New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | মোহিত ব্যাপারী

Sharing Is Caring:

মূল্য পরিবর্তন – মোহিত ব্যাপারী

সময়ের মূল্য সময় বুঝিয়ে দেয়।
তার সাথে জীবন জড়িয়ে যায়।
জীবনের হালহকিকত
সময়ের অ্যালবামে ধরা থাকে ।
সময়ের পাঁকে মূল্যবোধ পরিবর্তিত হয়।
বদলাতে থাকে জীবনের মানে।
সময়ের ওঠা নামায় জীবন ওঠে নামে।
শেয়ার বাজারে দর হাঁকে জীবনের
সেনসেক্স নিফটির হিসেবের খাতাতে।
জীবনের মূল্যটা যায় পাল্টে।
কেউ নিচ থেকে উঠে যায় উপরে।
কেউ নেমে আসে তলানিতে শূন্যের ঘরে।
উপরে আছ বলে অহংকার করো না।
মূল্যটা নেমে যেতে পারে এক ধাক্কায়।
যে নিচে আছে তাকে অবহেলা করো না।
যেকোনো সময় ছাড়িয়ে যাবে তোমাকে।
সময়ের সাথে মূল্য পরিবর্তিত হয়।
ভাগ্য দেবতার ভাগ্যলিখন বোঝা দায়।

কেন ভালোবাসি – মোহিত ব্যাপারী

কেন ভালোবাসি তোকে !
আজও ঠিক জানিনা কি কারণে।
হৃদয় শুকিয়ে আসে পিপাসায়।
অন্তরে গভীর এক টান অনুভব করি।

কেন চাই তোকে !
আজও ঠিক জানিনা কি কারণে।
শরীরের ছায়া অতিক্রম করেছে অনেক আগেই।
মনের পরশে প্রশান্তির ছোঁয়া লাগে মনে ।
মন যা চেয়েছে দিয়েছিস তুই।
তোর মত কেউ ঠিক বোঝেনি আমায়।

কেন ভালোবাসি তোকে ?
আজও ঠিক জানিনা কি কারণে।
না জানাই থাক অগোচরে।
কারণ ফুরালে ভালোবাসার কি হত তবে ?
না জেনেই ভালোবাসি তোকে।
শুধু অকারণেই ভালোবাসি তোকে।

অন্তবিহীন যাত্রাপথ – মোহিত ব্যাপারী

পথ হেঁটে যায় পথের শেষে
অন্তবিহীন এক যাত্রাপথে।
দু’ধারে তার অজস্র স্মৃতির ভিড়ে ঠাসা।
দুঃখ সুখের পালকি চলে দুলকি চালে,
জীবন ভরে ঘটনার ঘনঘটা।
পথের দু’ধারে কত নাম না জানা ফুল ফোটে।
রূপ রস গন্ধহীন, তবু তরতাজা জীবন।
কত ফুল আকাশে বাতাসে সৌরভ ছড়ায়।
কত পাখি কলরবে গান শুনিয়ে যায়।
পথের দু’ধারে ফুলেদের সাথে পাখিদের সাথে
কত নামহীন পথশিশুর জন্ম হয়।
দিকভ্রষ্ট জীবনের কাছে তারা অসহায়।
সকলেই তারা পথের মাঝে হারিয়ে যায়।
দু’একটি হয়তো বাতাসে ধূলিকণার মত
ভাসতে ভাসতে ঠিক গন্তব্যে পৌঁছে যায়।
প্রতিটি শিশুর জীবন বিকশিত হোক ফুলের মত।
ফুল পাখিদের মতই বেড়ে উঠুক আনন্দের হিল্লোলে।
পথের মাঝেই পথ করে নেবে তারা
জীবনের দায়ে আপন বাহুবলে।
জীবনের মেরুদন্ড হয়ে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

চল মন – মোহিত ব্যাপারী

চল মন চল যাই।
চল এক হয়ে যাই বসন্ত বাতাসে।
পলাশ রাঙা আকাশের সাথে আজ
হোলি খেলি দু’জনে।
চল মন চল যাই।
চল পথের ধুলো ওড়াই পথে পথে
গ্রীষ্মের দুপুরের সাথে।
চল মন চল যাই।
চল ভেসে যাই
নদীর সাথে সাগরের পানে ধেয়ে।
চল উড়ে যাই আকাশের পানে
পাখিদের সাথে গান গেয়ে।
আঁধারের শেষে আকাশের থেকে
নতুন সূর্য ওঠা ভোর দেখব দু’জনে মিলে।

অনন্ত যাত্রা – মোহিত ব্যাপারী

আহা কি সুন্দর
দূর ওই প্রান্তর।
বহুদিন হয়নি যাওয়া।
যেতে চাই সেখানে।
ট্রেনের জানালায় বসে
দুরন্ত গতিতে ছুটছে
গাছগাছালি দূর প্রান্তর।
আকাশটা বনবন ঘুরছে।
চাঁদ সূর্যও হেঁটে যাচ্ছে।
দূর গাঁয়ে সন্ধ্যা প্রদীপ
মিটিমিটি আলো জ্বলছে।
শহরের জংশনে কোলাহল চলছে।
যেতে যেতে ভোর শেষ হলে
আলোর আভাসে ভাসছে।
পাহাড় চূড়ায় সূর্য উঁকি দিচ্ছে।
পাহাড়ের গা বেয়ে সকাল নামছে।
অচেনা কোন স্টেশনের কোলাহলে
গরম চায়ে মন ভরে উঠছে।
জানালার বাইরে চোখ রেখে আমি
অনন্ত যাত্রায় ছুটছি।

সঞ্চয় – মোহিত ব্যাপারী

টাকা কড়ি গাড়ি বাড়ি সব প্রয়োজন।
চাই জীবনের সঞ্চয়।
পার্থিব এ জগতে কেউ কারো নয়।
অসময়ে চাই জীবনের সঞ্চয়।
আজ নয় প্রয়োজন তাই করি হেলা।
অসময় তার হিসেব নেয় কড়ায় গন্ডায়।

সৎ কর্ম সদগুণ সদাচার ন্যায় নীতি
চাই জীবনের সঞ্চয়।
পার্থিব জগতে অপার্থিব যত কিছু
হয়তো অত্যাবশ্যকীয় নয় সব।
তবুও আত্মার কিছু চাই সঞ্চয়।
আত্মার খোরাক যোগায় আত্মিক ধন।

পাখিরা সঞ্চয় করে না।
তবু মানুষের সঞ্চয় প্রয়োজন,
যা তার জীবনের পাথেও।
পাখিদের বৃদ্ধ বয়স দেখিনি আমি।
পাখিদের মৃত্যু দেখিনি কখনো।
মানুষ দেখেছি যত্রতত্র ছড়ানো ছেটানো।
মানুষের মৃত্যু দেখেছি বারেবারে।
সে এক যন্ত্রণা চরম বিভীষিকাময়।

ভুল স্বীকার – মোহিত ব্যাপারী

মানুষই ভুল করে।
ভুলের থেকে শিখতে পারে।
কিন্তু শিখতে চায়না কেউ।
ভাবটা এমন হয়নি কিছুই।

ভুল স্বীকারে অসম্মতি।
কথার পিঠে কথা গড়ে।
নিজের পক্ষে সওয়াল করে।
অযৌক্তিক যুক্তি খাড়া করে।

যদি কিছু বোঝাতে চাও,
বুঝবে না সে কোনমতেই।
আসলে বুঝতে চায়না সে।
বুঝলে তো তার হার হল।

ভুল করে ভুল কর যদি,
স্বীকার কর অনায়াসে।
ভুল স্বীকারে লজ্জা নেই।
সত্যটাকে খুঁজে পাবে।

অর্ধেক আমি – মোহিত ব্যাপারী

আমাকে দেখেছ তুমি জীবনের অনেকটা সময়।
হয়তো দেখনি দেখার মত করে।
কিংবা ফুরসত মেলেনি তোমার,
রিয়েলিটির রূঢ়তা অতিক্রম করে।
আমাকে ভালোবাসো তুমি।
সে কি কেবল এই বাইরের আমিটাকে?
মনের দুয়ারে দাঁড়িয়ে যে অন্ধ কানাই
গান শুনিয়ে প্রেমের পসরা সাজায়,
তার সুরের লহরী শুনেছ কখনো কান পেতে?
আমার লেখাকে ভালোবাসো তুমি।
কিন্তু যে কলম সাদা কাগজের বুকে আঁকিবুঁকি কাটে সারাক্ষণ,
তার খবর কি রেখেছ কখনো?
আমার ভালোকে ভালোবাসো তুমি।
আর আমার খারাপ?
মেপে মেপে দেখবে তাকে স্বর্ণকারের তুলাদন্ডে ?
ফেলে দেবে তাকে ডাস্টবিনে ?
আমিই একমাত্র পুরুষ যাকে ভালোবাসো তুমি।
সেকি কেবলই কথার কথা?
তুমি কি দেখেছ তার অন্তরাত্মা?
অনুভূতির থার্মোমিটারে পাঠ নিয়েছ কখনো
তার উষ্ণতা আর্দ্রতার পূর্বাভাস ?
কতখানি পাগল আর কোথায় সে অভিমানী!
ভালো ভালো আর শুধুই ভালো।
কিন্তু ভালোর বাইরেও যে আর একটা আমি আছি!
একটা খারাপ আমি।
এই খারাপটুকু গঙ্গাবক্ষে বিসর্জন দিয়ে বাকিটা যে অর্ধেক আমি।
সেই অর্ধেক আমিকে নিয়ে কি করবে তুমি?
ভালো ? সে তো সকলেই চায়।
তাতে আর কার কি দোষ বলো ?

মেঘলা দিনে – মোহিত ব্যাপারী

সঘন ঘন মেঘ আকাশে।
গুরু গুরু গগনে গরজায়, বিজলি চমকায় ।
ধরণী আঁধার হল, বাতাসে কাহার বারতা !
বসে আছি জানালা পাশে আমি একলা।
তুমি আছ হৃদয়ও পরশে।
তুমিও আছ আকাশপানে চেয়ে,
জানালার ওই অন্ধ গলিপথে।

ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এল, ঊষর মরু সিক্ত হল।
জুড়িয়ে গেল সকল জ্বালা।
বারান্দাতে দাঁড়িয়ে আছ একলা তুমি,
ওগো কার কথাটি ভেবে!
শুধুই কি বৃষ্টিখেলা মেঘের লুকোচুরি!
মনের দুয়ার খুলে ডাকছো কাকে হাত বাড়িয়ে
অসীম শূন্যপানে চেয়ে।
নয় সে তো নয় কল্পনা নয়, এক্কেবারে খাঁটি।
মেঘ আমাদের ডাক দিয়েছে তার কোলেতে ভাসি ।
আদর করে ঠাঁই দিয়েছে, নাম দিয়েছে
লক্ষ্মী পেঁচা পেঁচী।

বারান্দাতে দাঁড়িয়ে আছ কার কথাটি ভেবে।
সেও তো তেমনি আছে পথের পানে চেয়ে।
আকাশ আলো মেঘের সাথে ডাক পাঠাল
তোমার অভিসারের।
হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি তোমার উপর।
ভিজিয়ে দিয়ে মোদের মিলিয়েছে একসনে।
সকল চাওয়া পূর্ণ হল ভালোবাসার তরে।

আমার শহর – মোহিত ব্যাপারী

আঁকাবাঁকা বন্ধুর পথে চলতে চলতে
আজ আমি ক্লান্ত অবসন্ন।
পিছন ফিরে হঠাৎ তাকিয়ে দেখি
জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি।
হাজারো স্মৃতির মেলা,
ভিড়ে ঠাসা ট্রামে বাসে পার্কে ময়দানে।
হাজার তারার ভিড়েও উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক।
স্মৃতির সরণি বেয়ে,
যখনই হেঁটেছি উজানি নৌকা বেয়ে,
তোমারেই শুধু পেয়েছি সেথায়।
জনতার কোলাহলে আমার ব্যস্ততায়,
নির্জন নদীতীরে আর সমুদ্রের গর্জনে
তোমারেই শুধু দেখেছি।
আমার শহর রঙিন তোমার
রংমশালের আলোয়।
তারপর অন্ধকারে ছেয়ে যায় ফের।
বাতাসে ভেসে থাকে শুধু বারুদের গন্ধ।
জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি।
রংমশালে আর আগুন জ্বালবে না তুমি।
এখনো অনেকটা পথ চলা বাকি।
এখনো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে,
আমার ঘুমিয়ে পড়ার আগে।
জানি শুধু থাকবেনা তুমি।

ভুলে থাকা – মোহিত ব্যাপারী

আমি ভুলে থাকতে চাই।
কিন্তু ভুলতে দিচ্ছ কই।
আমিও যে বাঁচতে চাই।
কিন্তু বাঁচতে দিচ্ছ কই।
শয়নে স্বপনে জাগরণে,
নিশীথের অন্ধকারে,
কিংবা পূর্ণিমা জোছনাতে,
তোমারি পরশ লেগে আছে।
মন তো পেয়ালা নয়।
তবুও তো ভাঙে।
মন তো পুতুল নয়।
তবুও তো খেলা করে,
মনের ঘরে ঘরে।
চোখেরও তো ঝরনা থাকে।
নদী হয়ে বয়ে যায়।
মিশে যায় সাগরের সাথে।
ছেড়ে যায় কতশত
পলি কাদা বালুকণার রাশি।
কত পাড় ভেঙে যায়।
কত তীর গড়ে ওঠে।
গড়ে ওঠে শহর বন্দর।
নদী বয়ে যায় মোহনায়।
রেখে যায় শুধু স্মৃতি।
নদী মনে রাখে না।
ব্যস্ত সে গড়তে নূতন স্মৃতি।
বন্দর শহর জানে শুধু,
প্রাণ ভোমরা যে তাদের নদী।

ছেলেবেলার দিন – মোহিত ব্যাপারী

মনে পড়ে, কেবলই মনে পড়ে,
ছেলেবেলার সেইসব দিন।
এই তো মাত্র কয়েক দিনের কথা।
তবুও সুদূর অতীত আজ।
ইচ্ছে করে, খুব করে ইচ্ছে করে,
একবার ফিরে যেতে সেইসব দিনে।
প্রাণের উচ্ছলতায় ভরা জীবন,
সমুদ্রের ঢেউয়ের মত উত্তাল।
যান্ত্রিক সভ্যতার স্পর্শবিহীন
ছেলেবেলার সেই সে দিনের কথা।
আদুল গায়ে খেলতে যাওয়া,
প্রান্তর থেকে প্রান্তর।
আদুল গায়ে বৃষ্টিভেজা মাঠ।
রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পুকুর পাড়ে
দৌড়-ঝাঁপ, নানান প্রকার খেলা।
দুপুর রোদে হনহনিয়ে বন্য কুলের স্বাদ।
বৃষ্টি মাথায় কচুপাতার ছাতা।
বন বাদাড়ে ঘুরে ফিরে খেলা।
চল দেখি ভাই কোথায় পাখির বাসা।
ডাংগুলি আর লাট্টু ঘোরাই,
লাটাই হাতে ঘুড়ি ওড়াই।
আলের পথে পাড়ি জমাই দূর বহুদূর।
মাঠভরা ফসল আর প্রাণভরা উচ্ছলতা।
খেলার মাঠ হারিয়ে গেছে কংক্রিটের ভিড়ে।
ছেলেবেলার খেলার সাথী —
প্রাণের চেয়ে প্রিয় তারা, স্বার্থহীন।
ভালোবাসা প্রাণের টানে প্রাণের মাঝে।
কোথায় সবাই হারিয়ে গেলি।
মন বলে ফিরে যেতে সেদিনের মাঝে।
সময় বলে সময় যে আর নেই।
জীবনের চাকা সামনে এগিয়ে যায়
আঁকাবাঁকা বন্ধুর পথে।
কোথাও অন্ধকার, কোথাও আলো।
ব্যাক গিয়ারের কোন সিস্টেম নেই।
আজকের কৈশোর বন্দি গুগল এর ঠিকানায়।

ওরা আমরা – মোহিত ব্যাপারী

মানুষ উত্তম জীব জীবের মাঝে,
সমাজবদ্ধ আর সামাজিক।
চলনে বলনে আদব কায়দায় উন্নত।
তবু সমাজ বিচ্যুত অমানবিক।
প্রতি পদে অসামাজিকতার ঝোঁক।
খোলসের মাঝে সে এক অন্য রূপ।
এই সমাজের আবর্জনা যারা —
তারাই আবার সমাজপতি।
নিয়ম নীতি প্রহসনের খেলায়
আর্য ব্রাহ্মণ অর্থ আর বিত্তশালী।
এ সমাজ তারাই চালায়,
যারা কেবল আখের গোছায়।
এ সমাজ উচ্চ – নীচের বিভেদ করে,
যেখানে ধনী দরিদ্রের ভগবান।
ক্ষমতার পদতলে শুধু অসহায়ের আত্মবলিদান।
ওরা থাকে উপরতলায়।
তোমার শরীরে মাটির বটকা গন্ধ।
তোমার রক্তে ওদের মেদবহুল কলেবর।
আর তোমার সন্তান অপুষ্টিতে ভোগে।
ক্ষমতা ওদের, রাষ্ট্র ওদের,
ওদের জন্যে সুব্যবস্থা আছে।
তোমার আছে কেবল ঈশ্বরে ভরসা।
এ সমাজ সেই যাঁতাকল —
এক দল পেষক আর অন্যরা পিষ্ট।

কালো মেয়ে – মোহিত ব্যাপারী

এই যে তোমরা কি শুনতে পাও?
হ্যাঁ তোমাদেরই বলছি, তোমাদের।
আমি একটি মেয়ে, আমি সেই মেয়ে
অনন্ত অনাদিকালের।
একে তো মেয়ে তাতে বেজায় কালো।
জন্মলগ্নে আঁতুড়ঘরে বাজেনি মঙ্গল শঙ্খ,
উলুধ্বনি কিংবা কাঁসর ঘন্টা।
মায়ের কপালে গঞ্জনা আর অপবাদ।
মায়ের মুখ দেখল না বাবা,
বাকিদের কথা তো ছেড়েই দিলাম।
সমস্ত বাড়িতেই যেন একটা থমথমে পরিবেশ।
কি যেন এক শোকের ছায়া নেমেছে।
পুরো দোষটাই যেন আমার আর আমার মায়ের।
কোনো এক গুপ্ত ষড়যন্ত্রে ঠকিয়েছি সকলকে।
কি দোষ ছিল আমার, আমার জন্মে।
জন্ম তো আমার আমি নিজে বেছে নিইনি।
কালো মেয়ের নিকষ কালো গা,
কালো মেয়ের কালো বরণ রূপ।
তাতে কি, সে যে কেবল কালো।
বিয়ের বাজারেও তো মূল্য একটা থাকা চাই।
সবাই দেখবে শুনবে যাচাই করবে,
তারপর তোমার নিলাম হবে।
তুমি লেখাপড়া জানো, চাকরি করবে?
তুমি ভালো মানুষ হবে, ভালোবাসবে?
তাতে কি, ওটা কোনো যোগ্যতাই নয়।
যেখানে সুন্দরী মহিলা চেয়ে বিজ্ঞাপন আছে,
অফিসে পুরুষের শ্যেন লোলুপ দৃষ্টি আছে।
তুমি কি বুদ্ধিমতী?
তাতে কি, ওসব দিয়ে কি হবে?
সেই তো বিয়ের পরে স্বামীর ঘরে
খুন্তি নাড়বে আর ছেলে বিয়োবে।
আর মেয়ে বিয়োলে শাশুড়ি ননদীর গঞ্জনা আছে।
কালো মেয়ের নিকষ কালো গা।
কালো মেয়ের কালো বরণ রূপ।
সমাজ আর পুরুষ আমায় দেখতে চায় সতী।
এরাই আবার আমায় দেখে অন্ধকারে সুযোগ খোঁজে।
শরীর শুধুই একটা মাংসপিণ্ড।
মনের খোঁজ ক’জন রাখে?
আমি না হয় কালোই হলাম,
সমাজ কেন আলোর মাঝে অন্ধকারের ছায়া?

ফর্সা মেয়ে – মোহিত ব্যাপারী

সবাই কেবল কালো মেয়েরই কথা বলে।
কালো মেয়ের গোপন যত দুঃখগাথা,
কাব্য কথায় গল্প যেথায় সবখানেতেই
কালো মেয়েই আকাশ জুড়ে বিদ্যমান।
তাইনা দেখে ফর্সা মেয়ের খুব অভিমান।
সবাই ভাবে কালো মেয়ের মনের ব্যথা।
আমার বেলায় অন্ধ কবি দেখতে পান না।
আমারও তো ক্ষেত্র যে সেই তারই মত।
রাস্তা ঘাটে বেরিয়ে দেখি সবাই সেথায়
মানুষ সেজে হিংস্রতায় শিকার খোঁজে।
লোলুপ চোখের দৃষ্টি শুধুই শরীর মাপে।
পারলে যেন আস্ত আমায় গিলেই ফেলে।
বাইরে মৃদু হাসি, মুখে মধুর বচন রাশিরাশি।
অন্তরেতে বিষের জ্বালা জ্বালায় সারাবেলা।
সাদা কালো কথার কথা, আসল কথা —
মেয়ে হলেই পণ্য ভাবে, বুঝি বা ভাবে দুর্বল।
আমিও তাকাই ওদের দিকে দু’চোখের দৃষ্টি মেলে।
সকলের মাঝে একটুখানি নিরাপদ আশ্রয় খুঁজি।
বিয়ের রাতে বাবা মায়ের চোখের জলে
আমারও যে বিদায় হল তোমারই মত।
পরের ঘরে পর হয়েই যে আমার জীবন কাটে।
একটু ভুলে তোমার মত আমারও কপালে জোটে।
আমার যেদিন জন্ম হল এই ভুবনে,
ঠাম্মি আমার বেজায় গেল চটে।
স্বপ্নভরা চোখ মেলেছি দেখব বলে ভুবনটাকে।
আপন যারা তারাই আমায় নেয়নি মেনে।
ঠাম্মি আমার মুখ দেখেনি মেয়ে বলে।
মনের আকাশে ঘনীভূত বিষাদের কালো মেঘ।
গুরুর কাছে ঠাম্মি আমার মাথা কোটেন অশ্রুভরে।
একি আমার হল, চাইনি আমি এমনতর।
গুরু বলেন তোর ঘরেতে দেবী এলেন স্বয়ং।
চিনতে করিস ভুল, মিছে করিসনে আর দেরি।
ঠাম্মি আমার তড়িঘড়ি পড়িমরি বাড়ি এলেন ফিরে।
সমস্ত কাজ ফেলে ব্যস্ত হাতে পূজার আয়োজন।
মহাসমারোহে পূজা দেবীর হল সমাপন।
মেয়ে বলে মানলো না কেউ —
দেবী বলে মানলো সবে।

জানালার ওপারে – মোহিত ব্যাপারী

ইচ্ছেরা সব বন্দি আজি মনের কুঠুরিতে।
মানুষ কেবল চার দেয়ালের মাঝে।
জানালার ওপারে সবুজের সমারোহ।
নির্জন রাস্তা শুনশান অলিগলি নিঃসঙ্গ।
গাড়ির শব্দ নেই, জনতার কোলাহল নেই।
চারিদিকে নিশুতি শ্মশানের ছায়া।
পশু পাখি মুক্ত আজি, মানুষ বন্দি গৃহকোণে।
ইচ্ছে করে দেয়ালটাকে ভেঙে চুরমার করে দিতে।
মন বলে উড়ে যেতে সুদূরে পাখিদের সাথে ডানা মেলে।
পাহাড় ডাকে, সাগর ডাকে, অরণ্য হাতছানি দেয়।
হায়রে মানুষ আজ কত অসহায় নিরুপায়।
চেনা ছন্দ হতে পথের ধারে পড়ে আছে সভ্যতা।
হঠাৎ একটা প্লাবন আসুক ভাসিয়ে নিয়ে যাক
সমস্ত প্রতিবন্ধকতা অন্তরের সমস্ত গ্লানি ।
মৌন মলিন দুঃখ বেদনা ক্লান্তি অবসাদ হোক অবসান।
দুরন্ত তুফানের পরে নতুন ভোরের সূর্য উঠুক।

মোহিত ব্যাপারী | Mohit Bapari

New Bengali Article 2023 | হুগলী জেল ও কাজী নজরুল ইসলাম | প্রবন্ধ ২০২৩

New Travel Story 2023 | লাচুং-নাথালু’র সীমান্ত ছুঁয়ে | জয়ন্ত কুমার সরকার

New Bengali Story 2023| লোকের কথা | মনসুর আলি

New Bengali Article 2023 | প্রেমাবতার ঠাকুর হরনাথ ও সহধর্মিণী কুসুমকুমারী কথা

ছেলেবেলার দিন | ওরা আমরা | কালো মেয়ে | ফর্সা মেয়ে | জানালার ওপারে | কবিতাগুচ্ছ | বাংলা কবিতা | সেরা বাংলা কবিতা ২০২২ | কবিতাসমগ্র ২০২২ | বাংলার লেখক | কবি ও কবিতা | শব্দদ্বীপের কবি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন | ছেলেবেলার দিনগুলি | ছেলেবেলার দিনগুলি প্রশ্ন উত্তর | ছেলেবেলার দিনগুলি পুণ্যলতা চক্রবর্তী | ছেলেবেলার দিনগুলি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | ছেলেবেলা প্রশ্ন উত্তর | হাসিখুশি ছেলেবেলার উক্তি | আমার ছেলেবেলার দিন-রাত্রি | ওরা তো আমরাই | কালো বা ফর্সা | কালো মেয়ে নিয়ে স্ট্যাটাস | গর্বিত কালো মানুষ | একটি কালো মেয়ে | কালো মেয়ে, ফর্সা মেয়ে | জাতের মেয়ে কালো ভালো | ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিম | ফর্সা হওয়ার ক্রিম | গায়ের রং ফর্সা হওয়ার উপায় | কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায় | কালো মেয়ে ফর্সা হওয়ার ক্রিম | কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয় | গায়ের রং কালো নিয়ে উক্তি | তুমি ফর্সা না কালো | ফর্সা হওয়ার সহজ উপায় | জানালার ওপারে অন্য এক পৃথিবী | তুমি থেকো জানালার ওপারে | জানালার ওপারের গল্প | ভাঙা জানালার ওপারে | জানালার ওপারে গানের পাখি বুলবুল

bengali poetry | bengali poetry books | bengali poetry books pdf | bengali poetry on love | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | poetry collection submissions | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2022 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | new poems rilke | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | power poetry | master class poetry | sweet poems | found poem | poetry night near me | poem about myself | best poets of the 21st century | christian poems | prose poetry | poetry international | poetry pdf | free poem | a poem that tells a story | beat poetry | poetry publishers | poem and poetry | def poetry | heart touching poetry | poetry near me | prose and poetry | poem on women empowerment | identity poem | quotes by famous authors and poets | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder

Leave a Comment