New Bengali Article 2023 | অঘোষিত প্রতিযোগিতার ফল

Sharing Is Caring:
BENGALI ARTICLE
Bengali Article

অঘোষিত প্রতিযোগিতার ফল [Bengali Article]

পরিবেশের সঙ্গে মানুষের প্রতিযোগিতা চিরকালীন। প্রকৃতি তার নিজের খেয়ালে চালিত হয়। ফলে নদী বয়ে চলে, পাহাড় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। বাতাস বয়, ঝড় হয়, বৃষ্টিপাত হয়। সাগরে জোয়ার-ভাটা খেলে যায়। আরও কত কী! তার সেই খেয়ালের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মানুষ যদি তাদের জীবন-জীবিকার রাস্তা বের করে নেয় তাহলে দ্বন্দ্বের পরিবর্তে সম্পর্ক মধুর হয়ে উঠতে পারে। জীবন এবং প্রকৃতি পাশাপাশি অবস্থানে থেকে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। তারা প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার পরিবর্তে সহযোগী হয়ে উঠতে পারে।

মানুষ প্রকৃতির কাছে দাসানুদাস হলেও প্রকৃতির খেয়ালকে জয় করার একটা অদম্য ইচ্ছা তাকে সদাব্যস্ত রাখে। আদিম যুগে প্রকৃতি নির্ভর মানুষ প্রকৃতির কোলে লালিত পালিত হয়ে প্রকৃতি নির্ভরতা নিয়ে বেঁচে থাকলেও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিকে জয় করার ইচ্ছা তীব্রতর হতে থাকে। নিজের জীবনকে সুখী ও আরামপ্রিয় করার তাগিদে প্রকৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ শুরু করেছে সুকৌশলে। প্রকৃতি সরাসরি প্রতিবাদ করতে পারে নি। মানুষ প্রকৃতির সেই চুপ করে থেকে যাওয়াকে দুর্বলতা ভেবে নিয়ে নিজেদের জয়যাত্রাকে সুনিশ্চিত করতে অধিকার এবং আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে একটু একটু করে। নিজেরা ভোগসুখে ডুবে থাকতে চেয়েছে। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সেই ভোগাকাঙ্খা বেড়েছে মাত্রাতিরিক্তভাবে। ফলে প্রকৃতিকে জয় করার আকাঙ্ক্ষা দৃঢ়তর হয়েছে। নিজেদের জীবনযাত্রার মান উন্নত থেকে উন্নততর করার জন্য সাগর থেকে পাহাড় পর্যন্ত দখলের প্রচেষ্টা অব্যাহত। প্রকৃতির জল, মাটি, পাথর, গাছপালা ইত্যাদি সম্পদের সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহারের পরিবর্তে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকৃতিকে ক্রমশ নিঃস্ব করে তোলা হচ্ছে। ফলে প্রকৃতির ক্রোধ বাড়ছে চুপিসারে। মাঝে মাঝে সেই ক্রোধের বশে প্রকৃতি যখন রুদ্রমূর্তি ধারণ করে বেপরোয়া হয়ে ওঠে তখন দাম্ভিক, ভোগসুখে লিপ্ত মানুষ নিতান্ত অসহায় বোধ করে। প্রকৃতির তাণ্ডবলীলা দেখে যাওয়া ছাড়া তখন তার অন্য কোন পথ খোলা থাকে না।

প্রকৃতির উপর মানুষ আঘাত হেনে চলেছে বারে বারে। আকাশ, বাতাস, জল, পাহাড়, গাছপালা কোন কিছুকেই তাদের স্বেচ্ছাধীন থাকতে দিতে চায় না। তার অজস্র উদাহরণ সকলের চোখের দৈনিক ঘটে চলেছে। যারা আঘাত করছে না তারা উদাসীন থেকে সেই অত্যাচারকে পক্ষান্তরে মান্যতা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রকৃতি রুষ্ট হলেও সেই রোষ আমাদের নজরে আসে নি। তারই ফল এখন বিভিন্ন ভাবে হাতেনাতে পাওয়া যাচ্ছে। বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, দাবানল, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, পাহাড়ে ধস, হড়পা বান, জলসঙ্কট-সারা বিশ্বজুড়ে এখন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। তবুও আমাদের চেতনার পরিবর্তন হয় নি। সাধারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তে জীবনকে সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে ভরিয়ে দিতে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে এখনও আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে পাঞ্জা কষা চলছে। আমাদের রাজ্যে পার্বত্য জেলাগুলিতে পাহাড় কেটে তৈরি হচ্ছে বসতবাটি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, রাস্তা যথেচ্ছভাবে। শুধু পার্বত্য জেলায় নয়, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের মতো পাহাড়ি এবং মালভূমি অধ্যুষিত জেলাগুলিতেও চলছে অবাধে পাহাড় ভাঙার কাজ। মূলত ট্যুরিজম শিল্পের ব্যবসার কারণে এইসব জায়গায় পাহাড়, টিলা কেটে লজ, হোটেল বানানো হচ্ছে। এই ঘটনা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় থেকে জয়চন্ডী, বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া, বিহারীনাথ ইত্যাদি ছাড়াও অনেক ছোট ছোট পাহাড় এবং টিলার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এইসব জমি এখন জমি হাঙ্গরদের কবলে পড়ে বিলুপ্ত হতে বসেছে। এই ঘটনা শুধুমাত্র এই রাজ্যে নয়, দেশের অন্যান্য রাজ্যেও একইভাবে পাহাড় ভেঙে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালের পুজোর ছুটিতে বিশাখাপত্তনম বেড়াতে গিয়ে দেখেছি, চারিদিকে শুধু ছোট-বড় পাহাড় আর পাহাড়। রাস্তার পাশে, বাজারের পাশে, শহরের পাশে, সমুদ্রের পাশে ছোট বড় নানাধরনের পাহাড় নজরে এসেছে। আবার সেইসব পাহাড় খাড়া করে কেটে সমতল করে নানান কাজে লাগানো হচ্ছে সেই জমি। এভাবে পাহাড়ের স্বাভাবিক অবস্থান বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার ফলে বৃষ্টির সময় জলের স্বাভাবিক গতি বাধা পায়। বন্যা হয়, ধস নামে। নিজের স্বচ্ছন্দ গতিতে বইতে না পেরে হড়পা বানে অনেক সময় ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঘরবাড়ি, গাছপালা, বাজার-দোকান ইত্যাদি। ২০১৩ সালে উত্তরাখন্ডে এমনই ঘটনায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু মানুষের চেতনার পরিবর্তন হয় নি। অবৈজ্ঞানিকভাবে পাহাড় ভাঙার কাজ অব্যাহত থেকেছে। ফলে ২০২৩ সালে এসে যোশীমঠে একই কারণে ধস নামছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। যোশীমঠের ধসের ভয়াবহতা সকলে চমকে দিয়েছে। প্রায় ছ’শো বাড়িতে ফাটল ধরেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধীরে ধীরে পুরো শহরটিই তলিয়ে যেতে পারে। ১৯৭৬ সালে এই নিয়ে সতর্ক করা হলেও সেকথায় সরকার কর্ণপাত করে নি। জানা যাচ্ছে, হাইওয়ে নির্মাণ, রেল লাইন তৈরি, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ-সহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প তৈরির কাজ অবাধে চলছে সেখানে। এখন তার মূল্য চোকাতে হচ্ছে।

শুধু পাহাড় ভেঙেই ক্ষান্ত নই আমরা। আইন অনুযায়ী সমুদ্রের তীর থেকে ৫০০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কোন স্থায়ী নির্মাণ কাজ হওয়া উচিত নয়। কিন্তু অনেক স্থানে সেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকায় অবাধে নির্মাণকাজ হচ্ছে। নদীতে বাঁধ দিয়ে, গতিপথ ঘুরিয়ে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জলাধার তৈরি করে নদীকে আপন স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে অহরহ। ব্রিজ ছাড়াও নদীর বুকে বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সেই রাস্তা স্থায়ী হিসেবে থেকে যাছে। অবৈধভাবে বালি পাথর তোলা হচ্ছে। নদীর বুকে আবর্জনা ফেলে, পাড়ে অবৈধ নির্মাণকার্য চালিয়ে নদীকে পুরোপুরি হারিয়ে যেতে বা নদীর গতিকে হারিয়ে যেতে ত্বরান্বিত করছি আমরা। এখন আবার নদীর বুকে মেলা, খেলা, মিটিং মিছিলও অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে। ফলে এখন আর পুকুর, নদী, পাহাড়, সমুদ্র, টিলা, গাছপালা কোনকিছুর নিরবচ্ছিন্ন স্বাধীনতা নেই। সবাইকে মানুষের ইচ্ছানুযায়ী চলতে হচ্ছে। আর সেখানেই শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। প্রকৃতিকে নিজেদের বশে রেখে চালনা করতে গিয়ে মাঝে মাঝে ছন্দপতন ঘটছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে অতিমাত্রায়। তাই আজ বিশ্বের এখানে ওখানে দৈনিক ঘটে চলেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। দুর্গাপূজার ভাসানে জলপাইগুড়ির মাল নদীতে হড়পা বানে ভেসে গিয়েছিল বহু মানুষ। অকালে ঝরে যায় আটটি প্রাণ। কেউ কোন দায় নেয় নি। আবার এর থেকে শিক্ষা নেবে বলেও মনে হয় নি। কারণ বিপর্যয় ঘটলে প্রশাসনের সাময়িক টনক নড়ে। কিন্তু সাবধানতা এবং সচেতনতা স্থায়ী হয় না। কয়েক মাসের মধ্যে পুনর্মূষিকোভব পরিস্থিতি তৈরি হয়।

শুধু আমাদের দেশে বা রাজ্যে নয়, সারা বিশ্বেই পরিবেশের প্রতি উদাসীনতা আজ সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে দাবানলে পুড়ছে আমেরিকা, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তীর্ণ এলাকা। অতিবৃষ্টিতে পাহাড়ের ধসে চাপা পড়ে অকালে প্রাণ যাচ্ছে অনেকের। বন্যা এবং জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছে একাধিক দেশের একাধিক শহর। প্রচুর সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ধূমপানের মতো যেহেতু এই বেআইনি কাজের তাৎক্ষনিক ক্ষতি নজরে আসে না, ফলে মানুষের এমনকি শাসকেরও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয় নি। ফলে আজ মানুষ প্রকৃতির কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। প্রকৃতির সঙ্গে অসহযোগিতা করে, তাকে চ্যালেঞ্জ করে যে মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখা কঠিন সেকথা প্রকৃতি বিভিন্নভাবে জানিয়ে দিচ্ছে। মানুষের সাবধান হওয়া দরকার। পরিবেশের সঙ্গে সহযোগিতার মনোভাব দেখিয়ে উন্নয়নের পথে এগোনো দরকার। অসীম আশা আকাঙ্ক্ষাকে বিসর্জন দিয়ে সহজ সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপনের প্রতি সকলকে চালিত করা দরকার। না হলে এই সভ্যতা একদিন সিন্ধু-হরপ্পা-মহেঞ্জোদাড়োর মতো হারিয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

প্রদ্যোৎ পালুই | Pradyut Palui

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Advantages & Disadvantages of Tattoo | ট্যাটুর উপকারিতা এবং অপকারিতা | Bengali Article 2023

Is it possible to remove tattoo | ট্যাটু রিমুভ কি সম্ভব? | 2023

Emblem of Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতীকের অর্থ | নক্‌শা ও তাৎপর্য | 2023

bengali article writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali article rewriter | article writing | bengali article writing ai | bengali article writing app | bengali article writing book | bengali article writing bot | bengali article writing description | bengali article writing example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali article writing format | article writing gcse | bengali article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | bengali article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment