Online Bangla Golpo Katha | Best Bengali Story

Sharing Is Caring:

সিঁড়ি পথ – সুদামকৃষ্ণ মন্ডল

শীতের সকাল ঠিক বলা যাবে না। তবুও শীত শীত লাগে। শরৎ কাল শেষের মুখে। শিউলি গাছের তলায় এখনও শিউলি পড়ে। প্রত্যহ সুবাস ঘ্রাণ নিতে এবাড়িতে মনে হয় প্রথম আসে এই বাড়ির নবনিযুক্ত ঝি ঋতু। বয়স তো কম হলো না। ষাটের কাছাকাছি বয়স। শীতল ভোরে গায়ে সেই আদ্যিকালের চাদর। তাও ধূসর রঙচটা। জৌলুস নেই। ঋতুর নিজেরই নেই। কাপড়চোপড়ও তাই। হবে নাই বা কেন কেউ তো এগিয়ে আসেনি, মানে পুরুষ মানুষ। একসময় ছোঁ ছোঁ করত। পাত্তা দেয়নি। ঋতু বিদ্যাসাগরের কথা মনে করে। বিধবাদের সর্বাঙ্গীণ ভালোর জন্য শিক্ষা বিবাহের কথা দীর্ঘকাল লড়াই করে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। পুরুষ মানুষকে সে কাছে থেকে দেখেছে। ও বাবা ফুলে বসেই মধু চুষে ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবে। পুরুষ মানুষ আজ এই ফুলে তো কাল অন্য ফুলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে যা খুশি করতে পারে। ঋতু তো তাই মনে করে। নিজেকে শত দুঃখ যন্ত্রণার মধ্যে কাটিয়েও ফুলের রঙে রঙিন হতে পারেনি। তার কাছে আকর্ষণে মোহে লোভে কেউ তাই আসতে সাহস পায়নি। ভবিষ্যতে তার কোনো লক্ষ্য আছে বলে মনে হয় না। নাতনিটা কাছে থাকে। মেয়েটা বেপাত্তা। কোথায় গেল সে নিয়ে তার ভাবনার শেষ নেই।

ঋতুর বেশি বয়সে বিয়ে হয়েছিল। ঋতুকে নিয়ে স্বপ্নের সংসার বাঁধার সদিচ্ছা ওর বরেরও ছিল বৈকি। লোকটার সব ভালো কিন্তু প্রতিদিন মদ্যপান করে আসত। ঋতুর বলা স্বাস্থ্য বিষয়ে সুপরামর্শ সে কানে নিত না। সারাদিন পণ্যবাহী লরী চালিয়ে মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসলে স্ত্রী ঋতুর শরীরের ভালোবাসা উজাড় করা ছাড়া আর কিছু বলার অবস্থায় থাকত না। সাত সকালে মানুষটা বেরিয়ে যাবার সময় মনের সব কথা উজাড় করত। তাতে স্ত্রী হিসেবে মমত্ব ও মর্মার্থ বুঝে নিতে অসুবিধা হতো না। পরস্পরে খুব ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতে চাইলেও বিধি যেন বাম হলো।

ট্রান্সপোর্টের লরী থেকে উঁকি দিয়ে ঋতুর বর মোহনলাল দেখেছিল — ওই কোম্পানিরই তেল গাড়ি থেকে সানু ড্রাইভার মাঝপথে তেল পাচার করছে। সৎ মোহনলাল গোপনীয়তা প্রকাশ করতেই সানু পরিকল্পিতভাবে খুনের চক্রান্ত করে। একদিন মোহন মদ্যপ অবস্থায় বাড়ির উদ্দেশ্যে ধীর পায়ে হেঁটে আসছে ফুটপাত ধরে। রাত্রি তখন তৃতীয় প্রহর। সানু সেই সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় সুপারি কিলার ধরে পিছন থেকে ভোজালি চালিয়ে তরতাজা যুবক লোকটাকে মেরে ফেলেছে। সকাল হতেই ঋতু জানতে পারে। মোহনলাল রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল । গর্ভবতী ঋতু একা কিংকর্তব্যবিমূঢ় । তবুও তাকে কোম্পানি সামান্য অর্থ সাহায্য করেছিল। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। ঘর ভাড়ায় থাকত। তাও ছেড়েছে। বস্তির এক কোণে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে ধরে মা ও মেয়ে থাকত। বস্তির স্কুলে ওর মেয়ে নীতু যাতায়াত করে। ঋতু দু’বেলায় মিলিয়ে চার -চারটে ঘরে ঝি-য়ের কাজ করে মেয়েকে সামাল দিত। সে আর কতদিন। এই বস্তির মইনুদ্দিনের ছেলে বইমেলা দেখানোর নাম করে পতিতা পল্লীর দালালের হাতে সামান্য টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে চলে আসে। তখন নীতুর বয়স মাত্র এগারো বছর। পাড়ার মাসি দিয়ে পাকাপোক্ত করিয়ে জমিয়ে খদ্দের ধরে অর্থ উপার্জন করত। গর্ভনিরোধক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে নীতুর শরীর নিয়ে খেলতে গিয়ে পেটে বাচ্চা আসে। নীতুর বয়স তখন মাত্র চৌদ্দ বছর। একদিন লুকিয়ে ডাক্তার দেখানোর অজুহাতে মায়ের কাছে ত্রিপুলের অস্থায়ী নিঃস্বের রাজপ্রাসাদে ওঠে। হারিয়ে যাওয়ার নীতুকে পেয়ে মাও যেন সহজ সরল ভাবে বাঁচার সমান্তরাল সমীকরণ গড়তে চাইল। তাও আর কত দিন। নেড়ি কুকুরের হাঁড়ি খাওয়ার স্বভাব কি যাবে? নীতুর যেন অন্যদিকে নজর পড়ল। কোলের বাচ্চার দুধ কেনার অর্থ নেই বুকের দুধও নেই। এই সমাজ কি কাউকে ভদ্রভাবে বাঁচতে পথ দেখাবে? নীতুর নতুন ঠিকানা এখন আবাসিক হোটেল। ওর পিছনে সেই মতিলাল দালাল লেগেই ছিল । তারই তো হকের টাকায় কেনা পণ্য। হকের টাকায় কেনা তার পবিত্র সুন্দর দেহ সেওবা হাতছাড়া করবে কেন?

গোপনে একদিন নীতুর কাছে এসে হেনস্থা করতে লাগল। নীতুর শরীরে তখন বলিষ্ঠ ভরাট যৌবন। এক সন্তানের মা। খদ্দের এই সময়ই তো চায়। তাই মতিলাল সহজে ছাড়তে নারাজ। লোকটা খুব জেদী টেঁঠিয়া করিৎকর্মা বদমেজাজি। ব্যবসার লোকসান অত সহজে মেনে নিতে পারে না। ওই পাড়ার মেয়েরা তো “কুঞ্জুস” নয় তো “হাড়কিপটে” অথবা “হায়না — নেকড়ে” বলে। এক কথায় লোকটা ভালো নয়। নীতুকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যা গেছে আর সে এই মুখো হয়নি। খোঁজ খবর সে নেয় কিনা জানা নেই কিন্তু ঋতু এই পর্যন্ত নাতনি নিয়েই আছে। সেও তো পড়াশোনা করে। কোন ক্লাসে পড়ে সেই জানে। ঋতু শুধু বলে, দশ ক্লাসে পড়ে। টিউশন নেই। সে নিজে খেটেখুটে পড়ার জন্য চেষ্টা করে। মায়ের জন্য হীনমন্যতায় ভোগে। লোকে চর্চা করে ও এড়িয়ে থাকে। সবসময় মনমরা হয়েই থাকে।

— দিদিমণি, দিদিমণি – আমি এয়েচি গো।
রমাদি অতি প্রত্যূষে উঠে পড়ার টেবিলে বসে আজকের ক্লাসের পড়ায় চোখ বুলাচ্ছেন।
— হ্যাঁ, দরজা খোলাই আছে। ভিতরে এসো।
রমা সেন মধ্যবয়সী। মাথায় রুপোর তারের মতো দু’চারটে কেশ পাকা। ইচ্ছে করেই জেদের বশে সন্তানহীন। ডিভোর্সি। স্বামী ডাক্তার। একজন নার্সের সংগে অবৈধভাবে জুটে আছে। রমাদেবী জানার পর সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করলেও শেষ চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ফলে একা ঝামেলা মুক্ত জীবন যাপন।
— ঋতুদি, একটু চা করে দেবে?
— চা খাবে? দিচ্ছি। ঋতু কিচেনে গেল।
— তুমি নিলে না? নাও – দাও কেটলি থেকে আমি ঢেলে দিচ্ছি। ঠান্ডা পড়েছে, খাবে না কেন? সংকোচ কিসের?
— না মানে। এমন কথা কেউ তো বলে না তাই — —– ওমা তাই! সবাই কি সমান হতে পারে গো দিদি?

— জানিনা দিদি। বিস্কুট নেবে না?
— তুমিও নাও। একটা আমাকে দাও। কালকে রাতে রুটি চিকেন তড়কাটা ভালোই হলেও খেতে পারলাম কই; মন চাইলো না। তুমি তৈরি করলে অথচ না খেয়ে গেলে? তাই তোমার জন্য তুলে রেখেছি খেও।
— কেন গো দিদিমণি? আমি এখানে খেলে তো বেতন কমে যাবে। আবাগীর বেটিটা বাঁচবে কেমন করে তাহলে?
— কেন তুমি ছাড়াও কি বাড়িতে কেউ আছে?
— নেই আবার? কি পাপ যে গত জন্মে করেছি তার ফল এ জন্মে পাচ্ছি। নাতনিটা আছে দশ ক্লাসে পড়ে। মেয়েটার কোনো খোঁজ নেই। বেপাত্তা।
ইতিপূর্বে তোমাকে তো কিছুই বলিনি তাহলে তুমি কি করে জানবে। জানলে হয়তো তোমার এখানে কাজ পেতাম না তাই বলিনি।
— ওমা তাই! বলে চায়ে চুমুক দিলেন।

— তোমার ঘর ছিল না?
— ঘর তো নয় এখন রেললাইনের ধারে বস্তিতে। ভয় হয় নাতনিটার জন্য; যা দিনকাল পড়েছে।
— তোমার বরের ঘর ছিল না?
— ছিল গো ছিল। অনেক দিনের কথা। একার সুযোগ নিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে পার্টি অফিস করেছে। পার্টির শকুনরা ভাগাড়ের খবর রাখে গো। জানো কালকে দু’জন মেয়ে টিউশনে পড়তে গিয়ে ধর্ষিতা হয়ে ওদের দেহ ট্রেন লাইনে কাটা হয়ে পড়ে আছে? খবর কাগজে পড়োনি? ওরা মিতুর সঙ্গে পড়ত।
— তাহলে তোমার নাতনি রেল কলোনির মাদার টেরিজা বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ে?
— হ্যাঁ। আচ্ছা তুমি এমন সহজ সরল কেন দিদিমণি?
— কঠোর কড়া মেজাজের হলে ভালো হতো বুঝি?

রমা সেন মুচকি হেসে বললেন; — এক কাজ করো ঋতুদি।
— কি কাজ? ঝাড়ু দিয়ে আজই তো মাকড়সা জাল সরাব ধুলো ময়লা সাফ করব। পুবের ঘরে তোমার বইগুলো কোথায় রাখব বলো তো দিদিমণি? কতদিন ফ্লাট তুলেছ তোমরা না থাকলে যা হয়। মাকড়সা ধুলো ময়লা। এছাড়া আর কি?
— বই গুছোবে পরে। একটা কথা বলব শোনো।
— কি? অনেক কাজ আমাকে তো সব করতে হবে বলো?
— তোমার মিতুকে সামনে রবিবার আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বলো। কিছু কথা আছে।
— কেন পড়াবে? টিউশানি? টাকা কোথায় পাবো? সংসার তো নয় — নুন আনতে পান্তা শেষ হয়ে যায়।
— তুমি আজকেই বাজারে গিয়ে কাপড় চোপড় কিছু কিনে আনবে তোমাদের জন্য। হ্যাঁ তোমার আর মিতুর জন্য। শুনছ?
— না দিদি আমার এত টাকা নেই।
— টাকা দিতে হবে না ঋতুদি। তুমি যদি রাজি হও আমার সন্তান বলতে কেউ নেই; দেবে মিতুকে?
— সারা জীবনের জন্য?
— কেন, দিতে পারবে না? ওর মা কি ফিরে—
— নাহ। সে মুখপুড়ি মুখে কলঙ্কের কালি লেপেছে। সর্বনাশী — কুলনাশী —

— দেখো আমি ওকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করব। তুমিও আমার সঙ্গেই থাকবে। যদি রাজী হও আজ থেকে লেগে পড়ো।
— না দিদিমণি। নিজের সুখের জন্য তোমার ঘাড়ে বসে পাথর হয়ে রইবো কেন? আমিও তো পোড়া কপালী।
— না ঋতুদি। আমি মন থেকে বলছি সত্যি তাই যেন করো। আমার আর একা থাকতে ভালো লাগছে না গো।

রমা ও ঋতুর চোখে উপচে পড়ছে জল। ততক্ষণে শিউলি শাখা ভেদ করে সোনালী আলো জানালার পাল্লায় পড়েছে। রমা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, আমিও স্বপ্ন দেখেছিলাম। তাও যখন হলো না এসব ছাই পাঁশ আগলে রেখে কীই বা করব? তোমার মিতুকে শুধু আমাকে “মা” বলতে বলো শুধু “মা”– ব্যস। সম্পর্ক শুধু রক্তের হতে হবে তা তো নয়। তুমি বয়সে আমার থেকে বড়। তোমার বাড়ি ঘর ভবিষ্যৎ বলতে কিছু নেই। আমার সঙ্গে থাকলে আমিও সঙ্গ জীবন তোমার সঙ্গে কাটিয়ে মিতু না হয় স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠুক। সকলে কষ্ট লাঘব করি।
— ঠিক আছে আমি ভেবে দেখি। মিতুকে বলে রাজি করাতে পারি যদি …।
ঋতু ঝাড়ু নিয়ে প্রতিটি রুমের দরজা খুলে খুলে পরিষ্কার করতে এগিয়ে গেল।

কালিন্দীর দুঃখকথা – সুদামকৃষ্ণ মন্ডল

সেই কথাট বইলতে এলম। শাল পিয়াল বনে লাকড়ি কুড়াইঞছি। সেদিন দেখা হল শিবু পরামানিকের ব্যাটা দেবুর সঙ্গে। একা পাইয়ে ছল চাতুরি বুইঝতে লেগ্যে গেল দু’ ঘন্টা। একবার পলাশ ফুল কুইড়ে লিয়ে দেখায় তো আর একবার চাঁপা ফুলের ডালি লিয়ে গায়ে পইড়ে মুখট হাসি মুখ দেখাঁয়ে কাছে ডাকে। হামি ত চোদ্দ বছরের ভবকা ছুঁড়ি। সবে আগুনপারা রঙ লেগেইঞছে। গন্ধরাজের কুঁড়ির পারা শরীলে আলো পাবার অধীর অপেক্ষা, দু’চখে রঙিন স্বপ্নে মশগুল। কখন যেন এক ঝামটায় হাতট ধইরে টান মাইরলেক। লাজে আমর গা ছমছম করল বটে। ধমক দিলম দু’ এক কথায়। ও শুনলেক লাই। বইললেক, চল পঁলায়ে যাই।
— কুথায় যাবি বল না? ডঁর লাইগছে।
— ক্যানহ বিষ্টুফুরের ম্যাল্যাতে। খুশির লহর মনকে দিবি। কাঁচচের চুড়হি, মহুলমোয়ার মিষ্টি দুবব। কাজল কিনি দুবব। লাগরদোলায় চড়িঞ দুবব। ভালোবাসার পরশ পাবি, বৃষ্টি হলে দু’জন ভিজব।

পাছে মদে মাতাল বাবাটর কথা মনে পড়লক। কী হবেক হামর সাজবার জিনিস। হামি যে গরীব বাপের বিটি। চেয়ে চিন্তে হাঁড়ির জল ফুটেক। কালিন্দীর ঢেউতে না পা পিছলে ডুইবে মরেক বাপট। মা মইরলেক বিনা ওষুদে। তার লেইগ্যে ত বনে বাদাড়ে ক্ষেত খামারে শুয়ে থাকে। বারহ মাস আগুনে ফুটায় দি বনআলুট ভাত। কত কষ্টের বাপ-বেটির দীর্ঘশ্বাসের সংসার। হামি কাঠ কুড়াঞতে যাই উঅ ত জানে। খুঁপায় জুর করি গুঁইজে দিলেক লাল পলাশ ফুল। ফুল কি আমর মাথায় ভালহ দেখায় গ? আমকে সাজান দিবক ক্যানে? বইললেক, ঠায় দাঁড়া দেখি। চিবুকে আঙ্গুল দিয়া রাখ। একখানা তুঅর ছবি তুলব। হায়! অকালে সকাল কথা। মুবাইলে ফটক তুইলে দেখাঞ দিলেক। আমর রূপ- নাকের নলক – জঙলি ছিটের ঘটি হাতা ফরক। লাজের মাথা খাইয়েঞ দেখলেক আমর বুকের গড়ন। ঘুইর‍্যে ফিইর‍্যে নিজেই দেখলেক ম্যায়া মাইনষের আরহ কত কি! নাইবা তুদের বললাম। বইললেক তু আমর হৃদয় রানী। আবার রানী? সে তো রাজার থাকে, শিবুর ব্যাটা দেবু কি রাজা? হাতি -ঘোড়া- সৈন্য -সামন্ত – পারিষদ – রাজ বাড়ি- দরবার- হীরা- মণি- মুক্তা এগুলান তো লাই। তাহলে কিসের রাজা? হৃদয় মানে, মনের আবার রাজা হয় নাকি? মাত্তর দু’ক্লাশ পড়া ম্যায়া আমি। মনট আমর জুড়াই গেলেক। লুভ সামলাতে পারলম লায়। রূপ -যৈবনের মোহে পাগল বটে। যৈবন গন্ধে পাগল। ফুলের গন্ধে যেমন পেরজাপতি আইসে। এই ত সেই রঙিন ডানা মেলা পেরজাপতি। গায়ে উঅর রঙিন ছিটের পিরাণ। টেরি বাগাইঞছে উত্তম কুমারের পারা। মুখট হাসি হাসি কইরে বইললেক, তুরে আমি ভালোবাসি রে কালিন্দী বিহা করব আমি। এই দ্যাখ — পলাশ রাঙা শাড়ি আনছি। সিঁদুর শাঁখা —। শুনেই হাসিই আর থামেনা। কতক্ষণ হাসলম! হাসতে হাসতে বুকে খিল ধইরে গেলেক। হৃদয় রাজা আমকে বিহা করবেক! ঢাল লাই তরয়াল লাই নিজের ঠিক লাই নিধিরাম সরদার। নিজের থাইকবার ঠাঁই আছে কিনা ঠিক লাই শংকরাকে ডাকে? হা–হা–হা—হা ! হাসিও পায়। ম্যায়া মাইনষের রূপ যৈবন রাজা হয়ে যায়?

তারপর, তারপর দিনকতক শুকনা পাতার ‘পরে আরাম সাজাই লিয়ে সে কি চেইটেপুইটে খাওয়া? হৃদয় রাজা কি যৈবন খেলায় মাতে? সে ত কৃষ্ণ—, রাখাল রাজা। শিবুর ব্যাটা দেবু আবার রাখাল রাজা না হুঁইয়ে কাম-পাগল- রাজা হইতে চায়। শালা পুরুষ মাইনষের এই স্বভাবট গেল না। উই যে ভদ্দর বইলে যে লোকট চুপ থেকেছে – উঅ ত কম ঢ্যামনা নয় গো। রাত্তির বেলায় ম্যায়ামনকের কাছে রাজা হয়। রাজত্ব ত ওই খাটের চৌহদ্দিটুকু। জমিভূমি- সোনা- দানা বিশেষ থাক আর লাইবা থাক। শরীলের তেজে বুকে মুখ গুঁইজে হাঁসফাঁস করে। ঝাঁটা মারি অমন পুরুষ মাইনষের কপালে। কি গো বাবু — ভদ্দরজনেরা ও মা-বুনেরা সপাটে শরীলের মাংস পায়েঞ কি করে? ধূপ ধুনা দেয়?

বাপট আমর কুথায় চইলে গেল? পেলম না। আমকে খুঁইজতে খুঁইজতে দেশ দেশান্তর হইল। কারণ আমি যে না বইলে দেবুর হাত ধইরে বন পাহাড়ের সবুজ গাছের আড়ালে ছিলাম কতদিন। লুকাই লিছে অঙ্গের স্বাদ। পাখপাখলি দেইখে মজা লুটছে। আমর ভরা যৈবন ছিল আজও আছে। পানা পুকুরে মাটির ঢেলা মাইরলে আবার পানায় এসে বুঝাই যায়। যৌবনট কি পানাপুকুর বাবুরা? ও ভদ্দরজনেরা বলহ না গ। ট্যাঁকে কড়ি লাই -খাব কি -পরব কি -কে দিবে মাথর ছায়া- কে দিবে সান্ত্বনা- কে করবে পেরতিবাদ -আমি ত নিচু জাইতের ম্যায়া গ? বাপ -হারা মা- মরা কালিন্দী। এখানকার নদীর নাম গ।

দেইখতে কালহ – মুখর গড়ন চাইয়ে দেবু আমর প্যাটে বাচ্চা দিলেক। ইখন যাব কুথায়? নিজে থাইকব কুথায়? যাকে প্যাটে রাখছি, দু’দিন পর তো পিরথিমীর আলো দ্যাখবেক। তখন??? দেবু ইখন লুকাই লুকাই থাকে। উআর বাপে হুমকি দিছে যদি আমি উআর সঙ্গে ব্যাটার বউ হঁয়ে যাই দেবুকে ত্যজ্য পুত্র করবেক। হুম্ — ম-নে-র রাজা! এত সুঁদর মন বলে যে গরব ছিল সে মোকে ছেইড়ে কুথায় গেল বইলবেক কেউ? আমর কথা শুনে তুমরা পাগল বইলছ? পাগলী আমি? না — ওই লেখ্যাপড়া জানা সাদা রঙিন পোশাকের ভদ্দর শিক্ষিতরা? যারা আমকে সাহায্য করলেক না? যারা পেরতিবাদ করলেক না? যারা শিবু-দেবুর মতো আগাপাছতলা খায়, আর নিঃস্ব সহায়- সম্বলহীন মানুষদের দাপিয়ে রাখে? ভয় দেখায়? তুরা জাইতে বলিস নিচু, যৈবনটা নিচু হয় না রে,তাই না? রূপবতী ছুঁড়ি দেইখলে হামলে পড়িস ! ছিঃ -ছিঃ -ছিঃ -ছিঃ- তুদের মুখে থুতু দিলম। যা পারিস কর যদি কিছু করার থাকে। জাত ধর্ম বলি ষাঁড়ের পারা চেঁচাচ্ছিস, যৈবন কি রাজভোগ যে হাতের কাছে পালেই হাঁ কইরে গিলে খাবি?? কি মনে করিস, মা-বুনের শরীলট মাগনা? সাত মাসের বাচ্চা প্যাটে ইখন আমি কুথায় একটু মাথা গুঁজতে পারি বলতে পারহ? ও দিদি -ও মাসি – দিবেক তোমার দাওয়ায় একটু আশ্রয়? সারাদিন ভিক্ষা করিঞ চ্যালাঞ দুবব। শুধু রাতটুকু গো? শকুন গুলানের ডরে একা একা ভয় করে। উরা পেরাণে মাইরবেক বইলছে। বাপের ঘরে শতেক ফুটা। ভাঙা ঘর। উলুখাগড়া চাপাই লাই। ময়লা অগোছলো। একা সাপকোপের ডর লাগে। যে আইসছে শুধু তার লেগে গো। উকে আমর যে বড় চাই গ। সে-ই পিরথিমীর আলো দেখুক তাকে আমি চাই গ উকে আমি মানুষ করবক। ব্যাটা হল্যে আদালতের বিচারক ম্যায়া হল্যেও বিচারক বানাবক। তুমরা ত কেউ বিচার কইরলেক না। আমর প্যাটে যে আসছে সেই হবেক বিচারক। আমি দেখাঞ দুবব শিবুর ব্যাটা দেবুকে। তুমরা কেউ তেখন লুকাইঞতে পারবক লাই। আমি বেঁইচে থাকবক অনন্তকাল। উকে কুনওদিন লুকাইঞতে পারবক লাই গ। আমর মায়ে লদীর নামে নাম দিছে কালিন্দী। চিরকাল বইব আমি কেউ মারিঞ ফেলবেক লায়। প্যাটের ছানার নাম কি দুবব, ভারত??

দ্বিরাগমন – সুদামকৃষ্ণ মন্ডল

— তুঁই কঁঅর্ত‍্যে আইবা কুঅ সাঁই?
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন। এই উত্তর দিতে কেউই পারেনা। উর্বশীর মনে যৌবন বসন্ত বিরাজ করছে। সে ভরা টসটসে, ফাগুন তাকে দিয়েছে অনেক। সদ্য বিবাহিতা উর্বশীর যৌবন অগ্নিতে ভরপুর। কিন্তু আগ্নেয়গিরি নয় অগ্ন্যুৎপাত হয়। ছাই চাপা আগুন হৃদয়ে থাকে। আপন মানুষ পেয়ে সঙ্গমরত অবস্থায় শারীরিক তৃপ্তির মাঝে মনের গভীরতম কোণে স্পর্শ করে। ভালোবাসার অথৈ সাগরে ক্রীড়ারত দু’টি প্রাণ। যেভাবে ঘুঘু খোঁজে জামরুল পাতার আড়ালে স্বজন বন্ধুকে। ভোরের ট্রেন ধরতে হবে। পনেরো দিন আগে টিকিট সাইবার সেন্টার থেকে হাতে পেয়েছে। প্রকাশ ক্লান্তির ঘুমে অবশ হলেও সতর্ক ছিল ট্রেন সময় মতো ধরতে হবে।

অনেক তেল খড় পুড়িয়ে প্রকাশকে রাজি করানো গেছে। ও চেয়েছিল আরো দু’ বছর পরে বিয়ে করতে। কিন্তু উভয়ের অভিভাবক তা মানতে পারেনি। বিশেষ করে উর্বশীর বাবা-মা। শুভষ্য শীঘ্রম। বাবার কথায় —– ” কনে কইত্যে পারিব আজিয়ার মানুষ কালিয়া নঅ থাকিব। তুরার লাই বেগ্গিনে তুয়াই থাকিব নে? এব্বারে কুনহ মতলব নঅ খাটিব “।

কারণ উর্বশীর প্রেমিক ছিল। ঘনশ্যাম এই দেশীয়। উর্বশীর বাবা -মা চায় না ঘনশ্যামের হাতে মেয়ের জীবন তুলে দিতে। সে ভালোবেসেছিল উর্বশীর রূপ সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে। আকাশের চাঁদ আকাশে থেকে গেছে হাতের মুঠোয় আসেনি। তাই ঘনশ্যাম এখন মদ্যপান করে, জুয়ার আসরে যায়। শুধু উর্বশীকে না পাওয়ার কারণে কেবল আকাশের পানে চেয়ে — “আয় আয় চাঁদ টিপ দিয়ে যা” কখন যে চাঁদ নেমে আসবে আর সোনার কপালে টিপ দিয়ে যাবে। প্রকাশ এ রাজ্য ছেড়ে যাচ্ছে ভিন রাজ্যে টাকা রোজগারের জন্য। বঙ্গোপসাগরের ইলিশ মাছ ধরতে বাংলাদেশ বোর্ডার পেরিয়ে যাওয়া ছাড়া হচ্ছে না। মাছও তত ভালো হয় না। নেভি ধরলে আঠারো ঘা। রিস্কি। প্রকাশ দাদন নিলেও স্থানীয় মাঝিকে টাকা ফেরত দিয়েছে ট্রলারে যাবে না বলে। কেরালায় ট্রিপের হিসাব ট্রিপে দেয়। রোজগারও বেশি। ফলে প্রকাশ আজ ভোরে রওনা দিল ভিন রাজ্যের উদ্দেশ্যে।

মনের মধ্যে ব্যথার সুর বাজে। না পাওয়ার – ও না কাছে থাকার কাতরতা আবেগে অভিমানে নির্বাসন হতে চায়। মাত্র আঠাশটা রাত কাছে পাওয়ার স্মৃতি নিয়ে রোদ ঝলমলে হয়ে থাকতে চাইলেও মনের কোনে ভেসে আসে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর বিদীর্ণ করা প্রভাবশালী মেঘ। ভয় হয় ঝড়ে বিধ্বস্ত হয় না যেন। পরিবারের শ্বশুর শাশুড়ির দেখভালের জন্য প্রকাশ পৈ পৈ করে বলে গেলেও বাবার বাড়ির অজুহাতে সে চলে আসে। কারণ তার পুরানো বন্ধু সহজে হাতের মুঠোতে পাবে। আসলে যৌবন একটা কুটকুটে পোকা। নিজেকে শেষ না করা অবধি জ্বালায় ভাবায়, আত্মাহুতি দিতে চায়। নতুন বৌমা বলে আত্মীয়কে কিছু বলা যায় না। উর্বশীর মা এসে নিয়ে গেল। প্রকাশ ফোন করে জেনে নেয় বাবা মার কথা।

লকডাউন হওয়াতে রাস্তাঘাটে লোকজন কম। আমন ধানের জমি সবুজ মাঠ। দিগন্তজোড়া মাঠের অন্য প্রান্তে বাবলা গাছের সারি। পাখিরা উড়ে আসে বসে। ফিঙ্গে উড়ে, ঘুঘু বসে প্রিয়জনকে ডাকে। মণিরাম মাইতির সুইলিশ গেটের কাছে মাছ ধরার চাড়ুয়া -বাঁকি -আটল -এখনো ডাঁই করে সাজানো। কেউ আর ওখানে আসে না। সেও আর ওখানে আসে না। সেও ভিন রাজ্যে চলে গেছে। সারা দিনরাত অস্থায়ী টঙে থাকত ঘুমাত। রোদ বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সেই ছাউনি। উর্বশী হাঁটতে হাঁটতে প্রত্যহ আসে। কাঁহাতক বসে থাকা যায়। সবুজ শ্যামলিমায় ভরা ফসলের ক্ষেত দেখে মনে মনে উদাসী ভাবনায় কত কিনা ভালো লাগত। ঘনশ্যাম সুলুক জেনে সন্ধানী মনে উর্বশীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। উপযাচক হয়ে বলে।

— বাপের দ্বরে আস্যু?
— হুম। আইইত।
— তোর সেই ঢ্যামনাটা ঘরে নেই মনে হয়?
— কেরলাৎ গিঐ।
— একবারও ভাবলু নু আমার কথা!! ভালোবাসায় দুঃখ আছে একথা তোকে কতবার কইছি।
— ও ভাই আঁর কোয়াল। মনৎ মনৎ পুরিদ্যে নও নে? জাইলা ঘরৎ বিয়া দি এ মন যৈবন ছারখার হইবার লাই। কপালৎ সিঁদুর লেইপ্যে আঁই ইতার স্থায়ী চিরতরে বউ হই গিঐ। মন পুরি যঅরগৈ কুনহ উগ্যা ত নঅ চাঅর।
— আমি তো বুঝি তোর মনে কি হটে?
— তয়? সতী মাইয়াপুয়ার জাত আঁই। অসৎ হইত্যে পাইরজ্যুম ন্যে?
— সবকিছু তোর উপর নির্ভর করেটে। তুই কি পারবি? ওকে ছাড়িয়া আমার হাত শক্ত করিয়া ধরতে?
— মাইনষের চুখে অসৎ মাইয়াপুয়া নঅ কইব?
— আমার জীবন তাহলে বরবাৎ হই যাউ তুইও চাউটু?
— কিয়া? আঁর মতো কোনওমিক্যা তুঁইও বিয়া করি ন্য পারঅ?
— ভালো লাগা ভালোবাসায় একজনের কাছে আত্মসমর্পণ করা যায়।
— নাঃ। আজিয়া ইন কঅন ন্য সাজে।
— সাজে। সাজে উর্বশী।

ঘনশ্যাম হাউহাউ করে কাঁদছে। ভালোবাসার পাত্র খোয়ানোর জন্য সে কাঁদছে। উর্বশী এগিয়ে আসে জড়িয়ে ধরে। শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছে দেয়।
— তোকে হারিয়ে আমার আর কিচ্ছু চাইনি।
ওরা দু’জনে চোখের জলে ভাসে। অবশেষে টঙের মধ্যে বসে কিছুক্ষণ নীরব থাকে।
— এক কাজ করিত্যে পারিবা ন্যে?
— ক।

ততক্ষণে কলম্বি ডগায় বসে থাকা ফিঙ্গে বাসায় ফিরে গেছে। গোধূলির সোনালী রঙে পৃথিবী স্নান করছে। আলো-আঁধারি রঙ মিলেমিশে ওদের ক্লেদজ কুসুমকে মনোবল দিয়েছে।
— ইতে যতদিন নঅ আইব তুঁই এডে আইয়ারে ওয়েট করিবা, বা আঁই যদি আগদি আইই আঁই ওয়েট কইরজ্যুম।
উর্বশী গর্ভবতী। খবরটা পেয়ে প্রকাশ ফোনে বলল, সাবধানে থেকো।
ঘনশ্যাম আগের মত বিষণ্ণ মনে উষ্ণ উসকোখুসকো চুল নিয়ে ঘুরে না। সে এখন বাঁচার আনন্দে বাঁচতে চায়। সে আর মন মরাও নয়।

সুদামকৃষ্ণ মন্ডল | Sudamkrishna Mondal

Best Kobita Bangla Collection | Bengali Poetry Collection

Best Bangla Kobita Platform | Shabdodweep Bengali Poetry

Famous Poetry in Bengali | Bengali Classic Poetry

Kobita Lyrics in Bengali | Best Bengali Poetry

Shabdodweep Web Magazine | Online Bangla Golpo Katha | Sudamkrishna Mondal

Bengali literature has always been rich with emotion, culture, and history. Online Bangla Golpo Katha, is a deeply cherished part of this tradition. In recent years, the rise of online platforms has made it easier than ever to access and enjoy these stories from our Bengali writers. One such platform where you can immerse yourself in captivating Online Bangla Golpo Katha is Shabdodweep Web Magazine. Here, readers can find a treasure trove of online Bangla Golpo Katha, including works by authors such as Sudamkrishna Mondal, whose writings are widely appreciated for their depth and storytelling prowess.

What is Online Bangla Golpo Katha?

Online Bangla Golpo Katha refers to the rich world of Bengali short stories and novellas available on digital platforms. These stories are typically written by well-known Bengali writers and often reflect the unique culture, social issues, and emotional landscapes of Bengal. The advent of the internet has made it possible for people worldwide to access these literary treasures, making Online Bangla Golpo Katha more accessible than ever before.

Shabdodweep Web Magazine has emerged as one of the leading digital platforms that showcase these stories. By featuring a blend of traditional and contemporary narratives, the magazine preserves the essence of Bengali literature while ensuring it remains relevant to today’s audience.

Why Choose Shabdodweep Web Magazine for Online Bangla Golpo Katha?

Shabdodweep Web Magazine is a trusted source for readers looking to explore online Bangla Golpo Katha. The magazine provides a wide array of stories from both established and emerging Bengali writers, ensuring that there is something for everyone. From tales of love and loss to stories deeply rooted in historical events, Shabdodweep’s collection of Bengali stories is a testament to the diversity and richness of Bengali literature.

One of the standout features of Shabdodweep Web Magazine is its commitment to offering a platform for high-quality literary works. By maintaining the highest standards of publishing, Shabdodweep ensures that each story is not just entertaining but also meaningful. Whether you are a lifelong fan of Bengali literature or a newcomer, the magazine’s collection of online Bangla Golpo Katha will surely captivate your imagination.

The Role of Bengali Literature in Shaping Modern Storytelling

Bengali literature has played a significant role in shaping modern storytelling, not only in Bengal but across India and the world. The unique blend of rich cultural heritage, philosophical depth, and emotional complexity in Bengali stories makes them universal in appeal. Through online platforms like Shabdodweep Web Magazine, Bengali literature continues to thrive, providing readers with easy access to both classic and contemporary stories that reflect the complexities of human life.

Why You Should Read Online Bangla Golpo Katha at Shabdodweep

A Wide Variety of Stories: Whether you are looking for historical tales, contemporary narratives, or fantasy stories, Shabdodweep has a diverse collection of online Bangla Golpo Katha to satisfy every reader’s preference.

Access to Renowned Writers: Shabdodweep Web Magazine features works from our Bengali writers, including Sudamkrishna Mondal. Reading his stories on the platform gives you an insight into the emotional and philosophical depth of Bengali literature.

Free and Easy Access: One of the biggest advantages of reading online Bangla Golpo Katha on Shabdodweep is that it is completely accessible for free. With just an internet connection, you can explore countless stories at your convenience.

Timeless Appeal: The themes explored in Online Bangla Golpo Katha—such as love, loss, human struggle, and societal issues—have timeless relevance, ensuring that the stories continue to resonate with modern readers.

FAQs on Online Bangla Golpo Katha at Shabdodweep Web Magazine

Q1: What kind of stories can I read in the Online Bangla Golpo Katha section of Shabdodweep Web Magazine?

A: Shabdodweep Web Magazine offers a wide variety of stories, including historical narratives, contemporary fiction, emotional tales, and stories based on societal issues. Whether you’re interested in classic themes or modern-day storytelling, there’s something for every reader.

Q2: Is there a subscription fee to read Online Bangla Golpo Katha on Shabdodweep Web Magazine?

A: No, Shabdodweep Web Magazine offers free access to its entire collection of online Bangla Golpo Katha. Simply visit the website, and you can start reading right away!

Q3: How do I explore the works of Sudamkrishna Mondal on Shabdodweep Web Magazine?

A: You can easily explore Sudamkrishna Mondal’s works by visiting the Shabdodweep Web Magazine’s website. Look for the author’s name in the search section or browse the literature section to find his stories.

Q4: Are the stories on Shabdodweep Web Magazine suitable for all ages?

A: While most stories on Shabdodweep Web Magazine are suitable for adult readers, there are some that are appropriate for a younger audience as well. Each story is categorized, so you can choose according to your preferences.

Conclusion

Online Bangla Golpo Katha offers an exciting way to experience Bengali literature from the comfort of your home. Platforms like Shabdodweep Web Magazine make it easy to discover and enjoy the works of Bengali writers such as Sudamkrishna Mondal. With a wide selection of stories ranging from historical to contemporary, Shabdodweep ensures that readers can find something that resonates with them. So, if you haven’t already, visit Shabdodweep Web Magazine today to explore the captivating world of online Bangla Golpo Katha!


Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio

Leave a Comment