New Novel Updates 2023 | অনুভূতির বান্দরবান (পর্ব ৩) | অতনু দাশ গুপ্ত

Sharing Is Caring:
Novel Updates

অনুভূতির বান্দরবান (পর্ব ৩) – অতনু দাশ গুপ্ত [Novel Updates]

গাছে হলুদ রঙের ছোট ছোট দাগ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে একটা গাছে, এটাকে বলে সিগাটোগা রোগ। বিভিন্ন গাছের প্রয়োজনীয় সার, কিভাবে এরা বেড়ে উঠে, কোন সময়ে কার ফলন বাড়ে, কোন কলা কোথায় ব্যবহার হয় বেশি, এসব বলতে লাগলেন উনি। চলতে চলতে কথাগুলো মনোমুগ্ধের মতো শুনছিলো ওরা। মনে হয়েছিল এ বাগানটা ওনার নিজের। পরে উনি জানালেন ছোটবেলা থেকেই উনি ঠাকুর দার গড়ে তোলা বাগানের দেখা শোনা করেন নিয়মিত। বেশ বড়সড় ওই জায়গায় কলার পাশাপাশি হরেক রকমের শাক, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপি, টমেটো, কুমড়ো গাছও রয়েছে। আর নিজের বাড়ির আশেপাশে লাগিয়েছেন প্রচুর ফুলের গাছ। তখন আদিত্যও কিছুটা গল্প জুড়ে দিলো নিজের বাবার করা সখের বাগানে কাজ করার সুবাদে। কোন রকমের সার ব্যবহার করে ওরা এসব নিয়ে কথা বলতে লাগলো ও। মূলত আদিত্যের বাবা প্রাকৃতিক সারে ব্যবহারের উপর বেশি জোর দেন। যেমন- ব্যবহ্রত চা পাতা, পূজোয় পরে ফেলে দেওয়া ফুলগুলো, ফলের বাকল এসব জিনিস ওরা সবসময় গাছের গোড়ায় দেয় যা পরবর্তীতে সার হিসেবে দারুণ কাজ করছে। উনিও বললেন যতটা পারা যায় প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করতে। কথা বলতে বলতে ওরা একটা পাহাড়ি ঝর্ণার শব্দ শুনতে পেল। খুব বড়সড় বলা যায় না। আর মূলত শীতের শেষদিকের সময় হওয়ায় ঝর্ণার পানি অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। উপর থেকে বেয়ে আসছে একটা ক্ষীণপ্রায় হয়ে আসা স্রোত আর নিচে বেশ কয়েকটা ভাগে ভাগ হয়ে বয়ে চলেছে পানির ধারা। তবে এর বর্তমান অবস্থা দেখে আদিত্য বিড়বিড় করে বলে উঠলো, “জয় গঙ্গে!!” জাহ্নবী দেবীর কৃপা ছাড়া এর বহমান স্রোতধারা দেখতে পাওয়া দুষ্কর মনে হচ্ছে। অসংখ্য পাথরের গা বেয়ে বয়ে উপর থেকে উত্তাল তরঙ্গের বেগে নিচে নেমে আসা একরাশ জলরাশীর পতনের শব্দে মনপ্রাণ আন্দোলিত হচ্ছে! এমনটাই হবে পাহাড়ি জলকন্যার চিরযৌবনা রূপরাশির আবেদন। এর দৃশ্যের অবতারণা হবে বর্ষায়! কাজেই “দাঁড়াও পথিক, তিষ্ঠ বর্ষাকাল অবধি!”

ডালিয়া আর আলপনা নিজেদের প্যান্ট গুটিয়ে নেমে পড়েছে ওই জলধারায় সিক্ত হতে। ডালিয়া সবাইকে ডাকলো পানিতে নেমে ওকে সঙ্গ দিতে। তবে ছেলেদের দলের কেউ ওদিকে খুব একটা ভ্রুক্ষেপ করতে দেখা গেল না। দোদুল রূপকের ফোন নিয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত। রূপক, আদিত্য আর ড্রাইভার কাকু বামদিকের পথ ধরে কথা বলতে বলতে এগিয়ে গেছে। রূপক অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে লাগলো,

রূপক – আচ্ছা কাকু, কোন সময় আসলে এখানে ঝর্ণায় ডুব দেওয়ার মতো পানি থাকবে??
কাকু – জুনের শেষ থেকে শুরু হয়ে জুলাইয়ের মাঝামাঝি বলা যায়।
রূপক- দেখি, তখন যদি আসা যায়.. কি আদিত্য? আসবে না কি??
আদিত্য – মনে হয় না, ভাই। এর আগেই ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।
রূপক – কাকু, আপনি এখানে কত বছর বয়স থেকে আসছেন? মানে কত ছোটকাল থেকে এ জায়গার
সাথে আপনার পরিচয়??
কাকু – তা সঠিক মনে নেই। ধরে নাও যখন স্কুলেও ভর্তি হইনি, তখন থেকেই আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে ঘুরতে আসতাম এখানে।
রূপক – আপনার সামনে আর কি কি ধরণের সবজি চাষের ইচ্ছে আছে??
কাকু – ধরো, আলুর চাষ বিশেষ করে মিষ্টি আলু, কাঁচামরিচ আর ক্যাপসিকাম। আপাতত এগুলোকে ভাবছি, তারপর আরও দেখি কি কি ফলানো যায়?

দোদুলের ছবি তোলার হাত বেশ ঋদ্ধ বলতে হব। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে এত সুন্দর ছবি তুলেছে ও। দেখে মনে হয় এগুলোকে কোন প্রতিযোগিতায় পাঠিয়ে দেওয়া চলে অনায়াসেই। ওদিকে বালিকাদ্বয় জলে আধাসিক্ত হয়ে উঠে পাথরের উপর বসে আছে। দুজনেই কিছুটা জলকেলি করেছে! আলপনার অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও ডালিয়া ওকে ভিজিয়ে দিয়েছে অনেকখানি। সিক্ত শরীরে নারীর রূপ-লাবণ্যের আবেদন আরও বেড়ে যায়। যে দিকটায় আদিত্যরা গিয়েছিল তার অপর পাশে একটা ঢুঁ মারতে পা চালাল ও। এ পাশটা কিছুটা কদাকার, এদিকে পানির প্রবাহ স্রোত হারিয়েছে। যেখানটায় পানি গড়িয়ে পড়ছে, সেই পথের আশেপাশের পানি নোংরা হয়ে আছে। কয়েকটা ভাঙা ঝুড়ির মত জিনিস পড়ে আছে। এগুলো যারা চা- বাগানে চা-পাতা তুলেন, তাদের মাথার সাথে কাপড় দিয়ে অদ্ভুত কৌশলে বাঁধা থাকে। কিভাবে ওরা এটাকে সামলান তার এককথায় জবাব হয়তো “মানুষ অভ্যাসের দাস”। আদিত্য যখন এপাশটায় যখন এসব উদ্ভট জিনিস দেখতে ব্যস্ত, অন্যদিকে দোদুল, রূপক আর আলপনা তিনজনে একটা ছোট্ট খাদের মতো কি যেন একটা দেখে সেটার গভীরতা মাপতে ব্যস্ত হয়ে উঠলো! ওই খাদটায় অবশ্যই উপর থেকে পানি দেখে সন্তুষ্টির ঢেকুর না তুলে রূপক একটা সরু ভাঙা কঞ্চি নিয়ে ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে অধৈর্য হয়ে বললো, “আমার চৌদ্দপুরুষ আসলেও এর গভীরতা মাপা যাবে না!” 

বাকি দুইজন কয়েকটা ইট নিয়ে ওখানে ছুড়ে দেখলো,ব্যস! আর কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর ওরা সবাই উপরের দিকে উঠে এলো। ওখান থেকে আরও কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ওরা একটা স্হানীয় বাজার দেখলো যেখানে কয়েকজন মহিলা মিলে নকশিকাঁথা, হাতপাখা,শাল, চাদর, কাপড়ের ব্যাগ, আরও কাপড়ের তৈরি নানান জিনিসপত্র বিক্রি করছেন। নকশা দেখে থাকার মতো – কিছু শুধু নানান রঙের কারুকাজ দিয়ে করা হয়েছে, অনেকগুলোতে কোন ডিজাইন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। আলপনার একটা শাল খুব পছন্দ হয়েছে – ম্যাজেন্ডা রঙের মাঝখানের জায়গায় কালো রঙের ব্লক করা, এট উপরের দিকে হলদে কমলা রঙের আড়ি কাটা নকশা করা রয়েছে। বনিবনা চলেছে কিছুক্ষণ, পরে মেনে নিলেন ওই মহিলা। বাকিদের মধ্যে রূপক একটা চাদর নিল, তাও হলদে রঙের। হয়তো ওর বিশেষ দূর্বলতা আছে এতে। তবে এসবের দিকে ভ্রুক্ষেপহীন ছিল ডালিয়া। ও উপরে উঠে আসার পর থেকেই নাদুসনুদুস কুকুরের ছানা নিয়ে ব্যস্ত! আলপনা বেশ কয়েকবার ওকে বললো, “তুই বাসায় নিয়ে যাচ্ছিস না কেন? এতই দরদ যখন!” আদিত্য কয়েকটা পাউরুটির টুকরো নিয়ে দু’জন মিলে খাওয়াতে লাগলো ওগুলোকে। ওরা এদিকেই ব্যস্ত ছিল। ডালিয়া সাদা রঙের বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগলো। আদিত্যের মনে হতে লাগলো এগুলো ওরই পোষা। ওখানে পাপ্পি ছিল মোট ছয়টি। কাজেই এভাবে একটাকে নিয়ে যাওয়াটা ওদের কাছে ভালো লাগলো না। হয়তো ওদের মা আশপাশে কোথাও আছে।

এরপর ওরা বাসার দিকে রওয়ানা হলো। ফিরে যাওয়ার পথেও সেই বিপদসংকুল পথ ধরেই চলছিল গাড়ি। রাস্তার ওই আঁকাবাকা পথগুলোকে ওদের মনে আতংকে রেখাপাত আর করতে পারলো না। বরং ওরা মুদ্ধ হয়ে দেখতে লাগলো! এক ভয়ংকর সুন্দরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পথে গায়ে কাটা দিচ্ছে আদিত্যের! মাঝে মধ্যে গাড়ি টার্নিং পয়েন্টে মনে হচ্ছে চাকা বোধ হয় হরকে গেলো! বেশ একটা রোলার কোস্টারের সাঁই করে ওপর থেকে নিচে নেমে আসার সময় যেমনটা লাগে তেমন। আপনি জানেন নিচেই যাবেন, মহাকাশে নিশ্চয়ই উড়াল দেবেন না। কিন্তু তারপরও বেশ একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করে! মনে হচ্ছে ডালিয়া এখনও ওই সাদা পাপ্পির মায়া ছাড়তে পারেনি। বেশ অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে। আলপনা আরও কয়েকটা কাঠের পেন স্ট্যান্ডও নিয়েছিল। ওগুলো নেড়ে চেড়ে দেখছে। দোদুল ফোনে ফটো এডিটিং এ ব্যস্ত। আদিত্য বাসায় ফোন করে মায়ের সাথে কথা বলে নিল। অনেকক্ষণ আগেই ভেবেছিল, বেশ দেরীই হয়ে গেল। আলপনা তো লাঞ্চ করেই আন্টিকে ফোন করেছিল। দূর থেকে পাহাড়ের গায়ে দেখা গাছগুলোকে দেখে মনে হচ্ছিল, মায়ের গায়ে যেমন ছোট্ট শিশু অবোধে খেলে। হয়তো কষ্ট হলেও মা কিছুই বলেন না, বেশ যত্নে পরম আদরে আগলে রাখেন। সেরকম গাছগুলোরও মা মনে হচ্ছে পাহাড়। কি সুন্দর করে গাছগুলো কোথাও সারিবদ্ধভাবে, কোথাও এলোমেলোভাবে গজিয়ে উঠেছে পাহাড়ের গায়ে। বিশাল সবুজ পাহাড়ের গায়ে অবোধ শিশুর ন্যায় খেলায় মত্ত রয়েছে অবারিত বৃক্ষরাজী।

অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta

New Bengali Novel 2023 | খুঁজে ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৯) | উপন্যাস

Suryamukhi | সূর্যমুখী | শওকত নূর | Best 2023

New Bengali Story 2023 | সন্দেহের কাঁটা | কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

Dwiragaman | দ্বিরাগমন | পুনম মায়মুনী | 2023

Novel Updates | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | Novel Updates for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali Novel Updates pdf | bengali story for kids | bengali Novel Updates reading | short story | bengali novel updates analysis | bengali novel updates characteristics | bengali novel updates competition | short story definition | short story english | short story for kids | short story generator | short story ideas | bengali novel updates length | long story short | bengali novel updates meaning | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | bengali novel updates competition india | story competition | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing cmpetitions 2022 | writing competitions uk | bengali novel updates writing | bangla news article | bangla article rewriter | article writing | bengali novel updates ai | bengali novel updates app | article writing book | bengali novel updates bot | bengali novel updates description | bengali novel updates example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali novel updates format | bengali novel updates generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | bengali novel updates on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | bengali novel updates practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | bengali novel updates trends 2023 | bengali novel updates topics 2023 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment