New Modern Bengali Poetry – Mohit Bapari
সবাই অসহায় – মোহিত ব্যাপারী
ডাক্তার বদ্যি হাকিম বিদ্বান যত বড়ই হবেও
রাজা মহারাজা তার ক্ষমতার জয়
দরিদ্র কিংবা দাসত্বের শৃঙ্খল পায়
ধনী বিত্তবান সম্পদশালী যতই হও
মৃত্যুর কাছে আমরা সবাই অসহায়।
রোগ ভোগ অসুখের ভয়
ধনী দরিদ্র তার বাছবিচার নাই।
সকলেরই এক ঠাঁই হাসপাতালের বিছানায়।
আলেকজান্ডার হিটলার দোর্দণ্ডপ্রতাপ
কিংবা পৃথিবীর মহারাজ।
বিশ্ব জয় করেও মৃত্যুকে আটকাতে পারেনি।
টাকা কড়ি গাড়ি বাড়ি বিত্তের ঝনঝন
কোনকিছুই মৃত্যুকে আটকাতে পারবেনা।
ডাক আসলে তোমাকে যেতেই হবে সেথায়।
মানুষ মৃত্যুর কাছে অসহায়।
অর্থ বিত্ত ক্ষমতা সবই মিথ্যে পৃথিবীর।
এত লড়াই সংগ্রাম এত কিছু অর্জন জীবনের
সবই মিথ্যে পৃথিবীর।
মৃত্যুই একমাত্র সত্য জীবনের।
মৃত্যুই একমাত্র লক্ষ্য জীবনের।
অমন ধর্ম চাইনা আমার – মোহিত ব্যাপারী
ধর্ম যদি হয় অসহিষ্ণুতার
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যদি হয় কুসংস্কারের
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যদি হয় অন্যের ধর্মকে ছোট করা
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যদি হয় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ মাখা
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যদি হয় চাঁদার জুলুম
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যদি হয় কৃত্রিম আলোয় জৌলুসমাখা
যে আলো ফুটপাতের শিশুটিকে আলোকিত করেনা
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যদি হয় ধর্ম প্রচারকের ভোজবাজি
সাধুতার আড়ালে যদি থাকে ভণ্ড ছদ্মবেশী
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যখন আমাকে কূপমণ্ডূক করে তোলে
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
যে ধর্ম অন্ধের মত পথ চলে
যে ধর্ম অন্ধ বিশ্বাসে রাজত্ব করে
মানুষের ছায়াকেও যারা অপবিত্র মনে করে
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্মের নামে যেখানে ভাগাভাগি হয়
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যেখানে মানসিক বিকার
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যেখানে সস্তা রাজনীতির হাতিয়ার
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্মের নামে যেখানে জিহাদ হয়
মানুষ মানুষকে মারে অবলীলায়
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যেখানে সহনশীল নয়
ধর্ম যেখানে অস্ত্র হাতে উন্মত্তের মত পথে পথে ঘোরে
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যেখানে দুষ্কর্মের হাতিয়ার
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যেখানে ক্ষুধার্তের ক্ষুধা মেটাতে পারেনা
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যেখানে ভালোবাসার অন্তরায়
মানুষ যেখানে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম যেখানে কেড়ে নেয় মানুষের অধিকার
অমন ধর্ম চাইনা আমার।
ধর্ম হোক মানবতা সহানুভূতি সহনশীলতা শ্রদ্ধার।
ধর্ম হোক পরমাত্মার প্রতি নীরবে নিজেকে সমর্পণ।
ব্যক্তিগত – মোহিত ব্যাপারী
সেই আমার নিজের গ্রাম নিজের বাড়ি
এমন শান্তি কোথাও খুঁজে পাইনি আমি।
আম কাঁঠাল আর তাল সুপারির ছায়া ঘেরা
মাটির ঘরে খড়ের চালে নিকনো দাওয়া।
কোথায় ছিল এসির বাতাস
তবু লাগত গায়ে গ্রীষ্মকালে ঠাণ্ডা হাওয়া।
কোথায় ছিল কোল্ড-ড্রিংকস আর কোথায় ছিল ফ্রিজ
তৃষ্ণা মিটত টিউবওয়েলের ঠাণ্ডা জলে।
আজও যখন গ্রামের কথা মনে পড়ে
বুকের মাঝে হু হু করে।
সেই আমার নিজের বাড়ি নিজের ঘর বিছানায়
এমন শান্তি কোথাও খুঁজে পাইনি আমি।
নিজের বলতে কিছুই আমার না।
ঘরটা ছিল বাবার হাতে গড়া।
তবু সেটাই ছিল নিজের বাড়ি মনের মত বাসা।
মাটির বারান্দায় খেজুর পাতার চাটাই পেতে
কখনো বা ভাঙা তক্তপোশে আরাম করে শুয়ে
ঘুম দিয়েছি সারা বিকেল জুড়ে।
সঙ্গী ছিল অনেক কালের জীর্ণ কাঁথাখানা।
সেই আমার নিজের বাড়ি নিজের ঘর বিছানায়
স্বপ্ন ছিল অনেক দামি দামি।
মাটির গন্ধ ছিল বুকের মাঝে খাঁটি।
তরতরিয়ে উপরে ওঠার গল্প ছিল জীবন জুড়ে।
স্বপ্ন ছিল জোয়ার ছিল নদীর জলে।
এখন সেথায় চলছে কেবল ভাঁটা।
রাজপ্রসাদ আর অট্টালিকায় ঘুম আসেনা।
দামি দামি খাট বিছানা তবু ঘুণ ধরেছে মনে।
শহরটার এই গোলকধাঁধায় হারিয়ে যাচ্ছি আমি।
সেই আমার নিজের গ্রাম নিজের বাড়ি
বাবার দেওয়া খাট বিছানায় জীবন ছিল অনেক দামি।
সেই আমার নিজের গ্রাম নিজের বাড়ি
এমন শান্তি কোথাও খুঁজে পাইনি আমি।
গোপন ব্যথা – মোহিত ব্যাপারী
অনেক কালের মনের কথা
জাগল যখন মনে,
অনেক ভেবে চিন্তে দেখি
লুকিয়ে ছিল মনের গহীন বনে,
মন একলা ভাবত বসে নির্জনে
আমিই শুধু বুঝিনি তা আগে।
আজকে যে সব হারিয়ে গেছে
সে তো অনেক কালের কথা।
মাঝে মাঝেই বুকের মাঝে
করত কেমন অজানা এক ব্যথা।
আজকে যে সব নতুন ভালোবাসা।
কিছুতেই তল পাইনি এদিক ওদিক খুঁজে
বুকের মাঝে কিসের এমন ব্যথা।
অনেক কালের মনের কথা
আজকে যখন জাগল মনে,
অতীতটাকে ভাবতে বসে
একে একে অনেক কিছুই পড়ছে মনে।
আমিই শুধু বুঝিনি তা আগে।
ঘুম ঘুম চোখ – মোহিত ব্যাপারী
ঘুম ঘুম নেশাতুর চোখ।
ভোর রাতে ঘুম ভাঙে রোজ।
স্বপ্নরা থেমে যায় মাঝপথে।
ফিরে যায়, এসেছিল যে পথে।
হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়ি, তাড়াহুড়ো
ঘুম চোখে স্নান।
ঘুম ঘুম নেশাতুর চোখ।
রক্তজবার চেয়ে লাল।
মাঝে মাঝে চোখ দুটো বুজে আসে।
শরীরটা ঝিমিয়ে পড়ে
কেঁপে কেঁপে ওঠে বারবার।
গাঁজার নেশায় মত্ত হৃদয়
বুঁদ হয়ে থাকেনি কত কাল।
তবু নেই অবসর বলবার
আজ তবে থাক।
ঝিমঝিম নেশাতুর শরীরটা
ঝিম ধরে থাকে।
অজান্তেই কখন পড়ে যায়।
ঘুম ঘুম নেশাতুর চোখ
রাত জাগে সারারাত।
রাত জাগে অসুখে বিসুখে
রাত জাগে সেবায়।
রাত জাগে কবিতার পাতায়।
জঙ্গলে মঙ্গল – মোহিত ব্যাপারী
জঙ্গলে জঙ্গলেই মঙ্গল।
জঙ্গল আমাদের প্রয়োজন।
জঙ্গলটা চুরি গেছে বেবাক
আমাদেরই সম্মুখে।
পৃথিবীর ভয়ংকর অসুখ।
আমরা সামাজিক
আমাদের কাজ যত অসামাজিক।
সমাজের মাথাতে থাকি।
সমাজের মুণ্ডুটা নিয়ে
অহরহ ফুটবল খেলি।
সমাজটা চুরি গেছে
সমাজের নাকের ডগাতেই।
সমাজের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ
সবই যেন বিকলাঙ্গ।
কেউ অন্ধ কেউ কালা
নুলো আর বোবা হাবা গোবা।
শিক্ষিত চুরি ছ্যাঁচড়ামি রাহাজানি
সমাজের শরীরটা পচে গেছে।
ভরে গেছে ঘা আর পাঁচড়াতে।
আজব নগর – মোহিত ব্যাপারী
দুনিয়াটা এক আজব নগর
আজব একটা পাখির খাঁচা।
খাঁচার ভিতর বন্দি সবাই।
নিয়তিটা মোদের সাথে
খেলছে নানান খেলা।
কারো আছে সোনার খাঁচা
কারো পায়ে লোহার বেড়ি,
কারো খাঁচায় জং ধরেছে
কারো পায়ে পাটের দড়ি।
জীবন অঙ্ক জটিল ভীষণ।
লড়াই করে বাঁচতে হয়।
পথটা মোটেও সহজ নয়।
যার খাবারের জোগান বেশি
খাওয়ার তার উপায় নাই।
যার প্লেটে খাবার নেই
ক্ষুধা তার অনেক বেশি।
পোশাক আশাক অভাব নেই
অথচ পরনে তার একটুখানি।
শরীরটাকে যে ঢাকতে চায়
একটুও নেই তার কাছে।
দামি দামি খাট বিছানা
ঘুম আসেনা চোখের কোণে।
ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসে
ফুটপাতে শোয় দিনের শেষে।
দুনিয়াটা মোদের সাথে
মিছে খেলছে নানান খেলা।
সম্মান চায় কিনতে টাকায়
দোকানে যায় মুদির কাছে।
টাকা ছাড়াই সম্মান পায়
প্রকৃতই যে মানুষ হয়।
চোখ থাকতেও অন্ধ মানুষ।
অন্ধ দেখে জ্ঞানের চোখে।
যার কাছে অনেক আছে
অপচয় সে ই করে।
যার কাছে নেই কোনকিছুই
সঞ্চয় সে করবে ভাবে।
বাবা মা থাকতে বেঁচে
ভাত দেয়না মুখের কাছে।
বাবা মা মরলে পরে
শ্রাদ্ধ হয় চিতল মাছে।
দুনিয়াটা এক আজব নগর
আজব একটা পাখির খাঁচা।
খাঁচার ভিতর বন্দি সবাই
ডানা ঝাপটাই একসাথে সবাই।
মেলা দেখা – মোহিত ব্যাপারী
মেলায় দেখ দোকান সারি সারি।
লোকে লোকারণ্য,
তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
মেলা আছে ঠেলাঠেলি হুল্লোড়ে।
খাওয়া চাই চাউমিন মোগলাই এগরোল।
জিলিপির প্যাচে মন পড়ে আছে।
চেয়ে আছে মণ্ডা মিঠাই নিমকি গজা।
ফুচকাগুলো রাগে ফুলে আছে।
আলু আর টক জলে মান ভাঙাবে তার।
মুখে দিয়ে চাপ দিলে মন ভরে যাবে।
বনবন ঘুরছে নাগরদোলা।
পাশাপাশি বসে হাত ধরে প্রেমিক যুগল।
কুঝিকঝিক ছোটদের রেলগাড়ি
ছোট্ট সোনা চলেছে মামার বাড়ি।
রংবেরঙের বেলুন হাতে ফেরিওয়ালা ঘোরে।
জল বেলুন কাঠি বেলুন গ্যাস বেলুন ওড়ে।
তেলে ভাজার গন্ধে জিভে জল এসে পড়ে।
পাঁপড় হাতে সবাই পায়চারি করে।
দোকানিরা বসে আছে খদ্দের চেয়ে।
থরেথরে সাজানো খেলনার সারি।
খোকাখুকির বায়নায় রোল ওঠে কান্নার।
আসবাব থেকে রান্নার
সাজগোজ আর ঘরকন্যার
সবই মেলে মেলাতে।
দোকানের তাকে সাজানো কাঁচের চুড়ি।
লাল নীল সবুজ চুড়ি।
তোমার হাতে চুড়ি বেলোয়ারী।
আমার হৃদয়ে বৈশাখী ঝড়।
তোমার হাতে চুড়ির টুংটাং
আমার হৃদয়ে সপ্ত সুরের রেওয়াজ।
নেতা হওয়া – মোহিত ব্যাপারী
মানুষ সবাই নেতা হতে চায়।
নেতা হওয়া সহজ কথা নয়।
দশজনাতে ঘুরলে পিছেই লোভে,
তাদের কেমন যেন নেতা নেতা ভাব।
চরিত্রটাই পাল্টে যায় মনোভাবের সাথে।
একটুখানি তোষামোদ পেলে মাঝেসাঝে
যেন ধরাটাকে সরা ভেবে নেয়।
ক্ষমতার ছিটে ফোঁটারও নাগাল পেলে
যারা কেবল নিজের আখের গোছায়,
তারা কি কভু নেতা হয়!
নেতা হওয়া মোটেই সহজ কথা নয়।
অনেক আত্মত্যাগের জীবন পেরিয়ে,
আত্মত্যাগের পথে নেতৃত্ব হেঁটে যায়।
অসহায় দুর্বল মানুষের পাশে পাশে
নেতা আর নেতৃত্ব তাদের পথ দেখায়।
নেতা এক দায়িত্ববোধের নাম।
বিচিত্র চরিত্র – মোহিত ব্যাপারী
সময়ের সাথে সাথে স্বার্থের রূপ বদলায়।
পুরনো স্বার্থ শেষ হয় নূতনের সন্ধানে।
সময়ের সাথে সাথে মানুষও বদলে যায়।
আজ যে ভালো কাল সে মন্দ তাই।
সুবিধের মসনদে বসে তোমার স্তুতি গান।
সুবিধে ফুরালে তোমারই দুর্নাম কন্ঠে তার।
শত্রু শিবিরে তোমার ধ্বংসের নকশা তৈরি হয়।
স্বার্থের সংঘাতে আত্মীয় হয় পর।
শত্রুও কাছে আসে সুবিধে যদি পায়।
আজকে যে খুব প্রিয়জন বন্ধু তোমার,
বিরুদ্ধে বললে কথা সে ই শত্রু তখন।
শত্রু তোমার আর অন্যের দালাল।
তুমি কি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছ কখনো?
তুমিও তো আসলে এক চরিত্রহীন।
যখন কেবল তোমার মতে মত দিয়েছে,
তখন কেবল বন্ধু তোমার প্রাণের সখা।
তোমার ভুল ধরলেই শত্রু তোমার।
এ কেমনতর চরিত্রধারা ?
এ জগতে সবাই সবার সুবিধে নেয়।
সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কের ধাপে ধাপে উপরে উঠতে চায়।
সুবিধে ফুরলেই সবাই সবার শত্রু হয়।
দল বদলের ভিড়ে সবাই কোথায় যেন হারিয়ে যায়।
সংকল্প – মোহিত ব্যাপারী
মন যদি ভেঙে যায়,
সামলে রেখো শক্ত হাতে।
মন যদি কষ্ট পায়,
বুঝিও তাকে সহজ হতে।
মন যদি মন্ত্র চায়,
তাকিয়ে দেখো সুমুখপানে।
মনকে খানিক জায়গা দিও মনের কোণে।
বিফলতার শোকমিছিলে হারিয়ে গিয়ে
পালিয়ে যেও না হেরে গিয়ে।
পরাজিত সৈনিককে কে আর কবে রেখেছে মনে।
কেউ মনে রাখবে না কোনদিন।
এটাই যে নিয়ম জগতের।
বিজয়ের পতাকা ওড়াই পরাজিতের শবদেহে।
জানি হয়তো বা স্মৃতিরা ভিড় করে থাকে।
প্রতি মুহূর্তে স্মৃতির দংশনে ক্ষত বিক্ষত হয় অন্তর।
তবুও মনকে বুঝিও সহজ হতে।
মনটা তো ছোট্ট কোন কুঠুরি নয়।
মনের গভীরেও আছে লক্ষ কোটি কৃষ্ণ গহ্বর।
আর উপরে ভেসে আছে নিকট বর্তমান।
বর্তমানও অতীত হবে একদিন।
শুধু অপেক্ষার দিনগুলি বাকি।
হয়তো মুহূর্তরা মুছে যাবেনা কোনদিন।
তবুও কোন একটি কৃষ্ণ গহ্বরে লুকিয়ে রেখো তাকে।
তোমাকে যে বাঁচতে হবে বাঁচার মত করে।
বাঁচতে গেলে হোঁচট খাবে যত্রতত্র।
তবুও আবার উঠে দাঁড়াতে হবে।
এবার তুমি উঠে দাঁড়াতে শেখ।
দুর্নীতির খেলা – মোহিত ব্যাপারী
রাজনীতি নীতিহীন দুর্নীতিরই খেলা।
নীতিহীনতাই রাজার নীতি পাশা পাল্টাবার খেলা।
যুগ যুগান্ত ধরে চলমান প্রচলিত রীতি এই।
ভালোবাসা আর যুদ্ধে সবই বৈধ, দুর্নীতিও।
ক্ষমতার লোভে ক্ষমতার পাপে ক্ষমতায় টিকে থাকা।
হোক না সে জোর করে কিংবা সুকৌশলে।
ক্ষমতাই আসল রাজা জনগণ শুধু দর্শক সেথা।
রাজনীতির মঞ্চে রাজনীতি চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে জনগণের কথা বলে।
ক্ষমতা হাতে পেলে তারা কেবল নিজেরই কথা ভাবে।
জনগণের ভালো করতে নিজেরই আখের গোছায়।
আর মাঝে পড়ে দুইয়েরই সর্বনাশ ঘটায়।
নিজেরাও ডুবে যায় পাপের পঙ্কিলতার চোরাবালিতে।
একটি পাপ ঢাকতে আরেকটি পাপের অশুভ উদ্বোধন।
পাপের পরে পাপের পাহাড় জমতে থাকে ধীরে ধীরে।
সেই পাহাড়ের চূড়া থেকে নেতা হয়ে জনগণকে দেখা।
ক্ষমতাই আসল রাজা, জনগণ শুধু দর্শক সেথা।
ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতি কৌশলের আশ্রয় নেওয়া।
ক্ষমতায় থাকতে হলে নির্বিচারে মার বিরুদ্ধতাকে।
ক্ষমতায় থাকতে ষড়যন্ত্র চাই আপনজনেরই বিরুদ্ধে,
ভাই ভগিনী মাতা পিতা হলেও।
নইলে একদিন তুমিই ষড়যন্ত্রের শিকার হবে।
সুযোগ পেলেই তোমার বুকেই গাঁথবে ছোরা এক লহমায়।
সুযোগ নাও সুযোগ বুঝে নিজের ক্ষমতা অন্যের দুর্বলতায়।
সুযোগ নিতে নিজেকে নামিয়ে আন পঙ্কিলতার গভীরে।
অভিলাষ – মোহিত ব্যাপারী
আকাশ কি যে ভালো।
সেথায় আছে রং বেরঙের আলো।
প্রভাত অর্ক একলা হাসে
সকল দেশে ভেসে।
নব আলোর কিরণ ধারায় সিক্ত,
কর্মব্যস্ততায় গা ভাসায় ক্ষিতি।
মধ্যগগনে ক্রুদ্ধ অংশুমালী জ্বলে।
ক্লান্ত আতপ ঢলে পড়ে পশ্চিমে
যেখানে দিগন্ত পৃথিবীতে মেশে।
আকাশের মন খারাপের কালে
কজ্জল মান্দাস চেপে একলা কাঁদে।
অবনী ভাসে আঁখির নীরে।
রামধনু রং ছড়ায় মেঘের গায়।
কখনো আঁধার কখনো আলো।
লক্ষ হাজার মানিক জ্বলে,
তিমিরের সাথে খেলা করে।
অমৃতাংশুকে ভালোবেসে
অভিসারের গল্প করে।
স্মারক – মোহিত ব্যাপারী
তোমার চোখে আকাশ দেখেছি আমি।
ঘুরেছি বিশ্বময়।
পেয়েছি তোমার মহানুভবতার পরিচয়।
তোমার মুক্ত আকাশ আজও আমায়
হাতছানি দেয়।
তোমার মনের গভীরে ডুব দিয়েছি,
গুপ্তধন এক অমৃতের সন্ধানে।
আমি তো সন্তরণ পটু নই।
কেবলই এলোপাথাড়ি হাত পা ছুড়েছি।
ঝড়ে পড়া ঈগলের ডানার ঝাপটায়,
তুমিই কেবল হয়েছ ক্ষতবিক্ষত।
নদীর ক্ষীণ ধারা সাগরে মিশে হারিয়ে গেছে।
তোমার যন্ত্রণার হয়নিকো অবসান।
কেবলই বাড়িয়ে দিয়েছি।
তোমার বিশাল ধনরত্নের ভাণ্ডার,
তোমার অমৃতের পুষ্করিণী নিঃস্ব করে,
নিজেকে উজাড় করে দিয়েছ আমায়।
ইচ্ছে ছিল দু’হাত ভোরে কুড়িয়ে নেবো,
মনের সিন্দুকে রাখব তুলে পরম যত্ন ভরে।
ইচ্ছে ছিল আকণ্ঠ পান করে অমৃত,
তোমার অমরত্বের সঙ্গী হব।
হীরের খনিতে আমি শুধু কয়লা কুড়িয়েছি।
এলোপাথাড়ি হাত পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে,
সমস্ত শরীর অবশ হয়ে এসেছে একদিন।
নিষ্প্রাণ দেহটা পড়ে আছে তলদেশে।
কয়লার চাপে হয়তো বা কোনোদিন
জীবাশ্ম হবে বলে।
হয়তো বা আর কোনোদিন তোমার আকাশে
ডানা মেলে উড়বে না পাখি।
অনেক না পাওয়ারাই হয়তো রয়ে যাবে
অশ্রুর বেদনাতে।
জীবাশ্মের প্রতিটি রেখায় তবু রয়ে যাবে
তোমারই প্রেমের স্মারক।
মেঘের অভিসার – মোহিত ব্যাপারী
আকাশ আলো সূর্য সকাল।
বৃষ্টি বাদল আকাশ পাতাল,
মেঘের সীমানায়।
ময়ূর নাচে পেখম তুলে আনন্দ উল্লাসে।
সৃষ্টিছাড়া বৃষ্টি আজি আনন্দেতে মাতে।
মেঘ প্রেয়সী ডাক দিলে সে
থাকতে নাহি পারে।
আকাশ আজি পাগল হল
মেঘ প্রেয়সীর ডাকে।
আকাশ আজি ধন্য হল
মেঘের আলিঙ্গনে।
মেঘ যে আজি মত্ত হল
আকাশেরই সাথে।
তাদের মিলন হবে বলে।
আনন্দ উল্লাসে
মাতাল হল সবে।
অভিসারের খেলা ঝলমলিয়ে ওঠে
মেঘের গরজনে।
আনন্দেরই অশ্রু যে তাই
বৃষ্টি হয়ে নামে।
শিয়রে নির্বাচন – মোহিত ব্যাপারী
নীতিহীন রাজনীতি আর দলাদলি।
উত্তাপ ছড়ায় চায়ের দোকান থেকে ময়দান।
শিয়রে নির্বাচন তাই এত আয়োজন।
চারিদিকে মহাসমারোহ উৎসব কলরব।
রাজনীতির জননেতা যত হারিয়েছে জনগণ সবে।
সবে মিলে কারসাজি কারবারি হয়েছে রাজ ব্যবসায়ী।
নীতিটাকে দূরে রেখে পাকিয়েছে হাত দুর্নীতিতে।
যত পাবো লুটে খাবো রাজনীতি জিন্দাবাদ।
আমি বড় নেতা, তুই জনগণ নচ্ছার।
আমায় কেন প্রশ্ন করিস হারামজাদা বজ্জাত ?
ফের যদি প্রশ্ন করিস, সোজা ভরে দেব জেলে।
আমার পা’চাটা পারিষদ যত বুদ্ধিমান প্রখর।
বুদ্ধির দোহাই পেড়ে কোনমতে পদ একখানা পেলে,
করজোড়ে লেজ নাড়ে, কেবলই আমায় ভজে।
হারামজাদা নচ্ছার জনগণ যত,
সারাক্ষণ কেন ঘেউ ঘেউ করিস পিছে পিছে ?
আমারই খাস, আমারই দুর্নাম রটাস।
কোন কিছুতেই মন ভরে না তোদের।
বলতে পারিস আর কত চাই তোদের ?
সবাই আসলে নামেই জননেতা।
জনগণকে পরিয়ে টুপি দল বদলায় ইচ্ছেমত।
নির্বাচনের উত্তাপেতে মুখের ভাষা লাগাম ছাড়ে।
মুখের ভাষার কদর্যতায় বিকট সব গন্ধ ছাড়ে।
ভাষাও যেন মুখ লুকাবে অন্ধকারে।
দেশটা এবার বিদেশ হবে স্বপ্ন দেখে।
আসলে বেচবে তাকে বেশ্যালয়ে।
বলিরেখা – মোহিত ব্যাপারী
জীবন কেন এত চুপচাপ !
শরীরের বলিরেখায় বয়সের ছাপ।
সব কিছু দেখেশুনেও সে চুপচাপ।
নিভে আসা শান্ত প্রদীপশিখার ন্যায়
ধিকিধিকি কেবল জ্বলছে সে আজ।
দপ করে জ্বলে উঠেও সে নিভে যায়
এক মুঠো শান্তির বিনিময়ে।
সেকাল একালে মিলছে না আর।
একে একে সব ছেড়ে চলে গেছে তাকে।
কালের প্রবাহে একলা ভাসমান।
বলিরেখার ভাঁজে ভাঁজে লুকানো আছে
কালের যত জীর্ণ লুপ্ত ইতিহাস।
কেউ আর চায়না তাকে ফিরে একবার।
তবুও সে অনেক কিছু বলতে চায়।
২০২০ – মোহিত ব্যাপারী
দু’হাজার কুড়ি — তোমাকে বরণ করেছি
রাত্রির ঝলমলে আলোর রোশনাইয়ে,
আনন্দঘন উল্লাসে হৃদয়ের আলিঙ্গনে।
পুরাতনকে পিছনে ফেলে নূতনের আহ্বানে,
নূতন আলোর সন্ধানে।
খাওয়া দাওয়া নাচ গান আর হুল্লোড়।
দ্যট ওয়াজ দ্য পার্টি নাইট।
কেউ বা নূতন স্বপ্নে বিভোর হয়েছিল
নূতন সূর্য ওঠা ভোরে।
কেউ বা পুরাতন স্বপ্নকে নিয়ে খেলা করে।
কিন্তু ধীরে ধীরে বিষাদের কালো মেঘ
গ্রাস করেছে সমস্ত আকাশ।
কুড়ি কুড়ি — এক মহা প্রলয়ের দিনকাল।
প্রতিটি মুহূর্ত এক আতঙ্কের দিনলিপি।
বিশ্বজুড়ে একদিকে মহামারী দাবানল আর
সমুদ্রের ফুঁসে ওঠা তীব্র সাইক্লোন।
কখনো জ্যোতিষ্কদের পৃথিবীর পাশ ঘেঁষে
হুস করে চলে যাওয়া।
মহাজাগতিক সব মহা বিস্ময়ের স্মারকচিহ্ন।
উল্কির মত বুকে এঁকে নিয়ে চলেছি আমরা।
স্তব্ধ জীবন কেবলই মৃত্যুর প্রতীক্ষা করে।
জীবনের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেড়ে নিয়ে,
জীবনকে করেছে বিকলাঙ্গ।
মৃত্যুর মিছিলে পা মেলাতে মেলাতে স্বর্গ নরকও
আজ স্যাঁতসেঁতে গরম আর ঘামের গন্ধে বিরক্ত।
চারদিকে পিশাচের মেলা বসেছে।
দেবতাদেরও পালাবার জায়গা নেই।
তালা পড়েছে মন্দির মসজিদ ও গির্জাতে।
রুদ্ধ দুয়ারের ওপারে ভগবানও তীব্র আর্তনাদে
চিৎকার করে ওঠে, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।
কুড়ি কুড়ি অভিশপ্ত এক পৃথিবীর আখ্যান।
কুড়ি কুড়ি এক জীবাণুর বিষাক্ত ছোবল।
কুড়ি কুড়ি মানুষের কর্মহীন বিষাদের ছোটগল্প।
ঘটনা দুর্ঘটনা ঘাত প্রতিঘাতের প্রতিটি মুহূর্ত।
কুড়ি কুড়ি বন্দি মানুষের গৃহ কারাগার।
বিশ্বজুড়ে রচিত হয়েছে অন্ধকারের উপন্যাস।
রাত্রির আঁধারে সরিয়ে ফেলে প্রিয়জনের লাশ।
কুড়ি কুড়ি শুধুই কি নিয়েছে, দিয়েছেও অনেক।
মানুষকে ফিরিয়ে দিয়েছে মানুষের কাছে।
ফিরিয়ে দিয়েছে তার অফুরন্ত অবসর।
মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা সহানুভূতি,
মানবিকতা, পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার।
পৃথিবীকে দিয়েছে প্রাণভরে শ্বাস নেবার অধিকার,
সুস্থ হয়ে ওঠার অবসর।
অমাবস্যার অন্ধকার পার হয়ে একদিন
পূর্ণিমার চাঁদ উঠবে আকাশে।
নূতন পৃথিবী ফুলে ফলে ভরে উঠে ফলবতী হবে,
নূতন বৃক্ষশাখে নূতন আলোর কিরণে।
নূতন ভোরের আলো একদিন ঠিকই উঠবে ফুটে।
আমরাই স্বাগত জানাবো তাকে।
অন্য কোনখানে – মোহিত ব্যাপারী
আমি কবি হতে চেয়েছিলাম শুধু তোমার কাছে।
তোমার হৃদয়ে কবিতার আলপনা আঁকতে চেয়েছিলাম,
হৃদয়ের অনুরণন তোমারই অনুভূতি অনুভবে।
কবিতা হয়ে কবিতার নেশায় মশগুল।
আমি কবিতা শোনাতে চেয়েছিলাম শুধু তোমাকেই।
শব্দের ছন্দে মিলনের গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে গেঁথেছি যে মালা
তোমারই উপহার সাজাব বলে।
সময়ের সাথে সাথে ঘুণ ধরেছে গিঁটে গিঁটে।
আলগা হয়েছে গ্রন্থি, ছিঁড়ে গেছে সব বন্ধন।
সাজানো সাধের বাগান তছনছ করে দিয়ে গেছে
অবৈধ অনুপ্রবেশকারী।
গ্রীষ্মের দাবদাহে সোনালী হয়েছে সব সবুজ।
তোমারই কবিতা আজ দিকভ্রান্ত ঘুরে ফেরে
অন্য কোনখানে, অন্য কোন কানে।
বাসি মালা পড়ে থাকে হৃদয়ের গোপন কুঠুরিতে।
সম্পর্ক – মোহিত ব্যাপারী
‘সম্পর্ক’ – কেবল একটি শব্দ নয়।
অনুভূতির হাজার ক্রিয়ায় মনের যত বিক্রিয়া।
জলের যেমন হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন,
সম্পর্কেরও তেমনি দুটি মন।
সম্পর্কের হাজারো শাখা প্রশাখা
মা-বাবা ভাই-বোন বন্ধু পরিজন,
অনাত্মীয় প্রতিবেশী চেনা অচেনার ভিড়।
অনুভূতিগুলো খুব দামি।
সম্পর্ক মানে বেঁধে বেঁধে থাকা মনে মনে।
সম্পর্ক জোর করে গড়ে ওঠেনা।
সম্পর্ক গড়ে ওঠে তিল তিল করে,
মনের আলো বাতাস পেয়ে পেয়ে।
সম্পর্ক গড়ে ওঠে না মেজাজ আর শর্তে।
সে চায় মনের জানালায় দখিনা বাতাস।
অনুভূতি তার খাদ্য।
অনুভূতির বিষক্রিয়ায় ফাটল ধরে মনের দেয়ালে,
ঘরের কোণে কোণে।
অনুভূতির শীতলতায় স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার।
অনুভূতির শিকড়ে জল দাও,
সে তোমায় ফল দেবে।
যদি জানতে চাও – মোহিত ব্যাপারী
আমাকে যদি জানতে চাও
কেবল আমার বাইরেটা দেখ না,
আমার অন্তর বাহির মিলিয়ে দেখ।
বাইরে যদি বা প্রলেপ থাকে, অন্তরে খাঁটি।
কঠিনের আবরণে কোমল হৃদয় বাস করে।
আমাকে যদি জানতে চাও
শুধুই আমার কাছে এস না,
ওই দূর থেকেও অপলকে দেখে নিও।
কাছে এলেই যে সব চেনা হয়ে যায় না।
দূরেও যে থাকে চেনার অনেক কিছু বাকি।
আকাশের সব রাত যেমন পূর্ণিমা নয়,
আঁধারও যে তাতে থাকে কিছু মিশে।
আমাকে যদি জানতে চাও
দূর থেকেও চিনে নিও বেশ করে।
কাছে এসে দেখলে হয়ত বা জ্বলন্ত অঙ্গার
কিংবা পুড়ে শেষ হওয়া একমুঠো ছাই।
হলুদ শাড়ি – মোহিত ব্যাপারী
হলুদ বরণ হলুদ শাড়ি।
সামনে যেজন সেজন নারী,
দুধে আলতা গা।
শরীর জুড়ে নয়নাভিরাম শোভা।
ঠোঁট দুটি তার লাল টুকটুক
গলে সীতাহার।
চোখ দুটি তার টানা টানা
যেন কুমোরটুলির হাতে আঁকা।
ধনুক বাঁকা দু’ধারে তার
ভুরুর মাঝে লাল একটি টিপ।
বাঁশির মত নাকটি তার
মুখের আদল পবিত্র নিষ্পাপ।
মাথা ভরা ঘন কালো চুল
দুলছে কানে ঝুমকোলতার দুল।
শরীরখানি একটু ভারী
এক দেহতেই লক্ষ্মী সরস্বতী।
মৃত্যুর রং – মোহিত ব্যাপারী
এ মায়াবী নগর ছেড়ে
মৃত্যুর মিছিলে পা মিলিয়েছে
প্রতি নিয়ত, এ পৃথিবীর মানুষ যত।
লাল নীল কমলা গোলাপি সবুজ,
চারিদিকে কেবল আলোর রোশনাই।
কেবলই চোখ ধাঁধিয়ে যায়।
তবুও এ পৃথিবী ছেড়ে যেতে হয়।
নতুন রঙের সন্ধানে মৃত্যুর পুরীতে
এ জীবন ফিকে হয়।
জীবনের রঙ বদলায় মৃত্যুর রঙে,
রঙ খোঁজে জীবনের ওপারে।
মৃত্যুরও কি রঙ হয় ?
কেমন সে রঙ? হয়তো ধূসর।
গোটাটাই ছেয়ে যায় ছাইয়ের চাদরে।
একটুখানি আলো চাই – মোহিত ব্যাপারী
শিক্ষা আনে চেতনা, শিক্ষাই বিকাশ।
শিক্ষা দেয় জীবনের মুক্তি।
গ্রন্থকীট হয়ে শুধু বিদ্বান হওয়া নয়।
শিক্ষা চাই, জীবনের শিক্ষা।
মনের অন্ধকার রাতের চেয়েও ভয়ানক।
থমথমে গুমোট পরিবেশ।
একটুখানি আলো চাই মনের দুয়ারে।
মানুষের মাঝে মানুষই মানুষের শত্রু।
হিংসার আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই।
হিংসার আগুনই হিংসার জন্ম দেয়।
অশিক্ষার অন্ধকার তাকে ছড়িয়ে দেয়।
অধিকাংশ হিংসাই কারণের থেকে অকারণে হয়।
মনের অন্ধকারই তার দায়ভার নেয়।
একে অন্যের দিকে বন্দুক তাক করে আছি।
সুযোগ পেলেই খুলিটা উড়িয়ে দেব।
তারপর অনুশোচনায় আঙুল চুষি।
শিক্ষা এলেই আলো আসবে একদিন।
অস্ত্র সেদিন লুটিয়ে পড়বে ভূমিতলে।
একটুখানি আলো চাই মনের দুয়ারে।
প্রকৃত শিক্ষাই আলো দিতে পারে।
আমি বদলে যাব – মোহিত ব্যাপারী
চেনা পরিবেশ বদলায় অচেনার ভিড়ে,
দিন বদলের খেলায়।
মুহূর্তরা ছাপ রেখে যায়
সময়ের ষড়যন্ত্রে।
বদলে যাওয়াটা খুব দরকার।
জীবন থেমে থাকে না।
স্বপ্নেরা হারিয়ে যায় অনেক দূরে,
দূর পাহাড়ের কোলে।
স্বপ্নেরা ভেসে যায় মেঘেদের সাথে,
নিশ্চুপ নির্জন নিরুদ্দেশে।
আমিও একদিন বদলে যাব,
তোমারই মতন করে।
নিজেরই সাথে কথা বলে নেব,
একাকীত্বের অভিসারে।
অপ্রকাশিত ক্রোধ – মোহিত ব্যাপারী
পৃথিবীটা জ্বলন্ত গনগনে আঁচ।
জীবনের শরীরকে উষ্ণতা দেয়না আর।
সে তপ্ত লোহা টকটকে লাল।
পুড়িয়ে ছাই করে দেয় অথবা
জীবনের শরীরে ক্ষত রেখে যায়।
পৃথিবীটা জ্বলন্ত গনগনে আঁচ।
মাথার ভিতর সারাক্ষণ অস্বস্তি কাজ করে।
মেজাজটা সর্বদাই সপ্তমে চড়ে থাকে।
রাজনীতি হিংসা প্রতিহিংসার রেষারেষি চলে।
সামাজিক অবক্ষয়ের পথে প্রতিযোগিতা বাড়ে।
সারাদিন ঝিম মেরে পড়ে থাকি।
মাথাটাকে শান্ত করতে চেষ্টা করি।
কিছুতেই শান্ত হয়না সে।
অন্তরের রাগটা গুমরে ফুঁসে ওঠে।
তবু তাকে জোর করে দমিয়ে রাখি।
চোখ কান সবই তো খোলা।
দুনিয়ার সবকিছুই দেখতে হচ্ছে।
ইচ্ছে থাকলেও এড়িয়ে যেতে পারছি কই?
সবকিছু সহজে মেনে নিতে পারছি কই।
মেনে নিতে পারলেই ভালো হত।
মেনে নিতে পারছিনা বলেই ক্রোধ বাড়ছে।
অপ্রকাশিত ক্রোধ গুমরে গুমরে ফুঁসছে ।
দেখব না মায়া চাঁদ – মোহিত ব্যাপারী
আকাশে উজ্জ্বল মায়াবী চাঁদ।
গোলাকার রুপোলি চাঁদ।
হাজার স্বপ্ন আঁকা পূর্ণিমা রাত।
আলো ঢাকা ছায়া রাতে
বাঁকা ঠোঁটে প্রেম আর মায়া জাগে।
বিবশ মন অবশ শরীরের আধারে
মদিরার হিন্দোল জাগে।
তবুও আমি চেয়ে দেখব না
আকাশের রাতে ওই পূর্ণিমার চাঁদে।
পূর্ণিমার চাঁদ তো সকলেই দেখে।
আমি হেঁটে যাব আঁধারের কাছে।
আঁধারের মাঝে তারাদের ভিড়।
মিটিমিটি কথা বলে চুপিচুপি একসাথে।
একসাথে বেঁচে থাকে হাত ধরে।
আঁধার ভেদ করে চেয়ে থাকি চুপ করে
তুমি আমি একসাথে পাশাপাশি বসে।
কুমিরের কান্না – মোহিত ব্যাপারী
কুমিরের কান্না দেখেছ কখনো ?
আমি দেখেছি বহুবার।
যেথাসেথা আজও দেখি বারবার।
রাজনীতির নেতাদের চোখের জল
অঝোরে ঝরে পড়ে বারবার।
চোখ মেলে চেয়ে থাকি আমি।
সাধারণ মানুষ ভোগে নিজের জ্বালায়।
সাধারণের বেদনায় নেতার হৃদয় বিহ্বল হয়।
গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্রেরই জয়।
সাধারণকে তাই সকলেই পাশে চায়।
গণতান্ত্রিক উৎসবে ভোট বড় বালাই।
ক্ষমতার পথে তাই ভোটে জেতা চাই।
ভোটের বৈতরণীতে নেতা মানুষের সমব্যথী হয়।
ভোটের শেষে সে আপন বাসায় ফিরে যায়।
পাহাড়ের কোলে সূর্য হাসে – মোহিত ব্যাপারী
পাহাড়ের কোলে সূর্য ওঠে,
সোনার থালায় ডিমের কুসুম।
ধীরে ধীরে ভোরের আলো ফোটে।
কুসুমটা ভেঙে যায় সূর্যের জন্ম হতে।
দূর থেকে দেখা যায় নদীটাকে,
শুয়ে আছে এঁকেবেঁকে।
পাখি ডাকে, হায়নাটা ছুটে যায়।
পৃথিবীতে সবুজের রং লাগে।
কুলকুল ধ্বনি ওঠে ঝরনার জলে।
আপন খেয়ালে সে বয়ে চলে।
বুক ভরে শ্বাস নিই সবুজের মাঝে।
ঘুম ভাঙে বনমোরগের ডাকে।
পাহাড়ি মেয়ে বোঝা নিয়ে উঠে আসে।
সূর্যের আলো সোনা হয় বরফের গায়।
ঘাসের আগায় জলের বিন্দু চিকচিক করে।
চায়ের পেয়ালা হাতে সূর্যের মুখোমুখি দাঁড়াই।
আমার বৃষ্টি হবি? – মোহিত ব্যাপারী
তুই যদি হোস আমার মান অভিমান,
সারাজীবন আঁকড়ে থাকব তোকে।
তুই কি আমার বৃষ্টি হবি?
তুই যদি হোস আমার শিলাবৃষ্টি,
আমার সব মান অভিমান ভেঙে দিস।
শিলগুলি সব কুড়িয়ে রাখব যত্ন করে।
রাগগুলো সব গলে গিয়ে জল হবে।
বৃষ্টি শেষে দেখব তোকে নতুন চোখে।
অঙ্কুরিত চারা যেমন অবনীকে দেখে।
তুই কি আমার কালবোশেখি ঝড় হবি?
তুই যদি আমার কালবোশেখি ঝড় হোস
ডানা মেলে উড়ে যাব তোর সাথে।
তামাশা – মোহিত ব্যাপারী
আর কত দেখব বল ভোটের রঙ তামাশা।
প্রতি মুহূর্তেই টানটান উত্তেজনা আর চমক।
ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদল আর ভোল বদলের পালা।
গিরগিটিরও লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়।
মুখোশের আড়ালে পৈশাচিক দানবের বাস।
ভোট আসে ভোট চলে যায়।
পালাবদলের ভিড়ে মানুষ হারিয়ে যায়।
ভোট আসে ভোট চলে যায়।
প্রতিশ্রুতির বন্যায় মানুষ ভেসে যায়।
ভোট আসে আবার ভোট চলেও যায়।
আমন্ত্রিত জনতার উপহারে ঘর ভরে নেতা নেত্রীর।
সমারোহ শেষে পড়ে থাকে উচ্ছিষ্ট পাতা গ্লাস।
ভোটের শেষে বাতাসে ভাসে শুধু বারুদের গন্ধ
আর কিছু সন্তানহারা অসহায় জননীর ক্রন্দন।
ভোট আসে আবার ভোট চলেও যায়।
জনগণ যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে যায়।
শুরু থেকে শুরু – মোহিত ব্যাপারী
বৈশাখী ঝড়ে ভেঙে গেছে ঘর।
বৃষ্টির ছাঁটে আমি ভেজা কাঁক।
বন্যার জলে ভেসে গেছে সব।
খড়কুটো ধরে বেঁচে আছি আজ।
জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে যত অনুতাপ।
শীতল হৃদয় শান্ত হয়েছে আজ।
ঝড়ের দাপটে ভেঙেছে কোমর।
উঠে দাঁড়াবার অবলম্বন খুঁজি বারবার।
অবলম্বন গুলো মরচে ধরেছে অব্যবহারে।
শুরু থেকে শুরু করতে হবে ফের।
নিত্য যাত্রী (ছড়া) – মোহিত ব্যাপারী
বোঝাই করা রেলগাড়ি।
মানুষ বোঝাই হাজার হাজার।
চিড়ে চ্যাপ্টা বেহাল দশা।
প্রতিদিনের নিত্য যাত্রী।
মেজাজটা তাই খিটখিটে।
ঘামে ভেজা শরীরগুলো
সবার সাথে লেপ্টে থাকে।
নামবে তারা শিয়ালদহ দমদম।
খেয়ে নিয়ে লুচি আলুর দম
ছিটকে যাবে যে যার মতন।
প্রতিদিনের নিত্য যাত্রী
কাজ করে যায় আপন মনে।
আজকের শৈশব – মোহিত ব্যাপারী
আজকের শৈশব হারিয়ে গেছে
যান্ত্রিকতার ভিড়ে।
আজকের শৈশব হারিয়ে গেছে
চার দেয়ালের ছোট্ট কুঠুরিতে।
আজকের শৈশব বাঁধা পড়ে আছে
আমরা দু’জন আমাদের দু’ জনের মাঝে।
আজকের শৈশব শুয়ে আছে
অতি আধুনিক পৃথিবীর কোলে।
আজকের শৈশব পড়ে আছে একপাশে
এক’শ রকম একাকীত্বের ভিড়ে।
খোলা মাঠ নেই, আত্মীয় পরিজন নেই
চারিদিকে কেবল কংক্রিটের ভিড় আছে।
আজকের শৈশব বসে আছে
প্রাচীনতার ধ্বংসস্তূপের উপরে।
আজকের শৈশব জন্ম নেয়
দামি খেলনা আর রোলারকোস্টারে করে।
ছেলে মানুষী – মোহিত ব্যাপারী
প্রস্ফুটিত ফুলের কুড়ি দেখতে দেখতে
আকাশ পাতাল ভাবি।
অবাক চোখে উদাস চেয়ে থাকি।
এইটুকু পাগলামি থাক আমার গোপনে।
সাগরের বুকে ঢেউ আঁকি।
যতদূর চোখ যায় দিগন্ত দেখি।
বালির বুকে আলপনা আঁকি।
এইটুকু ছেলেমানুষি থাক আমার গোপনে।
মেঘেদের মাঝে ডানা খুঁজি উড়ব বলে।
বৃষ্টি নামলে হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে ভিজি।
খালি গায়ে ঘাসের সাথে মাটির গন্ধ মাখি।
এইটুকু পাগলামি থাক জীবনে আমার।
মন খারাপের কালে পথের মাঝে পথকে ভালোবাসি।
পথের গতি ভোলায় জীবনের ক্ষত।
যখন তখন পথের মাঝেই আনন্দ খুঁজি।
ছেলেমানুষির আদরে জড়িয়ে জীবন ভাল থাকুক।
অরণ্যের কচি পাতারা হৃদয় আগলে রাখে।
পাতার ফাঁকে আলোর সাথে খেলায় মাতে।
বন্য জন্তুর বন্য ভালোবাসা চাই আমার একটুখানি।
একটুখানি ছেলেমানুষির অবাধ্যতায় স্বপ্ন দেখি।
একলা হেঁটে মরুভূমিতে তোমায় খুঁজি।
তৃষিত নয়নে মরীচিকায় তোমায় দেখি ।
কতশত ক্যাকটাস হেঁটে যায় আমার পাশে।
এইটুকু ছেলেমানুষি অবাধ্যতায় আমি স্বপ্ন দেখি।
মনের ক্যানভাসে আজগুবি সব ছবি আঁকি।
মাথাহীন কারো হাত নেই কারো পা নেই।
মনের সব রঙ ঢেলে আকাশকে সাজাই।
পাগলামি ভালোবেসে ছেলেমানুষ হয়ে যাই।
যুগ্মক – মোহিত ব্যাপারী
খেলার পুতুল খেলাচ্ছলে খেলছ সারাবেলা।
মাটির পুতুল কাচের পুতুল পুতুল হরেক রকম।
ইচ্ছেমত সাজিয়ে রাখ মন চায় যখন যেমন।
মনের মত না হয় যদি দু’চোখ ডলে কাঁদতে জানো।
মনের আশ মিটলে পরে সরিয়ে রাখ এক কোণেতে।
তোমরা ভালো ভালোবাসতে জানো।
ইচ্ছে যদি হয় আছড়ে ফেলে ভাঙতে জানো।
যখন মন ভালো হয় নতুন করে জুড়তে জানো।
জুড়তে বসে কতই না সাধ সাধনা।
ভাবতে যদি ভাঙার আগে যত্ন নিতে একটুখানি।
ভাঙত না সে জোড় কখনো আলটোকাতে।
ভাঙলে তাতে জোর কমে যায় জোড়েও যদি আবার।
জোড় কলমে জোড় থেকে যায় দাগ থেকে যায় অন্তরে,
যতই আসুক নবকিশলয়।
ভাঙলে তাতে ফাঁক থেকে যায় পুতুল হোক বা মন।
পুতুল খেলা সাঙ্গ হলে জীবন কাটে আস্তাকুড়ে।
ভক্ষণ সর্বস্ব – মোহিত ব্যাপারী
রাজাই রক্ষক রাজাই ভক্ষক।
প্রহসন শুধু রাজ্য শাসন।
রক্ষক নামটা তার বাইরের বর্ম।
ভক্ষণই তার জীবনের সর্বস্ব।
ক্ষমতাহীন ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ক্ষমতায় এসে সে-ই মানুষের রক্ত চোষে।
ক্ষমতাহীনেরও লোভ আছে সাধ আছে।
কিন্তু সাধ পূরণের ক্ষমতা নেই।
ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ যে রাজা,
দুর্নীতিপরায়ণ বিকৃত সমাজ, শরীর পচাগলা।
বেপরোয়া ক্ষমতায় অত্যাচারী রাবণ।
ইতিহাস সাক্ষী তার অনিবার্য পতন।
রক্তের স্বাদ – মোহিত ব্যাপারী
ক্ষমতার অলিন্দে ক্ষমতাই শুধু কথা বলে।
আর সবে চুপ থাকে হাত জোড় করে।
কারো অতিভক্তি প্রভুপদে সুবিধা ভোগে।
বঞ্চিত নিপীড়িত চুপ থাকে ক্ষমতা নেই বলে।
ব্যাঘ্র শাবকও শিকার ধরে পুঁটিমাছ ভেবে।
ক্ষমতার কাছে পরাজিত বিবেক মনুষ্যত্ব আদর্শ নীতি।
ক্ষমতা পেলে পৈতৃক সম্পত্তি ভাবে।
শোষণ নিপীড়নহীন ক্ষমতা তো ক্ষমতাই নয়।
দেওয়ালে ঠেকলে পিঠ শোষিতও জেগে ওঠে।
তারও সেই ক্ষমতা দখলেরই লড়াই।
ক্ষমতা পেলে শোষিতও শোষক হয়ে ওঠে।
একদল চিরকাল শোষিতই থেকে যায়।
যে হাতে একবার রক্তের স্বাদ পায়,
সে তো কেবল রক্তেরই স্বাদ চায়।
উন্মুলক – মোহিত ব্যাপারী
জীবনের ধর্মে অগ্রগতির জোয়ারে মানুষ ছুটে চলেছে অবিরাম।
পরিবর্তন পরিবর্ধন উদ্বর্তনের নিয়মে আজকের দুরন্ত গতি।
লক্ষ কোটি মানুষের সম্মিলিত সাধনার ফল।
বিন্দু বিন্দু পরিশ্রমের ফসলে আজকের বৃক্ষ মহীরুহ।
তবুও তা পরিণত আজ বিষবৃক্ষে।
মানুষ ক্রমাগত নিজেকে এগিয়ে দিয়েছে উন্নতির পথে।
আধুনিক হয়েছে যত পিছিয়ে পড়েছে জীবনের কাছ থেকে।
ধ্বংসের দিকে নিজেকে ফেলেছে ধাপে ধাপে।
নিজেরই স্বার্থে অসুস্থ করেছে ধরণীকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দিয়ে।
ধরণীর স্বাস্থ্য ফেরাবার দায় ছিল আমাদেরই।
তবু আপন স্বার্থে দূষিত করেছি তাকে বারেবারে।
পৃথিবীকে দূষিত করেই কেবল ক্ষান্ত থাকিনি আমরা।
পাড়ি জমিয়েছি ভিন গ্রহের সন্ধানে,
সেখানেও দূষণ ছড়াব বলে।
শিক্ষার অন্ধকার – মোহিত ব্যাপারী
মানুষ যদি মানুষের জন্যে
তবে মানুষে মানুষে কেন এত বিভেদের বেড়াজাল।
ধর্মের জন্যে মানুষ নয়
মানুষের জন্যেই যদি ধর্ম হয়
তবে কেন ধর্মের নামে এত ভাগাভাগি !
এত প্রতিরোধ প্রতিশোধ প্রতিহিংসা কিসের তরে?
সকল ধর্মই মানুষের কথা বলে।
মানুষ যেখানে গৌণ, অবহেলিত, নিষ্পেষিত
ধর্ম সেখানে কোন অমরত্বের সন্ধান দেয় ?
ধর্ম আমাদের চেতনায় থাক, শরীরে নয়।
ধর্মের নামে চেতনাকে কলুষিত করে চলেছি অনবরত।
ধর্ম যেন এক বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
যেখানে পারছি যেভাবে পারছি ধর্মকে ব্যবহার করছি।
মানুষকে ঘোল খাইয়ে ভুল বুঝিয়ে
বুঝেই হোক কিংবা না বুঝেই হোক
আপন স্বার্থ চরিতার্থ করছি।
আমরা সবাই জ্ঞানীগুণী ধর্মের ধ্বজাধারী।
আমরা হলাম উপরওয়ালার প্রতিনিধি।
তাই আমাদের কথাতেই ধর্ম চলে, সমাজও চলে।
আপন স্বার্থের বাইরে বাকি সবই ফিকে লাগে।
চোখের দৃশ্যমানতাও কমে আসে।
ধর্মের নামে যারা মানুষকে ভড়কায়, ভয় দেখায়,
ধর্মের নামে যারা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে,
ধর্মের নামে যারা মানুষের বর্বরতাকে উৎসাহ দেয়,
দেবতার মুখোশের আড়ালে তারা রাক্ষসগণ।
পৃথিবী জুড়েই এরা বর্বরতার স্বাক্ষর রেখে যাবে চিরকাল।
শিক্ষা এদের চেতনাকে কেবলই অন্ধকার দেয়।
নরকের পথে – মোহিত ব্যাপারী
জীবনের সাথে খেলছি প্রতিনিয়ত।
জীবনের খেলায় মত্ত।
হারছি কিংবা জিতছি।
হারটাকে জিত ভেবে ভুল করছি।
নীতিবোধে জল ঢেলেছি।
অর্থ ক্ষমতার দম্ভে চোখ দুটো অন্ধ।
জীবনকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছি।
একটু একটু নরকের পথে পা বাড়িয়েছি।
জীবনের সাথে ছিনিমিনি খেলছি।
জীবনকে দাঁড়িপাল্লায় তুলছি।
জীবনকে জোর করে নরকের দ্বারে ফেলছি।
জীবন ঠিক প্রতিশোধ নেবে একদিন।
ধীর বিষ – মোহিত ব্যাপারী
মানুষে মানুষে হিংসা হানাহানি
কাল থেকে কালে বহমান প্রবহমান খরস্রোতায়।
চিরকালীন এক রক্ত নদীর ধারা।
ফুসফুস ধমনী শিরা উপশিরা অতিক্রম করে
সমস্ত শরীর জুড়ে জাঁকিয়ে বসেছে দূরারোগ্য ব্যাধি।
রাজনীতি দলাদলি মাঠে ময়দানে,
হোক না সে ভালোবাসা কিংবা মনের কাছাকাছি।
কোথাও অস্ত্রের জবাবে অস্ত্র ধেয়ে আসে,
কোথাও মনের বদলে মন।
কোথাও সশব্দ বুলেটের তীব্র চিৎকার ধ্বনি,
কোথাও নিঃশব্দ অভিমানী মন।
দুই ধ্বংস করে।
কেউ তীব্র গর্জনে, কেউ নিঃশব্দে।
তুমি যত সৎ হবে ততই অবিশ্বাসী হবে।
অসততার চূড়ায় বসে তুমি মহৎ হবে ।
মানুষ মহৎ আজ সুচতুর শৃগাল শাবক।
সততার ছায়া ডিঙিয়ে অসততার রথের সারথি।
যে যা বলে বলুক লোকে,
তাতে আমার যায় আসে কি।
আমি আছি রাজার হালে বেজায় বেশে।
বুদ্ধি আর ক্ষমতার জোরে আমি তো সাকসেসফুল।
ওরা সবাই নিন্দা রটায় বস্তা পচা বুলি আওড়ায়
ওদের কিছুই হয়নি বলে।
প্রতিযোগিতা ! সেও তো সুস্থ নয়।
যুদ্ধ আর প্রতিযোগিতা কেবলই হিংসার জন্ম দেয়।
অন্তরের রাক্ষসটাকে জাগিয়ে তোলে বারবার।
ক্ষুধার্ত হায়নার মত সময়ের স্রোতে
এগিয়ে যায় প্রতি মুহূর্তে।
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচলে গোটা শহরটাই
কখন যেন তলিয়ে গেছে আটলান্টিকের অতল তলে।
হিমশীতল জলের তীব্র চাপে সে আজ
হিমায়িত শবদেহ হয়ে আছে।
শিক্ষার অন্ধকার – মোহিত ব্যাপারী
মানুষ যদি মানুষের জন্যে
তবে মানুষে মানুষে কেন এত বিভেদের বেড়াজাল।
ধর্মের জন্যে মানুষ নয়
মানুষের জন্যেই যদি ধর্ম হয়
তবে কেন ধর্মের নামে এত ভাগাভাগি !
এত প্রতিরোধ প্রতিশোধ প্রতিহিংসা কিসের তরে?
সকল ধর্মই মানুষের কথা বলে।
মানুষ যেখানে গৌণ, অবহেলিত, নিষ্পেষিত
ধর্ম সেখানে কোন অমরত্বের সন্ধান দেয় ?
ধর্ম আমাদের চেতনায় থাক, শরীরে নয়।
ধর্মের নামে চেতনাকে কলুষিত করে চলেছি অনবরত।
ধর্ম যেন এক বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
যেখানে পারছি যেভাবে পারছি ধর্মকে ব্যবহার করছি।
মানুষকে ঘোল খাইয়ে ভুল বুঝিয়ে
বুঝেই হোক কিংবা না বুঝেই হোক
আপন স্বার্থ চরিতার্থ করছি।
আমরা সবাই জ্ঞানীগুণী ধর্মের ধ্বজাধারী।
আমরা হলাম উপরওয়ালার প্রতিনিধি।
তাই আমাদের কথাতেই ধর্ম চলে, সমাজও চলে।
আপন স্বার্থের বাইরে বাকি সবই ফিকে লাগে।
চোখের দৃশ্যমানতাও কমে আসে।
ধর্মের নামে যারা মানুষকে ভড়কায়, ভয় দেখায়,
ধর্মের নামে যারা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে,
ধর্মের নামে যারা মানুষের বর্বরতাকে উৎসাহ দেয়,
দেবতার মুখোশের আড়ালে তারা রাক্ষসগণ।
পৃথিবী জুড়েই এরা বর্বরতার স্বাক্ষর রেখে যাবে চিরকাল।
শিক্ষা এদের চেতনাকে কেবলই অন্ধকার দেয়।
পালাচ্ছি – মোহিত ব্যাপারী
পালাচ্ছি পালাচ্ছি আর পালাচ্ছি।
সবাই সবার থেকে কেবল পালাচ্ছি।
সবাই আমরা পালাতে চাইছি।
বাড়ি থেকে স্কুল, স্কুল থেকে খেলার মাঠ।
অফিসে বসের ভয়, বাড়িটা জেলখানা মনে হয়।
রাজনীতি করব না নোংরামি মনে হয়।
আর্ত পীড়িতকে পাশ কাটিয়ে চলে যাই,
কে পোহাবে ঝক্কি পুলিশের টানাটানি।
আমরা পালাচ্ছি পালাচ্ছি আর পালাচ্ছি।
এটা চাই ওটা চাই, এই কাজ সেই কাজ,
সবই ছাই বাজে কাজ।
কোনটা যে আসল আর কি যে চাই,
তা কি আমি জানি ভাই !
খুঁজেছি নিরন্তর।
ছুটছি আর ছুটছি অবিরাম অবিরত।
ওটা ছেড়ে এটা, এটা ছেড়ে ওটা।
একটা হিংস্র হায়না তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সারাক্ষণ।
ভয় থেকে পালাচ্ছি লজ্জা থেকে পালাচ্ছি।
দুঃখ আর কষ্টের বোঝা ঝেড়ে ফেলতে চাই।
পালাচ্ছি আমরা অভিমান অনুভূতি থেকে।
দায়িত্ব থেকে পালাচ্ছি দায়িত্বের চাপে।
নিজের থেকে পালাচ্ছি, পালাচ্ছি অন্যের থেকেও।
আমরা কেবল ছুটছি ছুটছি আর ছুটছি।
আমরা পালাচ্ছি পালাচ্ছি আর পালাচ্ছি।
জীবনের থেকে পালাচ্ছি।
পালাতে পালাতে খাদের কিনারে পৌঁছেছি।
অবশেষে নিরুপায় আত্মসমর্পণ।
মৃত্যুর আলিঙ্গনে হিমাঙ্কের অনুভূতি।
স্বপ্ন ছোঁয়ার নেশা – মোহিত ব্যাপারী
ঊষসী ভুবন সুকুমার এ জগৎ সংসার।
আমরা সুন্দরের পূজারী চিরকাল।
প্রেম প্রীতি আর মায়া দিয়ে বেঁধেছি বারেবার।
দায়িত্ব ছিল অনেক, দায়িত্ববোধও।
দায় ছিল সকলের।
কখনো পালন করেছি, কখনো বা উদাসী থেকেছি।
জন্ম হয়েছে যবে সুদীর্ঘ মৃত্যু পদযাত্রায়
দু’ধারে তার হাজারো স্বপ্ন সারি বেঁধে আছে।
ছোঁয়া যায়না কাউকেই। তবু ছুঁতে চাই।
ছোঁয়ার নেশায় মত্ত হস্তির ন্যায় ছুটছি ক্রমাগত।
যাকে পিছনে ফেলে গেলাম, জানিনা কি ফেলে গেলাম।
সামনে যা আছে, জানিনা কি আছে।
মহুয়ার নেশায় উন্মত্তের ন্যায় কেবল ছুটে চলা।
বাহারি স্বপ্নভরা পথ জমকালো আলোর মাঝেও
অন্ধকারের ছাঁয়া নেমে আসে মাঝে মাঝে।
বিষন্নতার কালো মেঘে ছেঁয়ে যায় সমস্ত আকাশ।
জানি এ পথ শুধু মরণেই তার শেষ হয়।
জানিনা কেবল রঙ্গমঞ্চে আগামী আমার ভূমিকা।
বেকার – মোহিত ব্যাপারী
ওরে সব হারা বেকারের দল
আর কি তোরা হারাবি বল।
জীবনের মূল্যবান সময় পেরিয়ে গেছে
তবু যেটুকু আছে সেটুকুই সম্বল।
এবার তোরা পথে নাম।
সরকার বলছে গণতন্ত্র।
সরকার বলছে উন্নয়ন।
সরকার বলছে চুপ বেয়াদপ।
ওরে শিক্ষিত বেকারের দল
সরকার তোদের ভিক্ষা দেবে,
কাজ দেবেনা।
মাসে মাসে ভাতা দেবে।
বিনা পয়সায় চাল দেবে।
তোরা তাই কি নিবি বল ?
না! না! না!
আমরা ভিক্ষা চাইনা।
ভাতা চাইনা, চাল চাইনা।
আমরা আমাদের অধিকার চাই।
সুশিক্ষা চাই, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চাই।
আমরা কাজ চাই।
তবে এবার তোরা পথে নাম।
শাসকের রক্তচক্ষু উপড়ে ফেল।
নিজের অধিকার ছিনিয়ে আন।
উদ্ধত যৌবন আর যোগ্যতার কাছে
পরাজিত রাইফেলের গুলি।
ওরে সব হারাদের দল
আর কি তোরা হারাবি বল।
এবার তোরা পথে নাম।
অধিকারটুকু শুধু ছিনিয়ে আন।
মোহিত ব্যাপারী | Mohit Bapari
Kolkata to Kashmir Trip | আবেগের নাম কাশ্মীর | 2023
New 18+ Bangla Galpo | বৈশালী পাড়ার প্রতিমারা | Saswata Bose
Pancha Byanjan Galpo | পঞ্চব্যঞ্জন পর্ব ২ | জয়ন্ত কুমার সরকার | Top New 2023
Bangla Galpo Ochena | অচেনা | শওকত নূর | Top New 2023
Shabdodweep Web Magazine | New Modern Bengali Poetry | Mohit Bapari
Bengali poetry has always been known for its depth, sensitivity, and rich cultural roots. From the timeless classics of Rabindranath Tagore to the revolutionary words of Kazi Nazrul Islam, Bengali poetry has undergone several phases of transformation. In recent years, a new wave of New Modern Bengali Poetry has emerged, reshaping the literary landscape. This modern style incorporates contemporary themes, experimental forms, and fresh expressions while still drawing from the rich heritage of Bengali literature.
Here, we explore the evolving nature of New Modern Bengali Poetry, its defining features, and how it continues to captivate readers. We’ll also look at the contributions of poets like Mohit Bapari, whose work has been published on platforms like Shabdodweep Web Magazine, a space dedicated to showcasing contemporary Bengali poetry and creative writing.
The Evolution of New Modern Bengali Poetry
New Modern Bengali Poetry is a departure from traditional styles in many ways, but it does not abandon its roots. The themes, the structure, and even the language used by modern Bengali poets reflect the changes in society, culture, and technology. This genre of poetry often tackles issues like urban life, personal identity, socio-political matters, and existential questions. It reflects a modern, fast-paced world, yet still carries the emotional depth that has long been characteristic of Bengali writing.
Key Features of New Modern Bengali Poetry
Free Verse and Experimentation
Traditional Bengali poetry often followed rigid structures and rhyme schemes. However, New Modern Bengali Poetry tends to embrace free verse, allowing poets to break free from conventional rules. This offers them more freedom to express their thoughts and emotions without being confined by form.
Contemporary Themes
One of the defining characteristics of New Modern Bengali Poetry is its engagement with modern themes. These poets address global and local issues, from urbanization, mental health, and technology, to love, nature, and spirituality. There is a strong focus on personal identity and the challenges of living in a complex, fast-changing world.
Blending of Traditional and Modern Elements
While free verse is common, New Modern Bengali Poetry still maintains certain traditional influences. Many poets, including Mohit Bapari, draw inspiration from classical Bengali forms and integrate them with modern sensibilities. This blending of old and new allows the poetry to maintain cultural relevance while appealing to a contemporary audience.
Global Influence
Modern Bengali poets are influenced by global literary trends, including Western poetry, as well as the growing influence of the digital world. This exposure to international styles has encouraged innovation in contemporary Bengali poetry, making it more diverse and dynamic.
Simplification of Language
New Modern Bengali Poetry often makes use of simple, everyday language to make poetry more accessible. The focus is on directness and clarity rather than complex metaphors and literary devices. This makes the poetry more relatable to readers of all ages and backgrounds.
The Role of Digital Platforms in Promoting Contemporary Bengali Poetry
With the rise of digital media, New Modern Bengali Poetry has found a fresh platform for expression. Websites like Shabdodweep Web Magazine play an essential role in showcasing modern Bengali poetry and short stories. These online platforms allow contemporary poets to reach a global audience, share their work with readers, and receive valuable feedback from fellow writers and readers alike.
Shabdodweep Web Magazine is one of the leading platforms dedicated to promoting contemporary Bengali poetry and creative writing. The magazine not only features work from established poets but also provides a stage for new voices to be heard. One such poet, Mohit Bapari, has made significant contributions to this space. His poems, published on Shabdodweep Web Magazine, reflect the unique spirit of New Modern Bengali Poetry, blending traditional imagery with fresh, contemporary perspectives.
The Work of Mohit Bapari: A Glimpse into New Modern Bengali Poetry
Mohit Bapari is an emerging voice in New Modern Bengali Poetry. His poems, often centered around themes of personal introspection, love, and societal struggles, have earned praise for their simplicity and depth. His work resonates with readers who appreciate the blend of tradition and modernity in Bengali poetry.
Bapari’s contributions to Shabdodweep Web Magazine have garnered attention for their honest exploration of the human condition. His ability to express complex emotions with clarity is one of the hallmarks of contemporary Bengali poetry. If you’re interested in exploring New Modern Bengali Poetry, Mohit Bapari’s poems on Shabdodweep Web Magazine are an excellent place to start.
The Significance of New Modern Bengali Poetry in Today’s World
In today’s fast-changing world, where technology, globalisation, and socio-political shifts are at the forefront, New Modern Bengali Poetry serves as a powerful tool for reflection. It allows poets to comment on current events, capture the essence of urban life, and explore the inner workings of the mind. Modern poets like Mohit Bapari are shaping this new era of Bengali poetry with their raw and honest explorations of both personal and societal issues.
As more and more young writers turn to digital platforms like Shabdodweep Web Magazine, New Modern Bengali Poetry is experiencing a renaissance. It is no longer confined to the traditional literary circles but is instead thriving in an inclusive, global environment. This gives Bengali poetry the ability to evolve while remaining firmly grounded in its cultural heritage.
FAQs on New Modern Bengali Poetry
- What is New Modern Bengali Poetry?
New Modern Bengali Poetry is a contemporary form of Bengali poetry that blends traditional elements with modern themes and experimental styles. It addresses current issues, personal struggles, and societal changes, often using free verse and simple, accessible language. - How is New Modern Bengali Poetry different from traditional Bengali poetry?
Traditional Bengali poetry often followed strict structures and rhyme schemes, while New Modern Bengali Poetry embraces more flexible forms, such as free verse. Modern poets focus on contemporary themes and personal introspection, using simple language that resonates with today’s readers. - Where can I read New Modern Bengali Poetry?
You can explore New Modern Bengali Poetry on platforms like Shabdodweep Web Magazine, which features the work of contemporary poets, including Mohit Bapari. These platforms showcase a wide range of poems, stories, and creative works from new and established writers. - Who are some notable poets in New Modern Bengali Poetry?
Some prominent poets in New Modern Bengali Poetry include Mohit Bapari, whose work has been featured on Shabdodweep Web Magazine. His poems, along with those of other contemporary poets, are reshaping the future of Bengali literature. - Can I contribute my own poetry to Shabdodweep Web Magazine?
Yes, Shabdodweep Web Magazine encourages new and established poets to contribute their work. If you’re passionate about New Modern Bengali Poetry, you can submit your poems for publication and join the growing community of writers and readers. - What themes are explored in New Modern Bengali Poetry?
New Modern Bengali Poetry explores themes such as personal identity, love, mental health, urban life, and socio-political issues. Modern poets use these themes to reflect the complexities of life in the 21st century.
Conclusion
New Modern Bengali Poetry is a vibrant and evolving genre that continues to captivate readers with its fresh, contemporary perspectives. By blending tradition with modernity, it offers a unique voice that reflects the complexities of the modern world. Poets like Mohit Bapari are at the forefront of this movement, and platforms like Shabdodweep Web Magazine are providing an important space for these voices to be heard.
If you’re interested in exploring contemporary Bengali poetry, look no further than Shabdodweep Web Magazine, where you can find a wealth of poems that engage with modern themes and offer a fresh take on Bengali literary traditions. The world of New Modern Bengali Poetry is thriving, and there’s never been a better time to dive in!
Sabuj Basinda | High Challenger | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio