Practical Acting Education – Rupsankar Acharya
আমার অভিনয় শিক্ষা – রূপশঙ্কর আচার্য্য
(চরমভাবে সত্য, গল্প নয়)
আমি তখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি। সেই সময় আমার প্রথম অভিনয় শুরু। তার আগে মাঝে মাঝে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অঙ্গ ভঙ্গী করতাম। কখনও ক্ষ্যাপার কখনও রাগী মাস্টারের কখনও বা চিকিৎসকের কখনও উগ্র মেজাজি হিংস্র মানসিকতার মানুষের মতো আচরণ করতাম। আসলে সেই সময় শিশুকালে আশে পাশে যা-ই দেখতাম তাই মনের মধ্যে প্রতিফলিত হতো এবং এর থেকে কখনও কখনও আয়নার সামনে অঙ্গ ভঙ্গী করে প্রত্যেকের চরিত্র প্রকাশ করার চেষ্টা করতাম। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি তখন হয়ত সঠিক ভাবে প্রত্যেকটা চরিত্র – এর রূপ দিতে পারতাম না ঠিকই কিন্তু চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখতাম না। মা কখনও কখনও আমার এই ধরণের আচরণ দেখে বলতো বাবার রক্ত শরীরে বইছে তোর বাবা তো হাস্যকৌতুক করে দেখাতো। তাই তাঁর রক্ত তো তোর শরীরে বইছে সেজন্যই হয়তো এইধরনের অভিনয়ের নেশাটা তোর মধ্যে থেকে প্রকাশ হচ্ছে। পূর্বেই বলেছি, তখন আমি দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি এবং তখনই আমার শুরু হয় প্রথম অভিনয়। আমার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল শহরে। আমি যে সময়ের কথা বলছি তখন ঘাটাল শহর অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত ছিল। পরে পশ্চিম মেদিনীপুর হয়েছে। এই ঘাটাল শহরে এখন থেকে ৭৮ বছর আগে সুপ্রাচীন একটি ক্লাব স্থাপিত হয় যার নাম মিতালী । বর্তমানে ক্লাবটি রয়েছে কিন্তু অতীতের চেয়ে ঐতিহ্য পূর্ণ সংস্কৃতি বিভিন্ন ধরণের বিচিত্রানুষ্ঠান,নাটক, গীতিনাট্য, আবৃত্তি, যাত্রাপালা সবকিছুই ঘাটাল মহকুমাকে ছাড়িয়ে অখণ্ড মেদিনীপুর জেলাকে ছাপিয়ে যেত। বর্তমানে তেমন জাঁকজমক আর নেই বললেই হয়।সেই সময় প্রত্যেক মাসে একটি করে নাটকের অনুষ্ঠান হতো। তা উপস্থাপন করা হতো ঘাটালের ঘাটাল বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভিতরে বিদ্যাসাগর মঞ্চতে। আমার এই মিতালী ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানেই প্রথম অভিনয় জীবন শুরু হয়। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে “অরুণ বরুণ কিরণমালা” নামক একটি নাটক উপস্থাপন করা হয় মিতালীর পরিচালনায়। সেই নাটকটিতে আমি কিছুক্ষণের জন্যে অভিনয় করি তাও ভূত- প্রেত- কঙ্কাল এইরূপ অভিনয়ের মাধ্যমে। আমি খুব ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত রোগা। তাই ওই অনুষ্ঠানে আমাকে মেক -আপ করতে মেক-আপ ম্যান-এর কোনো অসুবিধে হয়নি। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি, একটা ছোট হাফ প্যান্ট পরে রয়েছি। আর গোটা শরীর যেহেতু রোগা তাই পোশাক না থাকলে হারমোনিয়ামের রিডের মত পাঁজরের হাড়গুলো যেন দেখা যাচ্ছে। কোনো আলো শরীরের ওপর পড়লে মনে হবে যেন এক্সরে প্লেট দেখা হচ্ছে। ওই পাঁজরের দেখা যাওয়া হাড়ের মতো রোগা পাতলা শরীরে রং মেখে আমাকে একটি আস্ত কঙ্কাল বানিয়ে ফেলল ও আমার প্রথম এই অভিনয় শুরু। এরপর ধীরে ধীরে আমি অভিনয় জগতের দিকে প্রবেশ করতে শুরু করেছি। ছোটবেলা থেকেই এই প্রবণতাটা আমার ছিল যে আমি অভিনয় করব। কিন্তু নাটক, যাত্রা এই গুলো ঠিকমত প্রকাশ করে উঠতে পারতাম না। কারণ নাটকের ক্ষেত্রে কিছু বিবৃতি বা সংলাপ থাকে যেগুলো আমি মনে রাখতে পারতাম না। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই অঙ্গভঙ্গি গুলো ভালো করতে পারতাম। সেই জন্য আমি অভিনয়ের জগতে বেছে নিলাম মূকাভিনয়কে। কখনো মূকাভিনয় করি, আবার কখনো নির্বাক অভিনয় করি। আমি ধীরে ধীরে অভিনয়ের বিষয়গুলোকে নিজেই চিন্তাশক্তি দ্বারা সৃষ্টি করি এবং মঞ্চে প্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করি।
একটা বিষয় তো বলাই হয়নি। বিষয় টি হল আমি অভিনয় কিভাবে শিখি? আমার এত বছরের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী আমি মনে করি যে, আমার নিজস্ব ভাবনায় অভিনয় শেখা যায় না। আমি যদি অভিনয় করতে গিয়ে মনে করি এটা অভিনয়ই করছি তাহলে কিন্তু সর্ব রূপে অভিনয় আসে না, কোন অবস্থাতেই মনে হওয়া উচিত নয় যে আমি অভিনয় করছি। তাই আমি নিজের অন্তর থেকে অভিনয় শিখতে পারি আর মঞ্চতেও অভিনয় করতে পারি। তা স্বত্বেও যারা আমার অভিনয় দেখেছেন তাঁরা বলে থাকেন যে, আপনার অনুষ্ঠানটা খুব ভালো হয়েছে। কেউ কেউ বলে থাকেন যে, ভাই আপনার অভিনয়টা দারুণ হয়েছে। তাহলে মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন আসতেই পারে যে অভিনয় কি করে শিখেছি?
বিষয়টা হলো যখন কোন মূকাভিনয়ের বিষয়বস্তু আমাদের কাছে তুলে ধরা হয়, কোনো ব্যক্তি কোন বিষয়ে লিখেছেন আমাদেরকে সঙ্গে নিয়েছেন, নিয়ে সেটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কিভাবে মূকাভিনয় করা যায় তাদের কাছ থেকে অথবা আমি কোন বিষয়ে নিজে থেকে আলোচনা করেছি মঞ্চে তা প্রাণ দেব–দুটোর মধ্যে যেকোনো একটা পরিস্থিতিতে যখন আমি অভিনয় করতে যাব তখন আমার মনের মধ্যে একটি বিষয় স্থির করে রাখি যে, আজকে আমার মঞ্চে যে বিষয়টি মঞ্চস্থ হবে তার বিষয়বস্তু কি? এর বিষয় বস্তুর মধ্যে ক’জনের ভূমিকা রয়েছে, কজনের চরিত্র রয়েছে, কোন মানুষের কি ধরনের চরিত্র এগুলো ভেবে নিই।
পাগলের অভিনয়
যদি কারোর পাগলের চরিত্র থাকে স্বাভাবিক ভাবেই পাগল যে ধরনের আচরণ করে আমি বাস্তব চিত্রটাকে মনে করার চেষ্টা করব। একজন স্বাভাবিক মানুষ পাগলের অভিনয় করতে গিয়ে কোথাও যদি ত্রুটি বা ভুল করে ফেলে তাই আমি সেই সময় কি করেছিলাম?
আমি ঠিক করলাম আমি পাগলের চরিত্রে যদি অভিনয় করি তাহলে আমাকে একেবারে প্রকৃত অভিনয় করতে হবে যা দর্শকের মন স্পর্শ করতে পারে আমার অভিনয়। আমি দেখেছি পাগল ছ্যাঁড়া, ময়লা পোশাক পরে। পাগল যেখানে সেখানে পড়ে থাকা নোংরা খাবার তুলে খায়, এটা ওটা চিবিয়ে খায়, ডাস্টবিনের খাবার তুলে খায় ,এর দিকে ওর দিকে রেগে গিয়ে তেড়ে যায়। আবার কাউকে সযত্নে কাছে টেনে নেয়, আদর যত্ন করে। যাকে আদর-যত্ন করে তার প্রতি যদি অন্য কোনো মানুষ অবহেলা করে, তার দিকে তেড়ে যায় তিরস্কার করতে। পাগলের এক মুখ দাঁড়ি, উস্কো-খুস্কো চুল, ময়লা শরীর, হাতে একগাদা নখ। সমগ্র শরীর নোংরা, সমগ্র গা চুলকাচ্ছে, যে-হাতে চুলকাচ্ছে সেই হাতই আবার মুখে দিচ্ছে, নাকে দিচ্ছে। নাক মুখ দিয়ে অনর্গল জল পরছে। এইরকম একটা চিত্র প্রকাশ করতে গিয়ে আমি কিছু কাঁচা লঙ্কা চিবিয়ে নিলাম। যখন কিছু কাঁচা লঙ্কা চিবিয়ে নিই তখন সেই লঙ্কার ঝালে আমার সমগ্র শরীর জ্বালা জ্বালা করতে লাগলো এবং অনায়াসেই চোখ মুখ দিয়ে জল বেরোচ্ছে এবং শরীরে জ্বালা জ্বালা করার ফলে আমি ছটফট করছি।সেই সময় মঞ্চে অভিনয়ের বিষয় মস্তিষ্কে প্রবেশ করার পর ওই কাঁচা লঙ্কার ঝালে জ্বালা করা অবস্থায় আমার ছটফটানি অতি সুন্দর ভাবে একটি পাগলের চরিত্রকে মঞ্চে প্রাণ দিতে পারল।
ক্ষুধার্ত মানুষের অভিনয়
যদি এরকম কোনো দৃশ্য দেখানোর থাকে ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের মত পরিস্থিতি। মানুষ আহারের জন্য হাহাকার করছে। না খেতে পেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। খিদের জ্বালায় ছটফট করে মা তার সন্তানকে মেরে খাচ্ছে – এই ধরনের দৃশ্য অভিনয় করে দেখাতে গেলে কি করা যেতে পারে। যখন অনুষ্ঠানটা মঞ্চস্থ হবে তার আগে সকালের দিকে খাওয়া-দাওয়ার পর থেকে মঞ্চস্থ হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্ত পর্যন্ত কোনো ভারী খাবার না খেয়ে অর্থাৎ সকালে খাওয়া-দাওয়ার পর যে সময়টা রয়েছে সেই সময় থেকে অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত অনেকটা সময় ব্যবধানে কোন খাবার খেলাম না, শুধু অল্প পরিমাণে জল খাচ্ছি আর চোখে মুখে জল দিচ্ছি। একটা সময় খিদে পাচ্ছে আর সেই সময়ই আমি খিদের জ্বালায় আমার সন্তানকে মেরে বাঘের মতো চিৎকার করতে করতে তার রক্ত খাচ্ছি। যখন খিদে মিটে গেছে তখন আমার মনে হচ্ছে যে আমার সন্তান খিদের জ্বালায় ছটফট করছিল তারও খিদে পেয়েছে তাকেও একটু আহার দিই।
কিছুক্ষণের জন্য মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটে যায় আমার। আমি ওই মৃত সন্তানকে তারই রক্ত খাওয়ানোর চেষ্টা করছি। যখন ধীরে ধীরে বর্তমান অবস্থায় নিজের স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরে আসে তখন আমি কি করলাম খিদের জ্বালায় নিজের সন্তানকে মেরে ফেললাম। এই যন্ত্রণায় কষ্ট সহ্য করতে না পারায় আমি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এইভাবে এই ধরনের অভিনয় আমি মঞ্চে প্রাণ দিতে পারলাম। অনেকের মনে হতে পারে এ যেন বাচ্চা ছেলের মত উল্টোপাল্টা বাক্যালাপ করছে। কিন্তু এটা অনেকের মনে গল্প হলেও বাস্তবেই এটা সত্য। আমি এই ভাবেই কিন্তু অভিনয় তুলে ধরতে পারি, মঞ্চে প্রাণ দিতে পারি। মানুষকে বোঝাতে পারি সমাজের চোখে নির্বাক অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে পারি।
পঙ্গুর অভিনয়
দু’বছর আগে একটা অনুষ্ঠানে পঙ্গুর অভিনয় করতে হবে এইরকম চরিত্রটা আমি পেলাম। কিন্তু যখনই মঞ্চে অভিনয় করতে যাব তার আগে মহড়া দেওয়ার সময় একটা স্বাভাবিক মানুষ পঙ্গুর মতো অভিনয় করবে। প্যারালাইসিস- এ তার হাত অসাড় হয়ে গেছে পা টেনে টেনে চলছে। এইরূপ চরিত্রের অভিনয় আসছে না। যখনই অভিনয় করতে যাচ্ছি তখনই স্বাভাবিকভাবেই আমার পা-টা খাড়া হয়ে যাচ্ছে। মহড়া দিতে গিয়ে যদি এই ভুল ত্রুটি হয় তাহলে মঞ্চে কি হবে? অনেকক্ষণ ধরে চিন্তা করলাম তারপর একজনকে বললাম ভাই তুমি আমার বাম পায়ের উরুর কাছে একটু জোরে হাতের মুঠি দিয়ে আঘাত করো। সে ভাই অবাক হয়ে গেল এই কথা শুনে। সে আমাকে জিজ্ঞাসা করছে সত্যি আমি এই কাজটা করব? তখন আমি বললাম হ্যাঁ বলছি করো। তুমি আমার বাঁ পায়ের এই ঊরুর কাছে জোরে কিল মারো। জোরে কিল মারতে আমার উরুটা একটু ব্যথা হলো পা-খানা নেড়েচেড়ে দেখি হালকা ব্যথা অনুভব হচ্ছে। পেশীতে লেগেছে। পেশিতে আঘাত লেগে ব্যথা হয়েছে। একেবারে খুব সুন্দর ভাবে স্বাভাবিক ভাবে আমি পঙ্গুর অভিনয়টা মঞ্চস্থ করতে পেরেছিলাম। যে সমস্ত মানুষজন আমাদের অনুষ্ঠানের পূর্বে মঞ্চ কোনো অনুষ্ঠান করার পর পোশাক পরিবর্তন করতে মেকআপ রুমে আসেন আমাদের অনুষ্ঠানের পরে তাদের অনুষ্ঠান আছে বলে তাঁরা তৈরি হন। যখন আমরা অভিনয়ের পূর্বে এখানে শেষ বারের মতো চূড়ান্ত পর্যায়ে তৈরি করে ফেলি মেকআপ রুমে , সেই দৃশ্যগুলো দেখে তাঁরা অবাক হয়ে যান যে, এত কষ্ট করে এই ভাই তার দর্পণ নাট্যগোষ্ঠীর পরিচালনায় মূকাভিনয় ও নির্বাক অভিনয় আমাদের অবাক করে দিল ।আর একটা ঘটনা, যখন আমি ,পেটের জ্বালায় মানুষ ছটফট করতে করতে তার সন্তানকে মেরে খাবে এই অভিনয়টা করেছিলাম তখন অভিনয় করতে গিয়ে আমার কোন বাস্তব অবস্থার জ্ঞান ছিল না। বাম হাত এবং ডান হাত দুই হাতের কাঁধের নিচের অংশে নিজে নিজেকে অভিনয় করতে গিয়ে কামড়ে দাঁতের দাগ বসিয়ে দিয়েছিলাম লাল হয়ে গিয়েছিল সেখানে যে সমস্ত দর্শকরা দেখছিলেন আমি মঞ্চ থেকে নামার পর পোশাক বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের দেখিয়েছিলাম। তাঁদের ক্যামেরাতে তুলে রেখেছিলেন।
দুঃখের অভিনয়
গৌতম বুদ্ধের এক অনন্য বাণী বা উক্তি হল, “সর্বম৻ দুঃখম৻”
স্বাভাবিকভাবে প্রতিটি মানুষের জীবনে দুঃখে জর্জরিত হয়ে যাওয়ার অনেক মুহূর্ত রয়েছে। এই দুঃখের ভিন্ন ভিন্ন কারণ আছে। যাইহোক অতীতের দুঃখের ভাবনা যদি স্মৃতিচারণ করে পুনরুদ্রেক করা হয় তাহলে অভিনয়ে দুঃখী মানুষের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারবো। আমি আমার পিতৃবিয়োগের কথা ভেবে ভেবে, সেই সময়ের সব দৃশ্য মনে জাগিয়ে তুলি। মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সকলে দাহ কাজের আগে এসে হাজির হচ্ছেন এবং একটা কান্নার পরিবেশের সৃষ্টি। তারপর প্রত্যেকটি কথা ভাবতে ভাবতে অভিনয়ের চরিত্রে আমার পূর্বের যন্ত্রণাদায়ক,দুঃখজনক অবস্থার মত রূপ দিয়ে ফেললাম।
একবার অভিনয় করতে গিয়ে অভিনয়ের পূর্বেই অনুষ্ঠানের কমিটির লোকের কাছ থেকে তাচ্ছিল্য সূচক মন্তব্য পেতে হয়েছিল। আমার কর্মীদের তখন একটু কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের এক দৃশ্যে ছিল একটি স্ট্যাচু বর্তমান সমাজের মানুষের আচরণ ও চরিত্রের প্রতিবাদ করে। একটু আপনাদের অবাক লাগতে পারে কারণ প্রাণহীন স্ট্যাচুর কি ক্ষমতা থাকে প্রতিবাদের। আমার উদ্দেশ্য ছিল মানুষ প্রতিবাদ করতে না পারায় প্রাণহীন স্ট্যাচু নিজে ভেঙে গিয়ে নির্বাক প্রতিবাদ করলো। ওই দৃশ্যে আমি একজন পাগল। আমি স্ট্যাচুকে ভগবান ভাবতাম,স্ট্যাচুর প্রাণ আছে আমি মনে করতাম। তাই তাকে বাঁচাতে গিয়ে কোথাও জল না পেয়ে আমি আমার দুপাটি দাঁত দিয়ে জিহ্বা কামড়ে মুখে জমে যাওয়া লালা দিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। সত্যি সত্যিই আমার জিভ কেটে গিয়েছিল কিন্তু ভয়ানক তেমন কিছু হয়নি। ওই সময় দর্শক কাঁদতে কাঁদতে আবেগে আসন থেকে সোজা লাফাতে থাকে। আমি তখন বুঝলাম আমি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিয়েছি অভিনয়ে। এই হল আমার অভিনয় শিক্ষা।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক মানুষের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে আমাকে। আপনি পজিটিভ রোল না করে নেগেটিভ রোল করেন কেন? আমি তার উত্তরে বলেছিলাম, নেগেটিভ রোলের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে যে নেগেটিভ অভিনয়টা আমি করব তা ১০০% সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে একটা মানুষকে বেঁচে থাকতে গেলে সুন্দরভাবে যদি বাঁচতে হয়, আদর্শ মানুষ রূপে যদি বাঁচতে হয় প্রতি মুহূর্তে সেই মানুষটি সৎ, ভদ্র, নম্র আদর্শ মানুষ এটা প্রমাণ করে যেতে হবে। আদর্শ মানুষ, সৎ মানুষ রূপে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য বহু সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু একজন মানুষ অসৎ, বর্বর, অসভ্য, লম্পট -এটা প্রমাণ করার জন্য একটা মুহূর্তের মধ্যেই মানুষটি তা প্রমাণ করতে পারে। এই ভাবেই আমি আমার অভিনয় ক্ষমতাকে আজও অনেক মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারি। আপনাদের একটা বিষয় পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার মূকাভিনয় এবং নির্বাক অভিনয়ের মধ্যে তফাৎ কি। মূকাভিনয় হচ্ছে এক ধরনের পোশাক থাকবে প্রত্যেকটি চরিত্রের জন্য, ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড থাকবে, কেবল অভিনয়ের মাধ্যমে সমগ্র বিষয়টিকে ইশারা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে মঞ্চস্থ করতে হবে। অপরপক্ষে, নির্বাক অভিনয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চরিত্রের বিভিন্ন পোশাক থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে প্রত্যেকের চরিত্র কে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদার্থ লাগে। যেমন- কৃষকের জন্য কাস্তে, কোদাল, কাঠুরিয়ার জন্য কুঠার, চিকিৎসকের জন্য ফাস্টেড বক্স, স্টেথোস্কোপ, শিক্ষকের ছড়ি, ছাতা এগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যাই হোক আবারও বলছি, সকলের উদ্দেশ্যে বলছি, এটা সকলের মনে হতে পারে গল্প কিন্তু বারে বারে বলছি গল্প হলেও সত্য।
রূপশঙ্কর আচার্য্য | Rupsankar Acharya
স্বামী বিবেকানন্দের যোগ ভাবনা | Top Best 4 Yoga by Swami Vivekananda
Tebhaga Movement | বাংলায় “তেভাগা আন্দোলন” এবং সলিল চৌধুরীর গণসঙ্গী
History of Bengali Poetry | কবিতা কি ও কেন এবং তার ইতিহাস
দেবতা ৩৩ কোটি | 33 Crore Gods | প্রবোধ কুমার মৃধা
acting school | acting school near me | Top Acting Classes | Top Acting Schools in India | Best Practical Acting Education | 20 Best Acting Schools In The World | Practical Acting Education Format | Six Months Certificate Course in Acting | All Practical Acting Education Paper | Best Acting Colleges In India | Acting Degree | Govt Practical Acting Education | Acting Qualification | Best Actor Awards | Best Actor Award 2024 | Government Acting School | Best Acting Course | Acting Audition | Acting Competition | Acting Competition 2024 | How to Become an Actor | Acting Schools & Careers | Acting education salary | Acting education in India | Practical Acting Education Style | Acting education courses | Practical Acting Education in India | Acting education subjects | Acting education degree | Practical Acting Education System | Acting education jobs | Acting Education Requirements | Easy Acting Steps | 5 tips of Acting | Best Acting Tutorials | Post Graduate Acting Training | Online Practical Acting Education | Acting Training School | Skills required to be an actor | Skills required for acting | Acting School Exam | Practical Acting Education | Practical Acting Education Exam | Practical Acting Education Class in pdf | Practical Acting Education Notes | Practical Acting Exam | Practical Acting Education Article | Best Article on Acting | Acting Article Writer | Professional Acting Script Writer | Professional Acting Article Writer | Practical Acting Education in Film | Practical Acting Education Model