Bengali Story 2023 | তিন্নির ফড়িং আর মানুর কারসাজি | গল্পগুচ্ছ ২০২৩

Sharing Is Caring:

তিন্নির ফড়িং আর মানুর কারসাজি [Bengali Story]

ভোরবেলা তিন্নি হারমোনিয়াম নিয়ে বসেছে গলা সাধতে। দক্ষিণ দিকের জানালা খোলা আছে।নীচের তলায় বারান্দায় ঠাম্মা বসে বসে জপ করছিলেন।একটা ফড়িং এই সময় কোথা থেকে উড়ে এলো তিন্নির ঘরে। দখিনা বাতাসের সাথে ফড়িং এর নাচ আর তিন্নির ভৈরবের তান মিশে গেল ঘরের ভিতর।সাধনা করা তো আর কম কথা নয়-!

তাই তিন্নি ভীষণ মনোযোগী হয়ে ভৈরবের সুরে ডুবে আছে, কখন যে ঘরে ফড়িং ঢুকেছে তিন্নি জানে না। ধীরে ধীরে ভোরের আলো আরও একটু ফর্সা হল। তিন্নি হারমোনিয়াম বন্ধ করে এবার উঠতে যাবে, এমন সময় ঐ ফড়িং উড়ে এসে গায়ে বসল। তিন্নির গায়ে সুড়সুড়ি অনুভূত হওয়ায় চেঁচিয়ে উঠল। “ও—মা গো— কি একটা গায়ে উঠেছে !”

ঠাম্মা নীচে বসে জপ করতে করতে চিৎকার শুনতে পেয়ে হাঁটু হাতে ধরে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসে দ্যাখে একটি ফড়িং বসেছে তিন্নির পিঠে। ঠাম্মা হাসি চেপে রেখে গায়ে হাত দিয়ে ফড়িং তাড়ান আর মুখে বলতে থাকেন, – “হেই—! যা ! বেহায়া ফড়িং !” ফড়িং উড়ে চলে গ্যাছে অনেকক্ষণ, তবুও তিন্নির ঘোর কাটে না। ঠাম্মা তিন্নিকে নিয়ে নীচে নেমে এলেন। একথা সেকথায় তিন্নির মন অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা চলল। এইভাবেই ঘন্টাখানেক কেটে গ্যাছে। সকাল সাতটা বাজে। স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ির সকল ছোট ছেলে মেয়েরা প্রস্তুত হয় নয়টা বাজলে। তার আগে স্কুলের খাতার কাজ করে রাখে। তাই সাতটা বাজলেই ওরা বই খাতা নিয়ে বসে পড়ে। কিন্তু তিন্নি একটু অন্যরকম। রাতে সব খাতার কাজ সেরে রাখে।

“মা—, ও মা আমার স্কুলের ড্রেস গতকাল কেচে রেখেছিলে–?” তিন্নির খুড়তুতো ভাই মনোজ এই কথা বলতে বলতে ঠাম্মার আদর খেতে চলে গেল। ক্লাস সিক্সে পড়া ছেলেটা এখনও আদর খায়। এই নিয়ে তিন্নির মনে রাগ হয়।ঠাম্মা যে কখন কাকে ভালোবাসে? তিন্নি ক্লাস ফাইভে পড়ে।সে মনে করে মনোজের থেকে ও আরও একটু ছোট,তাই আদর তার বেশি প্রাপ্য।মনোজের মা এতক্ষণে স্কুলের ইউনিফর্ম এনে মনোজকে ডাকতে থাকে।তারপর,মনোজ দৌড়ে চলে যায় ঠাম্মার কাছ থেকে।মা’কে বলে,”আচ্ছা, মা বলো তো ছেলেরা বেশি আদর খায়,মেয়েরা কম, তিন্নির কি হিংসা !”

মনোজের মা সুপ্রভা জানায়, “না ,না ওসব কিছু না,মেয়েরা বড় হলে শ্বশুর বাড়ি চলে যায়,তাই ওরা বাপের বাড়ির আদর সব এইবেলাতেই খায়,পরে আর সেভাবে পায় না তো?”
মনোজ কিছু একটা বুঝে চুপ থাকে। আর কিছু বলে না।
ঠাম্মা এসে বললে, “ঠিক আছে,স্কুল থেকে বাড়ি ফিরলে তিন্নিকে বেশি আদর করব, মানুকে কম”।
তিন্নি ভীষণ খুশি হয়ে মনোজকে বুড়ো আঙুল দেখাতে দেখাতে ঘরে চলে গেল।ঠাম্মা মনোজকে ছোট্ট থেকেই মানু বলেই ডাকেন। এরপর, তিন্নি চুপিচুপি ঠাম্মার ঘরে আসে।

“–ও ঠাম্মা, ভোরবেলার কথা তুমি কাউকেই বলবে না।”

“কোন্ কথাটা?”

“ঐ ফড়িংয়ের কথা,আমি তো স্কুলে যাব।তখন যেন কাউকেই বলবে না”।

“আচ্ছা”।

তিন্নির বাবার অফিস থেকে ফিরতে প্রতিদিন রাত হয়ে যায়, তাই ওর সাথে বেশির ভাগ সময় দেখাই হয় না। তিন্নি সব দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠতে পারে না।যেদিন ওঠে সেদিন ওর বাবার সাথে দেখা হয়। বাবা বলে, “তিন্নি, গানবাজনা আর পড়াশোনা ঠিক ঠাক হচ্ছে তো?”সে উত্তর দেয়,

“হ্যাঁ, বাবা সব ঠিক চলছে”।

বাবার কথা হল, “পরীক্ষার ফলাফল দেখলেই বোঝা যাবে।”
তিন্নি হেসে দৌড়ে পালায়। ওর ভাই দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাই ওর সাথে খেলতে ভালো লাগে না। খুব ছোট, খেলতে গেলে সব উল্টোপাল্টা করে দেয়। পাতা লুকিয়ে রাখলে বলে দেয়, কোথায় পাতা আছে।রুমাল চুরি খেললে, পিঠে যেন একটা বড় তাল পড়ে। এইসব কারণে, সে মানুর বোনের সাথে খেলা করে।

পুজোর ছুটি পড়ে গ্যাছে। বাড়িতে এই চার পাঁচজন ছেলে মেয়ে মিলে ওদের বেশ কেটে যায়। তার মধ্যে ঠাম্মা একজন। পুজোর সময় ওরা হৈ হৈ করে সময় কাটিয়ে দেয়। ঠাম্মা দলের নেতা মানুষ। তার কাছে সবাই সব অভিযোগ করে।আবার খেলার সময় হলেই ঠাম্মা খেলার সাথী হয়ে যায়। পুজোর কয়েকটা দিন বাদ দিয়ে বাকি সময় খেলা, গান, গল্প সবই চলে। তিন্নি খুব ভালো গান করে। ওর গলায় যেন জাদু আছে। ফড়িং, প্রজাপতি সব নাচতে থাকে। দুপুরে ঘরে অন্তাক্ষরী চলে। ছোট্ট ভাই সরোজও এই খেলাতে অংশ নেয়। ঠাম্মার কন্ঠ এই বয়সেও সুমধুর।ভীষণ ভালো গায়। অন্য ঘর থেকে বাড়ির সবাই কান পেতে থাকে তাদের শাশুড়ি মায়ের গান শুনবে বলে। তিন্নি বলে, “ঠাম্মি, তুমি তো লতা মঙ্গেশকরকেও ছাড়িয়ে যাও, কি করে গাও বলো তো অত সুন্দর?”

ঠাম্মা জোর হেসে ওঠেন। তারপর গল্প শুরু করেন রাক্ষস খোক্ষসের। সবাই চুপ করে শুনতে থাকে। গল্প বলতে বলতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে যায় তারা কেউ বুঝতে পারে না। সব চেয়ে ছোটটা তো ঘুমিয়ে পড়ে।তার গায়ে চাদর চাপা দিয়ে দেন ঠাম্মা।

হঠাৎ করেই একদিন ঠাম্মা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঠাম্মার এই পুরো টীম যেন ঝিমিয়ে গেল। তাদের মনে পড়তে থাকল, ঠাম্মার সাথে সেই হাসি মজার দিনগুলো। সরষে ক্ষেতের ধারে ঘুরতে যাওয়া, রাক্ষসের গল্প, স্নানের সময় ছোট সরোজকে তেল মাখানোর কথা, ফড়িং তাড়িয়ে দেওয়া, ইত্যাদির কথা মনে পড়তে থাকল। তারপর কার কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাবে ছোট্ট ছোট্ট ব্যাপার নিয়ে এসব ভেবে মনোজ, তিন্নি আর মানুর বোন শ্রেয়া মন খারাপ করতে থাকে। ঠাম্মা সব বুঝতে পেরে তাদের কাছে ডাকেন।তিন্নিকে মন দিয়ে গান করতে বলেন, কারণ ওর কন্ঠের শব্দে ফড়িং,পাখি,প্রজাপতি সব নেচে ওঠে। তিন্নি শুনে কাঁদে আর বলে,”আগে তুমি ভালো হয়ে যাও, তারপর গান করব”।

ঠাম্মা রেগে গিয়ে বললেন, “আমি ঠিকই ভালো হয়ে যাব, তোমরা সব ফাঁকিবাজ হয়ে যাচ্ছ! শুনলাম,মা বাবার কথা শুনছো না! ফোন নিয়ে বসে থাকছ— এসব চলবে না!”
অসুস্থ অবস্থায় ঠাম্মা এবার উঠে বসলেন।

নৈহাটি থেকে পিসিমণি এসেছে। ঠাম্মার অসুস্থতার খবর পেয়ে। তিন্নিকে খুব ভালোবাসে পিসিমণি।আদরে আদরে তিন্নি সবার আদুরে-কন্যা হয়ে গ্যাছে। মনোজ ঠিক করল, পিসিমণির মনে ওর নিয়ে বিষিয়ে দিতে হবে।”সব ভালোবাসা শুধু ওর জন্য?যখন শ্বশুর বাড়ি যাবে এ বাড়ির আত্মীয় হবে, তখনও সবাই ওর সেবা যত্ন করবে, তাহলে কি এই মনোজের কোনও অধিকার নেই ভালোবাসা পাওয়ার?”
মনোজ পিসিমণির ঘর গুছিয়ে রেখেছে। সোফার উপর পিসি গিয়ে বসতেই তিন্নি ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরল। পিসিও চুমু দিতে দিতে খুব আদর করল। এবার উঠতে যাবে এমন সময় পিসিমণি কিছুতেই সোফা থেকে উঠতে পারছে না। কাউকে কিছু বলতেও পারছে না। তিন্নিকে আবার ডাকল পিসিমণি।

তারপর বলল, “আমাকে টেনে তোল”। সে তো অবাক! পিসি কি বলছে! এই তো ঠাম্মার সাথে দেখা করল ভালোই ছিল। তবুও চেষ্টা করল। পারল না পিসিকে তুলতে। এবার মনোজকে ডাকল। ওরা দুজনে টানতে শুরু করল হাত ধরে।পিসি বলল, “ওরে ছেড়ে দে, আমার হাতের কলকব্জা খুলে চলে যাবে, পিছন থেকেই তো কেউ টেনে আছে, তোদের বাড়িটাই তো ভুতুড়ে হয়ে গ্যাছে।”
মনোজ বলল, “অ্যাই–তিন্নি, তুই কিছু করিস নি তো?”
আমতা আমতা করে সে বলে ওঠে, “আমি আবার কি করব!”
“না, কিছু না, এমনি বললাম” – বেশ জোর দিয়েই কথাটা বলে ফেলল। মানুকে এবার সন্দেহ করল সে। তারপর সোফার এদিক ওদিক কিছু খুঁজছে সে।একটা ফেভিকুইক আঠার টিউব পেল।

“পিসি—মণি–, তুমি উঠবে কি করে? এই দ্যাখো, টিউব!”
“ও — মা,তাইতো! সব শেষ করেছে,এতে আর একটুও নেই যে,কার কাজ?”
মানু তৎক্ষণাৎ তিন্নির দিকে আঙুল তুলল। তিন্নি মানুর দিকে। এইভাবে দুজনের মধ্যেই গন্ডগোল বাধল।ছোট্ট সরোজ এসে বলে, “এ্যাই-দাদা, আমি দেখেছিলাম, তুই ওটা সোফাতে লাগাচ্ছিলি।”
সরোজকে তেড়ে মারতে উদ্যত হলে, পিসি কোনও রকমে সোফা সমেত সরে এসে মানুকে টেনে ধরল। এতো গন্ডগোল শুনে অসুস্থ ঠাম্মা উঠে এসে ওদের থামালেন। কিন্তু পিসির পিছন থেকে কিভাবে আঠা ছাড়ানো যায়?
সবকিছুই যেন কেমন লাগছে? দুই জা এলো। তিন্নির মা আর মানুর মা। ওদের হাতে কেরোসিনের বোতল আর ন্যাকরা ছেঁড়া। ঐ দিয়ে চেষ্টা করে সকলে মিলে টেনে টুনে পিসিমণিকে সোফা থেকে আলাদা করল। এসব দেখে শুনে ঠাম্মা প্রায় সুস্থ হয়ে উঠলেন।আর বললেন, “এদের মানুষ না করে আমি শান্তিতে মরতেও পারব না”।

নূপুর [Bengali Story]

ঋতম একা সেন্ট্রি ডিউটিতে ছিল। সারারাতের এই অন্ধকারে যে একা একা থাকতে হবে কখনও ভাবেনি। ব্যারাকপুরে পুলিস ক্যাম্পাসে তখন ট্রেনিং পিরিয়ড চলছে।এক এক দিন এক এক জনের নাইট ডিউটি থাকে এই জায়গাটিতে।বেশ আলো আঁধারি স্থান।আবার যখন অমাবস্যার রাতে ডিউটি চলি তখন তো কথায় নেই! ঋতম ভাবল, মনের জোর না থাকলে তো পুলিশের চাকরি করাই যাবে না।

৭নং ব্যাটেলিয়ানের প্রত্যেকটি ছেলেই যেন সুপার হিরো। তিনকড়ি সাহা পুরো বিল্ডিং এর চারপাশ একপাক করে ঘুরে নিতেন।দুঁদে অফিসার,সবাই ঠিক আছে কি এবং কর্তব্যনিষ্ঠ হয়েছে কি একবার দেখে নেওয়া তার কাজ ছিল। রাত দশটার পর তাঁকে দেখা যেত না।নিজ কোয়ার্টার এ ফিরে যেতেন। এই সেন্ট্রি ডিউটি ছেলেদের মধ্যে থেকে একজনকেই দেওয়া হতো।পুরো বিল্ডিং এর এক প্রান্তে এক যুবক আর অন্য প্রান্তে আর একজন।কেউ কাউকেই দেখতে পায় না, কথা বলা তো দূর।

অন্ধকার রাতে ঋতম একা একপ্রান্তে। তার বিপরীত মেরুতে কে আছে সে জানেও না।ঠিক এই অবস্থায় কানে এলো নূপুরের শব্দ।এতো রাতে নূপুরের শব্দ কোথা থেকে ভেসে আসছে তা দেখার জন্য টর্চের আলো ফেলে এদিক ওদিক দেখল।কিন্তু কেউ নেই।আবার তার কর্তব্যে মনস্থ করল। আবার সেই শব্দ ভয়ে হাত পা জড়োজড়ো হোল।
প্রশ্ন করল,”কে ওখানে? কে?”
কোনও উত্তর এল না। তারপর মনে হল, কে যেন দৌড়ে চলে গেল।আর নূপুরের শব্দ আরও জোরালো হল। ভয়ে প্রস্রাব পেল। কিন্তু নড়তে চড়তে পারল না। তৎক্ষণাৎ কিছুটা বের হয়েও গিয়েছে। তারপর ওখানেই দুম্ করে পড়ে গেল। কেউ টেরও পেল না।

ভোরবেলা একজন মর্নিং ওয়াক করতে করতে এদিকে এসে ঐ অচেনা যুবককে দেখে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায়।তারপর সেলফোন বের করে কোথাও যেন ফোন করে।ব্যারাক থেকে কয়েকজন এসে চোখে মুখে জল দিয়ে ওকে তুলে নিয়ে যায়।
সে বেশ ভয়ে ভয়েই আছে।এরপর,মাঠে গিয়ে পি.টি. প্যারেড,তারপর দৌড়ানো এসব করতে করতে ভয় কেটে গেল।এই অভিজ্ঞতার পর ঐ জায়গায় ডিউটি শোনালে সে আগেই স্যারকে বলে স্থান বদলে নেয়।কিন্তু ঐ ঘটনা সে কাউকেই বলে না।

পরের দিন, সমীরের ডিউটি পড়ল ঐ জায়গায়। এই জায়গাটিতে রাতে একা এলেই যেন গা ছমছম করে।খুব ভয়ংকর জায়গা। কিছুটা এগিয়ে গেলেই গাছপালা,ঝোপঝাড়।এইরকম জায়গায় মশার কামড়ও আছে। সমীর জানে না এই জায়গা কতখানি ভয়ংকর। তবে গা ছমছম করতে লাগল। তবু, মনে জোর আনল।নিজের মধ্যেই কথোপকথন শুরু করল।

“পুলিশের চাকরি করতে এসে ভূতের ভয় পেলে চলে না কি?”

“ধুর্! ভূত বলে কিছু  নেই”।

“রাম লক্ষ্মণ সকলেই আছেন, ভূত বলে কিছু  নেই”।

এসব ভাবতে ভাবতেই কানে এলো ঘুঙুরের শব্দ।হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে নিল কটা বাজে।রাত সাড়ে বারোটা।চারিদিকে টর্চের আলো জ্বেলে দেখে নিল। নাঃ! কেউ নেই।তবে ঘুঙুরের শব্দ?
“কোনও রাতের পাখির কাজ নয় তো?”
ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষায় রইল। বেশি সাহস দেখাল না।

পরদিন, সমস্ত ঘটনা সবিস্তারে সমীর ক্লাসের মধ্যে ঊর্ধ্বতন প্যারেড টিচার তিনকড়ি স্যারকে বললেন। তখন উনি ছেলেদের বললেন,”যেদিন তোমাদের ট্রেনিং শেষ হবে এবং সকলে এখান থেকে বিদায় নেবে তার আগের দিন বলব ঐ শব্দ আসলে কি?”

সকলে তো আরও ভয়ে ভয়ে রইল। আসলে এটাও ছিল তাঁর একটা পরীক্ষা। ‘কার কতো মনের জোর দেখা যাক’।

ট্রেনিং-এর শেষে বাড়ি ফেরার আগের দিন তিনকড়ি স্যার যে গল্প বললেন, তা এইরকম -“ব্রিটিশ আমলে এখানে এক জলসাঘরে নর্তকীদের ঘুঙুর পরে নাচতে হত। তারপর,রাত শেষ হলে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যেত না।তাদের আত্মারা এখনো এখানে হাসে,কাঁদে,নাচ করে।ওরা মুক্তি পায়নি।অনেকেই সেই হাসি এবং কান্নার শব্দ শুনেছে গভীর রাতে।এমনকি নিস্তব্ধ দুপুরেও নূপুরের শব্দ শোনা গ্যাছে।” এসব শোনার পর, ঋতমের আর সমীরের গলা শুকিয়ে গেল।বোতল থেকে জল নিয়ে গলা ভেজাতে লাগল। স্যার এসে সমীরের পিঠে একটা আদরণীয় চাপড় মেরে বললেন,”এগিয়ে যাও”।

একটি স্বাধীনতার গল্প [Bengali Story]

মিলি জঙ্গল বিভাগের আইনত একজন কর্মী।মেয়েমানুষের রিজার্ভ ফরেস্টের চাকরি খুব একটা ভালো নয়। একথা ভবতোষ বাবু অনেকবারই বলেছেন। মিলির বাবা প্রায়ই বলতেন মিলিকে এই বিভাগ ছেড়ে অন্য  বিভাগে একটি পদ খুঁজে নিতে। মিলি নাছোড়বান্দা এইখানেই।মেয়ে বলে এইসব চাকরী করা যাবে না এ কেমন কথা? মিলির বাবা ভবতোষ ঠিক করলেন, এবার মেয়েটার বিয়ে দিয়ে দিই। মিলি প্রথমে রাজি হতে চায়নি। অনেক পরে রাজি হল একটি শর্তে। তাকে চাকরী করতে দিতে হবে।বাবা পাত্রপক্ষকে রাজী করালেন। ছেলেটি একটা কলেজের অধ্যাপক।আর মিলি বিভাগ বদলে এ.ডি.এস্.পি পদে নতুন জেলায় পোস্টিং।

বিয়ের দুবছর পরেই তাদের এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ধীরে ধীরে এক সেবিকার কাছে বড় হয়ে উঠতে থাকে।মিলির সংসার সম্পর্কে জ্ঞান খুব কম ছিল। বাড়িতে অন্যান্য সদস্যদের সাথে বেশি মিশতেও পারত না। রিভলভার আর ইউনিফর্মের যত্ন একটু বেশিই জানত।
শাশুড়ি মা ডাকলে বলত, ‘আসছি মা, আপনি খেতে বসুন’ এটুকু কথাই তার শোনা যেত। শিশুকন্যার নাম অরুন্ধতী। পাঁচ বছরের হয়েছে। মায়ের আদর খুব কম পেত।

একদিন হঠাৎই দুপুর থেকে অরুন্ধতীকে পাওয়া যাচ্ছে না।এইতো একটু আগেই সেবিকা সরলা তাকে নিয়ে খেলা করছিল। হাতে একটি তেরঙা পতাকা ছিল। আদো আদো মুখে – “বন্দেমাতরম্”উচ্চারণ করছিল। সরলা ওকে রেখে উঠানের মধ্যে একবার বাথরুম গেল।তারপর বাইরে এসে থেকেই খুঁজে পাচ্ছে না। চারিদিক তন্ন তন্ন করে খুঁজে পেল না। তার বাবা নিশীথ রায়ের কাছে ফোন করল।কলেজ থেকে বাড়ি এলো।তারপর ওর মা মিলি খবর পেয়ে দৌড়ে এলো। বাড়িতে কোথাও নেই তা বুঝতে পেরে মিলি জেলার সমস্ত পুলিশের ফোর্সকে সজাগ করে। কান্না পেলেও নিজেকে দুর্বল হতে দেয়নি মিলি। সমস্ত চোরা-পাচারকারীদের আড্ডায় হানা দিল। আগামীকাল পনেরই আগস্ট। ডিপার্টমেন্টে চাপ আছে।কিন্তু এই মুহূর্তে কিছু করার নেই।

অন্ধগলি পতিতা পল্লির দিকেও তল্লাশি চলল। ছদ্মবেশে মিলি ওখানে গেল। অন্দর মহলে উৎসব চলছে ওদের।দীপ্তিবাঈ নামে ঐ মহলে প্রবেশ করল।মহলের ভিতরে তাকে স্বাগত জানাল ঊর্মিবাঈ। কিছুক্ষণ নাচ গানের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে চোখ কান সজাগ রাখল চারিদিকে। ‘দেওয়ালের উপর ও কিসের দরজা?’ প্রশ্ন জাগল। তারপর ধীরে ধীরে এক পা এক পা করে এগিয়ে গেল ঐ দরজার দিকে।সবাই যখন আনন্দে মশগুল।ঠিক তখনই ঐ দরজাতে টোকা মারল মিলি। মানে দীপ্তিবাঈ। কান পাতলো। কারা যেন ভীষণ কাঁদছে। ওরা বলছে,”আমাদের বাঁচাও–,আমাদের বাঁচাও–“। মিলি ফোন হাতে নিয়েছে যখনই তখন ওর উপর সকলে নজর রাখছে। তার মধ্যেও কষ্ট করে, ফোনে বলল, ‘তোমরা পুরোটা ঘিরে ফেলো আর ভিতরে চারজন এসো।’ দীপ্তিবাঈ সজোরে আঘাত করল দরজাতে। একটি পাল্লা খুলে গেল।ওরা ভয়ে জড়ো।বাইরে আসার চেষ্টা করল না।ওরা চারজন আসার পর ভিতরের সকলকে গাড়িতে এনে তুলল।দশজন বালিকা আর কিশোরী।দীপ্তির সাথে যুদ্ধ লাগল ভিতরের অমানুষগুলোর সাথে।দুজনকে কুপোকাত করল।একজন কে গুলি।বাকিরা দৌড়ে পালাল।

থানায় তাদের আনা হলো। সকলের নাম ঠিকানা জানতে চাওয়া হচ্ছে তখনই মিলি এখান থেকে চলে গেল। ওরা এবার নিজের মা বাবার কাছে ফিরে যাবে। কিন্তু ছোট্ট অরুন্ধতী কোথায় গেল? বাড়িতে শোকের ছায়া। মিলি এগিয়েই চলেছে তার মেয়ের খোঁজে।সমস্ত ডিপার্টমেন্ট তার জন্য নেমে পড়েছে তল্লাশি করতে। মিলি এবার একটু ভেঙে পড়ল। তারপর তার জঙ্গলের জঙ্গীদের কথা মাথায় এলো।অধ্যাপক বাবার চোখে জল। মিলি দলবল নিয়ে সেই জঙ্গলমহলের দিকে রওনা হলো। অনেকদূর যাওয়ার পর গাড়ির ভিতর থেকে দেখল একটি ছোট্ট শিশু গাছের তলায় বসে খেলা করছে। গাড়ি থামিয়ে সেইদিকে এগিয়ে গেল।

–‘এই তো আমার অরু,আমার সোনাই’!

চারদিকে কারা যেন বন্দুক উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যুদ্ধ করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।আগামীকাল দেশের মধ্যে দেশের জাতীয় পতাকা তুলতে না দেওয়াই হলো তাদের উদ্দেশ্য। আগে থেকেই মিলি একথা বুঝতে পেরেছিল।তাই জেলা এবং জেলার বাইরের সমস্ত পুলিশ বিভাগকে এ্যালার্ট করে দিয়েছিল। মেয়ের সাথে মাকে একসাথে মেরে দেওয়ার হুমকি। ওদের দাবি মানতে হবে। ওরা কিছুতেই ওদের দুজনকে ছাড়বে না।

উপর মহল থেকে নির্দেশ এল গুলি চালানো হোক। গুলি চলল, মিলি বুদ্ধির খেলা দেখিয়ে ছোট্ট অরুকে নিয়ে রাস্তায় এলো। গাড়িতে উঠল।

এদিকে গোলাগুলি চলতে থাকল। স্বাধীনতার দেশে কতটুকু নিরাপত্তা তা দেখল সারা দেশ। পরদিন সংবাদ শিরোনামে ঘটনা জ্বলজ্বল করছিল। আর দেশের পতাকার উড়ন্ত দৃশ্য। তার নীচে লেখা -“সত্যমেব জয়তে”।

অশরীরীর পলায়ন (ভৌতিক গল্প) [Bengali Story]

নীলিমা কলেজ থেকে আজ একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি এসেছে। ওর বাবা জানত না নীলিমা বাথরুমে, তাই ওদিকে যাচ্ছিল কাজ সারতে। হঠাৎই বুঝল কেউ ভিতরে আছে।তাই বারান্দার বাইরের ওয়াশরুমে যেতে হল। পরিতোষ সেন, মানে নীলিমার বাবা ভীষণ ভাবে খুঁজে চলেছে ওদের পোষা কুকুর সন্টুকে। ওকে দেখতে না পেয়ে নীলিমা এদিক ওদিক খুঁজতে থাকে। উঠানে ফুল গাছের কাছে গিয়ে সন্টু—, সন্টু— এই বলে চিৎকার শুরু করল।বাবা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে সন্টুর মতো মুখে শব্দ করে। নীলিমা ছুটে আসে এদিকে এবং বাবাকে দেখে জোরে হেসে ওঠে।কিন্তু সন্টু গেল কোথায়—?

“আজ কি তোদের তাড়াতাড়ি ছুটি হয়েছে?”নীলিমা মুখে বিস্কুট চিবোতে চিবোতে বলে-‘হ্যাঁ,আজ তাড়াতাড়ি ছুটি হয়েছে,পাঁচ পিরিয়ড ছিল।’টেলিভিশনে শো চলছে পাঁচটা থেকে অন্য ঘরে। দুম্ করে একটা শব্দ। নীলিমা ছুটে গেল ওর ঘরে।পরিতোষ চায়ের কাপ রেখে দৌড়ে গেল টেলিভিশনের ঘরে। সবাই চুপচাপ। কোনও গন্ডগোল নেই।তাহলে এই শব্দ এলো কোথা থেকে?

নীলিমার ঘরে আলো জ্বলল।খাটের নীচ থেকে একটা অদ্ভুত শব্দ এলো।সাহস করে টর্চ জ্বেলে দেখে,কে যেন শুয়ে আছে রক্তাক্ত অবস্থায়!ভয়ে জড়ো হল নীলিমা।দ্বিতীয়বার দেখার সাহস হল না।দৌড়ে বাইরে এলো। গলা শুকিয়েছে রীতিমত। বাবাকে আমতা আমতা করে নীলিমা সে কথা জানায়।টর্চ নিয়ে পরিতোষ দেখল কিছুই নেই। নীলিমাকে সাহস দিল।

সারা ঘরে আলো জ্বেলে রাখল। সন্টুরতো দেখাই নেই। কাদের বাড়ি যে গেছে—? নীলিমা সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে শুয়ে পড়ল। হঠাৎই বিদ্যুতের আলো নিভে গেল। 

সন্টুর করুণ শব্দ কানে এলো। উঠে বসল।

মোমবাতি জ্বেলে সোজা হয়ে বসে রইল কিছুক্ষণ। কোন্ দিক থেকে সন্টুর শব্দ এলো, জানার জন্য এদিক ওদিক নিরীক্ষণ করল।এবার দেওয়ালে দেখল সেই অদ্ভুত রক্তাক্ত মানুষের ছবি। যেন নীলিমার দিকেই তাকিয়ে আছে শিউরে উঠল সে।গলা থেকে শব্দ বের হল না।

ওদিকে মা ডাকাডাকি করছে। সন্টু ফিরে এসেছে।সারা মুখে বিস্কুটের গুঁড়ো মেখে এসেছে। সন্টু কিছুতেই নীলিমার ঘরের ভিতর যেতে চাইল না। নীলিমার বাবার সন্দেহ হল। ওর বাবা নিজেই ঘরের দিকে গেল। দরজায় ধাক্কা দিল। কিন্তু শব্দ নেই।দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকল।নীলিমা অবচেতন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে।তারপর, মনে হল, কে যেন ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না পরিতোষ।

পরদিন, গুরুদেবকে ফোন করে সব জানালো। তিনি এলেন বাড়িতে। বড্ড ভয়ানক কথা বললেন।নীলিমাকে বের হতে নিষেধ করলেন এক সপ্তাহ। ঘরে কি সব দিয়ে গেলেন।গুরুদেব দুদিন পর এসে দেখলেন সব ঠিক আছে কি?কিন্তু নীলিমা এই দুদিন কেমন শুকিয়ে গেছে।বন্ধুদের সাথে ফোনে কথা বলে। কিন্তু মন ভীষণ খারাপ লাগছে। গুরুদেব তার ঘরে গিয়ে বসলেন। নীলিমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, এই দুদিন কিছু দেখেছে কি?ও শুধু ঘাড় নাড়ল-না, কিছু দেখেনি।কিন্তু গুরুদেবের চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে গেল। দম ফেলতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।

—মন্ত্র জপতে লাগলেন। অশরীরীর উপস্থিতি সকলে টের পেল।তাকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। কিন্তু ও যেতে চাইল না।বলল, সন্টুর মধ্যে ওর সন্তান লুকিয়ে আছে। “গেলে ওকে নিয়ে যাব”। নীলিমা সন্টুকে খুব ভালোবাসত। তাই কান্নাকাটি শুরু করল। কিন্তু এ তো মানা খুব কঠিন কাজ!সকলকে মুক্তি দিয়ে অশরীরী আর সন্টুর মধ্যে যে আর একটি আত্মা ছিল তা চিরকালের জন্য চলে গেল। সন্টুর আত্মা ওর শরীরেই ছিল নীলিমা না বুঝেই চিৎকার করে উঠল। গুরুদেব তাকে শান্ত করলেন। 

কিছুক্ষণ পর সন্টুর চেতনা ফিরল। নীলিমার আনন্দে আকাশ বাতাস আনন্দিত হল।

বন্দনা পাত্র | Bandana Patra

সুমিতা চৌধুরী | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

মোঃ ওয়াসিউর রহমান | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

বিকাশ চন্দ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

মহা রফিক শেখ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023

অশরীরীর পলায়ন | খেলা অশরীরীর ম্যানশন | অশরীরীর উপস্থিতি কী ভাবে বুঝবেন | প্রেতপুরী | শূন্য শুধু শূন্য নয় | ভূতের গল্প | ভৌতিক গল্প সংকলন | রোমহর্ষক ভৌতিক গল্প | মহামারির ভূত | বাংলার ভূতের গল্প | বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভূতের গল্প | ভৌতিক গল্প ২০২৩ | ভূতের গল্প ২০২৩ | নূপুর শব্দের অর্থ | প্রেম – নূপুর বেজে যায় | নূপুর শর্মা – উইকিপিডিয়া | নূপুর শর্মা কি বলেছে | নূপুর বানান | নূপুর অর্থ | নূপুরের শব্দ এক কথায় প্রকাশ | নূপুরের ধ্বনি | নূপুর নিয়ে কবিতা | নূপুর দিয়ে বাক্য রচনা | কে এই নূপুর শর্মা | নূপুর কাণ্ডে আরও বিপাকে ভারত | নূপুর শর্মাকে হুমকি | একটি স্বাধীনতার গল্প | স্বাধীনতার গল্প | স্বাধীনতার গল্প শোনো | স্বাধীনতা দিবস | মুক্তিযুদ্ধের গল্প | স্বাধীনতার গল্প কবিতা | ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের গল্প | মুক্তিযুদ্ধের অজানা গল্প | মুক্তিযুদ্ধের সেরা ছোট গল্প | মুক্তিযুদ্ধের ছোট গল্প | ৭১ এর গল্প | স্বাধীনতার কবিতা | স্বাধীনতার গল্প শুনি | স্বাধীনতা দিবসের কবিতা | স্বাধীনতা দিবসের দিন | স্বাধীনতার ৭৫ বছর | বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ | স্বাধীনতা আমার | বাংলা সাহিত্যে দেশভাগ | স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব | ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস | স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য | বিজয়ী সেনাদের গল্প | স্বাধীনতা দিবসে তরুণদের ভাবনা | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২৩ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

Horror Story 2022 | Vuter Galpo | Nupur Sharma | nupur sharma husband | nupur sharma wikipedia | is nupur sharma married | nupur sharma age | nupur sharma father | nupur sharma instagram | nupur sharma news | nupur sharma engagement | Independence Day 2022 | Republic Day 2022 | 75th Independence Day | bengali poetry | bengali poetry books | bengali poetry books pdf | bengali poetry on love | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | top latest bengali story | poetry collection online | poetry collection in urdu | poetry collection submissions | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2022 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | world bengali story | new poems in hindi | new poems rilke | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | bengali story new | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali story books for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali story books pdf | bengali story for kids | bengali story reading | short story | short story analysis | short story characteristics | short story competition | short story definition | short story english | short story for kids | short story generator | bengali story 2023 | short story ideas | short story length | long story short | long story short meaning | long bengali story | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2022 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | poetry competition crossword | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | bengali story writing | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | bengali story dictation | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bangla article rewriter | article writing | article writing ai | article writing app | article writing book | article writing bot | article writing description | article writing example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | article writing format | article writing gcse | article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | bengali story news| article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment