New Bengali Article 2023 | অযোধ্যা গ্রামে প্রাচীন জমিদারদের আশ্চর্য স্থাপত্য নিদর্শন

Sharing Is Caring:
BENGALI ARTICLE
Bengali Article

অযোধ্যা গ্রামে প্রাচীন জমিদারদের আশ্চর্য স্থাপত্য নিদর্শন [Bengali Article]

মালভূমি অধ্যুষিত রাঢ়বঙ্গে বিষ্ণুপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি মল্ল রাজাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, স্থাপত্য নিদর্শনের জন্য আজও বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর পর্যটক এবং গবেষকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়। প্রায় সারা বছরই এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে। বিষ্ণুপুরের রাজাদের স্থাপত্য নিদর্শনের বাইরে এক গ্রামীণ জমিদার পরিবারের কৃষ্টি, সংস্কৃতিও যে মনে রাখার মতো হতে পারে তার নিদর্শন অযোধ্যা গ্রাম। বিষ্ণুপুর থেকে মাত্র বারো কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে দ্বারকেশ্বর নদের উত্তর পাড়ে অবস্থিত এক বর্ধিষ্ণু গ্রাম অযোধ্যা।

হাজার তিনেক মানুষের এই গ্রামে আনুমানিক ১৭০০ খ্রীষ্টাব্দে ভট্টনারায়নের ৩৩তম উত্তর পুরুষ হরি বন্দ্যোপাধ্যায় অযোধ্যায় আসেন। ওই বংশের বর্তমান ৪৫তম উত্তর পুরুষ মনোহর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা থেকে জানা যায়, হরি বন্দ্যোপাধ্যায় মূলত পূজার্চনা করে সংসার নির্বাহ করতেন।বিরাট কিছু প্রভাব প্রতিপত্তি তাঁর ছিল না। ওই বংশের ৩৭তম উত্তর পুরুষ নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার পুত্র ও এক কন্যা। দ্বিতীয় পুত্র রামমোহন ছিলেন যথেষ্ট বুদ্ধিমান এবং পরিশ্রমী। তিনি নিজেদের পূজার্চনা পেশায় যুক্ত না থেকে কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছিলেন। হুগলীর শ্রীরামপুরে এক নীলকর সাহেবের অধীনে কাজ পান। সেই কাজে নিজের দক্ষতা এবং বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে পারায় একসময় নীলকর সাহেবের জমিদারির দেওয়ানী পদে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে নীলকর সাহেব কলেরা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজের আত্মীয়স্বজন তাঁকে ছেড়ে গেলেও রামমোহন তাঁর সেবা শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন। এতে তিনি নীলকর সাহেবের আরও আস্থাভাজন হয়ে পড়েন। জানা যায়, নীলকর সাহেব নিজের সম্পত্তির অর্ধেক দিয়ে গিয়েছিলেন রামমোহনকে। সেই ধনসম্পদ কাজে লাগিয়ে তিনি বড় দাদা কৃষ্ণমোহন, অন্য ছোট দুই ভাই লালমোহন এবং গদাধরের সহযোগিতায় আনুমানিক উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে অযোধ্যায় কিছু গ্রামের জমিদারি নেন। ধীরে ধীরে জমিদারির বহর বাড়তে থাকে।একসময় সারা বাঁকুড়া জেলা এবং আশপাশের দু-একটি জেলার ৮৫টি গ্রামে তাঁদের জমিদারি বিস্তার লাভ করেছিল। রামমোহনের দক্ষতা এবং অন্য তিন ভাইয়ের সহযোগিতায় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের জমিদারি যথেষ্ট পরিচিতি ও বিস্তৃতি লাভ করে। জমিদারি কৌলীন্য প্রতিষ্ঠা করতে রামমোহন অযোধ্যার জমিদারিতে দেবোত্তর এস্টেট প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রায় চার একর জমির ওপর দেবোত্তর এস্টেট আজও যথেষ্ট কৃতিত্বের দাবি রাখে। এস্টেটের উভয় দিকের প্রবেশ পথে বিরাট সিংহের মূর্তিখচিত তোরণ বা সিংহদুয়ার, যা এখন অনেকটা ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিম দিকের প্রবেশ পথের ডানদিকে নকশাখচিত আট ফুট উঁচু পিতলের রথ রাখা আছে। প্রতিবছর আষাঢ় মাসে ধুমধাম করে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। প্রাঙ্গণের উত্তর দিকে ইঁটের তৈরি দক্ষিণমুখী বারোটি একই মাপের সুদৃশ্য শিবমন্দির পাশাপাশি অবস্থিত। মন্দিরগুলিতে দৈনিক নিত্যসেবা হয়। এস্টেটের উত্তর-পূর্ব কোনে রয়েছে অপূর্ব কারুকার্যখচিত গিরি-গোবর্ধন মন্দির। ভিতরে গিরিগোবর্ধনধারী শ্রীকৃষ্ণ দেওয়ালে প্রোথিত অবস্থায় আছে। মন্দিরের পাশের বোর্ড থেকে জানা যায়, মন্দিরটি ১৮৩৫ সালে নির্মিত হয়েছিল। বছরে একবার কালীপূজার পরদিন এই মন্দিরে পূজা হয়। এস্টেটের উত্তর-পশ্চিম কোনে প্রান্তসীমা থেকে একটু দূরে রয়েছে সতেরো চূড়া সমন্বিত রাসমঞ্চ। মনোহরবাবুর মতে, বিষ্ণুপুরের রাসমঞ্চ ছাড়া এত বড় রাসমঞ্চ আর জেলায় নেই। কার্তিক মাসে রাস পূর্ণিমায় এস্টেটের সকল দেবদেবীকে এই রাসমঞ্চের বাইরের চারদিকে সাজিয়ে তিন দিন ধরে উৎসব পালন করা হয়। এছাড়া পশ্চিম দিকে ছিল জমিদারি দেখাশোনার জন্য অফিসঘর এবং নিরাপত্তাবাহিনী বা লেঠেলদের জন্য আবাস গৃহ। বর্তমানে সেটির ধ্বংসাবশেষ অবশিষ্ট আছে। একইভাবে এস্টেটের মাঝে ছিল একটি নাটমন্দির। একসময় সেখানে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হত। মনোহরবাবুর কাছ থেকে জানা যায়, প্রজাদের যাত্রা দেখে ফিরে যাবার সুবিধার্থে ওই নাটমন্দিরে একসময় দিনের বেলায় যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হত। বর্তমানে সেই নাটমন্দিরটিও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় অবশিষ্ট আছে। প্রাঙ্গণের পূর্ব এবং দক্ষিণ দিকে রয়েছে দোলমঞ্চ এবং ঝুলন মঞ্চ। তারও দক্ষিণে রয়েছে শ্রীরাধা দামোদর এবং বংশীগোপাল জীউয়ের দোতলা মন্দির। প্রতিদিন এখানে ভোগ নিবেদনের জন্য সেবায়েত আছেন। তার পূর্ব দিকে রয়েছে দুর্গামন্দির-সহ বড় দালান। প্রতি বছর মহাসমারোহে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া সকল স্থায়ী দেবদেবীর নিত্যপূজার ব্যবস্থা আছে। সেজন্য সেবাইত, বাদক, ফুল সংগ্রাহক-সহ সকল রকমের লোক নিয়োগ করে গিয়েছিল জমিদার পরিবার। এই সকল ব্যয় সংকুলানের জন্য তাঁদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভূসম্পত্তি দান করে গিয়েছিলেন। মন্দিরের দেবতার অবস্থানের জন্য ৯৮ ভরি ওজনের সোনার সিংহাসন, ৪০ কেজি ওজনের রূপোর পালকি এখনও বিদ্যমান। এছাড়া দেবসেবার জন্য, কলসী, ঘড়া, বাটি, থালা, কোশাকুশি ইত্যাদি সকল আসবাবপত্র রূপোর তৈরি। সারা বছরে রথযাত্রা, জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী, দুর্গাপূজা, রাসযাত্রা, দোলযাত্রা ইত্যাদি সকল রকম অনুষ্ঠান এই এস্টেটে এখনও অনুষ্ঠিত হয়। অযোধ্যা ছাড়াও কাশী-বারানসীতেও বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের জমিদারি ছিল। এখনও সেখানে জমিদারি মহল রয়েছে এবং বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের এক কুলপুরোহিত সেখানে পূজার্চনা করেন বলে জানা গেল।

বর্তমানে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার অনেকগুলি ভাগে বিভক্ত। ফলে জমিদারি এস্টেট রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্যা আছে। তাছাড়া এই সকল নিদর্শন পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। তাই বর্তমান এস্টেট কর্তৃপক্ষ চান, মন্দিরগুলি ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা রাজ্য পুরাতত্ত্ব অধিকারের পক্ষ থেকে অধিগ্রহণ করা হোক। মনোহরবাবু জানালেন, এজন্য তিনি ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় নি। তাঁরা চান, বাঁকুড়া জেলার টুরিষ্ট সার্কিটের মধ্যে অযোধ্যার জমিদারি এস্টেট অন্তর্ভুক্ত হলে এই স্থাপত্যের কথা অনেকে জানতে পারবেন এবং দেখার সুযোগ পাবেন। তাঁর আক্ষেপ, এবিষয়ে এখনও কোন অগ্রগতি হয়নি।

প্রদ্যোৎ পালুই | Pradyut Palui

New Bengali Article 2023 | অঘোষিত প্রতিযোগিতার ফল

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Advantages & Disadvantages of Tattoo | ট্যাটুর উপকারিতা এবং অপকারিতা | Bengali Article 2023

Is it possible to remove tattoo | ট্যাটু রিমুভ কি সম্ভব? | 2023

অযোধ্যা গ্রামে প্রাচীন জমিদার | ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য | পৃথিবীর বিস্ময় | অযোধ্যা পাহাড় | পুরুলিয়া অযোধ্যা পাহাড় | অযোধ্যা পাহাড় ভ্রমণ | অযোধ্যা-বনকাটির ঐতিহ্য | অযোধ্যা পাহাড়ের দর্শনীয় স্থান | অযোধ্যা সম্পর্কে | অযোধ্যা পাহাড় ভ্রমণ | অযোধ্যা পাহাড় কোন জেলায় অবস্থিত | অযোধ্যা পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ | বাঘমুন্ডি পাহাড় | অযোধ্যা পাহাড় কত কিলোমিটার | অযোধ্যার আনাচে কানাচে | জমিদার বাড়ি | প্রাচীন জমিদার প্রথার সাক্ষী | সাধক জমিদারের ভিটেয় | জমিদারি ব্যবস্থার বিকল্প নাম | বাংলার জমিদারদের তালিকা | জমিদারি প্রথা বাংলায় কে প্রবর্তন করেন | জমিদারি প্রথা চালু হয় কত সালে | জমিদারদের অত্যাচার | জমিদারের ছবি | জমিদার বাড়ি | শ্রীধরপুর জমিদার বাড়ি ও মন্দির | তের জমিদারের প্রাচীন শহর | বাংলা প্রবন্ধ | বাংলার লেখক | প্রবন্ধ ও প্রাবন্ধিক | সেরা প্রবন্ধ ২০২৩ | শব্দদ্বীপ | শব্দদ্বীপের লেখক | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

bengali article writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali article rewriter | article writing | bengali article writing ai | bengali article writing app | bengali article writing book | bengali article writing bot | bengali article writing description | bengali article writing example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali article writing format | article writing gcse | bengali article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | bengali article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment