Best Modern Bengali Poetry Online | Bangla Kobita

Sharing Is Caring:

Modern Bengali Poetry Online – Chinmoy K Bose

মনকষ্ট – চিন্ময় বসু

ওর পক্ষে আমাকে মাফ করা সম্ভব
হবে আর, কে জানে।
এত রকমের আশা বিচূর্ণ হবার পরেও
পথের কাঙাল, এত সুদিন আর হবে,
কবে হবে। সাফল্যের আতিশয্য
ঘুম এনে দেবে
মারাত্মক অযোগ্যতার লজ্জা কাটিয়ে?

হে আরাম, একটি টগর, প্রকৃতি,
আমার সাধের বেড়াজাল,
জীবন হীরে আমার,
অলৌকিকের পসরা,
মানবিক আবেদনে আসল
স্বাধীনতা ফিরবে না!

রক্তচোষা বাদুড় আমাদের
পরাক্রম করে,
আমরা উচ্ছিষ্ট নিয়ে মাতোয়ারা হই।
নিশ্চুপের ঘেরাটোপে আমরা
সমুদ্রের লোনা হাওয়া
হন্তারক জলের প্রলেপেও
যন্ত্রণায় থাকি।
নৈঃশব্দ্যের জোয়ার ওঠে
অট্টহাসে।

একাঙ্ক – চিন্ময় বসু

ভগ্ন দালানে থামের আড়ালে
শুন্য, ঘুমের মাঝেতে দাঁড়ালে।
তোমার নামের অক্ষরে অক্ষরে
ভিড় করে আসে স্মরণের ছায়াপথ;
পার হয়ে যাই গহীন মনের
ঘুমহীন অলিগলি।

তোমার চুলের আদি রসিকতা
চকচক করে, বিদ্যুৎ খেলে,
ভয় লাগে
কেঁপে কেঁপে যায়
প্রিয় হননের আদরের হিংস্রতায়
নিশুত রাতের গভীর কক্ষগুলি।

ঘুমের কালো স্রোতের ধারা
ধ্বংসের মাঝখানে
বয়ে চলে যায়।
শূন্যতা থেকে তোমায় সৃষ্টি করে।

তখনও মাটিতে তিক্ত বুনোট,
বিস্মৃত পথ, ভিজে বালিয়াড়ি,
অন্ধকারের রাত। সাগরের ডাক।
অন্ধ সাগর, সাগর তো রাতচরা,
বালুচরে চরে,
কেশর উঠলে ফুলে
উঠে, পড়ে, আগে বেড়ে,
ক্রুদ্ধ ঝাঁপিয়ে
হৃদয়ে আঘাত করে।

না বলা কথা – চিন্ময় বসু

লিখিত পাতা থেকে
অক্ষরগুলি উঠে আসে।
গুহার ভিতরের জমে ওঠা
পাথরের নির্মাণের মত প্রাকৃত,
খোদাই করা এক একটি অক্ষর
যেন চুঁইয়ে হিমায়িত প্রতিধ্বনি জমে
পাথুরে খাতায়।

খাতার পাতার মত সাদা
অন্তঃকরণে অক্ষরগুলি উঠে দাঁড়ায়
নৈঃশব্দ্য থেকে আর্তনাদ পর্যন্ত
ব্যাপ্ত সরু দড়ির ওপর
শক্ত ও কড়া কথার কিনারায়
তারা হাঁটে চলে।
আমার কানের গোপন আশ্রয়ে
তারা ধরা দেয়।
এরা যা বলে তা বলে না।
যা বলে: তার থেকে কি করে বলা যাবে
তারা কি বলেনি।
হয়তো বলল যীশু,
শোনালো তা পশু।

দূরাগত ছায়াপথে কোনো গ্রহের
গিরি কন্দরে এক আর্ত চিৎকার উঠলো,
তবে কি করে বোঝা যাবে শান্ত নীরবতা।
বলার কথার সামনে ও পিছনে
তাই আরো কিছু কথা।

উন্মত্ততার কটু স্বাদে কষ্ট হয়,
তাও শ্মশানের বুনো গাছে ফুল ফোটে
বীজ কোন মিছে কথা বলে না কখনো।
নীরব বানী থেকে অশ্রুসিক্ত ক্রন্দন ধ্বনি সব কিছু
কানের প্রকোষ্ঠে জমা থাকে।
সরলতত্ত্ব হল এই যে
কথা বলতে চাইলে নীরবতা চাই।

শহরের বৃদ্ধি – চিন্ময় বসু

মাটিরঙ্গা হেলমেট আর ওভারঅল পরা
মিস্ত্রির দল মাটি আর খানাখন্দ
থেকে উঠে আসে।
এক অন্তর্বর্তী সময় এবং বন্ধ্যা,
কারণ গ্রাম নয়,
শহরের বাইরে বলে শহর ও নয়।
নির্মাণ কোম্পানির ক্রেনগুলি
দানব ডাইনোসরের মতো
দিকচক্রবালে ধূসর আলোয়
মাথা তোলে, তারা একলাফে
শহরের মাথা ছুঁতে চায়।
কিন্তু বিগলিত ঘড়িগুলি
তাতে রাজি নয়। সময়ের মত
নেই তাই।

কংক্রিট পাইপেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে
শীতল জিভ দিয়ে
আলো চেটে খায়।
পুরোনো খামার বাড়ি জুড়ে
ভাঙ্গা চোরা গাড়ীদের মেলা।
চাঁদের কলঙ্ক-এর মতো তীক্ষ্ণ
পাথরের ছায়ার গভীরে
নির্মাণের বিষন্ন ধূসর বিকেল স্থির হয়।
উপনগরীর বিস্তৃতি ক্রমবর্ধমান।

নুতন এ জনপদ বিষাক্ত
অভিশাপে জুডাসের তিরিশটি
মুদ্রায় কেনা মনে হয়,
যীশুর বিয়োগ যেন বিষাদের
ধুলোর আস্তরে বিছিয়ে থাকে।
ভিক্ষুর কবরের মতো
অনাদরে বেড়ে ওঠে আমাদের
জীবনের মরণের
তিনহাত বাসগৃহগুলি।

সূর্যাস্তে – চিন্ময় বসু

তাই ভাবি আমার অন্তরে
এই হৃদয়ের একটু একটু করে
নিঃশেষ হওয়া যদি,
ও সাগর, তোমার মত হয়।
ঐশ্বরিক সূর্য যেমন রং
তোমার বুকে ছড়িয়ে রেখে যায়,
যেমন মুছে যায়,
তার জীবনের আলোর ফুল মালায়,
মিলায়ে যায়।

কিন্তু কি নির্মমতা এই চলে যাওয়ায়,
সবার, অনন্তের যাত্রীদের, এই স্ফীত ব্যথায়,
এই এত রঙের বিচ্ছুরণ শেষে,
যেন ভুল বসন্তের ভোরের শরীরের
সব রং শুষে নেওয়া।

সমুদ্র, তুমি নির্জন দীর্ঘায়িত অপরাহ্নে
আমার হৃদয় নিয়ে যাও।
যদি তোমার যন্ত্রণার নিশ্চুপ, কোমল ও
বিস্তৃত রাত্রির অবগাহনের পারে
কোনো কাজে আসে সে হৃদয়।

যদি সে কখনো ভাবে তার দিশাহীন
রক্তিম ধমনী কম্পনের কটু বিশালতায়
বিস্মৃতির কি সুষম রঙ্গীন বাহার।

ভুল স্বর্গ, ভ্রষ্ট ত্রাতা – চিন্ময় বসু

দিগন্তের পানে? না দিকচক্রবালে,
তাকিয়ে দেখুন,
এক ভ্রষ্ট মহান পুরুষ উপস্থিত।

যাকে জেনেছি বাল্যকালে তিনি?
পূর্ব পুরুষের শিক্ষায় মেতে আছি
পারস্পরিক যুদ্ধে ও বোঝাপড়ায়, ক্ষণস্থায়ী
উৎপাদনশীলতা ও ক্রয়ক্ষমতার ভুল আন্দাজে।
কিন্তু খেটে কুল না পেলে
প্রয়োজনের বাসস্থানের যোগাড়ও নাহলে
আমাদের বিত্তের সংস্কৃতি অজানায় মুখ লুকায়।

আমরা যোগাযোগ ও সত্তাবিহীন হয়ে পড়ি।
অথচ ক্রিমি লেয়ার, উচ্চস্তর,
অপর দল, যারা বিশ্বাস অটুট রাখে,
তাদের উত্তরসূরিদের মত
সান্ত্বনা, উপদেশ দেয়
অধস্তনের কানে কানে।
আমরা অনুভব করি অপারগতা,
যখন আমাদের প্রচেষ্টা, পরিবর্তনে অসমর্থ;
অথচ নিয়ম, সিস্টেম চলতেই থাকে।
তখনই ভ্রষ্ট উদ্ধারকের জমি তৈরি হয়, হাওয়া ওঠে।
তার আবির্ভাবে সুবিন্যস্ত হয়
আমাদের হৃত ও অন্ধ বিশ্বাস,
অন্ধবিশ্বাসে ভর করে তিনি
প্রথমেই দ্রুত, যা পরিষ্কার প্রতিভাত
সেদিকেই ফের অঙ্গুলিহেলন করেন।
জ্ঞান পাই: খাদ্যের নাকি অভাব নেই,
আমরা অপচয় করি,
ফলে মৃত্যু আমাদের বিনষ্ট করে।
আর ওদিকে আমাদের ধনসম্পদ
গোপন পুঁজির পথ ধরে।

মুমূর্ষু গ্রহে ধনীদের জন্য রকেট ছোটে।
নেতারা তো কিছুই করেন না, শুধুমাত্র
শাসনের সময়কাল শেষ হলে
পরের জনের ঘাড়ে বন্দুক সঁপে দেন।
সমস্বরে গেয়ে ওঠেন তারা নির্দোষ।
ও ভ্রষ্ট দেবতা। আমাদের শক্তির স্বপ্ন দেখাও
যোগদানের, আত্মসমর্পণের,এক হওয়ার, যুদ্ধ জয়ের,
সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার;
যখন হতাশায়, আমাদের ক্লান্ত নেতিয়ে পড়া বোধ
আর জাগে না।
প্রশ্নবিহীন আমরা বিলিয়ে যাই,
স্বপ্নে ভাবি দুঃখ যাবে, ক্ষুধা যাবে,
পিছড়ে বর্গ এগিয়ে যাবে, অন্ধ অতীত থেকে
গৌরবান্বিত ভবিষ্যৎ খুঁজে পাওয়া যাবে।
এখুনি। মিথ্যে ত্রাণকর্তা বিশ্বাসীদের শক্তি যোগাবে
জয়ের, শত্রু পতনের, এখুনি। এসো যোগ দাও
এই বিপ্লবে বন্দুকে ভরে নাও গুলি ও বারুদ।
দিগন্তে রাখো চোখ!

ভ্রষ্ট মুক্তিদাতা! তিনি এসেছেন।

হতাশার কাল – চিন্ময় বসু

কোন কিছুতেই আর বিশ্বাস নেই। আমি সত্যিই হতাশ।
রাজনৈতিক নেতাদের ওপর থেকে ভরসা উঠে গেছে।
তাদের বেশীরভাগ কথাই বিশ্বাস হয় না।
হয় তারা আমাদের অসুবিধা বোঝে না
অথবা গ্রাহ্য করে না।
বঞ্চিতদের কাজেই যদি না লাগে তবে,
এই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, জ্ঞান ও সম্পদ কিসের দরকারে।

এই গভীর অনিচ্ছার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ কোথায়?
আমরা খালি চলচ্চিত্র আর
সস্তা গিমিক দ্বারা প্রভাবিত হই।
অপ্রত্যক্ষ সজাগতায় আমরা নরকে পতিত হতে থাকি।
কে উঠে দাঁড়াবে, কে দেখাবে পথ?

ঠিকই যে বিপ্লবের কোনো সোজা রাস্তা নেই।
কোন চিহ্নিত শত্রু, শস্ত্র বা সমাধান নেই।
মতবাদের চলমান ভয়াবহ দ্বন্দ্ব
প্রমাণ করে যে আমাদের নতুন করে
চিন্তাভাবনা, কাজকর্ম এমনকি
খাওয়াদাওয়া সবই শিখতে হবে।

আমাদের বিপুল তথাকথিত সংস্কৃতির চাপ
আমাদের শেখায় কিভাবে খুলেআম আমরা
যা কিছু কুৎসিত, অশ্লীল, বীভৎস,
নকলিবাজি, লোভ লালসা,
অপচয় ও বাড়াবাড়ি তারই অনুসরণ করছি
বুদ্ধিমত্তা, সততা ও আত্মিক গভীরতাকে
বিসর্জন দিয়ে।

স্বাধীনভাবে ও বিনা মূল্যে জন্মগ্রহণ করেই
আমরা সবকিছুর জন্য,
বেঁচে থাকার জন্য ব্যয় করে চলি।
যে হাত আমাদের বন্দী করে তাকে ভর করে
আমরা ভালোবাসা খুঁজে চলি, আর
আমাদের কারাগার সজ্জিত করাতেই
সবচেয়ে বেশি মনোনিবেশ আমাদের,
এতে জোটে পুরস্কার, আর তারই করি পূজা।

ভুলে যাই সবাইয়ের মুক্তি না হলে কেউ মুক্ত নয়।
সবচেয়ে কঠিন এই কাজ যা আমরা অবজ্ঞা করে চলি
আমরা হতাশা সরিয়ে সামান্য,
সাধারণ কথোপকথনে মজে থাকি,
আর ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে যেতে থাকি।

পারিপার্শ্বিক দুনিয়া ধ্বংস প্রাপ্ত হবার আগেই আমাদেরকে আমাদের নিজেদের
জীবনের লেখক হতেই হবে।
এ হতাশার যুগ, কিন্তু আমরা
একে ভাঙ্গবই, ভেদ করবই,
তোমায় নাড়া দিতে চাইবো বারবার

আমার সময় শেষ হওয়ার আগেই।

অগম্য – চিন্ময় বসু

তোমার চোখের নীরবতা সমস্ত অভিজ্ঞতাকে সানন্দে অতিক্রম করে আমায় এক অগম্য স্থানে নিয়ে যায়। তোমার দুর্বলতম ভঙ্গিমা আমায় আচ্ছন্ন করে, অবরুদ্ধ, হয়তো বা আমার স্পর্শ করার ক্ষমতাই নেই, হয়তো এত নিকট। অপান্তে চাহনি আমার পণ ভেঙ্গে দেয়। উন্মুক্ত করে বসন্ত সমাগমে পাপড়ির মত একে একে মুক্ত হলে কি জাদু, কি রহস্য। নতুন গোলাপের জীবন সুন্দরের বন্দী দশা, সহসা যেমন ফুলের হৃদয়ে বরফের পতনের মত নিঃশব্দে।

বোধের অতীত তোমার তীব্র ভঙ্গুরতা, তার রোষ যেন নতুন রঙিন প্রদেশ ঘুরে মৃত্যু আনে প্রতি শ্বাসে চিরদিন। আমিতো কিছুই বুঝিনি; কি যে আছে আর কি নেই। শুধু অন্তঃস্থলে তোমার চোখের ভাষা সমস্ত গোলাপেরও বেশি করে লেখা থাকে নীরব নিঝুম। এত ছোট ও কোমল বুঝি নিঃশব্দ বারিপাতও নয়।

আমাদের প্রশ্ন করো না – চিন্ময় বসু

আমাদের সে কথাটি কি
তা জানতে চেয়ো না।
আমাদের অবয়বহীন
আত্মা সব রকমে সেটিই
জানতে চায়,
আবার আগুন আখরে
অস্বীকার করে চলে।

সে কথাটি ধূলিধূসর
মাঠের মাঝখানটিতে
উজ্জ্বল বুনো ফুলের
বনে হারিয়ে যায়।

হায় যে মানুষ আজ পথে নামে
সামর্থ্য আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে
পরস্পরের ভরসায়,
নিজের হাড় ভাঙ্গা
খাটুনির দিনগুলি বিবশ কাটায়।
নীরস বাড়িঘরে তার শরীরের
কালো ছায়া পড়ে;
তা সে দেখেও দেখে না
উদাসীন ঘাম তার কপালে গড়ায়।
কোথায় যে দিন চলে যায়।

আমার কাছে তোমার
বিশ্ব উন্মোচনের চাবি তো
জোটেনি।
শুধু শুষ্ক শীর্ণ মুচড়ে যাওয়া
উদ্ভিদ শাখার মতন
কটি অক্ষর পড়ে আছে।

শুধু এটুকুই জানি আজ
যে আমি
কি নই আর কি চাইনি।

কে নেই কোথায় – চিন্ময় বসু

গহন অরণ্য।
যত দূরে চাই,
তাকাই
শুধু মহীরুহ।

ঋজু ও লতানে
উদ্ভিদ, যদিও ততটা
সবুজ না।
আমার চার দিকে শুধু গাছ
আর গাছ।

জনমানব শূন্য;
জানি না কোথায়
চলে গেছি।

চিত্রকর – চিন্ময় বসু

ছবিখানি কত ভালো
এঁকেছ গো আমার,
জীবনের অস্পষ্ট এই
দৃশ্যের ভিতরে।

এত ভালো আঁক তুমি
কি বলবো
একেবারে সত্যির মত
দেখায় সেই ছবিটি আমার।
চোখ যেন জ্বলে যায়।

আঃ; আর একবার আঁকো তুমি,
খুব বাজে ভাবে এঁকে দাও প্লীজ,
যেন বোঝা যায় যে মিথ্যে,
একেবারে মিথ্যে ছিলাম আমি।।
সত্যিকারের এক
আনকোরা মিথ্যার মতো।

একটা বয়সের পর – চিন্ময় বসু

আমরা সত্য স্বীকার করবো ভেবেছিলাম,
আমাদের পাপ; কিন্তু কার কাছে।
কেউ নেই শুনবার।
আকাশের সাদা মেঘ অস্বীকার করে। হাওয়া, তাকে যেতে হবে বহুদূর যেতে হবে,
বহু বহু সাগরের পার।
পশু পাখীর কোনো কৌতূহল নেই।
কুকুর হতাশ হয় সে শুধু আদেশের
অপেক্ষায় থাকে।
বিড়াল তো বড়ই অসৎ। তার ঘুম চলে আসে।
কাছের মানুষ যারা
তারাও এত দিন আগেকার কথা নিয়ে
মাথাব্যথা করে না কখনো।
ইয়ার দোস্ত যারা একসাথে নেশা করে,
চা কফি খায়, একটু বিরক্ত হলেই
খেলা ভেঙে দেয়।
পাশ করা লোক রেখে এসব শোনানো বিড়ম্বনা।
চার্চের কাছে শুনেছি স্বীকারোক্তি বাক্স রাখা আছে। সেখানেই ধর যাওয়া গেল।
কিন্তু কিসের স্বীকার, কি বলা হবে।
যে আমার জানা ছিল আমি
বয়সে নবীন, পারদর্শী সুঠাম সুন্দর।
কিন্তু সে কোথায়?
এখন তো সব ছেড়ে
আমাদের জায়গায় এক বৃদ্ধ কুনোব্যাং
মোটা শক্ত চোখের পলক সর্বদা আধখোলা
দেখতেও পায় পরিষ্কার চোখে।
ওটাই তো আমি। অবশেষে বলে ওঠে,
বুক ভরা এক বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

কর্মজীবনের উপকন্ঠে – চিন্ময় বসু

কাজের মাঝেই আমাদের সবুজ বনানীর প্রতি তীব্র আকর্ষণ অনুভূত হয়। কারণ, বন্যতা বিশুদ্ধ, শুধুমাত্র কোথাও কোথাও সভ্যতার ক্ষীণ টাওয়ার দ্বারা বিদ্ধ।

বিশ্রামের চাঁদ তার ভরবেগ নিয়ে কাজের গ্রহকে প্রদক্ষিণ করে, এভাবেই চলে তারা। আর আমাদের বাড়ী ফেরার পথে পায়ের তলার মাটি কান খাড়া করে, ঘাসের ফলা দিয়ে ভূগর্ভ আমাদের গল্প পড়ে নেয়।

কাজের মাঝেই ভিতরের শান্তি মাথাচাড়া দেয়! কুয়াশা ঘেরা বন্য দ্বীপের মধ্যেকার খাড়ির মত যেখানে, হঠাৎ হঠাৎ কোথা থেকে ডিঙি নৌকো সাঁত করে ভেসে যায় কারখানার পেছনের দিকে, ময়লা ভবঘুরে।

রবিবারে ধূসর জলা জমির ওপর গড়ে ওঠা রং না হওয়া নতুন বাড়ীর পাশ দিয়ে কখনো হেঁটে গেলে অর্ধ সমাপ্ত বাড়ীর গা দরজা জানালা দেখলে স্নানরত মানুষের ত্বকের কথা মনে আসে।

বাল্বের পাশে নভেম্বরের রিমঝিম নিশুতি রাত, হালকা আলোয় চোখ সয়ে গেলে দেখা যায় হালি ঘাসের ওপর শামুক চরে আর অগণিত তারা মত ঘাসফুল।

যা নিয়ে বেঁচে আছি – চিন্ময় বসু

যা নিয়ে বেঁচে আছি
সেটাই কিছু নয়
তার কোনো দাম নেই।
তবে কেন সেই নিয়ে থাকি!

আমরা তো একঘেয়েমিতে,
ভয়ে পড়ে, নয়তো টাকার জন্যে
অবিরত এইসব করে যাই।
আর নয়তো আমাদের মাথার দোষ,
ফাটা কপাল।

আমাদের বৃত্তটি খুব ছোট।
মোমের বাতির আলোর মত
বেশি দৌড় নেই।
এত ছোট যে সহ্য হয় না
অস্থির লাগে।
কত কি কল্পনা করি
পরিকল্পনা করি আর
কেন্দ্র হারিয়ে যায়
খেই হারিয়ে যায়।
সলতে ছাড়া, ওহ,
শুধুই মোম যেন।

আর আগের, ছোটবেলার সেই
ভালো ভালো নীতি কথা গুলো?
যেন ভুতুড়ে শহরের
বিজ্ঞাপনের মত জ্বলে, নেভে।
শুধুই স্মৃতি জেগে ওঠে।

প্রচার পত্র – চিন্ময় বসু

খোলসের ভিতরে নীরব ক্রোধের বানী খোদাই হয়।
ফলের গাছ ফলবতী, কোকিল ডাকছে, মাদকতা
ছড়িয়ে আছে আকাশে বাতাসে। কিন্তু এক নীরব
রাগের শ্লোগান লেখা হয় অন্ধ গ্যারেজে।

আমরা সব দেখি আবার দেখি না।
অপরাধের অন্ধকার জগতের যত জীবের
হাতের বাঁক এড়িয়ে সোজা দেখার পেরিস্কোপে।
এখন যুদ্ধ প্রতিটি মিনিটে। কখনো ঝলসানো সূর্য এসে দাঁড়ায় হাসপাতাল চত্বরে, আমরা অসুস্থ,
দাঁড়িয়ে শেষের স্টেশন।

আমরা জ্যান্ত পেরেক, সমাজের বাড়ি খাই অহর্নিশ।
এক দিন খুলে যাবে বন্ধন, সব ছেড়ে যাবে।
মরণের হাওয়া আসে, উড়ন্ত ডানার তলায়
আরো লঘু, মৃদু হব, বন্য হব এখনের চেয়ে,
নির্নিমেষ উড়ে যাবো অনন্ত তারার উঠোনে।

রোগ ভোগ – চিন্ময় বসু

শুধু তুমি কাছে কাছে থাক
শুধু তুমি রবিকর, রবি, সূর্য,
তুমি বন্ধু আমার।
পোষা কুকুরের মত বিশ্বস্ত
আলোর কুকুর, চেটে দাও
বিছানার সাদা চাদর আর
আমার হাত ওঠেনা
তোমার সোনালী
চুলের ক্লান্তিতে লুটিয়ে।

কি সব সময় চলে যাচ্ছে।
আরো। আরো?

আমি সাড়া দিই, মৃদু হাসি।
শিশুর মত প্রশ্রয়ে
আমাকেই ছেড়ে দেই
তোমায় চুষে নিতে
চেটে নিতে সরল ও
ভদ্র বন্ধু সূর্য আমার।

হঠাৎ, সূর্য, তুমি আমার
ব্যর্থতাগুলির ভার নিলে
আর মলিন বিষাদ গরমের
ঘোলাটে বিকেলে তুমি
অসহায় বেদনায় চেঁচিয়ে জ্বলে
ছিটকে, তারপর সেই নিশ্চুপ
ছায়ারা ঘনিয়ে আসে
ডোবার পালায়
প্রাকৃতিক বন্যতায়
ভয় করে, ভয়।

মরণ আমার নতুন প্রেমিকা – চিন্ময় বসু

তাকে নিয়ে ঘর করি যদি এবার তোমাকে ছেড়ে গিয়ে। তোমায় নিয়ে যাবো তোমার যুবক প্রেমিকের কাছে তার অনেক ক্ষমতা তোমার ঠোঁটে শক্তিশালী চুম্বন আঁকলে তার দাঁত মুখ নিকট শরীরের শোভা শ্রোণিদেশে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। তোমার অপ্রস্তুত ভালোবাসা তির্যক হাসি ছুঁয়ে দেহ বিভঙ্গ। এ কালেতে আমি আর কিবা দিতে পারি একমুঠো ক্রিমিকীট ছাড়া পুরানো এ শবের ভিতরে। তোমার যৌবন শরীরে আজও আগ্রহ দোলা দেবে মাথায় চুলের বাহার সতেজ তার চোখে হাসি পড়ে ফেলে। আমি আর কিবা দিতে পারি এক ইঞ্চি শূন্যতা দেব হৃদয়ের গভীর গহনে বাৎসরিক উপহার ভেবে বৎসরে বৎসরে।

কঠিন – চিন্ময় বসু

ভীরুতা আর থর থর
কাঁপুনি নিয়ে ভাবি
আমার এই জীবন
সাফল্যে পরিপূর্ণ হতো,
যদি সর্বসমক্ষে হাজির হয়ে
এক স্বীকারোক্তি
করতে পারতাম যে
এ জীবন, এ সময়
ডাহা মিথ্যের ওপর দাঁড়িয়ে।

নিন্দে তুমি যত খুশী কর
কেউ তোমায় কিছু বলবে না
কিন্তু শুদ্ধ, পবিত্র ও
দয়ালু বাক্য প্রয়োগ মানা।
এর শাস্তি অতি ভয়ানক।

এসকল কথা উচ্চারণ
করলে মানুষ নিজেকেই
পাগল, ভ্রষ্ট ভাবে।

হতাশার কালো রং – চিন্ময় বসু

এই পৃথিবী আকাশ বাতাস
এর জয়গান যদি গাই
ধুসর সন্দেহপ্রবণ এক বিষণ্ণ বিকেলে
তবে কি তা সত্যি হবে?
আমার এ কালো হতাশার মাঝে,
দুঃখের জীবনে ভান করে যদি
আনন্দ গান শুনি বেমানান
তবে কি তা সত্যি হবে?
বয়স তো আগেই রোদনকে
অর্থহীন করে গেছে।

কে দেবে এ প্রশ্নের উত্তর
আমি সাহসী না ভীরু কাপুরুষ?

স্বর্ণাক্ষর – চিন্ময় বসু

কখনো রাতের তীব্র অন্তর্দৃষ্টি
তন্দ্রা দূর করে,
জেগে উঠি প্রিয় শব্দের আকর্ষণে।

লিখে রাখি ত্বরিতে
নিকটবর্তী কোন কাগজ,
বা এমনকি খবরের কাগজের
মার্জিনের সাদা অংশে।
তখন সেই শব্দের
কি মহিমা!
আমার প্রাণ ভরে আসে
বুক গুরু গুরু করে
শরীর চমকিত হয়
চোখে যেন জল এসে যায়।

কিন্তু সকালে ওই একই শব্দ
ব্যঞ্জনা হারায়, বিস্বাদ ম্যাড়ম্যাড়ে
হয়ে যেন জবুথুবু
জিভ থেকে গড়িয়ে পড়ে যায়।
বহু কষ্টে নির্মাণ যেন
উঠে আসে, মিইয়ে যায়।

তাই মনে হয় যেন শব্দ নয়
অতীত রাত্রির কণা
পুরানো স্মৃতির বেহিসেবী
টুকরোর ভিড়!

আগামী – চিন্ময় বসু

আমার ভগ্ন রাত্রিগুলি
যদি আর একবার
ফিরে পেতাম,
আমার আয়না দেওয়া
প্রতিবিম্বিত শয়নকক্ষ,
আমার গোপন জীবন।

এখন কি নির্জনতা এখানে
খাঁ খাঁ সুনসান চারিদিক,
আর কেউ নেই অবশিষ্ট
নিষ্পেষণ করার জন্য,
অত্যাচার করার মত।

এখন আমার সম্পূর্ণ
নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব
চাই সবার উপরে।

এখন আমার কাছে
থাকো সোনা,
এই আদেশ আমার।

ফ্যামিলি অ্যালবাম – চিন্ময় বসু

প্রণয়ঘটিত জটিলতা বা তার জেরে মৃত্যু
এ বাড়ীর দস্তুর নয়।
এখানে প্রেম পরকীয়া নেই, জোলো নেহাতই।
রসালো কাহিনীর আস্বাদ নেই বা
কোর্ট কাছারির ঝামেলা।
বিরহ জনিত যক্ষ্মা বা মারাত্মক ব্যাধি
এদের মৃত্যুর কারণ ছিল না।

নেহাত বার্ধক্যজনিত কারণ।
গৃহস্থ লোক এরা ধনী প্রতিবেশী নিয়ে সুখে ছিল।
কোন শয়তানীর ক্রুর চক্ষু
কোন রহস্য, লাশ, আততায়ী,
বাগানে রক্তমাখা ছুরি বা পোশাক,
কোন ব্যভিচার, নরকের মতো কুৎসিত প্রণালী
ছিল না। কোনো গল্প ছিল না যার
পরিণামে মৃত্যু বলা যায়।
হয়তো মেয়েটি বাড়ীর মানা না শুনে
রাতের আসরে শুধু করেছিল দেরী।
এর বেশি নয়। এক ভাই শুধু মিলিটারি চাকরিতে
প্রাণ গেল মাথায় গুলি খেয়ে, এটুকুই!
তাদের কারোরই হায় মহান জীবন দানের
গৌরব ছিল না।
তবুও সে বিষাদের বিবর্ণ অ্যালবাম ভরে

স্তিমিত জীবনে সেপিয়া রং মেখে তারা
অবশ্য অতীত থেকে
হাসিমুখে নীরবে হাত নাড়ে।

দ্রুতবেগে সময়ের নাগাল পেরিয়ে তারা
সকলেই আজ পরপারে;
কেউ কোন সাধারণ রোগে
আর কেউ বা শুধু অল্প জ্বরে।

পরিত্রাণ – চিন্ময় বসু

প্রতিটি ক্ষণের এক মরণ পেরিয়ে
যাহাদের ত্রস্ত ঘোরাঘুরি
বুড়ো এই গ্রহের খোলসে
ব্যতিক্রমী ঘটনায় বারংবার
একঘেয়েমির বেঁচে থাকা
কেবলই সার্থক হয়
অহরহ ভাগ্যের খাতিরে।

এ বাঁচা তো বাঁচা নয়
অশেষের সীমারেখা তলে
মর্মর মিনার পার করে
খোঁড়া পায়ে হেঁটে চলে দ্বিতীয় শৈশব।

পরিচিত সৌভাগ্যের সমৃদ্ধ জীবনে
পাঁচালীর একটানা সুরে কেবলই
দুরের কাছের, বৃষ্টি ও রোদের
বনভূমি মরুভূমি জুড়ে
উথাল পাতাল আখ্যানে
ধরাতল জুড়ে ঝঙ্কৃত এই বানী
উজ্জ্বল উদ্ধারে শোনে
তোমার ও বুক জুড়ে
আমার এ হৃদয়ের ধ্বনি।

আরশি – চিন্ময় বসু

এক একটি রাত
শূন্য ফাঁপা সময়, সাক্ষীহীন,
নখ ও নৈঃশব্দ্যের রাত,
অসীম এক নোনাডাঙার মত,
দিনের মধ্যকার কামনার দ্বীপ।
কেউ নেই সে রাতে
শুধু নির্জনতা বেড়ে বেড়ে যায়।

রাত্রির জোয়ারের ওষ্ঠ থেকে
তীব্র ইচ্ছে থেকে
প্রবালের, ক্ষুধাতৃষ্ণার অলস তীরে পৌঁছে
বর্ষায় খাড়া ফুটে থাকা ফুলের মতন অনিদ্রা
আগুন নেকলেস যেন রাতের গ্রীবায়।
এক আমি আরেক আমি।
উদাসীন আয়নার ভিতরে
পর পর আমির সারি।
আর আমার মুখোশ।

প্রতারক অবুঝ আরশির সামনে
আমার চিতা জ্বলে,
আমার ছাই-এর শ্বাস ওঠে।
আমি অবিরত পুড়ে চলি।
আলো ঝলকানি, ধূমজাল তরবারি,
আমি আমার মৃতদেহকেই
ধোঁকা দিই, ক্ষত ও রক্তের অভিনয়।

আমার অবশিষ্ট আমিটুকু মুক্তি চায়,
শীতল প্রচ্ছায়া, নীরবতা, শান্তি।
এক শেষ অনিবার্য মিথ্যায়
জ্বলে পুড়ে খাক হতে চায়।
মুখোশ থেকে অন্য মুখোশ,
তার মধ্যের শেষতম আমি
নিদারুণ প্রশ্ন রাখে।

আমি ঋণের দায়ে ডুবতে বসি;
অচ্ছুৎ, ছুঁই না নিজেকে।

তোমার চোখ – চিন্ময় বসু

তোমার চোখ অশ্রু ও অনুপ্রভার আবাস।
এক কথা বলা নীরবতা।
বাতাসহীন ঝড়, নিস্তরঙ্গ সমুদ্র,
খাঁচার পাখী, ঘুমন্ত শ্বাপদ,
সত্যের মত অসৎ পোখরাজ।
বনের মাঝে পরিষ্কার মাঠ
যেখানে গাছের মাথায়
আলোর গান শোনা যায়,খেলা দেখা যায়,
ভোরের হঠাৎ করে তীরভূমি।
ঝুড়ি ভরা পাকা ফল।
জীবনের মিথ্যা, পৃথিবীর আরশি,
নিষ্ক্রমণের দরজা,
দুপুরের সাগরের শ্লথ স্রোত।
অনন্তের পলক,
মরা গাং।

অনৃত কথন – চিন্ময় বসু

ভাঙ্গা দালানের নীচে
শূন্যতা ও ঘুমের মাঝখানে
তোমার নামের অক্ষরেরা
আমার অনিদ্রার প্রহর
পার হয়।

চুলের বিভায় কালবৈশাখী
বিদ্যুৎ গতি
রাতের বিপরীতে কখনো
কম্পমান মিষ্টি হিংস্রতায়।

ঘুমের অন্ধকার স্রোত বয়
ধ্বংসের ভিতরে
শূন্যের নির্মাণ হয়: ভেজা রাত
আর তীর উপকূল
তিক্ত বিনুনি বিস্মৃতি।
অন্ধ রাতচরা সমুদ্র
বাহু ম্যালে, আছড়ায়।

চিন্ময় বসু | Chinmoy K Bose

Best Online Bangla Choto Golpo 2023 | Jayanta Chattopadhyay

Best Online Bangla Kobita Collection 2023 | Tanushri Giri

Secrets of Lord Jagannath | Best Article 2023 | Avijit Pal

108 Famous Lord Shiva Temples | Anirban Saha

Shabdodweep Web Magazine | High Challenger | Shabdodweep Founder | Sabuj Basinda | Bengali Poetry | Bangla kobita | Modern Bengali Poetry Online 2023 | Poetry Collection | Book Fair 2024 | bengali poetry | bengali poetry books | Modern Bengali Poetry Online pdf | Bengali Poem Lines for Caption | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | Modern Bengali Poetry Online Ebook | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2023 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | Bengali Poem Lines for Caption in pdf | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | Best Bengali Poetry Folder | Best Bengali Poetry Folder 2023 | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2023 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | Bengali Poem Lines for Caption crossword | writing competition | writing competition malaysia | Bengali Poem Lines for Caption in mp3 | writing competition hong kong | writing competition game | Best Bengali Poetry Folder pdf | Trending Modern Bengali Poetry Online | Modern Bengali Poetry Online – video | Shabdodweep Writer | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | English Literature | Modern Bengali Poetry Online examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | Modern Bengali Poetry Online Ranking | positive Best Bangla Kobita Collection | Bengali Poem Lines for Caption about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | freedom poem | sad poetry about life | Natun Bangla Kabita 2023 | Kobita Bangla Lyrics 2023 book | New Modern Bengali Poetry Online | Writer – Modern Bengali Poetry Online | Top Writer – Natun Bangla Kabita 2023 | Top poet – Natun Bangla Kabita 2023 | Poet list – Kobita Bangla Lyrics 2023 | Archive – Modern Bengali Poetry Online | Bangla Full Kobita | Online Full Kobita Bangla 2023 | Full Bangla Kobita PDF | New Bangla Kabita Collection | Shabdodweep Online Poetry Story | Poetry Video Collection | Audio Poetry Collection | Bangla Kobitar Collection in mp3 | Bangla Kobitar collection in pdf | Indian Bengali poetry store | Bangla Kobita Archive | All best bengali poetry | Indian Modern Bengali Poetry Online | Best Modern Bengali Poetry Online | Best Collection of Bengali Poetry in pdf | Bengali Poetry Libray in pdf | Autograph of Bengali Poetry | India’s Best Bengali Writer | Shabdodweep Full Bengali Poetry Book | Bengali Poetry Book in Google Bookstore | Google Bengali Poetry Book | Shabdodweep World Web Magazine | Shabdodweep International Magazine | Top Modern Bengali Poetry Online | Bangla Kobita in Live | Live collection Bengali Poetry | Bengali Poetry Recitation Studio | Sabuj Basinda Studio for Bengali Poetry | Bangla Kobita Sankalan 2023 | Shabdodweep Kabita Sankalan | New Bengali Poetry Memory | History of Bengali Poetry | History of Bangla Kobita | Documentary film of Bengali Poetry | Youtube Poetry Video | Best Bangla Kobitar Live Video | Live Video Shabdodweep | Bengali to English Poetry | English to Bengali Poetry | Bengali Literature | Full Bengali Life of Poetry | Bangla Kobita Ghar | Online Live Bangla Kobita | New Bengali Poetry House | Full Bengali Poetry Collections PDF | Library of Bangla Kobita | Bengali Poetry and Story | Bengali Poetry Writing Competition | World Record of Bengali Poetry Writing | Peaceful Poetry | Online Modern Bengali Poetry Online Selection

Leave a Comment