌবনে সৃজন – সৃজনই যদি না থাকে
ভাগবত গীতা দেখে যাবে যে শূন্য।

যৌবনেই ধ্বংস আবার যৌবনেই জয় নিশ্চিত
আগে তুমি সৎ হও হবেই তুমি সু-শোভিত।

ক্ষ্যাপা তুমি, সে ক্ষ্যাপা নও – রাজকুমার ব্যাধ

চামড়ার মুখ নিয়ে মুখিয়ে আছে মানুষ
শব্দ রসিয়ে কসিয়ে শব্দোচ্চারিত করে
‘ক্ষ্যাপা তুমি – সে ক্ষ্যাপা নও!’

তাকালে দেখি চোখের জ্যোতি ঠিকরে পড়ে
তোমার অলীক-ভাবনা শরৎমেঘের মত চরে
শান্ত সবুজ সুন্দর দূর্বা-ঘাস-মন
চামড়ার মুখ হলেও সমঝদার চিন্তা করে
‘ক্ষ্যাপা তুমি – সে ক্ষ্যাপা নও!’

বোধের অন্তরালে থাকা কথারা
ভাবনার মাঝে কাদের রূপ দেখি আমি
সমঝদার স্বল্পকথা আওয়াজ দেয়
‘ক্ষ্যাপা তুমি – সে ক্ষ্যাপা নও!’

কবিতা যখন কঠিন – রাজকুমার ব্যাধ

তোমার শরীরের আকর্ষিত রূপ আমাকে নাড়া দেয় না
অথচ তোমার মনের কথা নাড়া দেয় গভীরভাবে;
বলেছ , ভালবাসার স্বাদ বাতাসে উড়ে যাওয়া
তুলোর মত এতটা হাল্কা হলেও বোধের চাপ কঠোর আরও!

অনুভব সহজ, বিবর্ণ সময়ের কথা বর্ণিত করা কঠিন;
ভালবাসি বলতে শুনতে খুবই সহজ
স্নেহের সাথে সম্মানের সাথে ধরে রাখা একটা রচনার মত নয়
প্রিয় কেউ একবার বাতাসের সাথে হারিয়ে গেলে
জীবন-স্রোতের ওঠা-নামা ঢেউগুলো সম্পর্কে
নতুন ক’রে গভীরভাবে পরিচিত হতে শেখায়।

তোমার মত করে বলতে না পারলেও
তোমার মত ক’রে কথা কিঞ্চিৎ মাত্র
ভাবতে পারছি, এই ভাল লাগাটা কেমন
হতে পারে ? আগে কখনও ভাবিনি।

মাতা মেরীর পুত্র যীশু – রাজকুমার ব্যাধ

গীর্জাতে গেলে মন যীশু যীশু
আমি নই মন করে প্রার্থনা –
তৃতীয় নয়নে ভাসে প্রভু যীশু
দূরে সে নেই যদি করি আরাধনা।

তার উপদেশে জীবের হয় কল্যাণ
তাকিয়ে দেখ তার চোখ ও মুখের দিকে;
মাতা মেরীর পুত্র যীশু ক্রুশবিদ্ধ
তার স্নেহসুধা মুখের বাণী হয়নি ফিকে।

হিমের পরশে হৃদয়ে রয়েছে গাঁথা মুগ্ধ প্রেম
আজ খুশির জোয়ারে উদ্বেলিত;
যেখানে যীশু সেটাই যেন বেতলেহেম
মনোগীর্জায় তুমি; – শোভিত – শোভিত।

প্রিয়তম – রাজকুমার ব্যাধ

অনুভবে; তুমি কাছে, তুমি কাছে প্রিয়তম
মন; তাই ভেবেছে – এঁকেছে ছবি;
তুমি দেখ আর চিন্তা কর কথা স্বপ্ন
অনুভূতি দিয়ে স্বপ্নস্নানে টের পাও সবি।

আমি দেখি, এই সুন্দর হবে ফিকে একদিন
মগজ ছুঁয়ে মন ভাবে, পবিত্র রাখ কাকে বারেবার?
যার হাত দু’টি এখনও পরিষ্কার হয়নি
এখুনি ভাবতে পারি না ইচ্ছা শুভ তার।

বুদ্ধি কখনো – রাজকুমার ব্যাধ

বুদ্ধি কখনো বুদ্ধির বিরুদ্ধে কথা বলে না
বুদ্ধি চুপ থাকে, কেন না দোষী মন দোষে থাকে
চোখে দৃষ্টি কমে এলে, দোষী নিজের মুখ দর্পণে
সুন্দর উজ্জ্বল নির্ণয়ে অনুজ্জ্বল নিশ্চিত –
বুদ্ধি চুপ থাকে কেননা দোষীর কাছে বুদ্ধি বিক্রিত
বুদ্ধি চুপ থাকে কেননা বুদ্ধিগাছেরও ভয় থাকে
বুদ্ধিগাছের বিরুদ্ধে সোচ্চার শব্দ করে হবে না কিছুই
কেননা তারা শিক্ষিত যে আর সব অশিক্ষিত
বুদ্ধিগাছের ধৈর্যের কাছে আর সব তুচ্ছ!

চিন্তা হয় – রাজকুমার ব্যাধ

এখন অনেক কথায় কান না দিয়ে এই মন চুপ থাকে
জ্যোৎস্না রাতে বেড়াই হেঁটে কোন্ রজনীগন্ধা ফুলের
ঘ্রাণ বাতাসে মাখায় ?
এখন অনেক কথায় কান না দিয়ে
এই মন চুপ থাকে
অনুভূত জীবন আপ্লুত হয়
ওষ্ঠাধরের ছোঁয়ায় ছোঁয়ায়
মন বিনিময় দেখেছিল প্রকৃতি

কবিতা থাকো কোথায় – রাজকুমার ব্যাধ

কবিতা থাকো কোথায়
বোধের শব্দে বিভোরে রয়েছে কবিতামন
কেবল অনুভব করি ছন্দের ভাঙাগড়া খেলা
‘কবিতা থাকো কোথায়?’

কবিসম্মেলন হয় এখানে প্রতিবছর
এখানে কথার পাখনা
তিতলির মুগ্ধ ডানার মতো মেলে
অনিন্দ্যসুন্দর অনুভূতি অনন্যোপায়
বোধের সিঁড়ি ভেঙে
‘কবিতা থাকো কোথায়?’

চিন্তাস্রোত মগজে মোহন
শব্দকোষের মাঝে পংক্তি খুঁজি আমি
অকস্মাৎ অনুভব করি ছন্দ ভাঙাগড়ার খেলা
‘কবিতা থাকো কোথায়?’

সৃজন অভিনব – রাজকুমার ব্যাধ

নিবিড় বিজনে মন মৌন ছিল একা
রোদেরা তীক্ষ্ণ ; ক্লান্তদুপুরে দেবদারু-বনে বসন্তে ,
পাতা ঝরা গাছে থাকা পাখিদের ছায়াতে স্বপ্ন ঢাকা
ঘুমঘোরে চোখ তার স্বপ্ন ঠিকই পারে চিনতে।

অনুভব সে করে পাখিগাছের ছায়াতে একাকী
অরূপকথা কত দিচ্ছে চমক ভাবের ঘরে
পাথরিয়া পাহাড়ের অশ্রু ওই বুঝি –
তাই তো আজও ঝর্ণা হয়ে ঝরে।

ভাবুকের নীরবতা নয়কো লজ্জানত
নীরবতা বয়ে আনে দিগন্তময় অভিনব সৃজন;
সূক্ষ্ম চিন্তনে মুগ্ধে মুক্তধারা সুনিশ্চিত
পথ দেখায় মগজ-মধ্যে কেউ আছে একজন।

জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত – রাজকুমার ব্যাধ

আমাকে তোরা এনেছিস হারিয়ে দেওয়া মুখের কথা নয়।

যে – সাদা দাঁত বরফের থেকেও কঠিন
হাসিটা মিছরি ছুরির থেকেও নিদয় আরো;
তোমাকে তার ছত্র ছায়াতে থাকতে হবে
এ পরিণতি দীর্ঘস্থায়ী নয়,
কথার ফাঁকে থেকে জাবর চিরদিন কাটে না মন।
প্রাপকের যোগ্যতা বঞ্চিত করে
মাড়িয়ে মাড়িয়ে তাদেরকে পিষে
ধূলার সাথে পারো না মিশিয়ে দিতে।

একঘেয়ে কথা, একঘেয়ে আচরণ,
অন্ধকারময় অনুভূত এক ভূতুরে ভাবমূর্তি জেনো
পথিক তুমি যাকে দয়ালু ভাব
আসলে সে প্রতারক
সে নিজের আত্মীয় স্বজনদের আখের গুছিয়ে দিতে ব্যস্ত!
তার কাছে স্নেহ মমতার আলো ছায়া চাওয়া অনর্থক
রাজনীতি ঘুঘুর বাসাতে পরিণত
আঁশগন্ধে পরিণত হলে
ঝাড়ু মারার প্রয়োজন হয়ে আসে।

ভ্যাপসা গুমোট গরম তাড়াতে নরম সুন্দর বাতাস আসে
গণদেবতা জনসমুদ্র হয়ে ভাসিয়ে দেয় ঘুঘুর বাসা
এ পরিণতির কারণ
আত্মাহমিকা চরম পর্যায়
তাদের অজান্তেই অন্ধকারবাসা
আলোহারা হয়ে জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত
সংবাদ হয়ে বেড়িয়ে এলেও
তারা ভাবে সুখ্যাতি প্রচারিত।

মৌনতা যাচে – রাজকুমার ব্যাধ

শূন্য মনে কথা ছিল অনেক
বৃষ্টি জলে, নজরে কেউ কোথা নেই;
কিশমিশের মতন ভালোবাসা জড়িয় আসে
তার অনুভব ভরে থাকে কিশমিশেই।

স্বাদ সে স্বপ্নে একাকী প্রার্থনাগাছ
শব্দের বর্ণনায় শুয়ে আছে
ক্ষত জীবনের ভিতরে শূন্য মন তার
আরো গভীর মৌনতা যাচে।

অদ্ভুত! অদ্ভুত! – রাজকুমার ব্যাধ

সাদা পোষাক পড়া আদর্শবাদীর অন্তরালে থাকা মন
সাদা পোষাক পড়া আদর্শবাদীর অন্তরালে থাকা মনে বিষ
মনের বিষের গভীরতা
সাদা দাঁতের হাসি দেখে কখনও মাপা যায় না

হনুমান করজোড়ে জানিয়ে যাবে প্রণাম
দরিদ্র মানুষ আশায় থেকে ক্লান্ত
দরিদ্র মানুষ ছলনা জানে না

দরিদ্র মানুষের পরাজয় এখানেই

বকধার্মিকের ফাঁদ এড়াবে বল কেমন করে

দুর্দিন এল বলে – রাজকুমার ব্যাধ

শান্তির ঘরে আবার আতঙ্ক আসবে ফিরে
নতুন ক’রে জন্ম নেবে নতুন নতুন ডাকাত
ডাকাত হবে শিক্ষিত যে কতজন
বাপের হোটেল বন্ধ হবে যখন

পরের মেয়ে পড়লে কাঁধে
একটি দু’টি বাচ্চা হলে
অর্থ অত পাবে কোথায়
বাঁচতে হলে আসবে ফিরে
নতুন ক’রে চুরি ডাকাতি আরও কত কী

তোমারা যারা ব্যাঙ্কে রাখো টাকা ভরে
দেখবে তখন প্রাণের ভয়ে
তাদের জন্যে দুই চার লাখ টাকা
ঘরে মজুত ক’রে রাখতে তবে হবেই
ভয় পেয়ো না আসছে এমন দিন

আবার শুয়ে শুয়ে শুনতে পাবে
গভীর রাতে বোমার আওয়াজ
পড়ল ডাকাত কান্না কিসের
পেটের দায়ে করছে ওরা

ভদ্রগুলো করছে চুরি নয়কো পেটের দায়ে
বেকারগুলো করবে চুরি পেটের দায়েই তো
চেয়ে যখন পাবে না
বেচারার দল করবে তখন কী
একটা কিছু করে বাঁচতে তাদের হবেই তো

এখন মানুষ নয়কো অত বোকা
যার বাড়িতে পড়বে ডাকাত
হৈ হুঙ্কার শব্দ দেবে মানুষেই
কেউ যাবে না ছুটে
আগের মতন ডাকাত তাড়াতে
বদলে গেছে সেদিন এদিন কতই।

আমরা যারা বেঁচে আছি – রাজকুমার ব্যাধ

এখনও বেঁচে আছি বলেই
চায়ের দোকানে গল্পে সময় অনেক কাটিয়ে দিই
বাড়ি ফেরার পথে সাধ্যমত থলিতে বাজার
সমস্ত ঝঞ্ঝাট এড়িয়ে প্রাত্যহিক দিন যাপন
মূলতঃ বেঁচে আছি বলেই শব্দরা মগজে কিলবিল
বোধের কোণে চাপা থাকা শব্দের উঁকি
সহজ কথায় জটিল জিজ্ঞাসা চিহ্ন শব্দেরই
হে বন্ধু তুমি বেঁচে থাকার জন্য কার কাছে ঋণী থাকতে চাও
মগজাস্ত্রে শান দিয়ে বেড়িয়ে আসে উত্তর এক
সীমান্তে জেগে থাকা আমাদের জওয়ানদের কাছে
শত্রুদের বুলেটের কাছে মাথা নত করতে শিখিনি
সীমান্তে জীবন উৎসর্গ হয় আজও
বেঁচে আছি বলেই এখানেই আমার ভাবনার অস্তিত্ব

অনিন্দ্যসুন্দর – রাজকুমার ব্যাধ

চলে আসে মেঘ ও বিদ্যুতের চমক
রাতের থমথমে পরিবেশ
তার মাঝে মা ফুলগাছেরা ফুল ফোটায়
জোনাক-জোনাকিরা আঁধারে
আলোর চমক সাজায়
বৃষ্টির পায়ে ঘুঙুরের শব্দ যেন।

বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে
ঝিঁঝিঁদের একটানা কর্কশ কন্ঠসংগীত
অনিন্দ্যসুন্দরে।

রাজনীতি নেই নেতা-নীতি আছে – রাজকুমার ব্যাধ

তুমি বললে
এ দেশে রাজনীতি নেই
ওরা দেশের নেতা-নীতি করে

পরে তুমি ওকে সমর্থন করলে

তোমার মত আমিও চিন্তা করি
যাকে কোনদিন নেতা ভাবিনি
সেও নেতা হবার সুযোগ পেয়ে যায়
আজকের দিনে রাজনীতি নেই
নেতা-নীতি চলছে বহাল তবিয়তে
অসহ্য লুঠেরাদের আমদানি
ক্রমশঃ ভদ্রশোষণের হিংস্রতা বেড়েছে
তুমি প্রতিবাদ করতে শেখোনি
মূর্খ ভাববেই ওরা
অদ্ভুত নেতা-নীতির দাপটের কাছে
তুমি একদম শিশু

কবিতা দিবসের কবিতা কথা – রাজকুমার ব্যাধ

নীলিমার ঠোঁটের ‘পর চুম্বন রাখি
তার মন আমার দিকে তাকিয়ে হেসে যায়
আমার বোধ চিন্তা করলে
সুদূর মরুভূমি মনোভঙ্গ করে
ওই উদিত কমলা চাঁদ যেন
অনুভূতি উল্লেখযোগ্য হবার অন্তরালে
কল্প রহস্য লাবণ্যময়ী হয়ে থাকে।

প্রতিটি অনুভূতি উল্লেখযোগ্য
আকাঙ্ক্ষিত মন ভাবনায়
দ্রুত দেশান্তরে যায়
সম্মুখে নীলিমার দুর্লভ প্রেমের কথা
মনোষ্ঠকে স্পর্শ করে যায়
তাকে আর আমাকে পাহারা দেয় রাত্রি
আর জন্ম নেয় নতুন নতুন স্বপ্ন।

যদিও মন, মন তো
কখনও ভাবে কথা অন্য
কত শত জনম কাটিয়ে
পেয়েছি মানুষ জীবন –
সে কথা কি রাখে মনে
মানুষের মন?

আনন্দের গান – রাজকুমার ব্যাধ

অনিন্দ্যসুন্দর নদী তরঙ্গ রাগে –
বসন্ত কাননে কোকিল মত্ত গানে;
ফুলের কোলে ভৃঙ্গের আনন্দ জাগে
তিতলির পিছু নেয় কিশোর প্রাণে।

পলাশ শিমুলের কুঁড়িগুলি লাল হয়ে ওঠে,
ফুলের মধু খেতে কত পাখি জোটে,
রোদভরা দুপুরে কূজন ভাল লাগে বটে,
মৌমাছির নজর থাকে শুধু ফুলের পানে।

বাতাসে বাঁশের পাতা কাঁপে থর্ থর্
মাঝিভাই গলা ছেড়ে গান গায় ভাঁটিয়ালি;
আকাশে ওড়ে শঙ্খ চিল সুন্দর
আজ আকাশের হৃদয় দেখি না খালি।

ভাল লাগে রাতেরবেলায় চাঁদের আলো
সার্থক আমারা সকলে প্রকৃতির মহাদানে;
বাংলার মাটিতে জনম নিয়ে ধন্য মাগো
মাতৃভাষা বাংলাভাষা রইল জীবন-মরণে।

যেন রূপকথা – রাজকুমার ব্যাধ

বসন্তে পাতা ঝরছে আবার
নতুন পাতা গজিয়ে ওঠে
আকাশভরা রোদের চমক
ছুঁয়ে কচি পাতার ঠোঁটে।

বাতাস বেশ ঢেউ খেলে যায়
আপনমনে নদীর জলে
মনের সুখে বনের কোকিল
আবেশে গান গেয়ে চলে।

ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা
মৌমাছিমন দলে দলে
অনিন্দ্যসুন্দরে ভোমরা ওই
দোলে নন্দে ফুলের কোলে।

শিশুদল প্রজাপতি দেখে
হাসে কত খুশিতে
রূপকথার পরী উড়ে যায়
ওই বেশ শোভিতে।

অমৃত মানে কোনো খাদ্য বস্তু নয় – রাজকুমার ব্যাধ

আদৌ কি শিয়ালকে পণ্ডিত বলা হয়
নাকি শিয়ালের আগে মানুষ কথাটি উহ্য
হয়তো হয়তো হয়তো হয়তো
এভাবেই চলে আসে নৈতিকতা

ব দেশের রাজা সিংহ বড়ই নীতি পরায়ণ
তিনি প্রজাদের প্রতি খুবই সহৃদয়বান ছিলেন
প্রতিবেশী রাজা ব্রাঘ্যের সাথে ভীষণ যুদ্ধ হয়
রাজা সিংহ রাজ্য জয় করলেন ঠিকই
কিন্তু হলেন মারাত্মক ক্ষত-বিক্ষত

বৈদ্যরাজ ভাল্লুক মহাশয় মহারাজ সিংহকে দেখে
চিন্তিত হয়ে পড়লেন মহারাজকে বাঁচাবেন কিভাবে
শিয়াল পন্ডিত ভাল্লুককে জিজ্ঞেস করেন
বৈদ্যরাজ মহারাজ মৃত না অমৃত

বৈদ্যরাজ ব্যাকুল হয়ে বলেন
মৃত ভাষা বুঝলাম অমৃত মানে সুধা
সে জিনিস কোথা পাব বলেন

শিয়াল হেসে হেসেই বলেন
একেই বলে মূর্খ কাকে বলে
আমি জিজ্ঞেস করলাম মৃত না অমৃত
মৃত মানে শেষ আর অমৃত মানে
যিনি মৃত নন তাকেই অমৃত বলে
আর তুমি যে অমৃত ভাবছ
বাস্তবে অমৃত নামে কোনো খাদ্য বস্তু নেই
ওটা রূপকথা কাল্পনিক যার কোনো সত্যতা নেই
সুধা যাকে বলছ মূলতঃ হতে পারে মাতৃ দগ্ধ
কিম্বা মুখের মনোমুগ্ধ ভাষা
হতে পারে কবির অপরূপ কাব্যসৃষ্টি
হতে পারে সাহিত্যিকের অমৃত গল্পকথা উপন্যাস

মানুষ অমৃত হয় সুকর্মে
সুকর্ম ছড়িয়ে পড়লে দেবত্ব হয়
দেবত্বভাব অর্জন করলে
মনুষ্যত্বের জয় নিখুঁত রয়
আর এভাবেই মানুষই মানুষকে অমৃত করে রাখে
অমৃত শব্দের গুরুত্ব গভীর

বোধের গভীরে – রাজকুমার ব্যাধ

চিন্তার শেষ নেই, শব্দ তাই বোধের গভীরে
বসে আছে অরূপ শোভনে। শব্দরা
কখনও শিশু, কখনও বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা
কখনও বা যুবক ও যুবতী।
শব্দের জগতে বীজের উৎস আছে। শব্দেরা থেমে থাকে না
কথার পাহাড় এখন।
কবিতা হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যায় যখন
হয়ে যাওয়া কবিতা শরীরকে
ইচ্ছেমতো ভেঙে পূর্বরূপে রূপ দেওয়া কখনোই সম্ভব নয়।

নদীর মুখ বেঁধে দিতে পারলেও
হয়ে যাওয়া কবিতা মুখ বাঁধা যায় না
সেখানে থাকে শব্দের জোয়ার প্রেরণাময়।
বন্দুকের গুলির শব্দে
রাত্রির বন বাদাড়ে থাকা ঝিঁঝিঁর ডাক স্তব্ধ হয় না
ঝিঁঝিঁ একটানা কর্কশ সঙ্গীত গেয়ে যাবেই।

নির্বাক হতে হয় শব্দের টুকরো কঠিন হয় যখন
কবিতা কোথায় থাকে – নেই দেখা।

রাজকুমার ব্যাধ | Rajkumar Byadh

Padma besha | পদ্ম বেশ | অভিজিৎ পাল

Gaja-Uddharana besha | গজ-উদ্ধারণ বেশ | অভিজিৎ পাল

Inspector | ইন্সপেক্টর | New Bengali Story 2023

Poila Baisakh 1430 | স্মরণে-বরণে ১লা বৈশাখ

Shabdodweep Web Magazine | Bengali Poetry Analysis | Rajkumar Byadh

Bengali literature, one of the richest literary traditions in India, has produced a treasure trove of poetry that spans centuries. Bengali poetry analysis helps readers understand not just the words, but the emotions, history, and culture embedded within them. From the timeless works of renowned poets to contemporary verse, Bengali poetry has always reflected the socio-political and cultural dynamics of Bengal.

In this article, we will explore the importance of Bengali poetry analysis, its role in enhancing the understanding of Bengali literature, and how analyzing Bengali poems can deepen our appreciation of this rich poetic tradition. Moreover, we will highlight the works of Rajkumar Byadh, a prominent poet featured on Shabdodweep Web Magazine, whose insightful poems offer a modern take on Bengali poetry.

The Importance of Bengali Poetry Analysis

Bengali poetry analysis is essential for readers who wish to go beyond just reading poems and understand the layers of meaning that they carry. Bengali literature, known for its vast scope and variety, includes numerous themes, including love, politics, nature, and social issues. By analyzing these poems, readers can uncover these deeper meanings and see how they reflect the society and times in which they were written.

Bengali poetry analysis allows us to connect with the poet’s intentions, their emotional expressions, and the societal context behind their words. For instance, the poetry of Rabindranath Tagore, a towering figure in Bengali literature, often explores human emotions, nature, and spirituality. His works, when analyzed, reveal a profound understanding of both the external world and the inner human experience.

Bengali Poems: A Window into Culture and Society

A Bengali poem is much more than a simple artistic expression—it’s a window into the culture, history, and psyche of the Bengali people. The beauty of Bengali literature lies in its deep connection to the land, the people, and their struggles. In a Bengali poem, the choice of words, the rhythm, and the metaphors serve as a mirror reflecting the societal conditions of the time.

Through Bengali poetry analysis, one can better appreciate how poets like Tagore, Kazi Nazrul Islam, and Jibanananda Das used their verses to comment on the social and political issues of their times. For example, Kazi Nazrul Islam, the “Rebel Poet,” used his poetry to challenge colonialism and inspire nationalistic fervor. His works are often analyzed for their revolutionary spirit, deep emotional appeal, and defiance against oppression.

Understanding the Poetry of Rajkumar Byadh

One of the prominent contemporary poets featured on Shabdodweep Web Magazine is Rajkumar Byadh. His works reflect a modern sensibility while still retaining the essence of Bengali poetic traditions. His poetry often focuses on the nuances of human emotions, the complexities of modern life, and the evolving nature of Bengali society.

Rajkumar Byadh’s poems delve into themes like love, loss, hope, and social inequality. By analyzing his poems, readers can understand how he bridges the gap between traditional Bengali literature and contemporary issues, offering fresh perspectives on age-old themes. His poetry is rich with symbolism and wordplay, making it an excellent example of modern Bengali poetry analysis.

On Shabdodweep Web Magazine, we feature several of his works, which not only explore the traditional aspects of Bengali verse but also push the boundaries of poetic expression. The Bengali poetry analysis of his works allows readers to appreciate his distinct style and the depth of thought that goes into every line.

Key Elements of Bengali Poetry Analysis

To analyze Bengali poems effectively, there are several key elements to consider:

  1. Language and Vocabulary
    Bengali poets have an unparalleled command over language, using rich metaphors, alliteration, and vivid imagery to evoke emotions. When analyzing a Bengali poem, it is essential to pay attention to the language used. The choice of words often reflects the poet’s emotional state, their societal commentary, and their unique worldview.
  2. Rhythm and Meter
    The rhythm and meter in Bengali poetry play a vital role in conveying emotions. Whether it’s the graceful rhythm of a classical poem or the free-flowing verses of modern poetry, Bengali poetry analysis often includes a close look at how rhythm enhances the poem’s impact.
  3. Themes and Messages
    Themes form the backbone of Bengali literature, and analyzing the thematic elements of a Bengali poem can provide insight into the poet’s purpose. Whether exploring existential questions, the beauty of nature, or the pain of loss, the themes of Bengali poetry are often universal, yet deeply personal to the Bengali experience.
  4. Imagery and Symbolism
    Imagery is a crucial aspect of Bengali poetry. Poets often use symbolic references to convey complex ideas and emotions. By analyzing the imagery in Bengali poems, readers can uncover hidden meanings that might not be immediately obvious. Symbolism in Bengali poetry often reflects the cultural richness and philosophical depth that is inherent in the literary tradition.
  5. Historical and Cultural Context
    To understand the full impact of Bengali poetry, one must consider the historical and cultural context in which it was written. Many renowned poets of Bengali literature create works that are deeply embedded in the socio-political landscape of their time. Bengali poetry analysis involves studying these contextual elements to understand the motivations behind the poetry.

The Role of Shabdodweep Web Magazine in Bengali Poetry

At Shabdodweep Web Magazine, we are dedicated to bringing you insightful analysis and deep dives into the world of Bengali poetry. Through our platform, readers can explore the vast world of Bengali literature, from classical masterpieces to contemporary works like those of Rajkumar Byadh.

Our mission is to make Bengali poetry analysis accessible to all, whether you are a seasoned literature enthusiast or someone new to Bengali verse. With in-depth articles, poetry analysis, and features on renowned poets, we aim to foster a deeper understanding and appreciation of Bengali poetry.

FAQ: Bengali Poetry Analysis

  1. What is Bengali poetry analysis?
    Bengali poetry analysis involves studying the language, structure, themes, and cultural context of Bengali poems to understand the deeper meanings and emotions behind them.
  2. Why is Bengali poetry analysis important?
    Bengali poetry analysis is important because it helps readers appreciate the richness of Bengali literature and gain a deeper understanding of the themes, emotions, and cultural insights embedded in the poems.
  3. How does Rajkumar Byadh’s poetry contribute to modern Bengali literature?
    Rajkumar Byadh’s poetry blends traditional Bengali literary forms with modern sensibilities, tackling themes like love, loss, and societal issues. His works are an excellent example of contemporary Bengali poetry analysis.

Conclusion

Bengali poetry analysis offers a valuable lens through which readers can appreciate the beauty, complexity, and cultural significance of Bengali literature. By studying the works of poets like Rajkumar Byadh, we can deepen our understanding of the emotional, intellectual, and societal undercurrents that shape Bengali verse. Explore the world of Bengali poetry through insightful analysis on Shabdodweep Web Magazine, where we bring the rich heritage of Bengali literary traditions to a global audience.


Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio

Leave a Comment