Republic Day Inspiring Speech – Probodh Kumar Mridha
প্রজাতন্ত্র দিবস কী ও কেন? – প্রবোধ কুমার মৃধা
বছরের তিনশ’ পঁয়ষট্টিটি দিবসের মধ্যে বেশ কিছু দিবস আছে যেগুলি বিশেষ বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। তার মধ্যে যেমন, আঞ্চলিক দিবস, জাতীয় দিবস ও আন্তর্জাতিক দিবস ইত্যাদি ইত্যাদি। জাতীয় দিবস তাকেই বলা হয়, যে নির্দিষ্ট দিবসটির উদ্যাপন কোনো রাষ্ট্র বা স্বাধীন সার্বভৌম জাতির জাতিসত্ত্বার ঐতিহাসিক গুরুত্ব সূচিত করে। প্রতিটি দেশের একাধিক জাতীয় দিবস থাকতে পারে বা আছে। ভারতের আছে একাধিক জাতীয় দিবস। তার মধ্যে প্রজাতন্ত্র দিবস [Prajatrantra Diwas] বা সাধারণতন্ত্র দিবস অন্যতম একটি। ইংরেজি বছরের শুরুতেই অর্থাৎ ২৬শে জানুয়ারি তারিখটিতে প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়। বিবিধ কারণে প্রজাতন্ত্র দিবস [Republic Day] ভারতের ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যমন্ডিত। তবে ২৬শে জানুয়ারি তারিখটিকে প্রজাতন্ত্র দিবস রূপে চিহ্নিত করে স্বীকৃতি প্রদানের একটি স্বতন্ত্র ঐতিহাসিক পটভূমি আছে। একটু পিছনে ফিরে যাওয়া যাক।
ভারত তখন ব্রিটিশ শাসনাধীন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে ডিসেম্বর [31st December] লাহোর অধিবেশনে জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের এক অধিবেশন ডাকা হয়। সেই অধিবেশনে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয় এবং ঘোষণা করা হয় যে, ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারির মধ্যে ভারতবর্ষকে ডোমিনিয়নের মর্যাদা প্রদান করতে হবে, অন্যথায় আর অযথা কালবিলম্ব না করে পূর্ণ স্বরাজ ঘোষণা করা হবে। দুঃখের বিষয়, উক্ত সময় সীমার মধ্যে ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষকে পূর্ণ ডোমিনিয়নের মর্যাদা দেয়নি। ফলে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি আবার সেই রাভি নদীর তীরে ‘পূর্ণ স্বরাজের’ দাবি উঠল, পালিত হল স্বাধীনতা দিবস, উত্তোলিত হল ভারতের পতাকা। ঘোষিত হল, প্রতি বছর এই ২৬শে জানুয়ারি তারিখটিতে পালন করা হবে ভারতের স্বাধীনতা দিবস। মহাত্মা গান্ধী ২৬শে জানুয়ারি দিনটিকে ‘স্বতন্ত্রতা সংকল্প দিবস’ নামে অভিহিত করেছিলেন।
ভারতীয়দের মধ্যে একটি জাতীয়তাবাদী চিন্তা -চেতনার উন্মেষ ঘটিয়ে জনমানসে দেশাত্মবোধকে জিইয়ে রাখতে এবং ব্রিটিশ সরকারকে স্বাধীনতা প্রদানে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ২৬শে জানুয়ারি তারিখটি জাতীয় কংগ্রেস স্বাধীনতা দিবস রূপে পালন করে এসেছিল। এই সময় কালের মধ্যে জাতীয় কংগ্রেসের আন্দোলন যেমন বৃদ্ধি পেয়েছিল, তেমনি বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি তাদের সহিংস সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ক্ষুরধার করে তুলেছিল। ব্রিটিশ সরকার ও ভারতীয়দের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ভোঁতা করে দিতে নির্মমভাবে দমন-পীড়ন নীতি চালিয়ে শাসন ক্ষমতা ধরে রাখার মরিয়া প্রচেষ্টা করে ও ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই আগস্ট শাসন ক্ষমতা ভারতীয় নেতৃবৃন্দের হাতে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।
অবশেষে বহু প্রতীক্ষার পর ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করল ১৫ই আগস্ট [15th August], ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে। কিন্তু দেশ শাসন করার মতো নিজস্ব আইন ব্যবস্থা বা সংবিধান তখন ছিল না; সুতরাং ব্রিটিশ সরকারের ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ‘গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়ান অ্যাক্ট’-এর সংশোধিত সংরক্ষণ অনুযায়ী শাসিত হতে থাকলো স্বাধীন ভারত। প্রয়োজন হয়ে পড়ল স্বাধীন দেশের নিজস্ব সংবিধানের। জরুরি ভিত্তিতে সংবিধান সভার বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করা হল এবং সেই সভার কার্যকরী সদস্যবৃন্দকে নির্বাচিত করা হল।সদস্যদের মধ্যে ছিলেন ডঃ বি আর আম্বেদকর, জওহরলাল নেহরু, ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, মৌলানা আবুল কালাম আজাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে আগস্ট ডঃ বি আর আম্বেদকরের নেতৃত্বে স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত হয় একটি খসড়া কমিটি। উল্লেখ্য, উক্ত বছরের ৪ঠা নভেম্বর খসড়া কমিটি প্রথম ভারতীয় সংবিধানের খসড়া জমা দেন সংবিধান সভার হাতে। তারপর ২বছর ১১মাস ১৮দিন সময়কাল ধরে জনসাধারণের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ও নানা চিন্তা ভাবনার পর প্রস্তাবিত খসড়া সংবিধানে কিছু সংশোধন, সংযোজন ও পরিবর্তন ঘটানো হয়।মোট ১৬৬ বার আলোচনা সভা বসার পর গণপরিষদের ৩০৮ জন সদস্য সংবিধানের দুটি হস্ত লিখিত কপিতে স্বাক্ষর করেন। হস্ত লিখিত কপি দুটির একটি ছিল ইংরেজিতে ও অপরটি ছিল হিন্দিতে।
সংবিধান আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যকর হওয়ার ঠিক দু’মাস পূর্বে অর্থাৎ ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে নভেম্বর [26th November] গণপরিষদের সভাপতি ডঃ ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের নেতৃত্বে ভারতের সংবিধান অনুমোদিত হয় এবং উক্ত পরিষদে সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী বছর অর্থাৎ ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি [26th January] থেকে সংবিধান কার্যকর করা হবে। জানুয়ারির ২৬ তারিখটি বেছে নেওয়ার অন্যতম তাৎপর্য হল যে, ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি ২য় বার লাহোর অধিবেশনে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক প্রথম স্বাধীনতা দিবস তথা পূর্ণ স্বরাজের সংকল্প ঘোষিত ও পালিত হয়েছিল। সেই থেকে ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ২৬শে জানুয়ারি দিনটিকে প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস রূপে পালন করা হতো। ঐতিহাসিক সেই ২৬শে জানুয়ারি দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে সংবিধান কার্যকরী করা হয় এবং ভারতবর্ষ ‘সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’ (Republic of India) নামটি গ্ৰহণ করে।
সেদিন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের অভিভাষণের মধ্য দিয়ে ভাইসরয়ের নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামে উদ্যাপিত হয়েছিল স্বাধীন দেশের প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস।ওই দিনই গ্ৰহণ করা হয় ‘ত্রিবর্ণরঞ্জিত’ জাতীয় পতাকা এবং বাজানো হয় জাতীয় সংগীত ‘জনগণমন।’
বাস্তবায়িত হয় দেশের জনগণের কিছু মৌলিক অধিকার। যথা:
১। সাম্যের অধিকার।
২। স্বাধীনতার অধিকার।
৩। শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অধিকার।
৪ । ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার।
৫। সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিষয়ক অধিকার এবং
৬। সংবিধানের প্রতিবিধানের অধিকার।
সেই শুভারম্ভ। তারপর থেকে অদ্যাবধি প্রতি বছর ২৬শে জানুয়ারি [26th January] তারিখটি রাজধানী দিল্লির বুকে তথা আসমুদ্রহিমাচল জুড়ে মহা সমারোহে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।ভারতে যে তিনটি প্রধান জাতীয় দিবস আছে তার মধ্যে প্রজাতন্ত্র দিবস একটি অন্যতম। বাকি দুটি হল, ১৫ই আগস্ট [15th August] স্বাধীনতা দিবস [Independence Day] ও ২রা অক্টোবর [2nd October] গান্ধী জন্ম জয়ন্তী। স্বাধীন ভারতের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার দলিল সংবিধান সরকারি ভাবে গৃহীত হওয়ার ঐতিহাসিক দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করার সংকল্প গ্ৰহণ করাই হোক আমাদের পবিত্র কর্তব্য। জয় হিন্দ, বন্দে মাতরম্!
প্রবোধ কুমার মৃধা | Probodh Kumar Mridha
স্বামী বিবেকানন্দের যোগ ভাবনা | Top Best 4 Yoga by Swami Vivekananda
History of Bengali Poetry | কবিতা কি ও কেন এবং তার ইতিহাস
Tebhaga Movement | বাংলায় “তেভাগা আন্দোলন” এবং সলিল চৌধুরীর গণসঙ্গী
Teachers day in honor of teachers | শিক্ষকদের সম্মানে শিক্ষক দিবস
Bengali Republic Day Inspiring Speech | Prajatantra Diwas Kab Hai | Prajatantra Diwas Date | Prajatantra Diwas in Bengali | Prajatantra Diwas Drawing | Prajatantra Diwas in Hindi | Prajatantra Diwas in Bengali | Prajatantra Diwas Chobi | Prajatantra Diwas Photo | Prajatantra Diwas Essay | Prajatantra Diwas Speech | Prajatantra Diwas Speech in pdf | Prajatantra Diwas Bangla Rachana | Republic Day Inspiring Speech PDF | Prajatantra Diwas Essay in Bengali | Republic Day | 75th Republic Day | 74th Republic Day | When is Republic Day in India | English Prajatantra Diwas | Republic Day 2024 | Republic Day in Hindi | Republic Day in English | Republic Day Speech | Republic Day Sale Amazon | Republic Day Quotes | Republic Day Flipkart Sale | Republic Day Drawing | Republic Day Sale | Republic Day Drawing Easy | Republic Day Meaning | 26th January Republic Day | Independence Day | independence day drawing | independence day speech | independence day 2024 | 15th August independence day | independence day quotes | independence day caste | 75th independence day | independence day India | independence day essay | Republic Day Inspiring Speech | Bengali Article | Bengali Written Article | International Article | Article Writing Course | Academic Article Writing | Professional Article Writer | Republic Day Inspiring Speech Video | Republic Day Inspiring Speech Audio | Collection of Republic Day Inspiring Speech | English Article Writing | Article Writing Job | Professional Writer | Republic Day Wikipedia | Republic Day Inspiring Speech Ebook | Independence Day Wikipedia | Indian Republic Day Inspiring Speech | Shabdodweep Indepence Day Essay | Shabdodweep Writer | Republic Day Inspiring Speech MP4 | Article Factory | Freelance Article Writer | New Republic Day Inspiring Speech