Antarale | অন্তরালে | মনসুর আলি | Story 2023

Sharing Is Caring:
Antarale

অন্তরালে – মনসুর আলি [Antarale]

সনাতনবাবু ছেলেটাকে বিয়ে দিয়ে একমুহূর্ত শান্তিতে নেই। আজ এটা নিয়ে ঝগড়া তো কাল ওটা নিয়ে ঝগড়া। বৌমা আশা মেয়েটা যে এত ঝগড়াটে হবে তা ছেলেকে বিয়ে দেবার সময় বিন্দু পরিমাণ টের পাননি সনাতনবাবু। আজ শাশুড়ির সাথে ঝগড়া তো কাল শ্বশুরের সাথে ঝগড়া। শাশুড়ি বিনোদিনীদেবী তো সব মুখ বুজে সহ্য করেন। আর ছেলে অভিনব কিচ্ছুটি বলে না বউকে। কিন্তু এভাবে কি বাঁচা যায়? বাপ রে বাপ! কী ঝগড়াটে মেয়ে রে বাবা!

সনাতনবাবু একটা লেদার কারখানায় কাজ করতেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। ছেলেটা গ্র্যাজুয়েশন করে চাকরি-বাকরি পাচ্ছিল না। ফলে ছেলেকে নিয়ে চিন্তান্বিত বাবা সনাতনবাবু ওনার কারখানার মালিকের সাথে কথা বলে ওই কারখানাতেই অভিনবর জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সে আজ থেকে পাঁচ বছর আগের ঘটনা। প্রাইভেট চাকরি। তবে বেতন যা পায় অভিনব তাতে সংসার মোটামুটি ভালোই চলে যায়। তাছাড়া সরকারি চাকরি পেতে গেলে যে পরিমাণ লাগাতার অধ্যয়ন ও পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় তেমন পরিশ্রম অভিনব করেনি। পড়াশোনা করত। ছাত্র হিসেবে মাঝারি ধরনের ছিল ও। সবাই যে পড়াশোনায় ভালো হবে তা তো বাস্তবে হয় না। তাই সনাতনবাবুর নিজের ছেলের বিরুদ্ধে কোনওদিন তেমন কোনও অভিযোগ ছিল না। ইতিহাস নিয়ে অনার্স গ্র্যাজুয়েট হয়েছিল অভিনব।

অভিনব কিন্তু ওর এই অবস্থাতেই সন্তুষ্ট। ছাত্রজীবনেও ঠিক একই রকম ছিল। প্রতিবছর মোটামুটি ধরনের একটা ফল করত পরীক্ষায়। তাতে ওর কোনও ক্ষোভ থাকত না। ভবিষ্যতে কী হবে না হবে সে নিয়ে তেমন মাথা ঘামাত না। আর আশা কিন্তু একটু অন্য ধরনের মেয়ে ছিল। একটু আয়েসী ধরনের। ওর বাবা সরকারি অফিসের বড়কর্তা ছিলেন। এখনও আছেন। বয়স পঞ্চান্ন বছর। দাদা বিসিএস অফিসার। সুতরাং বড়লোকয়ানা চাল তো থাকবেই এমন পরিবারে। আশাও তেমনভাবে মানুষ হয়েছে ওর বাবা-মা’র কাছে। ফলে শ্বশুরবাড়িতে এসে একটু অসুবিধাই হচ্ছিল ওর। সকালে বিলাসিতাপূর্ণ প্রাতরাশ থেকে শুরু করে দুপুরে রাজকীয় মধ্যাহ্নভোজ কিছুই পাচ্ছিল না এখানে। বাবার বাড়িতে ওর জামাকাপড় থাকত অঢেল। অভিনবর কাছে এসে ওর সে বিলাসিতা একেবারে শূন্য স্তরে নেমে এসেছে বলা যায়। সেই চার মাস আগে থেকে আশা অভিনবকে বলে আসছে একটা দামি বেনারসি শাড়ি কিনে দিতে। অভিনব ‘কিনে দেবো, কিনে দেবো’ এই বলেই কাটিয়ে দিয়ে চলেছে। কিনে আর দিচ্ছে না।

আশা ভালোমতোই জানে, কী করে আর কিনে দেবে, স্বামী যে একটা অতি সাধারণ মানের চাকরি করে। আয় আর কতটুকু। মাস গেলে হয়ত পনেরো হাজার টাকা। আশা মনে মনে ভাবে, নাহ। এভাবে আর জেদ করবে না ও। স্বামীর যেমন আয় তেমন ভাবে জীবন কাটাবে। কিন্তু কিছু একটা এসে ওর সে পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেই কিছু একটা হলো ওর অতীত জীবনে চরম বিলাসিতার মাঝে দিন কাটানোর অভ্যাস। রাজকীয় প্রণালীতে জীবনযাপনের সেই অভ্যাস। ও চাইলেও ওর মনের মধ্যেকার সেই চাহিদাগুলোকে মন থেকে বাদ দিতে পারছে না। মনের অবচেতনে নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করতে থাকে আশা। সারাক্ষণ কেমন গুমরে থাকে।

অভিনবদের বাড়িটা একতলা। তবে সুন্দর বাড়ি। বাইরে কমলা রং, ভিতরে মার্বেল পাথর বসানো, রঙিন মসৃণ দেওয়াল। বাড়িতে একখানা এসিও আছে। সেটা আগে ছিল না। আশা এখানে আসার পর অভিনব কিনে এনেছে। একতলা বাড়িতে গ্রীষ্মকালে খুব গরম লাগে। তাই আশার কথায় অভিনব চল্লিশ হাজার টাকা খরচ করে একটা এসি এনে বাড়িতে লাগিয়েছে। ওদের বিয়ে হয়েছে আজ ছ’বছর। কিন্তু কোনও সন্তান নেই। ওরা দুজন পরিকল্পনা করে রেখেছে, বিয়ের সাত বছর পর সন্তান নেবে। সনাতনবাবু বা বিনোদিনীদেবীরও এতে তেমন কোনও আপত্তি নেই। এ তো গেল অভিনব আর আশার কথা। এছাড়াও ওদের সংসারে একটা বড় দুঃখ আছে। তা হলো সনাতনবাবুর অসুস্থতা। উনি কার্ডিয়াক পেশেন্ট। এর আগে বেশ কয়েকবার হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে ওনার। ফলে বাড়িতে একটা চাপা টেনশন সবসময় রয়েই গেছে। কখন কী হয়ে যায়। বর্তমানে সনাতনবাবুর বয়স ষাট বছর।

ডাক্তার বলে দিয়েছেন, অতি শীঘ্রই ওনার বাইপাস সার্জারি করাতে হবে। নাহলে ওনার মৃত্যুও ঘটতে পারে যেকোনও সময়। কিন্তু এ সার্জারি হবে কীভাবে? অনেক টাকার প্রয়োজন যে। তা প্রায় তিন লাখের মতো। সনাতনবাবু বা অভিনব কারোরই অ্যাকাউন্টে যে অত টাকা নেই এই মুহূর্তে।
আজ অভিনব অফিস থেকে ফিরতেই আশার সাথে ওর বেধে গেল ঝামেলা। আশা বলছে, ওকে একটা গোল্ড ইয়ার রিং কিনে দিতে হবে। আর অভিনব বলছে, ও এখন ওটা কিনে দিতে পারবে না। সময় লাগবে। অনেকটা সময়। ওকে একবছর সময় দিতে হবে। একজোড়া সোনার ইয়ার রিং-এর দাম কি কম? বর্তমানে সোনার যা দাম!

আশা চেঁচিয়ে ওঠে, ‘এই তো বিয়ে হয়েছে ছ’বছর হয়ে গেল, আমাকে কোন দামি জিনিসটা কিনে দিয়েছ তুমি? বাবা কেন যে তোমার মতো একজন সাধারণ আয়ের ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিলেন কে জানে। তার চেয়ে বিয়ে না দিতেই পারতেন, সে অনেক ভালো হতো। অন্তত বাবার কাছে ভালোভাবে থাকতে পারতাম। কী কপাল যে করে এসেছিলাম ভগবান জানেন!’

BENGALI STORY

অভিনব রেগে যায়, ‘বেশ তো বড় বড় কথা বলছ। আমার খবর রাখো? বাবাটা মরতে বসেছেন। সার্জারি করাতে হবে। তিন লাখ টাকার দরকার। নিজেরা না খেয়ে না দেয়ে একটু একটু করে টাকা জমাচ্ছি। তুমি কি জানো এই তিনবছর হচ্ছে আমি বাইরে কোনওদিন এককাপ চা-ও খাইনি? তুমি আমার জীবনটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিলে। তোমার মতো মেয়েকে বিয়ে করে আমারও কপাল পুড়েছে একথাও তুমি জেনে রাখো।‘ এই বলে অভিনব পাশের ঘরে চলে গেল।

সনাতনবাবু সব শুনছিলেন। তিনি কেবল একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন। ভাবছেন, এই কারণে হয়ত পুরনো যুগের লোকেরা বলতেন, ছেলে বিয়ে দিতে হয় গরিব ঘরে। আজ যদি আশা কোনও দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হতো বা আর্থিকভাবে সনাতনবাবুদের সমগোত্রীয় কোনও পরিবার থেকে আসত, তাহলে এমনটা হয়ত হতো না। আশার বাবার প্রচুর রোজগার। মাস গেলে বেতন প্রায় আশি হাজার টাকা। তাছাড়া বাজারে ওনাদের চারখানা দোকান ভাড়ায় দেওয়া আছে। ফলে অর্থের অভাব কী সে জিনিসটা ওঁরা জানবেনই বা কী করে? আর তাঁর মেয়ে আশাও জানবে কী করে? আশার বাবা দিবাকরবাবু জামাইকে কোনওদিন কোনও সাহায্য করেননি। ওনার কথা, জামাই নিজের চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হোক। কারোর দাক্ষিণ্যে নয়। অভিনবও কোনওদিন অর্থ বা অন্য কোনও কিছুর জন্য শ্বশুরমশাইয়ের কাছে হাত পাতেনি। ও কিছুটা স্বাধীনচেতা মানুষ। কারোর কাছে হাত পাতা ওর স্বভাবে নেই। একাজ ও পারে না।

অভিনবর মা বিনোদিনীদেবী বারান্দায় বসে কাঁদতে লাগলেন। কিছুই যেন বলার নেই আজ ওনার। ছেলেকে বড়লোকের মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে কী মারাত্মক বিভ্রাট যে ঘটিয়ে ফেলেছেন ওঁরা, আজ তিনি ভালোমতোই উপলব্ধি করতে পারছেন। একটা চাপা কষ্ট এসে সনাতনবাবুর মাথাটাকে চারদিক থেকে যেন পিষ্ট করে দিতে থাকে। উনি তৎক্ষণাৎ আশাকে ডাকেন। তারপর অভিনবকে। আশাকে বলেন, ‘বৌমা, আমরা তোমার বাবার মতো ধনী লোক নই। তাই বাবার বাড়িতে যে বিলাসিতা পেতে এখানে তা পাবে না। এভাবেই থাকতে হবে। আমার ছেলে যেমনভাবে তোমাকে রাখতে পারবে তোমাকে ঠিক তেমনভাবেই থাকতে হবে। থাকতে পারলে থাকো, আর যদি থাকতে না পারো তাহলে বাবার কাছে ফিরে যেতে পারো। আমি আমার ছেলের বিয়ে দিয়েছি, আমিই আমার ছেলের সংসার নাহয় ভেঙে দেবো। ছেলের অন্যত্র বিয়ে দেবো। গরিব মানুষের মেয়ের সাথে। সে অন্তত তোমার মতো হবে না আশা করি। আমার এই বৃদ্ধ বয়সে আমি এত কষ্ট আর সহ্য করতে পারছি না।‘ তারপর ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘অভিনব, তুই কী বলছিস?’ অভিনব বলল, ‘আমার কিছু বলার নেই বাবা।‘

বিকেলে আশাকে আর বাড়িতে দেখা গেল না। চলে গেছে কোথাও। অভিনব ঘরে বসে কাঁদতে থাকল। একটা সংসার যে কী জিনিস তা শুধু সে-ই জানে যার সংসার ভাঙে। যে পাখির নীড় ভাঙে শুধু সে পাখি বোঝে নীড় ভাঙার কী যাতনা। রাত পার হয়ে গেল। আশা ফিরল না। সনাতনবাবু কাঁদতে লাগলেন। ওনার একটা কথাতেই অভিনবর সংসারটা ভেঙে গেল। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়েই থাকে। তা বলে অমন কথা শ্বশুরমশাই হয়ে বৌমাকে বলা ঠিক হয়নি সনাতনবাবুর। এখন এমনই মনে হচ্ছে ওনার। পরদিন সকাল দশটায় ফিরে এল আশা। এসে বাড়িতে ঢুকল। অভিনব বলল, ‘কোথায় গিয়েছিলে?’
‘বলব না।‘, বলল একরোখা মেয়ে আশা।

অভিনবর মাথাটা গরম হয়ে ওঠে। বাড়ির বউ কিনা অন্য জায়গায় সারাটা রাত পার করে এল, আর কোথায় গিয়েছিল জানতে চাইলে বলে ‘বলব না’! সনাতনবাবু বললেন, ‘বৌমা, সত্যি করে বলো সারাটা রাত কোথায় ছিলে?’ আশা ঠোঁট খোলে না।
‘নাহ, এমন মেয়েকে আর ঘরে রাখা নয়। এক্ষুনি বিদেয় করতে হবে। এই অভিনব ওর বাবাকে ফোন কর তো।‘, ছেলেকে বললেন সনাতনবাবু।


অভিনব মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকল। কত ভালোবাসত এই আশাকে। কী সুন্দর মেয়ে আশা। কত সুন্দর কথা বলে। কেবল একটাই সমস্যা। তা হলো বিলাসিতা। আর এর কারণেই আজ এত ঝামেলা। আশাকে হারাতে হচ্ছে অভিনবকে। অভিনবর মনের মধ্যে দুঃখের তপ্ত লু বয়ে যেতে লাগল। হৃদয়খানা ওর ভেঙে খান খান হয়ে যেতে লাগল। আশার সাথে ওর প্রেমখেলার আজ যেন সমাপ্তি যবনিকা পড়ে যেতে লাগল। সব শেষ হয়ে যাবে একটু পরে। এমন সময় সনাতনবাবুর মোবাইলটা রিং হতে লাগল। কল রিসিভ করলেন সনাতনবাবু। ওপার থেকে ভেসে এল আশার বড়দা দীপকের গলা, ‘বাবা, আমি দীপক বলছি। আশা কাল সন্ধ্যায় আমাদের বাড়িতে এসেছিল। ও সারারাত আমাদের এখানেই ছিল। আশা আপনার হার্ট সার্জারির জন্য আমার কাছে তিন লাখ টাকা চেয়েছিল। আমি টাকাটা এইমাত্র অভিনবর অ্যাকাউন্টে আইএমপিএস করে পাঠালাম। অভিনব টাকাটা পেয়েছে কি না আমাকে জানাতে বলবেন। যাইহোক, আপনার সার্জারিটা হয়ে যাক। আপনি সুস্থ হয়ে উঠুন…’

কিছুক্ষণ কথা হলো দীপকের সাথে সনাতনবাবুর। কথা শেষ হলে সনাতনবাবুর চোখদুটো ছলছল করে উঠল। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আশার দিকে তিনি একভাবে চেয়ে রইলেন। আশাকে বললেন, ‘বৌমা…’
আশা বলল, ‘বাবা, আমার আর কোনও বিলাসিতার প্রয়োজন নেই। আপনার ছেলে আমাকে যেভাবে রাখবে আমি সেভাবেই থাকব।‘
সনাতনবাবু বললেন, ‘বৌমা, আমি রত্ন চিনতে ভুল করেছিলাম। আমায় মাফ কর মা।‘


চেয়ারে বসে থাকা সনাতন মাইতি মাথা নিচু করে কাঁদতে লাগলেন একেবারে বাচ্চাদের মতো। আশা বলল, ‘একদম কাঁদবেন না বাবা। আর অমন কথা বলবেন না। মাফ করার কী আছে? আমি তো আপনার মেয়ে।‘ এই দৃশ্য চুপ করে একভাবে দেখে-যাওয়া অভিনবর মনে হতে লাগল, ‘আজ থেকে হয়ত ও নতুন করে বাঁচতে পারবে। বুকভরা সুখ নিয়ে বাঁচতে পারবে। আশা তো এমন ছিল না! কী করে এত পরিবর্তন এসে গেল ওর জীবনে, ওর মননে! কীভাবে এমন সুন্দর মন বেঁচে ছিল বিলাসিতাময় জীবন প্রণালীতে অভ্যস্ত রাজকন্যা আশার মধ্যে! অবশেষে প্রকাশ পেল আশার বৈভবপূর্ণ জীবনযাত্রা আর আভিজাত্যের অন্তরালে সুপ্ত হয়ে নিমীলিত থাকা এক কোমল মানবিক মন। সেই সাথে সনাতনবাবু ভাবলেন, সার্জারিটা তাহলে হবে। আর ক’টা দিন তাহলে বাঁচব আমি।

মনসুর আলি | Mansur Ali Gazi

Dwiragaman | দ্বিরাগমন | পুনম মায়মুনী | 2023

New Bengali Story | গল্পগুচ্ছ | বিপাশা চক্রবর্তী

Bengali Story 2023 | রূপান্তরের পথে | ডরাইয়া মরে

Bengali Story 2023 | নিষিদ্ধ আনন্দ | গল্পগুচ্ছ ২০২৩

bengali story new | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali story books for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali story books pdf | bengali story for kids | bengali story reading | short story | short story analysis | short story characteristics | short story competition | short bengali story definition | short story english | short story for kids | short bengali story generator | bengali story 2023 | short story ideas | short story length | long story short | long story short meaning | long bengali story | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2022 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | poetry competition crossword | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | bengali story writing | bengali story dictation | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali story news| article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder | Antarale story | Antarale – new story | Antarale 2023 | Antarale pdf story | trend story – Antarale | bengali story – Antarale | Antarale – pdf download | Antarale web story | Antarale video download | Antarale song download | Antarale song 2023 | Antarale film 2023 | Antarale – new bengali story | new story book – Antarale | story book 2023 – Antarale | movie Antarale | song Antarale |

Leave a Comment