New Bengali Article 2023 | প্রেমাবতার ঠাকুর হরনাথ ও সহধর্মিণী কুসুমকুমারী কথা

Sharing Is Caring:

প্রেমাবতার ঠাকুর হরনাথ ও সহধর্মিণী কুসুমকুমারী কথা [Bengali Article]

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য অবতার রূপে মর্তে এসেছিলেন মহাপ্রভু গৌরাঙ্গদেব। রামকৃষ্ণদেবও যুগাবতার রূপে মর্তে আবির্ভূত হয়েছিলেন। অনেকে মনে করেন, যুগে যুগে ভগবান এভাবেই বারে বারে ভক্তের রূপ ধরে মর্তে আবির্ভূত হন। গৌরাঙ্গদেব কৃষ্ণ নামে বিভোর ছিলেন। সেজন্য গৃহত্যাগী পর্যন্ত হয়েছিলেন। শত বাধা বিপত্তিতেও তিনি সেখান থেকে বিচ্যুত হননি। নদীয়ার নবদ্বীপ এবং মায়াপুর তাঁর প্রভাবে আজ পৃথিবী বিখ্যাত। সেরকমই চৈতন্যদেবের জন্মের প্রায় চারশো বছর পর বাঁকুড়ার মাটিতে জন্মেছিলেন আরও একজন কৃষ্ণভক্ত। যিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নামে বিভোর থেকে আজীবন ভক্তদেরকে ‘কৃষ্ণ’ নাম জপ করার উপদেশ দিয়েছেন। তাঁকেও তাই তাঁর ভক্তগন ভগবান কৃষ্ণের মানব রূপ বলে মনে করেন। মানুষটি হরনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বা ঠাকুর হরনাথ। সঙ্গে তাঁর যোগ্য সহধর্মিণী কুসুমকুমারী মুখোপাধ্যায়।

BENGALI ARTICLE

১৮৬৫ খৃষ্টাব্দের ২রা জুলাই বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীতে জন্ম হরনাথের। পিতা জয়রাম বন্দ্যোপাধ্যায়। মাতা ভগবতী সুন্দরী দেবী। হরনাথের জন্মের কয়েকমাস আগে তাঁর পিতা একটি শিবমন্দির নির্মাণ করেছিলেন। সেই মন্দিরে তিনি শিবের পাশাপাশি কৃষ্ণের নিত্য পূজা করতেন বলে জানা যায়। তাই শিব এবং ভগবান বিষ্ণু উভয় নামের মিশ্রণে ছেলের নামকরণ করেছিলেন হরনাথ বলে অনুমান। হরনাথের বয়স যখন ১৪ বছর তখন সোনামুখীর আর এক ধর্মপ্রাণা বালিকা কুসুমকুমারী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কুসুমকুমারীর বয়স তখন মাত্র ৯ বছর। বিয়ের পর হরনাথ স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে কলকাতায় যান উচ্চশিক্ষার জন্য। সেখানে গিয়ে তিনি বারে বারে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। কিন্তু ওষুধ খেতে চাইতেন না। অথচ রোগ সেরে যেত। তখন থেকেই অনেকে তাঁর কৃষ্ণ ভক্তি এবং অলৌকিক সাধনার টের পান। সাধারণ শিক্ষার প্রতি তিনি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন না। তাই বিএ পাশ করে আর পড়াশোনার দিকে না ঝুঁকে কাশ্মীরে চলে যান কাজের জন্য। সেখানে একটি অফিসে কাজ নেন। যতদূর জানা যায়, প্রায় ২০ বছর তিনি কাশ্মীরে থেকে চাকরি করেছেন। কিন্তু চাকরির মধ্যে আনন্দ খুঁজে পান নি। তাই একসময় কাজ ছেড়ে সোনামুখীতে আবার ফিরে আসেন। ততদিনে তিনি কৃষ্ণ প্রেমে বিভোর হয়ে গিয়েছেন। কৃষ্ণের মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য কাজ ছেড়ে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। একাজে তাঁকে যোগ্য সহায়তা করেছেন তাঁর সহধর্মিণী কুসুম কুমারী দেবী। তিনি কাশ্মীরে থাকাকালীন ক্রমশ কৃষ্ণ ভক্ত হয়ে যাওয়ায় তখন থেকেই তাঁর শিষ্য সংখ্যা বাড়তে থাকে। চিঠিপত্রের মাধ্যমে শিষ্যদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং প্রয়োজন মতো সদুপদেশ দিতেন। সেই উপদেশের সমগ্র অংশ জুড়ে থাকত কৃষ্ণের আরাধনা, ভজনার কথা। কৃষ্ণের নামগানই মুক্তির দিশা। ভগবান কৃষ্ণই সকল সমস্যার সমাধান করে দিতে পারেন বলে তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন। তাঁর ভক্তিভাব দেখে শিষ্যরাও অবাক হয়ে যেতেন। সেখানে কোন মেকি ভাব ছিল না। হৃদয়ের ঐকান্তিক টানে আরাধ্য দেবতাকে ডাকলে তিনি না দেখা দিয়ে পারেন না। একথা ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রমাণ করে দিয়েছিলেন। হরনাথের ভক্তিরসের উৎসস্থলও ছিল তেমনই শ্রীকৃষ্ণে আত্মসমর্পণ। বিভিন্ন শিষ্যের সঙ্গে চিঠিপত্রের মাধ্যমে যোগাযোগের সময় তাঁর মূল উপদেশ ছিল ভক্তিরস। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনকে লেখা তাঁর অসংখ্য চিঠিপত্র একত্রিত করে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটির নাম ‘হরনাথের অপূর্ব পত্রাবলী’। সেই চিঠিপত্রের ছত্রে ছত্রে তাঁর কৃষ্ণভক্তি, কৃষ্ণে আত্মসমর্পণের নিদর্শন পাওয়া যায়।

তাঁর ভক্তদের অনেকে মনে করেন, হরনাথের ভক্তিরসে অবগাহন করা এবং মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ না করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মাহাত্ম্য প্রচার সম্ভব হয়েছিল সহধর্মিণী কুসুমকুমারীর জন্যই। ভগবান কৃষ্ণের লীলাক্ষেত্র বৃন্দাবন ধাম, চৈতন্যদেবের প্রেম বিতরণের স্থান নবদ্বীপ ধামের মতো ঠাকুর হরনাথের আবির্ভাবে সোনামুখীও অনেকের কাছে বিখ্যাত ধামে পরিণত হয়েছে। হরনাথ-কুসুমকুমারী উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত ‘কুসুম-হর কথা’ নামের একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা থেকে হরনাথ-কুসুমকুমারীর জীবন ও ভক্তিরস সম্পর্কে অনেক কথা জানা যায়। সেখানে ডাঃ বাসুদেব কর্মকার লিখেছেন, ‘সোনামুখী ধাম ধন্য করি এসেছেন আবার গৌরহরি, সঙ্গে নিয়ে এলেন শ্রীমতী রাধারানী কুসুমকুমারী দেবীকে।’ সংসারী হয়েও হরনাথ-কুসুমকুমারী দেবী পরোপকার, নিঃস্বার্থপরতা, প্রেম-ভালবাসার গুনে অসংখ্য মানুষকে কাছে টেনে নিতে সমর্থ হয়েছিলেন। তাঁর এক ভক্ত শ্যামল ব্রহ্মচারী ভক্তিভাবের প্রকাশ করতে গিয়ে ‘কুসুম-হর কথা’ নামক পত্রিকায় কবিগুরুর গানের লাইন ধার করে বলেছেন, ‘ধায় যেন মোর সকল ভালবাসা, প্রভু তোমার পানে, তোমার টানে।’ আবার হরনাথের সঙ্গ লাভে অমৃতসুধা পান করার ন্যায় কবির ভাষায় বলেছেন, ‘এই লভিনু সঙ্গ তব সুন্দর হে সুন্দর, ধন্য হোল অঙ্গ মম, পূর্ণ হোল অন্তর।’

Bengali Story

১৯২৭ সালে ৬২ বছর বয়সে ভক্ত হরনাথ ঠাকুর ইহলোক ত্যাগ করেন। কিন্তু তাঁর ভক্তরা তাঁকে বিস্মৃত হন নি। তাঁর নামে সোনামুখীতে মন্দির তৈরী হয়েছে। ধীরে ধীরে সেই মন্দিরের উন্নতি সাধন ঘটেছে। হয়েছে রাস্তাঘাট, বিদ্যুতায়ন, জলের ব্যবস্থা, ভক্তদের থাকার জন্য আবাসগৃহের ব্যবস্থা। বর্তমানে প্রতিদিন নিত্যসেবা হয়। সন্ধ্যারতি এবং নামগান হয়। প্রতি বছর মহালয়ার পর তৃতীয়া থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত আট দিন ব্যাপী দিবারাত্র অসংখ্য ভক্ত সমাগমে নাম সংকীর্তনের আয়োজন হয়। চলে ভোগ বিতরণ। গত ২০১৯ সালে ভক্ত সমাবেশে হরনাথ-কুসুমকুমারীর নাম সংকীর্তনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে দেখে গিয়েছে, অধিকাংশ ভক্ত দক্ষিণ ভারতীয়। তাঁদের ভক্তিভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। তাঁরা নিজেদের খরচে আটদিন ব্যাপী গুরুর নামে অনুষ্ঠান করে গুরুকে স্মরণ করেন। গুরুর মহিমা প্রচার করেন। দরিদ্র মানুষদের দানধ্যান করেন। এছাড়া ১৮ই আষাঢ় ঠাকুর হরনাথের জন্মতিথিতে একদিনের উৎসব, অগ্রহায়ণ সংক্রান্তিতে কুসুমকুমারী দেবীর জন্মদিনে জন্মোৎসব, ৩১শে ডিসেম্বর আনন্দ মিলন উৎসব উপলক্ষে নামগান ও ভোগ বিতরণ হয়। সকল ব্যবস্থাই হয় ভক্তদের দ্বারা। যদিও একদিনের ঐ অনুষ্ঠানগুলিতে দূর-দূরান্তের ভক্তরা কম আসেন। মূলত ঐ অনুষ্ঠানগুলি উদযাপিত হয় স্থানীয় ভক্তদের দ্বারা।

বাংলার বাইরের বহু মানুষ শ্রী হরনাথের ভক্তিরসে আবিষ্ট হয়ে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেও সোনামুখী তথা বাঁকুড়ার মানুষকে তাতে সামিল হতে কম দেখা যায়। অনেকে আবার তাঁর নাম পর্যন্ত জানেন না। তাঁর ভক্তকুল মূলত দক্ষিণ ভারতে। কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা প্রভৃতি রাজ্যে তাঁর নামে একাধিক মন্দির আছে। সেখানকার ভক্তেরা হরনাথ-কুসুমকুমারীর ভক্তিরসে আবিষ্ট হয়ে নির্দ্বিধায় তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন। এমনকি সোনামুখীর মন্দির এবং উৎসব উপলক্ষে ব্যয়ভারের সিংহভাগ তাঁরাই বহন করেন। তাঁরা মনে করেন বৃন্দাবন ধাম, নবদ্বীপ ধামের মত সোনামুখীও হরনাথ-কুসুমকুমারীর পাদস্পর্শে ধন্য হয়েছে। তাই তাঁরা উৎসবের সময় সারাদিন ব্যাপী সমস্বরে গান ধরেন, ‘জয় হরনাথ জয়, জয় কুসুমকুমারী জয়—-জয় জয় জয়।’ এই কথাতেই কেটে যায় আট দিনের হরনাথ-কুসুমকুমারী মহোৎসব।

প্রদ্যোৎ পালুই | Pradyut Palui

New Bengali Article 2023 | অঘোষিত প্রতিযোগিতার ফল

New Bengali Article 2023 | অযোধ্যা গ্রামে প্রাচীন জমিদারদের আশ্চর্য স্থাপত্য নিদর্শন

Loukik Debota Masan Thakur | লৌকিক দেবতা মাশান ঠাকুর | 2022

Porokia Prem Ekaal Sekaal | পরকীয়া প্রেম (একাল সেকাল) | 2023

প্রেমাবতার ঠাকুর হরনাথ | কুসুমকুমারী কথা | ঠাকুর হরনাথ ও সহধর্মিণী কুসুমকুমারী | হরনাথ ও কুসুমকুমারী কথা | হরনাথ ঠাকুর | কুসুম হরনাথ | বাংলা প্রবন্ধ | বাংলার লেখক | প্রবন্ধ ও প্রাবন্ধিক | সেরা প্রবন্ধ ২০২৩ | শব্দদ্বীপ | শব্দদ্বীপের লেখক | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

bengali article writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali article rewriter | article writing | bengali article writing ai | bengali article writing app | bengali article writing book | bengali article writing bot | bengali article writing description | bengali article writing example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali article writing format | article writing gcse | bengali article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | bengali article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment