New Bengali Novel 2023 | অকপটে অগ্রজকে (পর্ব ১) | অতনু দাশ গুপ্ত

Sharing Is Caring:
BENGALI NOVEL

অকপটে অগ্রজকে (পর্ব ১) [Bengali Novel]

সব স্মৃতিই একসময় ফিকে হয়ে আসে। চিরকাল যা আমরা বয়ে বেড়াই তা হল এক অসম্পূর্ণ স্মৃতি কথাদের কঙ্কালসার অধ্যায়। অসম্পূর্ণতা এজন্য বলছি কারণ আমাদের চিরপ্রস্থানেই চূড়ান্ত মুক্তি! সেটা অবশ্য ভবিতব্যের হাতে সপে দেওয়াই উত্তম। মনের কোণে জমতে থাকা কিছু জিজ্ঞাসা তাড়া করে ফিরছে প্রতিনিয়ত। প্রতিত্তোরের প্রত্যাশা আপাতত করা ছেড়ে দিয়েছি। যদি কোনদিন উত্তর পেয়ে যাই সেটা পরম সৌভাগ্যের বিষয় হবে।

প্রতিবিম্ব আর প্রাণ – দুই সহোদরের পত্রালাপ। অনুজ প্রাণ এর প্রবাস যাত্রার পর অগ্রজ প্রতিবিম্বের সাথে তিক্ততার সূত্রপাত! অনেকটা পিতা অবনী রায় প্রতিবিম্বের অমত থাকা সত্বেও প্রাণকে ইংল্যান্ডের কেন্টে মাস্টার্স করতে যেতে দেন যা গত পাঁচ বছর ধরে সে চেষ্টা করছিল। শেষমেশ বড় ছেলে বা আত্নীয়স্বজনের অমত সত্ত্বেও তিনি ছোট পুত্রকে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে প্রতিবিম্ব প্রাণের সাথে সবরকম যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে চার মাসের মাথায় অবনী বাবু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত হন।
পরের পাঁচ বছর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর অনুজ প্রাণ মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা বা ইমেইল না পাঠিয়ে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিত্তোর পাওয়ার কোন রকম আশা না করে ।

“নিত্যনতুন মুঠোফোনের ভিড়ে, হরেক রকমের মুঠোময় যন্ত্রের চাকচিক্যে প্রায় ফিকে হয়ে গেছে চিঠি লেখার চল। আজ হয়তো কেউ কাউকে চিঠি লেখে না বা লেখার প্রয়োজনও পড়ে না। ডায়েরিতে প্রিয় তাদের অনেক পুরোনো চিঠি এখনো রয়ে গেছে যারা মহালোকের যাত্রী হয়েছেন। সেইসব অক্ষর, তারিখ, প্রতিটি শব্দ চিরকাল বহন করে চলবো। যন্ত্রে আসা ক্ষুদে বার্তার মত ক্ষণিকের মধ্যেই হারিয়ে যেতে দেব না! “

প্রিয় দাদাভাই,

তোমাকে প্রণাম করা ছোটবেলা থেকেই তুমি কখনোই পছন্দ করতে না। পায়ে হাত নিয়ে গেলেই না বলে বুকে জড়িয়ে ধরতে। চেন্নাইতে পড়ার সুবাদে শুধু ছুটিতেই কয়েকদিনের জন্য তোমার সাথে দেখা হতো। বাকি সারাটা বছর কোন দিকে চলে যেত আর তুমি কোথায় আছো, কিভাবে আছো সে-সব আমাদের কোন খেয়াল থাকেনি। আমরা যখন শহরে যেতাম তোমার সাথে ফোনে কথা বলতে। তখন কার্ড ব্যবহার হত। ল্যান্ড ফোনের নাগাল পাওয়া আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য আকাশকুসুম কল্পনা। মা হয়তো কিছুক্ষণ হ্যালো হ্যালো করলো আর বাপি জিজ্ঞেস করলেন কেমন আছো। ব্যস! এইটুকুই। ইউনিট শেষ!! আমার তো ফোনে হাত দেওয়ার সৌভাগ্যও হতো না। শেষবারের মতো এটাই মনে পড়ে ফোন করতে গিয়ে ফোনবুথ থেকে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম পাশের দোকানে রাখা একটা বাদামী রঙের খেলনা ঘোড়া। আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু অতো কি সাধ্যে কুলোয়?? শেষমেশ বাবা আরেকটা ছোট আকারের খেলনা ঘোড়া কিনে দিলেন ছেলের মন রক্ষার জন্য। বলেছিলেন, বড় ছেলের কাছে যদি এত কষ্ট করে দূরের পথ পেরিয়ে কথা বলতে আসতে পারি তবে ছোট ছেলে কি দোষ করেছে? ওর আবদারও তো শুনতে হবে। আমাদের কাছে ও-ই তো রয়েছে!

সেক্ষেত্রে ছোটবেলার সেই দূরত্বের ব্যবধান দুই ভাইয়ের মধ্যে ভবিষ্যতে একটা অভেদ্য দেয়াল তৈরি করবে তা কে জানতো? একটু একটু করে আমরা সময়ের ব্যবধানে পরস্পরের পর হয়ে গেছি। হয়তো এসবের কিছুই হতো না যদি আমি প্রবাসী হওয়ার পরপরই বাবা হঠাৎ না চলে যেতেন! তখনকার সময়ের টাকা -পয়সার হিসেব নিয়ে তুচ্ছ কাদা ছোড়াছুড়ি আর আমার ভিসা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটাকে সটান না বলে দেওয়ার ব্যাপারটা কখনোই ছোটবেলার সেই দাদাভাইয়ের সাথে মেলাতে পারি না। যে আমি গত পাঁচ বছর ধরে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টায় গায়ের ঘাম পানি করেছি সেখানে এমন আচরণ সত্যি মেনে নেওয়া কঠিন!

এখনও মনে পড়ে একদিন কুয়াশা ঢাকা শীতের সকালে তুমি যখন চলে গেলে তখন পুজোর আসনে বসে মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে খুব কেঁদেছিলেন মা। আমি বিছানায় লাল গোলাপের নকশা করা কম্বল মুড়ি দিয়ে বসে বসে অঝোরে কাঁদছিলাম একটু দূরেই চেয়ারের উপর পড়ে থাকা তোমার গেঞ্জি আর প্যান্ট দেখে! ভেতরটা হু হু করে উঠতো। ভাবতাম কবে আবার তোমার দেখা পাব? ছুটিতে তুমি মাদ্রাস থেকে ঘরে আসা মানেই পড়াশোনায় আমার চূড়ান্ত অমনোযোগীতা, দিনগুলো কেমন যেন আনমনা হয়ে কাটানো আর একসাথে বসে মজা করে টিভি দেখা। তোমার আগমনে আমার উপরও পড়াশোনার কড়াকড়িতে কিছুটা নমনীয়তা দেখানো হত। যে ম্যাচগুলো হয়তো একা থাকলে দেখতে পেতাম না সেগুলো অনায়াসেই আরও উপভোগ্য হয়ে উঠতো। পরে যখন তুমি মাদ্রাস থেকে অগত্যা দেশে ফিরে আসলে, স্কলারশিপ পেয়েও সুইডেন যেতে পারলে না তখন তীব্র মানসিক বিষণ্নতা ভর করলেও তোমাকে দেখে বোঝার কোন উপায় ছিল না। ওইসময়ে সকালে তুমি শহরে ট্রেনিং নিতে চলে যেতে আর যেদিন যাওয়া হত না তখন বিকেলে ক্রিকেট খেলতে মাঠে। আমাদের ঘরে তোমার রুমে খেলার সব সরঞ্জাম থাকতো। ওই সময়গুলোকে এখন স্রেফ স্বপ্ন মনে হয়! পরবর্তীতে তোমার মাস্টার্স করতে অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়াটা দুই ভাইয়ের আবারও দূরত্ব বাড়িয়েছেই শুধু। এতে হয়তো ভবিষ্যতের কথাটা বলা যায়। যে যার ভবিষ্যৎ গড়তে যেখানে প্রয়োজন পাড়ি জমিয়েছে। পরে তোমার সম্পর্কে মেজ কাকার খেদোক্তি মনে পড়ে – ” ও বাইরে গিয়ে আমাদের কি হয়েছে?? আমাদের জন্য কি করতে পেরেছে?? বিদেশে গিয়ে উদ্ধার করেছে সবাইকে!” আপাতত মায়ের একাকীত্বের জন্য আমাকে দায়ী করা হয়। দোষ এটাই কেন আমি জীবনের পঁচিশ বছর বাবা- মায়ের সঙ্গে ছিলাম? শেষ সময়ে কেন প্রবাসে পাড়ি জমালাম?? কার কখন শেষ, কার কোথায় শুরু এটা বিধাতা ছাড়া কেউ জানার কথা নয়।

কিভাবে, কখন যে টাকা পয়সার মত একটা ক্ষণস্থায়ী বিষয় আমাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে ফাটল ধরালো জানা নেই। এখন তো মনে হয় ছোটকাল থেকেই ভাইদের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে ওঠাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেটা আমাদের ছিল না। হয়তো টান ছিল কিন্তু একে অপরের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া বা পারস্পরিক কথোপকথনের মাধ্যমে এক মতে পৌঁছানোর মত ব্যাপারগুলো ছিল না। আমার তো মনে হয় ভ্রাতৃত্ব বা রক্তের বন্ধন এমন একটা প্রগাঢ় অনুভব যার জন্য যে কোন বিষয়ে কথা বলার প্রয়োজনই নেই। আপনাআপনি থেকেই একে অপরের ভালো চেয়ে পাশে থাকে সহোদরেরা। হুমায়ুন আহমেদ স্যারের একটা কথা খুব মনে পড়ে যাচ্ছে – “মাঝে মাঝে আত্মার সম্পর্ক রক্তের সম্পর্ককেও অতিক্রম করে যায়!” আমাদের মধ্যে আত্মার সেই সম্পর্ক হয়তো কখনো গড়ে উঠেনি।

বাবা তোমাকে বাইরে পাঠিয়েছেন মঙ্গলের জন্যই। তোমার ভবিষ্যতের কথা ভেবে। তুমিও ইচ্ছুক ছিলে। একই কারণে শেষ বয়সে এসেও উনি আমাকে পাঠিয়েছেন। পার্থক্য এই যে এবার বাবার আকস্মিক অসুস্থতা এবং বিদায়! মায়ের সাথে কথা হলে প্রায়ই বাবাকে সবকিছুর জন্য দায়ী করেন। উনি মনে করেন, বাবার অবর্তমানে মায়ের দেখাশোনার ভার নেওয়ার কোন ব্যবস্হা করে যাননি। তখনই করে যেতেন যদি জানতেন তিনি আর বেশিদিনের যাত্রী নন। আমার এখনও মনে পড়ে আমার ফ্লাইটের আগের দিন বাবা- মা’কে দুটো চিঠি লিখেছিলাম। বাবারটা আড়াই পৃষ্ঠার, মায়েরটা দেড়। ওই সময় সব কাজেই উনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। দেখেছি মায়ের চাইতে শারীরিক সক্ষমতায় অনেক বেশি এগিয়ে। ভরসাও তাই ওনাকেই করেছিলাম। মা স্ট্রোকের পরে যেভাবে শারীরিক স্বতঃস্ফূর্ত হারিয়েছিলেন তখন সেটা থেকে সেরে উঠেছেন পুরোপুরি। মায়ের স্ট্রোকের সময় থেকে শুরু করে সব কাজেই আমি পাশে ছিলাম সবসময়। তাঁর স্বাভাবিক হয়ে উঠা পর্যন্ত আমি বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করিনি। খোঁজ খবর রেখেছি যদিও। পরবর্তীতে দেখেছি দুজনেই বেশ সুখেই সময় কাটাতেন। এদিকে চলে আসার পর কয়েক মাসেই সাজানো সংসার তাসের ঘরের মত ভেঙে গেল। তখন মনে হচ্ছিল উপরের দিক থেকে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ভেতরে ভেতরে সব ছিল ফাঁকা।

অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta

New Bengali Novel 2023 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৮) | উপন্যাস

New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৬) | উপন্যাস

New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ২) | উপন্যাস

New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৩) | উপন্যাস

bengali novel | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali novel for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali novel pdf | bengali story for kids | bengali novel reading | short story | bengali novel analysis | bengali novel characteristics | bengali novel competition | short story definition | short story english | short story for kids | short story generator | short story ideas | bengali novel length | long story short | bengali novel meaning | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | bengali novel competition india | story competition | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing cmpetitions 2022 | writing competitions uk | bengali novel writing | bangla news article | bangla article rewriter | article writing | bengali novel ai | bengali novel app | article writing book | bengali novel bot | bengali novel description | bengali novel example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali novel format | bengali novel generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | bengali novel on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | bengali novel practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | bengali novel trends 2023 | bengali novel topics 2023 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment