New Novel Updates 2023 | অনুভূতির বান্দরবান (পর্ব ২) | অতনু দাশ গুপ্ত

Sharing Is Caring:
Novel Updates

অনুভূতির বান্দরবান (পর্ব ২) – অতনু দাশ গুপ্ত [Novel Updates]

এদের চারজনের পরিচিত হওয়ার ব্যাপারটা বেশ সাদাসিধেই। দোদুল আর আলপনাদের ক্লাসে কিছুটা দেরীতেই জয়েন করেছিল ডালিয়া। কোচিংয়ের ক্লাসে পড়াশোনায় পিছিয়ে ছিল প্রথম থেকেই। তখন পরিচয় হয় রূপকের সাথে। আর রূপক, দোদুল ছোটকাল থেকেই একসাথেই বড় হয়েছে – ক্লাস ফাইভ আর এইটের পরীক্ষা, এরপর এস. এস. সি। দুজনেই কমার্স নিয়ে পড়েছে। কাজেই সবকিছুতেই বোঝাপড়া ঠিকঠাক। আলপনার সাথে পরিচয় হয় দোদুলের। পরবর্তীতে চারজনের গ্রুপ হয়ে গেল। ওদিকে আলপনা আর আদিত্যের পরিচয় হয়তো ক্লাস ওয়ান থেকেই। একে অন্যকে ক্লাসে দেখলেও কথাবার্তা ওভাবে না হওয়ায় পরিচিত হওয়া হয়নি। পরে আদিত্যের বাবা ক্রিস্টমাস পার্টিতে নেমন্তন্ন পান ওখানকার স্থানীয় হাসপাতালের অন্যান্য ডাক্তার বাবুদের মতো। পার্টিতে গিয়ে একে অন্যকে দেখে চিনতে পেরে কথা বলা শুরু হয় ওদের। আলপনা আর্টস নিয়ে পড়েছে আর আদিত্য কমার্স নিয়ে। দু’জনের মিল ছিল অন্য সবকিছুতেই।

বাসের ঝাঁকুনিতে আদিত্যের অবস্থা রফাদফা! পুরো পথ জুড়েই অসহ্য ধুলোবালির প্রকোপ। সবকিছু মিলিয়ে শিরে সংক্রান্তি। বাস থেকে নেমে কোথাও একটু হাত- মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে নিতে পারলে মন্দ হতো না। যাত্রা সকাল নয়টা নাগাদ শুরু করে ওরা বান্দরবান বাস স্টেশনে এসে পৌঁছল তখন দুপুর একটা বাজবে বলে। আদিত্য বাস থেকে নেমেই বাকিদের কিছুটা অবাক করে দিয়ে হাত-মুখে পানির ঝাপটা দিতে ছুটলো কাছের দোকানে। ওখান থেকে কাজ সেরে একটা পকেট টিস্যু আর ওইদিনের পেপার নিয়ে নিল। অন্যেরা না বুঝলেও রূপক ঠিকই বুঝতে পেরেছে আদিত্যের হঠাৎ ছুটে যাওয়ার কারণ।

আদিত্য দোকান থেকে ফেরার পর ও বললো, ” কি খবর? এবার শান্তি?? আর আমাদের জন্য কিছু আনলে না যে??”

আদিত্য ঠিক বুঝতে না পেরে আবার দোকানের পথেই হাঁটতে শুরু করলে আলপনা বাঁধা দিয়ে বললো, “তুমি মজা করাও বোঝো না??”

ওদিকে ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকা দোদুল বাস থেকে নেমেই ডালিয়ার সাথে কথা সেরে নিয়েছে। বাসায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওরা রিকশায় আসছে। দুটো রিকশা ঠিক করলো। এখানকার রাস্তা-ঘাট দেখে মনেই হবে না লিচু বাগান থেকে এখানে আসার মাঝের রাস্তায় কি কান্ডটা-ই না ঘটে গেছে। বলতে গেলে এক প্রকার মৃত্যু উপত্যকার মধ্য দিয়ে আসতে হয়েছে ওদের। রিকশায় উঠে আদিত্য রূপককে জিজ্ঞেস করে বসলো, ” তোমার কেমন লাগলো বাস জার্নি?? “

রূপক – হুম… ভালো ও না, খারাপ ও না! চলে.. এক রকম। রাস্তাটা বেশি খারাপ, নইলে আশপাশের সবকিছুই দেখার মতো ছিল। আমরা তো ঢাকার ইট কাঠের দালান কোঠা দেখতে দেখতে হাঁপিয়ে উঠেছি। এখানকার চারপাশ আমাদের কাছে স্বর্গ বলতে পারো!”

একটা জায়গায় গিয়ে বেশ ঢালু রাস্তা হওয়ায় রিকশাওয়ালা রিকশা থেকে নেমে টানতে শুরু করতেই ওরা দুজনেই রিকশা থেকে নেমে গেল। এবার রিকশা চালক নিজ গতিতে টানতে লাগলো ত্রিচক্র যান। পেছনে তাকিয়ে ওরা দেখলো দোদুল আর আলপনাও নেমে পড়েছে। আলপনার ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করছে দু’জন।

এরপর রাস্তা সমতলে ফিরে এলে ওরা চড়ে বসলো। সবমিলিয়ে মিনিট বিশের রাস্তা। বাড়ির গেইটে দাঁড়িয়ে আছে ডালিয়া। কালো রঙের ফ্রক পড়েছে, উপরে একটা হাল্কা মেজেন্টা রঙের সোয়েটার। হাত নেড়ে সবাইকে ইশারা করছে।

রিকশা থেকে ভাড়া মেটানোর সময় আদিত্য দেখলো ঘড়ির কাটায় একটা পঁয়ত্রিশ। সবার খিধে পেয়েছে বলা বাহুল্য। প্রথম দেখাতেই আদিত্যের ডালিয়াকে বেশ মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে মনে হচ্ছে। ওরা রাস্তার বিভিন্ন জায়গার ভোগান্তির কথা বলতে লাগলো। মূল প্রবেশপথ থেকে ভেতরের দিকে যেতে পাশাপাশি বেশ কয়েকটা ঘর ওদের। বেশ বড়সড় ঘর বলতে হবে। আদিত্যের কাছে কিছুটা নতুন অভিজ্ঞতা। কারণ ও বেড়ে হয়েছে ছোটখাটো সাইজের সরকারি কোয়ার্টারে। এগুলো বেশ লাগছে ওর। দোতলা বাড়ি। নিচে ঢুকে ড্রয়িং রুমেই বসার সোফাতেই বসে পড়লো সবাই। আলপনা আর ডেইজি ভেতরের ঘরে চলে গেল। বেশ ছিমছাম একটা রুম। দেয়ালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পোস্টারে ছেয়ে গেছে দেয়াল। সোফার সাথে রাখা টেবিলে একটা ফুলদানিতে সাজানো প্লাস্টিকের সূর্যমুখী ফুল। কাছে না গেলে বোঝা মুশকিল ওটা কিসের বানানো। ঘরের দেয়ালে টিয়া রঙের কালার করা হয়েছে। আর এ রুম থেকে দুটো রুমে যাওয়া যাবে। পর্দাগুলো বোটল গ্রিন রঙের। এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়ার পথের উপরে দিকের দেয়ালে টাঙানো প্রভু যিশু খ্রিস্টের ছবি। ক্রিস্টমাসের সময় করা ঘরে আয়োজিত অনুষ্ঠানের যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, তা এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

একটা ছোট্ট সাইজের সো-কেসের উপরে রাখা টিভি। টিভিতে চ্যানেল চেঞ্জ করতে ব্যস্ত রূপক আর যথারীতি ফোনে ডুপ দিয়েছে দোদুল। ওকে মনে মনে “মুঠোফোন ম্যান” নাম দিয়েছে আদিত্য! ডালিয়া ওর মা আর ঠাকুমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো সবার। এরপর নিয়ে গেল নিজের ঘরে। ডানদিকের দেয়াল ঘেঁষে ওর বড়সড় সাইজের খাট। মনে হয় দুজনের খাট। একটা ভিন্ন রকমের পাশ বালিশ। কম্পিউটার টেবিলে সাউণ্ড সিস্টেম সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে ডালিয়া। কাঠের কলম দানি, উপরের তাকে পড়ার বইপত্রও রয়েছে। ওর রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় গিয়ে অপর পাশের রুমের দরজাটা দেখিয়ে বললো, এটা ডিউক দার রুম। সঙ্গে সঙ্গে আলপনার চোখের দৃষ্টি কেমন যেন আরও উৎসুক হয়ে উঠলো। কিন্তু সে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে না আশেপাশে। টেবিলের সামনের দিকের দরজা দিয়ে বারান্দায় যাওয়ার রাস্তা। ওখানে বিভিন্ন ধরণের ফুলের গাছ লাগিয়েছে ও। তন্মধ্যে পাঁচ রকমের শুধুই জবা ফুল আছে। লাল, হলদে, সাদা, কমলা আর ঝুমকো জবা। ডালিয়ার মা সবাইকে দুপুরের খাবার খেতে ডাকলেন। সাদামাটা ঘরোয়া আয়োজন। বেশ ভালো লাগলো আদিত্যের। মিষ্টি কুমড়োর চচ্চড়ি, শাক ভাজা, ডাল, রুই মাছের তরকারি আর ডিমভর্তা। সবাই খেতে বসে নানা খোশ গল্পে মেতে রইলো। ওদের খাওয়া শেষ হওয়ার আগেই ডিউকদার বাইকের শব্দ শুনে ডালিয়া বলে উঠলো, “মা,দাদা এসেছে?”

অবশেষে ঘরে এসে ঢুকলেন আলপনার বহু প্রতীক্ষিত ডিউক দাদা। কালো রঙের একটা হুডি, কালো জিন্স, আঙ্গুলে ঘুরিয়ে যাচ্ছেন মোটরসাইকেলের চাবির গোছা বাকের ভাইয়ের মতো! তবে উনার চেহারার আদল কিছুটা ভিন্ন। ছাপোষা যে কোন পাহাড়ি চাকমা বা মারমা ছেলেদের মতো নয়! চুলগুলো সোনালী রঙের আর গৌর চেহারার ব্যক্তির হদিস এ তল্লাটে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। আদিত্য কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেলেও পরে ডালিয়াদের পুরো পরিবারের একটা ফটোগ্রাফ সব প্রশ্নের উত্তর দেয়। আংকেল ইউরোপীয়ান। আর ডিউক দাদা বাংলা বলেন না। ওরা সবাই ইংরেজিতেই কথোপকথন করছিল। দাদা ইংরেজি বলেন ছোটকাল থেকেই দার্জিলিং এ থাকার কারণে। সবচেয়ে বেশি উৎসুক হয়ে কথা বলে যাচ্ছিল রূপক আর আলপনার ব্যগ্রতায় কেমন যেন ভাটা পড়েছে। ওকে শুধুই শ্রোতার ভূমিকায় দেখে বেশ আশ্চর্য হয়েছে আদিত্য! সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে টিভির রুমে গিয়ে বসলো। ডিউকদা খেতে বসলেন মাসি আর ঠাকুমা সহ। ওদিকে ডালিয়া, আলপনা আর আদিত্যদের সবার জন্য বাইরে এসে হাজির একটা সাদা রঙের মাইক্রোবাস। ডালিয়া গাড়ির খুব কাছে গিয়ে ড্রাইভারকে কাকু কাকু বলে ডাকতে লাগলো। দোদুলকে ওর ফোন প্রীতি নিয়ে খোটা দিয়ে যাচ্ছে রূপক। ওর ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেছে। এখন বাইরে যাওয়ার সময় ওর ফোন না থাকলে সময় কাটাবে কি করে?? ফোন ছাড়া তো ওর সময় কাটানোই মহা সমস্যার। মোক্ষম সুযোগ পেয়ে রূপক দোদুলকে মজার ছলে বলছিল, বিয়ের পরে ওকে দুটো জিনিসের মধ্যে একটা বেছে নিতে বললে ও হয়তো ফোনটাই বেছে নেবে। বউ চুলোয় যাক!

সবাই গাড়িতে চড়ে বসলো। ডালিয়া ড্রাইভারের সাথে গল্প করে যাচ্ছে। মিনিট পনের চলার পর ওই ভদ্রলোক একটা জায়গায় গিয়ে গাড়ি সাইড করে রাখলেন। দুপাশের সবুজের সমারোহ আর বেশ কয়েকটা কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখতে পেল। তখন লালের সমারোহ হওয়ার সময় ঠিক হয়নি। সবাই নেমে গেলে ডালিয়া আর ওর ড্রাইভার কাকু ডানদিকের রাস্তা দিয়ে চলতে লাগলেন। একটু ঢালু রাস্তা বেয়ে ওরা কিছুটা নিচের দিকে চলে গেল। দুপাশের বিভিন্ন রকমের গাছের পাশ দিয়ে চলেছে ওরা। এখানে ফুল গাছের পাশাপাশি কলা গাছও দেখা যাচ্ছে। কোনটা কোন ধরনের কলা – সেটাও জানেন ড্রাইভার কাকু! উনি সবাইকে দেখিয়ে বলে গেলেন হলুদ ছোট ছোট – এটা মিষ্টি কলা, আর ওগুলো বাংলা কলা, বা ওইটাকে লাল কলা।

অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta

New Bengali Poetry 2023 | মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

New Bengali Poetry 2023 | প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

Top Bengali Poetry 2023 | প্রতিম ঘোষ | কবিতাগুচ্ছ

Top Bengali Poetry 2023 | শিবপ্রসাদ পুরকায়স্থ | কবিতাগুচ্ছ

Novel Updates | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | Novel Updates for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali Novel Updates pdf | bengali story for kids | bengali Novel Updates reading | short story | bengali novel updates analysis | bengali novel updates characteristics | bengali novel updates competition | short story definition | short story english | short story for kids | short story generator | short story ideas | bengali novel updates length | long story short | bengali novel updates meaning | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | bengali novel updates competition india | story competition | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing cmpetitions 2022 | writing competitions uk | bengali novel updates writing | bangla news article | bangla article rewriter | article writing | bengali novel updates ai | bengali novel updates app | article writing book | bengali novel updates bot | bengali novel updates description | bengali novel updates example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali novel updates format | bengali novel updates generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | bengali novel updates on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | bengali novel updates practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | bengali novel updates trends 2023 | bengali novel updates topics 2023 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment