New Bengali Story 2023 | গল্পগুচ্ছ | দেবাশিস পোদ্দার

Sharing Is Caring:
Bengali Story

ঘন্টি মে কিতনা রুপিয়া – দেবাশিস পোদ্দার [Bengali Story]

নিধুবাবু সবেমাত্র স্কুল মাস্টারি থেকে রিটায়ার করেছেন। শেষ কয়েকটা বছর নিধুবাবু আর সহ্য করতে পারছিলেন না । কিন্তু কি আর করবেন ? চাকরি ছেড়ে দিলে খাবেন কি ? তাই প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও চাকরি করে গেছেন ৬০ বছর অবধি। রিটায়ার করে নিধুবাবুর আনন্দ আর ধরে না। মুক্তির স্বাদ পেয়েছেন মনে হয় । টগবগ করে ফুটছেন । নতুন কিছু করবেন বলে অস্থির হয়ে উঠলেন । শহর থেকে ফিরে এলেন গ্রামের বাড়িতে। এতদিনের মাস্টারির অভিজ্ঞতা থাকায় গ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর কাজও জুটে গেল তার। প্রাথমিক কথাবার্তার পরে স্কুলের সেক্রেটারি নিধুবাবুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মাস্টারমশাই, আপনার ঘন্টি মে কিতনা রুপিয়া ?” প্রশ্ন শুনে নিধুবাবুর তো চক্ষু চরকগাছ। বলে কি ? সেক্রেটারির কাছে বিষয়টা ভালো করে জানতে চাইলেন তিনি। সেক্রেটারি সুন্দর করে বুঝিয়ে বললেন ব্যাপার টা। সেটা হল অনেকটা এই রকম……

ওই স্কুলের সব কর্মীকে এক অভিনব পদ্ধতিতে অর্থাৎ ঘন্টা হিসেবে বেতন দেওয়া হয়। যে কর্মী যত ঘন্টা স্কুলে কাজ করেন সেই অনুযায়ী তার বেতন নির্ধারিত হয়। ফলে কোনো কর্মীই আগে আগে স্কুল ত্যাগ করেন না । যতক্ষণ সম্ভব স্কুলে থাকেন। একেক দিন এমন ও হয় যে সন্ধ্যে পার করে রাত হয়ে যাচ্ছে তবুও কোনো কর্মী স্কুল ছেড়ে যাচ্ছেন না । কারণ …. ওই ঘন্টি মে কিতনা রুপিয়া ।
ভাবা যায় ?? নিধুবাবুর খুব মনে ধরল বিষয়টা ।
এই অভিনব পদ্ধতিটি সরকারি শিক্ষা দপ্তরে জানাবেন কিনা ভাবতে ভাবতে বাড়ি ফিরলেন নিধুবাবু । রাতে গিন্নির সাথে আলোচনা করবেন বলে ঠিক করলেন। আসলে নিধুবাবু গিন্নির সাথে অলোচনা না করে কিছুই করেন না , করতে ঠিক সাহস পান না । ফেরার পথে গ্রামের হাট থেকে মুলো আর ধনেপাতা কিনে নিয়ে এলেন বেশ খানিকটা । বাড়ি ফিরে গিন্নিকে জমিয়ে মুলো চচ্চড়ি রান্না করতে বললেন । রাতে গরম গরম রুটি আর মুলো চচ্চড়ি খেয়ে শুয়ে পড়লেন নিধুবাবু। পরেরদিন সকালে গিন্নিকে কথাটা বলবেন বলে ভেবে রাখলেন। সারাদিনের ধকলে ঘুমিয়েও পড়লেন তাড়াতাড়ি । সাথে মৃদু নাসিকা গর্জন শুরু হল নানাবিধ ছন্দে ও সুরে। কাকতালীয় কিনা বলা মুশকিল , তবে ওই দিন শেষরাতের দিকে পাড়ার সবাই শুনতে পেল ..নিধুবাবু গম্ভীর গলায় চিৎকার করে বলে চলেছেন , “ঘন্টি মে কিতনা রুপিয়া? …ঘন্টি মে কিতনা রুপিয়া ?…ঘন্টি মে………

রাগের কারণ – দেবাশিস পোদ্দার [Bengali Story]

মাষ্টারমশাই মারাত্মক রাগী। ক্লাসে বা ক্লাসের বাইরে কোনো দুষ্টুমি করে স্যারের কাছে ধরা পরে গেলে আর কোনো নিস্তার নেই। হাজার অনুনয় বিনয় করে, ক্ষমা চেয়েও স্যারের মুখ দিয়ে যে নিদান একবার বেরোবে তার অন্যথা হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। একেবারে বজ্রকঠিন ব্যক্তিত্ব ।

স্যার একবার রেগে গেলে যে কি কি হতে পারে তার নমুনা স্কুলের ছাত্র, শিক্ষক এমনকি অভিভাবকদেরও অজানা নয় । ফলে ছাত্ররা সকলেই এককথায় বেশ ভয়ে ভয়ে থাকে। দুষ্টু ছেলেরও তো অভাব নেই। ইলেভেনের কিছু ছাত্রের হল সব চাইতে বেশি সমস্যা । দুষ্টুমিটা প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। কি করা যায়…কি করা যায় ? একজন ছাত্র এই রাগের কারণ অনুসন্ধান করার জন্যে স্যারের বাড়িতে কোনো এক ছুটির দিনে সবাই মিলে যাওয়ার প্রস্তাব দিল। উদ্দেশ্য একটাই … ছাত্রদের দেখে খুশি হয়ে স্যার যাতে পরবর্তীতে স্কুলে তাদের একটু সহানুভূতির চোখে দেখেন। মানে স্যারের সুনজরে আসাটাই মূল উদ্দেশ্য। প্রস্তাবে সকলে সহমত হল এবং সেইমতো পরের রবিবার সকালে স্যারের বাড়িতে যাওয়া হবে বলে স্থির হল। স্কুলের দুষ্টু ছেলেদের দল…জনা দশেক হবে …. যাদের দেখলে মনে হয় ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানে না …দেখতে একেবারে নিষ্পাপ দেবশিশুদের মতো।

সকাল আটটা নাগাদ পাড়ার মোড়ে একত্রিত হয়ে সকলে রওনা দিল স্যারের বাড়ির দিকে। পৌঁছেও গেল দ্রুত । স্যারের নিজের বাড়ি ….বাড়ির সামনে কিছুটা ফাঁকা জমি …সেখানে ফুলের বাগান…পুরোটাই পাঁচিল দিয়ে ঘেরা… পাঁচিলের একপ্রান্তে বেশ বৃহদাকার দরজা…সিং দরজার মতো আরকি….দরজার ডানপাশে কলিংবেল। বাড়ির সামনে ছাত্ররা পৌঁছেই ভয়ে ভয়ে কলিং বেল টিপল। টিং টং…টিং টং …টিং টং । মিনিট খানেক পরে পরিচারক এসে দরজা খুলে দিল। ছেলেরা ভয়ে ভয়ে একে অপরের দিকে তাকাতে তাকাতে স্যারের বাড়িতে প্রবেশ করল। আর তারপর যা দেখল তাতে কারোরই আর কোনো কথা বলার মতো অবস্থা রইল না । বিস্মিত…হতবাক…স্তম্ভিত হয়ে গেল সকলেই। দেখা গেল স্যার লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে বারান্দার মেঝেতে বটি নিয়ে বসে চশমা চোখে দিয়ে একাগ্রচিত্তে ছোটো ছোটো পুঁটিমাছ কাটছেন….আর স্যারের স্ত্রী কোমরে হাত দিয়ে পাশে দাড়িয়ে মাছ কাটা সম্পর্কিত নানারকম নির্দেশ দিচ্ছেন….আর স্যার একেবারে সুবোধ বালকের মতো বিনা বাক্য ব্যয়ে সেই নির্দেশ পালন করে যাচ্ছেন। মাঝেমাঝে শুধু লুঙ্গির কোনা দিয়ে চোখের জল মুছছেন। দরজার কলিং বেলের আওয়াজ শুনেও বাড়িতে কে এসেছে সেটাও চোখ তুলে দেখছেন না। একমনে গিন্নির নির্দেশ মতো পুঁটি মাছ কাটছেন।
রবিবার সকালের দৃশ্য !!
ভাবা যায় ??

এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখার পরে ছাত্রদের আর স্যারের সাথে কথা বলার মতো মনের অবস্থা রইল না…নিঃশব্দে সকলে স্যারের বাড়ি থেকে বাইরে এসে পরস্পর পরস্পরের দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। কেউ একটি কথাও বলতে পারল না ওই মুহূর্তে। কিন্তু কেউ কোনো কথা না বললেও স্যারের ওই রকম সাংঘাতিক রাগের কারণটা বুঝতে কারোরই আর বিন্দুমাত্র অসুবিধা রইল না । সত্যি সত্যিই তারপর থেকে মনে মনে স্যারের কথা ভেবেই গভীর দুঃখে কষ্টে ওই ছাত্ররা দুষ্টুমিটাই বন্ধ করে দিল ।
সকলেই হয়ে উঠল সুবোধ বালক।। আর সকলেই মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল যে….

” আর যাই হোক, ভবিষ্যতে তারা নিজেরা কোনোভাবেই বেশি রাগী মানুষ হবে না ” ।
কারণ…………
(সেটা কি বলে দেওয়া খুব প্রয়োজন ??)

মনের আয়নায় – দেবাশিস পোদ্দার [Bengali Story]

পঞ্চাশোর্ধ মনসা বাবুর লাইফ স্টাইলটাই আমূল পাল্টে যেতে বসেছে। আজকাল আর রাতে ঘুম আসতে চায় না। ঘুমের ওষুধ খেয়ে অনেক সাধ্যসাধনা করে শেষরাতের দিকে চোখের পাতা দুটো একটু লেগে আসে মাত্র। তাও বা কতক্ষণের জন্যে? সকালে উঠে পড়তেই হয় ছেলে মেয়েদের ডাকে। উঠেই টয়লেটের প্রাত্যহিক কাজকর্ম সেরে প্রথমে বাসন মাজা , ঘর পরিষ্কার করা ,সকালের চা – জল খাবারের বন্দোবস্ত করা ,রান্নার সবকিছু গুছিয়ে দেওয়া ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের পরে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। রান্নাটা এখনো পর্যন্ত গিন্নি ই করে। একটু বেলা করে গিন্নির বিছানা ত্যাগের পরে তার হাতে হাসি হাসি মুখে গরম চায়ের পেয়ালা তুলে দিয়ে তবেই বাজারের ব্যাগ নিয়ে মনসা বাবু বাজারে যান। বাজার থেকে ঘেমে নেয়ে ফিরে এসে ডাইনিং টেবিলে ফ্যানের নীচে বসে জলখাবার খেয়ে তবেই “দৈনিক মাকন্দবাজার ” খুলে বসেন। পত্রিকার শুরু থেকে শেষপর্যন্ত তৈরী করা খবরের গল্পগুলি এমনভাবে পড়েন যাতে যে কেউ কোন খবর জানতে চাইলেই তৎক্ষণাৎ সেটা বলে দিতে পারেন। এ ব্যাপারে মনসা বাবু একেবারে পারফেক্ট। বেলা হয়ে যায়। বাথরুমে পরিবারের সকলের ফেলে রাখা জামাকাপড়গুলিও নির্দ্বিধায় হাসিমুখে গুনগুন করতে কেঁচে রোদে মেলে দেন। তারপর খাওয়া দাওয়া করে নবকল্লোল নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেন। চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে। মনসা বাবু দুপুরের এই মিষ্টি ঘুমের আদর মাখা আহ্বান আর কোনোভাবেই উপেক্ষা করতে পারেন না। ঘুমিয়ে পড়েন পাশবালিশ জড়িয়ে ধরে। বিকেলে না প্রায় সন্ধেবেলা মনসা বাবুর ঘুম ভাঙে গিন্নির ডাকে। হাতমুখ ধুয়ে দুজনে মুখোমুখি বসে দার্জিলিং চা পান করেন দুটি ডাইজেসটিভ্ বিস্কুট সহযোগে। গিন্নি টি.ভি.টা চালিয়ে দেয়…এ চ্যানেল ও চ্যানেল ঘুরিয়ে পছন্দের সিরিয়াল দেখা চলে সারাটা সন্ধ্যে। রাতের খাবার খেতে খুব বেশি দেরি করেন না মনসা বাবু। ডিনার করে বারান্দায় একটু পায়চারি করতে করতেই ঘর থেকে সহধর্মিণীর ডাক আসে। মনসা বাবু সদর দরজা বন্ধ করে ঘুমোতে যান বিছানায়৷ কিন্তু ঘুম আর আসে না। এপাশ ওপাশ করতে থাকেন। নানা চিন্তা মাথায় এসে ভিড় করে। দুশ্চিন্তা ও যে হয় না তা নয়……
মনসা বাবু তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে স্বপ্ন দেখেন …….
” গত দেড় বছর ধরে তো তার কর্মক্ষেত্র মানে ইস্কুলটা বন্ধ ……সত্যি করেই আর যদি না খোলে?
যদি মাসের শেষে মাইনেটা বন্ধ হয়ে যায়….”
এক অজানা ভয়ে শেষরাতে ধড়মড় করে উঠে বসেন তিনি৷
কিন্তু কাউকেই এই ভয়ের কথা ব্যক্ত করতে পারেন না ।
মনসা বাবু টয়লেটে যান। সেখান থেকে ঘুরে এসে পাশবালিশ জড়িয়ে ধরে আবার শুয়ে পড়েন।
দুচোখ খুলে তাকিয়ে থাকেন অন্ধকারের দিকে , ভবিষ্যতের দিকে ॥

সেই একদিন – দেবাশিস পোদ্দার [Bengali Story]

যাব না, যাব না করেও শেষপর্যন্ত একটু দেরি করেই স্কুলে পৌঁছলাম।দেরীতে পৌছলেও ভাগ্যক্রমে লেটমার্কিংটা হল না আজ…হেডমাস্টার কি একটা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাই ঠিক টাইমে লাল কালির দাগটা দিতে ভুলে গেছিলেন। যাক ভালোই হল….এমাসে আরও একদিন দেরি করে স্কুলে আসা যাবে। খুশিই হলাম মনে মনে। রুটিন টুটিন আর মনে রাখতে হয় না । টিচার্স রুমে ঢুকে নিজের চেয়ারে বসে দেখে নিলাম আজকে আমার ক্লাস গুলি। আজ ফার্স্ট পিরিয়ডে আমার ক্লাস নেই। কিন্তু তারপরে সব মিলিয়ে পাঁচটা ক্লাস আজ। টিফিনের আগে তিনটে আর পরে দুটো। আবার মাঝখানে টিফিনের সময় মিড ডে মিল তদারকির ডিউটিও আছে। চেয়ারে বসেই গা টা এলিয়ে দিলাম…..হাতদুটো চেয়ারের হাতলে রেখে একটু চোখদুটো বুজে শরীরটা পুরো ছেড়ে দিলাম। তন্দ্রাটা ভাঙলো ফার্স্ট পিরিয়ডের শেষে তীব্র ঘন্টার শব্দে। সেকেন্ড, থার্ড, ফোর্থ পরপর তিনটে ক্লাস । তারপর আবার সেভেনথ আর এইটথ। ফার্স্ট পিরিয়ডের পরেই টিচার্সরুমে হৈ হৈ। মিন্টু দা চা নিয়ে এসেছে। নিয়েই নিলাম একটা….কাচের ছোট গেলাসে দুধ চা…কড়া মিষ্টি দিয়ে। ইদানীং চায়ের দামটা মিন্টুদা একটাকা বাড়িয়ে দিয়েছে…আমার মতে ৫০ পয়সা বেশি হলে ঠিক ছিল। চা নিয়ে শেষ করতে আরও দশ মিনিট লেগে গেল। সব মাস্টার মশাই দিদিমণিরাই এখনো টিচার্স রুমেই আছে। চা পান আর গল্পগুজব চলছে। দ্বিতীয় পিরিয়ড শুরু হওয়ার প্রায় মিনিট পনের পরে দু একজন চক ডাস্টার নিয়ে ক্লাসের দিকে যাওয়ার উপক্রম করছে। খারাপ দেখায় বলে অগত্যা আমিও উঠে পরলাম….ক্লাসে যাব। ক্লাসটা তিন তলায়। ধীরে ধীরে সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে প্রায় মিনিট কুড়ি পরে ক্লাসে গিয়ে উপস্থিত হলাম। ততক্ষণে ক্লাস মোটামুটি রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। মনিটর দের কথা প্রায় কেউই শুনছে না। আমি যাওয়ায় মনিটর রা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। খাতায় একগাদা দুষ্টু ছেলের নাম আর কে কি দুষ্টুমি করেছে সেটা লিখে আমার কাছে জমা দিল। আমি খুব বেশি দুষ্টুমি কেসগুলোকে কিছুটা বকা ঝকা করে বইটা দিতে বললাম। ৪০ মিনিটের ক্লাসে ততক্ষণে ২৫ মিনিট পার হয়ে গেছে। মনিটর বই দিয়ে গেল আমার সামনে।
তোদের কোন চ্যাপ্টারটা যেন পড়াচ্ছিলাম আমি ?
আজকাল মনেও থাকে না কোথায় কি পড়াচ্ছি।
মনিটর আগের দিনের পড়ানোর জায়গাটা ধরিয়ে দিতে শুরু করলাম সেখান থেকেই। প্রায় ৩০ মিনিট অতিক্রান্ত । বাকি মাত্র ১০ মিনিট।
শুরু করলাম…. তাহলে আজ আমরা ” কার্য -ক্ষমতা ও শক্তি ” নিয়ে আলোচনা করব, কেমন।
খুব সহজ ভাবে তোমাদের বুঝিয়ে দেব বিষয়গুলো। মনোযোগ দিয়ে শোনো তাহলে।
বল প্রয়োগের ফলে যদি সরণ ঘটে তাহলে তখন কার্য হয়েছে বলে মনে করা হয়। বুঝতে পারছো।
তাহলে কার্য বুঝতে হলে বল আর সরণ সম্পর্কে তোমাদের পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। তাইতো?
আচ্ছা পঞ্চা তুমি বলোতো…..বল কাকে বলে ?
বল ….ইংরেজিতে যাকে ফোর্স বলে। বল বলতে তুমি কি বোঝ? পঞ্চা দাড়িয়ে মুখে বিড়বিড় করতে থাকে….বল….বল …স্যার……..
কিন্তু কিছুই বলতে পারে না। আচ্ছা তাহলে সরণ কাকে বলে ? বলতে পারবে ?
এবারে পঞ্চা আর বিড়বিড় ও করতে পারে না….সোজা ওপরে ছাদের দিকে তাকিয়ে মনে করার চেষ্টা করে। কিন্তু শত চেষ্টা তেও কিছুই মনে করতে পারে না।
আমি তখন সকলের উদ্দেশ্যে বলি …কে পারবে বলতে ?….বল কাকে বলে? সরণ কাকে বলে?
কোনো উত্তর আসে না। আমিও ওদের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকি। ক্লাস শেষের ঘন্টা পরে। আমি চক ডাস্টার হাতে নিয়ে উঠে দাড়িয়ে বলি…পরের দিন হবে। তারপর ধীরে ধীরে সেই টিচার্সরুমের দিকে এগিয়ে চলি। পৌঁছে হাত মুখে একটু জল দিয়ে মূত্রত্যাগ করে আমার চেয়ারে এসে বসি। মিন্টুদা আবার এক গ্লাস কড়া মিষ্টি দেওয়া দুধ-চা ধরিয়ে দেয় হাতে। চুক্ চুক্ করে চা টা শেষ করে একটা সিগারেট খাওয়ার জন্য সেই লুক্কায়িত নির্দিষ্ট জায়গাটায় যাই যেখানে দাড়িয়ে বা বসে বা শুয়ে শুয়েও সিগারেট টানলে স্কুলের সি.সি.টিভির ক্যামেরায় সেই ছবি উঠবে না। এটা আমার আবিষ্কার ভেবে গর্ব অনুভব করি।
চা পান করে সুখটান দিতে দিতেই মিনিট পনের খতম। ইতিমধ্যেই গিন্নির একটা ফোন এল। একটু দুরে গিয়ে ফোনটা ধরে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই কথা শেষ করে ফেললাম। হাতে মুখে জল দেওয়া , মূত্রত্যাগ, চা পান, সিগারেট সেবন , গিন্নির সাথে ফোনালাপ….ইত্যাদি কাজে ইতিমধ্যেই মিনিট কুড়ি শেষ। এখনো কুড়ি মিনিট সময় তো আছে।
এবারে আমার ক্লাস অষ্টম শ্রেণীর গ বিভাগে।

বিষয় – মরাল টিচিং বা নীতিশিক্ষা ।

অনিচ্ছা সহকারে আরেকজন সহকর্মীর সাথে খোশগল্প বা বাজারী ভাষায় খিল্লি করতে করতে আমি এগিয়ে চললাম কৈশোরের উর্বর মাটিতে নীতি শিক্ষার চাষ করতে।

পাদুকা পুরাণ – দেবাশিস পোদ্দার [Bengali Story]

ধর্মতলা…..এসপ্ল্যানেড …..লিন্ডসে স্ট্রিট …শ্রীলেদার্স। বহুদিন পরে শনিবারের সন্ধ্যায় শহরের প্রাণকেন্দ্রে। কয়েক হাজার মানুষ পাদুকা কেনার কাজে সক্রিয়।
প্রথমে ডিজাইন, কালার, তারপরে সাইজ । পাদুকা কিন্তু বড়ও না ছোটও না…একদম ঠিকঠাক মাপের হওয়া চাই। কথায় বলে ….খাপে খাপ আবদুল্লার বাপ।
না হলেই গণ্ডগোল। পাদুকা টাইট হলে অবধারিত ফোস্কা আর ঢিলে হলে লেংচে হাঁটা। কাজেই পাদুকার মাপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । জুতো সাম্রাজ্যের মধ্যে গিয়ে মনে পরে গেল এক বৈষয়িক ভদ্রলোকের কথা। তিনি বলতেন…পায়ের মাপ যা ই হোক না কেন, দাম যদি একই হয় তাহলে ওই একই দামে সবচাইতে বড় সাইজের জুতোটাই কেনা উচিত। কারণ পা আস্তে আস্তে যতই বড় হোক না কেন জুতোটা কোনো দিনই টাইট হবে না।

মুদ্রাদোষ – দেবাশিস পোদ্দার [Bengali Story]

কথা বলতে বলতে মাঝেমধ্যেই চোখ পিট পিট করা একজনের মুদ্রাদোষ ছিল । এটা যে সে নিজে থেকে ইচ্ছে করে করত তা নয়। ব্যাপারটা হয়ে যেত তার ইচ্ছে ছাড়াই। বিশেষ করে মহিলাদের সাথে কথা বলতে বলতে যখন ঘটনাটা ঘটত তখন মহিলারা ভাবত লোকটি তাদের চোখ মারছে। আর তখনই উত্তম মধ্যম গালাগালি, অপমান জনক কথাবার্তা, এমনকি মারতেও উদ্যত হত অনেকেই। এ-গল্প শুনেছি বাবার কাছে। বাবার রসবোধ ছিল অসাধারণ।

একটি আর্থিক সংস্থার অফিসের এক অফিসারের মুদ্রাদোষ ছিল, তিনি সবই তিনবার করে না বলে কাজটা সম্পূর্ণভাবে করতে পারতেন না। যেমন ধরুন…দিনের শেষে টাকা মিলিয়ে ক্যাশ তোলার সময় মোট টাকার পরিমাণটা তিনবার তিনবার করে না বললে ঠিক তৃপ্তি পেতেন না । তিন লাখ তেত্রিশ হাজার তিনশ তেত্রিশ, তিন লাখ তেত্রিশ হাজার তিনশ তেত্রিশ, তিন লাখ তেত্রিশ হাজার তিনশ তেত্রিশ …..এইভাবে টাকাটাকে বাঁদিক থেকে ডানদিকে টাকার পরিমাণটা তিনবার বলতে বলতে টাকাটা মিলিয়ে অবশেষে শান্তি পেতেন। এটা শুনেছি ওই অফিসেরই অন্য একজন অফিসারের মুখে। আর সেদিন নিজেরই হল এই রকমের অভিজ্ঞতা ।

জেরক্সের দোকানে গিয়ে বললাম, ভাই কিছু জেরক্স করতে হবে। ছেলেটি বলল, ক হাজার ?
আমি বললাম, না না খুব বেশি না , কিছু বিভিন্ন রকমের ডকুমেন্ট জেরক্স। ছেলেটি বলল , ও তাই? ..চাপ আছে।
জেরক্স চলছে। দু একজন কাস্টমার আসছে। একজন এসে ছেলেটিকে বলল , দাদা জেরক্স করে দিন তো। ছেলেটি বলল , ক হাজার ?
উত্তর এলো, মাত্র এক কপি দাদা। ছেলেটি বলল , ও তাই? …চাপ আছে। তারপর যতবার যত কাষ্টমারই আসে সবাইকেই ওই একই প্রশ্ন এবং একই উত্তর।
প্রথমেই ” ক হাজার ?” তারপরেই ” ও তাই? …চাপ আছে।”
জেরক্সের দোকানদার ছেলেটির যে এটাই মুদ্রাদোষ তা আর বুঝতে বাকি রইল না। শেষে যখন বললাম , ভাই কত হয়েছে আমার ? ছেলেটি বলল , বেশি না আটশ ছেচল্লিশ টাকা … চাপ আছে। আমি বললাম, হাজার টাকা দিলে ব্যালেন্স দিতে পারবে তো ? ছেলেটি বলল , দিন..দেখি হয় কিনা….চাপ আছে।

আমি ভাবছি ছেলেটি এই কথায় কথায় ” চাপ আছে ” মুদ্রাদোষটি নিয়ে ওর প্রিয়তমার সাথে কিভাবে কথা বলে। কোনো অন্তরঙ্গ মুহূর্তে কোন্ প্রশ্নের কোন্ উত্তর ও কিভাবে দেয় আর তার সাথে ওই মোক্ষম কথাটি জুড়ে দেয় ….. ” চাপ আছে” …. সেটাই ভেবে চলেছি।
তবে প্রিয়জনদের কাছে শুনছি যে , ইদানিং নাকি আমারও একটা মুদ্রাদোষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর সেটা নাকি ওই দ্বিতীয়টির মতোই।
সবই তিনবার, তিনবার এবং তিনবার। চারবার হয়ে গেলেই আবার নতুন করে তিনবার মানে …..তিনের গুণিতক ছয়বার অথবা নয়বার অথবা বারোবার ……….
ইত্যাদি, ইত্যাদি, ইত্যাদি।
এই রে …ইত্যাদিটাও তিনবার হয়ে গেল যে।
কি কান্ড বলুন দেখি !!

হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি – দেবাশিস পোদ্দার [Bengali Story]

আমাদের পড়াতেন শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন কিম্বা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস। আগে কাজ করতেন গুমা পৃথিবা হাইস্কুলে। পরে এলেন কল্যানগড় বিদ্যামন্দিরে। স্মরজিৎ দত্ত, বাড়ি হাবড়া প্রফুল্ল নগরে। পরে স্যারকে যখন সহকর্মী হিসেবে পেলাম তখনই স্যারের সাথে সম্যক পরিচয় ঘটল।আমাকে খুবই স্নেহ করতেন আর ভরসাও করতেন খুব।তখন স্কুলে মাইনে হত ক্যাশ টাকায়।ট্রেজারি থেকে ব্যাঙ্কে অ্যাডভাইস গেলে স্কুলের সব কর্মীর মোট মাইনের টাকাটা একটা চেক মারফত ব্যাঙ্ক থেকে তুলে আনতে হত। কল্যানগড় বিদ্যামন্দিরের স্যালারি অ্যাকাউন্ট ছিল তখন হাবরা ইউনাইটেড ব্যাঙ্কে।স্কুল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে তো হবেই।প্রত্যেক মাসে এই বিশেষ সাংঘাতিক কাজটির গুরুদায়িত্ব পড়ত স্মরজিৎ বাবুর ওপরে।প্রায় চার লক্ষ টাকা কাপড়ের সাইড ব্যাগে করে নিয়ে আসতেন স্যার ।প্রত্যেক মাসেই মাইনের টাকা আনবার তিন চার জনের দলে স্যার আমাকে নিশ্চিত ভাবেই রাখতেন।আমিও খুশি।

একঘেয়ে ক্লাস নেওয়া থেকে কিঞ্চিৎ মুক্তি। হাবরা ষ্টেশন রোডে কোনো একটা দোকানে স্যার পরিচিত বন্ধুদের সাথে সন্ধেবেলায় বসতেন।গল্পগুজব করতেন ।ফলে ওই এলাকার দুষ্ট প্রকৃতির লোকজন সম্পর্কে স্যারের একটা পরিষ্কার ধারনা ছিল।সেই জন্যেই হয়তো স্কুল কর্তৃপক্ষ স্যারকে মাইনের টাকা ব্যাঙ্ক থেকে আনার জন্য তৈরী করা দলের অধিনায়ক করে পাঠাতেন।মাইনের টাকাগুলো নিয়ে যখন স্কুলে ফিরতাম তখন মনে হত যেন একটা যুদ্ধ জয় করে ফিরেছি।স্কুলে না ফেরা অবধি একটা চাপা টেনশন কিন্তু কাজ করত সবার মধ্যেই ।স্কুলে ফিরে এলাম আর টেনশন রিলিজ।

পরীক্ষার দিনগুলিতে স্যার থাকতেন ফ্লাইং ডিউটিতে।তা সে যেকোনো পরীক্ষাই হোক না কেন।স্মরজিৎ বাবুর সামনে নকল করে কেউ কখনো পার পায়নি। সারাটা স্কুল চষে বেড়াতেন আর অদ্ভুত কায়দায় নকল ধরতেন।আমরা অবাক হয়ে যেতাম।কি করে পারেন স্যার ? বুঝে উঠতে পারতাম না কিছুতেই। হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষার সময় তো দুষ্ট ছেলেদের অবস্থা রীতিমতো ত্রাহি মধুসূদন করে ছাড়তেন।

এরকমই একবার স্যারের কোনো একটা রুমে ডিউটি পড়েছে।পাঁচ মেশালি ছাত্র।টুকিটাকি নকল বের করে অতি সন্তর্পণে লিখতে শুরুও করেছে কেউ কেউ।স্যার সামনে প্ল্যাটফর্মের ওপরে রাখা চেয়ারে বসে খবরের কাগজ পরছেন ।কাগজটা উঁচু করে ধরা রয়েছে স্যারের হাতে।

কোনো ছাত্রকেই স্যার দেখতে পাচ্ছেন না পেপার পড়ার জন্যে।পরীক্ষার্থীরাও স্যারের মুখ দেখতে পাচ্ছে না।মহা আনন্দে দুষ্ট ছেলেরা শুরু করে দিয়েছে তাদের শিল্পকর্ম। হঠাৎ দেখি স্যার চেয়ার ছেড়ে উঠলেন আর কয়েকটি ছেলের কাছে গিয়ে ডাইরেক্ট নকল লেখা কাগজগুলি তুলে নিলেন।ছেলেরা বিস্মিত ।কি করে স্যার বুঝতে পারলেন যে ওদের কাছেই নকল রয়েছে? স্যারের সামনে তো খবরের কাগজ ধরা রয়েছে।স্যার দেখলেনটা কি করে? স্যার কি কোনো যাদুবিদ্যা জানেন? এতো অসম্ভব কান্ড !!

পরে শুনেছিলাম ওটা ছিল স্যারের নকল ধরার অন্যতম বিশেষ স্টাইল।ওই খবরের কাগজ টাতে স্যার আগে থেকেই একটা ছোট্ট ফুটো করে রাখতেন।আর ওই ফুটো দিয়েই দেখতেন কে কি করছে।পুরো পরীক্ষার হলেই নজর রাখতেন ওই কাগজের ফুটো দিয়ে।
কেউ কোনো অসদুপায় অবলম্বন করলেই কপাৎ করে ধরতেন।
এটাও তো একটা শিল্পকলা ।
এটাও আজ বিরল।

দেবাশিস পোদ্দার | Debasis Poddar

Bengali Story 2023 | শুভদীপ দত্ত প্রামানিক | অণুগল্পগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Story | কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা | গল্পগুচ্ছ | 2022

Top Bengali Article 2022 | বসন্ত উৎসব | প্রবন্ধ ২০২২

Is it possible to remove tattoo | ট্যাটু রিমুভ কি সম্ভব? | 2023

মুদ্রাদোষ | হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি | গল্পগুচ্ছ | মুদ্রাদোষের দোষ কাটান | মুদ্রাদোষ কী | কথার মুদ্রাদোষ | মুদ্রাদোষ বৃত্তান্ত | রকমারি গল্প | অর্থনীতির মুদ্রাদোষ | মুদ্রাদোষ দূর করবেন যেভাবে | পরিচ্ছন্নতার মুদ্রাদোষ | ভাষার মুদ্রাদোষ ও বিকার | নিজস্ব মুদ্রাদোষ | আমাদের মুদ্রাদোষ | মুদ্রাদোষ – কিশোর আলো | কোন ক্রিকেটারের কী মুদ্রাদোষ | মুদ্রাদোষের দোষ কাটানোর উপায় | হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর | ছোট বেলার হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি | ফেলে আসা দিনগুলি | ডাংগুলি খেলার দিনগুলি | হারিয়ে যাওয়া গানের খাতা | বিপক্ষের দিনগুলি | বকুলফুলের দিনগুলি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২৩ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন | মনের আয়নায় | সেই একদিন | পাদুকা পুরান | মনের আয়নায় মনকে দেখুন | মুখই মনের আয়না | মনের আয়না কবিতা | মনের আয়না কবিতা ঘৃনা | আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব | ঘর সাজুক আয়নায় | সেই মেয়েটি একদিন | একদিন স্বপ্নের দিন | পাদুকা পুরাণ | পাদুকা পুরান | একটি পাদুকা ব্যবসা | দেশীয় পাদুকা ব্যবসায় মন্দা | ঘন্টি মে কিতনা রুপিয়া | রাগের কারণ | রাগের কারণ কী | অল্পতেই বেশি রাগ কেন হয় | অল্পতেই বেশি রাগ | অতিরিক্ত রাগ | অল্পতেই রেগে যাওয়ার কারণ | অতিরিক্ত রাগের কুফল | যাদের রাগ বেশি | অতিরিক্ত রাগ কমানোর ঔষধ | যে কথায় কথায় রাগ করে | অতিরিক্ত রাগ কমানোর উপায় | অল্পতেই রেগে যাওয়া | যে সহজে রেগে যায় | অস্বাভাবিক রাগের কারণ | মানুষের দ্রুত রাগের পেছনে রহস্য | রাগের কারণ ও করণীয় | রাগ মানুষকে ধ্বংস করে | কথায় কথায় রেগে যায় সন্তান | আপনার রাগ থেরাপিস্ট | রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে | রাগ কমানোর ৫ টি সহজ পদ্ধতি | রাগের উপকারীতা

bengali story new | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali story books for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali story books pdf | bengali story for kids | bengali story reading | short story | short story analysis | short story characteristics | short story competition | short bengali story definition | short story english | short story for kids | short bengali story generator | bengali story 2023 | short story ideas | short story length | long story short | long story short meaning | long bengali story | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2022 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | poetry competition crossword | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | bengali story writing | bengali story dictation | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali story news| article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment