Bengali Articles of Punom Mymoni
Bangla Prabandha Sangraha | Read Online Essays
শ্রমিক দিবস [Shramik Divas]
১৮৮৬ সালে পয়লা মে আমেরিকায় প্রথম পালিত হয়েছিল ‘শ্রমিক দিবস’। সেদিন আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে দৈনিক আটঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকেরা জমায়েত হয়ে অতিরিক্ত শ্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে, তাঁদের অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য শুরু করে শ্রমিক আন্দোলন। শ্রমিকদের অধিকারের জন্য সংগঠিত এই আন্দোলনকে সম্মান জানাতে এবং সব শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর মে মাসের এক তারিখে পালিত হয়, ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ বা ‘মে দিবস’।
এই দিনে দেশের প্রতিটি বিভাগের শ্রমিকেরা সম্মানিত হয়, তাঁদের অবদান স্বীকার করা হয়। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাসে এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনটি সারা বিশ্বের শ্রমিকদের কাছে এক গৌরবময় বা উজ্জ্বল দিন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। এটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদযাপন দিবস।
উনিশ শতাব্দীর আগে কারখানার শ্রমিকদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অমানবিক পরিশ্রম করতে হতো । প্রতিদিন গড়ে প্রায় দশ থেকে বার ঘণ্টা আর সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করতে হতো এক একজন শ্রমিককে। কিন্তু সেই তুলনায় তাঁদের বেতন ছিল অতি নগণ্য যা তাঁদের জীবন ধারণের জন্যে ছিল খুবই কষ্টকর ফলে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপনে কাটাতো, ক্ষেত্রবিশেষে তা ছিল দাসবৃত্তি পর্যায়ের। এ নিয়ে এক পর্যায়ে শ্রমিকদের মনে ধীরে ধীরে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে। এই আন্দোলনই ছিল সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের একদল শ্রমিক দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল এবং তাদের এ দাবী কার্যকর করার জন্য সময় বেঁধে দেয় ১৮৮৬ সালের পয়লা মে। কিন্তু কারখানার মালিকগণ এ দাবী মেনে নিতে চাইলো না। অতঃপর ৪ঠা মে ১৮৮৬ সালে শিকাগোর হে-মার্কেট নামক এক বাণিজ্যিক এলাকায় হাজার হাজার শ্রমিকদের বিশাল জমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল হয় । তাদেরকে ঘিরে থাকা পুলিশের প্রতি এক অজ্ঞাতনামার বোমা নিক্ষেপের পর এক পুলিশ নিহত হয়। পুলিশবাহিনী তৎক্ষণাৎ শ্রমিকদের উপর অতর্কিতে হামলা শুরু করে যা রায়টের রূপ নেয়। আন্দোলনরত শ্রমিকদের রুখতে পুলিশ সেখানে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক এবং অনেকে আহত হয় এছাড়া অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়। পুলিশ হত্যা মামলায় শ্রমিক নেতা আগস্ট স্পীজ সহ আটজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
এক প্রহসনমূলক বিচারের পর ১৮৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। লুইস লিং নামে একজন একদিন পূর্বেই কারাভ্যন্তরে আত্মহত্যা করে এবং অন্য একজনের পনের বছরের কারাদন্ড হয়। ফাঁসির মঞ্চে আরোহণের পূর্বে আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন, “আজ আমাদের এই নি:শব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে”। ২৬শে জুন, ১৮৯৩ ইলিনয়ের গভর্নর অভিযুক্ত আটজনকেই নিরপরাধ বলে ঘোষণা করেন এবং রায়টের হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে । আর অজ্ঞাত সেই বোমা বিস্ফোরণকারীর পরিচয় কখনোই প্রকাশ পায়নি। তীব্র আন্দোলনের মুখে পড়ে শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় সরকার। শ্রমিকদের এই বলিদান বিফলে যায়নি। এর তিন বছর পর ১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা দিনে আট ঘণ্টা করে দেওয়া হয় এবং পয়লা মে-কে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । এই দিনে ছুটিও ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে আজও মে মাসের প্রথম দিনটিকে ‘শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয়, একমাত্র এই সম্মেলনেই কার্ল মার্ক্স উপস্থিত ছিলেন। তবে শ্রমিকদের এই দাবি কিন্তু একদিনেই পূরণ হয়নি, আন্দোলন সফল হতে কয়েক বছর সময় লেগেছিল এবং প্রতিবাদে প্রচুর রক্তক্ষয়ও হয়েছিল। এটি কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, পাশাপাশি জার্মানি, ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সেও ঘটেছিল ।
এরপর আমেরিকা থেকে ধীরে ধীরে চিন, রাশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে মে দিবসের তাৎপর্য ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলনের উক্ত গৌরবময় অধ্যায়কে স্মরণ করে ১৯৮০ সাল থেকে প্রতি বছরের ১লা মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে “মে দিবস” বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস”। সারা বিশ্বের শ্রমিকরা তাদের শ্রমের উপযুক্ত মর্যাদা পেতে শুরু করেন। নিজেদের অধিকার আদায়ে সফল হওয়ায় বিশ্বের ইতিহাসে সংযোজিত হয় সামাজিক পরিবর্তনের নতুন অধ্যায়। মে দিবসের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচনা হয়, তার ফলে ধীরে ধীরে লোপ পেতে শুরু করে সামাজিক শ্রেণি-বৈষম্য। শ্রমিকদের বৈষম্য এখনও পুরোপুরি নির্মূল করা না গেলেও শ্রমজীবী মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে অনেকটাই মুক্ত করেছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। ভারত ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন। বাংলাদেশে মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়ে থাকেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনগুলো দিনটিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ নানারকম কর্মসূচি পালন করে থাকে । প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে মে দিবস উদযাপন করা হয়। ২০২৩ সালের প্রতিপাদ্য বিষয় হল –
“শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি”।
এ কথা সত্যি মানুষের জীবনযাত্রায় উন্নয়ন ঘটলেও আমাদের দেশের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কর্মঘণ্টা ও নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য আন্দোলন করতে হয়। সমকাজে নারী ও পুরুষের মজুরি-বৈষম্য এখনো বিরাজমান। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না এবং যৌন হয়রানিসহ অনেক সমস্যা তাঁদের প্রতিনিয়ত ভোগ করতে হয়। তাই আমাদের করণীয়- সুখী,সুন্দর ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবাইকে দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, তবেই “শ্রমিক আন্দোলন” সার্থক হবে। জয় হোক; সার্থক হোক মেহনতি মানুষের।
নির্যাতিতা রহিমারা
আমাদের ঘরে যে মেয়েটি কাজ করে তাকে কেউ কাজের মেয়ে চাকরানি ভদ্র ভাষায় বলে গৃহকর্মী। বেশীরভাগ কম বয়সী শিশুদেরই চাহিদা বেশী। কারণ এদের দিয়ে ইচ্ছামত কাজ করিয়ে নেওয়া যায় আবার নামেমাত্র অল্প টাকায় বেতন, কখনোবা শুধুই থাকা-খাওয়ার বিনিময়ে।
প্রায় প্রতিদিনই খবরের কাগজে টেলিভিশন ফেসবুকের পাতায় গৃহকর্মীদের প্রতি অমানুষিক নির্যাতনের বর্ণনায় নিজেকে সৃষ্টির সেরা মানুষ বলে ভাবতে লজ্জা ও ঘৃণায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে হয়।
যেদিন থেকে আপনার ঘরে গৃহকর্মী রহিমা প্রবেশ করলো সেই মুহূর্ত থেকেই সে ঐ পরিবারের একজন সদস্য হয়ে গেল। পরিবারের অন্যান্যদের মতো তার ভালমন্দ ভাবাটাও সকলেরই কর্তব্য। অথচ এই রহিমাদের প্রতি আমরা কতটুকু দায়িত্বশীল?
ওদের প্রতি যে বর্বরতার আচরণ করা হয় তা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক! আপনার শিশু তুল্য যে কচি খুকিটি শুধুই পেটের দায়ে ও ক’টি কাগজের নোটের বিনিময়ে নিজের সবচেয়ে কাছের ও প্রিয়জনদের ছেড়ে কষ্টে বুকে পাথর বেঁধে আপনার আশ্রয়স্থলে এসেছে আপনারই প্রয়োজনে।
এই গৃহকর্মী রহিমাদের উপর অমানুষিক নির্যাতনের খবর কমবেশি আজ আমরা প্রায় সবাই জানি । কাজের ঊনিশ বিশ হলে কিল-চড়, গরম পানি ঢেলে দেওয়া, আগুনে লাল করা খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দেওয়া, চুল কেঁটে দেওয়া, মেরেধরে বাথরুমে আটকিয়ে রাখা। আপনার সমবয়সী শিশুটির সাথে খেলতে খেলতে হঠাৎ যদিওবা একটি খেলনা ভেঙে ফেললো! কারো দোষ বিচার না করে, আপনার শিশুটির সামনেই, গায়ের জোরে কষে একটি চড় বসিয়ে পাঁচ আঙুলের লাল দাগ বসিয়ে দেন, ঐ নিরীহ শিশুটির ছোট্ট কোমল তুলতুলে গালে।
রহিমাকে পাশে দাঁড় করিয়ে, আপনার আদরের দুলালকে তাঁর বায়নার সব মজার মজার খাবার আইসক্রিম কেক বার্গার আদর যত্ন করে মাথায় হাত বুলিয়ে খাইয়ে নাদুসনুদুস করে তুলছেন। অথচ রহিমার মনের বাসনাটা আপনার একটুও নজরে পড়লো না?
কখনোবা, কোমলমতি ঐ ছোট্ট শিশুটি তাঁর লোভ সংবরণ করতে না পেরে ফ্রিজ থেকে যদি একটু খাবার খেয়ে নিল ব্যস, চুরির অপরাধে শুরু হলো তার উপর অকল্পনীয় অত্যাচার। বাইরে কোথাও বেড়াতে বা রেস্টুরেন্টে গেলে ঝুলি বহন করার জন্য সাথে রহিমাকে নেয়া হয় ঠিকই, কিন্তু তাকে বাইরে বসিয়ে দিব্যি আপনারা সবাই মিলে চাইনিজ, বিরিয়ানি ইত্যাদি পেট পুরে খেয়ে আসেন। সেখানে একজনের খাবারও কি জুটলো না?
নাকি কাজের মেয়ে বলে কোন তোয়াক্কাই করেন নাই?
বড়ো বড়ো অনুষ্ঠান হলে মাত্র ৫০০/১০০০ টাকায় এক প্লেট খাবারের জন্য রহিমাকে ঘরে তালা দিয়ে চলে যাচ্ছেন সবাই সেজেগুজে। অথচ বিয়ে বাড়ীর সব ভারী কাজগুলো এই রহিমাকে দিয়েই করিয়েছেন। তার মনের ভিতর যে কি ঝড় তোলপাড় করছে সেই কষ্টটা একবারও কি বোঝার চেষ্টা করেছেন? তারও তো স্বাদ-আহ্লাদ আছে আপনার মতো সেও তো মানুষ! আনন্দ করার অধিকার আছে এই অধিকার থেকে আপনি তাকে বঞ্চিত করছেন। এটি রহিমার প্রতি একটি মানসিক অত্যাচার।
গৃহকর্মীদের উপর লোমহর্ষক অনেক ঘটনাই আজ প্রায় সবারই জানা। ওদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন এমন কি হত্যার মতো জঘন্যতম অপরাধ করতেও এক শ্রেণীর মানুষের বিবেকে এতটুকু নাড়া দেয় না! কিন্তু কেন, ওরা গরীব নিঃস্ব বলে?
জ্বী, ওরা নিঃস্ব বলেই আজ আপনার দ্বারে! আশ্রয়ে থেকে সবচেয়ে পরিশ্রমের কাজ শারীরিক পরিশ্রমের বিনিময়ে নিজ পরিবার, বাবা-মাকে কোরবান দিয়ে আপনার সংসারের সমস্ত কাজ নিঃশব্দে করে যাচ্ছে।
তাঁর অসহায় মলিন মুখটি আপনার অন্তরের দৃষ্টিকোণ দিয়ে একবার দেখুন, ছল ছল দু’টি চোখ আপনার দামী কোন জিনিষের উপরই রহিমার বিন্দু পরিমাণ লোভ-লালসা নেই। শুধুই আছে তীব্র একফোঁটা স্বচ্ছ ভালোবাসা পাওয়ার লোভ! একটু স্নেহের আশায় কেমন ব্যকুল হয়ে তার সাধ্যের অতিরিক্ত আপনার দেয়া কাজগুলো নির্দ্বিধায় করে যাচ্ছে। আপনার শিশুতুল্য এই ছোট্ট মানুষটি, যে আপনাদের সকলকে আরাম-আয়েশ করে শুয়ে থাকার সৌভাগ্যবান বানিয়ে দিল ।
সেই মানুষটি সামান্য পরিমাণে স্নেহ মায়ামমতায়, আপনার বুকের মাঝে একটু ঠাঁই পেতে পারে না কি?
তার বদলে ওদের প্রতি কি নিষ্ঠুর আচরণটাই না করা হয়!
সারাদিন বিরামহীন কাজ করার পর রাতে রহিমাদের ঘুমানোর জায়গা হয় স্টোররুম, রান্নাঘর, নয়তো ডাইনিং স্পেসের কোনায় একটু খালি জায়গায় জড়সড় হয়ে শুয়ে থাকার। শীতের রাতে ঠান্ডা মাটির উপর মাদুর বিছিয়ে একটি কাঁথা মুড়ি দিয়ে কাঁপতে কাঁপতে না ঘুমানোর মতোই পাড়ি দিতে হয় সারারাত। সবার খাওয়ার শেষে বাসী পচা খাবারসহ তাকে খেতে দেওয়া হয়,পরিধানের কাপড়টিও দেওয়া হয় তাদের পুরানো মলিন কাপড়। কেউ কেউ আবার ওদেরকে কোন কাজ ছাড়া নিজেদের রুমে পর্যন্ত প্রবেশ করতে দেয় না। রান্নাঘর আর বারান্দায় সারাদিন কাটিয়ে দিতে হয়। এটি ওদের প্রতি একটি অমানবিক কাজ ছাড়া আর কিছুনা । মানসিক নির্যাতন এর মতোই নিন্দনীয় কাজ।
রহিমার স্থানে আপনি আপনার নিজ সন্তানটিকে দাঁড় করিয়ে চোখ বন্ধ করে শুধু একবার ভাবুন তো, এই আচরণগুলো যদি আপনার আদরের কলিজার টুকরার সাথে করা হতো তাহলে আপনি এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা রাখতে পারতেন তো?
তেমনি এই রহিমারাও কোন এক স্নেহময়ী মায়ের কলিজার টুকরা। আপনার সন্তানকে তো গর্ভাবস্থা থেকেই আপনার চাহিদা অনুযায়ী বিলাসিতার মাঝে লালনপালন করে তুলছেন।
কিন্তু রহিমারা?
গর্ভাবস্থা থেকেই অভাবের তাড়নায় মা নিজের চাহিদাগুলোকে গলা টিপে হত্যা করে দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে, অভাব অনটনের মধ্যে জড়াজড়ি করে রহিমাকে লালনপালন করেছে। তবে আপনার মতোই রহিমার মায়েরও রহিমার প্রতি ভালোবাসার কোনই কমতি ছিল না। তবুও অভাবকে জয় করতে না পেরে অবশেষে সন্তান একটু ভাল থাকা খাওয়ার জন্য তাঁর সাত রাজার ধনকে, আপনার উপর অগাধ বিশ্বাস রেখে আমানত হিসাবে রেখে যায়।
কিন্তু অবশেষে আপনারা বিশ্বাসঘাতকতা করে, আমানতের খেয়ানত করে সেই রহিমাদের পঙ্গু ও রক্তাক্ত শরীরে হাসপাতালে, না হয় লাশ করে অভাগী মা’য়ের বুক খালি করে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দেন।
এক পেট ভাতের জন্য – পুনম মায়মুনী
‘নারী দিবস’ আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয়। এই দিবসটি উদ্যাপনের পিছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। মজুরি-বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে কারখানার নারী শ্রমিকেরা ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন। তবে বিশ্বের এক এক দেশে নারীদিবস উদ্যাপনের প্রধান লক্ষ্য কিন্তু এক নয়, এক এক প্রকারের হয়। কোথাও নারীর আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব পায়, কোথাও নারীর প্রতি শ্রদ্ধা ও সাধারণ সম্মান উদ্যাপনের মুখ্য বিষয় হয়। আমি আমার এই লেখার ট্রপিক অনুযায়ী জাতিসংঘের এ কয়টির প্রতিপাদ্য তুলে ধরলাম।
১৯৯৮ – নারী এবং মানবাধিকার,
১৯৯৯ – নারী প্রতি সহিংসতামুক্ত পৃথিবী,
২০০০ – শান্তি স্থাপনে একতাবদ্ধ নারীর,
২০০৭ – নারী ও নারী শিশুর ওপর সহিংসতার দায়মুক্তির সমাপ্তি,
২০০৯ – নারী ও কিশোরীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে নারী-পুরুষের একতা,
২০১৩ – নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়
এবং
২০২৫ – সকল নারী ও মেয়েদের জন্য অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন, নারী ও কন্যার উন্নয়ন।
আমার কাছে সত্যি এখন নারী দিবস বছরের একটা দিন বা তারিখের মতো মনে হয়। ২০২৫ সনের মার্চের ৮ তারিখ নারী দিবস, আবার আসবে ২০২৬ সনের ৮ তারিখ… এভাবে বছরের পর বছর এসেছিল ভবিষ্যতেও আসতে থাকবে কিন্তু কী সুফল হচ্ছে বা এই দিবসের মূল্য হচ্ছে ?
আমরা জানি কোন দিবস পালনে সভা কিংবা সেমিনারগুলোতে বিগত বছরের কর্মসূচিগুলো পর্যালোচনা করে তার ভিত্তিতে প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়। কখনো আবার প্রয়োজনে নতুন নতুন আইনও প্রয়োগ করা হয়। তবে এগুলো শুধু ঐ কাগজ কলমেই লিপিবদ্ধ থাকে। আইনের সুষ্ঠু বিচার আর দেখলাম কই! অবশ্যই আমি আমার দেশের কথা বলছি। সঠিক প্রমাণ পাওয়ার পরও ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধী বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। হতাশ আর হয়রানি ছাড়া ভিক্টিমের ভাগ্যে আর কিছুই জোটে না।
নারীদের জীবন কি শুধুই সংগ্রাম, যুদ্ধ, টানাপোড়ন, হিসাব, ত্যাগ, অবহেলা, সবকিছু মেনে নেয়া, দেখেও অন্ধ হয়ে থাকা, শুনেও কালা হয়ে থাকা, আঘাত পেলেও বোবা হয়ে থাকা, ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখা, নিজের বলতে কিছুই না ভাবা, নিজের জন্য নয় অন্যকে সুখী করা, নিজের অধিকার কেউ কেঁড়ে নিলেও ধৈর্য ধারণ করে থাকা, সমাজের সমস্ত দোষ ত্রুটিগুলো নিজের ঘাড়ে নেয়া, পিতৃ সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া… এইতো নারীর সংজ্ঞা। প্রতিদিনই আমরা দেখছি নারীদের প্রতি অমানুষিক নির্যাতন, অমানবিক আচরণ, অত্যাচার, হত্যা, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে… এই অত্যাধুনিক যুগে এসেও সেই আইয়ামে জাহেলিয়া যুগ বা অন্ধকার যুগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সে যুগে পুরুষ-শাসিত সমাজে নারীদের উপর অমানুষিক বর্বরতার কথা আমাদের অজানা নয়। কিছু কিছু অত্যাচার আর নারীদের মর্যাদার রদবদল হলেও তা একেবারেই নগণ্য! এখনো নারীরা ঘরে-বাইরে পদে পদে অবহেলিত ও নির্যাতিতা।
শিশু থেকে বৃদ্ধার নিরাপদ আজ অনিশ্চিত। এ কোন নষ্ট সমাজে বাস করছি আমরা? আধুনিক নাকি সেই অন্ধকার যুগের সমাজে? মেলাতে পারছিনা। এ কোন অসুস্থ অসভ্য সমাজ, যে মেয়ে শিশুটি নিজেই নারী-পুরুষের পার্থক্য এখনো বুঝে উঠতে পারেনি, যে শরীরে নারীত্বের ফুল এখনো ফুটেনি, প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানোর বয়স, জীবনের স্বপ্ন দেখার আকাঙ্ক্ষা এখনো মনে উদয় হয়নি, পৃথিবীর রূপ, রঙ, রস এখনো দেখাই হয়নি, কলি থেকে ফুল না ফুটতেই মানুষরূপী হায়েনাদের কাম লালসার কালো থাবায় আর শকুনিদের রক্তচক্ষু ধারালো ছুঁচালো ঠোঁটের আঘাতে আঘাতে নিষ্পেষিত হয়ে পৃথিবীর এক ভয়ঙ্কর রূপ দেখে চিরবিদায় নিতে হয় এ জগৎসংসার থেকে…
যে শিশুটির পুতুল পুতুল খেলার বয়স, মিছেমিছি রান্নাবাটির খেলার বয়স, এক্কাদোক্কা, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, লুকোচুরি, বৌছি, কুমির কুমির খেলার বয়স, নীল জোছনার আলোয় উঠোনে মাদুর বিছিয়ে মায়ের কোলে রূপকথার গল্ল শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাবার কথা, খোলা পৃথিবীর আলোবাতাসে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়ানোর কথা আর তাঁকে কি-না পড়তে হয় নরপশুদের লোলুপ দৃষ্টিতে! কেন এই ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুটির নরপশুদের শিকার হতে হয়? তাঁর ছোট্ট কোমল দেহটাকে খাবলে খাবলে ছিঁড়েখুঁড়ে রক্তাক্ত করে নিষ্পেষিত করে নিঃশ্বাস বন্ধ করে দেবার অধিকার কে দিল এই কালপিটদের? এই ঘৃণিত অপরাধ করার সাহস কে তাঁদের যুগিয়েছে? তাঁরাই যারা এই সমাজের কীটদের অপরাধ করার সহযোগিতা করে আরও দুঃসাহস বানিয়ে দেয়, আইনকে ফাঁকি দিয়ে যারা সত্যকে মিথ্যা সাজিয়ে এই নরপশুদের আরও বেশি জানোয়ার করে গড়ে তুলছে যার ফলে সমাজ হচ্ছে আরও নোংরা, ঘৃণিত, কলুষিত।
এই মুখোশধারীরা সবাই এক কাতারে সমান দোষে দোষী। তাহলে উপরোক্ত প্রতিপাদ্যগুলো কী শুধুই লিপিবদ্ধ? আমরা না সৃষ্টির সেরা জীব? মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।’
(সুরা তিন, আয়াত :৪)। কিন্তু এই মানুষরূপী নরপিশাচদের অবয়ব থাকে এতো জঘন্য, বিকৃত যা গোটা মানবসমাজকে করে কলঙ্কিত, পৃথিবীকে করে দুষিত। মূলত মানুষের নৈতিক শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবে আজ সমাজের এই অধঃপতন। আজ চিৎকার করে আবারো গাইতে ইচ্ছা করে সেই গানটি…
কতটুকু অশ্রু গড়ালে হৃদয় জলে সিক্ত
কত প্রদীপ শিখা জ্বালালেই জীবন আলোয় উদ্দীপ্ত
কত ব্যথা বুকে চাপালেই তাকে বলি আমি ধৈর্য
নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার…
— হায়দার হোসেন —
প্রতিনিয়তই আমরা ধিক্কার দিয়ে যাচ্ছি নিজেকে, এই সমাজকে। এর শেষ কবে জানি না! সুষ্ঠু ও সঠিক বিচারের অভাবে আজ শিশু থেকে বৃদ্ধা নারীরা চরম নিরাপত্তায় ভুগছে আর অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে দাম্ভিকতার সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে লোক সমাজে। সে-সকল হত্যাকারী ও ধর্ষণকারীদের তীব্র নিন্দা, ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই। ২০২৫ সকল নারী ও মেয়েদের জন্য অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন, নারী ও কন্যার উন্নয়ন। এর বাস্তবায়ন করার জোর দাবি জানাই। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি। সবশেষে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলবো, সন্তানই হলো বাবামায়ের সবচেয়ে বড়ো সম্পদ, ছেলে হোক আর মেয়ে হোক। মনে রাখবেন,
— —বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর…
— কাজি নজরুল ইসলাম —
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো নারীরা যতই মাথা উঁচু করে কথা বলুক এখনো নারীদের তেমন মূল্যায়ন করা হয় না। ইচ্ছার কোন গুরুত্ব দেয়া হয় না। আর বারবার নারী নির্যাতনের নির্মম ঘটনাগুলো আমরা একের পর এক দেখেই যাচ্ছি, দিনের পর দিন সামাজিক অবক্ষয় বেড়েই চলেছে এগুলো যেন এখন এক সামাজিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। এতে আমাদের কি কোন দায় নেই? গাফিলতি নেই? এর জন্য কি আমরা নিজেরাই দায়ী না? আমরা এখনো “পাছে লোকে কিছু বলে” এই মন-মানসিকতায় পড়ে আছি। বিয়ের পর মেয়েরা যেন পর হয়ে যায় নিজ পরিবারের কাছ থেকে। শ্বশুরবাড়িতে মেয়ের কোনো সমস্যা হলে বাবা-মায়েরা তাঁর দায়ভার নিতে চায় না, চায় না মেয়েটি ফিরে আসুক শুধু একমাত্র লোকলজ্জা ও সমাজে মানসম্মানের ভয়ে।
যে কোনভাবেই হোক তাঁকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আবার পাঠানো হয় স্বামীর সংসারে, বলা হয় মানিয়ে নিতে, একটু ধৈর্য ধর, সব ঠিক হয়ে যাবে, পুরুষমানুষ একটু এমনই হয়, মেয়েদের সবুর করে থাকতে হয় ইত্যাদি, ইত্যাদি … এই ধৈর্য আর সবুর থাকতে থাকতে একদিন সেই মেয়েটির পৃথিবী নামের এক নরকের ভয়ঙ্কর রূপ দেখে জীবনের ইতি টানতে হয়। আবার নিজ পরিবারে ফিরে আসে কিন্তু জীবিত নয় লাশ হয়ে।
তখন কোন লোক বা কোন সমাজ আপনার কষ্টের অংশ ভাগ করে নিতে এগিয়ে আসে? কেউ পাশে থাকবে না। কন্যার জীবনের চেয়ে বড়ো করে যেখানে আপনার লজ্জা ও সম্মানের ভয়’কে প্রাধান্য দিয়ে লোকচক্ষুর আড়াল করতে চাইলেন অথচ কন্যার মৃত্যুর পর সেমিনার, সভা, র্যালি করে বিশ্ববাসীর কাছে কন্যার হত্যা কিংবা ধর্ষণের বিচার চাইছেন। তখন লজ্জা বা সম্মান কোথায় থাকে? একটা জীবনের মূল্যের চেয়ে লজ্জা ও সম্মান কখনো বড়ো হতে পারে না। আমাদের দেশে দারিদ্র্যের সংখ্যা বেশি আবার শিক্ষারও অভাব আর সেখানে নারীদের অবস্থা আরও নাজুক। এক পেট ভাতের জন্য মেয়েকে যেন বলি দিয়ে দেয়…বিয়ের বয়স না পেরুতে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরজবরদস্তি করে মেয়েকে বিয়ে দেয় এ যেন আমাদের সমাজের স্বাভাবিক একটা চিত্র। আর যৌতুক প্রথা তো আছেই। আবার এক ধরনের অভিভাবকেরা আছে তাঁরা টাকা ও সম্পত্তির লোভে কচি মেয়েটাকে বৃদ্ধ পাত্রের সাথে বিয়ে দিতে মোটেও কুণ্ঠাবোধ করে না।
দারিদ্রতা নয় বরং সচেতনতার অভাবেই আজ নারীরা অবহেলিত। মেয়েকে বিয়ের যৌতুক দিবেন বলে যে টাকাটা আপনি জমাচ্ছেন সেটা মেয়ের পিছনেই খরচ করেন। আপনার সাধ্যানুযায়ী মেয়েকে লেখাপড়া শেখান, সেটাও না পারলে হাতের কাজ শেখান, সেলাই, রান্না, পার্লারের কাজ এখন ছেলেমেয়ের কাজের কোন পার্থক্য তো নেই। সব কাজেরই মূল্য আছে। অন্তত এক পেট চালানোর জন্য কাজ শিখান যেন এই এক পেট ভাতের জন্য কোনো নারীকে হায়নাদের শিকারে পড়তে না হয়, এভাবে অকালে মৃত্যুবরণ করতে না হয়, মৃত্যুর আগেই জিন্দা লাশ হয় বেঁচে থাকতে না হয়! সম্পত্তি-টাকা, বাড়ি-গাড়ি, ক্ষমতা দেখে নয়, পাত্র মানুষ না অমানুষ? এগুলো ভালো করে যাচাই-বাছাই করে তবেই মেয়েকে সোপর্দ করেন। নইলে একটা ভুলের জন্য…আজীবনের কষ্ট! মনে রাখবেন,
মেয়েটি কিন্তু আপনার
কেন হবে অন্যের শিকার,
সময় এসেছে ভাববার
এখন সিদ্ধান্ত আপনার।
পুনম মায়মুনী | Punom Mymoni
Women’s role in Christian society | খ্রীষ্টীয় সমাজে নারীর অবস্থান
Tahiya lagi besha | তাহিয়া লাগি বেশ | অভিজিৎ পাল
Gaja-Uddharana besha | গজ-উদ্ধারণ বেশ | অভিজিৎ পাল
Padma besha | পদ্ম বেশ | অভিজিৎ পাল
Bangla Prabandha Sangraha | Shabdodweep Web Magazine | Punom Mymoni
In the vast ocean of Bengali literature, the Bangla Prabandha Sangraha (বাংলা প্রবন্ধ সংগ্রহ) holds a special place. A well-curated collection of insightful Bengali essays, this form of literary expression captures thoughts, observations, and reflections on society, culture, art, philosophy, and daily life. With the increasing shift towards digital platforms, web magazines like Shabdodweep Web Magazine are playing a vital role in preserving and promoting Bengali essays.
What is Bangla Prabandha Sangraha?
Bangla Prabandha Sangraha means a collection of Bengali articles or essays. These essays are typically short to medium in length and reflect the personal views or social observations of the article writer. Essays included in a Bangla Prabandha Sangraha often cover diverse themes such as education, tradition, festivals, environmental issues, modern life, and moral values.
In today’s world, a strong Bangla Prabandha Sangraha not only contributes to Bengali literature but also becomes a source of knowledge and awareness for the wider Bengali-speaking audience.
Shabdodweep Web Magazine and Its Literary Contribution
Shabdodweep Web Magazine is a well-known online platform dedicated to Bengali literary content. It regularly publishes poetry, stories, and essays that reflect the beauty and depth of Bengali literature. One of the standout contributors on this platform is Punom Mymoni, an experienced article writer who has written several engaging essays and stories that have been well-received by readers.
Shabdodweep’s Bangla Prabandha Sangraha includes a variety of topics that appeal to readers of all ages. From social issues to literary criticism, from cultural reviews to environmental awareness – every essay is presented with clarity, emotion, and purpose.
Importance of Bangla Prabandha Sangraha in Bengali Literature
A Bangla Prabandha Sangraha offers immense value to both casual readers and scholars of Bengali literature. Here are a few reasons why it is so important:
Preserving Cultural Heritage: Bengali essays reflect the culture and thoughts of the time, capturing social norms and everyday life.
Promoting Critical Thinking: They help readers analyse, reflect, and form opinions on important matters.
Educational Tool: These essays are widely used in schools and colleges to help students develop writing and analytical skills.
Encouraging Creative Expression: Aspiring writers can use Bangla Prabandha Sangraha as inspiration to build their own voice.
Characteristics of a Good Bangla Prabandha
A good essay in a Bangla Prabandha Sangraha is:
- Concise and Clear
- Rich in Content and Logic
- Engaging and Thoughtful
- Written in simple, relatable Bengali language
Writers like Punom Mymoni bring a sense of freshness and relevance to these essays, making them not only readable but also deeply meaningful.
The Role of Article Writers in Shaping Bengali Article Culture
An article writer is not just someone who shares information; they are observers, thinkers, and storytellers. On Shabdodweep Web Magazine, every Bengali article is crafted with care and experience. Writers like Punom Mymoni make valuable contributions to the platform by sharing essays that touch on real issues, personal experiences, and cultural tales.
Topics Covered in Shabdodweep’s Bangla Prabandha Sangraha
- Education and youth
- Festivals and traditions
- Women empowerment
- Mental health awareness
- Environmental protection
- Digital age and modern lifestyle
- Literary critiques and book reviews
These topics make the Bangla Prabandha Sangraha a rich source for anyone interested in Bengali thought and intellectual discussion.
Why Read Essays on Shabdodweep Web Magazine?
Easy Access: Read on mobile, tablet, or computer.
Quality Content: Every article is reviewed for clarity, originality, and value.
Diverse Voices: From senior writers to fresh talents like Punom Mymoni.
Bengali Literature in One Place: Enjoy stories, poems, and essays all under one roof.
Conclusion
Bangla Prabandha Sangraha (বাংলা প্রবন্ধ সংগ্রহ) is an essential part of Bengali literature. Through platforms like Shabdodweep Web Magazine, readers can now easily access a wide collection of Bengali essays written by expert article writers. These essays are not just texts; they are windows to culture, emotion, and intellect.
Whether you’re a student, a literature lover, or someone looking to explore the depth of Bengali articles, this collection is worth exploring. Start reading today on Shabdodweep Web Magazine and immerse yourself in the thoughtful world of Bangla Prabandha Sangraha.
FAQ (With RankMath FAQ Schema)
Q1: What is Bangla Prabandha Sangraha?
Bangla Prabandha Sangraha is a collection of Bengali essays that cover social, cultural, and personal topics written by skilled article writers.
Q2: Where can I read the best Bengali essays online?
You can read top-quality Bengali essays in the Bangla Prabandha Sangraha section of Shabdodweep Web Magazine.
Q3: Who are the article writers featured in Shabdodweep Web Magazine?
Shabdodweep features many talented writers. One notable name is Punom Mymoni, who has written many popular essays and stories.
Q4: Can I contribute to Shabdodweep’s Bangla Prabandha Sangraha?
Yes, Shabdodweep welcomes new article writers. You can submit your Bengali essay for review and possible publication.
Q5: Is the content on Shabdodweep suitable for students?
Absolutely. The Bangla Prabandha Sangraha on Shabdodweep contains educational and thoughtful content that is perfect for students and literature enthusiasts.
Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio