Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis | Best Article

Sharing Is Caring:

অ্যাডোনিস: সিরিয়ার কবিতা – তন্ময় কবিরাজ

একটা চেনা গল্প হতে পারত, যে গল্পের নাম হয়তো জসীমউদ্দীন বা সমর সেন।কিন্তু জীবন বড়ই অদ্ভুত। সময়ের সঙ্গে পালটে যায় সবকিছুই। তাই বাবার সঙ্গে মাঠে যাওয়া, বাবার পাশে বসে কোরআন শোনা,সেই ছেলেটাই হয়ে উঠলো অ্যাডোনিস। পুরো নাম আলী আহমেদ সৈয়দ আসবার। জন্ম সিরিয়ায়,সাল ১৯৩০। দ্যা গার্ডিয়ান তাঁকে বলেছিলেন,”দ্যা গ্রেটেস্ট লিভিং পোয়েট অফ আরব ওয়ার্ল্ড। “১৯৫৪সালে দামাস্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীকালে সিরিয় সমাজতান্ত্রিক দলে যোগ দেন এবং তার জন্য তাঁকে ছয় মাস কারাদন্ড ভোগ করতে হয়। অ্যাডোনিস প্রাণখোলা, ধর্মনিরপেক্ষ একজন মানুষ।তিনি তাঁর মুক্ত চিন্তায় কবিতাকে নিয়ে গেছেন বিশ্বের দরবারে। চেনা ছকের বাইরে আরবের কবিতায় এসেছে অন্য গতি। প্রায় ২৯টির মত কাব্যগ্রন্থ, ত্রিশটির কাছাকাছি সমালোচনামূলক লেখা তাঁর সৃষ্টিতে। অ্যাডোনিসের চিন্তা, কাব্যশৈলী ব্রিটিশ কবি এলিয়টের সঙ্গে তুলনীয়।

২০০২সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন,”দেয়ার ইজ নো মোর কালচার ইন দ্যা আরব ওয়ার্ল্ড। ইটস ফিনিশড। উই আর এ পার্ট অফ ওয়েস্টার্ন কালচার বাট ওনলি আস কনজ্যুমার, নোট আস ক্রিয়েটরস।”এখানেই রবীন্দ্রনাথ আর তিনি একই সুতোয় বাঁধা পড়ে যান। পশ্চিমের প্রতি অতি দুর্বলতার কারণেই নড়ে যাচ্ছে সংস্কৃতির ভিত,স্বকীয়তা হারাচ্ছে সভ্যতা। ভোগবাদী হচ্ছি আমরা,কিন্তু সৃষ্টি করতে পারছি না কিছুই। অথচ এতদিনের পুরোনো ইতিহাস আমাদের, তার ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ নেই। আরব তো একটা রূপক মাত্র। গোটা সভ্যতা যেন ধ্বংসের দিকে হামাগুড়ি দিচ্ছে।

তাঁর লেখায় ছিল দম্ভ আর বিশ্বাস যা একটা জাতির সজাগ মেরুদণ্ডের প্রতীক হয়ে দাঁড়াতে পারে। তিনি শিল্পের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। তাঁর লেখায় তিনি বলেছেন,”আপনি একটি শব্দ বা চিত্রকর্মকে অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করতে পারেন না।”দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদিক জালাল আল আজম অ্যাডোনিসকে একজন স্বাধীনচেতা,প্রগতিশীল,আধুনিক মানুষ বলে সম্বোধন করেছেন। স্যামুয়েল হাজও তাঁর লেখা অনুবাদ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য লেখা সিলেক্টেড পয়েমস্, মিহিয়ার অফ দামাস্কাস, দা ব্লাড অফ অ্যাডোনিস ইত্যাদি। তিনি লিখেছিলেন, “আই ইমাজিন এ পোয়েট ইন্টু ওহুস হিস্টরি পৌরস, ড্রিচিং হিস ওয়ার্ডস এন্ড পুলিং আট হিস ফিট।” তাঁর “একা জমি” কবিতায় তিনি নিঃসঙ্গতার কথা বলেছেন, তিনি শব্দের সন্ধান করেছেন। কেউ নেই চারপাশে, মায়ার দোসর হয়ে শুধু মৃত্যু যেন শুয়ে আছে!-

“পলাতক শব্দে আমার বাস
আমার মুখে নিঃসঙ্গতার অবয়ব
আমার মুখেই তার নির্বাণ

যদি তোমার নাম ধরে ডাকি
সে তো মায়াবী, আরও একা
যদিও সেই আমার মৃত্যু!”

অ্যাডোনিস সময়কে বুঝতে চেয়েছেন, সময়ের কাছে হেরে গেছে স্বপ্ন বাসনা। আহত মনের ভেতরে ভালবাসা নেই, কথা বলার মত কেউ নেই।আবার গুমোট চারপাশে পালাবার ঠিকানাও নেই।সে কথাই লিখেছেন কবি তাঁর “আহত”কবিতায় –

“চার্চের ঘণ্টায় অসহায় শব্দরা
তোমাকে যন্ত্রণা উপহার দেবো
যে পাথর ভাঙা ছিল
আজ ছাই হয়ে উড়ে গেছে বহুদূর -“

১৯৫৭সালে সিরিয়া লেবানিজের কবি ইউসুফ আল খান সম্পাদিত “মাজাল্লা”পত্রিকায় তাঁর কবিতা প্রকাশ হবার পরেই বিতর্কের জন্ম হয়। ১৯৮০সালে গৃহযুদ্ধের সময় তিনি ফ্রান্সে চলে যান। তাঁর কবিতায় উঠে এসেছে নয়া সুফিবাদ। হেইথাউস লিখেছিলেন, “আই হোপ ইউ ক্যান টক অ্যাবাউট হাউ পোয়েট্রি রেসপন্ডস ওর এক্সিস্টস উইথ ওয়ার্ল্ড ইভেন্টস।”কবিতাকে যদি বিশ্বের দরবারে নিয়ে যেতে হয় তাহলে কবিতার ভেতর থেকে খুলে ফেলতে হবে অলংকারের মোড়ক, আঁতেলপনা।কবি হয়ে উঠবে অসহায় মানুষের প্রতিবাদের কন্ঠস্বর।

কবিতার ভেতর থাকবে না কবির গর্ব, কবির সার্থকতার থেকে যাবে, কবি মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছে।কবি বিক্রি হয়না,কবিতা বিক্রি হয়। কবিতার মধ্যে কবির আর্তনাদ।”একটিও তারা নেই”কবিতায় কবি অ্যাডোনিস ও বৃটিশ কবি ম্যাথু আর্নল্ড এক সারিতে। আর্নল্ড ডোভার বিচে দাঁড়িয়ে উলঙ্গ নুরি দেখে ছিলেন,আর অ্যাডোনিস দেখছেন গুহার ভেতরে। সংশয় এতো গভীর যে এতদিনের বিশ্বাসে ফাটল ধরাচ্ছে, আলগা হচ্ছে বাঁধন। অবিশ্বাসের পথে জীবন আর কতটা পথ হাঁটতে পারে,এখন সেটাই দেখার।

“উলঙ্গ পাথরের মত সে
গুহার ভেতর তার চিৎকার
ক্রমশ হালকা হচ্ছে
পৃথিবীকে ঘিরে বেঁচে থাকা। “

কবি দেখতে পাচ্ছে দূরে ধ্বংসের হাতছানি। সূর্যের মেটাফরে আলো ঢেকে যাচ্ছে গভীর অরণ্যে, অন্ধকারে সৌন্দর্য ম্লান,ফিরে আসে আতঙ্ক।কবি জানেন , সভ্যতা এভাবেই চলবে শেষের পথে কারণ আমরাই সরে গেছি মূল থেকে।তাই প্রেম বেঁচে থাকলেও প্রেমিক হয়তো বাঁচবে না আর।তবু অস্থির সময়ে নবজাতকের স্বপ্ন দিন বদলাবে একদিন, শান্তি ফিরবে।”মানুষের গান”কবিতায় কবি লিখেছিলেন,
আমিও দেখেছি সূর্য
তোমার কালো হাতের গহ্বর
গভীর বনে মিশে যাচ্ছে ইচ্ছেরা
ঝুড়ির ভেতর রাত্রি
এভাবেই চলছে শহর
তোমার সামনেই আমার অস্থিতে ক্ষয় –
আমি দেখেছি
তোমার মুখে ক্ষুধিত শিশু
তবু আশাবাদী
পড়ে থাক ফুলের কুঁড়ি।”

কবি নস্টালজিক। মাঝে মাঝে ফিরে যান শৈশবে। বুঝতে পারেন শৈশব আর পরিণত বয়সের বিস্তর ফারাক।তবু মনে হয়, অতীতের স্মৃতি যেন আজও “ব্লিস অফ সলিটিউড”, নিঃসঙ্গতার আশীর্বাদ হয়ে পাশে দাঁড়ায়।তিনি সেদিনের দিনগুলোকে সমান্তরাল নদীর সঙ্গে তুলনা করেন।তিনি জানেন এসবও একদিন ঝরে যাবে, তবু যত দিন দেহে প্রাণ আছে ততদিন স্মৃতির সুখ ভোগ করতে চান কবি। তাঁর “শব্দ শুরু” কবিতায় তিনি লিখেছেন,

“শৈশবে যখন প্রথম এসেছিল
নীরবতার পাশে হেঁটে যাওয়া
সঙ্গে প্রবাহিত অদ্ভুত এক নদী

আমরা জেনেছি নিজেদের
কখনও কাছে, কখনও দূরে
সবুজ গাছের মিছিলে
ভিজে যায় সময়ের স্রোত

শৈশব
এতো আপন করে নিল
কি আর তাকে বলবো বলো?”

শান্তির খোঁজে তিনি বারবার ছুটে গেছেন শৈশবে।ব্রিটিশ কবির ব্ল্যেকের মত ইনোসেন্স হারিয়ে এক্সপেরিয়েন্স বড়ো হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রূপকহীন সহজ ভঙ্গিমায় অ্যাডোনিস তাই ছেলেবেলার সেই পাগলামোকেই মনে করছেন।”, শৈশবের উদযাপন”কবিতায় কবি লিখছেন,
“মনের বালিশে শুয়ে
শরীর জুড়ে যে ধারণা ছিল
সেদিন নিজের সঙ্গে কথা হয়েছিল
সে কথা লিখেছি লাল অক্ষরে
লাল সেতো সূর্যের সিংহাসন।”

মনের সরলতায় তিনি দেখেছেন, দিন যদি সূর্যের সিংহাসন হয়, তবে রাত তার মায়াবী প্রদীপে ভরিয়ে দেয় চারপাশ। সূর্যই বোধহয় মাঝে মধ্যে আড়ালে চলে গিয়ে পৃথিবীকে মুড়ে ফেলে কুয়াশার চাদরে, এ যেন ওয়ার্ডসওয়ার্থের “আপন ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ”কবিতার সেই সূর্যের চাদরে ঢেকে যাওয়া লন্ডন শহরে প্রতিফলন।কবি বিশ্বাস রাখেন, কবিতাই পারে ভাঙা পৃথিবীকে আবার জোড়া লাগাতে।তিনি ধ্বংসের সাক্ষী থাকছেন। সভ্যতার ভাঙন ধরেছে, ধুলো হয়ে উড়ে যাচ্ছে সব। “মরুভূমি” কবিতায় কবি লিখেছিলেন,

“সব রাস্তায় রক্ত
বন্ধুরা কথা বলে হিংসায়
শুনশান আকাশ
শুধু ইতিউতি তারাদের গহ্বর।”
তাঁর “দৃষ্টি”কবিতাতেও সেই ধ্বংসের ছায়া পড়েছে।তিনি দেখছেন,
“শহর পালাচ্ছে
আমিও তার রাস্তা খুঁজছি চারদিকে।”
কবি নিজের মধ্যেই রয়ে যান কারণ বাইরে ঝড়,রাজনৈতিক অস্থিরতা।সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চলে যান প্রকৃতির কাছে।তিনি দার্শনিক নন,কিন্তু পাঠক তাঁর কবিতায় পেয়ে যায় জীবনের দর্শন যা সীমান্তের সব বাধা পেরিয়ে শুধু মানুষের কথা বলে।
“আমি সমুদ্রের কবিতা পড়ছি
আমি যে ঘণ্টা শুনছি
তার ভেতর শামুকের খোলস।”
এতো নিঃসঙ্গতা যে কেউ আশার গল্প লেখে না।তাই ওডিসিকে উদ্দেশ্য করে কবি লেখেন,
“তুমি শপথহীন পৃথিবীতে থেকে যাবে
তুমি থেকে যাবে না ফেরার দেশে।”
কবি দেখছেন,
“ক্ষয়ের আগুনে ছারখার সভ্যতা
মমি হয়ে গেছে সময়।”

আন্তর্জাতিক নাজিম হাইকমেট পোয়েট্রি আওয়ার্ড, সিরিয়া লেবানন বেস্ট পোয়েট আওয়াড তাঁর ঝুলিতে।পাশাপাশি, প্যারিসের স্টিফেন মাল্লার্মে একাডেমির সদস্য পদ পান তিনি। তবে অ্যাডোনিসের কাজ যেন আরো কিছু দাবি করতে পারে। আরোবিয়ান বিজনেস পত্রিকা তাঁর চিন্তা কাব্যিকতায় তাঁকে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী বলে উল্লেখ করেছেন। সভ্যতার এই চরম সংকটে তাই তাঁকেই দরকার। কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন,
“এসো মেঘ ছুঁয়ে বসি
আজ বহুদিন পর; এই
হলুদডোবানো সন্ধেবেলায়।”

নোট : অনুবাদ নিজের

“পলাতক শব্দে আমার বাস
আমার মুখে নিঃসঙ্গতার অবয়ব
আমার মুখেই তার নির্বাণ

যদি তোমার নাম ধরে ডাকি
সে তো মায়াবী, আরও একা
যদিও সেই আমার মৃত্যু!”

অ্যাডোনিস সময়কে বুঝতে চেয়েছেন, সময়ের কাছে হেরে গেছে স্বপ্ন বাসনা। আহত মনের ভেতরে ভালবাসা নেই, কথা বলার মত কেউ নেই।আবার গুমোট চারপাশে পালাবার ঠিকানাও নেই।সে কথাই লিখেছেন কবি তাঁর “আহত” কবিতায় –

“চার্চের ঘণ্টায় অসহায় শব্দরা
তোমাকে যন্ত্রণা উপহার দেবো
যে পাথর ভাঙা ছিল
আজ ছাই হয়ে উড়ে গেছে বহুদূর -“

১৯৫৭সালে সিরিয়া লেবানিজের কবি ইউসুফ আল খান সম্পাদিত “মাজাল্লা”পত্রিকায় তাঁর কবিতা প্রকাশ হবার পরেই বিতর্কের জন্ম হয়। ১৯৮০সালে গৃহযুদ্ধের সময় তিনি ফ্রান্সে চলে যান। তাঁর কবিতায় উঠে এসেছে নয়া সুফিবাদ। হেইথাউস লিখেছিলেন, “আই হোপ ইউ ক্যান টক অ্যাবাউট হাউ পোয়েট্রি রেসপন্ডস ওর এক্সিস্টস উইথ ওয়ার্ল্ড ইভেন্টস।”কবিতাকে যদি বিশ্বের দরবারে নিয়ে যেতে হয় তাহলে কবিতার ভেতর থেকে খুলে ফেলতে হবে অলংকারের মোড়ক, আঁতেলপনা।কবি হয়ে উঠবে অসহায় মানুষের প্রতিবাদের কন্ঠস্বর।

কবিতার ভেতর থাকবে না কবির গর্ব, কবির সার্থকতার থেকে যাবে, কবি মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছে।কবি বিক্রি হয়না,কবিতা বিক্রি হয়। কবিতার মধ্যে কবির আর্তনাদ।”একটিও তারা নেই”কবিতায় কবি অ্যাডোনিস ও বৃটিশ কবি ম্যাথু আর্নল্ড এক সারিতে। আর্নল্ড ডোভার বিচে দাঁড়িয়ে উলঙ্গ নুরি দেখে ছিলেন,আর অ্যাডোনিস দেখছেন গুহার ভেতরে। সংশয় এতো গভীর যে এতদিনের বিশ্বাসে ফাটল ধরাচ্ছে, আলগা হচ্ছে বাঁধন। অবিশ্বাসের পথে জীবন আর কতটা পথ হাঁটতে পারে,এখন সেটাই দেখার।

“উলঙ্গ পাথরের মত সে
গুহার ভেতর তার চিৎকার
ক্রমশ হালকা হচ্ছে
পৃথিবীকে ঘিরে বেঁচে থাকা। “

কবি দেখতে পাচ্ছে দূরে ধ্বংসের হাতছানি। সূর্যের মেটাফরে আলো ঢেকে যাচ্ছে গভীর অরণ্যে, অন্ধকারে সৌন্দর্য ম্লান,ফিরে আসে আতঙ্ক।কবি জানেন , সভ্যতা এভাবেই চলবে শেষের পথে কারণ আমরাই সরে গেছি মূল থেকে।তাই প্রেম বেঁচে থাকলেও প্রেমিক হয়তো বাঁচবে না আর।তবু অস্থির সময়ে নবজাতকের স্বপ্ন দিন বদলাবে একদিন, শান্তি ফিরবে।”মানুষের গান”কবিতায় কবি লিখেছিলেন,
আমিও দেখেছি সূর্য
তোমার কালো হাতের গহ্বর
গভীর বনে মিশে যাচ্ছে ইচ্ছেরা
ঝুড়ির ভেতর রাত্রি
এভাবেই চলছে শহর
তোমার সামনেই আমার অস্থিতে ক্ষয় –
আমি দেখেছি
তোমার মুখে ক্ষুধিত শিশু
তবু আশাবাদী
পড়ে থাক ফুলের কুঁড়ি।”

কবি নস্টালজিক। মাঝে মাঝে ফিরে যান শৈশবে। বুঝতে পারেন শৈশব আর পরিণত বয়সের বিস্তর ফারাক।তবু মনে হয়, অতীতের স্মৃতি যেন আজও “ব্লিস অফ সলিটিউড”, নিঃসঙ্গতার আশীর্বাদ হয়ে পাশে দাঁড়ায়।তিনি সেদিনের দিনগুলোকে সমান্তরাল নদীর সঙ্গে তুলনা করেন।তিনি জানেন এসবও একদিন ঝরে যাবে, তবু যত দিন দেহে প্রাণ আছে ততদিন স্মৃতির সুখ ভোগ করতে চান কবি। তাঁর “শব্দ শুরু” কবিতায় তিনি লিখেছেন,

“শৈশবে যখন প্রথম এসেছিল
নীরবতার পাশে হেঁটে যাওয়া
সঙ্গে প্রবাহিত অদ্ভুত এক নদী

আমরা জেনেছি নিজেদের
কখনও কাছে, কখনও দূরে
সবুজ গাছের মিছিলে
ভিজে যায় সময়ের স্রোত

শৈশব
এতো আপন করে নিল
কি আর তাকে বলবো বলো?”

শান্তির খোঁজে তিনি বারবার ছুটে গেছেন শৈশবে।ব্রিটিশ কবির ব্ল্যেকের মত ইনোসেন্স হারিয়ে এক্সপেরিয়েন্স বড়ো হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রূপকহীন সহজ ভঙ্গিমায় অ্যাডোনিস তাই ছেলেবেলার সেই পাগলামোকেই মনে করছেন।”, শৈশবের উদযাপন”কবিতায় কবি লিখছেন,
“মনের বালিশে শুয়ে
শরীর জুড়ে যে ধারণা ছিল
সেদিন নিজের সঙ্গে কথা হয়েছিল
সে কথা লিখেছি লাল অক্ষরে
লাল সেতো সূর্যের সিংহাসন।”

মনের সরলতায় তিনি দেখেছেন, দিন যদি সূর্যের সিংহাসন হয়, তবে রাত তার মায়াবী প্রদীপে ভরিয়ে দেয় চারপাশ। সূর্যই বোধহয় মাঝে মধ্যে আড়ালে চলে গিয়ে পৃথিবীকে মুড়ে ফেলে কুয়াশার চাদরে, এ যেন ওয়ার্ডসওয়ার্থের “আপন ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ”কবিতার সেই সূর্যের চাদরে ঢেকে যাওয়া লন্ডন শহরে প্রতিফলন।কবি বিশ্বাস রাখেন, কবিতাই পারে ভাঙা পৃথিবীকে আবার জোড়া লাগাতে।তিনি ধ্বংসের সাক্ষী থাকছেন। সভ্যতার ভাঙন ধরেছে, ধুলো হয়ে উড়ে যাচ্ছে সব। “মরুভূমি” কবিতায় কবি লিখেছিলেন,

“সব রাস্তায় রক্ত
বন্ধুরা কথা বলে হিংসায়
শুনশান আকাশ
শুধু ইতিউতি তারাদের গহ্বর।”
তাঁর “দৃষ্টি”কবিতাতেও সেই ধ্বংসের ছায়া পড়েছে।তিনি দেখছেন,
“শহর পালাচ্ছে
আমিও তার রাস্তা খুঁজছি চারদিকে।”
কবি নিজের মধ্যেই রয়ে যান কারণ বাইরে ঝড়,রাজনৈতিক অস্থিরতা।সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চলে যান প্রকৃতির কাছে।তিনি দার্শনিক নন,কিন্তু পাঠক তাঁর কবিতায় পেয়ে যায় জীবনের দর্শন যা সীমান্তের সব বাধা পেরিয়ে শুধু মানুষের কথা বলে।
“আমি সমুদ্রের কবিতা পড়ছি
আমি যে ঘণ্টা শুনছি
তার ভেতর শামুকের খোলস।”
এতো নিঃসঙ্গতা যে কেউ আশার গল্প লেখে না।তাই ওডিসিকে উদ্দেশ্য করে কবি লেখেন,
“তুমি শপথহীন পৃথিবীতে থেকে যাবে
তুমি থেকে যাবে না ফেরার দেশে।”
কবি দেখছেন,
“ক্ষয়ের আগুনে ছারখার সভ্যতা
মমি হয়ে গেছে সময়।”

আন্তর্জাতিক নাজিম হাইকমেট পোয়েট্রি আওয়ার্ড, সিরিয়া লেবানন বেস্ট পোয়েট আওয়াড তাঁর ঝুলিতে।পাশাপাশি, প্যারিসের স্টিফেন মাল্লার্মে একাডেমির সদস্য পদ পান তিনি। তবে অ্যাডোনিসের কাজ যেন আরো কিছু দাবি করতে পারে। আরোবিয়ান বিজনেস পত্রিকা তাঁর চিন্তা কাব্যিকতায় তাঁকে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী বলে উল্লেখ করেছেন। সভ্যতার এই চরম সংকটে তাই তাঁকেই দরকার। কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন,
“এসো মেঘ ছুঁয়ে বসি
আজ বহুদিন পর; এই
হলুদডোবানো সন্ধেবেলায়।”

নোট : অনুবাদ নিজের

তন্ময় কবিরাজ | Tanmoy Kabiraj

Correlation of society and literature | Best Article

1st Meeting of Rabindranath and Ramkinkar

How are Religion and Politics Connected

Education Quality of Public Representatives

Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis | English Literature | The Relationship between Literature and Society | Literature and Society | What is the relationship between literature and society? | Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis – Journal | The Relationship of Literature and Society | Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis pdf | relationship between literature and society pdf | relationship between literature and society essay | Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis notes | literature and society notes | literature and society summary | society and literature subject | literature and society definition | Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis – Video

Essay – Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis | Society Lover | Literature Lover | Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis – images | Literature and Society: A Reflection | (PDF) Literature and Society | literature is the mirror of society | Bengali Essay – Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis | Short Article | Best Article | Bengali Article | Definite Article | Article Submission | Trending Article – Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis | New Subject Article | Article Collection | Article Writer | Creative Writer | Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis in English | Adonis Poetry | Adonis Poetic Vision | Syrian Poetic Vision Analysis of Adonis – Article Pdf

Leave a Comment