Top Best Bengali Poetry 2023 | মোঃ ওয়াসিউর রহমান | কবিতাগুচ্ছ

Sharing Is Caring:

মোঃ ওয়াসিউর রহমান – সূচিপত্র [Bengali Poetry]

অসময় – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

বালুতটে বিছিয়ে রেখে শেষ রাত্রির বিছানা, আজো সাগরে ঝাপ দিবে আরো কয়েকটা সাম্পান,
উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের মাঝে সে খেলনা, হারিয়ে আবার ভাসিয়ে, যে খেলা বা যুদ্ধ চলমান,

খুঁজে ফেরে রোদ্দুরের ঝিলিক হাসি।
স্মৃতিপটে পড়ে থাকে সে গেওয়া বন,
পড়ে থাকে তটজুড়ে পুরোনো কথা, হাসি।
এরকমই সেখানে আকাশ শান্ত, নির্মল।

সেখানে দুটো সোহেলী কাঁটাবনে খেলা করে, পোকা ধরে,
মেঠো আবাবিল গুলো উঁচু ডালে বসে থাকে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে।

এখানেও দাড় কাকের সাথে চলে মেছো চিলের প্রতিযোগিতা কাড়াকাড়ির।
এই সমস্ত খুনসুটি আর মেকি ঝগড়া, কল কলানিতেই ব্যস্ত থাকে এই অলস তীর।

সন্ধ্যা নেমে আসার প্রক্রিয়া চলতে থাকে,

সূর্য টা হেলে আসে, ডুবে যাবার আগে চলতে থাকে তার ধাঁধানো প্রতিবেদন।
যেন রকমারি অনুষ্ঠানের শেষ দৃশ্যে মন মাতানোর বহুরূপী রঙিন আয়োজন।

গ্রাম গুলোতে জ্বলে কুপ, আরো একটি অন্ধকার,
আবার বালুতট বিছানা পাতে, কুপের আলোয় কুড়ে ঘর গুলো বিছানা পাতে,
আরেকবার কি হতে পারে শ্বাপদের সাথে যুদ্ধ? বাঁচামরার লড়াই ঝঞ্জার সাথে?

এদিকে,
দূর সমুদ্র ঢেউ দেয়,
উপঢৌকন দেয়,
খেলা করে,

উপরের আকাশের তারা গুলো উদাস মিটি মিটি হাসে।
সবাই যানে,
ফেলে রেখে আসা বালুতট ফিরে যাবার পর পাবেনা একইরকম, কেউই কোনদিন।
কিম্বা হয়তোবা ফিরে যাওয়া যাবেনা সেখানে।

সার সার করে বেধে রাখা সাম্পান, সেই চিল টা উড়তে থাকে,
কাক গুলো দল বেধে ডাকে, চিৎকার করে সংঘবদ্ধ হতে থাকে।
মহাজন কড়া গুনে হিসেব করে, মেপে মেপে বুঝে নেয় লাভ,
এখানে সোহেলীর বাসা আর নেই, উঁচু ডাল দেখা যায় কদাচিৎ।
আবাবিলগুলো তো চলে গেছে অভিমানে,
নিরুদ্দেশের পথে, আর ফিরবে না বলে।
তবু সূর্য, সেই বাজনা ওলার মত চেষ্টা করে যায় মাতানোর,
বাজনাওলার বেসুরো সুরের মতোই, বিরক্ত করে আলোকচ্ছটা,
শুধু মনে হতে থাকে মহাজনের দেয়া হিসেব, মিলছেনা কিছুতেই…

মৌনতার শব্দ – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

একরাশ নেমে আসা অন্ধকারটিকে কখনো খুব প্রিয় মনে হতে পারে।
কখনো হৃদয় খুঁজে ফিরে একরাশ নিস্তব্ধতা;
হাসির শব্দটিও লাগতে পারে অস্বাভাবিকতা।
যেমনটা কোন ভর দুপুরে, অরণ্যের আবছায়া অন্ধকারে ভেসে বেড়ায় লেজঝোলার চাপ-চাপ অট্টহাসি।
অথবা বিধ্বস্ত কোন শহর বিহ্বলতা কাটিয়ে যেমনটা স্তব্ধ হয়ে হয়ে বসে থাকে হারিয়ে সকল প্রাণ-শক্তি।
এমন স্তব্ধতা প্রিয় করে তুলতে পারে বিশেষ কোন মৌনতাকে;
সকল গদ্যকে বিদায় জানিয়ে রিক্ত অসাড়তা খুঁজে ফিরবে পদ্যকে।
হৃদয়ের পুঞ্জীভূত বাষ্পকণা একসময় হারাবে গতি, বাইরে ধীরে ধীরে জমবে তুষার;
নিদারুণ অসাড়তা, সৃষ্টি করবে পৃথিবীর বুকে চেপে বসা প্রবল শক্ত নিরেট পাহাড়;
স্থাণু, নির্বিকার, ভাবলেশহীন কাঠিন্যই শুধু এনে দিতে পারে প্রশান্তি অপার।

যেমনটা চরাচরের সমস্ত অস্থিরতা পাহাড় চুড়ায় উড়ে গিয়ে হয়ে যায় শীতল,-
প্রতীক্ষায় বসে আছি অবারিত ধারা নেমে আসবে স্থবির শিলার পোষ্যতার প্রশ্রয়ে; অকস্মাৎ যদি!
দিগ্বিদিক শূন্য প্রবল ধারা, নেমে আসবে আবারো, আবারো আসুক একটা বরফ-গলা নদী;
ভাসিয়ে নিয়ে যাবে আবার সকল আয়োজন, এক লহমায় খড়-কুটোর মতো আবর্জনাময় প্রগতি।
আজ এই জনস্রোতে যখন কেউ নেই, চারিদিক শূন্য, একাকীত্ব ছাওয়া চরাচরের অর্থহীন কলরব থেমে যাক,
সকল গল্প আজ ঘটনা শুন্য প্রলাপ যখন, তখন এমন মৌনতার কবিতাগুলো শহরের দেয়াল জুড়ে থাক।

একদিন – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

আস্তে আস্তে কমে আসছে সবকিছুর মেয়াদ।
সমস্ত কিছুই আজ অতি দ্রুত মিলিয়ে যায় বাতাসে,
সমস্ত কিছুর উদ্বায়ী সত্তা হয়ে ওঠে বড্ড সচল।
অনুরাগ শূন্য পেয়ালায় আজ শুধু পড়ে থাকে কেন অস্বস্তির ক্লান্ত পরত!
ঘটনার ঘন-ঘটায় দ্রুত পর্দা ওঠে আর নামে, –
হয়তো একই সংলাপ, একই গল্প, তবু কুশলীরা কেন তাড়াহুড়ো করে সেরে নেয় প্রতিটি অংক?
ভালোবাসার বীজ বড্ড সময় নেয়, চারা বাড়ে ধীরে তাই কেউ খেয়াল করেনি তার বৃদ্ধি।
শুধু বেড়ে চলে প্রেমহীন উষ্ণতা, তাই সারবস্তুহীন গাদে আজ পরিপূর্ণ সর্বত্র।
খুঁজে চলে বন্ধুত্ব একটু আশ্রয়, পথহারা সহানুভূতি আজ বিক্ষিপ্ত।
প্রেমিকের লুকোনো গোপন আস্তানায় ভর করে প্রেত।

সবকিছুই আজ হয়ে চলে খুব দ্রুত, তাই সুখ আজ শুধু ধারণা মাত্র।
আজ তবু ঘুম ভাঙ্গলে সকালকে আলিঙ্গন করি,
পরম মমতায়-
কেননা সকল অস্বস্তির পরতে পরতে গোপনে বুনেছি প্রেমের বীজ।
হুট করে ভুলে যাওয়া সমস্ত প্রেমালাপকে সন্তর্পণে জমিয়ে রেখেছি খাঁজে-খাঁজে।
কেননা একদিন হয়ে যাবে ঠিকই সব স্থবির, পাওয়া না পাওয়ার সমস্ত হিসেব হয়ে যাবে সমান ও অর্থহীন।
একদিন বাগানে ঠিকই ফুটবে ফুল, আসবে পাখির দল, তখন আমার গল্প শুনে নিও ঠিক ওদের আলাপনে।

আমিও উড়বো – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

সময় বলেছিল সব কিছুই পালটে ফেলা যায়।
সময় বলেছিল কোন দূরত্বই সহজ নয়।
তবু ভুলিনি সেই সময়কে, অগোচরেই শ্বাস ফেলছে।
সময়ের ভেলায় উড়ে দেখি আলো,
পশ্চিম দিগন্ত দেখে পূব দিগন্তে আমার আলো,
নিশ্চয়ই এখন যে-কোনোদিন, নিশ্চিতভাবেই এখন যে-কোনোদিন,
আমিও উড়বো।

সময় বলেছিল সব সময়ই সুরক্ষা থাকা চায়।
সময় বলেছিল সবাইকেই পড়তে হয়।
যদিও সত্যিই দিগন্তে দেখি আমারই প্রতিফলন,
সময়ের উঁচু প্রাচীরের উপরে বসে দেখি-
পশ্চিম দিগন্ত দেখে পূব দিগন্তে আমার আলো,
নিশ্চয়ই এখন যে-কোনোদিন, নিশ্চিতভাবেই এখন যে-কোনোদিন,
আমিও উড়বো।

অতি নিকটের কোন ভীড়ে শুনি কোন শিশুর কান্না,
কোন মানুষের আত্মসমর্থনের প্রচেষ্টা,
হতে চায়নি সে ফ্রেমে বন্দী-
আমি দেখি শুধু সে আসছে-
পশ্চিম দিগন্ত দেখে পূব দিগন্তে আমার আলো,
নিশ্চয়ই এখন যে-কোনোদিন, নিশ্চিতভাবেই এখন যে-কোনোদিন,
আমিও উড়বো।

যান্ত্রিক গোলযোগ – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

একটু একটু করে বাড়ছে অস্পষ্টতা,
সামনের দৃশ্যগুলো যেমন ঝাপসা হয়ে আসবে ক্রমাগত, বেড়ে চলবে ক্ষীণতা।
একি ক্রমবর্ধমান বার্ধক্যের আবির্ভাব?
নাকি আজ অস্পষ্টতা প্রত্যাশী দৃশ্যপটে যা সবকিছু ভাসমান?
কর্তা কর্ম করণ গুলো স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে আজ এককোষী হয়ে পড়ে রয়, হেলায় এমিবার মতো শুধু যদি কিছু গিলে ফেলা যায়!
হৃদয়ের কথাগুলো থেকে যায় ঘুমন্ত, চিরায়ত নিষ্পাপ শিশুর মতোই।
পটের ছবির মতো, যেমনটা বাঁধানো পবিত্রতা।
কড়া চৈত্র দিনের সকালের কুয়াশা কি শুধুই দৃষ্টি ভ্রম?
গলার স্বর ভাসে আশেপাশে, তবু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা মানুষ!
চৈত্রের সকালের অবাস্তব কুয়াশা হয়ে আসে স্থায়ী,
আকাশে সূর্য ওঠে, বেলা গড়ায়, মাথার উপরের দেব শুষে নেয় সকল রস ঠিকই, তবু কুয়াশা কাটেনি।
পুরোনো হয়ে আসা মানে কি শুধুই জীর্ণতা তবে?
চাদরের গায়ের ম্রিয়মাণ কারুকার্যের মতো, অতীত হতে চলা মুগ্ধতা?
কেননা পৃথিবীর সকল মুগ্ধতা আজ সাজানো কোন বিখ্যাত জাদুঘরের দুর্ভেদ্য প্রাচীরের আড়ালে।
তবে শূন্যতা দখল করে নেয় কি সকল স্বচ্ছতা?
শুষে নিচ্ছে সকল সকল জীবন ধারা আজ হুতাশন,
তবুও একটু বিশুদ্ধ বাতাস জ্বালাতে পারেনি আগুন আজ হৃদয়ে।
তাই সকল আবেগ যুক্তির সন্ধানে হয়েছে নিরুদ্দেশ কোন-কালেই।
আজ অস্পষ্টতায় হৃদয়গুলো হারায় স্পন্দন, অক্সিজেন বড্ড নিষ্পেষিত হয়ে বেড়ে চলে দূষণ।
দৃষ্টি নিরুপায়, সার্বিক ত্রুটির নিকট ঘোষণা করে তাই যান্ত্রিক গোলযোগ!

তারা – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

এসো প্রস্তুত হও, আসন্ন শীত রাত্রির জন্য,
কেননা শীতের পরই আসবে আবার বসন্ত।

বসন্তে তোমাকেই ডেকে যেতে হবে ক্রমাগত।
আবার সেই বসন্তে আসবে নতুন কিছু চরিত্র।

আবার সেই বসন্ত ফেলে রেখে যাবে কিছু স্মৃতি,
চেনা পালক গুলো পড়ে থাকবে নিঃসঙ্গ নিরবধি।

হেমন্তের শিশির বিন্দু মিশে পালকের ফুটকি রঙে
রঙ ছড়ায়, রঙ মেশে, রঙের আলপনা নানা ঢঙে।

তোমার অকারণ প্রলাপে বিলাপে জাগবে আকাশ,
সূর্যের লোহিত কপট উষ্ণতায়, বহে শীতল বাতাস।

ক্লান্তি আসে প্রেমে, ক্লান্তি আসে নির্বোধ অনুভূতির।
সময় ঘনিয়ে আসে নক্ষত্রের, হেতু নেই আত্মাহুতির।

নক্ষত্র কি তবে ফুরিয়ে যায়? নাকি পার হয়ে যায় অন্যলোকে?
কেই বা তা জানে! নাকি লুকিয়ে থাকে, তোমার শিশির ভেজা পালকে!

আবার ধুসর বিরান পৃথিবী খোঁজে সবুজ সাজের নিত্য পায়তারা,
আবারো ডুবে যায় চাঁদ, উড়ে যায় পেঁচা, আকাশে ছড়িয়ে কিছু তারা।

পথের নেশা – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

ভেসে গেছি বারবার কাদাজলে, পাহাড়ি ঢলে,
ছড়ে গিয়েছে অবিরাম সর্বাঙ্গ, এলোপাথাড়ি সময়ে।
শুধু তৃষার্ত দৃষ্টির দহন ছাড়া ছিলোনা কোন বোধ।
সমস্ত স্মৃতিই ফিকে হয়ে আসে উত্তপ্ত বাতাসে,
ভেঙ্গে দেয়া ঘর গুলোর প্রবেশপথ খুঁজে যাই আনমনে।
থেকে যায় সুখ খুঁজে ফেরার প্রবৃত্তি যা নির্বোধ।

খুব চেনা পথগুলো বদলে যায়, পালটে নিতে হয় গতিপথ,
অদ্ভুত দৃষ্টিবান ঝরে পরে চারদিক, চেনা পথিক হয়ে যায় আগন্তুক।
সমস্ত দৃষ্টিসীমাও হয়ে আসে নির্ধারিত, সঞ্চালক করে চলে পর্দা উন্মোচন,
হয়তো নির্দিষ্ট ইশারায়, তবুও খুঁজে চলা পথের দরজা অহেতুক।
অনেক অপেক্ষমাণ মানুষের সারি, পথে প্রান্তরে, শহরে অথবা গ্রামে গঞ্জের ছোট স্টেশনে,
আবারো হবে হয়তো নতুন কোন ভ্রমণ, সেই একই পথে, তবু অন্য পরিচয়ে,
যে পথের আশায় চষে ফিরেছি কতকাল, কতবার, – কখনো জনাকীর্ণ বাসে, বিস্তীর্ণ সমুদ্রের নির্জনতায়, কখনো মনোরম কোন রেলের কামরায়।
পায়ে হেটে কখনো পার হয়ে গেছি সমস্ত জগৎ, হন্যে হবার নেশা কাঁধে করে নিয়ে গিয়েছি ঘোরের শহরে।
ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি, অজানা কোন পোতাশ্রয়ে, নতুন স্বপ্নের নেশায়।
ঘুম ভেঙ্গেই বুঝি দেখবো পৌঁছে গেছি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।
তবু নেমে এসেছে আবারো অচেনা পথ।
হারানোর বুঝি তাই শেষ নেই আজ, যখন ভেবেছি খোয়ানো গিয়েছে সমস্তটাই-
তখনো হাতড়ে দেখেছি, বাকি রয়েছে এখনো খানিকটাই।
তাই পথ মাড়াই আজ শুধু পথের দ্বার খুঁজে পাবার নেশায়।

অন্য কোন রাত – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

পাতা ঝরা গাছের ডালে কি জ্বলে রয় জোনাকি?
নাকি চারপাশের সরল পরিবেশে আলো জ্বেলেছে অজস্র হ্যাজাক বাতি!
আবার জমে উঠেছে শীতের রাত।
হয়তো নামবে আবারো একটা পেঁচা অন্ধকারে, কুয়াশা ঝরে পড়বে তার ডানায়, সকলের অলক্ষ্যে।
দূর আকাশের তারাগুলো এসে আশ্রয় নেবে তার ডানার খাঁজে-খাঁজে।
জনপদ ঘুমিয়ে পড়বে যখন।
সময় বদলে যায়, চায়ের পেয়ালার বদলায় খদ্দের, এখনো গ্রামের রাস্তায় ছনুমিয়া পাতলা চাদরে খুঁজে চলে ওম।
অলৌকিক গল্প শোনার শ্রোতাগুলো নিবিষ্ট হয়ে রয় অন্য কিছুতে।
এলোমেলো জংলার দলও আজ যেন ব্যতিব্যস্ত হয়ে হারিয়ে গেছে অন্য কোথাও।
চারিদিকে ফসলের জমিতে আজ কেন শুধু আগাছার ফলন?
জোনাকিগুলোও আজ নির্বাসিত।
জমে যাওয়া শীতের রাত যেন কোথাও জমে গিয়েছে, খোলা পড়ে থাকা তরকারির মতন!
এখন বেপরোয়া হ্যাজাকের আলোগুলোও দরখাস্ত ফেলে রেখেছে ছুটির।
যেকোনো সময় চলে যেতে পারে অজানা ঠিকানায়!
তবু এ অন্যকোন শীতের রাত চলে এসেছে আজ আমার জানালায়, অন্য আকাশ হতে।
ছনুমিয়ার স্মৃতিগুলো হয়তো টেনে এনেছে হারানো সাম্রাজ্য কুয়াশার পর্দার ওপারে।
আরো বছর কুড়ির অথবা আরো পুরোনো কোন রাত, যেমনটা পুরোনো টিনের বাক্স খুলে বারবার গন্ধ নেয়া হারানো রত্নের।
তারা কথা বলে যায়, চা খায়, পাতার বিড়িতে জ্বলে ওঠে আগুন, যেন কিছুই হয়নি, আসেনি পৃথিবীতে কোনদিনই কোন মহামারী।

আত্ম-প্রতীক্ষায় – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

আমি প্রতীক্ষায় থাকি, তোমার উদাসীন আলিঙ্গনের,
যেখানে পাহাড়ের খাদে রাস্তায় সবুজ উদ্দীপ্ত ঘাসমালা শিশির নামক স্বেদ বিন্দু মেখে বসে থাকে।
আমি শীত নিদ্রায় থাকি, তোমার উষ্ম স্পর্শে জেগে উঠবো বলে।
যেখানে নেমে আসবে ঝিরিপথ সেই পথ ধরে, যেখানে বসে থাকে পাহাড় রাজ তোমার অপেক্ষায়, কুর্ণিশ করবে বলে।
জংলার বন ধরে ছুটে চলা ঢালু পথে কি তবে, ছিঁড়ে ছিঁড়ে যায় দম্ভ?
পৃথিবীর সমস্ত অহংকার এখানে সিজদা দেয়।
তোমার করতলে উঠে আসে মৃত্তিকার লোবান মেশানো গন্ধ যা বলে দেয় সব সমান সব এক।
মুহূর্তেই ঠান্ডা বাতাস মুছে নিয়ে যায় সব ক্লান্তি সব অবসাদ, তোমার আন্তরিক আলিঙ্গন আমায় গ্রাস করে, নিয়ে যায়, পারিপার্শ্বহীন এক জগতে।

ব্যবচ্ছেদ – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

কৃত্রিমতার উৎস তবে কোথায়?
মহাবিশ্বের উৎস যদি হয় প্রাকৃতিক তবে কৃত্রিমতা কি সম্পূরক নয়?
তবে এসো আজ অভিলাষী কৃত্রিমতাকে হত্যা করি, সম্পূরকটাকে রেখে।
সত্যি তবে কি? কি তার পরিচয়?
সত্যি কখনো যেমন এক পরিত্রাতা, যে শুষে নেয় সমস্ত কুয়াশা আর অসহায় শীতের রাত।
সত্যি- সে তেমনি এক আততায়ী, যে হরণ করে হৃদয় কুসুম, তাকে পৃষ্ট করে পদদলনে, মুহূর্তেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলতে পারে সবকটা পাঁজরের হাড়।
গ্রহণ বা বর্জন এখানে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ।
শুধু প্রয়োজন একরাশ স্থিরতা,
যেমনটা স্থির এই মহাবিশ্বের সকল ঘূর্ণায়মান তারকা, গ্রহ উপগ্রহ।
সচেতন ব্যবচ্ছেদ হোক তবে, বিনা চিৎকারের চূড়ান্ত যন্ত্রণায়।
যেন ভেঙ্গে না যায়, নিসর্গের অবিচ্ছিন্ন অসীম শান্তি!
একখানা বাঁশি যা বেজেছিলো, নিদারুণ সুরে, তাকে তো গড়ে তুলেছিলো কোন এক তীক্ষ্ণ ফলা।
স্তরে স্তরে সে ফলার আঘাত সাজিয়েছিলো সুর।
তবে আজ টেনে নেয়া যাক কৃত্রিমতার সম্পূরক চাদর, অন্ধকার করে নিতে বুকের ক্লান্ত গহ্বরকে,
যেন ঠিকরে আসে আলো।

মৌলিক অনুভূতি – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

হয়তো নিভে যাবে সমস্ত আলো একসময়।
কিছুটা বিরতি,
হয়তো জ্বলে উঠবে আবার কোন সকাল।
এমন কোন গ্রহ কি আছে? যেখানে সূর্য ওঠেনি কোনদিন?
সমস্ত আধার ভর করেছে যেখানে সেখানেও উকি দিয়ে চলেছে এই কর্মহীন বেকার।
অন্ধ আলো আজ তাই একাকী হতে চায়, কপাটবদ্ধ দেয়ালে খুঁজে আশ্রয়।
অবচেতন অস্ফুট বিলাপ থাকুক অবরুদ্ধ, নিষিদ্ধ প্রেতের মতোই নির্বাসিত।
চরাচরের আজ অজানাই থাকুক সমস্ত আর্তি, সব আলো নিভে যাবার মতোই হোক অন্ধ।
কেননা অন্ধত্বই সচেতন করে দিতে পারে স্নায়ু, জাগিয়ে তুলতে পারে সমস্ত অনুভূতি।

হয়তো ফুরিয়ে যাবে একসময় সকল বন্ধুত্বের স্ফূর্তি।
কিছুটা একান্ত সময়,
নিভৃতেই জ্বলে উঠুক নিঃসঙ্গ শলাকা।
এমন কি কোন শীত আছে? যেখানে কেউ কোনদিন খুঁজেনি একটু ওম?
সমস্ত শীতলতা আজ ভর করুক এই চরাচরে, যাতে বরফের খাঁজে খাঁজে লুকোনো যায় যন্ত্রণার মহামারি।
তীব্রতা হরণ করে নিক সমস্ত সাড়, যাতে যন্ত্রণাগুলো সতেজ হয়ে ঘুমিয়ে থাকে,
একটা সত্যিকারের অন্ধ হৃদয়ের প্রতীক্ষায়, কেননা এমন হৃদয়ই শুধু মৌলিক।
যেমনটা মৌলিক প্রতিটি পরমাণু, যেমনটা মৌলিক একটা ঈগলের প্রতীক্ষা এই মহাশূন্যে।
ভেঙ্গে ফেলা যাক প্রতিটি সংসার, গুড়িয়ে দেয়া যাক সমস্ত শহর।
নির্বাসিত করা যাক অন্ধকার কোঠরে প্রতিটি সুখী মানুষকে।
টেনে নামানো যাক অন্ধকার, কেননা অন্ধকারই মৌলিক। যন্ত্রণা সংরক্ষিত হোক আজ শীতল ঘরে।
যা কিনা সমস্ত কিছু গুড়িয়ে মৌলিক বস্তু বের করে আনতে পারে।
যা থেকে শুরু করা যায় আবার, শুরু থেকেই।

মায়া ও সত্য – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

তবু্ও এই জীবনের মায়া কোথা হতে আসে?
কোন সত্যিকারের সত্যযুগ হতে?
হয়তো সকলেই বহমান পাশাপাশি চলমান ট্রেনের মতো।
শুধুমাত্র কখনো কখনো কক্ষ হতে কক্ষের জানালার এক মুহূর্তের দৃশ্য!
হয়তোবা গরান বাবলার বনের মাঝের আলোকচ্ছটা এই রকম কিছু!
যেন সব কিছু থেকে আলাদা অন্য ভুবন।
তবে কেন নয় বিস্মৃতি!

কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশটাকে যতটা আঁধার মনে হয়,
আকাশটা আসলেই ততটা আধার নয়।
কেন না এ কুয়াশার অন্ধকারে আকাশ লুকিয়েছে জল,
এর আড়ালেই প্রজ্বলিত রয়েছে সূর্য।
কখনো এ কুয়াশাই এনে দেয় ওম, একটুখানি আশ্রয়।
যুদ্ধাহত সৈনিক কখনোবা জমা করে নেয় কিছুটা শক্তি,
বারুদের প্রবল ধোঁয়াশা বাতাসের আড়ালে খুঁজে নিয়ে কিছুটা সময়-
নিজের মতো,
হতে পারে প্রতিঘাত দেবার শেষ প্রস্তুতি, অথবা গুটিয়ে যাবার শেষ সিদ্ধান্ত।
যেমনটাই হোক-
এ নিজের শেষ আত্মপ্রকাশ,
নিজেকে চেনানোর শেষ প্রয়াস,
ঝলকের মতো এসে বিদায় নেয়,
তবু জায়গা করে রাখে স্থায়ী স্মৃতিতে।
তেমনিভাবে কিছু কুয়াশা মাখা সকাল সবচেয়ে আলাদা হয়ে থাকে অজস্র দিনের থেকে।

অকারণ – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

অকারণ পথে পথে ঘুরি, আকাশে উড়ি,-
যদিওবা দেহখানা পড়ে রইলো অলস।
কুঁড়ে আকাশে যেন একখানা সারস;
বৃদ্ধ সময় বসে বসে গুনে গেলো বয়স।
ভুল পথে বারবার গিয়েও তবু, ঠিকানা খুঁজে ফিরি।
কিসের এতো ঘোরাঘুরি, অকারণ ওড়া-উড়ি?
কেন, কেন?

সন্ধ্যার কোন এক চায়ের দোকান – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

অদ্ভুত রকম নিপাট সরল একটা পথের মধ্যে ধুলো কুণ্ডলী পাকায়,
রয়েছে গুপ্ত খবরগুলোও এখানে, উড়ে যাওয়া প্রজাপতি বলে যায়।
পথিক শুধু মুচকি হাসে, চমকে, উঠে, চলে যাবার পথে মুখ লুকায়।
এই কি যেন সেই সেইদিন সন্ধ্যার কোন এক চায়ের দোকান?

কারো হাতের একটি চায়ের কাপ, একটা জ্বলন্ত সিগারেটের সাথে,
আর একটা ধোয়া উড়ছে আরো অনেক ধোয়ার মতই, তবু সেদিকে;
ক্যামেরার আনমনে ফোকাসটা যেন কখনো হয় স্থির নির্বিকারে,

আলগোছে একটা বেড়ার মাঝে ছোট পরিসরের দোকান;
আর বেড়ার ফাঁক দিয়ে কিছু মানুষের ক্রমাগমন,
শব্দ-সীমায়, তবুও কিছু অস্ফুট শব্দের লেনদেন,

নানান সংলাপ, ফালতু কথা, ভালো কথা, কারো না জানা গল্প,
বাইরে বৃষ্টির গল্প, রাস্তার গল্প, ধুলোর, আর নর্দমার গন্ধের গল্প,

সোডিয়ামের নীচে সাদা কুকুরটার খয়েরী রঙ,
একটা যুগল রিকশায় ছড়িয়ে যায় কিছু রঙ,

আর এই সব পট যেন যাত্রা মালিকের বহু পুরোনো সেই একই ময়লা পর্দা।

এর মধ্যেই এই গল্পগুলো সব একসাথে ধোয়ার মত কুণ্ডলী পাকিয়ে যেতে যেতে চায়ের দোকানের আরেকটা গল্প তৈরী করছে।

এরকমই অনেকগুলো সিগারেটের ধোয়ার কুণ্ডলীর মত গল্পগুলোর মধ্যেঃ

একটা কুণ্ডলী কখনো স্পষ্ট, আর কয়েকটা অস্পষ্ট;
কোনটা যেন বিচ্ছুরিত করে উঠতে চায়, কোন একটা সময়কে,
এদের মধ্যে থেকে, কোনটা যেন কখন হয়ে যায় স্পষ্ট।

এভাবে একেকটা বর্তমান অথবা একেকটা বিলুপ্ত, চায়ের দোকান যেন হয়ে উঠে পত্রিকা অফিস।
কিমবা শেলফের তাকে পড়ে থাকা জর্জরিত বই, কতগুলো হলদে মলাট, নীরবে করে যায় ফিসফিস।

কিমবা চায়ের দোকান গুলো হয়ে উঠে মস্তিষ্কে সেলুলয়েড ফিতে,
আনমনে জ্বলে উঠে সুইচ!
কিমবা হটাত করে চায়ের দোকানের সে বেড়ায় ঢুকে মনে হয়ে উঠে,
কাকে যেন খুঁজতে এসেছিলাম এখানে!

বাস্তুহারা অর্থরা – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

শব্দ বয়ে চলে অর্থহীন,
অর্থরা তাই আজ বাস্তুহারা।
মনোমতো কথাটিই বেচে থাক,
তাই কবিতাটি হয়ে থাক মনমরা।
সারাদিন খুঁজে ফেরা আসন, আর বাহবা,
উড়ে যায় চাল, ভেঙ্গে পড়ে ঘর, মন হারায় অঙ্গ, অঙ্গ হয় যন্ত্র।
হারিয়ে যায় প্রাণ ধাতব যন্ত্রের নিচে।
কখনো ঘাস গজায় তবু পরিত্যক্ত ধাতব যন্ত্রের নীচ হতে,
ক্ষুদে শৈবাল স্বপ্ন দেখেঃ যন্ত্রকে গ্রাস করে নতুন জীবনের সমারোহ,
নাকি সেও নিতে চায় যন্ত্রের রূপ! এ বড়ই জটিল প্রশ্ন আজ ঘুরপাক খেয়ে ঘোরে যন্ত্রের শরীরে শরীরে।
অজানা পাখির ডাকেরও ভাষা থাকে, তবু চলমান যন্ত্রের শব্দরা বড়ই কর্কশ অর্থহীন।
কখনো এমন শব্দ মনে করিয়ে দিতে পারে একটু বেশীই শীতল ঘরের হোমিওপ্যাথির মিষ্টি গন্ধ!
যার নিচে চারকোলে পুড়ে কাজ করে যায় আধা সেদ্ধ মাংসের জীবন্ত দলা!
সেই খুঁজে ফেরা আসন তাই কেবলই নামহীন এক সমাধির চিহ্ন।
মনমরা কবিতা তাই নিশ্চুপে বুনে যায় কথা, গিট থেকে গিটে, একান্তে বেধে চলে প্রাণ।
কেউ শুনুক আর নাই শুনুক ঘুমোতে যাবার সময় একটু জীবনের মহাগান।

পাপ ও প্রেম – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

এখানে সকলেই ঘৃণিত অথবা ঘৃণ্য।
যে যার অক্ষে, সাজানো কপট সৌজন্য।
রাজার প্রতি প্রজা, প্রজার প্রতি রাজা,
পথে-ঘাটে জনসমুদ্র ঘৃণার অরণ্য,
নরকের স্তর এখানেই শুরু।

প্রতিটি ধাপে সাজানো সুতীক্ষ্ণ ফাঁদ,
বাস্তুচ্যুত আত্মার আঁধারের বর্ধন ক্রমাগত,
কোমল স্নায়ুর বুননে প্রবেশ করে,
অলীক ভ্রাতৃত্বের ভ্রান্ত সুর, মন্ত্রণা অবিরত।
চিনে যেতে যেতে বেড়ে উঠা চিরন্তন বৈষম্য,
থাকুক মোড়কে মোড়ানো, চেতনার, প্রেমের,
চেতনা জাগে কপট প্রেমের, ঘৃণা যার মজ্জায়!
পঙ্কিল সাগর অবগাহনের আহবানে ডুবে যায়,
ডুবে যায় আনমনে আফিমের নেশায়।
গ্রাস করে সময়, শুধু পড়ে থাকে জীর্ণ নগ্ন প্রেম।
মাঝরাতে কড়া নাড়ে কাম? নাকি বিস্মৃত অনুভব!

ভ্রুকুটি করে বয়েস, আর গালির কটাক্ষ ।
যেন ছককাটা চক্রের মায়া,
আস্তে আস্তে ডুবে গিয়েও, নিশ্বাস ছাড়া বেঁচে থাকা।
অলীক নরকের তাড়না যেন শিখিয়ে দিলো,
কিভাবে ছুঁড়ে ফেলতে হবে সবকিছু আগুনে!
পাপী আর মহৎ, পাপ আর সৎকার্য,
এ সবকিছুর আধো-আঁধারিতে,
লুকিয়ে থাক, হেমলক গুল্মবিষ।

তাতে কিই বা আসে যায়,
কামকে ভর্ৎসনা করে প্রেম, প্রেমকে কাম,
প্রেমের ছুতোয় খুন, বা খুনের ছলনায় প্রেম,
এ সবই এক সময় এক হয়ে মিশে রয়,
মিশে রয় কালো চিতার মতো।
মৃতের বিস্ফোরিত চোখের মতো জেগে থাকে,
অন্ধকারে জ্বলজ্বলে তাকিয়ে রয়,
নিষ্পাপ অনুভূতি শুধু।
যেকোনো সময় চিতা ঝাঁপিয়ে পড়বে কোন;
অবেলার প্রেমের বল্গার পর।
অঘ্রাণের কাটা ধানের নাড়ায় ছুটাছুটি চলে,
নরকের নোংরা ইঁদুরের!
আর কেউ পেয়ে যাবে আবারো ছুতো-
আরেকটা পঙ্কিল ভাবনার।
সব কিছু মনে হয়, আজ তাই এখানেই,
অনাদি আর আদি এক সাথে মিশে যায়।
তীব্র প্রেম নিয়ে আসে পাপ, কিংবা রিপু রাশিতে ভাসে আবেগ।
একে একে ঘনীভূত অন্ধকারে লুকিয়ে পড়ে
আলোক বিন্দু;
যেমন ঝলমলে আলোর নিচেই খেলা করে;
চিরন্তন প্রহসন।
বেঁচে থাকতে চায় প্রেম,
কিংবা প্রথম প্রহরের বিমুগ্ধতা।
বেঁচে থাকতে চায় কাম,
কি সাদা কালোর প্রহেলিকা।
মৃত্যু খুঁজে ফেরে জীবন,
কিংবা জীবনের আশ্রয় মৃত্যু,
প্রিয় স্পর্শ হয়ে যায় সাধারণ,
ভাত আর রুটির রেশন।

তাই ভালোবাসা খুঁজে ফেরে ঘৃণা,
প্রেম গড়ে তোলে ঘর জিঘাংসার,
একটা পুনর্জন্ম খুঁজে ফেরে ধ্বংস,
পুরোনো পাপ, আর খড়-বাতাস।

দেয়াল জুড়ে জমে থাকে নোংরার আস্তর,
একেই আঁকড়ে জন্মায় ফুল জংলার উপর।
প্রতিটি ঘৃণার পেছনে যেমন স্পন্দন মন্ত্রণার,
থাকে এক প্রাচীন সুপ্ত উদ্বাস্তু ভালোবাসার।

অথবা, কামের দেয়াল আর ঘৃণার নিরেট পটে,
সকলের অগোচরে যেমন জন্মায় নতুন প্রেম।

সীমাহীন পর্ব – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

(একটি রুমী অনুপ্রেরণা)

এমনটা যে আজ, এ যেন সীমাহীন পর্ব ছুটি;

ইচ্ছে হলেই বরণ করে নেয়া যায় কোন বর্মহীন যুদ্ধ;
গান যদি ছুঁয়ে যায় হৃদয়, হোক তাল লয় অশুদ্ধ।

আমরা যেন থোকা থেকে ঝরা, পথে পড়ে থাকা,শস্য দানার দল;
শত পদ পীড়নেও শাঁসটুকু খোলসের ভাঁজে, থেকে যায় অবিকল।

দৃষ্টি উপশম হোক আজ তাই দৃষ্টি শূন্যতায়
দুর্বিপাক তাই লোপ পাক দৈব ঘনঘটায়।

আজ সর্বত্রই পর্ব, বিশেষ দিন, সর্বত্র ছুটি হয়ে বড় মায়াময়,
আলো চাই, আলো আসুক তবে সে কোন নক্ষত্রের আলো নয়।

ভ্রান্ত ছক – মোঃ ওয়াসিউর রহমান [Bengali Poetry]

কোন একটা দিন হয়তো ছকের মতোই সাজানোভাবে পার হয়ে যায়।
বেশীরভাগ দিনগুলোই ছকের আশেপাশে দিয়ে ঘুরে তবু ছকেই চলে আসে।
কিছু কিছু দিন বড্ড বেয়াড়া, ছক থেকে বের হয়ে, নিজের ছক তৈরী করে।
কোন একটা রাতের সিংহভাগ কেটে যেতে পারে, হয়তো খুব চেনা কোন স্টেশনে বসে।
হয়তো হুট করেই কোরাল লাল চোখের কাউকে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে, ট্রেনের সময়।
অকপটেই হয়তো উত্তর পাওয়া যাবে, কবেই সে ট্রেন চলে গেছে!
একদল ধর্মপ্রাণ কে পাওয়া যেতে পারে, স্টেশনের নামাযের মাদুরে আশ্রিত।
হয়তো একদল যুবকের নির্বিকার আড্ডা, যেন কোনও তাড়াই নেই!
সকল তাড়াগুলো যেন মিইয়ে যেতে পারে স্টেশনের একফালি চত্বরে।
একফালি চত্বর কখনো যেন এক টুকরো সমাজের চিত্র প্রদর্শনে ব্যস্ত।
সকল ব্যস্ততা ছুড়ে ফেলে দেখে যেতে হয় তার কলা প্রদর্শন!
লুলো ফকির, উদ্ভ্রান্ত ভবঘুরে, ভিখারি নারী, মধ্যরাত জাগা শিশুর দল।
বেড়ে যাক সার ডিজেলের দাম তবু, ওরা ঠিকই ভেসে বেড়াবে!
কোন ছক না থাকাটাই ছক যাদের, যখন প্রতিনিয়ত ছকের সমান্তরালে জন্ম নেয় ছকহীন জীবন।

মোঃ ওয়াসিউর রহমান | Md. Wasiur Rahman

সুমিতা চৌধুরী | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

বিকাশ চন্দ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

তিন্নির ফড়িং আর মানুর কারসাজি | গল্পগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Story 2023

মহা রফিক শেখ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

তারা | পথের নেশা | অন্য কোন রাত | আত্ম-প্রতীক্ষায় | ব্যবচ্ছেদ | মৌলিক অনুভূতি | মায়া ও সত্য | কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ | অকারণ | অনুভূতি | ভালোবাসার অনুভূতি | আবেগ অনুভূতি | কিছু অনুভূতি | অনুভূতি ক্যাপশন | অনুভূতি প্রতিশব্দ | জীবনের অনুভূতি | অনুভূতি পিকচার | মায়া – বাংলাপিডিয়া | প্রেম ও প্রকৃতি | মায়া ও মুক্তি | মায়া কাটানোর উপায় | মায়া ও ভালোবাসা | মায়া স্ট্যাটাস | মায়া কাকে বলে | মায়া সভ্যতা বই | মায়ার স্বরূপ কি ব্যাখ্যা করো | মায়া উক্তি | ভালোবাসা এবং মায়া | মায়া নিয়ে উক্তি | কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ | শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ | সন্ধ্যার কোন এক চায়ের দোকান | বাস্তুহারা অর্থরা | পাপ ও প্রেম | সীমাহীন পর্ব | ভ্রান্ত ছক | চায়ের দোকানের সুলুক সন্ধান | সন্ধ্যা হলেই জমে আড্ডা | চায়ের আড্ডা ফিরছে ভিন্ন রূপে | পশ্চিমবঙ্গে চায়ের দোকানে মানুষ | চায়ের দোকানে সামাজিক দূরত্ব | সন্ধ্যার এক কাপ লাল চা | খুলনায় সন্ধ্যার পর চায়ের দোকান | টিএসসিতে চায়ের দোকান | অন্যরকম চায়ের দোকান | আধুনিক চায়ের দোকান | চায়ের দোকান অনুচ্ছেদ | চায়ের দোকানের ব্যবসা | চায়ের দোকানের সুন্দর নাম | চায়ের ব্যবসা | ৫৭ লাখ মানুষ বাস্তুহারা | ইরাকের বাস্তুহারা শিশু | যুক্তরাষ্ট্রে বাস্তুহারা আফগান | প্রেম পাপ ও প্রার্থনার কবিতা | পাপ ও দুঃখের কথা | প্রেম মানে এক মিষ্টি পাপ | প্রেম নয় পাপ | লোভে পাপ | প্রেম কোনো পাপ নয় | প্রেম করা কি পাপ | সমলিঙ্গে প্রেম পাপ নয় | কফিনে বন্দি পাপ ও প্রেম | সীমাহীন ভালোবাসার নীড় | ভালোবাসা সীমাহীন | অল্প পাগলামি সীমাহীন ভালোবাসা | গোবির সীমাহীন শূন্যতায় | সীমাহীন সীমানা | চীন-রাশিয়ার সীমাহীন সম্পর্ক | স্বেচ্ছাসেবার অনুভূতি সীমাহীন | ছক বাঁধা শব্দছক | ছক মুভি | ছকবাঁধা অর্থ | ছক ওয়েব সিরিজ ডাউনলোড | ছক অর্থ | শহরের মূল প্রবেশপথ অর্থ | পরিবীক্ষণ-ছক | চিত্র:ষোল গুটি ছক | ছক ভাঙা শব্দরা | শব্দ হাজার ছক মজার |

Maya Satya | Vasthuhara | Prem O Paap | Watch Prem-O-Paap | bengali poetry | bengali poetry books | bengali poetry books pdf | bengali poetry on love | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | poetry collection submissions | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2022 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | new poems rilke | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | power poetry | master class poetry | sweet poems | found poem | poetry night near me | poem about myself | best poets of the 21st century | christian poems | prose poetry | poetry international | poetry pdf | free poem | a poem that tells a story | beat poetry | poetry publishers | poem and poetry | def poetry | heart touching poetry | poetry near me | prose and poetry | poem on women empowerment | identity poem | quotes by famous authors and poets | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | poems about hope in hard times | allama iqbal best poetry | black female poets | african american poets | poems to comfort the grieving | poems about loneliness | romantic poetry in english | encouraging poems | joy harjo poems | best poetry lines | short poems on values of life | female poets | poetry quotes about life | poem about faith | dark poems | uplifting poems | new poetry | Shabdodweep Founder

Leave a Comment