Bengali Article 2023 | ভৃগুর শক্তিপীঠ ও বড়োমা :: বিল্লপত্তন থেকে বড়বেলুন

Sharing Is Caring:
BENGALI ARTICLE
Bengali Article

ভৃগুর শক্তিপীঠ ও বড়োমা :: বিল্লপত্তন থেকে বড়বেলুন [Bengali Article]

“ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বিল্লপত্তন গ্রামে
ভৃগুর শক্তিপীঠ আজ বড় বেলুন নামে “

বহু ইতিহাস বুকে জড়িয়ে রয়েছে আজকের বড় বেলুন, বারে বারে উঁকি মারে বানেশ্বর ডাঙ্গা কলাইডাঙ্গা, কে জানে এর তলায় দিয়ে এক সময় বয়ে গেছে গঙ্গার স্রোত, হয়তো অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রেখেছে সরকারপুকুর! পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন এর ভিত্তিতে এই সভ্যতা প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরের প্রাচীন! এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা থাকছে আমার গবেষণামূলক “খড়িনদীর তীরে সভ্যতা ও সংস্কৃতি” গ্রন্থে!

আজকে শুধু বড়োমা, সাধক ভৃগু আর বড় বেলুনের বড়মা যেন ইতিহাস হয়ে জড়িয়ে রয়েছে, বড়বেলুনবাসী এখনো যেন ভৃগুর পদধ্বনি শুনতে পায়, শুধু বর্ধমান নয়, ভাতার ব্লকের বড়বেলুন আজ সারা ভারতবর্ষে পরিচিতি লাভ করেছে শুধু বড়মার জন্য। তাই আজ পূর্ব বর্ধমানের গর্ব বড় বেলুনের বড়মা, বহু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে, ইতিহাস জড়িয়ে স্বমহিমায় বিরাজ করছেন।

পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লকের অন্যতম কৃষিপ্রধান গ্রাম হল বড়বেলুন, এই গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বড়মা বহু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আপন ঐতিহ্যে স্বমহিমায় বিরাজ করছেন। কথিত আছে যে দ্বাদশ শতকের প্রথমার্ধে সেন রাজত্বকালে সাধক ভৃগু বড়মার পূজার সূত্রপাত করেন। ভৃগু কিভাবে বহুলাপীঠ থেকে মায়ের আদেশে তন্ত্রসাধনার জন্য কিভাবে বিল্লপত্তন গ্রামে এলেন তা নিপুণ ভাবি লিপিবদ্ধ করেছেন ভৃগু বংশোদ্ভূত তান্ত্রিক সাধক রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য–

“কেতুগ্রামে বহুলাপীঠে শক্তি সাধনায়।
ভৃগুরাম যোগাসনে ডাকতেন মহামায়ায়।।
স্বপ্নাদেশ দিলেন মাতা পুত্র ভৃগুরামে।
‌ গমন করো বিল্লপত্তন মহাশ্মশান ধামে।।”

এই ঐতিহ্যবাহী পূজার ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে অবধারিত ভাবে উঠে আসে ভট্টাচার্য্য বংশীয় জনৈক ভৃগুর নাম, শুধু তাই নয় এর সাথে জড়িয়ে আছে, সতীপীঠ অট্টহাস, সতীপীঠ যোগাদ্য। মনে করা যেতে পারে যে সেন যুগে তান্ত্রিক হিন্দুধর্ম বিকশিত হয়েছিল, কথিত আছে যে সেন রাজা বল্লাল সেন তান্ত্রিক হিন্দু ধর্মের অনুরাগী ছিলেন, তাই সেন যুগে তন্ত্রসাধকরা তন্ত্র সাধনায় মনোযোগী হতে পেরেছিল, ঠিক এই সময় পর্বে ভৃগু সতীপীঠ অট্টহাসে তন্ত্র সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন বলে গ্রাম সমাজ এখনো মনে করে। কথিত আছে যে সাধক বামাক্ষ্যাপাও সতীপীঠ অট্টহাসে একসময় তন্ত্র সাধনা করেছিলেন।

উল্লেখ করা যেতে পারে যে ভৃগু কাটোয়ার কেতুগ্রামের দেবীর ওষ্ঠ পতিত অট্টহাসের একজন তান্ত্রিক সাধক ছিলেন, তিনি জনৈক বন্দ্যোপাধ্যায় বংশীয় মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সন্তান বলে কথিত আছে, শোনা যায় মা ভৃগুর সাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে’ মা বলেন- “বিল্লো পত্তনের মহাশ্মশানে পঞ্চমুন্ডি আসন পেতে আমার আরাধনা করো!” শোনা যায় মায়ের এই আদেশ পেয়ে ভৃগু চলে আসেন বিল্লপত্তনের মহাশ্মশানে, বিল্ল মানে বেল, আর পত্তন মানে বেলুন, পরে বড় মার নাম অনুসারে এই গ্রামের নাম হয়েছে বড় বেলুন! যাই হোক সেই সময় এই অঞ্চল ঘন বেলগাছে পরিপূর্ণ ছিল, আর তার পাশে ছিল একটা মহাশ্মশান, আর ছিল খড়ির প্রাচীন খাত, অনেকে একে গঙ্গার যোগসূত্র বলে মনে করেন। এই ঘন জঙ্গলে বন্য জন্তু জানোয়ার ছাড়াও ডাকাতরা বাস করত বলে জানা যায়!

যাইহোক সাধক ভৃগু বিল্লপত্তনে এসে তালপাতার কুটির তৈরি করে পঞ্চমুন্ডির আসন পেতে, মাতৃ সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করেন, কথিত আছে সাধক ভৃগু প্রত্যেকদিন মাটি দিয়ে মায়ের মূর্তি তৈরি করে, স্নান করে এসে সেই মূর্তির পূজা করতেন, একদিন ভৃগু মূর্তি তৈরি করে স্নান করতে গেছেন, এসে দেখেন তালপাতার কুটির ভেদ করে দন্ডায়মান এক ভীষণ আকৃতির মূর্তি, আনুমানিক উচ্চতা ১৪ হাত, তখন ভৃগু ভয় পেয়ে মায়ের নাম জপ করতে শুরু করেন, তারপর সেখান থেকে পালিয়ে যেতে উদ্যত হলে, মায়ের অভয়বাণী ধ্বনিত হয়-“ওরে পাগল ভয় পাচ্ছিস কেন ? আমি বড়মা! এবার থেকে আমার পূজা শুরু কর!”

“এক হস্তে মূর্তি গড়ি ভৃগু একদিন!
স্নান সারি এসে দেখি নাহি তার চিন্।।
কোথা গেল ওই মূর্তি সেই বেদী পরে।
ভীষণ বদনা মাতা দাঁড়িয়ে আছে ঘরে।।”

এই ভীষণ আকৃতির মূর্তি দেখে ভৃগু ভয় পেয়ে যান, তিনি পালিয়ে যেতে উদ্যত হন, তখন অভয় ধ্বনি উত্থিত হয়—

” অভয় দিয়ে মাতা বলেন ওরে ভৃগুরাম
এই মূর্তি থাকবে আমার বুড়িমাতা নাম”

মায়ের কাছে অভয় বার্তা শুনে ভৃগু মেতে গেলেন সাধনায় ! সেই শুরু এরপর দিনের পর দিন ভৃগুর আরাধনা চলতে থাকে, ধীরে ধীরে ভৃগুর বয়স বাড়তে থাকে, হঠাৎ একদিন মা ভৃগুকে স্বপ্নাদেশ দেন-“এবার বিয়ে থা করো! তোমার অবর্তমানে আমার পূজা কে করবে? মা আরও বলেন–“সামনের আমাবস্যায় এক ব্রাহ্মণকন্যা সর্প দংশনে মারা যাবে, তাকে মহাশ্মশানে নিয়ে এলে তুই একমুঠো ছাই তার মুখে দিয়ে দিবি, সঙ্গে সঙ্গে সে প্রাণ ফিরে পাবে, তারপর তুই তাকে বিয়ে করে সংসারী হবি !”

“অমাবস্যায় ব্রাহ্মণ ঘরের কুমারী এক মেয়ে‌।
সর্পাঘাত করিবে তারে আসবে হেতাই নিয়ে।।

শক্তি পীঠে আনবে যখন অবাক হবি দেখে ।
এক মুষ্টি চিতাভস্ম দিবি তার মুখে।।”

তারপর দেবীর কথামতো ঘটল সেই ইতিহাস, ভৃগু মায়ের আদেশ মতো তাকে বাঁচিয়ে তুললেন, মায়ের ইচ্ছার কথা কন্যার বাবাকে বললেন, তিনি সানন্দে রাজি হয়ে গেলেন, ভৃগু সংসারী হলেন, হলেন তিন পুত্রের জনক।

শোনা যায় ভৃগু একশত আঠাশ বছর জীবিত ছিলেন, এরপর তার বড়পুত্র শিবচন্দ্র ন্যায়লঙ্কারকে দেবীর দায়িত্ব দিয়ে তিনি পৃথিবী ছাড়েন, তার পর থেকেই ভৃগুর বংশধররা প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই পূজা করে আসছে!ভৃগুর বংশধররা পরবর্তীকালে শাস্ত্র বিদ্যায় দক্ষ হয়ে ওঠেন, এই বংশের কম করে কুড়িজন শাস্ত্রবিদের কথা জানতে পারা যায়, তারা অনেক তেজ্যপত্রে পুঁথি রচনা করেছেন, সেই পুঁথি বঙ্গীয় সাহিত্য সভা থেকে তা অনেক বিদেশে যেমন জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার জন্য অনেক পুথি পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পারা যায়! এই বংশের বংশধরেরা অনেকেই বর্ধমান রাজ পরিবারের সভা পন্ডিতের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাছাড়া নবদ্বীপ শাস্ত্রীয় সমাজের অধ্যক্ষ ছিলেন বলে জানা যায়!

এই পূজার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ে, পূজার দিন সকালে দেবীর গায়ে খড়ি রং লাগানো হয়, বিকালে দেবীর রং করে চক্ষুদান করা হয়, এরপর সন্ধ্যাবেলায় ডাকের সাজে চাঁদ মালা পরিয়ে মাকে সাজানো হয়, তারপর স্বর্ণ এবং রৌপ্য অলংকারে দেবীকে ভূষিত করা হয়, এরপর মূল পূজা শুরু হয় রাত্রি বারোটার পর, পূজা এবং বলিদান শেষ হতে প্রায় সকাল হয়ে যায়, প্রথম বলিদান হয় ভটচাজ বংশীয় সেবাদাতার, তারপরে মৃৎশিল্পীর, উল্লেখ করা যেতে পারে যে কুন্ডু বংশীয় মৃৎশিল্পীরা বংশ পরস্পরায় দেবীর রূপদান করছেন। তবে দেবীর একটা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এখানে আরতি বা হোম হয় না,এই ভাবেই দেবীর মাহাত্ম্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে, শুধু বর্ধমান নয় দূর-দূরান্ত থেকে দেবীর পূজা দেখার জন্য লোক ছুটে আসে।

দেবীর পূজাকে ঘিরে এই অঞ্চলে উৎসবের মেজাজ চোখে পড়ে, আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব যে যেখানে থাকে এসে হাজির হয়, আইন শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তার জন্য পুলিশি ব্যবস্থা থাকে বলেও জানা গেল, তাই আজকে মায়ের রিপোর্টিং এসে বলতে ইচ্ছা করে–

“বহু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকো মা তুমি
যুগ যুগ ধরে এই বিল্লপত্তন ধামে!”

MODE Field study 34, on 20 October 2022

Source:: Tarknath Bhattacharya, Triptinath Bhattacharya, Souvik Paul, Borbelun East Burdwan,

Literature: Boromaa Kalir antaaKatha of Ramakrishna Bhattacharjee(tantrik Acharya)

বারিদ বরন গুপ্ত | Barid Baran Gupta

New Bengali Poetry 2023 | সামসুন্নাহার ফারুক | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | মোঃ ওয়াসিউর রহমান | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | তৌহিদুল ইসলাম | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | প্রতিম ঘোষ | কবিতাগুচ্ছ

writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bangla article rewriter | bengali article writing format | bengali article writing ai | bengali article writing app | article writing book | bengali article writing bot | bengali article writing description | article writing example | bengali article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali article writing format | article writing gcse | bengali article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | bengali article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | bengali article writing pdf | bengali article writing practice | Bengali article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Bengali Article Writer | Short Bengali Article | Long Bengali Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Founder

Leave a Comment