New Travel Story 2023 | লাচুং-নাথালু’র সীমান্ত ছুঁয়ে | জয়ন্ত কুমার সরকার

Sharing Is Caring:
BENGALI STORY
Travel Story

লাচুং-নাথালু’র সীমান্ত ছুঁয়ে [Travel Story]

একরকম জোর করেই অনলাইনে টিকিট বুক করল অফিস কলিগ অতনু। প্রথমে দার্জিলিং যাওয়ার কথাই হয়েছিল। পরে গ্যাংটক, উত্তর সিকিম যুক্ত করে বড় পরিকল্পনা করে অতনু আর চন্দন। আমার ছেলে-মেয়ের সুবিধা-অসুবিধা,পরীক্ষা সহ নানা কারণে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হচ্ছিল। অতনুর কথাতে দোদুল্যমানতার মধ্যেই শেষ পর্যন্ত রাজি হলাম। দার্জিলিং মেল-এ সিট পাওয়া গেল ৮ই নভেম্বর, ফিরে আসা পদাতিকে, ১৫ তারিখ। বিষ্ণুপুরের এক মাস্টারমশাই কালিম্পং এ হোটেলের মালিক, তাঁর সঙ্গে বসেই বিভিন্ন স্পটের লজ, রুমের ছবি দেখে ট্যুর প্যাকেজ তৈরী হল, গাড়ির চুক্তিও হয়ে গেল। দু-একদিনের মধ্যে ড্রাইভারের মোবাইল নম্বর এসে গেল। সব জায়গাতে ড্রাইভারই নিয়ে যাবে, অতনু আর চন্দন সব যোগাযোগ করছিল। অগ্রিম দেওয়া হল, অনলাইন পেমেন্ট হল। বিভিন্ন পয়েন্টের পারমিশনের জন্য আই ডি কার্ডের কপি আগাম ই-মেলে পাঠানো হল। সকলকে অরিজিনাল সঙ্গে নিতে বলা হল। একদিন সকল সদস্যদের নিয়ে গেট টুগেদার হল। যাত্রার দিন ক্রমশ এগিয়ে আসছে, আমরাও তৈরি হচ্ছি। যেটা ভয় করছিলাম সেটাই হলো, ছেলের সিক্সথ সেমিস্টার পরীক্ষা জার্ণির মধ্যেই পড়ে গেল; ভীষণ মুষড়ে পড়লাম, ছেলেমেয়েদের ছেড়ে এতটা লম্বা জার্নি, মন ভীষণ খারাপ; অনেকটা এগিয়েছি, জার্নি ক্যানসেল কঠিন হল, তাই ছেলের টিকিট ক্যানসেল করতে হল, সঙ্গে একম্-অদ্বিতিয়ম সহধর্মিণী। অতনু-চন্দন-সুকান্ত-মধু’র পরিবার মিলে মোট ১৩ জনের দল। প্রথম গন্তব্য দার্জিলিং। পরিকল্পনা-মাফিক বিষ্ণুপুর থেকে প্রাইভেট গাড়িতে লাগেজসহ সদলবলে হাজির হলাম বর্ধমান স্টেশনে। অনেক দেরীতে, রাত বারোটার পর দার্জিলিং মেল ঢুকল, হুড়োহুড়ি করে চেপে বসলাম এ.সি.থ্রি-টায়ারে। NJP স্টেশনে নামলাম সকাল সাড়ে আটটার পর। গাড়ি বুক করাই ছিল, তিন বোলারোতে পাঁচ পরিবার, মোট ১৩ জন। আমাদের গাড়িতে আমরা দুজন, মধু- স্ত্রী-ছেলে, চন্দন ওর স্ত্রী মধুমিতা মোট সাতজন। তিন বোলারো ছাড়ল একসঙ্গে, গন্তব্য মিরিক হয়ে দার্জিলিং। মাঝে টিফিন করার জন্য একটা রেষ্টুরেন্টে অর্ডার দেওয়া হল। গরম লুচির সঙ্গে আলুর দম। দাম বেশ চড়া। এক কাপ চা কুড়ি টাকা, লুচি দশ, আলুরদম কুড়ি। মিরিকে লেকের ধারে গাড়ী দাঁড়াল, পাশে একটা পার্ক, কিছু সোয়েটার টুপির দোকান। কিছুক্ষণ ঘুরে দার্জিলিং-এর উদ্দেশ্যে গাড়ি ছাড়ল।

মিরিকের পাহাড়ি উপত্যকার সৌন্দর্য দেখতে দেখতে দার্জিলিং পৌঁছালাম বেলা আড়াইটায়। ভানুভবন, GTA অফিসের সামনে গাড়ি থেকে নামতে হল, ম্যালের ওপ্রান্তে হোটেল আমাদের। আমার রুম গ্রাউন্ডে, ওদের বেসমেন্টে, তবে রুমগুলো বেশ ভালই। ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং-এ চলে এলাম। ভাত ডাল আলুপোস্ত মাছ চাটনি বেশ তৃপ্তি করে খেলাম। ট্রেনে ঘুম হয়নি, খুব ক্লান্ত ছিলাম, বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যায় বের হলাম। আমি এই প্রথম এলাম দার্জিলিং। ম্যাল জায়গাটা বেশ ভালো, চৌকো মত অনেকটা কংক্রিটের বাঁধানো সমতল। বেশ জমজমাট গোটা পরিবেশটা। চারিদিকে ছোট বড় দোকান, ফুটপাতে খাবারের দোকান, রেষ্টুরেন্ট, বসার জায়গা, সময় কাটানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে। বড় একটা মঞ্চ, সেখানে কিছু না কিছু অনুষ্ঠান হচ্ছে। ম্যালের দোকানগুলোতে ঘুরলাম কিছুক্ষণ, কয়েকটা উলের টুপি কিনলাম। আগামীকাল টাইগার হিল, সেভেন পয়েন্ট যাওয়ার কথা। ভোরে উঠতে হবে; তাই বেশি রাত না করে শুয়ে পড়লাম। নভেম্বর মাসের ৯ তারিখ বেশ শীত দার্জিলিঙে। কথা অনুযায়ী ভোর ৩ টায় গাড়ি এল। বহু প্রতীক্ষিত টাইগার হিলে সূর্যোদয় আর কাঞ্চনজঙ্ঘার উদ্দেশ্যে সাড়ে তিনটায় বের হলাম সকলে। বেশ কিছুটা এবড়োখেবড়ো পথ পার হয়ে গাড়ি থেকে নামতে হল। টাইগার হিলের ভিউ পয়েন্টে ওঠার অনেক আগেই রাস্তায় প্রচুর গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়েছে, গাড়ির ফাঁকে আঁকাবাঁকা পথে হেঁটে উপরে উঠছি, কিছুটা ছাড়া বিশ্রাম নিতে হচ্ছে, কনকনে ঠান্ডায় ভোরের আলো আধো ছায়ায় অন্ধকার হাতড়ে উপরে উঠছি। বেশ খাড়া রাস্তা, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, বয়স্করা হাঁপাচ্ছিল। ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল সেদিন, কুয়াশা নেই, যাত্রাপথ কষ্টকর হলেও এতদিনকার জমানো কৌতূহল তো! একটা উত্তেজনা ছিল। আমরা আর চন্দন-মধুমিতা একসঙ্গে আছি, পয়েন্ট। মধু, সুকান্ত, অতনুর পরিবারের লোকজন কে কোথায় হাঁটছে অন্ধকারে দেখতে পাচ্ছি না। উপরে উঠে হাঁসফাঁস করছিলাম। বেস থেকে আরও পাঁচতলা সমান উপরে সিঁড়ি বেয়ে উঠলে তবেই ভিউ না। ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে পড়ছি, কফি খেলাম এক নেপালী মহিলার ফ্লাস্ক থেকে। আঁধার সরে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছিল পর্বতের চূড়া, উপর থেকে দেখছিলাম নিচে মেঘের ভেলায় চড়ে মেঘ চলেছে সারি সারি, রাশি রাশি পেঁজা তুলোর পাহাড় এলোমেলো ভেসে চলেছে, গেরুয়া বর্ণচ্ছটায় ঈষৎ লাল আকাশে সোনালী সূর্যের কিরণে কাঞ্চনজঙ্ঘার সে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। আবির লাল আকাশে রবির উজ্জ্বল কিরণে স্পষ্ট হচ্ছে আমাদের অবস্থান। প্রায় একঘন্টা ধরে সূর্যোদয় দেখলাম। কপালকুণ্ডলার নবকুমারকে মনে পড়ল, ‘‘ আহা! কি দেখিলাম, জন্ম জন্মান্তরেও ভুলিব না !“ সত্যিই নয়ন সার্থক হল! মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, একরাশ বিস্ময় আর সুন্দর দৃশ্যানুভূতির সঙ্গে নেমে এলাম টাইগার হিল থেকে। এরপর বাতাসী লুপ, গোর্খা সৈনিকের স্মৃতিসৌধ ঘিরে ভিউপয়েন্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা তখন আরও পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। দূরবীন বসিয়ে পাহাড়ের বিভিন্ন পয়েন্টে দেখাচ্ছিল কয়েকটা নেপালী লোক। উল-পশমের প্রচুর দোকান, যেন মেলা বসেছে বাতাসী লুপে, কয়েকটা চাদর গ্লাভস টুপি কেনা হল। চন্দন-মধুমিতার রোমান্টিকতায় সেলফি তোলা, ওরা মাঝে মাঝেই সকলের দৃষ্টির বাইরে হারিয়ে যাচ্ছিল, অতনু-মধু-সুকান্তর স্ত্রী নেপালী তরুণীর পোষাকে বেশ অন্যরকম সেজেছিল, বেশ ভালই উপভোগ করছিলাম আমরা। কিছু ছবিও তুললাম আমরা দুজনে। চা-টিফিন সারলাম নিজের মত করে। পাহাড়ি ঢালে অসংখ্য চা-বাগান, সূর্যের উজ্জ্বল বর্ণচ্ছটায় পাহাড়ের চূড়াগুলো যেন একেকটা ঝকঝকে সোনার মুকুট। নীল আকাশের বুকে মেঘের লুকোচুরি খেলা, পথের বাঁকে উপত্যকায় চায়ের সারি, পেঁজা তুলো মেঘের আনাগোনা, কোথাও কুয়াশার চাদরে মুখ লুকিয়ে অবগুণ্ঠনবতী তরুণী পাহাড় যেন মুচকি হাসছে, তাই দেখছিলাম গাড়িতে যেতে যেতে। তেনজিং ট্রেকিং পয়েন্ট থেকে চা কেনা, চা খাওয়া হল। টয়ট্রেন দেখলাম কয়েকটা, চেপে ভ্রমণ আর হল না সময়ের অভাবে। ফিরে এলাম হোটেলে। বিকেলে ম্যালের চারদিকে ছড়িয়ে থাকা বাজারে ঘুরলাম, চা কিনলাম ব্রাণ্ডেড প্যাকেট কয়েকটা, আরও কিছু কেনাকাটা হল, ওরাও কিনছে, মধুই নাকি সবচেয়ে বেশি। ঢাউস ব্যাগে মধুরা যে কত কি কিনল, আমরা হিসেব মেলাতে পারিনি।

পরদিন সকালে দার্জিলিং ছাড়লাম। পরের গন্তব্য গ্যাংটক যাওয়ার পূর্ব নির্ধারিত গাড়ি এসে গেল। দার্জিলিং (৬৭০০ ফুট) থেকে চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নিচের ঢাল বেয়ে গ্যাংটকে ( ৫৪১০ ফুট) নেমে এলাম দুপুরে আড়াইটায়। গ্যাংটকের হোটেলে সকলের রুম তিনতলায়-চারতলায় জানলার ভিউ এর জন্য। দুপুরের আহার সেরে বিশ্রাম নিলাম। সন্ধ্যেয় গ্যাংটক মার্কেট দেখতে বের হলাম। সিঁড়ি বেয়ে অর্ধেকটা নীচে নামতে হবে, অতনুরা নামল না, ওর অসুবিধের জন্য। আমরা নিচে লাল মার্কেটে পর্যন্ত নেমে কেনাকাটা করলাম। গিফট দেওয়ার জন্য কয়েকটা সোয়েটার,টুপি কেনা হল, ভীষণ ঠাণ্ডা, সোমার জন্য জ্যাকেট কিনলাম, এখানে ছাড়া এসব সুবিধা হবে না। এখানেও কেনাকাটায় মধুর নাগাল নেওয়া যায় না। উপরে উঠে আসার রাস্তা ভীষণ খাড়া, খুব কষ্ট হচ্ছিল। পরদিন সকাল ৭টায় রওনা দিলাম, গন্তব্য নাথালুপাস, ছাঙ্গুলেক, বাবামন্দির। এক উপত্যকা থেকে দূরের অন্য উপত্যকায়, কোথাও চওড়া কংক্রিটের রাস্তা, কোথাও বিপদজনক বাঁক, ক্রমশ উঠছি উপরে, চলেছি তো চলেছিই। হড়কা বানে কোথাও কংক্রিটের রাস্তার উপর বিশাল উপলখণ্ড এসে পড়েছে, কোথাও লোহার ইলেকট্রিক পোল বেঁকে গিয়েছে, কোথাও রাস্তা ভেঙ্গে তছনছ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, হিমেল স্রোত বয়ে চলেছে যেন, তার মাঝেই সূর্যের প্রখর কিরণে পাহাড় ঝলমল করছে, এক জায়গায় বরফ পেলাম, গাড়ি থামিয়ে নেমে বরফ হাতে নিয়ে ছবিও তোলা হল। অপরূপ পার্বত্য শোভা, বরফের চাদরে ঢাকা পাহাড়ের মনোরম সৌন্দর্য, অপরূপ শোভা পৃথিবীর, প্রকৃতি যেন পাহাড়কে রঙ-বেরঙের রঙের পাথর দিয়ে সাজিয়েছে নিপুণ হাতে। বরফের অলঙ্কারে ভূষিত হিমালয়ের কতই না রূপ দেখছি, অভিভূত হচ্ছি বারে বারে। আড়াই তিন ঘণ্টার পার্বত্য পথ, বিপদসঙ্কুল চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সেনা নিয়ন্ত্রিত নাথালুপাসে পৌঁছালাম, ভারত-চিন সীমান্ত। অসম্ভব ঠাণ্ডা, ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার সঙ্গে কনকনে হিমেল হাওয়ায় ১৪ হাজার ১৪০ ফুট উপরে আমরা। অক্সিজেন কম, বহুকষ্টে শীর্ষে পৌঁছে সীমান্তের কাঁটাতার ছুঁলাম। ওধারে আদিগন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন অস্পষ্ট তুষারশৃঙ্গ, অংশুমালীর লুকোচুরি খেলায় সে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। নাথালুর অসম্ভব ঠাণ্ডায় সেনা ক্যাম্পের সৌজন্যে ক্যান্টিনে কফি খেলাম পর পর দুকাপ। আমাদের দলের কয়েকজন সীমান্ত শীর্ষে উঠতে পেরেছেন, অনেকে পৌঁছতে পারে নি। নেমে এলাম শীর্ষ বিন্দু থেকে। এরপর বাবামন্দির, কর্ণেল হরভজন স্মৃতিসৌধ দর্শন, কর্ণেল হরভজনের দুর্দান্ত সাহসিকতার গল্প শুনলাম ওখানকার লোকমুখে। ছবি তোলা শেষ করে ফিরতি পথে ছাঙ্গুলেকের অপরূপ শোভায় আমরা বেশ উৎফুল্ল, বাচ্চারা বেশ আনন্দ পেয়েছে। লেকের ধারে ফটোস্যুট চলল কিছুক্ষণ, বাচ্চারা চামরী গাইয়ের পিঠে চড়ে বসল, ছবি উঠল। ফিরে চললাম গ্যাংটক। পরের দিন ব্যাগ-ব্যাগেজ হোটেলের লাউঞ্জে গচ্ছিত করে রওনা দিলাম উত্তর সিকিমের লাচুং, উচ্চতা ৮৮৫৮ ফুট। ভীষণ দুর্গম রাস্তা, অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়ি ঝর্ণা। গাড়ি থামিয়ে রাস্তায় বয়ে যাওয়া স্বচ্ছ ঝর্ণার জলে পা ভেজালাম। সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য, উপলখণ্ডের বুক চিরে একশ ফুট উপর থেকে খাদে ঝর্ণার অঝোর ধারা, রঙিন বুনোফুলের মাঝে রূপালী ঝর্ণার কি অপূর্ব সৌন্দর্য। লাচুং এর হোটেলে সন্ধ্যায় পৌঁছালাম। খুব ভাল হোটেল, শুধুমাত্র আমরাই অতিথি সেদিন। হাড় হিম করা ঠাণ্ডায় উষ্ণতার খোঁজে হোটেলের ডাইনিং-কিচেনে আড্ডায় বসলাম সকলে। জমে উঠল আড্ডা, লজের বয়-কুক একসঙ্গে গান কবিতা হাসির চুটকি, চন্দনের স্ত্রী মধুমিতা খুবই উৎফুল্ল, গান-কবিতা-নাচ সবেতেই এগিয়ে অন্য সবার থেকে। গরম চা আর মশলামুড়ির সাথে দলবেঁধে নাচ চললো ঘন্টা দুয়েক। দিনে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রী ছিল, রাত্রে তাপ আরও কমল। সক্কালেই ইয়ানথাং ভ্যালি যাত্রা। রফের চাদরে মোড়া রঙিন পর্বতশিখরে সূর্যের আলোর বিচ্ছুরণে ইয়ানথাং যেন রামধনুর সাতরঙা মখমল। যত পারি খুশি দু পকেটে ভরে নিচ্ছি, দুহাত ভরে পান করছি অপরূপ সৌন্দর্য সুধা। অনেকক্ষণ ধরে কাটালাম ইয়ানথাম ভ্যালির সৌন্দর্যের আঁচলে। ফিরতি পথে দুঃসাহসিক জিরোপয়েন্ট অভিযান। উচ্চতা ১৫৩০০ ফুট উচ্চতায় তখন তাপমাত্রা মাইনাস ৩ ডিগ্রী। প্রচণ্ড হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় হাত পা অবশ, মোবাইল ধরতে পারছিলাম না। ওষ্ঠাগত প্রাণ, তাতেও স্ত্রীর অনুরোধে গ্লাভস খুলে বরফের উপর কোনক্রমে সেলফি তুললাম কয়েকটা। রৌদ্দজ্বল আবহাওয়া, কিন্তু হাড় হিম করা ঠাণ্ডা। শীতে কাঁপছি থরথর। বীভৎসতার মাঝেও সুন্দরের উৎস খুঁজে পেলাম, হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা, তবুও রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম বারে বারে। ফিরে এলাম একরাশ সুখানুভূতি সঙ্গে নিয়ে। লাচুং হোটেলে দুপুরের আহার সেরে বিদায় জানালাম লাচুংকে। গ্যাংটক হোটেলে ফিরে এলাম। সন্ধ্যায় ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি নামল। তাতেও মার্কেট ঘুরলাম শেষ কেনাকাটায়। রাতে হোটেলে থেকে পরদিন সকাল আটটার হোটেল ছাড়লাম। এবার ফিরে আসার পালা। কালিম্পং হয়ে ফিরছি। পথে বৌদ্ধ গুম্ফা, গলফ কোট দেখা হল। কালিম্পং এর হোটেল বেশ ধোপদুরস্ত, দাম চড়া । আহার বেশ জমল না। তিস্তার ধার বরাবর অনেকটা রাস্তা অতিক্রম করে করোনেশন ব্রিজ পেরিয়ে শিলিগুড়িতে পড়লাম। সময়ের অভাবে বেঙ্গল সাফারি হল না। শিলিগুড়ির উপর দিয়ে NJP স্টেশনে পৌঁছালাম। টানা আটদিনের জার্ণি শেষ, এবার ফেরার পালা। রাত্রি আটটায় পদাতিক এক্সপ্রেসে চেপে বসলাম বিষ্ণুপুরের উদ্দেশ্যে।

জয়ন্ত কুমার সরকার | Jayanta Kumar Sarkar

Travel Story 2022 | আমার বেড়ানো | পণ্ডিচেরী | মহাবলীপূরম | তিরুপতিধাম | কন্যাকুমারী

New Bengali Story 2023| এসো করুণা ধারায় | কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

New Bengali Story 2023| লোকের কথা | মনসুর আলি

Best Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ | নীলমাধব প্রামাণিক

Travel Story Tales | write a travel story | Real Travel Story | Short Travel Story | My Travel Story | my travel story | travel story in english | short story about travel | unforgettable travel story | travel story example | inspiring travel story | short story travel adventure | travel story ideas | Indian Travel Story | Bengali Travel Story | Best Short Travel Story | India Travel Story Archive | Untold Travel Story | Travel story for young kids | Great Travel Story | Travel Story Hamper | World Travel Story | 22 Travel Story Ideas | England Travel Story | Love Travel Story | Travel Story Archives | Long Travel Story | Suspense Travel Story | Horror Travel Story | Attractive Travel Story | Submit Your Travel Story | Secret Travel Story | Travel Story News | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Travel Story Creation | Shabdodweep Travel Story | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Founder

Leave a Comment