Bengali Poetry – শুভশ্রী রায় – সূচিপত্র
জ্যোৎস্নাক্ষর – শুভশ্রী রায়
আমি যা বলি চাঁদকেই বলি, এমন নয়।
চাঁদ যা বলে সবই আমাকে তাও না,
কিছুটা জ্যোৎস্না তার আমার কবিতার দুয়েকটি তৃষিত অক্ষরে পড়ে বটে,
তবে অক্ষরগুলো সে আলো শুষে নিতে পারে না এক কণাও,
কেন যে তাদের দিইনি আমি
চাঁদের সুধা শুষে নেওয়ার মধুর প্রশিক্ষণ।
অক্ষর থেকে জ্যোৎস্না সরে যায়,
চাঁদবিহীন কবিতা খাতায় কোনো রকমে আটকে,
ধীরে ধীরে এ পৃথিবী হয়ে ওঠে জ্যোৎস্না শাসিত
আর আমার কাব্য চাঁদ উপোসী, চাঁদ উপোসী!
তাকে ঘিরে থাকে জ্যোৎস্না মাখা এক ছবি রূপসী।
অসাক্ষ্য – শুভশ্রী রায়
আমাকে বুঝো না তুমি,
অনুভব কোরো যেমন জলের সারল্যকে অনুভব করে নৌকো এগিয়ে যায় তরতর করে।
খুঁজো না আমাকে
বরং হারিয়ে ফেলো বেশ কয়েক যুগের জন্য
তারপরে ক্ষণে ক্ষণে আমাকে নাড়াচাড়া করে
পেয়ে যেও কোথাও নয় বলেই সর্বত্র।
ডেকো না আমাকে
বরঞ্চ আমার মুখের ওপর লাগিয়ে দিও দরজা,
পরে সমস্ত জানলায় দরজায় উৎকণ্ঠায় দাঁড়িয়ে
আমার আসা না আসার কাহিনীতে নিজেকে মিশিয়ে দিয়ো।
মনে আমায় রেখো না
বরঞ্চ রেখো বিভ্রমে, অন্যমনস্কতায়, উপেক্ষার পলকে,
রেখো আমায় এমন করে
যে রাখার কোনো সাক্ষ্য থাকে না।
না-গাথা – শুভশ্রী রায়
যে মেয়েটির প্রেমিক নেই,
তারও আছে যৌবন, স্পর্শ পিয়াস,
কখনো সখনো সে কাজল লাগালে চোখে,
আর কেউ বুঝুক না বুঝুক হাওয়া শুষে নেয়
ভেতরের কথা।
মেয়েটির চুল ছোঁয় হাওয়া,
ওড়না নিয়ে উড়ে যেতে চায় বহু দূর,
হয়তো এমন দেশে যেখানে সবাই প্রেমিক,
কিন্তু ওড়না চেপে ধরে রাখে মেয়েটি,
বাড়ি ফিরতে হবে না!
বাতাসের একটু রাগ হয়,
দু’চারটে কথা শোনাতে গিয়ে
মেয়েটির বেদনা সে অনুভব করে,
শোনায় না কিছুই,
হাওয়াও কষ্টের বাষ্পে ভরে ওঠে,
অভিজ্ঞ ওড়না মাঝখান থেকে
সব দেখে নেয় কিন্তু কিছুই শেখে না,
তদন্তের অতীত পোড়া গন্ধে পরিণতি ছাড়া
না-গাথা শেষ।
সংসার – শুভশ্রী রায়
গনগনে আগুনে রোজ সেদ্ধ হতে হতে
রান্নাপর্ব অভ্যাস হয়ে গেছে,
কড়াইতে দিব্যি তুলে দিই একটুআধটু সব্জি, মাছ কী ডিম
পেটের হুকুম মতো,
শেষমেশ সংসার আমাকেও ওই কড়াইয়ে চাপাতে চায়,
শুরু হয় লড়াই-
কখনো সে আমার টুঁটি টিপে ধরে,
কখনো আমি তার…
অমীমাংসিত অবস্থায় রাত দিন হয়ে যায়,
রান্নাঘরের আগুন ডাকে,
আয় তোকে গিলে নেব আজ,
তাকে বলি- তোকে ফের পোষ মানানোই কাজ,
মহাকাল জিভ বার করে চেটে দেখে সংসার।
ছেঁড়া ছেঁড়া জীবন – শুভশ্রী রায়
সকালের হাত থেকে কোনো মতে ছিনিয়ে নেওয়া ক’টা টাকা সন্ধের মুখে ফুরিয়েছে,
বেরোতে হ’বে আবার;
শুকনো ব্যবস্থা নিংড়ে
কিছু মুদ্রা মুঠোবন্দী করে নিয়ে আসতে হ’বে…
না হলে কাল সকাল অবধি পৌঁছনোর পরেও
দিনের চিবুক বেয়ে গড়িয়ে নামবে রাত;
তার চেয়ে বরং দু’চারটে টাকার গায়েগায়ে সংসার মেজেঘষে নেব,
নিয়ে এসে স্বস্তির ছেঁড়া আসনে বিশ্রাম করো।
অবস্থান – শুভশ্রী রায়
আমার বাড়ীর সামনে কোনো ঝিল নেই,
পেছন দিকে যেমনতেমন করে একটা কদমগাছ
এখনো দাঁড়িয়ে আছে,
যখনতখন ডালপালা মুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে
রাগে ফুল ফোটায় না সে আর
তবে গাছটার নিচে অনেক ঘাস,
ভোরভোর পর্যন্ত সেখানে দু’য়েকটা জেদি পরী খেলাধুলো করে,
সন্ধের মুখে কদমের পাশের রাস্তাটায়
একেক দিন গোধূলি থেকে নেমে আসে বাবা-মা,
দিগন্ত পর্যন্ত হেঁটে যায়,
তারপরে উড়তে শুরু করে
কিন্তু আমার চোখের দিকে তাকায় না একবারও…
এমন অনেক কিছু হয় এখানে,
কাছাকাছি পেঁয়াজের গুদাম ও ট্রাকগুলোর বেয়াড়াপনা,
ত্যালাদার দোকান থেকে উনুনের ধোঁয়ার পাশাপাশি পরীদের জমায়েত,
সত্য ও সত্যাতীত সবাই আমাকে মেনে নেয়,
কদমগাছ কৌশল না করে অক্সিজেন দান করে আর রূপকথা ঝরায়;
নিজের অদ্ভুত অস্তিত্ব অনুভবে নিই আমি।
দিনলিপি – শুভশ্রী রায়
ডায়েরির পাতা ছাপিয়ে যায় ব্যক্তিগত জীবন,
ক্লান্ত কলম এক সময় ধৈর্য হারায়,
চার দিকে তার সময়ের অজস্র রূপ-
সহস্র কাঁটা ও কিছু ফুল নিয়ে সে তার বাগান
রচনা করে চলেছে,
কখনো ফুল নিয়ে আবিষ্ট কখনো কাঁটার খোঁচায় বেসামাল আমি,
জীবন বুঝতে ডুবে যাচ্ছি একেকটা ঘটনার ভেতরে …
প্রতিটি মুহূর্ত নিজেকে পুঁতে দিচ্ছে আমার চেতনার ভেতরে,
ডায়েরির পাতার ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা অভিজ্ঞতা অক্ষরের কালিতে পুরনো,
রোজনামচা করুণ ক্ষমাশীল চোখে পাপ ও পুণ্যের মাঝে টলোমলো আমাকে দেখছে।
ঘোর – শুভশ্রী রায়
আকাশে গমগম করে চন্দ্রমা,
নিটোল অবয়ব থেকে তার বেলাগাম মোহ,
ঘোর লাগা একটা পংক্তির আশায়
নিচে তার হা পিত্যেশ করে বসে থাকে
চন্দ্রাসক্ত কবি এবং আবেগী।
নিজের পূর্ণতা নিয়ে চাঁদ সম্মোহন ছড়ায় প্রতি দিকে,
তার আলোর শেষেও অন্য আনন্দ থাকে হয়তো,
তা সত্বেও আজ রাতে চাঁদ কবিতায় না ঝরেই ক্ষয়ে যাবে না তো, ভয় লাগে রচয়িতার!
চাঁদের চোখে চোখ রাখে ব্যাকুল কবি,
হিমকর ঠিক বুঝে নেয় কবির আকুতি,
নিজের তৈরি জ্যোৎস্নার জোয়ার একটু একঘেয়ে লাগে তার,
জমজমাট আলো-ব্যবস্থা থেকে
ক্ষণিক বিরতি নিয়ে
কবিতার বিধুর প্রেক্ষাপটে ঢুকে যায় অনুভূতিপ্রবণ চাঁদ।
রাফ খাতা – শুভশ্রী রায়
যে সব গোধূলি পৃথিবীতে আসে না আর,
তাদের ঘোর এখনো শেষ বিকেলের গায়ে
অল্প লেগে থাকে,
কষ্ট পাকিয়ে ওঠে তাদের জন্য ভেতর-বুকে,
পৃথিবীর সমস্ত অভিমান কারো কারো চোখে জড়ো,
গলে গলে পড়ে কাজল-সোহাগী চোখের জল ;
সমস্ত হৃদয়কথা গোধূলির কাছে গচ্ছিত …
না-ই বা শুনলাম হৃদয়ের বার্তা,
আমরা বরং নিজেদের ব্যস্ত রাখি ডুবন্ত সূর্যের
রং বিপণনে;
মনখারাপ ঠেলে দিই পাতার এক প্রান্তে;
পরবর্তী পণ্যের চাহিদা মেটাতে
নিজেদের নিয়োগ করি সান্ধ্যকালীন রাগ থেকে দূরে।
শিশুর স্বচ্ছ চোখ – শুভশ্রী রায়
নিজের চোখ ঘোলাটে এমন বলব না,
তাও সব কিছুর পরিষ্কারটা দেখতে পাই না আর,
কোনও কিছুই নির্মল থেকে গিয়েছে কিনা-
অন্য প্রশ্ন।
অবস্থানে বদল নয়,
এবারে একটি শিশুর স্বচ্ছ চোখ দিয়ে
দেখাদেখি শুরু করব ভাবছি,
নিশ্চিত তাহলে
আকাশকে নীলকান্ত মণির মতো ঝকঝকে দেখাবে,
সবুজ পান্নার মতো রঙ বেরিয়ে আসবে বিবর্ণ গাছগুলো থেকে
যেমন সে খু্ঁজে পায় সহজ বিশ্বাসে,
জীবনের প্রতি অফুরন্ত আস্থায়,
বিনা প্রশ্নে।
পৃথিবীর কাছ থেকে এটা ওটা নিয়েছি এত দিন,
এবারে একটি শিশুর অনাবিল দৃষ্টি চেয়ে নিতে হ’বে।
ধিক্কার – শুভশ্রী রায়
“হিংসায় মদত দিন”,
সামান্য চড়-থাপ্পড়, ব্লেড দিয়ে টুক করে হাল্কা চিরে দেওয়া…..
সে রকম নয়
সমবেত হিংসায় মদত দিন,
বিশ্বাস করুন একত্রিত গোষ্ঠী নাশকতায়
যৌথ বিনষ্টিকরণ হোক আপনার চিন্তার মূল কথা।
এই পৃথিবীর শুদ্ধসবুজ অসহ্য,
যারা আপনার মতো করে ভাবে না,
উপাসনা যাদের উল্টো রীতিতে
তাদের টাটকা গরম রক্ত সবুজের ওপর বইয়ে দিন!
কী বললেন?
গণহিংসা, অসহায়ের ওপর আক্রমণে
আপনার রুচি নেই?
আসুন সামাজিক মাধ্যমে আপনাকে শুইয়ে দিই,
পাড়ার উঠোনে আপনার প্রতিরোধহীন দেহের ওপর লাথি মারি,
তছনছ করে দিই মাংসপেশি-শিরা-ধমনীর অনুপম সজ্জাকে,
কেটেকুটে নালা-নর্দমা বানিয়ে দিই আপনার যৌনাঙ্গ;
না হ’লে, না হ’লে কী কারণে বেঁচে থাকব?
এই আধুনিক-টেক পৃথিবীতেও
কেন টিকে থাকা
যদি আস্থা না রাখি সঙ্ঘবদ্ধ হিংসার বলে?
হৃদি-সম্মত সতর্কীকরণ – শুভশ্রী রায়
অমিত হিংসায় আকাশ কালো, শাহী নাশকতা
কৌশলে ছড়িয়ে পড়ছে…..
অপচেষ্টা অবাঙমানসগোচরকে
ব্যবহার করে মানবডাঙার রাস্তায় রাস্তায় শকুন ওড়াবার,
উল্টো দিক থেকে মানবতার অঙ্গীকার –
উড়বে না, উড়বে না একটিও মাংসভুক পাখী,
নাকে রুমাল বেঁধে লাশ সরানোর লোকজন নয়,
পথে পথে হাঁটবে নাশকতায় অনাসক্ত শান্ত লোকজন
আধপেটা খাওয়া তবু ভিন্ন গোষ্ঠীর রক্ত চাটতে নারাজ;
সকলের অনায়াস-হরিৎ দেশের কোথাও বাতাসে নয় অবিশ্বাস;
হৃদয় রাজনীতির চতুরতার শিকার হ’বে না আর।
গদির জন্য লাশ বিছিয়ে রাখার খেলা নয় ,
শুনে রাখো, গণহত্যায় অভিজ্ঞ রক্তলোলুপ ঘাতক,
ইতিহাসের হলাহল বাদ দিয়ে অমৃতটুকু দেশ নেবে,
বেঁচে থাকবে চয়নপন্থী স্বদেশ আমার মিলনসার।
বালিকাবিলাপ – শুভশ্রী রায়
শৃঙ্খলায় নিবেদিত ইস্কুলে যায় রুখুসুখু বালিকাদ্বয়,
দু’ বছর আট মাসের পার্থক্যে পৃথিবীতে এনে
যত্ন করার কেউ নেই, গোটা পাড়ার চোখে লাগে,
মা ভোরেই কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে বাড়ী ছাড়া;
দুই বোনের গায়ে ইস্কুলের সবচেয়ে অনুজ্জ্বল পোষাক,
কিছু জ্ঞান, কিছু এটাওটা, সাপ্তাহিক পরীক্ষায় যেমনতেমন নিয়ে,
তাচ্ছিল্য কুড়িয়ে বিকেলে বাড়ী ফিরে আসা স্কুলবাসে।
মেয়ে দু’টি সন্ধেবেলায় শ্রীহীন খুপরি ফ্ল্যাটে
সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাত বাবা-মায়ের মোহখেলা দেখে,
বড় গম্ভীর…চালাক ছোটটি না দেখার ভান করে;
পৃথিবীর উপেক্ষা, পারিবারিক অবহেলা নিতে নিতে
একজন ক্রমশ লেখায় মগ্ন হয়ে যায়,
আরেক জন চতুর সুগৃহিণী দূরদেশে..
জানে – নির্বিকারত্ব আয়ত্ত না করলে
সাংসারিক খাপে আঁটা কঠিন,
যেমন আঁটতে পারেনি তার অনুভূতিপ্রবণ অগ্রজা।
স্বতঃশুদ্ধ – শুভশ্রী রায়
বড় পাপ এ দিকে ও দিকে এমন কি
না দেখা দিকটাতেও পাপেরই আভাস,
হে পবিত্র নদী ,নিজেকে স্বচ্ছ করো আগে
তারপরে তোমার জলে নিজের ছায়া ফেলে
স্বতঃ শুদ্ধ হ’ব, অতি সামান্য মানবী আমি,
পুণ্য কেনার উপায় জানা নেই কোনও দিন।
বিপন্ন প্রশ্ন – শুভশ্রী রায়
সদ্য ফুটেছে মেয়ে-ফুল, তার জন্য কী কী রেখে যাব?
হাজার চেয়েও তার জন্য কম লোভী পৃথিবী কি পাব?
চিরাচরিত ধর্ষণকারী কৌম, নির্বিকার নির্মম সমাজ,
অপরাধ অন্যের তা সত্বেও রেখে যাব রাশি রাশি লাজ,
পাথর বিচারব্যবস্থা, সব অঞ্চল-পল্লীর হিংসায় প্রীতি;
চ্যানেলের ভোজ, বলাৎকার ভাঙিয়ে খাওয়া রাজনীতি!
সূর্য সদ্য নিজেকে খুলেছে অপাপবিদ্ধা যে মেয়ের জন্য,
কী উপায়ে বলব, শাপিত কোন মুখে সইতে বোঝাব তাকে,
মেনে নে, সহ্য কর, যেমন সহ্য করতে হয়েছে পূর্বাপর মা-কে,
নারীজন্ম অনুপম, কুৎসিত খিদে লালায়িত গোষ্ঠী’র থাকে,
যেমন নোংরা দৃষ্টিতে দেখে যত লোলুপ চতুর কামে বন্য
আরেকটি সম্ভাব্য শিকার পেয়ে লোভীরা হয়ে যায় ধন্য!
সবে পৃথিবীতে আসা পবিত্র অমলিন নিষ্পাপ ফু্ল,
তাকে বাধ্য হয়ে দিয়ে যাব ক্ষমাহীন পুরুষতান্ত্রিক ভুল?
শ্রাবণ – শুভশ্রী রায়
কোথায় পেলে তুমি আমাকে, শ্রাবণ?
আমি সাধারণত বৃষ্টির তলায় ভয়ে ভয়ে থাকি,
বিশ্রী কিন্তু পরিচিত কিছু হবে,
ফুসফুস ঢেকে যাতে পারে, অসোয়াস্তি অনেক
ওষুধের দাম বেশি, সেই সঙ্গে নিজেই নিজেকে দেখা ও শোনা!
সেই ভয় সঙ্গী নয় যখন থাকি
ছিরিছাঁদহীন ছাদের তলায় কোনো মতে শুকনো,
বাইরে বৃষ্টি পড়ে অনাদৃত অবাঞ্ছিত,
শহরের খোপে খোপে দুশ্চিন্তা জমে তাকে নিয়ে
কোনও রকমে বৃষ্টির কথা শুকনো কলমে লিখি
তার পরে মেঘের পাশে যেতে মৃদু ইচ্ছে করে,
বলতে পারি সত্যিটা, ভেজে না তো মন।
আশ্রয় – শুভশ্রী রায়
রোদের মধ্যে দিয়ে মিছিল আসছে,
হইহই বাজারে এসে একটু বিশ্রামের মতো কিছু,
দেব দেব কমরেড পরাক্রমী মৌসুমী হাওয়ার পাশাপাশি সামনে ছিলেন;
সবার মতো তাঁরাও ক্লান্ত,
আমি তো রোদে পুড়ে আরো শ্যাম-ধরণ।
হাতছানি দিচ্ছে দীর্ঘকায় কমরেডের ছোট ছায়া,
কাউকে কিছু বুঝতে দিলাম না;
এর ওর মাঝখান দিয়ে সোজা ও কৌশলী হেঁটে গিয়ে
দাঁড়িয়ে পড়লাম সেই ছায়ায়…
আহহ্ স্বস্তি!
টেক্সট – শুভশ্রী রায়
যে রকম এই যুগ সেরকম না হ’লে কী করে হবে?
সংক্ষিপ্ত বানান, কম সময়ে রক্ষা পাওয়া এই ভবে,
টেক্সট করো, অন্তত পড়ো যদি টাইপ মনে হয় দায়
দেখবে ক্রমশ বুঝে যাবে কে তোমাকে কতটুকু চায়;
হৃদয়ের যে দরজা যখনতখন খোলে না অনায়াসে
তারই ফাঁক দিয়ে গলে দুয়েকটা বার্তা তো আসে!
সমস্ত দুনিয়া হৃদয়হীন নয়, আসলে ব্যস্ত নিরুপায়,
ফাঁকে ফাঁকে যোগাযোগ, এ ওকে টেক্সট করে যায়।
পীড়া এবং – শুভশ্রী রায়
ফিরে যাচ্ছি, যাচ্ছি নাকি কোথাও ফিরে?
মনে হ’চ্ছে! টানও তো পড়ছে জোরে-ধীরে
হাল্কা ইঙ্গিত আসে, আলোর সাগরের তীরে;
আসলে খুব দূরে নয়, এসেছি সেখান থেকেই
তবে পথ খুব সূক্ষ্ম, আমার ভালো মনেও নেই,
প্রাপ্য অফুরন্ত, ক্লেদ পেরিয়ে পৌঁছে যাব যেই।
সনিশা’র উদ্দেশ্যে – শুভশ্রী রায়
সনিশা মারাঠে, নাসিক শহরে কী ছিমছাম বাড়ী!
তোমার সঙ্গে নিজের জীবন বদল করতে পারি?
সনিশা, তোমার পোষাক ঝকঝকে, দেখার মতো!
পাশেই ঘোরাফেরা করে পুরুষেরা সদা-সম্মত।
আমি তুচ্ছ, কারুর হৃদয়ে তুলি না গো আলোড়ন
তুমি টানটান সুন্দরী, কেড়েছ শত পুরুষেরই মন!
বাংলো তোমার আধুনিক, সারাবার রাখো ক্ষমতা,
আমার ফ্ল্যাটকে কোনও রকমে ধরে রেখেছে মমতা।
তুমি দু’ পা এগোলে অপূর্ব আঙুরের ক্ষেত গড়ানো,
ঘিঞ্জি উত্তর কলকাতায় আমার শেকড়বাকড় ছড়ানো।
তবু মুখবইয়ে তুমি আর আমি ভার্চুয়াল কাছাকাছি,
বাস্তবে কত না বিপরীত তোমার আমার বাঁচাবাঁচি!
সনিশা মারাঠে, আমার মতন বেঁচে দেখবে নাকি?
আমিও না হয়, দু’ তিন দিন তুমি হয়ে বেঁচে থাকি!
তোমার সঙ্গে নিজের জীবন বিনিময় করতে চাই,
সম্ভব না, ক’টা পংক্তিতে শখ মিটিয়ে নিচ্ছি তাই।
নিজের মৃত্যু বিষয়ক – শুভশ্রী রায়
এ সব কথা আমরা এড়িয়ে যাই অনেক কৌশলে
কিন্তু মৃত্যু তো নিজেকে স্থগিত রাখে শুধু
কখনোই আমাদের এড়িয়ে যায় না।
এই মুহূর্তে নিজের মৃত্যুর কথা একটু ভাবা যাক।
সম্ভবত এই সাদামাটা ফ্ল্যাটেই মারা যাব
এবং পাশের পেঁয়াজের গুদাম থেকে অসহ্য গন্ধ ঢুকবে তখনো
নিচ থেকে ভেসে আসবে বিশ্রী খিস্তিখেউর,
রাস্তার কলে কেউ কারোর বাপান্ত শেষ করে মা ধরে টানাটানি
শুরু করবে;
এখানে জীবনকেই কেউ সম্মান করে না,
তো মৃত্যুকে!
অন্তিম সাজসজ্জা আমার আয়ত্তে নয় নিঃসন্দেহে তবে
নিজের দেহের ওপর আমি ফুলটুল চাই না,
একটা পরিষ্কার পোষাক পরে শ্মশানযাত্রা হ’বে,
যে সব মেঝে যে সব দেওয়াল এতগুলো বছর আমার কথা শুনেছে ধৈর্য ধরে,
তাদের জন্য অনেক আদর রেখে যাব।
অগুরু জ্বালাবে না কেউ, উৎকট গন্ধ
তাচ্ছিল্য ও বিরক্তি থাকলেও শুধু
কেউ একজন যেন শেষবার হাতে একটা কলম ছুঁইয়ে দেয়!
ছায়ামুক্তি – শুভশ্রী রায়
সময় চরম গুটিয়ে এলে
শরীর ছেড়ে ছায়া আলোর উঠোনে নেমে পড়ে,
দেহ কোনও না কোনও অন্ত্যেষ্টির অপেক্ষায় আর
ছায়া পারলৌকিক কাজের প্রত্যাশা ছেড়ে
মুক্তিযাপন করে, আগেপিছে সমস্ত ছায়া
মহানন্দে পরস্পরের গায়ে আলো ছিটিয়ে
নিজেদের জ্বালা কমায় যত পারে।
দেহ পুড়ে যায়,
মুক্ক ও অন্তহীন ছায়া ঘোরে ফেরে;
পৃথিবী ও সময়ের জালে কখনও চোখে পড়লে
প্রেত নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
দ্বিতীয় নারী – শুভশ্রী রায়
তুমি বিনা শর্তে ভালোবাসতে পারো
প্রথাকথিত স্বীকৃতি সংসারে অন্য কারো!
মন্ত্রসঙ্গিনী পাবে সিঁদুরছাপ, নোয়া
সাতপাকে চক্রে তোমার কপালে বদদুয়া
সহধর্মিণী বিধিমতে সবটুকু পাবে,
বৈবাহিক ছবির বাইরে তুমি থেকে যাবে।
সব জেনে বুঝেই ভালোবাসো, জানি
না প্রশস্তি, না নিন্দা, এই সত্য শুধু কাহিনী।
লাল ডাকবাক্স – শুভশ্রী রায়
এক সময়ে অপরিহার্য ছিল,
সেই সঙ্গে সাংসারিক খবরের ভান্ডার
কুশল-মঙ্গল-শোকবার্তা ধরে রাখত গর্ভে
এখন সর্বাঙ্গে উপেক্ষা;
বছরে কটা চিঠি ফেলা হয় হাতে গোনা যাবে,
প্রযুক্তি তাকে মরিচায় মুড়ে দিয়েছে।
অতীতের প্রতীক অতীত হয়ে যাওয়ার আগে,
এস তার অজানা অন্ধকার ভেতরে চিঠি হয়ে ঢুকে যাই।
অপরিহার্য – শুভশ্রী রায়
আমার প্রতিটি সকাল একটা করে তেতো, কালো কফির অপরিহার্য কাপ নিয়ে আসে
আর আনে খবরের কাগজ নিতে না পারার অপারগতা
তার ওপর চড়াও হয় চড়াই পাখীদের কিচিরমিচির;
ওদের আলো-সঙ্গত আমার মধ্যে সঞ্চারিত হয়,
ব্যাখ্যা বহির্ভূত আনন্দের স্রোত সকালের ভেতর থেকে বইতে শুরু করে…
ডিভাইসের ভেতর থেকে
শাফকাত আমানত আলি অপূর্ব গেয়ে ওঠেন,
বৈষ্ণবজন তো তেনে কহিয়ে যো পীড় পরাই জানে রে….
সকাল আশীর্বাদী সুরে ডুবে যায়।
উপাসনা – শুভশ্রী রায়
তুমি যেন কে! এই পৃথিবীর কেউ?
নাকি ঠিকানায় সীমাবদ্ধ যেমনতেমন প্রাণ এক টুকরো?
অন্ধকার তরল আর প্রশ্ন ঘনীভূত হয়ে আসে
ভোর ডাকে, জানাতে চায়-
এই আকাশ ও বাতাসের সঙ্গে সম্পর্ক তোমার, চালাকিবর্জিত নরম আলো বন্ধু…
এত কিছুর সঙ্গে তোমার আত্মিক যোগ;
কিছুতেই তুমি তুচ্ছ এক নাগরিক নও
নও দুটো ঘর সহ কণা ফ্ল্যাটের বাসিন্দা মাত্র ,
পরিচয় তোমার আরো উদার ,
পরিপূর্ণতা মহাজগতের ভেতরে।
এমন ভোর পাঠিয়ে জগৎ তোমাকে ছুঁতে চায়
তুমি কেন জগৎকে ছুঁতে চাও না?
তার ডাকে সাড়া দাও,
তার স্তুতি রচনা করো সাদা কাগজে,
ভোর পাঠিয়েছে মহাজগৎ
অন্তত একখানি কবিতা তাকে দাও নত হয়ে।
আমার ভেতরে মৃত্যু – শুভশ্রী রায়
বড় করুণ, অনিবার্য ও সত্য…
আমার ভেতরে যে সব মৃত্যু ঘটে গেছে
তাদের কাহিনী ছিল দস্তুরমতো।
শোক চিরকালীন পাশাপাশি,
নির্ঘুম রাতের নিশ্চুপ সাক্ষ্যে অশৌচ অব্যাহত
যদিও অনিয়মিত।
অনিবার্য যে সব মৃত্যু আমার ভেতরে ঘটে গেছে-
শৈশবের সারল্য, কৈশোরের বিশ্বাসপ্রবণতা
যৌবনের বিশুদ্ধ আবেগ
সকল মৃত্যুর জন্য শোক হয়, তীব্র শোক
পুড়ে যাওয়া দাহ হওয়া
প্রাণের সম্পদ দুয়েকটি শ্বাস
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়
সেই সব অমূল্য অনুভূতির কথা ভেবে ।
যে সব মৃত্যু আমার
জীবিত সত্তার ভেতরে থেকে গেছে,
তাদেরকে দিই পরপর নিদ্রাহীন রাত দিয়ে গাঁথা শ্রদ্ধার্ঘ
কখনো সখনো তাদের স্মরণ করি অকপট হয়ে।
পাখী উড়ে এসে – শুভশ্রী রায়
ধরো আমি লিখছি কখনো,
সেই সময় একটা পাখী টুক করে
লেখার কাগজের ওপর নেমে পড়ল আর
দু’ চারটে শব্দ ঠোঁটে করে উড়েও গেল,
তখন পাখীটার ওপরে রাগ করব কি?
প্রথমে একটু রাগ হবে হয়তো
পরে মাথা ঠান্ডা হলে,
যখন অনুভব করব পাখী তার নিজস্ব মুক্তি
আমার কবিতার মধ্যে রেখে গেছে,
মিশিয়ে দিয়ে গেছে ঘন বনের সবুজ ঘ্রাণ,
সেই সঙ্গে আকাশের আশ্চর্য আলো;
উধাও হয়ে যাবে সব রাগটাগ।
ধরো, আমি লিখছি কোনো এক দিন
আর একটা পাখী উড়ে এসে কিন্তু
জুড়ে না বসেও ঘুরিয়ে দিল লেখার মোড়!
অসহায় – শুভশ্রী রায়
পালাপার্বণে তারা অচ্ছুত ছিল
সমাজ নিঃসৃত গরল পান করত প্রতি দিন
পালা করে সামলাত হেঁসেল আর সমস্ত গৃহকাজ,
মাথা ঘুরলেও অক্লান্ত ঘুরপাক ঘরদোর ঘিরে,
অন্যথায় সংসার-কেন্দ্র ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল
সাদা থানে অনায়াস তাচ্ছিল্য মাখানো যুগরীতি মেনে।
রাত হলে এক ঘরে ঘেঁষাঘেঁষি শুয়ে পড়ত অতৃপ্ত ত্রয়ী
তিনটি বিধবা, চোদ্দ থেকে একুশের মধ্যে বয়স,
যৌনতৃষ্ণা কখনো চোখের জল হয়ে বয়ে যেত
কখনো গোপন অঙ্গে আগুন হয়েও নিভুনিভু বাধ্যত।
চরম চাবুক নেমে আসা তখনো বাকি!
শুনতে চাইত না কান চেপে রাখত, অসহায় প্রার্থনায়
বলত, “সইতে পারি না, আর জ্বালিও না প্রভু”,
দেওয়াল ফুঁড়ে কানে আসত মা-বাবা’র অনিবার্য শীৎকার।
আগুন লেখা মেয়ে – শুভশ্রী রায়
যে সব মেয়ের কোনো প্রেমিক থাকে না
যে সব মেয়ের গায়ের রং আবহমান চাপা
জিভে ধার আছে যে সব মেয়ের,
শ্লীলতাহানি করে কোনোরকমে ভেগে যাওয়া
পুরুষটিকে রাস্তায় দেখে
মুখে থুতু ছিটিয়ে দেয় যে সব মেয়ে
সেই সব মেয়ে, হ্যাঁ সেই সব মেয়েও
সব জেনে-বুঝে না জানা এই পৃথিবীর সৃষ্টি;
সেই সব মানবীর কবিতা পুরোটা গনগনে ক্রোধ
তা নয়, মায়াও থাকে অনেকটা,
চোখর জলও থাকে বই কি
তবে তাদের লেখায় যদি একটু আগুন থাকেই
সে আগুনের আয়োজন কী আপনারাই করেননি
অনেক, অনেক বছর ধরে?
আগুন লেখা মেয়েরাই শুধু
সব জ্বালানোর দায়ে দোষী হ’বে কেন?
সৌর অস্থি – শুভশ্রী রায়
আমার হাড়ে হাড়ে সূর্য উঠুক
দিন রুটিন হয়ে ওঠে আকাশে,
কাল রক্তে আমার সূর্য মিশুক
আমার রক্তের রং ফ্যাকাশে।
আমার চোখের মণি সূর্য ধরুক
রোজ জ্বলে পুড়ে আকাশ ধরে,
অস্ত থেকে এক দিনও নেই ছুটি
খেলা করুক আমার প্রতি ঘরে।
সূর্য দুষ্টু করুক আমার ভেতর
দাঁত বসাক আমার ঠোঁটে গভীর,
তাপ লাগুক জ্বলুনি হোক ভীষণ
না থাকুক বিচ্ছিরি ভাবগম্ভীর।
মাথার চুলে সূর্য হাসুক আগামী
এলোমেলো করতে থাকুক পুরো
আপাদমস্তক ঢুকে পড়ুক অসহ্য,
চূড়ান্ত উচ্চতায় যাক সুখের চূড়ো।
দিন খারাপ – শুভশ্রী রায়
একেকটা দিন কেমন যেন
আকাশ বড়ই নিরুত্তাপ,
সারাটা রাত যেমন ছিল
দিনেও আলোর মনখারাপ।
এসব বেলাতেই সন্ধে হাজির
একেবারে সংজ্ঞা মতো দিনে,
কোথার থেকে কার থেকে
আনব আমরা আলো কিনে?
এ হেন দিন তারিখ শুধু
রুটিন সকাল নামেই শুরু,
কষ্ট পেয়ে দেখছি খবর
কাগজটারও কুঁচকে ভুরু!
এমন দিন নতুন তারিখে
দিনে অনড় বিষাদ ধরে হাত,
কফির তেতোয় বিষণ্ণতা মিশে,
উদ্দীপনাতেও লেগেছে শাপ।
জলে বেদনা – শুভশ্রী রায়
জলে কিছু ভাসে অন্য রকম,
নিজেকে ভাসাতে এসে কেউ
মায়ার চোরা স্রোতে আটকে
ফিরে গেছে কোলাহলময় অস্তিত্বের
কাছে, জলের কাছে সর্বস্ব সমর্পণ
তার নিয়তিতে নেই সম্ভবত।
অশ্রুর লবণ নদীতে ছেড়ে চলে সে গেছে
জলে ভাসে অসফল হৃদয়ের বিষণ্ণ হলুদ
স্রোতের মুঠোয় আবেগ তার, মানুষটি
কোনও প্রাণে বেঁচে নেবে সাধ্যমতো।
হৃদযন্ত্রটি তার কুড়োবে ঝরাপাতা রঙা
হলুদ আরো, তারপর ফের সে আসবে কী
জলের কাছে কোনও দিন, বিষাদ ভাসাতে?
জলজ হৃদয় তার বেদনায় উথালপাতাল,
ঢেউ থেকে ঢেউয়ে ছড়ায় ব্যক্তিগত হলুদ ।
ধুলো জন্ম – শুভশ্রী রায়
আমাদের ধুলো জন্ম কখনো মুছে যায় না
ধুলো জড়িয়ে বাঁচা, ধুলোয় শ্বাস নেওয়া
তারই মধ্যে রাজপ্রাসাদের দু’ এক ঝলক,
সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে ধূলিকণার হাত বাড়ানো
ধূসর বা সজ্জিত, অতীত থেকে বর্তমান অবধি
মায়াধুলোর সুড়ঙ্গ ছড়ানো।
ভোর থেকে রাত চোখে ধুলো দিয়ে
এক রাশ শোভা দেখায় পরমাপ্রকৃতি,
সূর্য ক্লান্ত হয়ে গড়িয়ে অন্য গোলার্ধের দিকে যায়
গোধূলি থেকে মনখারাপ ঝরে পড়ে
গত জীবনের বেদনা গাঢ় হয়ে সূর্যাস্তের পাশে ,
অপ্রাপ্তির সান্ধ্য সংকেত পাশে নিয়ে
দিনকে বিসর্জন দেবার শোকে জগৎ বিধুর
আকাশকে রঙে ভাসিয়ে চূড়ান্ত কালো নামে;
চরাচর থেকে ছুটে এসে সৃষ্টির আদি ধুলো
নিশ্চিত ওমে পৃথিবীকে সাঁঝের গর্ভে শোয়ালো।
মুক্তি অধিবেশন – শুভশ্রী রায়
কবিতা অনেক বয়ে গেছে
আজ বরং পাখীদের কথা হো’ক
তাদের ডানায় মাখানো মুক্তির ধারে ধারে
শেকল পড়ানোর সহস্রাব্দ প্রাচীন প্রয়াস আমাদের;
সেই প্রয়াসকে ধিক্কার জানিয়ে সংসদে প্রস্তাব আনা হোক জরুরি ভিত্তিতে।
সংসদের উভয় কক্ষ খাঁচা ব্যবসায়ীদের নিন্দা করুক সর্বসম্মতিক্রমে
জনপ্রতিনিধিরা দলমত নির্বিশেষে শপথ নিন,
আমরা মুক্তি পুষব না সবুজ টিয়া বা সাদা-কালো পায়রা গোষ্ঠীর,
দেশী-বিদেশী কোনো রকম।
পরের দিন জ্বলজ্বল করুক শিরোনাম
সংসদে পাখীদের মুক্তি বিষয়ে বিরল ঐক্যমত্য।
শুভশ্রী রায় | Suvasri Roy
New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | কল্যাণ সুন্দর হালদার
New Bengali Article 2023 | স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন
New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৫) | উপন্যাস
Porokia Prem Ekaal Sekaal | পরকীয়া প্রেম (একাল সেকাল) | 2023
bee bengali poetry | bengali poetry about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer bengali poetry | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdodweep Founder