ডাঃ অনিরুদ্ধ পাল – সূচিপত্র [Bengali Story]
বন্যার বিভীষিকা – ডাঃ অনিরুদ্ধ পাল [Whatsapp Bangla Golpo]
প্রকৃতির শক্তি বিভিন্ন রূপে বিভিন্নভাবে আমাদের কাছে প্রকাশ পায়। অরণ্য-প্রান্তর,নদী,পাহাড়, সমুদ্র এগুলি প্রকৃতির দান যা থেকে আমরা সবাই উপকৃত। অরণ্য আমাদের পরম বন্ধু। নদীর করুণাধারায় ধরণী হয় শস্যবতী। নদী হলো সভ্যতার সমৃদ্ধ প্রেক্ষাপট। একদিকে নদী মানুষের কীর্তি রচনা করে, অন্যদিকে অন্যরূপে কীর্তি নাশ করে। একরূপে মঙ্গলা, শুভদা; অন্যরূপে সংহারকারিণী। মানুষ একদিন এই নদীকেই প্রয়োজনের তাগিদে বাঁধ দিল, সেতু-শৃঙ্খলে বন্দী করলো। প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়ায় নেমে এলো প্রকৃতির অভিশাপ। বন্যা তারই ভয়াবহ রূপ। অবশ্য বন্যার মূল কারণ অতিবৃষ্টি ও জলনিকাশের সংকীর্ণ পথ।
বন্যা হয় জলবিদ্যুৎ -সংশ্লিষ্ট জলাধার থেকে একই সময়ে বহুল পরিমাণে জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে।মাঝে মাঝে গঙ্গা ইত্যাদি নদীতে সামুদ্রিক বান ডাকে। ফলে নদী নালায় ওপরের দিকে জল নিকাশে বাধা সৃষ্টি হয়। সেই বানের জন্যেও হয় বন্যা। ফারাক্কার গঙ্গায় তৈরী হলো ব্যারেজ। এতে গঙ্গা পদ্মার খাত মজলো। ফলে পদ্মার বন্যা ঠেলা মেরে মাথাভাঙ্গা, জলঙ্গী, চূর্ণি, ইছামতী দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্লাবিত করলো। নিম্নাংশে কাঁসাই, হলদিয়ায় সুষ্ঠু জলনিকাশের সুষ্ঠু ব্যবস্থা হলো না। কংসাবতী বাঁধ নির্মাণ করা হলো। কোন নদীতে বাঁধ দিলে নিম্ন উপত্যকায় বন্যা প্রবণতা বাড়ে। নদীতে জলস্ফীতি, সেতু ও ব্যারেজ তৈরীর ভুলত্রুটির জন্যও বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যা আসে, বন্যা চলে যায়। কিন্তু তার ক্ষতচিহ্ন রেখে যায়। ১৯৪৩, ১৯৫৬, ১৯৫৯, ‘৭৩,’৭৮, ‘৮৭,’৯১, ‘৯৮, ২০০০ এবং তার পরেও মাঝে মাঝে বন্যার সংহারকারিণী রূপ দেখা গেছে। ১৯৭৮ সালে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে দেখা দেয় নজিরবিহীন বন্যা। অতি বর্ষণে জলবন্দী হয়ে পড়ে বিভিন্ন জেলার অসংখ্য মানুষ।
মনে পড়ে অতি-বর্ষণে জলস্ফীতি হওয়ায় দামোদর নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যার জল হূ হূ করে আমতা, উদয়নারায়নপুর, বড়গাছিয়া, দক্ষিণবাড়ী, ডোমজুড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ঢুকে পড়ায় ঐ সমস্ত অঞ্চলের বেশীর ভাগই জলের তলায় চলে যায়। অনেক মানুষ ও গবাদিপশু বিপদের সম্মুখীন হয়। ঐ সময় আমতা, পানপুর, উদয়নারায়নপুর প্রভৃতি জায়গা থেকে কিছু মানুষ যাদের কালীঘাট, লেকমার্কেট, গড়িয়াহাট, বৌবাজার ইত্যাদি স্থানে হাঁড়ি -মালসা, শালপাতা, বেতের ঝুড়ি এসবের ব্যবসা আছে, তাঁরা এক হাঁটু কোথাওবা এক কোমর জল ভেঙে কলকাতা যাওয়ার পথে আমাদের ডোমজুড় দফরপুরের বাড়ীতে এসে উঠেছিলেন। তখন আমাদের ছিল একান্নবর্তী পরিবার। ঠাকুরমা, বাবা-মা, কাকা-কাকীমা, দাদা-বৌদি, দিদি,ভাই-বোনেদের নিয়ে মিলেমিশে বেশ আনন্দেই থাকতাম। সেদিন রাতে আমরা অতিথিগণের সঙ্গে সকলে মিলে একত্র ডিনার সারলাম। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমাদের দফরপুর পঞ্চাননতলার জমি বেশ উঁচু হওয়ায় সেখানে বন্যার জল জমেনি, যদিও কিছুটা দূরে বন্যার জল এসে গিয়েছিল। সেদিন রাতে ডিনারের পর অতিথিদের শোবার ব্যবস্থা করা হলো। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রাতঃকৃত্যাদি সারার পর তাঁদের চা-বিস্কুট দেওয়া হলও। তারপর জলযোগ করার পর তাঁরা কলকাতা অভিমুখে রওনা দিলেন। কারণ, সেখানেই তাঁদের ব্যবসার স্থান এবং এই ব্যবসা করেই তাঁদের সংসার চলে।
১৯৭৮ সালের বন্যার আরও কিছু ঘটনা আমার পিসতুতো ভাই বিলু (জগদীশ পাল) আমাকে জানিয়েছে। এব্যাপারে মেদিনীপুর কোলাঘাট অঞ্চলে তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা যা আমাকে জানিয়েছে তা এখানে তুলে ধরবো। তিন চারদিন যাবৎ সূর্যের চেহারা দেখার সৌভাগ্য দক্ষিণবঙ্গের কারও হয়নি। সময়টা ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বর। ভয়াবহ বন্যা! খারাপ সংবাদ ছাড়া আর বড় খবর নেই বললেই চলে। চারিদিকে শুধু বাঁধভাঙা, ঘর-বাড়ী পড়ে যাওয়া, রাস্তা-ঘাট ডুবে যাওয়ার সংবাদ। এরকম অবস্থায় বিলু তার সঙ্গী-ভাইকে নিয়ে ঠিক করলো ভাইয়ের জন্মভিটা বাগডিহা গ্রামে যাবে। কোলাঘাট থেকে চার-পাঁচ ক্রোশ দূরে বাগডিহা গ্রাম। অধুনা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত। ওখানে থাকে সঙ্গীর নিকট আত্মীয়রা। বিলুদের বাড়ী দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার বজবজের সন্নিকটে কালীপুরে। এখানে বাঁধ ভাঙেনি বটে, কিন্তু পাড়ার রাস্তা ঘাট, পুকুর, নদী- নালা, জলাশয় সবই ডুবে একাকার। এরূপ অবস্থায় জীবনে প্রথম বন্যা দেখার অদম্য ইচ্ছে মনকে ব্যাকুল করে তুলেছে। সঙ্গী যখন একটা পাওয়া গিয়েছে তখন আটকায় কে?
যেদিন যাবে বলে ঠিক করেছিল, তার আগের দিন কিছু আলু ও আটার ব্যবস্থা করে বিলু তার মাকে বললো, “মা, সঙ্গীভাই-এর দেশের বাড়ী বাগডিহা যাব বন্যার দৃশ্য দেখতে। তাই আমাদের জন্য রুটি ও আলুসিদ্ধ করে দাও।”
মা বললো, “গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ, রাস্তাঘাট জলে ডুবে গেছে। তা যাবি কেমন করে?”
বিলু বলে, “আগে তো চেষ্টা করি, পরে দেখা যাবে। না যেতে পারলে — কী আর করবো, ফিরে আসবো।”
বাইরে প্রবল বৃষ্টি। এমন দুর্যোগের মধ্যে দুজনে দুটি সাইকেল আর পূর্ব-নির্ধারিত রসদ নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। ভোর পাঁচটায় প্রথম পাড়ি। গ্রাম থেকে নদীর পাড় বরাবর নৌকা পারাপার করে। ওপারে হাওড়া জেলার চেঙ্গাইল স্টেশন। ওখান থেকে ট্রেনে যেতে হবে।।
অল্পক্ষণের মধ্যে ওরা দুজনে পূজালি ফেরীঘাটে পৌঁছাল। কিন্তু হায়! পারাপারের ব্যবস্থা নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নদীতে খরস্রোত। আবর্তসঙ্কুল জলরাশিতে দুকূল প্লাবিত। যা পূর্বে তারা কখনও দেখেনি। সঙ্গে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ।
রেনকোট ছিল না। পরনে পলিথিন কাগজ জড়ানো। তা হোক। কিন্তু এরূপ আশাহত হবে সেটা বিলু ভাবেনি। উচ্ছ্বাস তো কম নয়! তারা চললো অন্য কোন ফেরীঘাটে। ওবাবা, সেখানেও তদ্রূপ অবস্থা। বিপদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা ছাড়বে না। তারা সম্পূর্ণ বোকা বনে গেলো। বিলু ও তার সঙ্গী হতাশ হয়ে গিসলো।। কিন্তু পুনরায় নতুন উদ্যমে তারা পূজালি ফেরিঘাটে ফিরে এলো। ক্রমশঃ বেলা বাড়তে লাগলো। ঘাট মালিক তখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। বেলা ১০-৩০ নাগাদ ঠিক হলো নৌকা ছাড়বে। তারা নতুন আশায় বুক বাঁধলো। তারা যাবেই। তাই কাল বিলম্ব না করে সাইকেল নিয়েই নৌকায় চড়ে বসলো। দাঁড়ি-মাঝিসহ সর্বমোট ১৫ জন। ঘাটের মালিক উপর থেকে হাঁক দিলো – “এবার ছাড়ো “।
অনতিবিলম্বে দাঁড় জলে পড়লো। সকলেই প্রাণের আশা ত্যাগ করে চললো। স্রোত এত প্রবল ছিল যেন নৌকাকে তাদের প্রতিকূলে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো। মাঝি অতি সন্তর্পণে হাল ধরলো। একটু অন্যমনস্ক হলে এতগুলির প্রাণ নিয়ে টানাটানি। ছপাৎ ছপাৎ করে দাঁড় জলে পড়ছে, আর তারাও একটু একটু করে পর পারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এভাবে তীরের অদূরে প্রায় এসে গেছে, এমন সময় এলো ভীষণ বিপদ। মাঝির হাত থেকে হাল ছেড়ে গেছে। যাত্রীসব হায় হায় করে উঠলো। দুজনেই আঠারো পার, রক্ত টগবগ করে ফুটছে। তাই ভয় তাদের এতটুকুও কাবু করতে পারেনি। তবু যেন একটু পিছুটান। ঘরে মা-বাবা, ভাই-বোন, বৃদ্ধা ঠাকুমাতো আছে!
জলের ঘূর্ণাবর্তে নৌকা দু-তিন পাক ঘুরে গেল। মাঝি হাত বাড়িয়ে হালটা ধরার চেষ্টা করলো। কিন্তু তাকে বাগে আনতে বেশ বেগ পেতে হলো। যাক সে যাত্রায় রেহাই। তরী তীরে ভিড়লো। যাত্রীরা আস্তে আস্তে অবতরণ করলো। সকলেই মাঝিকে বাহবা দিতে লাগলো। ওপারের নীচু রাস্তাঘাট জলে ডুবে গেছে। সাইকেল কখনো চলে, কখনো একহাঁটু জলে কোথাও বা এক কোমর জলে ডুবে গেলে টেনে টেনে নিয়ে যেতে হয়। বেশীরভাগটাই হেঁটে উলুবেড়িয়ায় পৌঁছাতে হলো। তারপর বোম্বে রোড। ওহো! এত চওড়া রাস্তা, কিন্তু গাড়ীর দেখা নেই। এখানেও কখনো পায়ে হেঁটে, আবার কখনো বা সাইকেলে চেপে তারা চললো। রাস্তার দু’ধারে জল শুধু জল। কোথাও বা রাস্তা ছাপিয়ে জল ছুটছে। মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে মৃত জীব-জন্তুর ভাসমান দেহ। মাঝে মাঝে রাস্তার দু’ধারে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী ছাউনি। ছাউনির মধ্যে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলের সঙ্গে মানুষের সহবাস। যারা পোষ্যকে সামলাতে পারেনি, তারা ছেড়ে দিয়েছে। তাদের কেউবা গাছের ডালে, কেউবা ডুবে যাওয়া ঘরের চালে আশ্রয় নিয়েছে। বিলু উদাস মনে ভাবতে থাকে। তখন বুঝতে পারে না প্রকৃতির এই নির্মম খেলা কবে শেষ হবে।
হঠাৎ একটি ছাউনি থেকে এক বৃদ্ধ ছুটে এসে বিলুদের পথ আটকালো। জিজ্ঞেস করলেন,”ভাই, বলতে পারো, ‘শতমুখী’-র বাঁধ ভেঙেছে কি – না?”
প্রশ্ন শোনামাত্র বিলু উত্তর দিলো,”না”।
বৃদ্ধ ভদ্রলোক বিলুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, “আশীর্বাদ করি, বেঁচে থাক বাবা।”
আসলে বিলুরাও জানতো না, শতমুখীর বাঁধ ভেঙেছে কি-না। বৃদ্ধ মানুষটির সন্তুষ্টির জন্য ঐকথা তারা বলতে বাধ্য হয়েছিল। আবার তাদের যাত্রা শুরু হলো। যতই তারা এগোচ্ছে, ততই পচা দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। মনে হচ্ছিল, সমুদ্র যেন তার পরিধি বহুগুণ বাড়িয়েছে। জলের রং প্রায় হলুদ। খেচর প্রাণীরা আহারে ব্যস্ত। এত আহার একত্রে যা তারা ভেবেই পাচ্ছে না। এভাবে এগোতে এগোতে তারা কোলাঘাট ব্রিজের কাছে পৌঁছাল। ব্রিজে উঠলো। ব্রিজের উপর কয়েকশো মানুষ। সেখানে যেন রীতিমতো বাজার বসে গেছে। কেউ শুকনো চিঁড়ে-মুড়ি, গুঁড়ো দুধ, কেউবা বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে বসে। তবে এসব জিনিসের দাম খুবই চড়া। কিছুটা এগিয়ে তারা ব্রিজ থেকে নামার জন্য প্রস্তুত হলো।এখানে গন্ধটা একটু অন্যরকম। পচা পাটের গন্ধ নাকে এলো। ব্রিজ থেকে নেমে কোলাঘাট বাজারের দিকে গেলো। বাজারের রাস্তাটা বেশ উঁচু। পথটি জেগে আছে বটে, কিন্তু দোকান-পাট অর্ধেকের বেশী জলে ডুবে। এখানে মানুষের আনাগোনা খুবই নগন্য।
সঙ্গীর আদি বাড়ী ছিল বিলুদের গন্তব্যস্থল। সে পথে Relief Boat চলছিল। তবে দিনে একবার, কেবলমাত্র সকালের দিকে। সুতরাং সে সময় ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। মনের দোদুল্যমান অবস্থা। অগত্যা ফিরে আসতে হয়। মনটা তাদের খুবই খারাপ। এদিকে সন্ধ্যা আসন্নপ্রায়। ভাগ্যক্রমে সঙ্গীর এক দূর আত্মীয়র সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে গেল। এ যেন সোনায় সোহাগা। ওনার বাড়ী কোলাঘাট বাজারের কাছেই। আমাদের এত উৎসাহ দেখে ওনার মনে দয়া হলো। উনি দায়িত্ব নিলেন আমাদের আবার উনি রিলিফ বোটের মাধ্যমে যথাস্থানে পৌঁছে দেবেন। আমাদের মন আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। তখন আবার ঝমঝম করে বৃষ্টি নামলো। এমতাবস্থায় উনি পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন যাতে আমরা ওনার বাড়ী যাই। বিলুদের মনে হলো, যারা বিপদের মধ্যে আছে তাদের আরও বিপদের মধ্যে ঠেলে দেওয়া তাদের উচিৎ নয়। তা সত্ত্বেও নিরুপায় হয়ে ওনার আতিথিয়েতা গ্রহণ করতে তারা বাধ্য হলো। চারিদিক অন্ধকার। বাড়ীর মধ্যে হ্যারিকেনের আলো মিটমিট করে জ্বলছে।
একটু আশ্রয় পেয়ে বিলুদের মনে হলো তারা যেন স্বর্গ পেয়ে গেছে। তারপর আশ্রয় দাতার কাছে তাদের গন্তব্যস্থলের যে ভয়াবহ বিবরণ তারা শুনলো তা অনির্বচনীয়। “বাগডিহা” নামে যে গ্রামে তাদের যাওয়ার কথা ছিল সেটি ও তার আশেপাশের গ্রাম সম্পূর্ণ জলমগ্ন। সেখানে একতলার সমান জল। সঙ্গে নদীর জলের মতো স্রোত বইছে। গ্রামবাসীরা উঁচু স্কুলবাড়ীতে, কেউবা পঞ্চায়েত নির্মিত আশ্রয়স্থলে, আবার কেউবা প্রতিবেশীর দোতলায়। পানীয় জলের নিদারুণ অবস্থা, জল দুষিত হয়ে গেছে। গৃহপালিত পশুদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা জলে ভাসতে ভাসতে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে। মনুষ্যগণ কোনক্রমে অনাহারে বা স্বল্পাহারে দিন কাটাচ্ছে।
এমন সময় গৃহকর্ত্রীর ডাক। রাতের আহার করতে হবে। তারা রাতের আহার সেরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিল। তারপর একটি বিছানায় তারা শুতে গেল। সারাদিনের ধকলের পর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লো। রাতটুকু কাটিয়ে পরদিন সকালে প্রাতঃকৃত্যাদি সেরে জলযোগ সেরে উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারায় বাড়ীতে প্রত্যাবর্তন করার জন্য মনস্থির করলো। তারা বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল। পরে যখন এই ঘটনার কথা মনে পড়ে তখন তাদের মনটা নিদারুণ ব্যথায় ভরে ওঠে, মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে।
বন্যা মানুষের কাছে একটা আতঙ্ক। কিন্তু বন্যা শুধু ধ্বংস করে না। বন্যা অন্যদিকে ধরণীকে নতুন সাজে সজ্জিত করে। পলি ছড়িয়ে জমিকে উর্বর করে। পৃথিবীকে করে শস্যশ্যামলা। প্রাকৃতিক বিপর্যয় তো থাকবেই। কিন্তু আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, কর্মনিষ্ঠায়, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে বন্যার মোকাবিলা করতে হবে। বিজ্ঞান আমাদের সহায়, দুঃখ হরণের হাতিয়ার। হোয়াংহো নদীও একদিন চীনের মানুষের কাছে ছিল দুঃখের কারণ। সেই নদীই মানুষের সাধনার কাছে বশ মেনেছে। উন্নত প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে বন্যা বিদায় নেবে। সে যেন আর বাসস্থান না ভাসায়। হরণ না করে মানুষের শস্য-ভাণ্ডার, অমূল্য জীবন।
ডাঃ অনিরুদ্ধ পাল | Aniruddha Pal
Bengali Article 2023 | পরিবেশবাদী দৃষ্টিকোণ ও রবীন্দ্রনাথের ‘মুক্তধারা’ নাটক
Best Bengali Story 2020 | কিছু নই | শওকত নূর
New Bengali Article 2023 | সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা
Suryamukhi | সূর্যমুখী | শওকত নূর | Best 2023
Whatsapp Bangla Golpo boi | Shabdodweep Web Magazine | Sabuj Basinda | High Challenger | New Whatsapp Bangla Golpo | 2023 Whatsapp Bangla Golpo | Whatsapp Bangla Golpo in pdf | Whatsapp Bangla Golpo sangraha | Collection of Whatsapp Bangla Golpo | Best selling Whatsapp Bangla Golpo | Natun Whatsapp Bangla Golpo | Full Whatsapp Bangla Golpo | Whatsapp Bangla Golpo – Aniruddha Pal | Shabdodweep Writer | Story Writer | Whatsapp Bangla Golpo Library | Whatsapp Bangla Golpo Archieve | Whatsapp Bangla Golpo video | Whatsapp Bangla Golpo in mp3 | Shabdodweep Writing Competiton | Story Writing Competition | Golper competition | Publish your story | StoryMirror | Pratilipi | Audio Whatsapp Bangla Golpo | Video Whatsapp Bangla Golpo
বন্যার বিভীষিকা | অসমে বন্যার বিভীষিকা | কমেনি বন্যার বিভীষিকা | বন্যায় মৃত্যু ও দুর্ভিক্ষের বিভীষিকা | বিভীষিকা বন্যা | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প