Best Modern Bangla Kabita Online | Shabdodweep

Sharing Is Caring:

Modern Bangla Kabita Online – Suvasri Roy

বাংলা ভাষার প্রতি – শুভশ্রী রায়

বাংলা বর্ণমালা, তোমাকে স্পর্শ করে আমার কলম শুদ্ধ হয়েছে,
তোমাকে রোপণ করে কাব্যের ফুল ফুটিয়েছি যথাসাধ্য,
অপরূপ এই পৃথিবীকে তোমার মাধ্যমেই চিনেছি বারবার,
বাইরের জগৎ দেখার সবচেয়ে বড় জানলা তুমি, তুমি মুক্তি,
তুমি স্বপ্ন আবার তুমিই বাস্তব নিত্য, অন্নের মতো মহার্ঘ….
আত্মার পুষ্টি,
আমার কল্পনায় আলোড়ন তোলা দিগন্ত ছাড়ানো সবুজতম মাঠ তুমি;
ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমীর মায়া দুনিয়া অপরূপ।

মা আমার তুমি বাংলা বর্ণমালা,
তোমাকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকি নির্ভয়ে,
এমন স্বস্তি, এমন নরম হাতে কে আর ছোঁবে!
শোকে বেদনায় যন্ত্রণায় সুহৃদজনের ঠোঁট থেকে সান্ত্বনা হয়ে ঝরে পড়বে ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ের ওপর?

আর কোন্ ভাষা আমার বাংলা ছাড়া
পরমপবিত্র শ্লোকের মতন লাগে কানে,
বুলিয়ে দেয় স্নেহের ছোঁওয়া,
কষ্টে ফেটে যাওয়া মাটির ওপর যেন বৃষ্টির স্নেহ!

বাংলা ভাষা,
তুমি আমার চির উপাস্য, প্রণম্য,
আমার প্রাণের ভেতর ছড়ানো তোমার পুণ্যসাম্রাজ্য,
স্বত:স্ফূর্ত ভালোবাসায় তুমি যা স্থাপন করেছ।

দিনকাল – শুভশ্রী রায়

হয়তো বা হৃৎপিন্ডেও বরফ পড়েছে
ছুরি-হাওয়া দিনগুলোকে ফালি ফালি করে কাটে,
অজানা ঠিকানায় যথেষ্ট শীতের পোষাকের রঙীন মেলা বসে যায়,
লুব্ধ হতেই হয় কাউকে কাউকে
আর কেউ কেউ চায়
সে মেলায় প্রবেশাধিকার পেয়ে যাক
সমস্ত ছন্নছাড়া শিশু,
বিপন্ন শৈশব সহ বাচ্চারা সোয়েটার কিনুক না কিনুক,
অন্তত একটা করে কেক নিয়ে
হাসিমুখে সেই মেলা থেকে বেরিয়ে আসুক যেন ঝলমলে মরশুমি ফুল।

হিমঋতু কেটে যাবে শিশুদের উষ্ণ আদরে।

মনখারাপ সাজ-আয়নায় আঁটে না – শুভশ্রী রায়

এত কিসের সাজগোজ,
কিসের এত পোষাককেন্দ্রিক প্রতিযোগিতা,
ঘন ঘন সাজ-আয়নার সামনে দাঁড়ানো?
যদি না বিষাদ, সামান্য ওই আলগা কিন্তু
একদম বিষাদকে স্বীকারই না করলে?

এই প্রতিকৃতি একটুও মিথ্যা বলে না
তবু কোনো মতে নয় সে কাব্য
শুধুই প্রতিফলনের সূত্র
নিজেই নিজের মনখারাপ আঁকোনি টিপে
বা অলঙ্কারের ছটায় ফোটাওনি,
বরঞ্চ খালি ঢেকে রেখেছ শত রূপটানে
তারপরে নামছ তুমি সিঁড়ি দিয়ে,
ঢুকছ কোথাও গমগমে অনুষ্ঠানে শুধু বাস্তব হয়ে,
কবিতা হয়ে নয়….

কেন না মনখারাপ সাজ-আয়নায় আঁটে না।

জল সই – শুভশ্রী রায়

জলের যেখানে মিশেছে সবুজের নিবেদন,
চলো সেইখান থেকে তুলে আনি একটা কবিতা,
তার গা থেকে কোনো কুক্ষণে জলজ দ্যুতি মুছে নেব না,
ভুলেও ছিনিয়ে নেব না তার সরসতা
বরঞ্চ তার সচলতা নেব,
তরলতায় পৌঁছনোর অমোঘ কঠিন সজল গতিপথ থেকে কিছু শিক্ষা নেব,
যদি বা জল থেকে তোলা সেই কবিতার গায়ে
কচুরিপানার ঘ্রাণ থাকে, থাকুক সহজ সামান্য সবুজে
যদি বা তার পংক্তির আয়না-স্রোতে আকাশের মুখ ভেঙে-চুরে যায়, যাক,
সেই জলজাত কবিতা আমার জীবনের সঙ্গী হোক।

আমার শুকিয়ে যাওয়া জীবন,
রুক্ষ ও নিষ্পত্র জীবন
এভাবেও জলের জাদুভরা সান্ত্বনা পেলে কী ক্ষতি!

আমি যদি জলের নির্যাসকে কবিতার চোখে দেখি
আসুক না চোখ অবধি জল।

আলো হাওয়ার দিনলিপি – শুভশ্রী রায়

চোখের পাতায় অভিমানী মেঘ জমা,
ধরতে কী পারে, শব্দের জাল, দাঁড়িকমা?
তবু মন চায় লিখে ফেলতে খন্ড দিনের লিপি,
হয়তো সে দিন সন্তোষী বা খানিকটা সন্তাপী।

মেঘ কখনো গলে যায়, ঝরে চিবুকে,
নতুন আলো ঠিকরোয় পুরনো চোখেমুখে,
জলে হাওয়ায় দিনলিপি লেখে মন অবুঝ,
এসে কখনো আদর কী করে কালের ভুজ?

রূপোলি সোনালি আলোর রশ্মি ছড়ানো,
জীবনপঞ্জী অক্ষর চেনে মায়া-নির্মায়া জড়ানো,
একেক পল কানেকানে কথা বলে যায় কাছে এসে,
পরিতাপী তার কিছু লিখে রাখে মরমী হাওয়ায় ভেসে।

নিরানন্দ – শুভশ্রী রায়

অপমানেরও নিজস্ব এক ছায়া থাকে,
সেই ছায়া মুখের ভেতর এঁকে দেয় আরেকটা মুখ,
চাঁদের থালাবাটি সরে সরে যায় হাত থেকে,
নিরন্ন দৈহিক গ্রহটির ভেতর ঢুকে যায় নিরানন্দ সকালের স্বরলিপি….

কোনো কোনো ছায়া অপমানেরও নিশ্চয়,
পৃথিবীকে মায়া দিতে তার অসহায় অপারগতা,
ঋতু থেকে ঋতু ক্ষুধা পরিচালিত পদক্ষেপে হাঁটা;
মাথার ওপর নির্বিকার অগ্নিবর্ষী সূর্য নিয়ে
ভারি ভারি মুহূর্ত মারিয়ে গন্তব্যবিহীন সফর,
অভাবকে কেন্দ্র করে ক্ষুধার বৃত্ত বড় হয়,
বুড়ো হয় কিন্তু না ফুরোয়,
সঙ্গে বিশ্বস্ত সহযাত্রীর মতো কুঁকড়েমুকড়ে হাঁটে অপমানের সঞ্চয়।

ঈশ্বরের মনখারাপ – শুভশ্রী রায়

ঈশ্বরের মনখারাপ হলে টের পায় পাখিরা,
তাদের সুর থেকে এক কণা মিঠে ভাব বিয়োগ হয়ে যায়,
ঘুরেফিরে ডানা ঝেড়েও কষ্ট ফেলে দিতে তারা পারে না।
বুঝতে পারে গাছেরা, তাদের পাতাগুলো দুঃখে মুখ নামিয়ে বিষাদযাপন করে,
পাতার সবুজে একটু অবসাদ লেগে যায়:
আরো নিচে মাটির বুকে জড়ো হয় চাপা কষ্ট,
সমস্ত ঘাসফুল শোকে মাথা নিচু করে থাকে যেন শাস্তি পেয়েছে..

সবাই অনুভব করে ঈশ্বরের মনখারাপ মানুষ ছাড়া,
অনুভূতিহীন মানুষ সে দিনটাতেও জোরে জোরে কথা বলে,
দামী পোষাক পরে কে জানে কোন গন্তব্যে গমগমে হেঁটে যায়;
ঈশ্বরের মনখারাপ হলে ভুল সুরের রাগিণীকে শুদ্ধ গণ্য করে
গায়ক নিজের অন্তরাত্মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।

চূর্ণ পূর্ণ – শুভশ্রী রায়

থাকলে নেই, তবুও কোনো রূপে আছে,
সত্য শুধু বাস্তবে নয়, অনুভূতিরও কাছে

সময় অনন্ত, বিচিত্র তার মোচড় ও বাঁক,
সব জেনে গেছি ভাবলে থেকে যায় ফাঁক!

অনন্ত কখনো কখনো আকারেও সীমিত,
একটু জিরিয়ে নেয় যদিও সব সৃষ্টিসম্মত;

কালের শাসন খন্ডিত সত্তার ভেতর দিয়ে
ফিরি নিজেরই ভেতর শত শত প্রশ্ন নিয়ে,

প্রতি পলে নিজেকে ভেঙে ভেঙে মহাকাল,
তৈরি হ’চ্ছে, ফের গুঁড়ো হ’চ্ছে – সৃষ্টির তাল

যেখানে সীমা তার পাশ দিয়ে অসীম চলে,
মহাকাল মুখ দেখে নেয় ভাঙা ভাঙা পলে

চূর্ণ ক্ষণছবি আঁকে সমকালের পটখানি
অস্থায়ী পলে মহাকাল অসমাপ্ত ঘূর্ণমানই।

বলি বলি করে – শুভশ্রী রায়

বলি বলি করে কথাটা হ’ল না বলা,
না বলা কথার দায় নিয়েই পথ চলা!

পথ চলা যায় তবে সে কথার ভার,
নিজেকে জানান দেয় অজস্র বার;

তুমি ও আমি জানি না তো পরিণতি,
আরেকবার ফিরে তাকালেও ক্ষতি?

ক্ষতি ও লাভ পরস্পরের পায়ে পায়ে,
ছায়া লেগে থাকে যেন বাতিটার গায়ে,

না বলা কথার সাথে মিশে থাকা দ্বিধা,
নিক্তিতে তার মেপে নিই না কি সুবিধা?

অসুবিধা তবু স্বস্তি লুকিয়ে নেই নাকি?
অজানা সাড়াকে দেওয়া গিয়েছে ফাঁকি।

ঘুঘুডাকা দুপুর – শুভশ্রী রায়

এই সব আশ্চর্য ঘুঘুডাকা দুপুর, কোষে কোষে নির্জনতার আভাস নিয়ে
অভিশপ্ত এমন সব ফ্ল্যাটেও কোথা থেকে আসে?
ভেতরে যাদের অনেক মনখারাপ,
অতৃপ্ত বারান্দার মেঝেয় কেমন উদাসী রোদের আল্পনা মিলে
আলস্য আর অসম্পূর্ণতা ঘন…

শান্ত শান্ত এই দুপুরটা গর্ভবতী নারীর মতো
শ্লথ তবু হার না মানা,
তার সঙ্গে বড় মোহে মানিয়ে নিই আমরা….

দুপুর আমাদের কানে কানে ঘুম ঘুম মন্তর পড়ে
দুষ্টুমি করে সরেও যায় এক সময়,
মাঝখানে কারুর জন্য মনের ভেতরে হুহু,
যেন কোনো তপ্ত প্রান্তর পেরিয়ে যাওয়া
অসংসারী ছায়ার সাথে সাথে,
এলাকা অজানা তবু তার বৈরাগী ধুলোর সাথে গাঢ় পরিচয়…

ফ্ল্যাটবাড়ি অভিশপ্ত নগর জীবনের ক্ষত,
তাকে ক্ষণিকের মায়া-ছায়ায় ভরিয়ে দিতে
হুহু দুপুর আসে, যায়
মাঝখানে মনখারাপের পর্ব আসবেই আসবে।

জ্যোৎস্নাক্ষর – শুভশ্রী রায়

আমি যা বলি চাঁদকেই বলি, এমন নয়।
চাঁদ যা বলে সবই আমাকে তাও না,
কিছুটা জ্যোৎস্না তার আমার কবিতার দুয়েকটি তৃষিত অক্ষরে পড়ে বটে,
তবে অক্ষরগুলো সে আলো শুষে নিতে পারে না এক কণাও,
কেন যে তাদের দিইনি আমি
চাঁদের সুধা শুষে নেওয়ার মধুর প্রশিক্ষণ।

অক্ষর থেকে জ্যোৎস্না সরে যায়,
চাঁদবিহীন কবিতা খাতায় কোনো রকমে আটকে,
ধীরে ধীরে এ পৃথিবী হয়ে ওঠে জ্যোৎস্না শাসিত
আর আমার কাব্য চাঁদ উপোসী, চাঁদ উপোসী!
তাকে ঘিরে থাকে জ্যোৎস্না মাখা এক ছবি রূপসী।

অসাক্ষ্য – শুভশ্রী রায়

আমাকে বুঝো না তুমি,
অনুভব কোরো যেমন জলের সারল্যকে অনুভব করে নৌকো এগিয়ে যায় তরতর করে।

খুঁজো না আমাকে
বরং হারিয়ে ফেলো বেশ কয়েক যুগের জন্য
তারপরে ক্ষণে ক্ষণে আমাকে নাড়াচাড়া করে
পেয়ে যেও কোথাও নয় বলেই সর্বত্র।

ডেকো না আমাকে
বরঞ্চ আমার মুখের ওপর লাগিয়ে দিও দরজা,
পরে সমস্ত জানলায় দরজায় উৎকণ্ঠায় দাঁড়িয়ে
আমার আসা না আসার কাহিনীতে নিজেকে মিশিয়ে দিয়ো।

মনে আমায় রেখো না
বরঞ্চ রেখো বিভ্রমে, অন্যমনস্কতায়, উপেক্ষার পলকে,
রেখো আমায় এমন করে
যে রাখার কোনো সাক্ষ্য থাকে না।

না-গাথা – শুভশ্রী রায়

যে মেয়েটির প্রেমিক নেই,
তারও আছে যৌবন, স্পর্শ পিয়াস,
কখনো সখনো সে কাজল লাগালে চোখে,
আর কেউ বুঝুক না বুঝুক হাওয়া শুষে নেয়
ভেতরের কথা।

মেয়েটির চুল ছোঁয় হাওয়া,
ওড়না নিয়ে উড়ে যেতে চায় বহু দূর,
হয়তো এমন দেশে যেখানে সবাই প্রেমিক,
কিন্তু ওড়না চেপে ধরে রাখে মেয়েটি,
বাড়ি ফিরতে হবে না!

বাতাসের একটু রাগ হয়,
দু’চারটে কথা শোনাতে গিয়ে
মেয়েটির বেদনা সে অনুভব করে,
শোনায় না কিছুই,
হাওয়াও কষ্টের বাষ্পে ভরে ওঠে,
অভিজ্ঞ ওড়না মাঝখান থেকে
সব দেখে নেয় কিন্তু কিছুই শেখে না,
তদন্তের অতীত পোড়া গন্ধে পরিণতি ছাড়া
না-গাথা শেষ।

সংসার – শুভশ্রী রায়

গনগনে আগুনে রোজ সেদ্ধ হতে হতে
রান্নাপর্ব অভ্যাস হয়ে গেছে,
কড়াইতে দিব্যি তুলে দিই একটুআধটু সব্জি, মাছ কী ডিম
পেটের হুকুম মতো,
শেষমেশ সংসার আমাকেও ওই কড়াইয়ে চাপাতে চায়,
শুরু হয় লড়াই-
কখনো সে আমার টুঁটি টিপে ধরে,
কখনো আমি তার…

অমীমাংসিত অবস্থায় রাত দিন হয়ে যায়,
রান্নাঘরের আগুন ডাকে,
আয় তোকে গিলে নেব আজ,
তাকে বলি- তোকে ফের পোষ মানানোই কাজ,
মহাকাল জিভ বার করে চেটে দেখে সংসার।

ছেঁড়া ছেঁড়া জীবন – শুভশ্রী রায়

সকালের হাত থেকে কোনো মতে ছিনিয়ে নেওয়া ক’টা টাকা সন্ধের মুখে ফুরিয়েছে,
বেরোতে হ’বে আবার;
শুকনো ব্যবস্থা নিংড়ে
কিছু মুদ্রা মুঠোবন্দী করে নিয়ে আসতে হ’বে…

না হলে কাল সকাল অবধি পৌঁছনোর পরেও
দিনের চিবুক বেয়ে গড়িয়ে নামবে রাত;
তার চেয়ে বরং দু’চারটে টাকার গায়েগায়ে সংসার মেজেঘষে নেব,
নিয়ে এসে স্বস্তির ছেঁড়া আসনে বিশ্রাম করো।

অবস্থান – শুভশ্রী রায়

আমার বাড়ীর সামনে কোনো ঝিল নেই,
পেছন দিকে যেমনতেমন করে একটা কদমগাছ
এখনো দাঁড়িয়ে আছে,
যখনতখন ডালপালা মুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে
রাগে ফুল ফোটায় না সে আর
তবে গাছটার নিচে অনেক ঘাস,
ভোরভোর পর্যন্ত সেখানে দু’য়েকটা জেদি পরী খেলাধুলো করে,
সন্ধের মুখে কদমের পাশের রাস্তাটায়
একেক দিন গোধূলি থেকে নেমে আসে বাবা-মা,
দিগন্ত পর্যন্ত হেঁটে যায়,
তারপরে উড়তে শুরু করে
কিন্তু আমার চোখের দিকে তাকায় না একবারও…

এমন অনেক কিছু হয় এখানে,
কাছাকাছি পেঁয়াজের গুদাম ও ট্রাকগুলোর বেয়াড়াপনা,
ত্যালাদার দোকান থেকে উনুনের ধোঁয়ার পাশাপাশি পরীদের জমায়েত,
সত্য ও সত্যাতীত সবাই আমাকে মেনে নেয়,
কদমগাছ কৌশল না করে অক্সিজেন দান করে আর রূপকথা ঝরায়;
নিজের অদ্ভুত অস্তিত্ব অনুভবে নিই আমি।

দিনলিপি – শুভশ্রী রায়

ডায়েরির পাতা ছাপিয়ে যায় ব্যক্তিগত জীবন,
ক্লান্ত কলম এক সময় ধৈর্য হারায়,
চার দিকে তার সময়ের অজস্র রূপ-
সহস্র কাঁটা ও কিছু ফুল নিয়ে সে তার বাগান
রচনা করে চলেছে,
কখনো ফুল নিয়ে আবিষ্ট কখনো কাঁটার খোঁচায় বেসামাল আমি,
জীবন বুঝতে ডুবে যাচ্ছি একেকটা ঘটনার ভেতরে …

প্রতিটি মুহূর্ত নিজেকে পুঁতে দিচ্ছে আমার চেতনার ভেতরে,
ডায়েরির পাতার ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা অভিজ্ঞতা অক্ষরের কালিতে পুরনো,
রোজনামচা করুণ ক্ষমাশীল চোখে পাপ ও পুণ্যের মাঝে টলোমলো আমাকে দেখছে।

ঘোর – শুভশ্রী রায়

আকাশে গমগম করে চন্দ্রমা,
নিটোল অবয়ব থেকে তার বেলাগাম মোহ,
ঘোর লাগা একটা পংক্তির আশায়
নিচে তার হা পিত্যেশ করে বসে থাকে
চন্দ্রাসক্ত কবি এবং আবেগী।

নিজের পূর্ণতা নিয়ে চাঁদ সম্মোহন ছড়ায় প্রতি দিকে,
তার আলোর শেষেও অন্য আনন্দ থাকে হয়তো,
তা সত্বেও আজ রাতে চাঁদ কবিতায় না ঝরেই ক্ষয়ে যাবে না তো, ভয় লাগে রচয়িতার!

চাঁদের চোখে চোখ রাখে ব্যাকুল কবি,
হিমকর ঠিক বুঝে নেয় কবির আকুতি,
নিজের তৈরি জ্যোৎস্নার জোয়ার একটু একঘেয়ে লাগে তার,
জমজমাট আলো-ব্যবস্থা থেকে
ক্ষণিক বিরতি নিয়ে
কবিতার বিধুর প্রেক্ষাপটে ঢুকে যায় অনুভূতিপ্রবণ চাঁদ।

রাফ খাতা – শুভশ্রী রায়

যে সব গোধূলি পৃথিবীতে আসে না আর,
তাদের ঘোর এখনো শেষ বিকেলের গায়ে
অল্প লেগে থাকে,
কষ্ট পাকিয়ে ওঠে তাদের জন্য ভেতর-বুকে,
পৃথিবীর সমস্ত অভিমান কারো কারো চোখে জড়ো,
গলে গলে পড়ে কাজল-সোহাগী চোখের জল ;
সমস্ত হৃদয়কথা গোধূলির কাছে গচ্ছিত …

না-ই বা শুনলাম হৃদয়ের বার্তা,
আমরা বরং নিজেদের ব্যস্ত রাখি ডুবন্ত সূর্যের
রং বিপণনে;
মনখারাপ ঠেলে দিই পাতার এক প্রান্তে;
পরবর্তী পণ্যের চাহিদা মেটাতে
নিজেদের নিয়োগ করি সান্ধ্যকালীন রাগ থেকে দূরে।

শিশুর স্বচ্ছ চোখ – শুভশ্রী রায়

নিজের চোখ ঘোলাটে এমন বলব না,
তাও সব কিছুর পরিষ্কারটা দেখতে পাই না আর,
কোনও কিছুই নির্মল থেকে গিয়েছে কিনা-
অন্য প্রশ্ন।

অবস্থানে বদল নয়,
এবারে একটি শিশুর স্বচ্ছ চোখ দিয়ে
দেখাদেখি শুরু করব ভাবছি,
নিশ্চিত তাহলে
আকাশকে নীলকান্ত মণির মতো ঝকঝকে দেখাবে,
সবুজ পান্নার মতো রঙ বেরিয়ে আসবে বিবর্ণ গাছগুলো থেকে
যেমন সে খু্ঁজে পায় সহজ বিশ্বাসে,
জীবনের প্রতি অফুরন্ত আস্থায়,
বিনা প্রশ্নে।

পৃথিবীর কাছ থেকে এটা ওটা নিয়েছি এত দিন,
এবারে একটি শিশুর অনাবিল দৃষ্টি চেয়ে নিতে হ’বে।

ধিক্কার – শুভশ্রী রায়

“হিংসায় মদত দিন”,
সামান্য চড়-থাপ্পড়, ব্লেড দিয়ে টুক করে হাল্কা চিরে দেওয়া…..
সে রকম নয়
সমবেত হিংসায় মদত দিন,
বিশ্বাস করুন একত্রিত গোষ্ঠী নাশকতায়
যৌথ বিনষ্টিকরণ হোক আপনার চিন্তার মূল কথা।

এই পৃথিবীর শুদ্ধসবুজ অসহ্য,
যারা আপনার মতো করে ভাবে না,
উপাসনা যাদের উল্টো রীতিতে
তাদের টাটকা গরম রক্ত সবুজের ওপর বইয়ে দিন!

কী বললেন?
গণহিংসা, অসহায়ের ওপর আক্রমণে
আপনার রুচি নেই?
আসুন সামাজিক মাধ্যমে আপনাকে শুইয়ে দিই,
পাড়ার উঠোনে আপনার প্রতিরোধহীন দেহের ওপর লাথি মারি,
তছনছ করে দিই মাংসপেশি-শিরা-ধমনীর অনুপম সজ্জাকে,
কেটেকুটে নালা-নর্দমা বানিয়ে দিই আপনার যৌনাঙ্গ;

না হ’লে, না হ’লে কী কারণে বেঁচে থাকব?
এই আধুনিক-টেক পৃথিবীতেও
কেন টিকে থাকা
যদি আস্থা না রাখি সঙ্ঘবদ্ধ হিংসার বলে?

হৃদি-সম্মত সতর্কীকরণ – শুভশ্রী রায়

অমিত হিংসায় আকাশ কালো, শাহী নাশকতা
কৌশলে ছড়িয়ে পড়ছে…..
অপচেষ্টা অবাঙমানসগোচরকে
ব্যবহার করে মানবডাঙার রাস্তায় রাস্তায় শকুন ওড়াবার,
উল্টো দিক থেকে মানবতার অঙ্গীকার –
উড়বে না, উড়বে না একটিও মাংসভুক পাখী,
নাকে রুমাল বেঁধে লাশ সরানোর লোকজন নয়,
পথে পথে হাঁটবে নাশকতায় অনাসক্ত শান্ত লোকজন
আধপেটা খাওয়া তবু ভিন্ন গোষ্ঠীর রক্ত চাটতে নারাজ;
সকলের অনায়াস-হরিৎ দেশের কোথাও বাতাসে নয় অবিশ্বাস;
হৃদয় রাজনীতির চতুরতার শিকার হ’বে না আর।

গদির জন্য লাশ বিছিয়ে রাখার খেলা নয় ,
শুনে রাখো, গণহত্যায় অভিজ্ঞ রক্তলোলুপ ঘাতক,
ইতিহাসের হলাহল বাদ দিয়ে অমৃতটুকু দেশ নেবে,
বেঁচে থাকবে চয়নপন্থী স্বদেশ আমার মিলনসার।

বালিকাবিলাপ – শুভশ্রী রায়

শৃঙ্খলায় নিবেদিত ইস্কুলে যায় রুখুসুখু বালিকাদ্বয়,
দু’ বছর আট মাসের পার্থক্যে পৃথিবীতে এনে
যত্ন করার কেউ নেই, গোটা পাড়ার চোখে লাগে,
মা ভোরেই কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে বাড়ী ছাড়া;

দুই বোনের গায়ে ইস্কুলের সবচেয়ে অনুজ্জ্বল পোষাক,
কিছু জ্ঞান, কিছু এটাওটা, সাপ্তাহিক পরীক্ষায় যেমনতেমন নিয়ে,
তাচ্ছিল্য কুড়িয়ে বিকেলে বাড়ী ফিরে আসা স্কুলবাসে।

মেয়ে দু’টি সন্ধেবেলায় শ্রীহীন খুপরি ফ্ল্যাটে
সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাত বাবা-মায়ের মোহখেলা দেখে,
বড় গম্ভীর…চালাক ছোটটি না দেখার ভান করে;

পৃথিবীর উপেক্ষা, পারিবারিক অবহেলা নিতে নিতে
একজন ক্রমশ লেখায় মগ্ন হয়ে যায়,
আরেক জন চতুর সুগৃহিণী দূরদেশে..
জানে – নির্বিকারত্ব আয়ত্ত না করলে
সাংসারিক খাপে আঁটা কঠিন,
যেমন আঁটতে পারেনি তার অনুভূতিপ্রবণ অগ্রজা।

স্বতঃশুদ্ধ – শুভশ্রী রায়

বড় পাপ এ দিকে ও দিকে এমন কি
না দেখা দিকটাতেও পাপেরই আভাস,
হে পবিত্র নদী ,নিজেকে স্বচ্ছ করো আগে
তারপরে তোমার জলে নিজের ছায়া ফেলে
স্বতঃ শুদ্ধ হ’ব, অতি সামান্য মানবী আমি,
পুণ্য কেনার উপায় জানা নেই কোনও দিন।

বিপন্ন প্রশ্ন – শুভশ্রী রায়

সদ্য ফুটেছে মেয়ে-ফুল, তার জন্য কী কী রেখে যাব?
হাজার চেয়েও তার জন্য কম লোভী পৃথিবী কি পাব?
চিরাচরিত ধর্ষণকারী কৌম, নির্বিকার নির্মম সমাজ,
অপরাধ অন্যের তা সত্বেও রেখে যাব রাশি রাশি লাজ,
পাথর বিচারব্যবস্থা, সব অঞ্চল-পল্লীর হিংসায় প্রীতি;
চ্যানেলের ভোজ, বলাৎকার ভাঙিয়ে খাওয়া রাজনীতি!

সূর্য সদ্য নিজেকে খুলেছে অপাপবিদ্ধা যে মেয়ের জন্য,
কী উপায়ে বলব, শাপিত কোন মুখে সইতে বোঝাব তাকে,
মেনে নে, সহ্য কর, যেমন সহ্য করতে হয়েছে পূর্বাপর মা-কে,
নারীজন্ম অনুপম, কুৎসিত খিদে লালায়িত গোষ্ঠী’র থাকে,
যেমন নোংরা দৃষ্টিতে দেখে যত লোলুপ চতুর কামে বন্য
আরেকটি সম্ভাব্য শিকার পেয়ে লোভীরা হয়ে যায় ধন্য!

সবে পৃথিবীতে আসা পবিত্র অমলিন নিষ্পাপ ফু্ল,
তাকে বাধ্য হয়ে দিয়ে যাব ক্ষমাহীন পুরুষতান্ত্রিক ভুল?

আমার ভেতরে মৃত্যু – শুভশ্রী রায়

বড় করুণ, অনিবার্য ও সত্য…
আমার ভেতরে যে সব মৃত্যু ঘটে গেছে
তাদের কাহিনী ছিল দস্তুরমতো।

শোক চিরকালীন পাশাপাশি,
নির্ঘুম রাতের নিশ্চুপ সাক্ষ্যে অশৌচ অব্যাহত
যদিও অনিয়মিত।

অনিবার্য যে সব মৃত্যু আমার ভেতরে ঘটে গেছে-
শৈশবের সারল্য, কৈশোরের বিশ্বাসপ্রবণতা
যৌবনের বিশুদ্ধ আবেগ
সকল মৃত্যুর জন্য শোক হয়, তীব্র শোক
পুড়ে যাওয়া দাহ হওয়া
প্রাণের সম্পদ দুয়েকটি শ্বাস
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়
সেই সব অমূল্য অনুভূতির কথা ভেবে ।

যে সব মৃত্যু আমার
জীবিত সত্তার ভেতরে থেকে গেছে,
তাদেরকে দিই পরপর নিদ্রাহীন রাত দিয়ে গাঁথা শ্রদ্ধার্ঘ
কখনো সখনো তাদের স্মরণ করি অকপট হয়ে।

পাখী উড়ে এসে – শুভশ্রী রায়

ধরো আমি লিখছি কখনো,
সেই সময় একটা পাখী টুক করে
লেখার কাগজের ওপর নেমে পড়ল আর
দু’ চারটে শব্দ ঠোঁটে করে উড়েও গেল,
তখন পাখীটার ওপরে রাগ করব কি?

প্রথমে একটু রাগ হবে হয়তো
পরে মাথা ঠান্ডা হলে,
যখন অনুভব করব পাখী তার নিজস্ব মুক্তি
আমার কবিতার মধ্যে রেখে গেছে,
মিশিয়ে দিয়ে গেছে ঘন বনের সবুজ ঘ্রাণ,
সেই সঙ্গে আকাশের আশ্চর্য আলো;
উধাও হয়ে যাবে সব রাগটাগ।

ধরো, আমি লিখছি কোনো এক দিন
আর একটা পাখী উড়ে এসে কিন্তু
জুড়ে না বসেও ঘুরিয়ে দিল লেখার মোড়!

অসহায় – শুভশ্রী রায়

পালাপার্বণে তারা অচ্ছুত ছিল
সমাজ নিঃসৃত গরল পান করত প্রতি দিন
পালা করে সামলাত হেঁসেল আর সমস্ত গৃহকাজ,
মাথা ঘুরলেও অক্লান্ত ঘুরপাক ঘরদোর ঘিরে,
অন্যথায় সংসার-কেন্দ্র ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল
সাদা থানে অনায়াস তাচ্ছিল্য মাখানো যুগরীতি মেনে।

রাত হলে এক ঘরে ঘেঁষাঘেঁষি শুয়ে পড়ত অতৃপ্ত ত্রয়ী
তিনটি বিধবা, চোদ্দ থেকে একুশের মধ্যে বয়স,
যৌনতৃষ্ণা কখনো চোখের জল হয়ে বয়ে যেত
কখনো গোপন অঙ্গে আগুন হয়েও নিভুনিভু বাধ্যত।

চরম চাবুক নেমে আসা তখনো বাকি!
শুনতে চাইত না কান চেপে রাখত, অসহায় প্রার্থনায়
বলত, “সইতে পারি না, আর জ্বালিও না প্রভু”,
দেওয়াল ফুঁড়ে কানে আসত মা-বাবা’র অনিবার্য শীৎকার।

ধুলো জন্ম – শুভশ্রী রায়

আমাদের ধুলো জন্ম কখনো মুছে যায় না
ধুলো জড়িয়ে বাঁচা, ধুলোয় শ্বাস নেওয়া
তারই মধ্যে রাজপ্রাসাদের দু’ এক ঝলক,
সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে ধূলিকণার হাত বাড়ানো
ধূসর বা সজ্জিত, অতীত থেকে বর্তমান অবধি
মায়াধুলোর সুড়ঙ্গ ছড়ানো।

ভোর থেকে রাত চোখে ধুলো দিয়ে
এক রাশ শোভা দেখায় পরমাপ্রকৃতি,
সূর্য ক্লান্ত হয়ে গড়িয়ে অন্য গোলার্ধের দিকে যায়
গোধূলি থেকে মনখারাপ ঝরে পড়ে
গত জীবনের বেদনা গাঢ় হয়ে সূর্যাস্তের পাশে ,
অপ্রাপ্তির সান্ধ্য সংকেত পাশে নিয়ে
দিনকে বিসর্জন দেবার শোকে জগৎ বিধুর
আকাশকে রঙে ভাসিয়ে চূড়ান্ত কালো নামে;
চরাচর থেকে ছুটে এসে সৃষ্টির আদি ধুলো
নিশ্চিত ওমে পৃথিবীকে সাঁঝের গর্ভে শোয়ালো।

মুক্তি অধিবেশন – শুভশ্রী রায়

কবিতা অনেক বয়ে গেছে
আজ বরং পাখীদের কথা হো’ক
তাদের ডানায় মাখানো মুক্তির ধারে ধারে
শেকল পড়ানোর সহস্রাব্দ প্রাচীন প্রয়াস আমাদের;
সেই প্রয়াসকে ধিক্কার জানিয়ে সংসদে প্রস্তাব আনা হোক জরুরি ভিত্তিতে।

সংসদের উভয় কক্ষ খাঁচা ব্যবসায়ীদের নিন্দা করুক সর্বসম্মতিক্রমে
জনপ্রতিনিধিরা দলমত নির্বিশেষে শপথ নিন,
আমরা মুক্তি পুষব না সবুজ টিয়া বা সাদা-কালো পায়রা গোষ্ঠীর,
দেশী-বিদেশী কোনো রকম।

পরের দিন জ্বলজ্বল করুক শিরোনাম
সংসদে পাখীদের মুক্তি বিষয়ে বিরল ঐক্যমত্য।

শুভশ্রী রায় | Suvasri Roy

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | কল্যাণ সুন্দর হালদার

New Bengali Article 2023 | স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন

New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৫) | উপন্যাস

Porokia Prem Ekaal Sekaal | পরকীয়া প্রেম (একাল সেকাল) | 2023

Shabdodweep Web Magazine | High Challenger | Shabdodweep Founder | Sabuj Basinda | Bengali Poetry | Bangla kobita | Modern Bangla Kabita Online 2024 | Poetry Collection | Book Fair 2024 | bengali poetry | bengali poetry books | Modern Bangla Kabita Online pdf | Bengali Poem Lines for Caption | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | Modern Bangla Kabita Online Ebook | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2023 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | Bengali Poem Lines for Caption in pdf | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | Best Bengali Poetry Folder | Best Bengali Poetry Folder 2023 | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2023 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | Bengali Poem Lines for Caption crossword | writing competition | writing competition malaysia | Bengali Poem Lines for Caption in mp3 | writing competition hong kong | writing competition game | Best Bengali Poetry Folder pdf | Trending Modern Bangla Kabita Online | Modern Bangla Kabita Online – video | Shabdodweep Writer | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | English Literature | Modern Bangla Kabita Online examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | Modern Bangla Kabita Online Ranking | positive Best Bangla Kobita Collection | Bengali Poem Lines for Caption about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | freedom poem | sad poetry about life | Natun Bangla Kabita 2023 | Kobita Bangla Lyrics 2023 book | New Modern Bangla Kabita Online | Writer – Modern Bangla Kabita Online | Top Writer – Natun Bangla Kabita 2023 | Top poet – Natun Bangla Kabita 2023 | Poet list – Kobita Bangla Lyrics 2023 | Archive – Modern Bangla Kabita Online | Bangla Full Kobita | Online Full Kobita Bangla 2023 | Full Bangla Kobita PDF | New Bangla Kabita Collection | Shabdodweep Online Poetry Story | Poetry Video Collection | Audio Poetry Collection | Bangla Kobitar Collection in mp3 | Bangla Kobitar collection in pdf | Indian Bengali poetry store | Bangla Kobita Archive | All best bengali poetry | Indian Modern Bangla Kabita Online | Best Poems of Modern Bengali Poets | Best Collection of Bengali Poetry in pdf | Bengali Poetry Libray in pdf | Autograph of Bengali Poetry | India’s Best Bengali Writer | Shabdodweep Full Bengali Poetry Book | Bengali Poetry Book in Google Bookstore | Google Bengali Poetry Book | Shabdodweep World Web Magazine | Shabdodweep International Magazine | Top Poems of Modern Bengali Poets | Bangla Kobita in Live | Live collection Bengali Poetry | Bengali Poetry Recitation Studio | Sabuj Basinda Studio for Bengali Poetry | Bangla Kobita Sankalan 2023 | Shabdodweep Kabita Sankalan | New Bengali Poetry Memory | History of Bengali Poetry | History of Bangla Kobita | Documentary film of Bengali Poetry | Youtube Poetry Video | Best Bangla Kobitar Live Video | Live Video Shabdodweep | Bengali to English Poetry | English to Bengali Poetry | Bengali Literature | Full Bengali Life of Poetry | Bangla Kobita Ghar | Online Live Bangla Kobita | New Bengali Poetry House | Full Bengali Poetry Collections PDF | Library of Bangla Kobita | Bengali Poetry and Story | Bengali Poetry Writing Competition | World Record of Bengali Poetry Writing | Peaceful Poetry | Online Modern Bangla Kabita Online Selection | Modern Bangla Kabita Online translation in english | Modern Bangla Kabita Online | Modern Bangla Kabita Online for instagram | romantic bengali poem lines | bengali short poem lyrics

Leave a Comment