Roktakto Nithar | Best Suspense Story 2024

Sharing Is Caring:

রক্তাক্ত নিথর – রানা জামান

জুবায়ের কখনো চায়নি নাদিরের সাথে পালমোর দেখা হোক। পালমোর সাথে প্রেম হবার আগে ও কখনো এমনটা অনুভব করেনি। নিকটাত্মীয়ের অন্য কোনো নারীর বেলায় এমনটা অনুভব করে না। নাদির জুবায়েরের অন্যতম নিকটতম ও ভালো বন্ধু। মহাবিদ্যালয় হতে বন্ধুত্ব। হরিহর আত্মা বলা যেতে পারে। মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কক্ষে থেকেছে। নিজেদের সুখ-দুঃখ পরস্পরের মধ্যে বিনিময় করেছে। কোথাও বেড়াতে গেলে এক সাথে গিয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোবার পরে অনেক চেষ্টা করেও দুই বন্ধু এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিতে পারেনি। নাদিরের হলে জুবায়েরের হয় না; জুবায়েরের হলে নাদিরের হয় না! শেষে নিয়তির কাছে আত্মসমর্পণ করে দু’জন দুটো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শুরু করলো চাকরি জীবন।

শারীরিক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে নাদির জুবায়েরের চেয়ে অনেক এগিয়ে- যে কোনো নারী ওকে একবার দেখার পরে দ্বিতীয়বার ফিরে দেখবেই! এ নিয়ে জুবায়ের শুরু হতে হীনমন্যতায় ভুগলেও বন্ধুত্বে ফাটল ধরে নি। নাদির এই বিষয়টা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করার কারণে ছাত্রজীবনে অনেক মেয়ে ওর সান্নিধ্যে এলেও প্রকৃত প্রেম গড়ে উঠেনি। এ নিয়ে জুবায়ের নাদিরকে অনেক ভর্ৎসনা করলেও কোনো কাজ হয়নি। বিধাতার খেলায় পালমোর সাথে জুবায়েরের প্রেম হয়ে গেলে সঙ্গত কারণে ও তা নাদিরকে বলেনি, বা নাদিরের কাছ থেকে গোপন করেছে।

নাদিরের একটা গুপ্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিলো, যা ও একান্ত বন্ধু জুবায়েরকেও বলেনি। প্রতিষ্ঠানের অবস্থানগত কারণে দুই বন্ধু ভিন্ন স্থানে থাকছে। এতে নাদিরের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে বেশ সহায়ক হয়েছে। নাদির বিসিএস-এর মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব পদে যোগদান করে জুবায়েরকে জানালে জুবায়ের থ। অনেক অভিমানও হলো জুবায়েরের। ও আহত স্বরে বললো, এতো বড় একটা কাজ করে ফেললি কয়েক বছরের প্রস্তুতি নিয়ে; অথচ আমাকে ঘুণাক্ষরেও জানতে দিলি না! খালি খালি তোকে আমি বুজুম ফ্রেন্ড মনে করতাম!
নাদির বললো, আমার ইচ্ছার কথা আগে আমার মা-বাবাকেও বলিনি। আনসাকসেসফুল হলে সবাই আমাকে ঠাট্টা করতো! ঠাট্টা আমার একদম সহ্য হয় না!

জুবায়ের ম্লান কণ্ঠে বললো, জীবন গড়ার যুদ্ধে তুই আমাকে পেছনে ফেলে দিলি! এখন আমি শত চেষ্টা করেও তোর সমান হতে পারবো না।

নাদির জুবায়েরকে জড়িয়ে ধরতে চাইলে ও এক ঝটকায় নিজকে ছাড়িয়ে চলে এসেছিলো।

সেদিন বিকেলে এটা নিয়েই কথা হচ্ছিলো পালমো ও জুবায়েরের মাঝে। জুবায়েরের মনে একটা ভাবনা ঢুকে গেছে: ও হেরে গেছে একান্ত বন্ধুর কাছে। এখন বিসিএস পরীক্ষায় বসার জন্য প্রস্তুতি নেবার মতো মানসিক অবস্থা নেই ওর। বিষন্নতায় পেয়ে বসছে ওকে।

দু’জন বসেছিলো রবীন্দ্র সরোবর বাগানে একটা ছাতিম গাছের নিচে। জুবায়েরের দুটো হাত আপন মুঠোয় নিয়ে পালমো বললো, এতে মন খারাপ করে আছো কেন জুবায়ের? তুমিও একটা ভালো চাকরি করছো। তোমার বন্ধু নাদির এখন যে বেতন পাবে, তার কয়েক গুণ বেশি বেতন পাচ্ছো তুমি! ও কখনোই তোমার বেতনের সমান বেতন পাবে না! তোমার সমান টাকা উপার্জন করতে হলে ওকে নাক ডুবিয়ে ঘুষ খেতে হবে!
জুবায়ের মাথা নুইয়ে রেখেছিলো। ও মাথা তুলে পালমোর চোখে তাকালো। কত কালো ঐ চোখ! সবুজ ঘেরা গাঁয়ের পুকুরের কাকচক্ষু জলের চেয়েও গভীর কালো ঐ চোখ! ঐ চোখে তাকিয়ে থাকলে কোনো দুঃখ কষ্ট থাকে না ওর মনে। ও নির্নিমেষে তাকিয়ে আছে পালমোর চোখে।

পালমো জুবায়েরের চোখের ভাষা বুঝে। এখন জুবায়েরের মন হয়ে আছে অশান্ত। ও-ই পারে ওর মনকে শান্ত করতে! পালমো জুবায়েরের দুটো হাত চেপে ধরে আলগোছে চাপ দিলো একটু। হাত দুটো তুলে আলতো করে ছুঁইয়ে দিলো ঠোঁট। নিঃশ্বাস গরম হয়ে যাচ্ছে ওর! সামলাতে হবে নিজেকে!

জুবায়ের!
ডাক শোনে জুবায়ের না চমকালেও চমকে গেলো পালমো! ওর গরম নিঃশ্বাস সাথে সাথে হয়ে গেলো শীতল! দ্রুত জুবায়েরের হাত ছেড়ে তাকালো ডাকের উৎসের দিকে। যাকে দেখলো তাকে চিনতে না পারলেও বুঝতে পারলো ও নাদির। জুবায়েরের কাছ থেকে নাদিরের যে বর্ণনা শুনেছে, তা একদম মিলে গেছে আগন্তুকে সাথে। মুগ্ধও হলো নাদিরকে দেখে। সুদর্শন বলতে যা বুঝায় নাদির প্রকৃতপক্ষ তা-ই। মুখটেপা হাসি নিয়ে ও তাকিয়ে থাকলো নাদিরের দিকে।

দূর থেকে নাদিরকে দেখে চমকে উঠলো নাদির। মনে মনে বললো: হাউ চার্মিং! জুবায়ের এই চিজটাকে বাগালো কিভাবে? নিশ্চয়ই এটা একদিনে হয় নি। অথচ জুবায়ের আমাকে জানালো না, মেয়েটার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলো না। সো হোয়াট! এখন পরিচয় হয়ে যাবে! আমি নাদির, নাদির দ্যা গ্রেট!

মুগ্ধ দৃষ্টি নিয়ে পালমোর দিকে তাকিয়ে থেকে নাদির কাছে এসে জুবায়েরকে জিজ্ঞেস করলো, অপরূপ মুগ্ধ নয়নাকে পাশে নিয়ে সময় কাটাচ্ছিস দোস্ত! কোনোদিন বলিস নাই আমাকে ওর ব্যাপারে। বিষয়টা কী? তাহলে কি আমরা আর বুজুম ফ্রেন্ড নাই?

সোজা হয়ে বসে জুবায়ের বললো, না মানে ভাবছিলাম কিভাবে তোর সাথে ওকে পরিচয় করিয়ে দেবো! তাছাড়া ওর সাথে পরিচয় হয়েছে বেশি দিন হয় নাই! ওর নাম পালমো।

নাদির ফের পালমোর দিকে তাকিয়ে বললো, এ ইউনিক নেম! এই নাম আগে কখনো শুনি নাই!
পালমো আঁড়চোখে জুবায়েরকে একবার দেখে নম্রস্বরে বললো, নিজের নাম নিয়ে মাঝেমধ্যে আমার নিজেকেই বিব্রত হতে হয়!

নাদির জুবায়েরকে একবার দেখে পালমোর দিকে তাকিয়ে বললো, পছন্দ না হলে এফিডেবিট করে যে কোনো সময় নাম পরিবর্তন করা যায়। করবেন নাকি পরিবর্তন? আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি।

জুবায়ের দ্রুত বললো, আরে না না! নাম পরিবর্তন করতে হবে না! পালমো নামটাই আমার পছন্দ, খুব পছন্দ!

তোর পছন্দই কি সব ওর কাছে? কী বলেন পালমো?

পালমো জুবায়েরকে একবার দেখে নাদিরের দিকে তাকিয়ে টিকতে না পেরে অন্যদিকে তাকিয়ে বললো, আমার নাম নিয়ে অনেকে আলোচনা হয়েছে। আপাততঃ থাক।

নাদির ফের পালমোকে একবার দেখে জুবায়ের দিকে তাকিয়ে বললো, তাই ভালো! তোকে পেয়ে ভালোই হলো জুবায়ের। আজ সকালে আমার ফরেন পোস্টিং-এর অর্ডারটা হয়ে গেছে। ব্যাংকক দূতাবাসে। এক মাস পরে যেতে হবে। পনেরো দিনের ছুটি নিয়েছি। আগামীকাল বাড়ি যাচ্ছি। এ কয়টা দিন বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মা-বাবারও তাই ইচ্ছা।

পালমো বললো, বিয়ে করে বৌ নিয়ে যাবেন নাকি?

নাদির বিস্মিত হয়ে বললো, বিয়ে! এখনই?

আমি যতদূর জানি বা দেখে আসছি কেউ বিদেশ গেলে বিয়ে করে বৌ-টা দেশে রেখে যায়।

হু! আমিও এমনটা দেখেছি। এর কারণ কী বলতে পারেন মিজ পালমো?

সহজ কারণ। যাতে বিদেশ গিয়ে বিদেশি কাউকে বিয়ে না করে বসে।

এতে কাজ হয়?

অনেক ক্ষেত্রে হয়. অনেক ক্ষেত্রে হয়ও না।

আমার এখনই বিয়ে করার ইচ্ছে নেই!

মা-বাবা চাপ দিলেও রাজি হবেন না?

বলতে পারছি না। বাড়িতে গেলে বুঝতে পারবো কী হবে আর কী হবে না।

জুবায়ের দাঁড়িয়ে নাদিরের দিকে হাত বাড়িয়ে শুকনো কণ্ঠে বললো, বেস্ট অব লাক ফ্রেন্ড! তোর জীবন আরো কারুকার্যময় হোক, প্রার্থনা করছি। ইচ্ছে হলে যোগাযোগ রাখিস।

নাদির জুবায়েরের ধৃত হাতে একবার চাপ দিয়ে বললো, কী বলছিস তুই? যোগাযোগ রাখবো না মানে? তুই আমার ফ্রেন্ড আছিস, থাকবি আজীবন!

জুবায়ের নিজের হাতটা নাদিরের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো, আমি ফোনকলের অপেক্ষায় থাকবো।

পালমোর হাত ধরে জুবায়ের বললো, চলো!

কয়েক কদম হাঁটার পরে থেমে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে পালমো বললো, নাদিরের সাথে অমন ব্যবহার করা ঠিক হয় নাই জুবায়ের!

জুবায়ের রুক্ষ কণ্ঠে বললো, ও আর আমার বাল্যবন্ধু নাই! এখানে থাকতে আর ভাল্লাগছে না। তোমাকে বাসায় দিয়া আমি মেসে গিয়া একটা ঘুম দিবো।

পালমো বললো, আজ আমাকে পৌছায়া দিতে হবে না! আমি একাই যেতে পারবো। তুমি মেসে যাও। আর নাদিরের বিষয়ে চিন্তা করে মন খারাপ করো না। আমি আছি তোমার পাশে।

পালমোর কথায় জুবায়ের খুব আবেগ আপ্লুত হয়ে গেলো। ও পালমোকে একবার জড়িয়ে ধরে ছেড়ে দিয়ে হনহন করে হেঁটে চলে এলো পালমোর চোখের আড়ালে। ওর বাসে বা রিক্সায় উঠতে ইচ্ছা করলো না। হেঁটে চলে এলো মেসে। নাদিরকে মনে পড়ছে। মনে পড়ছে ছেলেবেলার মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালের অনেক ঘটনা। দু’জন একই কক্ষে এক বিছানায় থাকতো। একসাথে ক্লাশে যেতো, চলাফেরা করতো। কত ঈদ করেছে নাদিরের বাড়িতে, নাদিরও ঈদ করেছে ওর বাড়িতে অনেক। না, তবুও ও নাদিরের সাথে আর দেখা করবে না। ও বিদেশ চলে গেলে ভালোই হবে, ওর সাথে দেখা হবার সম্ভাবনা কমে যাবে, যদিও একটা কষ্ট থেকে যাবে মনে। থাক, দুয়েকটা কষ্ট মনে থাকা ভালো!

রাতভর ঘুম হলো না জুবায়েরের। হীনমন্যতায় ভুগলেও চাকরির ক্ষতি করা যাবে না। এই চাকরি চলে গেলে এই বয়সে অন্য কোনো চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। চাকরি না থাকলে পালমো কি থাকবে? প্রশ্নই আসে না! অফিসে এসে প্রথমে ফোন করলো পালমোকে। পালমোর ফোনটা বারবার এনগেজড পাচ্ছে। মনে প্রশ্ন: এতো এনগেজড কেন? নাকি পালমোর মোবাইল ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে। পালমোর বাসার অন্য কারো ফোন নম্বরও জানা নেই যে ফোন করে জানবে কী হয়েছে পালমোর ফোনের। পালমোর সাথে কথা বলতে না পারায় জুবায়েরের মনটা হয়ে গেলো আরো উতলা। সারাদিন কাজে তেমন মন বসাতে পারলো না এবং বেশ কয়েকবার ফোন করে পালমোকেও পেলো না। অফিস ছুটির পরে ছুটলো পালমোর বাসার দিকে। ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে সে। পালমোর সাথে দেখা হবার পরে ওর উদ্বেগ হয়ে গেলো পানি পানি। পালমো জানালো: আজ ভোরে ওর মোবাইল ফোনটা টয়লেটে পড়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ও। তখনই জুবায়ের পালমোকে নিয়ে গেলো মোবাইল ফোন বাজারে। দামি একটা স্মার্ট ফোন কিনে একটা হাইফাই রেস্টুরেন্টে নাস্তা সেরে এসে বসলো রবীন্দ্র সরোবর গার্ডেনে। পালমোর কোলে শুয়ে চোখ বুজে আছে জুবায়ের। প্রেমিকার কোলে তথা সান্নিধ্যে এতো সুখ, এতো শান্তি! আহ! সময় গড়িয়ে যায় নিজস্ব গতিতে। সন্ধ্যা পেরিয়ে নেমে এলো রাত। দু’জনের কেউ যাবার তাড়া অনুভব করছে না। জুবায়ের চোখ বুঝে থেকে ভাবছে: যদি এই রাত কখনো শেষ না হতো!

কিন্তু রাত গভীর হবার আগেই দারোয়ানের তাগিদে ওদের ছাড়তে হলো বাগান। পালমোকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে অনেক প্রশান্তির ঘুম ঘুমালো জুবায়ের। পরদিন অফিস থেকে ফেরার সময় নাদিরকে রিক্সায় যেতে দেখে বিস্মিত হলো ও। তাহলে কি নাদির বাড়ি যায় নি? ভালোই হয়েছে। শত অন্যায় করলেও ও ওর বাল্যবন্ধু। ক’দিন পরে চলে যাবে বিদেশে। রাগ ও অভিমান ভুলে আজ বাল্যবন্ধুর সাথে অনেক সময় কাটাবে এবং ছুটি নিয়ে বন্ধুর সাথে ওর বাড়িতেও যেতে পারে।

বাস থেকে নেমে দ্রুত হাঁটছে জুবায়ের। এখান থেকে নাদিরের বাসা দশ মিনিটের হাঁটাপথ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর মেস ছেড়ে দিয়ে দুই কক্ষের এই বাসায় উঠেছে নাদির। বাসাটা মল্লিকা আবাসিক কমপ্লেক্সে মিল্কিওয়ে ভবনের দোতলায়। এই বাসায় উঠে একটা ছোটখাটো পার্টি দিয়েছিলো নাদির; জুবায়েরকে ঐ পার্টিতে আসতে হয়েছিলো। জুবায়ের দোতলায় উঠে কলবেল টিপে অপেক্ষা করছে। এক মিনিট পার হবার পরেও দরজা না খুললে পরপর দু’বার কলবেল টিপলো। এবারও দরজা না খুললে ভ্রু কুচকে দরজায় হাত দিয়ে সামান্য ঠেলায় খুলে গেলে বিস্মিত হলো আরো। দরজা খোলা! কেন? জুবায়ের ঢুকলো ভেতরে। ড্রয়িংরুম পরিপাটি। শয্যাকক্ষে ঢুকে দুই বাহু সামনে প্রসারিত করে প্রিয়বন্ধুকে উদাত্ত কণ্ঠে আহ্বান করতে গিয়ে থমকে গেলো। গলাকাটা রক্তাক্ত নাদির চিৎ হয়ে শুয়ে আছে বিছানায়। ছুটে বিছানার কাছে গিয়ে বন্ধুকে স্পর্শ করার জন্য ডান হাত বাড়ালেও ফিরিয়ে নিলো। উহু! এ অবস্থায় কোনোকিছু স্পর্শ করা একদম ঠিক হবে না! যেকোনো সময় পুলিশ আসতে পারে এখানে, ওকে এখনই সরে যেতে হবে এখান থেকে। শয্যাকক্ষ থেকে বের হবার সময় দরজায় গোড়ায় একটা ব্রেসলেট পড়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুচকে দাঁড়ালো। ব্রেসলেটটা তুলে পকেটে ঢুকিয়ে বেরিয়ে এলো এপার্টমেণ্ট থেকে। চলে এলো পালমোর বাসায়। পালমোর বাসার লোকজন ওকে চেনে। খবর পাঠালে পালমো উল্টো খবর পাঠালো যে ও অসুস্থ, এখন আসতে পারবে না!
জুবায়ের এপার্টমেণ্টের সামনের রাস্তার এক গাছের নিচে বসে অপেক্ষা করতে লাগলো। একটু পরে পালমো নেমে এলো ওর কাছে। ওকে বেশ বিধ্বস্ত ও বিষন্ন দেখাচ্ছে।

জুবায়ের বললো, কোথাও যাবো না। এখানেই বসো।

পালমো ওর পাশে বসলে জুবায়ের ওর হাতের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো, হাতে ব্রেসলেটটা দেখছি না!

পালমো চমকে নিজ ডান হাত একবার দেখে বললো, খুলে রেখেছি!

পকেট থেকে ব্রেসলেটটা বের করে পালমোকে দেখিয়ে জুবায়ের বললো, নাদিরের রুমে পেয়েছি। এতে ইংরেজি অক্ষর পি অঙ্কিত আছে। তুমি মিথ্যে বলেছো! এটা তোমার ব্রেসলেট। আমিই তোমাকে জন্মদিনে গিফ্ট দিয়েছিলাম। তুমি ওখানে গিয়েছিলে কেন পালমো?

পালমো দু’হাতে মুখ ঢেকে শুরু করলো অঝোরে কান্না। কাঁদতে কাঁদতে ও যা বললো, তা এমন:

সেদিন রবীন্দ্র সরোবর বাগানে পরিচয় হবার পরে নাদির ওর পিছু নিয়ে পালমোর বাসা পর্যন্ত আসে। পরদিন নাদির বাসায় এলে পালমো অবাক হয়।

নাদির বলে, তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছো আমার বন্ধু এখনো আমার উপর অভিমান করে আছে। ক’দিন পর আমি চলে যাবো ব্যাংকক। পাঁচ বছরের আগে দেশে আসার সম্ভাবনা কম। ওর অভিমান ভাঙ্গানোর জন্য তোমার সহযোগিতা প্রয়োজন।

পালমো বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করে, কিভাবে?

নাদির রহস্যময় হেসে বলে, আজ থাক, আগামীকাল বলবো!

নাদির চলে যায়। পরদিন একই সময়ে এসে জুবায়েরের প্রশংসা করে অনেক কথা বলে; কিন্তু কিভাবে জুবায়েরের অভিমান ভাঙ্গানো যাবে, তা না বলেই চলে যায়।

তৃতীয় দিন নাদির একটা কার নিয়ে আসে এবং বলে জুবায়েরের অফিসে গিয়ে ওকে সারপ্রাইজ দেবে এবং ওকে নিয়ে কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে খেতে কথা বলবে। আপত্তি না জানিয়ে পালমো ওর সাথে গাড়িতে চড়ে। কিছুদূর গিয়ে গাড়ি থামিয়ে দুটো পেপার গ্লাসে ড্রিংক এনে ওকে একটা পান করতে বলে নাদির। ডৃঙ্কটা পান করার পরে ওর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরে নাদিরের বিছানায়। নিজকে উলঙ্গ দেখে বুঝতে পারে নাদির ওর সাথে প্রতারণা করেছে।

পালমো কিছু বলার আগেই নাদির বলে, তোমাকে প্রথম দেখেই কেমন যেন লোভ লেগে গিয়েছিলো। তাই বাড়ি না গিয়ে তোমার কাছে যেতে থাকি। এখন মনে হচ্ছে কাজটা ঠিক করি নি। আমি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি। এখনই!

পালমো মুচকি হেসে বলে, আমি আগে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসি। তারপর তোমার প্রস্তাব নিয়ে ভাববো। পালমো বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুমে ঢোকার আগে চট করে রান্নাঘরে ঢুকে তরকারি কাটার ছুরিটা হাতে নেয়। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দুই হাত পেছনে রেখে বিছানায় উঠে আসে। নাদির বিছানায় শুয়ে থেকে পালমোর দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসে। পালমো নাদিরের মাথার কাছে বসে বাম হাতে নাদিরের দুই চোখ চেপে ধরলে ওর হাসিটা আরেকটু বিস্তৃত হয়। তখন পালমো ওর গলায় দৃঢ় হাতে চালিয়ে দেয় ছুরিটা।

রানা জামান | Rana Zaman

Mother’s Day History Information | মাতৃদিবসের উৎপত্তি, তাৎপর্য ও বাঙালি প্রতিক্রিয়া | 2023

The Jagannath God in Puri | পুরুষ-প্রকৃতি এবং জগন্নাথ

Women’s role in Christian society | খ্রীষ্টীয় সমাজে নারীর অবস্থান

Padma besha | পদ্ম বেশ | অভিজিৎ পাল

Short bengali story | Bengali story pdf | pratilipi bengali story | Short Stories for Children | English Stories for Kids | Moral Stories for Kids | story in english | story hindi | story book | story for kids | short story | story for girls | short story in english | short story for kids | bangla golpo pdf | Bangla golpo pdf | Bangla golpo story | bangla romantic golpo | choto golpo bangla | bengali story | Roktakto pdf | Roktakto books | Noyti Raktakta Robibar by Sayak Aman | Roktakto sharod | Roktakto Jonmodin by Jayanta De | Roktakto Bangla | Roktakto Jonmodin | Roktakto Lyrics | Roktakto Itihas | Roktakto Prantor Download | Roktakto Tabligh | Roktakto Dairy | Roktakto Swadhinata | Roktakto robibar kake bole | Roktakto prantor hsc bangla | Roktakto Jharokha event | Roktakto Shouchagar | Roktakto Somoy | Protibesi Surjer Roktakto Dinguli | Roktakto Swopno | Roktakto Chirkot | 21 August Roktakto Oddhay | Roktakto Redoy | Sunday suspense golpo | sunday suspense mp3 download | suspense story in hindi | suspense story in english 200 words | Suspense story in english | suspense story in english 300 words | Suspense story examples | suspense story in english 100 words | suspense story writing | very short suspense stories for students | Roktakto Nithar | Top Bangla Golpo Online Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | Bangla Golpo Online Reading pdf | Famous Story – Roktakto Nithar | Pdf Roktakto Nithar | Roktakto Nithar App | Full Bangla Golpo Online Reading | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English |Bangla Golpo Online Reading Ebook | Full Bangla Galpo online | Roktakto Nithar 2024 | New Bengali Web Story – Episode | Golpo Dot Com Series | Roktakto Nithar Video | Story – Roktakto Nithar | New Bengali Web Story Audio | New Bengali Web Story Video | Roktakto Nithar Netflix | Audio Story – Roktakto Nithar | Video Story – Roktakto Nithar | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Trending Bangla Golpo Online Reading | Recent story Roktakto Nithar | Top Story Roktakto Nithar | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2023 | Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Modern Online Bangla Galpo Download | Bangla Golpo Online Reading mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | Modern Online Bangla Galpo mp4 | Modern Online Bangla Galpo Library | New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Bengali Story – audio | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Story Collection – Modern Online Bangla Galpo

Leave a Comment