New Bengali Poetry 2023 | সুশান্ত সেন | কবিতাগুচ্ছ

BENGALI POETRY
Bengali Poetry

সুশান্ত সেন – সূচিপত্র [Bengali Poetry]

হরিণ – সুশান্ত সেন

ছোটাছুটি বনের ভেতর
গতি ও সুন্দর
অনেক স্বপন দিয়ে গড়া মোহনায়
বিস্তৃত শীতের ভিড়।
অনেক আওয়াজ নিয়ে
বন্দুকের হাত শক্ত হয়
পুনঃ পুনঃ ব্যবহারে।
তবুও হরিণ দৌড়ায় দৌড়ায়
সারা বন জুড়ে অনেক অনেকক্ষণ।

মায়াজাল – সুশান্ত সেন

সামনে যা দেখা যায় সে ত এক মায়াজাল
আসলে তার অর্থ ভিন্নতর ।
সেই ভিন্নতর অর্থের খোঁজে
কেউ হা হুতাশ করতে থাকে
কেউ খোঁজেই না।
মহামান্য আদালত যা বলেন
সব সময় তা মেনে চললে
গাছে জল দেব কখন
ফুল ফোটানো হবেই বা কেমন করে !
তাই হাতপাখা দিয়ে
হওয়া দিয়ে চলেছি, আর
জড়িয়ে জড়িয়ে যাচ্ছে মায়াজাল।
অর্থ খুঁজতে থাকা জীবন ভোর ।

সকাল – সুশান্ত সেন

সকাল একটু বাড়লেই
আবার দু চোখে ঘুম নেমে আসে
মনে হয় সারা রাত ঘুম হয়নি।
নিজের অজান্তেই
সোফায় বসে
একটু জিরিয়ে নেবার চেষ্টা করলেই
দু চোখ এক হয়ে যায়।
এ কেমন জীবন কে জানে !
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সকাল চলে গেলে
সকাল কি আর ফিরে পাবো !

শিশু – সুশান্ত সেন

সে সকালে উঠে দাঁত মাজবে না
বাথরুমে যাবে না
চান ও করবে না
দুধে অরুচি, পাউরুটি টোস্ট খেতে চায়।
বুঝিয়ে বলতে বলতে
বেলা গেল।
পেছনে পেছনে ঘুরতে ঘুরতে পায়ে
ঝিম ধরে গেল।
মা বা বাবা ধমক দিলেই
বাধ্য হয়ে যায়।
নচেৎ নয়।

মল্লিকা – সুশান্ত সেন

তুমি কাছে এসো না মল্লিকা
মাঝে তো শ্বাপদ হই
তখন মুখোশ টা খসে পড়ে আচমকা,
লোলুপ নখের কাছে
তুমি হবে পরাজিত, যে কোনো সময়ে।
তখন শিক্ষা তো ভুলেছি
পুরুষ সকল বিকৃত ক্ষুধার দাস
যুগ যুগ ধরে জানো না কি তুমি !
মুখে বলে মিথ্যা মিথ্যা প্রেম প্রেম
আসলে তা মেয়ে ধরা ফাঁদ।

কবিতা – সুশান্ত সেন

কবিতার ভাষা নেই কবিতার সৌন্দর্য কোথায়
ছন্দ হারা কোথায় লুকায়!
হৃদয় অশান্ত হলে কোন মরুভূমি ছেনে
তৃষ্ণার জল খুঁজে যায়।
বৈশাখের জলশূন্য মেঘদল ছন্নছাড়া গাভীর মতন
হৃদয়ের বেলাভূমি জুড়ে ঘুরে মরে, অতৃপ্ত সে বীণের বাদন।
পূর্ববর্তী কবিদের সৃষ্টি পড়ি যদি পাই সারস্বত পথ
যেখানে বসন্ত এসে নব প্রাণে ছুটাইয়া দেয় তার রথ।
নীহারিকা প্রাণাধিকা মত্ত হয়ে এসো সেইখানে
শক্তি দাও এই ক্ষুদ্র প্রাণে।
চাই চাই আরও চাই জাগরিত কথাগুলি
চাই আমি ভাগ করে নিতে,
আচম্বিতে,
সরস্বতী বীণাপাণি শক্তি দিয়ে দাও ভরে মন
লেখনীতে সম্পূর্ণতা আসবে তখন।

লেখা – সুশান্ত সেন

লিখে কি হয়!
মনের কথা বলা
শোনে কি কেউ সারা দিনে!
কোন এক সময়।

কাকে শোনাতে চাই
কেন ?
উত্তর তো নেই।
পাতা ঝরে যায় সকালেই।

স্থবির চাঁদ ও মায়াবী রাত
স্থবির বিনশ্বরের সন্ধ্যা
সুগভীর রাত্তিরের মত
মনে ভয় জঙ্গলের পথ
তার মাঝে মনে দোলা
লেগেছে সতত।

এখন লেখাটাকে পাস – বালিশের মত জড়িয়ে
নিদ্রা সুখ নিদ্রা
লেখা’টাকে রেখেছি সরিয়ে।

জাঁতাকল – সুশান্ত সেন

জাঁতাকলে পড়ে গেলে
মানুষ আর মানুষ থাকে না
প্রতিদিন ঘুরে মরে
সাংসারিক কর্তব্যের মাঝে।
জাঁতাকলে পড়ে গেলে
কেবল ঘূর্ণন,
ঘূর্ণনের শেষে
তোমার আদর্শ আর স্বপ্ন গুলি
বিপর্যস্ত হয়ে কোন দিগন্তের
পারে চলে যাবে,
তাকে আর খুঁজে খুঁজে পাবে না ত তুমি ।
বিস্মৃতি কখন এসেছে দুয়ারের পাশে
পেঁজা পেঁজা মেঘ হয়ে উড়ে চলে যায়
কোন এক বলাকার পাখায় পাখায় ।

দ্রোণাচার্য – সুশান্ত সেন

দ্রোণাচার্য ছিলেন অস্ত্রগুরু
শিক্ষক তিনি মানুষ করলেন
পাণ্ডব কৌরব
আবার এমনই এক কুচুটে তিনি
যে একলব্যের আঙ্গুল কেটেও
ক্ষান্ত হলেন না
চক্রব্যূহ করে বুদ্ধি দিলেন
অভিমন্যুর ধনুকের গুন কেটে দিতে,
কেটে দিতে ঘোড়ার লাগাম,
হত্যা করতে বললেন পেছন থেকে
অভিমন্যুর সারথি
আর প্রায় নিরস্ত্র অভিমন্যু’কেও
হত্যা করতে বললেন সাত যোদ্ধাকে।
কে জানে এই যুগেও তিনি
অবতীর্ণ হলেন কি না।

প্রত্যাখ্যান – সুশান্ত সেন

তুমি নিঃসাড়ে এগিয়ে
দরজায় দাঁড়ালে,
দূরে প্রসারিত দৃষ্টি
হাতের আঙুলে জড়িয়ে ধরেছো
শাড়ির আচল।
ওরা এসেছিল, চলে গেছে,
বাঙময় হয়ে উঠলো নীরবতা।
তুমি উপেক্ষিতা।

ঢিল [Bengali Poetry]

ঢিল পড়লো পুকুরের জলে
বৃত্তাকারে মৃদু স্রোত তৈরি হয়ে
ধাক্কা দিতে থাকলো পাড়ে।
এই ধাক্কায় ধাক্কায় চলতে থাকা
কখনো মৃদু কখনো জোরে ,
চলতে থাকে জীবন চলতে থাকে সভ্যতা।
এদিকে ত দুষ্টু ছেলেটা ঢিল ছুড়েই
পগার পার।
তৈরি করা মতবাদ নিয়ে তখন পাড়ায় পাড়ায়
জোর বিশ্লেষণ চলছে, কোনটা ঠিক কোনটা বা
বেঠিক।
যত ভাবেই কাটা ছেড়া হোক না কেন
দুটো হাত দুটো পা আর একটাই মাথা
পাওয়া গেলো শেষ পর্যন্ত।
কিছু কিছু আঙ্গুল পাওয়া গেলো
যেগুলো ফুলে কলাগাছ হয়েছে।
কয়েক টা দিন রোদ্দুরের তেজ পেয়েই
শুকিয়ে ঝিরিঝিরি ঝরে পড়লো।
দুষ্টু ছেলেরা মাঝে মাঝেই পুকুরে ঢিল ছুড়ছে।

শব্দ [Bengali Poetry]

নানা শব্দ নিয়ে ভাবতে বসে
সীমাবদ্ধতার কথা এসে যায়
কত কিছুই ত জানিনা।
কিছু লিখতে গেলেই অপারতা ছেঁকে ধরে।
তখন জয় গোস্বামী পড়ি
ঈর্ষা বেড়ে যায়
বাড়তে বাড়তে যখন পর্বতশৃঙ্গ ছুঁতে যায়
তখন গল গল করে হিমবাহ গলতে থাকে
কি তার স্রোত,
সেই স্রোতে জীবন যৌবন ধন মান সব ভেসে যায়।
তখন আবার শব্দ গুলি নিয়ে
খেলা শুরু।
সেই খেলা চলতেই থাকে।

ভাবনা [Bengali Poetry]

এ কোন সভ্যতা যাহা নখ দন্ত করেছে প্রকাশ,
এ কোন সভ্যতা যাহা হেঁকে ডেকে আনে সর্বনাশ!
এ কোন জীবন যাহা প্রতিক্ষণ রয়েছে শঙ্কিত!
এ জীবন শিক্ষাহীন আচরণে নিয়ত পতিত।
চলো আজ উঠে এসো এক সাথে প্রতিবাদ করি
নিজেদের চেষ্টাতে নতুন জীবন এক গড়ি,
মৃত্যু এসে পড়ে যদি তাহাকেই করি আলিঙ্গন
আমরাই জন্ম দেব বাঁধা হীন সার্থক জীবন।
যে জীবন সুধারসে সর্বদাই উথলিয়া থাকে
যে জীবন পূর্ণ হয় জীবন পথের প্রতি বাকে
উন্নত মানুষ হয়ে যেন গড়ি সার্থক সমাজ
যুগ সন্ধি ক্ষণে এই শপথ টি নিয়েছি যে আজ।

পাসপোর্ট [Bengali Poetry]

পাসপোর্ট না থাকলে আপনি
কি আধুনিক মানুষ !
দেশান্তরী হবেন কি করে ?
পাড়া বেড়াবার সাধ ও রেস্ত থাকলেও
কিচ্ছুটি হবার জো নেই।
বসে থাকুন ঘরের কোনায়
আর নানা দেশের ছবি দেখে
তেষ্টা মেটাতে থাকুন।
শীতের পাখি হতে গেলেও
একটা জবরদস্ত পাখনা না হলে
সাইবেরিয়া থেকে
মতিঝিল এ এসে পৌঁছাবেন কি করে ?
পাসপোর্ট একটা নাহলেই নয় , বাবুমশাইরা।

মানুষ [Bengali Poetry]

অহর্নিশ কিসের সন্ধানে এই মনুষ্য যাত্রা
বিশাল ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে।
অতি ক্ষুদ্র এই মানুষের দম্ভটা কেন ?
কিছুই বুঝি না।
ইতি উতি চলে যায় নিঃসঙ্গ সারথি
রথ ঘর্ঘরিয়া।
মোহ তার মায়াজাল
করেছে বিস্তার,
পাগল প্রেমের মত।
পথপার্শ্বে অপেক্ষায় রত সন্তান সন্ততি।
কিসের সন্ধানে সে কাটবে এ
মনুষ্য জীবন।

দাদু [Bengali Poetry]

শ্লথ গতি দাদু বসেছিলেন সোফায়
আর কাশছিলেন
পুপে এসে বললো – তুমি কাশছো কেন ?
দাদু বললেন – সাধে কি আর কাশছি ,
কাশি যে আমায় কাসায়।
পুপে বললে – কাশিকে আমি বলে দেব
তোমার ত্রিসীমানায় না আসতে।
দাদু বললেন – বেশ
বলে কাশি চাপতে বসলেন।
তাড়াতাড়ি মুখে লবঙ্গ ফেললেন,
যেন পুপে কাছে থাকার সময় কাশি না আসে।
পুপের তো এক জায়গায় বেশিক্ষণ থাকার উপায় নেই,
একটু পরেই সে রোদ্দুরের ছায়া দেখতে গেলো,
দাদু সেই ফাঁকে বার দুয়েক কেসে নিলেন।

গতানুগতিক [Bengali Poetry]

সে বলল আমি ত নই গতানুগতিক
আমি ত নই পালে জোতা
আমি ত এক উড়ন্ত বক
নানা ঠেকে আমার কদর।
সে বলল আমি ত তাই
সাতেও আছি পাঁচেও আছি
যখন আমায় খুঁজতে যাবে
তখন আমি নেই পাত্তা।
সে বলল আমি ত নই হাতের মোয়া
সময় হলেই চিবিয়ে খাবে
এমন ত নয় এমন ত নয়।
সে বলল আমি ত এক হওয়াই বাজি
ঊর্ধ্ব মুখে আমার নিশান
থৈ পাবে না থৈ পাবে না
আমি ত এক চরকি বাজি।

কি করবো [Bengali Poetry]

কি করবো সকাল থেকে ভাবছি বসে আমি
হরেক রকম পথের কথায় বাড়ে যে পাগলামি,
ডান রাস্তা দেখতে ভাল বাম রাস্তা কাঁচা
সোজা রাস্তায় দেখা যায় রে বাঘের বড় খাঁচা।
সেখান থেকে হালুম হালুম শব্দ আসে জোরে
সেই রাস্তায় কেমন করে যাই বলতো ও রে !
ডান রাস্তায় একটু গিয়ে সামনে চেয়ে দেখি
জাত কেউটে দুলিয়ে ফণা ফোঁস করছে সে কি !
পালিয়ে তখন কাঁচা রাস্তা ধরে যখন এলাম
খানা খন্দ জল জমেছে ভাঙ্গা রাস্তা পেলাম ।
ধীরে ধীরে সেই রাস্তা পৌঁছে দিল বাড়ি
কাঁচা রাস্তা আমার ভালো বন্দনা গাই তার ই।

সকাল [Bengali Poetry]

সকালেই খেতে হবে চা
কাঁধে নিয়ে লাল গামছা
পুকুরের পাড়ে যাবি চল
তারপর কি করবি বল ?

গামছায় ধরবি কি সিঙি
হাল ধরে বাইবি কি ডিঙি
আমাকেও সাথে নিয়ে চল
তারপর কি করবি বল ?

দূর ঘাটে চলে যাব আজ
থাকবে না কোনো বাঁধা লাজ
প্রভাতের ভৈরবী সুরে
মনটাকে দেবো আজ মুড়ে।

এই ভাবে আমার সকাল
কাটবে কি বলরে দুলাল।

হৃদয় [Bengali Poetry]

হৃদয় টাকে ছিঁড়ে বাতাসে উড়িয়ে দিলে
কি ভালোবাসা ছড়িয়ে যাবে চারদিকে
না কাটা ঘুড়ির মত এপাশ ওপাশ করতে করতে
ঠিক নেমে আসবে মাটিতে।
মাটিতে পড়লেও তো বীজ ক্রমে অঙ্কুরিত হয়
এই আপ্ত বাক্য তো শুনে ছিলাম একদা।
হৃদয় ও হৃদয় বিষয়ক কথাগুলি এখন আর
খুব একটা চর্চায় নেই,
এখন কেবল খাই খাই রব চারদিকে
নানা রকম খাদ্য তালিকায়
নারী মাংস ও আজকাল চ্ল হয়েছে ,
প্রতিদিন এর খবরের কাগজ দেশ ও দেশের প্রান্তের সেই খবরই ছাপছে।
তাই হৃদয় নিয়ে কথাবার্তা বন্ধ করুন তো একদম।

চিচিং – ফাঁক [Bengali Poetry]

চিচিং – ফাঁক, চিচিং – ফাঁক
ক্রমাগত ডাক শোনা যায়
দ্বার সরে যায়
দেখা যায় অন্তরের কালিমা
সব আলো শুষে নিয়ে কালো ছাড়া অন্য কোনো রং প্রকাশিত হলো না – এত দিনেও।
ছন্নছাড়া জীবন টা স্বপ্ন গুলো ভেঙ্গে ফেলে
সেই দ্বার খুঁজে ফেরে
চিচিং – ফাঁক বললে যে খুলে দেবে
এক আলোকিত জীবনের চাবিকাঠি।
খুঁজে ফিরি সেই দ্বার
প্রাপ্তিহীন বেড়ি পরা
পা দুখানি টেনে টেনে
বয়ে যায় সময়ের স্রোত।
লাভা যুক্ত বেদনা মাখানো।

বাড়ি [Bengali Poetry]

তুমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেই
একটা ভয় এসে চেপে ধরে
কখন ফিরবে কত দেরি হবে ফিরতে
চারপাশে অনেক ভিড় অনেক যানবাহন
সেই ভিড়ে তুমি হারিয়ে যাবে না তো
বাসে চাপা পড়তেও পারো
নাহলে কোনো বদমাইশ তোমাকে কিছু শুকিয়ে বেহুশ করে দিলো না তো
তারপর তোমাকে নিয়ে বদ্ধ খুপরিতে আটক করে রাখলো
কিংবা ধারালো কিছু অস্ত্রে কেটে দিল তোমার হাত
এমন একটা সমাজ যে
এই সব ভাবনা ভাবতে বাধ্য হই
ভাবতে ভাবতে, শিহরিত হতে হতে এক সময়
বুকের ভেতর দম দম আওয়াজ হতে থাকে
যতিহীন, গতিহীন কেঁপে কেঁপে উঠি

কলাগাছ [Bengali Poetry]

চারপাশে এত আঙ্গুল ফুলে ফুলে কলাগাছ হচ্ছে যে হাতের পাঁচটা আঙ্গুলই আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর আঙ্গুলই খুঁজে না পেলে লিখবোই বা কি, খাবই বা কি করে !
খুঁজতে খুঁজতে আকাশের মেঘটা টপ করে গিলে ফেললাম আর গলার ভেতর মেঘটা আটকে গেলো, তখন গলা ফুলে ফেঁপে অস্থির।
তখন জানলাম একটা কলা টপ করে গিলে ফেলতে পারলে গলাটা পরিষ্কার হবে।
সেই থেকে কলাগাছ খুঁজে বেড়াচ্ছি, জীবন ভোর যে কলাই খেয়ে এসেছি সেই কথাটা এখন ভুলেই মেরে দিয়েছি।

পথ [Bengali Poetry]

কে হাত ধরল
কারা কারা ধরল না
সে কথা ভেবে কি পথ চলা যায়!

কে কে দেখল
কারা কারা দেখল না
তাই নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই
সকালের শিউলির
সে শিশিরে শিশিরে স্নানে আপ্লুত।

এখন ত পথ চলবো বলে
বেড়িয়ে এসেছি রাস্তায়।

কামিজ ও প্যান্ট [Bengali Poetry]

কামিজ কহিল ডেকে প্যান্ট মহাশয়
প্রতিদিন এইরূপ যন্ত্রণা না সয়,
আমার ওপরে তুমি বসো কেন চেপে
বেল্টের বাঁধন দাও কোন আক্ষেপে ?
দাগ পড়ে ভাঁজ পড়ে মাঝখান দিয়ে
কি যে সুখ পাও বলো আমাকে কাঁদিয়ে ?
কামিজ কে বলে প্যান্ট, তুমি না থাকলেও চলে
আমি না থাকিলে দেহ, যায় রসাতলে ।
এই রূপ তত্ত্ব কথা শুন মহাজন
পাইলে পাইতে পার অমৃত রতন।

অধ্যাপক [Bengali Poetry]

মারলাম ঠাঠিয়ে একটা চড়
অধ্যাপক মশাই কে, সহ্য হলো না যখন বললেন
ছাত্র ছাড়া উনি করো সাথে কথা বলবেন না।
আরে বাবা জীবনের কাছে যে পাঠ নেয়, সেই তো ছাত্র,
তাহলে আমি ছাত্র নই কেন !
জল পড়ে পাতা নড়ে, রাখাল বড় সুবোধ বালক,
সে না বলিয়া পরের দ্রব্যে হাত দেয় না,
এই সব পড়েছি আর ভুলেছি বলে কি আমি বানের জলে ভেসে যাব !
অধ্যাপক মশাইতো মাথা ঘুরে লটকে পড়লেন
আর চারপাশের চেলা চামুণ্ডারা মানে মানে কেটে পড়লো।
পাল্টাপাল্টি পাল্টাপাল্টি
এখন আমি হয়ে গেলাম অধ্যাপক
আর সারা সমাজটা হে হে ছাত্র !
কি রকম বুঝছেন বাবুমশাইরা ?

কাঁপুনি [Bengali Poetry]

আবে কে রে !
আওয়াজ টা শুনেই শিরদাঁড়ায় কাঁপুনি ধরে গেল
গোলগোল চোখ মেলে তাকালাম
আর কালু কে দেখতে পেয়েই চোখ ঘোরালাম অন্য দিকে

(আয় আয় আয় কাছে আয় আমরা দুজন মিলে,
হাত ধরে নাচি, গান গেয়ে উঠি, লুটোপুটি খাই
চাচার নাম – আপনি বাঁচিলে)
বিস্তর ঘোলা হোল জল
পান মাত্র জীবন বিকল।

সেই থেকে খুঁজে ফিরছি “ডায়োজিনিস” কে,
যিনি “আলেকজান্ডার” এর চোখে চোখ রেখে ঝাঁঝিয়ে উঠবেন –
“রোদ্দুর না আড়াল করে সরে দাঁড়ান ।”

ধ্বংস [Bengali Poetry]

ধ্বংসের করাল রূপ বারবার
রেখে যায় ক্ষত
অবসন্ন পৃথিবীর বুকে
বিক্রীত যন্ত্রণা নিয়ে
দেশে দেশে হারায় মানুষ
মুষ্টিমেয় হুঙ্কারে হুঙ্কারে
করেছে গ্রহণ
ভোগবাদী সভ্যতার দান
বিজ্ঞান আহত হয়
কুক্ষিগত মন্দিরে মন্দিরে
তন্দ্রাচ্ছন্ন অবোধ মানুষ
অসহায় শ্বাস ফেলে

ভ্রান্ত [Bengali Poetry]

ক্ষমতা পেলেই লোলুপ হয় যে চোখ
স্বর্গ মর্ত পাতাল বিচার করা
অধিকার পেয়ে ভ্রান্ত বিচার শেষে
কুটিল নিয়তি আজকে পড়লো ধরা।

আকাশের রং এখন হলো যে কালো
ঈশান মেঘেতে রোদ কাঁপে থরথর
বজ্র মুষ্টি দেখা দেয় ময়দানে
পড়ছে বৃষ্টি নদী দেখি ভর ভর ।

যত দিন যায় মনে ভাব তুমি রাজা
যা তুমি ভাবছো সেটাই সঠিক পথ
সরস্বতীর স্রোত হলো বেগহীন
মুনি জন চুপ একা হাসে ভগীরথ ।

রাজার অন্ন কতদিন খোলা থাকে
প্রজারা যখন ধর্ষিত প্রতিদিন
দিল্লী থেকে যে দৌলতাবাদ চলা
ভাবে শুধু ঠিক একটি অর্বাচীন।

মল্লিকা [Bengali Poetry]

মল্লিকা কাছে এসো
হাতে হাত রাখো
এ বুকে বেদনা বড়
বাড়ে প্রতিদিন।
তুমি কাছে এলে
এতটুকু সুখ পাই
সে তো তুমি জানো।
অবুঝ নিয়তি
ব্যবধান গড়ে তোলে
সেখানে বিষাদ
ছোবলে ছোবলে
যন্ত্রণা যে হয়
সে তো তুমি জানো।
তাই বলি
কাছে এসো
আরো আরো কাছে
কাছে এলে
যন্ত্রণা যে কমে
সে তো তুমি জানো।

রোলি [Bengali Poetry]

পাঁচটি শিশুর দেহে বেঁচে থাকবে রোলি, স্বপ্ন হয়ে স্পর্শ হয়ে গন্ধ হয়ে রোলি প্রাণ পাবে রূপ নেবে পাঁচটি শিশুতে। আমদের হিংসা আমাদের লোভ আমাদের জান্তব ক্ষুধা বুলেটে বুলেটে তোমার মাথাটি ছিন্নভিন্ন করে লাল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিল, সেই আকাশে যেখান থেকে আর ফেরা যায় না, যেখানে এই পৃথিবীর রূপ রস গন্ধ মাধুর্য সব অর্থহীন। দুষ্কৃতী আমি সেই লাল আকাশ দেখে মাতালের মত হেসেছিলাম।

রোলি, তোমার মরণে আজ আবার জেগে উঠলো প্রাণ, নতুন করে সূর্যোদয় হলো পাঁচটি প্রাণে, নতুন করে বেঁচে উঠতে শিখবে পৃথিবী! নতুন করে? এ কি আশীর্বাদ না অভিশাপ!!
মা, রোমির মা, সেই নব সুষমায় কাটিয়ে দিতে পারবে কি তার বাকি জীবনটা! কে, কে ফিরিয়ে দেবে রোমিকে মাতৃক্রোড়ে!!

এক মুঠো শৈশব [Bengali Poetry]

এক মুঠো শৈশব কে কুড়িয়ে আনতে গিয়ে দেখি, সে আমার হাত ধরে সামনের মাঠে দাঁড়িয়ে অঝোরে কেঁদে চলেছে , মা তার হারিয়ে গেছে কোন অজানা দেশে, যে দেশ থেকে আর ফেরা যায় না। সেই কান্নার রেশ ধরে গুটিগুটি পা’য়ে হেঁটে যাই, মা হারা সন্ধ্যায়, পদ্মপুকুরের মোড়ে বেল ফুল তুলি, অপেক্ষায় থাকি।
অপেক্ষা করতে করতে শৈশবটা কুড়াতে থাকে রবারের বল, ক্যারামের ঘুঁটি, খেলনার ঘটি বাটি, রেলগাড়ি ও বাতিঘর। চড়কের মেলায় সে খুঁজে পায় তালপাতার সেপাই, একতারের বাদন, মোহন বাঁশিকে।
সাপ খেলা দেখায় সাপুড়েরা, বাদর খেলা বশী মিঞা ।
শৈশবটা এই ভাবেই কেটে যেতে থাকে।

আজকে [Bengali Poetry]

যেতেই হবে সাত সকালে আজকে
পরতে হবে নতুন কেনা সাজকে
তুলতে হবে গলায় নতুন সুর’টা ;
দোরমা পটল চিংড়ি ভরা পুর’টা
খেতেই হবে পেটটা পুরে কালকে
কায়দা করে গিলতে হবে ঝালকে।
জিলিপি তে জল ঝরছে জিব’তে
রস বেরোলো রসগোল্লা টিপতে
ল্যাংচা পেলে মালপো আর খাই না
মিহিদানা সরভাজা তো পাই না।
হিং কচুরি কোন দোকানে পাই রে
ছোলার ডাল তার সাথে তো চাই রে।
বেদম ভেবে ঘাম ঝরলো গাত্রে
হাত ছেড়ো না গা ছমছম রাত্রে।

পথ [Bengali Poetry]

তোমার ওপর দিয়ে যেতে গিয়ে
রক্তপাত হয়েছে অনেক
চাপ চাপ রক্ত শুকিয়ে কালচে মেরে গেছে
খানা খন্দ ও অনেক তৈরি হলো
বিউগল বাজিয়ে সেনাদল জানালো
তারা জয়ী।
নিশান উড়াল মধ্যরাত্রে।
এক দল বলে উঠলো আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাবো আজীবন।
তখন পথের চিহ্ন সব ধুয়ে মুছে গেছে,
সারথি কোন পথ দিয়ে যে রথ চালিয়ে নিয়ে যাবে, খুঁজে না পেয়ে বেভুলের মত তাকিয়ে আছে।
এই অন্তহীন পথে যাত্রা।
অতঃপর বেদনা কোন ভাষাতে গান গেয়ে উঠবে কে জানে!

হিরোশিমা ও নাগাসাকি [Bengali Poetry]

হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে ছয় লক্ষাধিক প্রাণ মারা গেলেও সুসভ্য (!) পাশ্চাত্য সভ্যতা সে খবর জানতে পারলো প্রায় এক বছর পর, জাপান বারবার বলা স্বত্বেও এক বছর ধরে সে কথা মানা হলো না, প্রচারের এমনি মহিমা।
নিউ ইয়র্কার, উইলিয়াম শন আর জন হারসি না থাকলে আরো কতদিন মুখ ফিরিয়ে থাকত পাশ্চাত্য সভ্যতা কে জানে !
তাই এখনো কেবল প্রচার ও প্রচার। প্রচার সারাদিন ধরে, প্রচার মধ্যরাত্রে ।
এই অস্ত্র দিয়েই তো টুটি চেপে রাখা হয় — জনগণ, আফিং এর নেশায় বুঁদ হয়ে থাকো তোমরা, নিজেদের ভেতর আঁচড়া আঁচড়ি কামড়া কামড়ি কারো, করতেই থাকো, সেই সুযোগে কিছুদিন পাহাড়ের ঠাণ্ডা হাওয়া খেয়ে নিতে থাকি, আমরা।

সুশান্ত সেন | Susanta Sen

New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৫) | উপন্যাস

New Bengali Article 2023 | অঘোষিত প্রতিযোগিতার ফল

Bengali Story 2023 | শুভদীপ দত্ত প্রামানিক | অণুগল্পগুচ্ছ ২০২৩

Top Bengali Article 2022 | বসন্ত উৎসব | প্রবন্ধ ২০২২

story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdodweep Founder

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *