Bangla Kobita Milestone – Pratim Ghosh
ফাগুনে আগুন – প্রতিম ঘোষ
ফাল্গুনে পুষ্পভরা বৃক্ষ সকল
গাছে জন্মেছে আমের মুকুল,
মৌমাছি ফুলে মধু খায়
শুকনো পাতা খসে পড়ে যায়।
মৃদু মন্দ বাতাসে ওড়ে ধূলা
জ্যোৎস্না ভরা রাতের বেলা,
সুখময় প্রাণ প্রিয় ফাগুন
তোমায় পেয়ে মনে লেগেছে আগুন।
ফাল্গুনে লেগেছে প্রকৃতিতে উচ্ছ্বাস
তার পরশে এসেছে প্রাণে আশ্বাস,
ফাগুন মাসে নব প্রতীক
গ্রহণে করেনা বুক দুরুদুরু।
স্রষ্টা-সৃষ্টি – প্রতিম ঘোষ
স্রষ্টা বিনা সব বৃথা
সৃষ্টির রবে নাকো কথা।
স্রষ্টার মাঝে বিরাজ কোরে
সৃষ্টি চলে বলে ফেরে।
স্রষ্টার মূল্য সদা সর্বাধিক
সৃষ্টির মূল্য নয় অধিক।
যিনি স্রষ্টা তিনিই কর্তা
সৃষ্ট হয় তার বার্তা।
স্রষ্টা হলেন মধ্য মণি
সৃষ্টি করবার মালিক তিনি।
সৃষ্টির নাই কোনো ক্ষমতা
স্রষ্টা দেয় তাকে দক্ষতা।
সৃষ্টি স্রষ্টার বলে বলিয়ান
স্রষ্টার রাখে চিরকাল খতিয়ান।
স্রষ্টা হবে একদিন নিঃশেষ
সৃষ্টি চিরতরে রাখবে পরিশেষ।।
কুড়ানি – প্রতিম ঘোষ
শত সহস্র বছর দেখেছি জীবিকার ভিন্ন পথ
বস্তিবাসী হয়ে পেয়েছি জীবিকার অন্য পথ,
পেটে খিদে বাবুরা দেবে না পয়সা চাইলে-
স্নানে এসে দেবে পয়সা নদী না চাইলে,
নদীর জলে ডুব দিলে নদী দেয় হাতে;
যুগ যুগান্তর ধরে নদীর জল বাঁচার পথে,
সকাল হতে দুপুর অবধি শহরতলির নদী ঘাটে-
যারা স্নান করে নদীমাতাকে ধাতব পয়সা বাটে,
আমি – সাথীরা নদীর গর্ভ হতে সেই পয়সা তুলি,
বাবুদের পুণ্য স্নানের পয়সায় খুদার অর্থ তুলি;
আমরা অতি সামান্য নদীর জলে পয়সা কুড়ানি।
ভার – প্রতিম ঘোষ
স্রষ্টা কি সৃষ্টি করবেন
সৃষ্টি কর্তা নিজেই জানেন
মর্জি মতো আভাস দেবেন
অবাধে সকলে তাহা মানেন।
প্রাণ নারীত্বে হয় গাঁথা
চলন বলন ধরনে কথা
জড় কে কার্য করে মাথা
স্রষ্টা বুদ্ধি যোগানে হন দাতা।
নিমিত্ত প্রাণ হয় অগ্রসর
সকলের কর্ম কেবল সার
জীবনের জন্য জীব অপার
স্রষ্টা নাও সকলের ভার।
মন জুড়ে – প্রতিম ঘোষ
মনের এ প্রান্ত হতে ও প্রান্ত
সারা জীবন অনন্ত
চিরতরে তুমি হয়ে আছো জীবন্ত।
পারি না তোমায় ভুলে বেঁচে থাকতে
তুমি আছো নেশাতে
করি চেষ্টা পারি নাকো মন হতে মুছতে।
কোন ফেরে হয়েছিল তোমার সাথে মেশ
ভাগ্য দিল না দিশা
মিটেছে তোমাকে ভালোবাসার চেতনা আশা।
কুনকে রাঙিয়ে সিঁথি তোমাকে দিয়েছিল
শাঁখা-পলায় সেজেছিলে
নব বধূ হয়ে সংসার করতে তুমি এসেছিলে।
বিধাতার করুণায় কন্যার বাবা হয়েছিলাম
জন্মগত প্রতিবন্ধী ছিলাম
আঁকতে ভগবানের কৃপায় পড়াতাম ব্যবসা করতাম।
খুঁতহীন হয়ে খুঁত কে কেন দিলে প্রেম
খঁতী না বিয়ে করতাম
বাবা বউ পাওয়ার মিথ্যে আশা দেখতাম।
তুমি তোমার মেয়ে আজ থাকতে না মন জুড়ে
মেয়ে নিয়ে গেছ ছেড়ে
একরাশ শূন্যতা নিয়ে আছি বিষন্নতায় পড়ে।
জীবন ধর্ম – প্রতিম ঘোষ
নর রূপে এলে ধরাতে
দাও বিলায়ে প্রেম জীবেতে,
করো সেবা মন হতে,
নির্লিপ্ত হও দান কর্মতে।
বন্ধ ঘরে ভগবান কোথা!
দেব নাই বুঝ তথা।
মানব প্রেম শ্রেষ্ঠ বার্তা
দীনের মাঝে ঈশ্বর জাগ্রতা।
নিচু উঁচু ভেদাভেদ
দুখীর প্রতি পরাণ ঢেলে
বিশেষ সক্ষমদের নাও কোলে
দাও প্রেম সব ভুলে।
ক্ষতি অন্যের করো না
কারো মন্দ চেও না
মিথ্যাচার কভু করো না
অধার্মিক হয়ে যেও না।
সততা জীবনের প্রাণ জেনো
ত্যাগ শ্রেষ্ঠ ধর্ম মেনো,
শত অবিচার সহ্য করো
ভালো পুস্তক পাঠ করো।
সৃষ্টি-দৃষ্টি – প্রতিম ঘোষ
কে আমারে চেনাবে পথ
কে দেবে সঠিক মত
কে করবে অন্তর জাগ্রত
কিভাবে হই কর্মে জাগ্রত।
এ সংসার বড়ই কঠিন
সংকটে ভরা ধুসর মলিন
ফন্দি ভরা শুষ্ক কঠিন
ধোঁয়ার ন্যায় কাটছে জীবন।
দিন কাটিয়ে হল রাত
ঘুমিয়ে হলেম যবে কাত
এল আবার পরের দিন
এইভাবে চলন বলন যাপন।
বল প্রভু কোথায় যাই
কিভাবে তোমার পদতল ঠাঁই
অন্তরে তোমারে জাগ্রত চাই
কোথা তোমার হদিস পাই।
তুমি জীবনের একমাত্র রক্ষাকারী
তোমারে বিনা বাঁচতে পরি!
পরাত্মা রূপে শরীরে বিচরণকারী
সঠিক পথে করো হুঁশিয়ারি।
লক্ষকোটি সম্পত্তি বিফলে যাবে
তোমার সাথে না-থাকিলে ভাবে,
এ দুনিয়ায় তুমি সত্য
আর সকল কেবল মিথ্যা।
দাও করিতে এমন কর্ম
পালি যেন তোমার ধর্ম
যা বলি যা করি
চেতনে তোমারে ধারণ করি
এ জগতে তুমিই শ্রেষ্ঠ
তুমি হলে ধন্য মিষ্ট
পাঠিয়েছো তোমার এই সৃষ্টিতে
চাই দিশা তোমার দৃষ্টিতে।
বিধিবিধান – প্রতিম ঘোষ
বিধিবিধান এমনি রকম সকম
বিদায় নেবে মেয়ে জনমে
ছেলে আনবে মেয়ে ঘরেতে
মেয়ের বাপের ঘর রবে শূন্যতাতে।
বিয়ের দিনে হাসি মুখ
বিদায় কালে কান্না মুখ
বরের বাড়ি সুখের হাট
মেয়ের বাড়ি ভাঙা হাট
সকাল রবির বেশ কদর
সদ্য যুবতীর সুশ্রী বহর
শীতের সকাল বেশি মুখর
নব সাজে তরুণী সুন্দর।
আঁখিতটে – প্রতিম ঘোষ
ওরা জানে না জীবন
মানে না আইন কানুন
ওরা মানে না তপন
ঝড় বৃষ্টি মেঘ গর্জন
বোশেখের গরম পোষের শীত
আষাঢ়ের বারিতে হয়না নত
ওদের নিজেদের নেই মতামত
ওদের নেই বাঁচবার পথ।
জন্ম হতে মৃত্যু অবধি
ফুটপাতে হয় ওদের উপলব্ধি।
ওরা সদা থাকে সুখে
ওরা ভোগ না অসুখে
সর্বদা থাকে তারা হাসিমুখে
যারা বাস করে পথেঘাটে
যারা পরে থাকে মাঠেঘাটে
হিসাব নেই কোনো পাঠে
তাই ঝড়ে জল আঁখিতটে।
মানুষ যদি হতে চাও – প্রতিম ঘোষ
মানুষ যদি হতে চাও
সর্ব আগে পারদর্শী হও।
মানুষের কর্ম করে নাও
শক্তি তেজে ডুবে যাও
ভক্তি প্রেমে মন দাও
হরি আমায় সঙ্গে নাও
কৃষ্ণ প্রেম জাগরিত হও
রাধে গোবিন্দ বুলি হও
হরিনাম সংকীর্তনে মন দাও
জীবন ধন্য করে নাও।
রাধা বিনা শ্যাম কোথা
রাধে বিন্দা বনেশ্বরি সেথা
কৃষ্ণ বিনা সুখ কোথা
কর্তব্যকর্ম পালন কর হেতা
কৃষ্ণ হলেন জগত পিতা
তার চরণে হই সমর্পিতা
মন আত্মা লহ বার্তা
পরাত্মায় হও সর্বদা বশীভূতা
ইহা হোক প্রাণের মর্মগাঁথা
দিশা দাও প্রাণে বার্তা।
গন্ধ এসেছে – প্রতিম ঘোষ
পূজার গন্ধ আকাশে বাতাসে
তার সুভাষ শিউলি কাশে,
পূজার আনন্দে সবাই মেতে
পায় না শান্তি হা-ভাতে,
পূজার গন্ধ আলোর রসনাই
শহরের ফুটপাতে কলরব হৈচৈ ;
সারাবছর যাদের আবাস ফুটপাতে
পূজার মরসুমে হবে তাদের সরতে,
আঁধারিতে খোলা ড্রেনের পাশে
কাটাতে হবে দিন অবশেষে,
পূজার গন্ধে সকলে মজেছে
হা-ভাতেরা খোলা আকাশে আছে,
প্রকৃতির অপার শোভা খুলেছে
পূজার গন্ধ চারিদিক মেতেছে
ফুটপাত বাসীদের ভোগান্তি এসেছে
খুশি জীবনে দগ্ধতা এসেছে।
মহিমা – প্রতিম ঘোষ
আতঙ্কিত মন আজ হয়েছে দুর্বার
কিরূপে পার হব এই বিশাল পারাবার
একক মন চায়না হতে পরনির্ভর
ভন্ড হয়ে পারব না ছাড়তে সংসার
একক জীবনে শতেক বাধা
তার মাঝে আছে ব্যাধির দাবা
ভুল চালে অন্যের কিস্তিমাত
লড়াই চালাই কেউ দেবে না সাথ।
জিতব বলেই নিয়েছি পণ
তুমি সাথ দেবে না সহজে ভগবান
তোমার দেওয়া ভূমিতে করব লড়াই
নিজের শত্রু আমি নিজেই
পরমেশ্বর নন এমন মহান
তিনি কারো প্রতি মুগ্ধ নন
করো নিজ কর্মকরণ
তাঁর ইচ্ছায় করতে পারো উন্নয়ন
পরম সময় – প্রতিম ঘোষ
আসিব আমি তোমার দেহে ফিরে
করছ অবহেলা অপর রে
থাকি ভিন্ন দেহের পরে
যৌবন রূপে আছি তোমার শরীরে
সবাই বৃদ্ধ হবে সময় গেলে
আজকের কিশোর দিন গেলে
যুবক হবে তুমি বৃদ্ধ হলে
যে হয়েছে বৃদ্ধ তার যৌবন ছিল
কষ্ট করে তোমাদের গড়ে ছিল
বয়স তার নিয়েছে কেড়ে যৌবন
তাই বদলেছে তার গড়ন
আমার জন্য সে রুগ্ন
দুঃখজনক পরিস্থিতিতে মগ্ন
যারে দিচ্ছ বেদনা যন্ত্রণা
গ্রহণ করছি সেই মন্ত্রণা
তোমার শরীরে করব যবে প্রবেশ
ফিরে পাবে তুমি আবেশ
বয়স বেড়েছে বৃদ্ধ দের দাও সম্মান
করো না তাদের অপমান
যখন যাব তোমার শরীরে
এর চেয়ে কষ্ট পাবে ধীরে
কর্মফল তোমায় কষ্ট দিবে
সহ্য করতে পারবে!
সন্ধ্যা – প্রতিম ঘোষ
দেবী সান্ধ্য এসো বাহুডোরে আনো মৌনতা
সান্ধ্য রানি আসিলে আসিবে বৈচিত্র্যতা
সন্ধ্যা রানির কালো ঘন কেশে পাই মুগ্ধতা
অবসান একটি দিনের বাড়িবে ইতিহাসের পাতা
সান্ধ্য আসিলে গগনে খচিত হবে জ্যোতিষ্ক মালা
সন্ধ্যার সৌগন্ধে জাগিবে নগরে অসংখ্য আলোকমালা
সান্ধ্য রানি দিগন্ত ব্যাপী ছড়িয়ে দেয় কেশের ঢালি
দেখি কালো রানির অপরূপা সৌন্দর্য খালি।
কালোর মাঝে সান্ধ্য রানি অনন্ত শক্তিতে ভালো
তার পরশে ধরিত্রী হারিয়েছে উজ্জ্বল আলো
তার আসায় উষ্ণ পৃথ্বীতে শীতলতা এলো
সন্ধ্যার আগমনে প্রদীপ উজ্জ্বলতা পেলো
সান্ধ্য ঘনায়ে মন্দিরে গৃহে দেব আরতি হয়
নিঝুম রাতে প্রেম মত্ততা সারা দেয়
দিনে পৌরশতা রাত নারীর স্নিগ্ধতা দেয়
কর্মময়ী দিনের পর শান্ত রাত বৈচিত্র্যময় হয়।
অনুভব – প্রতিম ঘোষ
প্রেমের অলিন্দ গড়েছেন সৃষ্টিকর্তা
তারে করে দিও না নীরবতা,
হৃদয়ের কঠোরে থাক পরশতা,
অসাড় মন চায় পালাই,
সত্যি কি যেতে হবেই!
তোমার ভাবনায় মন জেগে,
তোমারও আমাকে মনে জাগে
নচেৎ আমার মন উত্তাল-
হতো না মনে রেখো।
শাল শিমূলেরা ছাওয়া দেয়,
হারানো প্রেম ধাক্কা খায়,
ইহা দুই পক্ষেই সারা দেয়,
দুটি মনই ব্যথা পায়;
আমাদের উভয়ের টান আছে,
দুর হতে থাকো কাছে,
থাকবো একে অন্যের দিলে,
যতদিন রইব ধরিত্রীর আবাস্থলে।
অবসান – প্রতিম ঘোষ
সৃষ্টি অনাসৃষ্টি কুরুক্ষেত্র অবসান
আঠারোর বদলে পাঁচশত দিন।
দিনে ওঠেনা কোনো তারা
সুন্দরী যেন হয়না গরীবেরা
বস্তির সুন্দরীর আফসোস ছিল
রূপের জন্য সম্মান ছিল।
রূপটা মহল্লার অম্লান ছিল
উৎসবের এক সন্ধ্যে সেজেগুজে
কুমারীরা এসেছিল আনন্দের খোঁজে
সুশ্রী মেয়েটির হল কাল,
অনেকের দৃষ্টি গোচরে বেহাল
বর্বর অমানুষের চোখে পরল
ভালো লোকেরাও ষোড়শীকে দেখল
এক ডাক্তার কাজে নিল
সন্তানের মর্যাদা দিয়েছিল
ডাক্তার পরিবার ভ্রমণে গেল,
মেয়েটিকে সাথে নিয়ে গেল,
রাতের ট্রেনে অপহরণ হল
ষোড়শীকে বিক্রয় করা হল
বেশ্যা বাড়িতে চালান হল
ভালো খাবার পোশাক পেল
মাসি তার রূপের প্রশংসা করল
মোটা টাকায় বাবুরা পেত
অসহ্য যন্ত্রণা সহে থাকত
একদিন এক বাবু এল
মদের নেশায় পূর্ণ ছিল
বাবুটি তাদের মহল্লার মস্তান
সে ছিল বস্তিবাসীর প্রাণ।
আপদে বিপদে থাকত পাশে
ষোড়শী তাকে দেখে কাঁদে
মস্তান হাত দেয় কাঁধে
তোকে খুঁজতেই এসেছি এদেশে
নিয়ে যাব আপন দেশে
নেশা যায় মস্তানের টুটে
মেয়েটি কিছু বলে অস্ফুটে
মস্তান কপালে দিল চুমা
দীর্ঘদিনের চাওয়া নিয়ে ক্ষমা
করে মাসিকে মোটা টাকা দিয়ে
মন্দিরে মেয়েটিকে এল নিয়ে
পবিত্র শুদ্ধ করতে চেয়েছিল
দেবদাসীর কাজে নিযুক্ত করেছিল
সবার চেয়ে সেথায় আলাগ হল
রূপ সৌন্দর্য ঠিকরে পরল
মাস খানেক পার হল
বড় পূজারীর ডাক পেল
তাকে কাছে টেনে নিল
তার সমস্ত কথা জানল
বসন্তের এক সকাল হল
ষোড়শী নিজের মহল্লায় ফিরল
কালীলেপা পাঁচশত দিন মুছল।
নয় আমাদের – প্রতিম ঘোষ
আমার পুজো তোমার পুজো আমার পুজো নেই
পথে আমার জন্ম তাই পূজার খুশী নেই
পথের ধূলা মেখে পথেই বড় হই
অগোছালো শরীরে ঠাকুরের কাছে যেতে নেই
মন করে বায়না তাকে রাখা যায়না
হৃদয় করে সদা অযাচিত কামনা
মনে জাগে কত না পাওয়ার বাসনা
রাস্তায় থাকি আছে অনেক যন্ত্রণা
পুজো উৎসব নয় গরীবের
আমাদের দাম নেই সমাজের
পুজো সুধু বড়লোকের
যাহা জমা মূল্যের উপর।
ভালোবাসো – প্রতিম ঘোষ
মন হতে শেখো নিজেকে ভালোবাসতে
হৃদয় দিয়ে শেখো কল্পনা করতে
ভঙ্গুর সমাজকে শেখো চিনতে
ভালো মন্দ শেখো বুঝতে
সমাজের ভালো দিক পাবে দেখতে।
জন্মেছি যবে নিশ্চিত হবে মরতে
দুনিয়ায় কিছু জন দেবে না বাড়তে
অপদার্থের মতো মরো না তাদের হাতে
তোমার শক্তি আছে কল্পনার ভাবনাতে
তাকে ভালোবেসে হবে জাগাতে!
সেই শক্তি যারা চাইছে কাড়তে
মুখোমুখি তাদের সাথে হবে লড়তে
ভিন্ন পন্থায় ফেলবে তারা কৌশলেতে,
হৃদয়ের পরমাত্মার নাম হবে জপতে
ভক্তি কে আঁকড়ে ধরে হবে বাঁচতে!
পথ শিশু হুইল শিশু – প্রতিম ঘোষ
ধূলার পথশিশু অবাঞ্ছিত
হুইল চেয়ারের শিশু অবহেলিত।
ওদের জীবন পরশ কাতর,
ওরা ভাবলেশহীন রোমাঞ্চিত।
যে শিশু পথেতে রাত্রি যাপন করে
তার প্রতি করুণা মনে জাগে।
যে শিশুর জীবন বিভীষিকায় আবদ্ধ
তাদের দিন রাত এক করুণ নিস্তব্ধ।
পথের শিশু সারাদিন শিশুশ্রমে বিপন্ন,
হুইল চেয়ারের শিশু বদ্ধ জীবনে আচ্ছন্ন।
মাতৃহারা,অভাবী শিশু দগ্ধিত
মাতৃপরশে অক্ষম শিশু দণ্ডিত।
পথশিশুর জীবনে তবুও আনন্দ আশে
অক্ষম শিশুর জীবন ক্ষয়াতুর অশান্তিতে।
ছিন্ন বস্ত্রে পথশিশু যখন দৌড়ায় মাঠেতে
নতুন বস্ত্রে হুইল শিশু পারে না সহিতে।
গরিবের গরিবিয়ানায় পথশিশু গৌরবে
ধনীর দুলাল হুইল শিশু বাঁচে অগৌরবে।
পথশিশু লাঞ্ছিত,বঞ্চিত,মায়াময় সংসারে
অকর্মণ্য শিশুর দুঃখে কাতরতা মনেতে।
পথশিশুর জীবন দুর্ভাগা দেখি নয়নে
হুইল শিশুর দুরারোগ্য বুঝি অন্তরে।
দুই শিশুর আলাগ কষ্ট রয়ছে জীবনে
হুইল চেয়ারের শিশুর কষ্ট পারিনে সহিতে।
নিশ্চয় – প্রতিম ঘোষ
আমরা করবো জয় নিশ্চয়
করবো না ইতি
আমরা নব কলম সৈনিক
শব্দ খেলায় মাতি
ছন্দ দিয়ে কাব্য রচি
লেখনী নিয়ে মাতি
তাতেই আমরা জিতি।
যুগের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে দেখি
ভিন্ন কবিদের জবানী
কলম বন্ধুরা সকলেই দুঃখী
তবু গেঁথেছেন বাণী
লেখালেখি করে কি পেলি!
বারেক সংসার দেয় বুলি,
তথাপি কলম মধ্যমণি।
জীবন গাঁথা – প্রতিম ঘোষ
শিক্ষা সুন্দরম্ বারো বছরের কিশোর।
তার জীবন গাঁথা সেরা এ বছরের।
সেন্ট্রাল স্কুলের আমি বাংলা টিচার।
লেখা বাচার দায়িত্ব দিল হেড টিচার।
শিক্ষার লেখা সেরা হল কেন বলা দরকার?
ওর জবানিতে লিখছি সুবিধা হবে শিক্ষাকে চেনবার।
রাহুল সুন্দরম্ ছিলেন বাবা আমার
তিনি বি.এস.এফ. কর্মী ছিলেন।
মহান দেশ ভারতবর্ষ ছিল তাঁর ধ্যান।
দেশের মান রাখতে যুদ্ধ করতে গিয়ে হারালেন প্রাণ।
আমি তখন আট বাবার মৃত্যুতে শোকে কাতর মায়ের হল মরণ।
আমাদের আত্মীয় ছিল কম তাই অরফানাজে আমার হল স্থান।
গত বছরে আমার বাবা কে দেওয়া হল মরণোত্তর সম্মান।
অরফানেজ হতে আমায় নিয়ে যাওয়া হল নিতে সম্মান।
আমার আগে একজন সুন্দরী মহিলা তাঁর স্বামীর মরণোত্তর সম্মান পেলেন।
তারপর আমি নিলাম বাবার সম্মান
বাবা-মায়ের জন্য ব্যাকুল হয়ে আকুল ভাবে কাঁদছিলাম।
সেই রমণীকেও একই ভাবে কাঁদতে দেখলাম।
আমার মায়ের কথা মনে পড়ল তাঁর কাছে এগিয়ে গেলাম।
তাঁর সন্তান নেই তাঁর স্বামী আর্মিতে কাজ করতেন তিনি বিপক্ষের গুলিতে মারা গেছেন জানলাম।
মার্তৃহারা সন্তানকে সদ্য স্বামী হারা সন্তানহীন স্ত্রীকে চিনলাম।
তিনি আমায় পুত্র হিসাবে বক্ষে জড়িয়ে ধরলেন।
স্টেজে উঠে আমায় দত্তক নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন।
তারপর সরকারের লাল সূতার ফাইল নিয়ে একবছর টানাপোড়েন হল।
আমার প্রিয় বাঙালি মা সুভ্রধা সোম আমাকে কাছে রাখল।
আমার আসল উপাধি রয়ছে কিন্তু বাঙালি হিসাবে আসল মা পেলাম।
নিঃসন্তান মহিলার একমাত্র সন্তান হয়ে সেনা স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র হলাম।
মত্ততা – প্রতিম ঘোষ
প্রজাপতির দেশে মত্ততা
মৌমাছির বনে উন্মতা
এসেছে বর্ষা বার্তা
হবে শাখার নবীনতা
ধেনু গর্জন করে
কালো মেঘ ঘোরে
ধরণীর মাথার উপরে
গ্রীষ্মের রবির প্রখরতা
শুষ্ক শাখায় জীর্ণতা
নববর্ষার আগমন বার্তা
লেগেছে খুশীর পরশতা
কেতকী কদম শাখায়
উজ্জ্বল স্বরূপ দেখায়
বর্ষা বসন্ত বনে বনে
আসবে শরৎ রাণী
বর্ষা ঋতুতে বৃষ্টি ধ্বনি
ফুলের বাগান কুঁড়ি
তার ঘ্রাণে উড়ে ওলি
আসে উড়ে মাধুকরী
মধু সঞ্চয় মৌচাকে
রঙিন ডানা মেলে
প্রজাপ্রতিরা খেলে
বৃষ্টিতে আবদ্ধ ঘরে
কবি মন বেড়ায় খুঁজে,
বৃষ্টির ধারায় বর্ষার রূপে।
আত্মাতেই সুখ – প্রতিম ঘোষ
নাম হীন গোত্র হীন
আদি অন্ত হীন।
নাই জানা কত প্রাচীন!
জীবন যার অধীন।
নাই কর্ম নাই ধর্ম
শুধুমাত্র যার মর্ম।
নায় আশ্রয় অতি বিস্ময়
জীবের প্রাণ বাঁচায়।
শরীর হতে শরীরে ধায়
উন্মত্ত নাই হয়।
দেহের হয় ভিন্ন গঠন
দেহীর শুধু আর্বতন।
বাঁচবার জন্য কর্ম লঙ্ঘন
ঘটে নানা আস্ফালন।
দেহে শুধু ইন্দ্রিয় সুখ
শেষে ভোগান্তি দুখ,
জীবন সার কর্ম অপার
শেষে শূন্যতায় বিভোর।
দগ্ধ প্রাণ ক্ষুণ্ণ হয়
শরীর লয় হয়।
ধ্বংস হয়ে মরুৎ-তে ধায়
কেহ স্থিত নয়।
জ্ঞান যবে উচ্চে রয়
জীবন ঝুঁকি নেয়।
বিবেক যবে জাগ্রত হয়
আপনার খোঁজ হয়
নিজের চিহ্ন আত্মায় পাই
সেথায় স্থির হই
সময় ধায় জীবন বদলায়
আত্মা স্থায়ী রয়।
মৃত্যুর পর আত্মার পুনঃপ্রকাশ
নব শরীরের বিকাশ।
আত্মাতে হোক স্থির মন
শুদ্ধ ভাবে জাগরণ।
আত্মা পরমাত্মার ঘটুক মিলন
প্রাণে এস ভগবান।
রাত্রি কালো – প্রতিম ঘোষ
দিনের রবি বসলো পাটে
ফুটলো তারা সুদূর নীলে
সান্ধ্য রাণীর কালো চুলে
আঁধার নামে সর্ব বাটে।
সান্ধ্য রাতে চাঁদের আলো
নক্ষত্র ভরা রাত্রি কালো
জোছনা ভরা স্নিগ্ধ রাত
নেই কোথাও ঘাত প্রতিঘাত।
আঁধার রাতি জ্বলছে বাতি
আঁধারির আছে হরেক খ্যাতি
আঁধার রাণীর কালো কেশে
ভিন্ন ঘ্রাণ নাসায় আসে।
শান্ত যামিনী মুগ্ধ রজনী
কালো ঘন স্তব্ধ বনানী
জোছনা রাতে শূন্য প্রান্তর
মায়াময় প্রকৃতি অনতি সুন্দর।
ঝুঙ্কু – প্রতিম ঘোষ
আমার রাজকন্যা ঝুঙ্কুর যবে,
হলো বয়স তিন বছর,
দিনরাত বাড়িতে সে দুষ্টুমি করে,
গৃহকর্ত্রী হিমসিম খেয়ে মরে,
স্বরবর্ণ শেখাতে খায় নাজেহাল,
পাড়াতুতো বৌদি পড়ায় তারে,
সরদা বিদ্যাপীঠে ভর্তি হলো,
বই-খাতার রকম সকম দেখে,
মেয়ের দুর্দশা চিন্তা করে
কষ্টে চোখে জল আসে,
গৃহকর্ত্রীর কথায় থাকলাম চেপে,
আমার ঝুঙ্কু আবৃত্তি শেখে,
সপ্তায় একদিন যায় শিখতে,
আমায় শেখায় শিখে এসে,
রাত দশটা যখন বাজে,
ঝুঙ্কু আসে দোকান বাড়িতে,
আমায় নিয়ে যাবে ঘুমাতে,
বাড়ির দোকানে দিয়ে তালা,
ঝুঙ্কুর সাথে শোবার পালা,
আমি প্রতিবন্ধী না বুঝে-
পাকা বুড়ি শাঁসালো আমাকে,
তোমার পায়ে দেখছি ব্যথা,
ডাক্তার হয়ে সারাবো তোমাকে,
কথা আমি রেখেছি হজমে,
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করল নির্জনে
সবার আশিসে অন্যের মঙ্গলে
আমার ঝুঙ্কু যেন ডাক্তারি করে
প্রতিবন্ধী জনের যেন সেবা করে।
প্রতিম ঘোষ | Pratim Ghosh
New Travel Story 2023 | লাচুং-নাথালু’র সীমান্ত ছুঁয়ে | জয়ন্ত কুমার সরকার
New Bengali Novel 2023 | অকপটে অগ্রজকে | অতনু দাশ গুপ্ত
New Bengali Story 2023| এসো করুণা ধারায় | কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা
New Bengali Article 2023 | হুগলী জেল ও কাজী নজরুল ইসলাম | প্রবন্ধ ২০২৩
Kobita Lyrics Poetry In Bengali | Bangla kobita | Words of bangla kobita pdf | Words of bangla kobita for students | bangla kobita lyrics | bengali kobita for child | bengali poem in english | Bangla-English Poem Books | Bangla Poem for school Kids | Quotes by Jibanananda Das | Bangla kobita on Tumblr | Rahur Prem Bangla Kobita | Poem in Bengali | Shabdodweep Web Magazine | High Challenger | Shabdodweep Founder | Sabuj Basinda | Bengali Poetry | Bangla kobita | Bangla Kobita Milestone 2024 | Poetry Collection | Book Fair 2024 | bengali poetry | bengali poetry books | Bangla Kobita Milestone pdf | Bengali Poem Lines for Caption | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | Bangla Kobita Milestone in urdu | Bangla Kobita Milestone Ebook | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | Bengali Poem Lines for Caption crossword | writing competition | writing competition malaysia | Bangla Kobita Milestone in mp3 | writing competition hong kong | writing competition game | Best Bengali Poetry Folder pdf | Trending Bangla Kobita Milestone | Bangla Kobita Milestone – video | Shabdodweep Writer | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | English Literature | Bangla Kobita Milestone examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | Bangla Kobita Milestone Ranking | positive Best Bangla Kobita Collection | Bengali Poem Lines for Caption about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | freedom poem | sad poetry about life | Natun Bangla Kabita 2023 | Kobita Bangla Lyrics 2023 book | New Bangla Kobita Milestone | Writer – Bangla Kobita Milestone | Top Writer – Natun Bangla Kabita 2023 | Top poet – Natun Bangla Kabita 2023 | Poet list – Kobita Bangla Lyrics 2023 | Archive – Bangla Kobita Milestone | Bangla Full Kobita | Online Full Kobita Bangla 2023 | Full Bangla Kobita PDF | New Bangla Kabita Collection | Shabdodweep Online Poetry Story | Poetry Video Collection | Audio Poetry Collection | Bangla Kobitar Collection in mp3 | Bangla Kobitar collection in pdf | Indian Bengali poetry store | Bangla Kobita Archive | All best bengali poetry | Indian Bangla Kobita Milestone | Best Poems of Modern Bengali Poets | Best Collection of Bengali Poetry in pdf | Bengali Poetry Libray in pdf | Autograph of Bengali Poetry | India’s Best Bengali Writer | Shabdodweep Full Bengali Poetry Book | Bengali Poetry Book in Google Bookstore | Google Bengali Poetry Book | Shabdodweep World Web Magazine | Shabdodweep International Magazine | Top Poems of Modern Bengali Poets | Bangla Kobita in Live | Live Bangla Kobita Milestone | Bengali Poetry Recitation Studio | Sabuj Basinda Studio for Bengali Poetry | Bangla Kobita Sankalan 2023 | Shabdodweep Kabita Sankalan | New Bengali Poetry Memory | History of Bengali Poetry | History of Bangla Kobita | Documentary film of Bengali Poetry | Youtube Poetry Video | Best Bangla Kobitar Live Video | Live Video Shabdodweep | Bengali to English Poetry | English to Bengali Poetry | Bengali Literature | Full Bengali Life of Poetry | Bangla Kobita Ghar | Online Bangla Kobita Milestone
আমি অতি সাধারণ।
হই লেখনীতে জাগরণ।