Best Archive Bangla Poem | Shabdodweep Kobita

Sharing Is Caring:

Archive Bangla Poem – Susanta Sen

জবাব – সুশান্ত সেন

কোনো দায় নেই!
এই যে জাগ্রত আছি তার দায়?
মুক্ত আছি কিনা ? তার দায় ?

প্রজন্মের কাছে কি থেকে যায় দায়!

হায় ভোগবাদী
আমরা কি এই সুজলা সুফলা পৃথিবীকে
আঁচড়ে কামড়ে ক্ষত বিক্ষত করে
নিষ্ফলা করে চলেছি।
মনে আছে কি
ভবিষ্যৎ কে কোন পৃথিবী আমরা দিয়ে যাবো?

জানা আছে তো – অন্টার্টিকের বরফ গলছে।

মেঘ – সুশান্ত সেন

মেঘ সরে গেলে
তোমার মনের আকাশ নীল।

সেই নীল অবগাহনের।

সেই নীলে সাঁতরাতে সাঁতরাতে ডুব।
ভেসে উঠতে চাই না জেনে নীল স্রোত
আহ্লাদে আটখানা।
লজ্জায় আকাশ আরো নীল।

প্রেমের কি জন্ম হল!!

বিশদ করে – সুশান্ত সেন

বিশদ করে বুঝিয়ে বলা সহজ নয়
বিশদ করে বলতে গেলে চাই হৃদয়।
বেশি কথা বললে পরেই সর্বনাশ
অর্থ ঘিরে জমতে থাকে দীর্ঘশ্বাস,
সাদা মনের সাদা কথা বিকট সুরে
দাঁত কটাকট তবলা বজায় নিকট দূরে,
তান টা তাহার বদলে গিয়ে হলো কালো
কিনারা তার আর পাবে না দিক ভোলালো।
তাই ত এখন সেলাই করে মুখটা রাখি,
মত’টা মনের বিজন কোনে লুকিয়ে ঢাকি।
মুক্ত মনের মানুষ এখন, কমছে বেজায়
দেখছি অন্য সময় এখন মুখ তুলে চায়।

আরো কিছু দিন – সুশান্ত সেন

আরো একটু অল্প কিছু দিন
জীবনটাকে করে রাখুন ধরে রাখুন রঙিন
যদিও দেখি এখন রাস্তা গুলো
ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে বেবাক ধুলো
তারই ধুলার স্পর্শ নিন আরো কিছু নিন
আরো অল্প মাত্র কিছু দিন।

বন ভরে আছে মৌচাকে
কাঁঠাল গাছের ফাঁকে ফাঁকে
খরগোশ আর প্রজাপতির খেলা
দেখে সকাল বেলা
মনেতে মাদল বাজিয়ে তোলে বীন।
তারই ভেতর কাটিয়ে দিন
আরো কয়েকটা দিন।
আরো আরো কিছু দিন।

হাত – সুশান্ত সেন

ব্যথার ওপরে রাখো হাত
হাত আর স্পর্শ
যদি সুখ নিয়ে আসে!
তাই হবে আমার পাথেয়।

বিকেলে সবাই ক্লান্ত
নদীতীরে সন্ধ্যার দাপট।
এখন প্রণাম করি মাতা
অন্তহীন ধ্বংসলীলা
সম্মুখে রয়েছে বর্তমান।

শব্দ – সুশান্ত সেন

শব্দের ভেতরে ত্রাণ ও মুক্তি
শব্দের ভেতর ভেদাভেদ
শব্দের ভেতরে আবিষ্কার
শব্দেই সম্পর্ক হয় ছেদ ।

দূর গ্রহান্তর থেকে
অদ্ভুত শব্দ যায় শোনা
ধরা পড়ে যন্ত্র – চক্র জুড়ে
সভ্যতার বিনম্র অর্চনা ।

শব্দ তুমি প্রাণ হয়ে ঝর
অসীমের শূন্যতার মাঝে
প্রতীক্ষিত নব জন্ম তারা
নব সুরে নব তারে বাজে।

বাড়ি – সুশান্ত সেন

অনেক দূরের একটা পোড়ো বাড়ি
স্বপ্নে দেখে ভাবছি বসে
কোন রাস্তা ধরলে, যাবো তাড়াতাড়ি।

সেই বাড়িতে মন – কেমন’টি থাকে
অন্ধকারে রাস্তা দেখায়
সত্যজিতের মতন ছবি আঁকে।

যাত্রা পথে অনেক হলো দেরি
হারিয়ে যাওয়া আলো
পথের ধাঁধায় করছে হেরাফেরি।

অনাহুতের কাছে
বলো আর
কোন পথটি খোলা আছে!

দাবদাহ – সুশান্ত সেন

সকাল থেকেই জ্বলছে কেন গা
এই দহনে নিত্য নতুন ঘা
ঘাতে এবং তস্য প্রতিঘাতে
পৃথ্বী জুড়ে মৃত্যু দিনে রাতে।

দগ্ধ দেহ দগ্ধ শস্য ক্ষেত
ত্যক্ত হলো সূচী অভিপ্রেত,
ঘৃণার জ্বলন বাড়ছে ক্ষণে ক্ষণে
রাজা তখন হাসছে নিজের মনে।

নব্য যুবক, ক্ষমতা নাও হাতে
শেষের ঘন্টা বাজাও শৃঙ্খলাতে।

যুদ্ধ – সুশান্ত সেন

যুদ্ধে গেছেন বন্দুকবাজ
উঠছে বেজায় কুচকাওয়াজ
চারদিকে সব সাজ সাজ সাজ
কেউ জানে না কার কি কাজ।

গোলা বারুদ ফাটছে জোরে
সৈন্যাবাসের প্রান্ত দোরে
যুদ্ধবিমান শূন্যে ঘোরে
প্রাণটা যাবে আজ বেঘোরে।

আজব মানুষ আজব কল
খুঁজছে ফাঁক, বানায় ছল
কুম্ভীপাকের দাম্ভিক দল
বজায় জোরে দলমাদল।

সুবুদ্ধি টি আসবে কবে
মানুষ কখন মানুষ হবে
জানিয়ে দেবে উচ্চ রবে
মাতৃ – সন্তান আমরা সবে!!

নবীন – সুশান্ত সেন

নব প্রাতে জেগে উঠিলাম
সূর্যের প্রথম আলো, বিহঙ্গ কাকলী সহ
পরিব্যাপ্ত হলো চরাচর।
আহ্বান আসিয়াছে নব রূপে নব শোভা দিয়ে
সাজাইয়া দিতে হবে
সভ্যতার নব মূর্তি খানি।
হাত ধরো, পাশে এসো
যুগ যুগ ধরে অপেক্ষায় রত বেদনার্ত মা আমার
আর দেরি নয়
নবাগত যুবক যুবতি সব বাঁধা ভেঙ্গে
ধাবমান কারো অশ্ব
নতুন যুগের কাছে সেই হবে তোমার প্রণতি।

সে – সুশান্ত সেন

কি করে বোঝাই – স্বর্গ মর্ত পাতাল খুঁজেও সুখ অধরাই থেকে যায় ঠিক মনুষ্য জীবনে,
তাই,
সুখ নাহি খুঁজে কর্মের ভেতর তৃপ্তি — খোঁজ কর এখন এই অভাগা সময়ে।

ক্রমাগত ভোগ করে ও ভোগী হয়ে কোন দিকে ছুটে চলো মানব সভ্যতা প্রতিদিন!

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা করে ‘সে’ লুপ্ত হয়ে গেলে মহা বিশ্ব কাকে নিয়ে তৃপ্তি খুঁজে পাবে?

কবিতা – সুশান্ত সেন

কবিতা আপনি লিখবেন কি লিখবেন না
ভাবতে থাকুন।
এখন ত সমস্যাগুলির পাশ কাটিয়ে
নিজের কোলে ঝোল টেনে, একটু
সুখের মুখ —

সুখ কাকে বলে তার বিশ্লেষণে না গিয়ে
একটু বেঁচে থাকা
একটু খেয়ে পরে বেঁচে থাকা
একটু শুয়ে বসে ঘুমিয়ে জীবন কাটান —

চোখ ত সব সময় খুলেই রেখেছি
শুধু আসল দৃশ্য গুলো দেখতে চাইনা
তাই —

এমত অবস্থায়
আপনি কবিতা লিখবেন কি লিখবেন না
ভাবতে থাকুন।

হাঁটতে থাকলে – সুশান্ত সেন

হাঁটতে থাকলে সঙ্গে পাবে মানুষ
গান গাইলে আসবে কাছে পাখি
যন্ত্র ছেড়ে ডাকলে প্রকৃতিকে
কমবে তাপ সজল হবে গাছ।

ডাইনে বামে বৃক্ষরোপণ ধারা
মূর্ত হলে জানবে প্রজন্মেরা
ভাবনা ছিল পূর্বপুরুষের
বাঁচালো গাছ বাঁচালো আমাদের।

ভোগবাদী এই দুনিয়াটাকে
দেখাও সঠিক বাঁচার চলার পথ
এই ত সময় কার্যকারণ হাত
বিজয় রথে যাবে নিশান নেড়ে ।

ভূত – সুশান্ত সেন

গা ছমছম পা টনটন
অন্ধকারেতে, মাথা ভনভন।

কালো কালো মাথা
বড়ো বড়ো হাতা
নিয়ে কারা যেন সাঁতলায় তেল
এই বারে তারা দেখাবে যে খেল।

ওই দেখি গাছে
কার পা ঝুলে আছে
মৃদু মৃদু নড়ে
ডাল ভেঙ্গে পড়ে।

জানি কেউ নেই কাছে আশেপাশে
তবু কার স্বর কানে ভেসে আসে।

গান – সুশান্ত সেন

কোথায় তোমার দখলদারি
কেউ জানেনা মতিহারি।
যখন যেমন তখন তেমন
আমি হবো না আর সংসারী,
কোথায় তোমার দখলদারি
কেউ জানে না মতিহারি।

এই জগতের হাসি খেলায়
মন কে আমার কে যে ভোলায়
আমি কখন কাঁদি কখন হাসি
জানিস কিরে মন।

মনরে — আমার,
জানিস কিরে মন।

ওরে বল আমাকে বংশীধারী
কোথায় রে তোর দখলদারি
ওরে বল আমাকে মন।

সম্পর্ক – সুশান্ত সেন

সব কিছু শেষ হয়ে গেলে
কি হাতে হাত রাখা
চোখে চোখ রাখা থেকে যায় !
গোধূলির রঙে রাঙা হয়ে থাকে কি আকাশ
সূর্যাস্ত হলেও !
হাতে হাত রাখা সহজ নয় —
বলেছিলেন কবি।
সেই দুরূহ পথেই চলে চলে মধ্যাহ্ন পেরিয়ে
যখন ঝরাপাতার ঢেউ বেলাভূমিতে আছড়ে পড়লো
তার অভিঘাতেই জেগে উঠে বসলো প্রেম।
সম্পর্ক তৈরি হলো দুজনের সঙ্গে দুজনার।
হাতের পরে রাখা হলো হাত।

যাই – সুশান্ত সেন

কোথায় যাই !
যাওয়ার জায়গা খুঁজে বেড়াই
ধানসিঁড়ির মাঠে
মহুয়ার বনে
শাল সেগুনের ছায়ায়।
মনের মধ্যে ডাকে সমুদ্র
ডাকে সাড়া পাঠায় সামুদ্রিক বক।
সেই ডাক শুনতে শুনতে বিহ্বল হই
অজানার আহ্বানে হই উতলা।
চেষ্টা করি পা ফেলে বাইরে আসতে।
পা শক্তিহীন।
বিজন জীবনে অর্থহীন সাবধানতা নিয়ে
কাটে পরমায়ু ।

অরণ্য – সুশান্ত সেন

অরণ্য তোমায় নিয়ে কত কথা
কত অনুভব। তবু দিন শেষে দেখি
ভালোবাসা নেই।
তুমি মৃত হও, পড়ে থাকে শব।
নির্মম নিধন চলে
আমাজনও জ্বলন্ত আগুন।
আমাদের লোভ রিক্ত করে তার বুক
শুরু হয় খান্ডবদাহন
শুষে শুষে শেষ করি অরণ্যের গুণ ।

সংশয় – সুশান্ত সেন

প্রতিটি পদক্ষেপে এক সংশয়
ঠিক না বেঠিক, সেই নিয়ে ভাবনা
ভাবনার সেতু বেয়ে অতঃপর এক
প্রশ্নবোধক অন্ধকারের সামনে চলে যাওয়া
যার সামনে বন্ধু বলে ওঠে —
কোথায় যাচ্ছিস ?
যেন যাওয়া না যাওয়া আমারই হাতে।
আজ পর্যন্ত ত
নিজের ইচ্ছায় কোথাও যেতে পারি না
প্রহরীরা দ্বার এর কাছে ঠিক সময়
ঠিকই দাঁড়িয়ে থাকে।
পা ফেলতে সংশয়
কথা বলতে সংশয়
কাছে চলে আসতে সংশয়
ইত্যাদি নানান সংশয় চব্বিশ ঘণ্টাই
চারপাশ ঘিরে বসে থাকে।
আমি পাতা ঝরা একটা গাছ হয়ে যাই।

রামমোহন – সুশান্ত সেন

প্রোজ্জ্বল হয়ে শিখা
উজ্জ্বল করে
চারিধার
জ্ঞান মধু বার্তা
জ্বলে ওঠে
বার বার।
মথিত সতী দুঃখ
নিগড় দিল
ভেঙ্গে
সরব প্রতিবাদ
দিল আকাশ
রেঙ্গে।
বাচিল কত নারী
পরিবর্তিত হল
সমাজ
দ্বি – সার্ধ শতাব্দীতে
বন্দনা করি
আজ।

আওয়াজ – সুশান্ত সেন

চারপাশে বিস্তর আওয়াজ
শুনতে শুনতে বুঝতে বুঝতে
জীবন – সময় ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়
চারপাশে মেঘ জমে থাকে
মেঘ ভেদ কারি দৃষ্টি না থাকলে
পর্বত পৃষ্ঠ থেকে পতন ও মূর্ছা।
আওয়াজের এমন ধ্বংসকারী
ক্ষমতায় পর্যুদস্ত হই।
বিস্তর অন্যায় করার পরেও
বিস্তর আওয়াজে সব কিছু চাপা পড়ে যায়।

জন্ম – সুশান্ত সেন

যাকে জন্ম দিতে পারিনি সে কি অন্য কোথাও
জন্ম নেয়!
যে কথা বলতে পারিনি অন্য কেউ কি বলিষ্ঠ কণ্ঠে সেই কথা বলে!
যে কবিতা লিখতে পারিনি সেই কবিতা প্রত্যন্তবাসিরা আগেই লিখে গেছে।
যে গল্প লিখবো বলে ল্যাপটপ খুলে বসেছিলাম, আজ দেখলাম সেই গল্পই ছাপা হয়েছে আনন্দবাজারে।
ভাবতে ভাবতে শিখতে শিখতে সময় চলে যাচ্ছে আর কোনো কিছুই সৃষ্টি করতে বা জন্ম দিতে না পেরে হৃদয় বেদনার্ত ।
আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

সে দিন সন্ধ্যায় – সুশান্ত সেন

সে এক আশ্চর্য সন্ধ্যা
তখন বর্ষার আকাশে মেঘ আছে, বৃষ্টি নেই
মেঘের জল ভরা কালিমার ঠিক নিচেই
গোলাপি আভা ছড়িয়ে আকাশ হাসছে।
গাড়ি বারান্দার নিচে শুনতে পেলাম —
কাল আর রোজগার নেই, দোকান বন্ধ,
যেতে হবে মিটিং এ।
ডাক এসে গেছে।
জন্মে থেকেই ত শুনে আসছি
যেতে হয়, সময় হলেই যেতে হয়।
যেতে যেতে খাল বিল মোহনা পেরিয়ে, একদিন সমুদ্রের পাড়ে পৌঁছে যাওয়া,
ভাবতে থাকা — ইলিশের ঝাঁক নিয়ে ট্রলার না পৌঁছালে, মহাজনের ঋণ কি করে শোধ হবে কি করেই বা হাঁড়ি চড়বে!

শান্তি – সুশান্ত সেন

শান্তি খুঁজো নাকো, শান্তি কোথাও নেই
যখনই মানুষরা একটু সভ্য হয়ে উঠলো
আর আপেল টা খেয়ে ফেললো খোসা সমেত
তখন থেকেই আমি আমি তুমি তুমি জপ করতে
করতে
শান্তি কে বিসর্জন দেওয়া হলো আস্তাকুড়ে।
সেই থেকে প্রজায় প্রজায় রাজায় রাজায় কত
যুদ্ধ কত পাতার পর পাতা মহাভারত
রচনা হয়ে গেল, তার খবর কে রাখে!
অনেক দেরি হয়ে গেল,
বিষ বাষ্পে পৃথিবী ভরিয়ে দিয়েছি,
রোপণ করছি অরাজকতা,

বিদায় নেবার সময় তো এসে গেছে।

না – সুশান্ত সেন

না চেয়েছি মণিমুক্তা না চেয়েছি যশ
না চেয়েছি সম্পত্তি
তবু সভ্যতা বেশ পাঁকে পাঁকে জড়িয়ে ফেললে ত
আমাদের।
সাপের মতো হিস্ হিস্ শব্দ
বা চাবুকের সিপ সিপানি কানের ভেতর
সব সময়ই বাজতে থাকলো ।
ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি
দুমুঠো অন্ন ছাড়া আর তো কিছু চাইনি,
এই ছোট্ট কথাটা কেউ বুঝলো না ।
কেন কে জানে!!
কেন যে কোনো দেশই নিজের হলো না
এক দেশ থেকে অন্য দেশে পালাতে থাকলাম
সর্বদা — ডি ভোটার হয়ে!!

মন – সুশান্ত সেন

অশান্ত এ মনটা কেমন খেয়ালী
কি করবে ভাবে বসে সে খালি।
প্রজাপতির পাখায় ভাসা রোদ্দুরে
মেঘটা ভাসে আকাশ পথে ক’দ্দুরে,
শাল গাছটার মাথায় দেখি চিল বসে
হলদে পাতা হাওয়ার দোলায় যায় খসে।
রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে কারা ত্রস্ত চোখ
হন্ত দন্ত চলছে দেখি বেবাক লোক,
এই সকালে আমার কোনো সঙ্গী নেই
মনটা উদাস কখন হারায় পায়না খেই।
মন পবনের এমন হাওয়া সঠিক নয়
ক্ষুব্ধ হয়ে দেখতে থাকি অবক্ষয়।
তোমরা এখন আমার কাছে আসবে কি
নতুন করে আমায় ভালোবাসবে কি!

সত্যি – সুশান্ত সেন

সত্যি করে বলতে গেলে বলতে হয়
আমরা ভূমিকম্পের ফল্ট লাইন এর ওপর বসে আছি
সর্বদা মনে ভয় নিয়ে।
এই বুঝি মাটি কেঁপে উঠলো
আর হুড়মুড় করে সব বাড়ি ঘর ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ল।
তখন ত পাখি হয়ে উড়ে যেতে হবে
দিগন্ত ছাড়িয়ে অজানা যাত্রায়।
আজ খবরের কাগজে পড়লাম
কোলকাতা বসে আছে ভূমিকম্পের
ফল্ট লাইনে।
(আমরা তো জন্ম থেকে কোলকাতায় ভূমিকম্পই দেখে আসছি, কোলকাতা ভরে আছে খানাখন্দে, কেউ সে খানাখন্দ বোজাবার চেষ্টাও করে না)
ভূমিকম্প আর আমাদের কি রোজই হচ্ছে না ?
আর কত সত্যি কথা বলবো, বাবুমশাইরা !

ধ্বংস – সুশান্ত সেন

ধ্বংসের ভেতর থেকে মুক্তি নেই, কারণ এখন আমাদের এই বসুন্ধরা, কু-জনে কু-জনে ভরে আছে।
অখ্যাতির বোঝা নিয়ে সমুদ্র উত্তাল হয়ে গ্রাস করে বালিয়াড়িগুলি, বৃন্তচ্যুত হয়ে পড়ে শেফালী অনেক, বড়বাবু এসে গেছে।
আশা কিছু মেই, ভরসা ও নেই, মন্দির গাত্র অলঙ্কারকারী খনকেরা নিয়েছে বিদায়, শুধু দেখি কোনারক জেগে আছে বালিয়াড়ি জুড়ে এখনো সতেজ ।
কোনদিন ধ্বংস হয়ে যাবে সে যে, কেউ তো জানে না, বেমিহান বুদ্ধের মতন। আকাশের চিলগুলি ঝাঁপ দেয় ধৈর্য সহকারে ।
ধ্বংসের অপেক্ষায় আছি আমরা।

জাদুকর – সুশান্ত সেন

হে মহান জাদুকর, জাদু দিয়ে বিভ্রম ঘটালে সারাটা জীবন ধরে। কোনো দিনও বোধগম্য হল না সে অপার রহস্য, শূন্য খাঁচা থেকে তুমি পায়রা উড়ালে স্টেজ জুড়ে, তখন আশ্চর্য চোখে দেখে নিতে হল জাদু দন্ড থেকে ভাসা মিশর রমণী। অদৃশ্য হওয়ায় পর পুনরায় দৃশ্যমান হও তুমি দর্শক সমীপে।
এই খেলা দেখে দেখে জীবন কাটিয়ে এসে একদিন উপলব্ধি হল তুমি নেই, জাদু নেই, প্রেক্ষাগৃহ নেই, নেই কোনো উচ্ছ্বাস ভরা দর্শকের দল; কেবল অনন্ত বিশ্বে ভরে আছে সুষুপ্ত সময় প্রবাহিত হয়ে আছে যুগ থেকে যুগে।
জাদুকর, তুমি খালি বিভ্রম ঘটালে।
কোন কালো বামনের মাঝে বসে তুমি এ খেলা দেখাও!

খেয়ালী – সুশান্ত সেন

রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে বস্তা দিয়ে মেপে
ক্ষেপে উঠলো জগাই মামা প্রথম পদক্ষেপে
সারা রাস্তা নোংরা বেজায় আস্তাকুড়ে ভরা
দেখার কোনো লোক নেইরে, সবাই ধামাধরা।
নিজেই তিনি নিলেন হাতে ঝাড়ু দেবার ঝাঁটা
রাস্তা জোড়া ময়লা তুলে হলেন পরিত্রাতা।
এমনি করে সবাই যদি ক্ষেপে হঠাৎ ওঠে
তার ই সাথে গন্ডা খানেক পাড়াপড়শি জোটে
কলকাতার রাস্তা গুলো থাকবে পরিষ্কার
নোংরা ভরা, আস্তাকুঁড়, বলবে না কেউ আর।
সেই আশাতে ছন্দ বানাই পূর্ণিমার এই রাতে
মধুর সুবাস বাতাস বইছে, বসবে এসো ছাদে।

বলুক – সুশান্ত সেন

যে যাই বলুক, চেষ্টা তো করতে হবে
সঠিক পথ খুঁজে পাওয়ার
চেষ্টা তো করতেই হবে।
চেষ্টা তো করতে হবে সেই পথে চলার
যতই না সেই পথ হোক অচেনা আর খানা খন্ডে ভরা বা থাকুক না পদে পদে ভুতের ভয়।
যে যাই বলুক, চলতে চলতে একদিন
ঠিকই খুঁজে পাওয়া যাবে মনুষ্য জন্মের ঈপ্সিত লক্ষ্য, কেন জন্ম, কেন মানব জীবনই শ্রেষ্ঠতম ?
এই ভাবনায় পথ চলতে চলতে পা ক্ষতবিক্ষত,
পাদুকা ছিঁড়ে খুঁড়ে একসা।
তবু চলতে থাকি, বসি, বিশ্রাম নিয়ে আবার চলতে থাকি, চলতেই থাকি।

মনের কথা – সুশান্ত সেন

মনের কথা সহজ করে বলতে পারা চাই
কেমন করে বলব সেটাই ভাবছি সর্বদাই।
বাঁশ বাগানের ওপর যখন চন্দ্রমা যায় দেখা
নম্র আলোর আজব দ্যুতি আকাশ ভরে লেখা
সহজ সুরে গান ত শেখায় ভোরের পাখির দল
বৃষ্টি পড়ে পুকুর জলে হৃদয় টলমল,
মাটির গানে বাউল জাগায় সহজ আলাপন
নিত্য নতুন গানের সুরে ভরায় সবার মন।
এদের কাছেই জানতে হবে সহজ হতে শিখতে
সহজ করে ভাবলে, তবেই সহজ হবে লিখতে।

নদী – সুশান্ত সেন

কিছু কিছু নদী স্বপ্নের ভেতরে ঢুকে যায়
প্রবাহিত হয় তারা দিকগুলি ভেঙ্গে চুরে সীমানার বাঁধা নাহি মেনে।
এমন নদীর কাছে চলে যাওয়া মিশে থাকা ভালো ও সুন্দর, নিয়ত দিগন্ত দেখা চলতে চলতেই,
অন্য কোনো নদীর বুকেই মিশে যাবে বলে পথ চলা।
অথবা কখনও বিস্তৃত বিস্তৃততর হয়ে বৃষ্টির জল নিয়ে দুকূল ছাপিয়ে বন্যা নিয়ে ভেসে চলা জনপদ গুলি মাড়িয়ে মাড়িয়ে কোন এক মোহনায় এসে লীন হওয়া সাগরের বুকে।
নদী গুলি তাই সতত মনের ভেতরে রেখে দিও একান্ত গোপনে নরম তুলোর মতো যত্ন করে অতি সাবধানে জলহারা হয়ে যেন রুদ্ধ হয়ে যায় নাকো কোনদিন।
কিছু কিছু নদী স্বপ্নের ভেতরে ঢুকে যায়। তাহাদের সাবধানে রাখো।

যদি – সুশান্ত সেন

যদি খাপছাড়া ভাবে ঘুরত পৃথিবী
মাঝে মাঝে চব্বিশ ঘণ্টাই একটা দিন
তাহলে তো বায়ু চাপ বদলে গিয়ে
ঝড় হয়ে উঠত উত্তাল।
বিদায় নিত বসন্ত
আর কবিদের বকবকানি।
অতি বড় দিনটা নিয়ে করবে কি
ভেবে অস্থির হয়ে
পাশ ফিরে শুয়ে পড়ত
মহাকাশ।
ব্যাঙরা মৃত হত ডোবার জল শুকিয়ে।

তুমি – সুশান্ত সেন

তুমি অনেক কিছু দেখেছো অনেক কিছু জান
তাই তোমাকে বর্জন করাই শ্রেয়
নাহলে সবাই জানতে চাইবে — কে ও ? কে ও ?
শুকিয়ে যাচ্ছে জলাশয়
সরে যায় মেঘ
তোমার দুর্দশায় জাগে না আবেগ।
দৌড়ে দৌড়ে ছুটছে স্বাধীনতা
দৌড়ে দৌড়ে ছুটছে মানুষজন
অর্জন ও বর্জনের এক আশ্চর্য
সমাপতন।
কে যে থেকে যাবে শেষকালে ?
কালবামনই জানে সভ্যতার অন্তিম মোহ জালে।

চেয়ার – সুশান্ত সেন

ওই চেয়ারেই তিনি বসতেন
সারাদিন ধরে নানা সৃষ্টিশীল কাজে রত থাকতেন
চলচ্চিত্র নতুন রূপ পেল তাঁর হাতে
গ্রাফিক ডিজাইনও
মুগ্ধ হয়ে পড়তাম তাঁর কিশোর ও কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী
সৃষ্টির অমোঘ বেদনায় মূর্ত হত
তুলির টান হাতের লেখা
ক্যামেরার জাদু।
এখনও সেই চেয়ার টি বাতাসে দোল খাচ্ছে
আগন্তুক এর অপেক্ষায়,
যেন তিনি তিরিশ বছর নানা দেশে দেশে কাটিয়ে
ফিরে আসবেন,
মৃদু হাসি হেসে বসবেন,
বলবেন – কূপমণ্ডূক হয়ে থেকো না।

নব প্রভাত – সুশান্ত সেন

নব – প্রভাতে জাগিয়া উঠিলাম
দেখিলাম অনন্ত আকাশে
অগণিত আলোকিত মহাজাগতিক বস্তু
ভীম বেগে চক্রাকারে ছুটিয়া চলিতেছে
অপরিমিত সেই বেগ
ঘূর্ণনে ঘূর্ণনে গ্যাস পিণ্ড বা বস্তু পিণ্ড হইতে
কিছু কিছু গ্যাস বা বস্তু পিণ্ড
ছিটকাইয়া ছিটকাইয়া পড়িতেছে
আপন মহিমায় ও তেজে
চারিপাশ নিনাদিত।
তারই মধ্যে
কোন জাদু মন্ত্র বলে
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এই মানুষ
বিদ্যমান ?
এই ভাবনায় বেশ শিহরিত হয়ে উঠলাম।

হরিদাস পাল – সুশান্ত সেন

হরিদাস পাল বলে শোনরে রাখাল
গাছ থেকে পড়লো কি দুটো পাকা তাল ?
তাহলে কিনবো কি দু লিটার দুধ
তার সাথে মেলাবো কি কামিনীর খুদ
তাল ক্ষীর খেলে পরে দিল হবে খুশ
সারা ঘর গন্ধেতে হবে ভূস ভূস।
তার সাথে বানাবে কি ছোট ছোট বড়া
পারিনা থাকতে আর নিয়ে এস ত্বরা।
হরিদের উঠানেতে সারাটা বিকাল
এসে বসে তাল ছানে সুবোধ রাখাল ।

জানি না – সুশান্ত সেন

আমি জানি না
আমি কি করতে চেয়েছিলাম
আমি জানি
একটা যাঁতাকলে জুতে গিয়ে
বেঁচে থাকার জন্য বা শুধু অস্তিত্বের তাড়নায়
বা সামাজিক দায়িত্ব বোধ নিয়ে
সকালে সন্ধ্যায় ছুটে বেড়ালাম।
আমি সবুজ ঘাস চিনি নি
হলদে রোদ্দুর বা জলহারা মেঘ দেখিনি
কেবল হাতে হাত রেখেছিলাম যুদ্ধক্ষেত্রে।
গানের সুরে সুরে একদিন দেখি
যুদ্ধক্ষেত্রে আমি একা
আমার হাতে নতুন রকম
তীর ও ধনুক,
বার বার তারা আমাকে ডাকে
মন্ত্রমুগ্ধ আমি এগিয়ে চলেছি
চারপাশে তীর ছুঁড়তে ছুঁড়তে।
আমি জানি না আমি করতে চেয়েছিলাম।

কাছে দূরে – সুশান্ত সেন

যখন কাছে থাকে
তখন অন্য কাজে মেতে থাকি
যেন সেই কাজ গুলো না করলেই নয়,
সময় দিই না তাকে।
এখন যখন দূরে
মনে হয় কত কথা বলা হল না,
এখন মেঘদূত কোথায়
বলে আক্ষেপ করি না।
কারণ জানি
হোয়াটস-অ্যাপে যখন ইচ্ছা
কথা বলতে পারি।
খালি বুকে টেনে নিতে
বা জড়িয়ে ধরতে পারি না ।

অক্টোপাস – সুশান্ত সেন

অক্টোপাস কি পাকে পাকে জড়িয়ে ধরে সর্বদা
ক্ষুধা ছাড়াই !
সাপ ই বা কখন জড়িয়ে ধরে ?
কি ভাবে সেই সময় তারা ?
সেই জড়িয়ে ধরা সময়ে ?
এদিকে ত জীবনের যাঁতাকলে
কুম্ভীপাকে জড়িয়ে থাকি সর্বদা
বিরামহীন এক স্রোতে
বাজতে থাকে কাঁড়া নাকাড়া
যুদ্ধের পর যুদ্ধ জয় করে যেতে যেতে
এক সময় দিনান্ত দেখা দেয়,
তখন বলে উঠি কি বিচিত্র এই দেশ
কি মায়াময় এই জীবন।
জড়িয়ে জড়িয়ে থাকা সর্বদা।

রুমাল – সুশান্ত সেন

রঙিন রুমালে আটকে রাখি মুখ
খেয়াল নেই খুলে ফেলা দরকার
সারাটা জীবন এই মুখ নিয়েই
হারিয়ে যাই ও হই জেরবার।

লুকিয়ে লুকিয়ে মুখটা এখন দেখি
অসম্ভব এক ভেলকি দেখাচ্ছি
লোকরা ভাবছে আহা কি আদর্শ
মনের ভেতর আমি খাবি খাচ্ছি।

মুখ ও রুমাল পরস্পরের কাছে
চুপি চুপি কি সন্ধি করিয়াছে
মই আন মই টেনে আন
গাছে গাছে আম পাকিয়াছে।

শরশয্যা – সুশান্ত সেন

দেখুন শিরদাঁড়ায় আর জোর নেই
তাই বারবার শুয়ে পড়ি
এপাশ ওপাশ করি
কিন্তু শান্তিতে শুয়ে থাকতে পারি না।
মনে হয় যেন শরশয্যায় শুয়ে আছি।
পিতামহ দক্ষিণায়নে সূর্য ঢলে পড়া পর্যন্ত
সহ্য করেছিলেন সেই নিদারুণ বেদনা কি ভাবে কে জানে !
এক এক মুহূর্ত মনে হচ্ছে যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর – যেন অনন্ত কাল।
কোন অর্জুন – বান ধরিত্রী ভেদ করে সুধারস নিয়ে আসবে তার অপেক্ষায় সময় কাটাই।
শিরদাঁড়ায় আমার কোনো জোর নেই।

পারি না – সুশান্ত সেন

পারিনা তো আমি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়তে
পারিনা তো আমি সকালে কুপিয়ে মাঠটা সমান করতে।
পারিনা তো আমি হাত জাল দিয়ে পুকুরেতে মাছ ধরতে
পারিনা তো আমি সাইকেলে চেপে এপাড়া ওপাড়া করতে।
পারি না চালাতে মোটর গাড়িটি পারি না চালাতে বাসটা
মাইল খানেক দৌড় ও পারিনা ধরে ধরে আসে শ্বাস টা।
পারি না তো আমি হাঁটু জল ভরা চাষের জমিটা চষতে
ধারটা বাড়াতে হাতের কাস্তে পারিনা পাথরে ঘসতে।
না পারার কথা বাড়তেই থাকে জীবনটা হলো ব্যর্থ
সারাটা সমাজ বলতেই থাকে আমি এক অপদার্থ।

প্রদীপ – সুশান্ত সেন

গঙ্গায় তুমি প্রদীপ ভাসিয়ে ছিলে
হরিদ্বারের গঙ্গায়
মনে আছে।
সে প্রদীপ ভাসতে ভাসতে
কোথাও কি পৌঁছেছিল ?
সেই প্রদীপে ভাসতে ভাসতে
কোথাও কি পৌঁছানো যায় ?
না বাতাসে নিভে যাবার জন্যেই
প্রদীপের জন্ম।
অনন্ত আকাশ
তোমার দিকেই চেয়ে থাকি
তোমার কাছেই চাই উত্তর
পাই না
তুমি অনন্ত জিজ্ঞাসা হয়ে
বসে থাকো
মহাকালের হৃদয়ে।
সমুদ্র তরণীটি
ভেসে যেতে থাকে।
বিরামহীন।

লেখা – সুশান্ত সেন

লিখতে বসলেই লেখা যায় না।
অনেকবার খাতা আর ডটপেন নিয়ে লিখতে বসি
আকাশ পাতাল ভাবি,
কি লিখবো কেন লিখবো এই সব ভাবনায় মনটা
উথাল পাথাল করে
আর সকালের আলোতে এসে দাড়ায় নাম না জানা এক সমস্যা।
তখন খোলা জানলা দিয়ে দেখি সামনের গাছের
পাতারা নরম শীতে টুপটাপ করে ঝরে পড়ছে
আর রাস্তায় সেই পাতাগুলো অগোছালো সরে সরে যাবার শব্দ মাঘের বাতাসে মন্দ্রিত
সামনের রাস্তার ফুটপাতে স্কুলের বাসের জন্য
অপেক্ষারত ছেলেমেয়ের দল
কখন হলুদ রং এর স্কুল বাস আসবে!
সময় ত হয়ে গেছে।
মন ভালো হয়ে যায়
কিছু না কিছু লিখতে বসি।

তোমাকে – সুশান্ত সেন

তোমাকে শোনাবো বলে গল্পটা মনের কুঠুরিতে
রেখে দিয়েছিলাম।
তোমাকেই শোনাবো এই ভেবে।
বাগানের ধারে উঁচু বাধানো পাটাতন টা
যেখানে বিকেলে গা ঘুরে সিন্ধ পরী হয়ে তুমি বসে থাকতে, সেইখানেই বসেছিলাম।
তখন শীত।
গাছের থেকে টুপটাপ ঝরে পড়ছে পাতারা
নতজানু রোদ্দুর সেই পাতাদের সোহাগে সোহাগে ভরিয়ে দিচ্ছে,
নরম হয়ে আসছে প্রাক সায়াহ্নের আলো,
নাম না জানা পাখিটা
ডেকে উঠছে বারবার।
গল্পটা তোমাকে শোনাবো বলে আমি বসে আছি,
আমি অপেক্ষা করছি।
শীতের হাওয়া ধেয়ে আসছে চারপাশে
মোহময় গন্ধ ছড়িয়ে।

আমি অপেক্ষায়, কখন তুমি আসবে!!

আমি – সুশান্ত সেন

আমি ভণ্ড, আমি মিথ্যাবাদী
আমি এক কামুকের চোখ
বৃক্ষহীন প্রান্তরের মাঝে
আমি এক রক্ত – চোষা জোঁক।
আমি রিক্ত, আমি বুদ্ধিহীন
আমি রক্ত ঝরাই অক্লেশে
আমার স্বপ্নরা সব মৃত
প্রেতাত্মারা ঘোরে দেশে দেশে।
আমি সব অন্দর মহলে
বিজাতীয় হাসি নিয়ে ঢুকি
লুট করি সম্ভ্রম নারীর
কাঁদলেই দিই ভর্তুকি।
জ্বেলে দেই শ্মশানের আলো
ভেঙ্গে দিই ভরন্ত খামার
তুমি তো আমার এক দাস
সম্পদ তো কেবল আমার।
আমি এক রহস্য জন্মেই
মানুষ নই তো, আমি তাই
রক্তবীজ থেকে রক্তবীজে
বিষ – কণ্ঠে কেবল সাঁতরাই।।

অপেক্ষা – সুশান্ত সেন

অপেক্ষা করতে করতে সময়টা
ঘুমিয়ে পড়েছে।
এখন অনেক ঝঞ্ঝাট —
ডাক, ঘুম ভাঙ্গাও,
আড়মোড়া দিয়ে গড়িমসিতে
অনেকটা সময় চলে যাবে।
একা একাই তাই
পাথর টেনে গর্তটা বন্ধ করার চেষ্টা
যতটা পারা যায় ।
এখন তো এই রাস্তাতেই এগিয়ে যেতে হবে,
যদিও চৌমাথায় চৌমাথায় রক্ষকরা ঘাঁটি গেড়ে বসে আছেন
নজর রাখছেন কারা আসছে করা যাচ্ছে
দেখে নিচ্ছে বৈধ কাগজপত্র।
একটু সন্দেহ হলেই ঠেলে দিচ্ছে
দরজার ওপাশে।
যেন সারা অঙ্গে বিছুটি পাতার রস লেগে আছে,
ছোঁয়া যাবে না।
এদিকে ঠেলার চোট সামলাতে গিয়ে
কাপড় চোপড় খুলে একসা।
উলঙ্গ আমি কে দেখে ভয় পেও না তোমরা
সর্বভক্ষ আধিপত্য এগিয়ে আসছে।

সমাজ – সুশান্ত সেন

সমাজ চলেছে কোথায় !
“যাবে কেন ! দাড়িয়েই ত আছে।”
চারপাশে এত হিংসা কেন ?
“এত ভাববেন না, মানুষ ইতিহাসে প্রথম থেকে আজও হিংসাই করে এসেছে।”
চিন্তায় চিন্তায় যে অস্থির হয়ে গেলাম, ভবিষ্যৎ এ কি ?
“আকাশে রামধনু দেখেছেন ? না দেখে থাকলে, আকাশে তাকান, খুঁজতে থাকুন।”
কিছুই ভালো লাগছে না যে!
“তাহলে শীততাপনিয়ন্ত্রিত মলে বা সিনেমাহলে যান, এদিক ওদিক তাকাতে থাকুন, মজায় থাকুন।”
কতদিন?
” যত দিন চলে।”
কিন্তু !
“দু দিন পরেই তো আপনি ভোকাট্টা, ভাবনা কিসের ?”
আপনি ব্যক্তিকেন্দ্রিক ।
“কে নয় ?’
আমার মাথা ধরে যাচ্ছে।
“মাথাটায় গঙ্গাজল ছিটান, গঙ্গাজল।

সুশান্ত সেন | Susanta Sen

প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

মন্টুর মা | গল্পগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Story 2023

মোঃ ওয়াসিউর রহমান | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

বিকাশ চন্দ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

Kobita Lyrics Poetry In Bengali | Bangla kobita | Words of bangla kobita pdf | Words of bangla kobita for students | bangla kobita lyrics | bengali kobita for child | bengali poem in english | Bangla-English Poem Books | Bangla Poem for school Kids | Quotes by Jibanananda Das | Bangla kobita on Tumblr | Rahur Prem Bangla Kobita | Poem in Bengali | Shabdodweep Web Magazine | High Challenger | Shabdodweep Founder | Sabuj Basinda | Bengali Poetry | Bangla kobita | Archive Bangla Poem 2024 | Poetry Collection | Book Fair 2024 | bengali poetry | bengali poetry books | Archive Bangla Poem pdf | Bengali Poem Lines for Caption | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | Archive Bangla Poem Ebook | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2023 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | Bengali Poem Lines for Caption in pdf | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | Best Bengali Poetry Folder | Best Bengali Poetry Folder 2023 | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2023 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | Bengali Poem Lines for Caption crossword | writing competition | writing competition malaysia | Bengali Poem Lines for Caption in mp3 | writing competition hong kong | writing competition game | Best Bengali Poetry Folder pdf | Trending Archive Bangla Poem | Archive Bangla Poem – video | Shabdodweep Writer | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | English Literature | Archive Bangla Poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | Archive Bangla Poem Ranking | positive Best Bangla Kobita Collection | Bengali Poem Lines for Caption about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | freedom poem | sad poetry about life | Natun Bangla Kabita 2023 | Kobita Bangla Lyrics 2023 book | New Archive Bangla Poem | Writer – Archive Bangla Poem | Top Writer – Natun Bangla Kabita 2023 | Top poet – Natun Bangla Kabita 2023 | Poet list – Kobita Bangla Lyrics 2023 | Archive – Archive Bangla Poem | Bangla Full Kobita | Online Full Kobita Bangla 2023 | Full Bangla Kobita PDF | New Bangla Kabita Collection | Shabdodweep Online Poetry Story | Poetry Video Collection | Audio Poetry Collection | Bangla Kobitar Collection in mp3 | Bangla Kobitar collection in pdf | Indian Bengali poetry store | Bangla Kobita Archive | All best bengali poetry | Indian Archive Bangla Poem | Best Poems of Modern Bengali Poets | Best Collection of Bengali Poetry in pdf | Bengali Poetry Libray in pdf | Autograph of Bengali Poetry | India’s Best Bengali Writer | Shabdodweep Full Bengali Poetry Book | Bengali Poetry Book in Google Bookstore | Google Bengali Poetry Book | Shabdodweep World Web Magazine | Shabdodweep International Magazine | Top Poems of Modern Bengali Poets | Bangla Kobita in Live | Live Archive Bangla Poem | Bengali Poetry Recitation Studio | Sabuj Basinda Studio for Bengali Poetry | Bangla Kobita Sankalan 2023 | Shabdodweep Kabita Sankalan | New Bengali Poetry Memory | History of Bengali Poetry | History of Bangla Kobita | Documentary film of Bengali Poetry | Youtube Poetry Video | Best Bangla Kobitar Live Video | Live Video Shabdodweep | Bengali to English Poetry | English to Bengali Poetry | Bengali Literature | Full Bengali Life of Poetry | Bangla Kobita Ghar | Online Archive Bangla Poem | New Bengali Poetry House | Full Bengali Poetry Collections PDF | Library of Bangla Kobita | Bengali Poetry and Story | Bengali Poetry Writing Competition | World Record of Bengali Poetry Writing | Peaceful Poetry | Online High Trend Bangla Kobita Selection | High Trend Bangla Kobita translation in english | High Trend Bangla Kobita | High Trend Bangla Kobita for instagram | romantic bengali poem lines | bengali short poem lyrics

Leave a Comment